হুকোমুখো কানকোয়া

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি
লিখেছেন আব্দুল গাফফার রনি [অতিথি] (তারিখ: সোম, ২৫/০৫/২০১৫ - ১২:২৩অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


বাঁশবনের নিচে শুকনো পাতার জঞ্জাল। তার ওপর খসখস করে খাদ্য খোজে ছাতারে পাখির দল। ওদের ক্যাঁচম্যাচানিতে বিরক্ত হয়ে পাখি গুলোকে তাড়িয়ে আবার ছুটতাম শাহবুলবুলির পেছনে। আনমনে ওপরের দিকে মাথা উঁচু করে খুঁজছি। হঠাৎ আবার খসখস করে উঠলো শুকনো বাঁশপাতা। এবার আর ছাতারের দল নয়। কমলা-কালচে রঙের মেশানো একটা পাখি। দ্রুত পায়ে চলে গেল। তখন শাহ বুলবুলিকে বাদ দিয়ে এর পিছু নিলাম। কিন্তু না, কোথাই হাওয়া হয়ে গেছে।


গ্রীষ্ণে প্রায় এক মাস স্কুল ছুটি থাকত। আম খাওয়ার ছুটি। পোড়া শুকনো ঝালবাঁটা আর লবণ মিশিয়ে তৈরি মসলা নিয়ে ছুটতাম ভর দুপুরে মাঠ পানে। বাগান পাহারা দেওয়া আর আম খাওয়া দুই-ই চলত সমানে।
আপন মনে আমের ছায়ায় বসে গুনগুন করে গাইতাম। কিংবা ছড়া-কবিতা আবৃত্তি করতাম। নির্জন মাঠে গায়ক আমি একা নই। নানা রকম পাখির কলতানে মুখর আমবাগান। পাশেই আমাদের বাঁশবাগানটা--হাজার পাখির আশ্রয়দাতা সে। বাগানের সবচেয়ে সুন্দর পাখি শাহবুলবুলি। সাদা ও কমলা--দুই রকমের। কমলাটা স্ত্রী সাদাটা পুরুষ। লাজুক এই পাখিটা তাদের লম্বা লেজের বাহার এক ঝলক দেখিয়েই কোথায় হারিয়ে যায়। আমি পিছু নিতাম। বাঁশঝাড়ের এ ডাল-ওডালে গিয়ে বসে শাহ বুলবুলি। আমার চোখ ফাঁকি দিতে পারে না।


বাঁশবনের নিচে শুকনো পাতার জঞ্জাল। তার ওপর খসখস করে খাদ্য খোজে ছাতারে পাখির দল। ওদের ক্যাঁচম্যাচানিতে বিরক্ত হয়ে পাখি গুলোকে তাড়িয়ে আবার ছুটতাম শাহবুলবুলির পেছনে। আনমনে ওপরের দিকে মাথা উঁচু করে খুঁজছি। হঠাৎ আবার খসখস করে উঠলো শুকনো বাঁশপাতা। এবার আর ছাতারের দল নয়। কমলা-কালচে রঙের মেশানো একটা পাখি। দ্রুত পায়ে চলে গেল। তখন শাহ বুলবুলিকে বাদ দিয়ে এর পিছু নিলাম। কিন্তু না, কোথাই হাওয়া হয়ে গেছে।
তারপরও খুব কাছ থেকে কানাকোয়া দেখার সৌভাগ্য হয়েছে বহুবার। অদ্ভুত পাখি। কখনও উড়তে দেখেছি বলে মনে পড়ে না। সারাদিন শুকনো পাতার ওপর ঘুরে ঘুরে পোকা খুঁজে বেড়ায়। ডাকটা কেমন? কোনওদিন খোয়াল করে শুনেছিলাম বলে মনে হয় না। এবার বাড়ি গিয়ে পেয়েছিলাম গোটা দশেকের দেখা। একবারে দুটোর বেশি দেখিনি। একা-পাখিই দেখেছি বেশি।


