বিমানবন্দরে কর বিড়ম্বনা

সাফি এর ছবি
লিখেছেন সাফি (তারিখ: সোম, ২১/০৭/২০১৪ - ১:০১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকা থেকে ফেরার পথের ঘটনা। বিমানবন্দরে লাইনে দাঁড়িয়ে আছি, ইতিহাদ কাউন্টারের সামনে। লাইনের আগানোর গতি খুবই ধীর। লাইন কিছুটা আগাতেই ব্যাপারটা স্পষ্ট হলো। কাউন্টারের মহিলা, আমেরিকা বা ইউরোপগামী যাত্রীদের কাছে যাত্রীপ্রতি ১০০০ টাকা করে এবং আবুধাবী বা মধ্যপ্রাচ্যের যাত্রীদের কাছ থেকে যাত্রীপ্রতি ৫০০ টাকা করে চাইছেন। স্বভাবতই যাত্রীরা দিতে রাজি হচ্ছিলেন না - আর সেই নিয়ে বচসা থেকে লাইনের ধীরগতি। আরেকটু কান পেতে যেটা জানলাম, টাকাটা মহিলা নিজের ঈদের বাজারের জন্যে চাননি, সরকারের কর হিসেবে চাইছেন এবং যারা টাকা দিবেন তাদের রশিদ ও দিচ্ছেন।

ঘটনা হলো আমাদের প্রিয় মালাইলামা* এই পহেলা জুলাই থেকে নতুন কর বসিয়েছেন বা পুরাতন কর বাঁড়িয়েছেন - যা পহেলা জুলাই থেকে কার্যকর হচ্ছে। এখন যারা টিকেট ১লা জুলাইয়ের আগে কেটেছেন, তাদের ক্ষেত্রে যেহেতু এই বাড়তি কর টিকেট কাটার সময়ে দেওয়া হয়নাই, সেইটা বিমানবন্দরে নগদে নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু ঝামেলাটা হলো অনেকের কাছেই দেশী টাকা নাই কারণ তারা আগে থেকে এই নিয়ে কিছুই জানেনা। লাইনে আমাদের সামনেই মধপ্রাচ্যগামী এক মহিলা কান্নাকাটি করে একাকার অবস্থা, কারণ উনি যা টাকা ছিল সবই পরিবারকে দিয়ে এসেছেন। উনি আমাদের মতন সৌভাগ্যবানও না যে পরিবারের একাধিক সদস্য বিদায় দিতে আসবে এবং তাদের থেকে টাকাটা নিবেন। যা হোক ওখানে উপস্থিত বাকী যাত্রীরা মিলে তার কর পরিশোধ করার ব্যবস্থা করা হলো।

আমাদের দেশে মধ্যপ্রাচ্য হয়ে যারা ভ্রমণ করেন তারা মোটামুটি ৩ ধরণের - শ্রমজীবি, ছাত্র এবং ভ্রমণেচ্ছু। এর মাঝে প্রথম দুই প্রকৃতির মানুষই অনির্দিষ্ট কালের জন্য রওনা হয় বলে সাথে বাংলাদেশী টাকা রাখার কোন যৌক্তিক কারণ নেই। বিমানবন্দরে অসুবিধায় পরছে মূলত তারাই। এবং এরাই সংখ্যাগরিষ্ঠ। এই অবস্থা সহজেই পরিহার করা যেত যদি সরকার নিয়মটা শুধুমাত্র পহেলা জুলাইয়ের পরে টিকেট কাটাদের জন্য প্রযোজ্য করতেন। কারণ পয়সা বাঁচাতে আমরা অনেকেই টিকেট এক দুই মাস আগে থেকে কেটে রাখি। সুতরাং যারা পহেলা জুলাইয়ের আগে টিকেট কেটেছেন তারা অবশ্যই ট্রাভেল এজেন্টের সাথে অথবা যেই বিমানে ভ্রমণ করবেন তাদের সাথে কথা বলে ব্যাপারটা নিশ্চিত হয়ে নিয়েন। এই অগাস্ট মাসেই প্রচুর ছাত্রছাত্রী দেশত্যাগ করবে, এটা তাদের জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ।

* মালাইলামার বুদ্ধি সুপার কম্পিউটারের চেয়েও প্রখর।

লেখাটির খন্ডিতাংশ ফেসবুকে প্রকাশিত।


মন্তব্য

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

আমাদের প্রিয় মালাইলামা জানেন যে, এই সাধারণশ্রেণীর লোকেদের কাছ থেকে কর আদায় করা সহজতর।
তথ্যটা জানাবার জন্য ধন্যবাদ। অনেকে প্রস্তুতি গ্রহণ করতে পারবে।

এক লহমা এর ছবি

খুব সময়োপযোগী পোস্ট। আশা করি অনেকে দুর্ভোগের থেকে বাঁচবে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
যারা এসব নীতি নির্ধারণ করেন, তাদেরকে কোনভাবেই এসব ঝামেলায় পড়তে হয় না বলেই এমন গা-ছাড়া নীতি।

ভালো থাকুন সাফি।
শুভকামনা জানবেন।

---------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
যারা এসব নীতি নির্ধারণ করেন, তাদেরকে কোনভাবেই এসব ঝামেলায় পড়তে হয় না বলেই এমন গা-ছাড়া নীতি।

ভালো থাকুন সাফি।
শুভকামনা জানবেন।

---------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

হুম, এদেশটা এখন শুধু মন্ত্রি, আমলাদের। আর আমরা সবাই হলাম তাঁদের ইচ্ছেপূরণ করার যন্ত্র মাত্র!!

____________________________

দীনহিন এর ছবি

* মালাইলামার বুদ্ধি সুপার কম্পিউটারের চেয়েও প্রখর।

খাসা বলেছেন! আসলেই!

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

সাইফ তাহসিন এর ছবি

কুনুখানে শান্তি নাইরে পাগলা!!!

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

বিদেশ থেকে টিকিট কাটলেও কি এই সমস্যায় পড়তে হচ্ছে?

সাফি এর ছবি

টিকেট পহেলা জুলাইয়ের আগে কাটা হলে

রাতঃস্মরণীয় এর ছবি

সাথে বাংলাদেশি টাকা থাকার আরেক ঝামেলা- এয়ারপোর্ট কাস্টমসের লোকেরা অনেক সময় নিয়ে নেয়।

------------------------------------------------
প্রেমিক তুমি হবা?
(আগে) চিনতে শেখো কোনটা গাঁদা, কোনটা রক্তজবা।
(আর) ঠিক করে নাও চুম্বন না দ্রোহের কথা কবা।
তুমি প্রেমিক তবেই হবা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সেবা নিতেও ভোগান্তি হয় এদেশে, হায়! মন খারাপ

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।