রাজকীয় গাছ আমদানী: একটু ভেবেচিন্তে

মাহবুব রানা এর ছবি
লিখেছেন মাহবুব রানা [অতিথি] (তারিখ: রবি, ২৯/০৫/২০১১ - ২:৪৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

Paulownia tomentosa একটি মাঝারি উচ্চতার (১০-২৫ মি) গাছ, যার মূল আবাস মধ্য ও পশ্চিম চীন। ইংরেজিতে এটিকে Princess Tree, Foxglove Tree, Royal Tree ইত্যাদি নানা রাজকীয় নামে ডাকা হয়। হৃদয়াকৃতির পাতা, ফুলগুলোও দেখতে সুন্দর। কাছে থেকে দেখলে গাছের বাকলও সাধারন গাছের চেয়ে একটু বেশী সুন্দরই লাগে। বড় বড় পাতাসহ ডালপালা ছড়িয়ে দেয় বলে বেশ ছায়াও দেয়। সর্বোপরি, খুব দ্রুতবর্ধনশীল। যে কোনো গাছের এই কয়েকটা বৈশিষ্টই মানুষকে আকৃষ্ট করার জন্য যথেষ্ট। আর একরনেই হয়তো কেউ কেউ বাড়ির বাগানে কিংবা লনে লাগানোর জন্য চীন দেশ থেকে আমেরিকায় আনিয়ে থাকবেন। যুক্তরাষ্ট্রের কৃষি বিভাগের (USDA) দেয়া তথ্যমতে ১৮৪০ দশকের দিকে সৌন্দর্যবর্ধনশীল (ornamental) বৃক্ষ হিসেবে এটি সেখানে যায় (সূত্র-১)। হয়তো শুরুর দিকে বেশ জনপ্রিয়তাও পেয়েছিলো সেখানে। কিন্তু হায়! সেই সৌন্দর্যবর্ধক বৃক্ষই বহুকাল পেরিয়ে আজ আমেরিকার শত্রু! USDA ইতিমধ্যেই একে 'noxious weed tree' বলছে (সূত্র-২), আর New England এর বৃক্ষপ্রজাতির মধ্যে এটি একমাত্র গাছ যেটি আগ্রাসী তালিকাভুক্ত (সূত্র-৩)

কিন্তু কি ছিলো সেই সৌন্দর্যের আড়ালে?

সৌন্দর্যের ভাঁজে ভাঁজে তার লুকিয়ে ছিলো ডিম্বাকৃতির ক্যাপসুল (capsule)। ৩ থেকে ৪ সে,মি লম্বা প্রতিটি ক্যাপসুলের ভেতর থাকে ক্ষুদ্রাকৃতির হাজারো বীজ। ডানাযুক্ত এই বীজ সহজেই বাতাসে উড়ে বা পানিতে ভেসে ২-৩ কিমি পর্যন্ত ছড়িয়ে পড়ে। উপযুক্ত পরিবেশ পেলেই তরতর করে বেড়ে ওঠে। আর একবার আসন গেড়ে বসতে পারলে যে কোনো আগ্রাসী প্রজাতির বৈশিষ্টই হচ্ছে স্থানীয় জীববৈচিত্র, খাদ্য শৃংখল আর আন্ত:প্রজাতিক সম্পর্কের বারোটা বাজিয়ে দেয়া। Paulownia tomentosa-র ক্ষেত্রেও ব্যাপারটা ভিন্ন কিছু নয়। এর প্রতিবেশ (ecology), আগ্রাসন ক্ষমতা, আগ্রাসন থেকে স্থানীয় ইকোসিস্টেমকে রক্ষা উপায় নিয়ে বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ গবেষনা ইতিমধ্যেই হয়েছে (এটি পড়ে দেখতে পারেন)

এই যখন বাজারের অবস্থা, ঠিক তখনই প্রফেশনাল/একাডেমিক সূত্র মারফত জানা গেলো ডেসটিনি গ্রুপ সুদুর চীন দেশ থেকে আমদানী করে Paulownia tomentosa-র সুধা আমাদের খাওয়াতে যাচ্ছে। দেশে না থাকায় বিস্তারিত তথ্য যোগাড় করতে পারিনি, ওয়েবপেজেও কিছু পেলাম না (ফেসবুকে একটা পাতা অবশ্য পেয়েছি)। তবে জানতে পেরেছি ইতিমধ্যেই পাইলট আকারে প্রকল্প শুরু করে দিয়েছে।