১ এপ্রিল। বিগত দশদিনে গ্রামে যেসব মেঠো পাখি দেখা যায়, সবগুলোরই ছবি প্রায় তুলে ফেলেছি। বাকি আছে কেবল হরিয়াল, শাহবুলবুলি আর কানকোয়া।
সকালে উঠেই শাহেদকে নিয়ে বেরিয়ে পড়লাম। আমাদের নতুন আমবাগানে। কৈশরের সেই আম বাগানটা আর নেই। নেই বাঁশ বাগানটাও। সেখানে নতুন করে করা হয়েছে হিমসাগর আর আম্রপলির সম্বন্বিত বাগান। এই নতুন বাগানটাতে যেতে ইচ্ছে করে না। শৈশবের অজস্র স্মৃতিমাখা আম আর বাঁশবাগানটার জন্য বুকটা খাঁ খাঁ করে। নতুন আরেকটা আমবাগান লাগানো হয়েছিল উত্তর মাঠে। পুরোনো বাগানটা থাকা অবস্থায়। এই নতুন বাগানে বসেই কলেজ জীবনে পড়েছি পথের-পাচালী। পড়েছি আর চোখের জল ফেলেছি। তাই এই বাগানটার প্রতিও বাড়তি আকর্ষণ আছে।
ট্রাইপডে ক্যামেরা নিয়ে চললাম উত্তর মাঠের দিকে। আমাদের আমবাগানের পাশেই সাবেক চেয়ারম্যানের বিরাট এক আমবাগান। তার পাশে শাহেদদের আমবাগান। দুই আমবাগানের আইলে আমাদের এই নতুন আমবাগানটা। শৈশবে এখানো কার্পাস তুলার চাষ হতো। বৈশাখ-জ্যেষ্ঠ মুগ কিংবা পাট। চেয়ারম্যানের বাগানের পাশেই ছিল বিরাট একটা দেশি কুল গাছ। কুলের লোভেই ঘণ্টার পর ঘণ্টা এই মাঠে পড়ে থাকতাম। তখন দেখেছি কানকোয়া আর ছাতারের অবাধ বিচরণ এই বাগানগুলোতে। তা-ই নয়, প্রায় ৪৪ প্রজাতির মেঠো পাাখির দেখা পেয়েছি এবার গাঁয়ে এসে। শুধু সরালি, বক আর জলকবুতর ছাড়া বাকি সব পাখিই এই তিন যৌথ বাগানে দেখেছি গত দশটা দিনে। সুতরাং আমার বিশ্বাস ছিল কানকোয়ার দেখা এই বাগানেই পাবো। সকাল সাড়ে আটটার সময় বেরুলাম। পনেরো মিনিটের মধ্যে পেয়ে গেলাম আরাধ্য কানকোয়ার দেখা। ঠিক ছোটবেলায় যে জায়গায় দেখেছি একে, আজও তার উত্তর প্রজাতি এখানেই চরে বেড়াচ্ছে। শাহেদদের বাগানের ভেতর। আমাদের বাগানের আল ঘেঁষে।


এ কদিনে একটা বিষয় বুঝে গেছি। পাখিদের যদি বোঝানো যায় আমরা তার শত্রু নই, তবে সে আর উড়ে পালাবে না। সে বোঝানোটার ছাপ থাকবে আচরণে।
দূর থেকে কয়েকটা ছবি নিলাম। কিন্তু ছবিগুলো ভালো হয়নি। মাটিতে চরা পাখি। তাই ট্রাইপডের স্ট্যান্ড গোটানো ছিল। শাহেদকে বাগানের মাঝখানে দাঁড়াতে বললাম। নিজে নিজে ট্রাইপড সহকারে গুঁড়ি মেরে এগুচ্ছি। বাগানে মাটিতে কাটা নটেই ভরা। তাই পায়ে অসংখ্য কাঁটা ফোটার যন্ত্রণা সহ্য করতে হলো। কিন্তু ভালো ছবি আর তোলা হলো না। যে-ই ভাবছি এবার শটটা নিতে পারলে ভালো একটা ছবি পাওয়া যাবে তখনই কানকোয়া আমার আচরণে বিপদের গন্ধ পেল বোধহয়। জোর পায়ে ঢুকে পড়ল আমাদের আমবাগানের ভেতর।


