এপার্টমেন্ট ভিত্তিক পাঠাগার

সাফি এর ছবি
লিখেছেন সাফি (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৬/০৩/২০১৪ - ১:৪৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এককালের মসজিদের শহর ঢাকা, মাঝে কিছুদিন রিকশার শহর হয়ে এখন সম্ভবত এপার্টমেন্ট বাড়ির শহর হতে চলেছে। আমাদের বাসাটাও সম্প্রতি ভেঙ্গে এপার্টমেন্ট হলো। একদিক দিয়ে সুবিধে, নতুন কাঠামো, বাড়তি আবাসান, আবার সবাই মিলে সমিতি করে দারোয়ান/তত্ত্বাবধায়ক রাখলে নিরাপত্তাও কিছুটা হলে পাওয়া যায়। তো মোটামুটি প্রতি এপার্টমেন্ট বাড়িতে নিচতলায় গ্যারেজ থাকে, আর থাকে একটা কমিউনিটি ঘর জাতীয় জায়গা, যেখানে পারিবারিক ছোটখাট অনুষ্ঠানগুলো করা হয়ে থাকে। কদিন আগে একটা খবর পড়ার পরে, চিন্তা করে দেখলাম খুব সহজেই এপার্টমেন্টের বাসিন্দারা নিজেদের মাঝে ছোটখাট বুক ক্লাব জাতীয় তৈরী করতে পারেন। তার জন্য খুব বেশী জায়গা যে প্রয়োজন হবে তাও না, আবার কারোর ঘাড়ে খুব বেশী চাপবেওনা। শুধু দরকার একজনের সদিচ্ছা। পরীক্ষামূলকভাবে এরকম করে দেখা যেতে পারে ফলাফল কেমন হয়। আইডিয়াটা বলি -

স্থান-

এপার্টমেন্টের কমিউনিটি ঘর অথবা ছাদের সামনে চিলেকোঠা জাতীয় জায়গাটা, অথবা কারোর বাসার সামনে যে ছোট্ট করিডরখানা থাকে, এমনকী লিফটে।

যা করতে হবে-
যিনি উদ্যোক্তা, তাকে প্রথমে একটা স্থান নির্বাচন করে, তাতে একটা ছোট কার্ডবোর্ডের বাক্স বা বইয়ের তাক রেখে ৫টা বই রেখে দিতে হবে। যেকোন বই। সাথে একটা নোট - "যাতে লেখা থাকবে, একটা বই ধার নিতে হলে, নিজের একটা বই রেখে তার বিনিময়ে ধার নিতে হবে।" এরপর এপার্টমেন্টের সবাইকে একটা নোটিশের মাধ্যমে জানিয়ে দিলেই হবে কোথায় বই রাখা আছে, এবং বই নেওয়ার নিয়মটা কী। বই ফেরত দেওয়ার একটা সর্বোচ্চ সীমাও নির্দিষ্ট করে দিতে হবে। একটা কাগজে নিয়মটা লিখে এক কপি সিঁড়ির গোড়ায় বা লিফটে আটকে দিলেই সবাই জেনে যাবে।

বাড়তি সুবিধে-
যদি এই পাঠাগার প্রকল্প সফল হয়, তাহলে আন্তঃএপার্টমেন্ট ম্যাসেজিং সিসটেম হিসেবেও বই ব্যাবহার করা যেতে পারে। "তিনতলার(পূর্ব) জরিনা, এই পত্র পাইলে জানিও আমি শুধু তোমার জন্যই বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি - ইতি চারতলার(দক্ষিণ) মোকলেস"

সংবিধিবদ্ধ সতর্কীকরণ-
বেড়াতে আসা লোকজন পরের বার আসলে বই দিয়ে যাব, এখন তো নিয়ে যাই জাতীয় চিন্তায় আক্রান্ত হয়ে প্রকল্পের ইতি ঘটাতে পারে। তবে আমি নিশ্চিত যে এপার্টমেন্টের বাসিন্দাদের মাঝে যদি কেউ বই পড়ুয়া থেকে থাকে, তাহলে তারা কেউই বই মারবেনা বরং এই বিনিময় প্রকল্পে সানন্দে অংশ নেবে। কেউ দেখবেন নাকি চেষ্টা করে?