আগ্রাসী হোক বা না হোক, যে কোনো বিদেশী প্রজাতি (উদ্ভিদ/প্রানী) আমদানীর (introduction) আগে অবশ্যই নতুন পরিবেশে খাপখাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা, বাস্তুংস্থান (ecosystem)- এর উপর প্রভাব এগুলো বিবেচনা করতে এবং প্রয়োজনবোধে ট্রায়ালের ব্যবস্থা করতে হয়। ডেসটিনি কি এরকম কিছু করেছে? আমাদের বন বিভাগের/বন গবেষনা প্রতিস্ঠানের (BFRI) পরামর্শ কি নেয়া হয়েছে? বন বিভাগের উচিত খুব দ্রুতই খোঁজ নেয়া। ইউক্যালিপটাসের কথা আমরা যেন ভুলে না যাই।


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

খুব জরুরী পোস্ট।

ডেসটিনির একটা গাছ লাগিয়ে লাখপতি টাইপের কী জানি প্রকল্প আছে। সেখানে (সম্ভবত) ৫ হাজার টাকা জমা দিলে কয়েক বছর (সঠিক সংখ্যা মনে নেই) পর লাখ টাকা দেয়ার গ্যারান্টি (লিখিত সনদ) দেয়া হয়!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ফাহিম হাসান এর ছবি

প্রথমে পাঁচ হাজার টাকা দিতে হয়। ১২ বছর পরে তারা ৩০,০০০ টাকা ফেরত দেওয়ার কথা বলে।

ফাঁকিটা হল -

১। ইন্টারেস্ট রেইট হিসাবে ধরছে না।
২। বিনিয়োগকারী গাছ নিজে কিন্তু বিক্রি করতে পারবে না। স্রেফ মালিকানা হস্তান্তর করতে পারবে। প্রতিবার মালিকানা হস্তান্তরে ১০০ টাকা ফি দিতে হয়। চোখ টিপি
৩। কোন কারনে গাছ মারা গেলে, ঝড়ে উপড়ে গেলে প্রতিষ্ঠানের কোন দায় নেই। কোন বীমা করা যায় না।
৪। এই ৫,০০০ টাকা প্রথমে ভাগ হয় ছয় স্তরে:

কমিশন ১
কমিশন ২
কমিশন ৩
কমিশন ৪
কমিশন ৫
কমিশন ৬

এরপর বিজ্ঞাপন ও দাপ্তরিক ব্যয়ের জন্য শতকরা একটা অংশ কেটে রাখা হয়।

তারপর যা বাকি থাকে হো হো হো তা দিয়ে গাছ কেনা হয়। সেই গাছের চারা বিনিয়োগকারী চোখেও দেখে না।

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

পুরাই অলৌকিক। বেহেস্তেও এরকম সুযোগ আছে বলে মনে হয় না।

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

ফাহিম হাসান এর ছবি

অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পোস্ট।

এভাবে ভিনদেশী গাছ রোপণ অনাবশ্যক। নির্বিচারে এ ধরনের গাছ লাগালে ফলাফল হবে ভয়াবহ। দেশী গাছ (বট, ফলজ বৃক্ষ যাদের দারুমূল্য কম) বেশি করে লাগানো উচিত।

ডেসটিনি গ্রুপের কুকীর্তি ও ধোঁকাবাজি সম্পর্কে একটা লেখা পেলাম।

লিংক

এরা বান্দরবানে জমি অবৈধভাবে লিজ নিয়ে সেখানকার প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা বন উজাড় করে এইসব বিদেশী গাছ লাগাচ্ছে। এ ধরনের বৃক্ষ রোপণের উদ্দেশ্য স্রেফ বাণিজ্যিক। এছাড়াও তারা অন্যের নামে ইজারাকৃত জমি দখল করে জোরপূর্বক চারা লাগানো শুরু করেছিল। আদিবাসীদের ভোগান্তি ছিল সবচেয়ে বেশি। পরে রীতিমত মাইকিং করে সবাইকে সতর্ক করা হয়। লিংক

আর আদতে ওরা মানুষের কাছ থেকে যে পাঁচ হাজার টাকা নিচ্ছে তার পুরাটা গাছ লাগাতে ব্যয় করছে না। ছয় পর্যায়ে কমিশন ভাগ হয়। তারপর বিজ্ঞাপন ও হাবিজাবি খরচে আরো কিছু অংশ চলে যায়। লিংক