আমাদের বাগানটা কাগুজে লেবুর গাছ দিয়ে ঘেরা। তাই ইচ্ছে করলেই যেখান-সেখান দিয়ে বাগানে ঢোকা যাবে না। তখনই বাগানের ভেতর থেকে ‘কুপ কুপ...কুপ’ শব্দ এলো। বেশ গুরু গম্ভীর ডাক। এতো দিনে স্পষ্ট হলাম কানকোয়ার ডাক কেমন। একটা ডাকতেই বাগানের পশ্চিম পাশ থেকে জবাব এলো আরেকটার। ওদিকটায় চেয়ারম্যানের বাগান। খোলা বাগান। তাই সেখানে দাঁড়িয়েই ছবি তোলা যেতে পারে। শুকনো পাতার ওপর দিয়ে খালি পায়ে চললাম। কোনও রকম শব্দ না করেই। এই কায়দাটা আমায় বেশ জানা আছে।
একটু এগুতেই দেখি আমগাছের ঢালু একটা ডাল বেয়ে ওপরে উঠে যাচ্ছে একটা বড় কানকোয়া। এটা ওদের স্বভাব। অন্য পাখিদের চেয়ে ব্যতিক্রম। অন্য পাখিরা সাধারণত এক গাছের এক ডাল থেকে আরেক ডালে যায় ছোট্ট একটা উড়াল দিয়ে। কানকোয়ারা বেশি ওপরে উড়তে পারে না। উড়ে বেশিদূর যেতেও পারে না বলে ওড়ার চেষ্টাও করে না তেমন। ওরা মাটি থেকে লম্বা লম্বা পা ফেলে গাছে ওঠে। তারপর লাফ দিয়ে এক ডাল থেকে আরেক ডালে যায়। শত্রু কাছাকাছি না থাকলে গাছের নীচু ডালেই চরে বেড়ায়। একান্তু প্রয়োজন হলে তবেই মগডালে ওঠে।


আমাকে দেখে মগডালে ওঠার পথেই বেশ কয়েকটা ছবি নিলাম। গত দশদিনে তোলা সবচেয়ে বড় ভূচর পাখি। আকারে ছোটখাটো একটা মুরগির মতো। তবে লেজ অনেক লম্বা। ৪২-৪৩ সেন্টিমিটার লম্বা হয় এই পাখিগুলো। পাখিটা যখন তার পাখা এলোমেলো করে মাথা ঘুরিয়ে দাঁড়ার তখন যেন মনে হয়, সুকুমারের বই থেকে উঠে এসেছে বিখ্যাত হুকোমুখো।

পরম প্রার্থীত কিছু ছবি নিয়ে খোশ মেজাজে বাড়ি ফিরেছিলাম সেদিন।
স্থানীয় নাম : আমাদের এলাকায় একে কুক্কো পাখি নামে চেনে লোকে। এর বেশ কিছু বাংলা নাম আছে। কুবো, বড় কুবো, কানকোয়া ইত্যাদি। টাঙ্গাইল এলাকায় একে আপাইকুতি নামে ডাকে।
ইংরেজি নাম : Greater Coucal
বৈজ্ঞানিক নাম : Centropus sinesis


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

অসাধারণ হয়েছে ছবিগুলো। ধন্যবাদ।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, নামটা লিখতে ভুলে গেছেন

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

নীড়পাতার দেওয়াল ভেঙ্গেচুড়ে গেছে। প্রথম ছবিটা একটু ছোট সাইজ করে দেন

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ঠিক করে দিয়েছি নজু ভাই

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

কাল্পনিক এর ছবি

ঠিক এই পাখিটাই আমি চুয়েটে পড়াকালীন সময়ে প্রচুর দেখেছি আমাদের শহীদ মোঃ শাহ হলের পাশের পুকুর পাড়ে, ডিপার্টমেন্টের পাশের জঙ্গলে। দেখতে অনেকটা বড় আকারের দাড় কাকের মতো। তখন এর নাম জানতাম না।
চলুক লেখককে।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

লেখককে তো ধন্যবাদ দিলেন। আপনাকে ধন্যবাদ দেব তো সম্বোধন পাবো কোথায়? আপনিও নাম লিখতে ভুলে গেছেন।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

