সত্পাত্র (অণুগল্প)

রণদীপম বসু এর ছবি
লিখেছেন রণদীপম বসু (তারিখ: মঙ্গল, ২৭/০৫/২০০৮ - ১১:৫৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাত্রের ভয়ঙ্কর সততার নমূনা জানাজানি হবার পর যা হবার তাই হয়েছে। চালশের বাইফোকাল চশমা নাকে ওঠে চুলে পাক ধরা শুরু হলেও বরের আগে 'হবু' বিশেষণটা আর কিছুতেই ছেটে ফেলা যায় নি এখনো।

একজন ডাকসাইটে কর্মকর্তা হবার সবরকম যোগ্যতা থাকলেও চাকরিটা হয়েছিলো তার তৃতীয় শ্রেণীর কর্মচারি পদে। অত্যন্ত সত্ ও অতিমেধাবী হওয়ার কারণেই কি না, ওই পদবীটাও তাকে অতিরিক্ত ভালোবেসে ফেলেছে হয়তো। পুরাতন কলিগদের উদাহরণ টেনে লাভ নেই, জুনিয়র সহকর্মীদের কাছেই আশরাফ এখন সাবোর্ডিনেট। তবে হবু বর হিসেবে চাকরি করাটাই প্রধান যোগ্যতা হওয়ায় কন্যার পিতা আর কিছু না জেনেই হোক্, কীভাবে যেন দুজন সঙ্গিসহ নির্ভুল ঠিকানায় একদিন আশরাফের অফিসে এসে হাজির।

কন্যার পিতা সহজ সরল মানুষ, এতো ঘোরপ্যাচে না গিয়ে সোজাসাপ্টা কথাটাই বলে ফেললেন তিনি। দেবার মধ্যে নগদ একলক্ষ টাকা আর... ।

কথাক’টা বলা আর শেষ হয়নি। তার আগেই চেয়ার ছেড়ে দাঁড়িয়ে গেছে আশরাফ। কন্যাপক্ষীয় একজনের হাতটা টেনে ধরে বললো- আসুন আমার সাথে। রাস্তায় নেমেই চলমান লোকাল গাড়িটা থামিয়ে চড়ে বসলো। পেছন পেছন কন্যাপক্ষও। গোটা রাস্তায় নীরব থমথমে আশরাফের ভাবসাব কিছুই বুঝতে পারলেন না এরা। তবু হবু বর বলে কথা ! বাসায় টাসায় নিয়ে যাচ্ছে হয়তো।

গাড়ি থেকে নেমেই হতবাক সবাই। এ কী ! এটা তো গরুর বাজার ! এদিকেই থাকে নাকি সে ? বাজারের যে দিকটাতে বড়োসড়ো দামি ষাঁড়গুলো রয়েছে, ওখানে পৌঁছেই মুখ খুললো সে ! নিন, এখান থেকে পছন্দ করে আপনার মেয়ের জন্য একটা কিনে নিয়ে যান। বলেই তাদেরকে ফেলে রেখে হনহন করে ফিরে চললো আশরাফ।

(২৭/০৫/২০০৮)


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালোই তো লাগলো। কিন্তু খুবই তাড়াতাড়ি...
-জুলিয়ান সিদ্দিকী

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

চলুক

মুশফিকা মুমু এর ছবি

বাহ! এমনইতো হওয়া উচিৎ
-------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

রায়হান আবীর এর ছবি

সুন্দর...
---------------------------------

মুজিব মেহদী এর ছবি

তেজি দামি ষাঁড়ের কাছে না নিয়ে বলদের কাছে নিয়ে গেলে বেশি ভালো হতো।
................................................................
আমার সমস্ত কৃতকর্মের জন্য দায়ী আমি বটে
তবে সহযোগিতায় ছিল মেঘ : আলতাফ হোসেন

... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ... ...
কচুরিপানার নিচে জেগে থাকে ক্রন্দনশীলা সব নদী

রণদীপম বসু এর ছবি

আশরাফ মিয়া ষাঁড়কেই বলদ হিসেবে জানেন কিনা, তাই !

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

কাল্পনিক এর ছবি

ভালো লাগলো।
বর্তমান সময়ে এই ঘুণে ধরা সমাজে সৎ থাকা কঠিন বৈকি সহজ নয় মোটেও।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।