এ ধরনের প্রতারণা থেকে সতর্ক থাকুন এবং অন্যকে সতর্ক করুন

মাহবুব রানা এর ছবি

লিংকগুলোর জন্য ধন্যবাদ। পড়ে দেখতে হবে।

পাঠকkalapahar এর ছবি

ডেসটিনি গ্রুপ এর বাটপারী আস্তে আস্তে ফাঁস হয়ে যােচ্ছে। তারা বনায়নের নামে পাহাড়ীদের জমি জবর দখ করার ঢেস্টা করেছিল। এখ টোমেন্টাসা র মত আগ্রাসি গাছ আনয়ন মানে আমাদের জীববৈচিত্রের বারটা বাজানো। এদের ধআন্ধাবাজি থেকে সাবধান।

রাগিব এর ছবি

ডেস্টিনি আনছে বলেই গাছটা খারাপ হবে, সেটা না ধরে একটু জানতে চাই, গাছটা আসলেই কি দেশের জন্য খারাপ হবে কি না।

মার্কিন ইনভেসিভ স্পিসিজ বা উইড লিস্টে থাকলেই গাছ ভয়াবহ হয়ে যায় না। উদাহরণ দেই, আমাদের অতি পরিচিত নিম গাছও কিন্তু এরকম তালিকায় আছে। (অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড সরকার এটাকে আগ্রাসী প্রজাতির তালিকায় রেখেছে।) কাজেই প্রশ্ন হলো, বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে এই গাছটি খারাপ হবে, এমন কোনো রেফারেন্স রয়েছে কি?

----------------
গণক মিস্তিরি
জাদুনগর, আম্রিকা
ওয়েবসাইট | শিক্ষক.কম | যন্ত্রগণক.কম

মাহবুব রানা এর ছবি

মার্কিন ইনভেসিভ স্পিসিজ বা উইড লিস্টে থাকলেই গাছ ভয়াবহ হয়ে যায় না।

নেটিভ এরিয়ার বাইরে গেলে অনেক প্রজাতিরই ইনভেসিভ হওয়ার সম্ভাবনা থাকে, সেটি আপাত দৃষ্টিতে যতই নিরিহ হোক না কেন। এজন্যই কোনো exotic ইনট্রোড্যুস করার আগে স্টাডির দরকার আছে। আপনি যে লিংকটা দিলেন ওটা কিন্তু এরকমই একটা রিস্ক এসসেমেনট (নিমের উপর)। তবে ওরা কিন্তু নিমকে রিস্ক হিসেবে শক্তকিছু কনক্লুড করেনি। ওদের কনক্লুডিং কমেন্ট এরকম-

While this study was unable to find clear evidence of neem having a major impact as a weed overseas, there is good evidence from several countries that it can escape cultivation and naturalise within suitable habitats. Without properly researched and published evidence of major impact elsewhere, it is difficult to predict whether neem will become a major or a minor problem in Queensland.

আমি মনে করি Paulownia-র যেহেতু আগ্রাসী হিসেবে সুনাম আছে, কাজেই এটা বাংলাদেশে ইনট্রোড্যুস করার আগে অবশ্যই রিস্ক এসেসমেন্ট করে নিতে হবে। আর আমার পোষ্টের মূল বক্তব্যও এটাই।

ফাহিম হাসান এর ছবি

রাগিব ভাইয়া, আপনার পয়েন্টটা গুরুত্বপূর্ণ। আমার দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করছি-

বাংলাদেশের বনভূমির শতকরা পরিমাণ (বনভূমি/মোট ভূমি) নগণ্য (World Bank 2010 বলছে ১১.১%)
এবং এই বনভূমির পরিমাণ কমতির দিকে। এই বনের মধ্যে অনেকখানি অংশ রয়েছে সামাজিক বনায়ন নামের মশকরা। সত্যিকারের বনভূমির পরিমাণ আরো অনেক কম।

বর্তমানে বেশিরভাগ mammal, herpetofauna এবং বেশ কিছু প্রজাতির পাখি IUCN status অনুযায়ী vulnerable. এদের আবাসস্থল ও খাবারের জন্য পর্যাপ্ত গাছপালা নেই। এখন নতুন গাছ লাগানো – যা ১২ বছর পর কেটে ফেলা হবে (অর্থাৎ কেবল বাণিজ্যিক উদ্দেশ্য) অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ।

নতুন প্রজাতির গাছ এনে লাগানোর মত এই ঝুঁকি কতটুকু যৌক্তিক? আমার মতে এই ঝুঁকিটুকু নেওয়া মোটেই লাভজনক নয়। বরং দেশী গাছ বেশী করে লাগানো উচিত।