আব্দুল গাফ্ফার রনি, লেখাটির জন্য কিভাবে যে আপনাকে ধন্যবাদ দেব আমার জানা নেই। গত বছরের জানুয়ারী মাস থেকে হন্যে হয়ে পাখিটির উপর তথ্য খুঁজছিলাম। কিন্তু কিভাবে খুঁজব তা বুঝতে পারছিলাম না। আপনি আমায় উদ্ধার করলেন। ২০০৪ খ্রীষ্টাব্দের অক্টোবর মাসে আইভরিকোস্টের রাজধানী আবিদজান’র এক গেস্ট হাউজের নির্জন শয়ন কক্ষে শুয়ে শ্রদ্ধেয় ডঃ হুমায়ুন আযাদের একটি বই পড়ছিলাম। নামটি মনে নেই। বইয়ের নামটি ছিল বেশ লম্বা। এটি তার জনপ্রিয় বইগুলোর কোনটি নয়। ওখানে তিনি তার জন্মগ্রাম রাঢ়িখাল নিয়ে খুবই আবেগ প্রবন বর্ণনা দিয়েছিলেন। উনার বইটি পড়তে পড়তে আমার গ্রাম-মাতার কথা মনে পড়ে যায়। আমি নিজের অজান্তেই অজোরে কেঁদে ফেলি। সে থেকে আমার জন্ম গ্রামকে মনে পড়ার রকমের মধ্যে একটি আমূল পরিবর্তন আসে। বিশেষ করে, গ্রামের যেসব জিনিসগুলো ক্রমান্বয়ে হারিয়ে যাচ্ছে সেগুলোর কথা চিন্তা করে খুব বেশী আশংকা আর মন খারাপ হয়। আপনার আজকের পাখিটি সেসব হারিয়ে যেতে বসা জিনিসগুলোর অন্যতম একটি। গাজীপুর জেলার যে এলাকাটিতে আমার গ্রাম সেখানে এটিকে ‘আইড়াকুতি’ নামে ডাকে। গত বছরের শুরুতে দেশে যেয়ে আইড়াকুতি পাখিটিকে অনেক খুঁজেছি কিন্তু কোথাও এটির দেখা পাইনি। আমার স্ত্রীকে এবং আরও দু‘একজনকে জিজ্ঞেস করেছি কিন্তু সবায় বলেন, তারা নিকট অতীতে এটিকে দেখেনি। একে খুঁজতে যেয়ে আমি ছোটবেলায় এটিকে যে ইহর ছোবাতে সব সময় দেখতাম তার খোঁজ করি। (ইহর হ’ল আমাদের এলাকায় জন্মানো ছন প্রজাতির একটি তৃণ। এটি আকারে ছনের চেয়ে অনেক বড় হয়। কান্ডগুলো হয় মাঝারি আকাড়ের পাঠ কাঠির মত। পুষ্ট ইহর কান্ড পাঠকাঠির চেয়ে অনেক মজবুত এবং স্থায়ী হয়। এটি ছিল পাটকাঠির তুলনায় বেশ ব্যয়বহুল। অপেক্ষাকৃত বিত্তবানরা পাটকাঠির পরিবর্তে এটিকে ঘরের বেড়া তৈরির কাজে ব্যবহার করত। আর ‘ছোবা’ বলতে আমাদের এলাকায় গুচ্ছকে বোঝানো হয়। যেমন, বাঁশ ঝাড়কে আমরা বলি বাঁশ ছোবা)। অনুধাবন করি এ ইহর ছোবাও প্রায় বিলুপ্তির পথে। তখনকার সময় আমাদের এলাকায় একটি প্রচলিত বিশ্বাস ছিল যে আইড়াকুতি’র মাংস খেলে মহিলাদের শ্বেতপ্রদ (যাকে আমাদের এলায় ‘ছুতিকার‘ রোগ বলে) ভাল হয়। এ মুহুর্তে
আমি অন্তঃত পাঁচ জনের কথা মনে করতে পারছি যারা রোগমুক্তির আশায় আইড়কুতির মাংস খেয়েছিলেন। জানিনা সেটি এলাকা থেকে আইড়াকুতি হারিয়ে যাবার কারণ কিনা। তবে এটি সত্য যে আমি দেখতে চেয়েও এটির দেখা পাইনি।
আপনার লেখা ইংরেজি নাম ব্যবহার করে গুগলিয়ে পাখিটির সম্বন্ধে অনেক কিছু জানলাম। দেখলাম এটির আর একটি ইংরেজী নাম হ’ল Crow pheasant নীচে সংযোজিত লিংকে যেয়ে পেলাম এর ডাকের ভিডিও। দেখলাম উইকিতে যেসব দেশে এ পাখি দেখা যায় সে তালিকায় বাংলা দেশের নাম নেই। আপনার প্রতি অনেক কৃতজ্ঞতা। আইড়াকুতি’র ডাক