আইডিয়া সূত্র


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

"তিনতলার(পূর্ব) জরিনা, এই পত্র পাইলে জানিও আমি শুধু তোমার জন্যই বারান্দায় দাঁড়িয়ে থাকি - ইতি চারতলার(দক্ষিণ) মোকলেস"

এটা ক্লাসিক

ঝিঝি পোঁকা এর ছবি

ভালা কইছেন ৷ডেটিং-এর নতুন স্পট হইব ৷ হো হো হো

তবে প্রস্তাব বা পরামর্শ খারাপ না ৷কিছু বইপ্রেমীতো পাওয়া যাবে ৷

-------------------------------------------
ঝিঝি পোঁকা

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

সুবোধ অবোধ

মেঘলা মানুষ এর ছবি

চমৎকার প্রস্তাব। তবে, আজকাল ঢাকা শহরের অ্যাপার্টমেন্ট কম্প্লেক্সগুলোতে অনেকটাই বিত্ত প্রদর্শনের খেলা দেখি (কার গাড়ি বেশি নতুন, কে কত দামী সোফা কিনল), সেখানে এরকম প্রকল্প নিয়ে খুব আশাবাদী হতে পারি না। (আশাবাদী হতে পারলে খুশিই হতাম)

সবাই নিশ্চয়ই এরকম না, কিছু কিছু যায়গায় হয়ত এই প্রকল্প আলোর মুখ দেখবে।

শুভেচ্ছা হাসি

সাফি এর ছবি

চেষ্টা করে দেখা যেতে পারে আর কি। অনেকেই পাশের ফ্ল্যাটে কে থাকে ভাল মতন হয়ত জানেই না। এই উপায় অন্তত বই শেয়ারিংটা হবে, বই পড়ার অভ্যেসটাও হবে।

আয়নামতি এর ছবি

দারুণ লাগলো কিন্তু আইডিয়াটা! হলে মন্দ হয় না। কিন্তু মোকলেসের চিরকুট জরিনার কাছে না গিয়ে যদি তিনতলার কচুটে রহিমাখালার কাছে চলে যায় তখন পিট্টা দিয়ে কাকে লাল বানানো হবে চিন্তিত

সাফি এর ছবি

বইপড়ুয়া রহিমাখালা নিশ্চয়ই অমন মারকুটে হবেনা।

শাব্দিক এর ছবি

জরিনার মুবাইল নাই? চিন্তিত

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

তারেক অণু এর ছবি
সাফিনাজ আরজু এর ছবি

চলুক
আইডিয়া ভালো লেগেছে কিন্তু আমার মনে হয় এপার্টমেন্টে বই পড়ুয়া কেউ থাকলে তার দায়িত্তে বইয়ের রক্ষানুবেক্ষন বা কে বই নিল কে ফেরত দিল এই বিষয়গুলো থাকলে ভালো।
না হলে পড়ুক না পড়ুক খুব দ্রুত বইগুলো কারো না কারো দ্বারা মিসিং হয়ে যাবার চান্স কিন্তু অনেক বেশি। ইয়ে, মানে...

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

সাফি এর ছবি

আমার কেন জানি মনে হয় আমরা মানুষের উপরে বিশ্বাস রাখতে পারি। বই হারানোর আশংকা হয়ত আছে, তবে একবার চেষ্টা করে হয়ত দেখা যেতে পারে।

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

হাসি তা ঠিক ...............

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

নির্ঝর অলয় এর ছবি

ভালা বুদ্ধি! চলুক

স্পর্শ এর ছবি

ভালো আইডিয়া। এক্সপেরিমেন্টটা করেই ফেলুন না। হাসি

তবে এই পদ্ধতিকে কী কী উপায়ে ট্রোলিং করা যায় সেরকম শতশত আইডিয়া চলে আসছে মাথায়। দেঁতো হাসি


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

সাফি এর ছবি

শুনি কয়েকটা ট্রোলিং আইডিয়া...

দীনহিন এর ছবি

আশা করছি, আপনার এপার্টমেন্টে এই প্রজেক্টটির টেস্ট রান হবে এবং অন্য সব এপার্টমেন্ট বিল্ডিংয়ের জন্য এটি একটি অগ্রদূত হিসেবে খ্যত ও স্বীকৃত হবে।
শুরুর ছবিটার কিঞ্চিৎ বর্ণনা থাকা দরকার ছিল, মনে হয়।

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

সাফি এর ছবি

আমি দেশে থাকলে আমার এপার্ট্মেন্টে চালু করতাম। বিদেশে যেখানে থাকি, সেখানে কমিউনিটি ঘরে কেউ আগেই একটা লাইব্রেরী জাতীয় চালু করেছিল। এখন শ দুইয়েক বই আছে। আমার কিছু বই ও আমি ওখানে দিয়ে দিয়েছি। ছবিটা একটা ফোরামে দেখেছিলাম, তাই এখানে ঝুলালাম।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।