এছাড়া পাইলট প্রকল্পের মাধ্যমে বা গবেষণাগারে এর পরীক্ষা করে কতটুকু লাভ হবে তা নিয়ে আমি দ্বিধান্বিত। অনেক সময় ছোট পরিসরের পরীক্ষায় সব কিছু ধরা পড়ে না। বাস্তুসংস্থান বেশ জটিল ও চলমান একটি প্রক্রিয়া। মাইক্রো লেভেলে যে ইন্টার স্পিশিজ রিলেশান তা ম্যাক্রো লেভেলের সাথে সর্বদা সামঞ্জস্যপূর্ণ না।

আবার ধরেন পরীক্ষাটা বান্দরবানে করলো। কিন্তু গাছ তো লাগানো হবে দেশ জুড়ে। বান্দরবানের ইকোলজির সাথে অন্য অঞ্চলের (ধরেন সমতলের বা দক্ষিণে) কিছু পার্থক্য আছে। পরীক্ষাটা কতটুকু নিখুঁতভাবে করা হবে সেই পর্যাপ্ত রিসোর্স আছে কিনা জানি না।

আসলে সম্পূর্ণ ব্যাপারটা নৈর্ব্যক্তিক ভাবে দেখতে গেলে কিছু সমস্যা আছে। কারণ ডেসটিনির এমএলএম কার্যক্রম তাদেরকে একটি প্রতারক প্রতিষ্ঠান হিসেবে চিহ্নিত করেছে। যেহেতু প্রতারণার রেকর্ড আছে, তাই তাদের দিকে সন্দেহের পাল্লাটাই ভারী। বাংলাদেশের প্রাকৃতিক বনগুলো প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গিয়েছে। এ অবস্থায় এরকম একটা ঝুঁকি তাও অনিয়মকারী প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে – সম্পূর্ণ অযৌক্তিক।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১. গাছটার মূলত ব্যবহার কী? এর ফুল, ফল, পাতা, কষ, রস। কাণ্ড, মূল, বীজ, কাষ্ঠ এগুলোর কোনটার কী ব্যবহার আছে?
২. এর ক্ষতিকারক দিকগুলো কী কী? দ্রুত বর্ধণশীল হওয়া বা দ্রুত ছড়িয়ে পড়াটা কি সব ক্ষেত্রেই ক্ষতিকর বিবেচিত হবে?
৩. এটি কি অধিকতর পানি শোষণ করে মরুকরণ করে? এর পাতা/ফুল/ফ/বীজ কি বিষাক্ত?
৪. এটি কি অল্প ঝড়ে সহজে উপড়ে গিয়ে ভূমিক্ষয় করে?
৫. এটি কোন ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ বা জীবাণুর জন্য বিশেষ সহায়ক কি?
৬. খাদ্যশৃঙ্খলে এটি কীভাবে বিশৃঙ্খলা তৈরি করে?

ডেসটিনি'র মতো প্রতিষ্ঠান এর প্রকল্পের সাথে জড়িত হলেই গাছটা খারাপ এমন ভাবাটা যান্ত্রিক সরলীকরণ। ডেসটিনি'র অনিয়ম/দুর্নীতি নিয়ে আলাদা পোস্ট হতে পারে।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

ফাহিম হাসান এর ছবি

পান্ডবদা, প্রশ্নের জবাব হয়ত রানা ভাই দিবেন। আমি একটু যোগ করছি - ডেসটিনির উল্লেখ এখানে অপ্রাসঙ্গিক নয়।

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

পাণ্ডবদা গাছটা বাংলাদেশে অপরীক্ষিত এই নিয়া তো কোনো সন্দেহ নাই।

আগ্রাসী হোক বা না হোক, যে কোনো বিদেশী প্রজাতি (উদ্ভিদ/প্রানী) আমদানীর (introduction) আগে অবশ্যই নতুন পরিবেশে খাপখাইয়ে নেয়ার ক্ষমতা, বাস্তুংস্থান (ecosystem)- এর উপর প্রভাব এগুলো বিবেচনা করতে এবং প্রয়োজনবোধে ট্রায়ালের ব্যবস্থা করতে হয়। ডেসটিনি কি এরকম কিছু করেছে?

মুনাফাখোর ধান্দাবাজ কম্পানি বইলা সন্দেহ একটা শক্ত জমিনই পায়। অভিযোগ প্রমাণ না হইলেও।