- পামাআলে

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনি হুমায়ূন আজাদের যে বইটা পড়েছিলেন, ওটার নাম “ফুলের গন্ধে ঘুম আসে না” বলে মনে হচ্ছে। ধন্যবাদ, সবাই যদি কিছু কিছু কাজ করে তো হারিয়ে যাওয়া বাংলাকে কিছুটা হলো রক্ষা করা যাবে।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

চলুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ, অনিন্দ্যদা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এই পাখিটা আমরা ছেলেবেলায় গ্রামে দেখতাম পুকুরপাড়ে ঘনঝোপের আড়ালে। পাখিটার বাসা খুঁজতাম ছেলেরা দল বেধে। পাখিটার প্রমিত নাম আমি জানতাম না, তবে গ্রামের লোকজন এটাকে 'হাড়িকুড়ি' নামে ডাকতো। মজার কথা হলো পাখিটার বাসা খোঁজার উদ্দেশ্যের মধ্যে একটা মিথ বা রূপকথা জড়িত। কে যেন আমাদের শুনিয়েছিল এই পাখির বাসায় একটা যাদুর হাড্ডি পাওয়া যায়, সেই যাদুর হাড্ডি যে পাবে সে যাদুমন্ত্রবলে অদৃশ্য হয়ে যেতে পারবে। (টিভিতে তখন ইনভিজিবল ম্যান সিরিজটা খুব জনপ্রিয়)। সেই ইনভিজিবল ম্যান হবার স্বপ্নে বনে বাদাড়ে ঘুরেছি প্রচুর। এতকাল পর সেই পাখির বিবরণ জেনে মুগ্ধ হলাম এবং নস্টালজিক তো বটেই।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ঠিক অপুর মতো, অপু শকুনের ডিম খুঁজে বেড়াতো আকামে উড়বে বলে।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

রনি ভাই অনেক দিন পর লিখলেন। শেয়ালের রাহাজানির পর। ভাল লাগল। এই পাখি ছোট্ট বেলায় দেখেছিলাম। এখন দীর্ঘদিন পর আবার দেখলাম আপনার সুনিপুন আলোকচিত্রে। anne masud

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

অ্যানি আপু, শিয়ালের রহাজানি আর হুকোমুকো কানাকোয়ার মাঝখানে আরও ৫ টা লেখা পোস্ট করেছি। আপনার চোখ এড়িয়ে গেছে বোধহয়।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

রনি ভাই আমি শুধুমাত্র আলোকচিত্র ভিত্তিক লিখা বুঝিয়েছি।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপু নীলকণ্ঠ পাখির খোঁজে লেকাটা ছিল। এরচেয় ওটা অনেক ভালো লেখা ছিল। আফসোস কেউ পড়েনি মন খারাপ

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিগুলো অসাধারণ - পাখিটার কালো শরীর আর লাল চোখে একটা গা ছমছমে ভাব আছে ৷ এমন পাখিকে কেন্দ্র করে অনেক মীথ, রুপকথা গড়ে উঠাটাই স্বাভাবিক ৷ গাঁও গেরামের এরকম গল্প নিয়ে একটা সিরিজ করবেন নাকি রনিদা?