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

মাহবুব রানা এর ছবি

আপনার সবগুলো প্রশ্নের আলাদা উত্তর দিতে পারলে ভালো লাগতো, কিন্তু তাতে উত্তর খুব লম্বা হয়ে যাবে। আপাতত সংক্ষেপে বলি। কোনো প্রজাতি আগ্রাসী হবে কি-না সেটা নির্ভর করে, অন‌্যান্য আরো কিছুর সাথে, তার প্রজননের হার (যেমন কচুরিপানা) এবং বিস্তৃত এনভাইরনমেন্টাল গ্রাডিয়েন্টে খাপ খাইয়ে নেয়ার ক্ষমতার উপর। Paulownia গাছটির মধ্যে এ দুটো বৈশিষ্ট্যই প্রকট। এটি অসংখ্য ছোট ছোট বীজ আর দ্রুত অংগজ প্রজননের মাধ্যমে দল ভারী করে। দেখা গেছে আগুনে পুড়ে ছাই হয়ে যাওয়া বনে সবার আগে মাথা চাড়া দিয়ে উঠছে এটি এবং ছড়িয়ে পড়ছে, তাতে করে অন্যান্য গাছপালার বংশবৃদ্ধি বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।
এখন কথা হচ্ছে, অন্য দেশে আগ্রাসী বলেই এটা বাংলাদেশেও হবে কি-না। এটা নিশ্চিভাবে বলার জন্য কিছু গবেষনার দরকার আছে। তবে আগ্রাসী বৈশিষ্ট্য যেহেতু আছে, সে সব জায়গাতেই আগ্রাসনের চেষ্টা চালাবে এটা স্বাভাবিক। আর আমার ধারণার কথা যদি বলি, পার্বত্য চট্টগ্রামে এর আগ্রাসী হওয়ার সম্ভাবনা আছে পরিবেশগত কিছু বৈশিষ্ট্যের কারণেই। আর কোনো কারনে যদি এটি গ্রামীন বনে আগ্রাসী হয় তাহলে এর পরিনাম বেশ খারাপ হবে।

আর ডেসটিনি নিয়ে এই মুহূর্তে আমার আলাদা কোনো কথা নেই, ওরা আমদানী করছে বলেই ওদের নাম এসেছে। তবে আমার মনে হয় সরকারের এ নিয়ে একটি রেগুলেটোরি বডি/ গাইডলাইন তৈরি করার দরকার। পাশাপাশি দরকার কিছু গবেষনার।

গুপী গায়েন এর ছবি

@ মাহবুব রানা (লেখক) ধন্যবাদ এই পোস্টটার জন্য। সচলায়তন ব্লগে আমার একাউন্ট নাই। আপনার লেখাটা আমার ব্লগে শেয়ার করবার জন্য লিঙ্ক দিলাম। কোন আপত্তি থাকলে জানাবেন। মুছে ফেলবো।

আর আমার ব্লগে ডেস্টিনী নিয়ে আমার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম হাসি

http://www.somewhereinblog.net/blog/gupigayeen/29383772#c6492125

গুপী গায়েন এর ছবি

@ মাহবুব রানা (লেখক) ধন্যবাদ এই পোস্টটার জন্য। সচলায়তন ব্লগে আমার একাউন্ট নাই। আপনার লেখাটা আমার ব্লগে শেয়ার করবার জন্য লিঙ্ক দিলাম। কোন আপত্তি থাকলে জানাবেন। মুছে ফেলবো।

আর আমার ব্লগে ডেস্টিনী নিয়ে আমার সাম্প্রতিক অভিজ্ঞতা শেয়ার করলাম হাসি

http://www.somewhereinblog.net/blog/gupigayeen/29383772#c6492125

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

হুম, রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

মাহবুব রানা এর ছবি

ইউক‌্যালিপটাস বিষয়ে ছোট্ট একটা ডিসক্লেমার:
বাংলাদেশে এটি ইনভেসিভ ছিলো না। 'বেশি পানি শোষন' সংক্রান্ত বিষয়টি ব্যাপক প্রচার পেলেও মূল সমস্যা ছিলো অন্যখানে- অনেকটা ব্যবস্হাপনাগত। আমি এখানে ইউক্যালিপটাস প্রসংগ এনেছি অপরিকল্পিতভাবে বিদেশি প্রজাতি আনা এবং সেটার (অপ)ব‌্যবস্থাপনাগত কারনে যে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে সেকথা স্মরন করাতে গিয়ে।
সময়-সুযোগ পেলে ইউক্যালিপটাসের সমস্যার প্রকৃতি এবং সম্ভাবনা নিয়ে লেখার ইচ্ছে আছে।

hasan এর ছবি

আপনার কথা ঠিক আছে কিন্তু Powlonia'র অনেক প্রজাতি আছে। ডেসটিনি যে প্রজাতি নিয়ে কাজ করছে তা হল paulownia elongata আপনার তথ্য ঠিক নয়। এই প্রজাতিটি আমেরিকান। লেখক ভাই আপনার যদি আরও জানার ইচ্ছে হয় তাহলে The Destination নামক ম্যাগাজিন থেকে জানতে পারেন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।