মরুচারী

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

অনেক কিছুই লেখার ইচ্ছা আছে, সেই তালিকায় আছে এ ধরনের মিথও। দেখি কবে শুরু করা যায়।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

এক লহমা এর ছবি

চলুক
"শুকনো পাতার ওপর দিয়ে খালি পায়ে চললাম। কোনও রকম শব্দ না করেই। এই কায়দাটা আমায় বেশ জানা আছে।" - বাঃ!

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

ধন্যবাদ, লহমাদা। ্েভেবে চোরের মতো চলার মজাই আলাদা।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবি ও বর্ণনার চমৎকার সমন্বয়ের জন্য আব্দুল গাফফার রনি ভাই অবশ্যই আপ্নাকে ধন্যবাদ । লেখার একটা অংশ কোট না করেই পারছি না ”পাখিদের যদি বোঝানো যায় যে আমরা তার শত্রু নোই তাহলে তারা আর উড়ে পালাবে না । “ একটা সময় ছিলো আমার বাড়ির আশেপাশের পাখিগুলো উড়ে পালাতো, সম্ভবত বোঝানোর ভাষাটা না জানা অন্যতম কারণ ছিলো । পাখি সম্পর্কে বোধ জন্মায় ঠিক তখন থেকে যখন প্রতি সকালে ঘুম থেকে উঠে দেখতাম পিতামহের কল্যানে !!! বাড়ির আঙ্গিনায় অনেক মৃত (শিকার করা) পাখির নি:ষাড় দেহ । পিতামহের কাজের !!! ধারাবাহিকতা বজায় ছিলো অনেক দিন পযন্ত এমনকি আমার নিজের নিষ্ঠুর শিকারে পরিণত পাখির তালিকাতেও কুহকের স্থান ছিলো । তবে এগুলা ইতিহাস কারণ সেসব দিন গত হয়েছে অনেক আগে । শুধু তাই নয় শিকারী শত্রু পরিণত হয়েছে বন্ধুতে । এখন বিশেষ করে গ্রীস্মের এই দিনগুলোতে আমার ঘুম ভাঙ্গে কুহকে চিৎকারে । আমার বাড়ির চারপাশে কিছুদিন আগ পযন্তও (বৃষ্টি শুরু হওয়ার আগে ) ভোর থেকে শুরু করে রোদের উত্তাপ সহনীয় মাত্রা অতিক্রান্ত হওয়া পযন্ত কুহক চিৎকার করে ফিরতো । যা হোক বলছিলাম কুহকের কথা । আপ্নার এলাকায় যা কুক্কো নামে পরিচিত আমাদের এলাকাতেও অনেকে “কুখে” নামেই ওকে চেনে । যদিও বেশির ভাগই কুহক নামে চেনে কারণ এ নামের সাথে তার ডাকের প্যাটার্ণ এর মিলটা । প্রতিদিন চোখের সামনে দেখার কারণে কোন একদিন গুগল করে এর গোষ্ঠী বের করার একটা অপপ্রয়াস করেছিলাম যা জেনেছিলাম তার সারমর্ম হচ্ছে পৃথিবীর বেশ কিছু জায়গায় এরা আছে তবে আকৃতি ও রং এর কিছুটা পার্থক্যসহকারে । তবে নামের শেষাংষ মিল সবজায়গাতেই । আমাদের চোখের সামনে যেটা ঘোরাঘুরি করে সেইটা “Pheasunt cuckko” । ভারী শরীর, অল্প উড়াউড়ি, ছায়াযু্ক্ত ঠান্ডাস্থল প্রেমী, পোকামাকড় খেকো এবং সাহসী । অন্য পাখির মতোই পুরুষ কুহকটা চমৎকার আকর্ষনীয় রং এর অধিকারী এবং মেয়েটা বিবর্ণ । ঠিক ছবির মতোই । প্রজনন কাল প্রায়ই শেষ এখন ডিম নিয়ে ব্যস্ত থাকায় তাদের আর চিৎকার করতে দেখছি না ।

আর একটা বিষয় উল্লেখ না করেই পারছি না ”নীড় সন্ধানী ”সম্ভবত” আমাদের আরেকটা পাখি( “হাড়িয়াচাচা/হাড়িয়াচাষা” ” Indian Treepie” ২য় ছবি) এর সাথে কুহক কে গুলিয়ে ফেলেছেন । ছোটবেলায় প্রচুর এ পাখিটার দেখা মিললেও এখন দেখা যায় না মোটামুটি বিরল যদিও এর বিলুপ্তির কারণ মানুষের প্রত্যক্ষ আক্রমন নয় বলেই আমার বিশ্বাস কারণ হাড়িয়াচাষা কুহকের মতো শিকারীদের তালিকায় ছিলো বলে আমার কাছে তথ্য নেই । হাড়িয়াচাষার সাথে কুহকের অল্প বিস্তর মিল থাকলেও প্রচুর অমিল বিশেষ করে আকার, রং, ডাক ও স্বভাবে । হাড়িয়াচাষা কুহকের মতো পোকামাকড় খেলেও ওর তালিকাতে অন্য িইখির ডিম, বাচ্চা এবং বিশেষ করে মুরগির ছোট বাচ্চা ছিলো । আর ডাক শুনলেই মেজাজ খারাপ হয়ে যেতো, এমন ক্যাটক্যাটে জঘন্য ডাকের কারণেই সম্ভবত ওর নাম ছিলো হাড়িয়াচাষা । ওর ডাক শুনলেই পাড়ার মুরগিওয়ালারা মুরগির বাচ্চাগুলা সামলানোর জন্য অস্থির হয়ে যেতো । যা হোউক সেইসব দিন গত হয়েছে না আছে বাড়িতে বাড়িতে মুরগি না আছে হাড়িয়াচাষা । ছবির জন্য অবশ্যই গুগুলকে ধন্যবাদ ।

রনি ভাইয়ের প্রতি অনুরোধ আমাদের এই পাখিগুলো নিয়ে নিয়মিত সংক্ষিপ্ত বিরতিতে লেখার ।

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আপনিও নাম লেখেননি। ধন্যবাদ। হাঁড়িচাঁছাও আসছে সচললায়তনে কুটুম হয়ে। হাড়িচাঁছার আরেক নাম কুটুমপাখি জানেন তো।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অতিথি লেখক এর ছবি

আসুক হাড়িচাছা কুটুম হয়ে হো হো হো মনে করিয়ে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ, এখন মনে পড়ছে পিচ্চিকালে হাড়িচাছা ডাকলেই ধরেই নিতাম কেউ মানে কুটুম আসছে আর কি । চলুক লেখা হাততালি

masum007

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

আমরাও তা-ই ধরে নিতাম। খুব আনন্দ হত। কুটম আসলে ভালো-মন্দ রান্না হত কিনা!

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

অনুপম ত্রিবেদি এর ছবি

এই বৈশাখে এক্কেবারে না বুঝেই এই পাখিটি খুবই কাছ থেকে দেখে ফেলেছি সাজেক থেকে মাচালং যাবার পথে। এতোই কাছে চলে গিয়েছিলাম যে, চোখ জুড়িয়েই দেখতে পেরেছি, যদিও খুব বেশিক্ষণের জন্যে নয়। বিশাল ডানা মেলে উড়ে একটু দূরে গিয়ে বসেছিলো। তবে ডানামেলা অবস্থায় এর সৌন্দর্য একেবারে খোলতাই। তথ্য পেয়ে খুশি হলাম। আমি ভেবেছিলাম পাহাড়ী কোকিল জাতীয় কোনো পাখি মনে হয় (পাখি সম্পর্কে অবশ্য আমার জ্ঞান এক্কেবারেই নেই)।

==========================================================
ফ্লিকারফেসবুক500 PX

আব্দুল গাফফার রনি এর ছবি

এরা কোকিল গোষ্ঠীর পাখি অনুপমদা। তবে পাহাড়ি নয়। সারা বাংলায় এদের বিচরণ।

----------------------------------------------------------------
বন পাহাড় আর সমুদ্র আমাকে হাতছানি দেয়
নিস্তব্ধ-গভীর রাতে এতোদূর থেকেও শুনি ইছামতীর মায়াডাক
খুঁজে ফিরি জিপসি বেদুইন আর সাঁওতালদের যাযাবর জীবন...
www.facebook.com/abdulgaffar.rony

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।