বাক্সে ভরা কল্পবিজ্ঞান

সজল এর ছবি
লিখেছেন সজল (তারিখ: সোম, ১৮/০৫/২০১৫ - ১:০৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাস্তব আর ভার্চুয়াল জগৎ
ধরা যাক, দুর্ঘটনাগ্রস্থ এলাকায় পাঠানো রোবটের সাথে যোগাযোগ করে তাকে প্রতিনিয়ত নির্দেশ দিতে হবে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে। এখানে সমস্যা বেশ কয়েকটি। রোবট আর তার মানুষ চালকের মাঝের যোগাযোগের মাধ্যমটি খুবই অনির্ভরযোগ্য, কিছু ডাটা হারিয়ে যাবে, কিছু আসবে বিকৃত হয়ে। ধরা যাক রোবটটি মেল্টডাউনের সম্মুখীন হওয়া কোন পারমাণবিক কেন্দ্রের কোন কক্ষে গিয়ে কিছু একটা মেরামত করার চেষ্টা করছে। যেহেতু দুর্ঘটনার সম্মুখীন, কক্ষের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে আগে থেকে কিছু জানার উপায় নেই যে রোবটটিকে আগে থেকে শিখিয়ে পড়িয়ে দেয়া যাবে। রোবট ধীরে ধীরে যখন চলাফেরা করতে থাকবে সে আশেপাশের পরিস্থিতি সম্পর্কে তার নানা সেন্সর দিয়ে তথ্য সংগ্রহ করে সেটা মাস্টারকে পাঠাবে। চালকের কাজ সেই ডাটাকে বিশ্লেষণ করে রোবটের চারপাশকে বুঝে নিয়ে তাকে পরবর্তী পদক্ষেপ সম্পর্কে কমান্ড পাঠানো। সেটা হতে পারে ডানে যাও, বামে যাও, স্ক্রুটা ঘুরাও এর মত সাধারণ কিছু কমান্ড।

তথ্যের অনির্ভরযোগ্যতা, তাৎক্ষণিকভাবে বিশাল পরিমাণ ডাটা বিশ্লেষণের মত কঠিন সমস্যাগুলো সমাধান করাটাই এখানে মূল কাজ। কিন্তু যে মানুষ এইসব তথ্যের ভিত্তিতে রোবটকে পরিচালিত করছে, সে কম্পিউটারের সরলীকৃত বিশ্লেষণ থেকে পরিস্থিতি আসলে কতটা ভালোভাবে বুঝতে পারছে? এমন যদি হতো চালক নিজেই দুর্ঘটনাস্থলে হেঁটে বেড়াতে পারছে কিন্তু তার কোন শারীরিক কিংবা মানসিক ক্ষতি হচ্ছে না, পরিস্থিতি সম্পর্কে শ্রেয়তর জ্ঞান নিয়ে তখন মেরামত বা উদ্ধারের কাজ করা যেতো।

অবশ্যই এর অবভিয়াস সমাধান হচ্ছে একটা ম্যাজিক স্যুট বানিয়ে ফেলা, যার কোন রকম ক্ষতি কেউ করতে পারবে না। ম্যাজিক স্যুট বানানোর কাজটা জাদুকরদের হাতে ছেড়ে দিয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান কী করতে পারে? যেহেতু আমরা পারমাণবিক চুল্লীর কাছে যেতে পারছি না, পারমাণবিক চুল্লীকেই কোন ভাবে তুলে আমাদের ল্যাবরেটরিতে নিয়ে আসার কথা চিন্তা করা যেতেই পারে। আমি তেমন উচ্চাভিলাষি না, তাই মাটির কাছাকাছি কোন পরিকল্পনা করতে হবে। আমাদের হাতে আছে রোবটের পাঠানো তার পরিস্থিতি সম্পর্কিত ডাটা। তার সব কিছুকে জুড়ে যদি একটা ত্রিমাত্রিক ভার্চুয়াল মডেল বানিয়ে ফেলা যায়, আর সেই ভার্চুয়াল মডেলকে পুরে দেয়া যায় একটা বাক্সে, তাহলেই কিন্তু দুর্ঘটনাস্থল চলে আসবে আমাদের কাছে। বাকি থাকে সেই ভার্চুয়াল জগতে মানুষের চলে ফিরে বেড়ানো, আর রোবট অ্যাভাটারের মাধ্যমে বাস্তব দুনিয়ায় কাজ করা।

manVsRobot

কল্পবিজ্ঞানের বাক্স
ভার্চুয়াল দুনিয়ায় ঘুরে বেড়ানোর অল্পবিস্তর ব্যবস্থা নানা জায়গায়ই আছে। তবে ভার্জিনিয়া টেক ব্যাপারটাকে অন্য মাত্রায় নিয়ে গেছে। আমাদের আছে তিনতলা সমান উঁচু, চওড়া আর দীর্ঘ একটা বিশাল ঘনকাকৃতি ঘর, আদর করে একে বলা হয় “কিউব”। কিউবের বিশালত্বের একটা সুবিধা হচ্ছে, মোটামুটি বাস্তবসম্মত যে কোন ত্রিমাত্রিক মডেলকে এই বাক্সে পুরে ফেলা যায়। ধরা যাক আমরা মাঝারি আকৃতির একটা জিমন্যাসিয়ামের কিংবা কারো বসার ঘরের ত্রিমাত্রিক মডেল তৈরী করে সেটাকে সেই বাক্সে ভরতে চাই; সেটা বাস্তবের স্কেলের সাথে সামঞ্জস্য রেখেই করা সম্ভব। অবশ্য তেপান্তরের মাঠ তৈরী করে তার মাঝে ঘোড়ায় চেপে যাওয়ার মত জরূরী কাজ সম্ভব হবে না।

আরেকটা সুবিধা হচ্ছে, কিউবে হেঁটে চলে বেড়ালে তাতে পুরা ভার্চুয়াল জগতেও একই বেগে চলাফেরা করা সম্ভব। ব্যাপারটাকে সম্ভব করার জন্য কিউবের অবশ্যই তার ভেতর হাঁটাচলা করা মানুষ বা বস্তুর অবস্থানকে সার্বক্ষণিকভাবে ট্র্যাক করতে পারার ক্ষমতা থাকতে হবে। কিউবের আয়তন যেহেতু অনেক বেশি, তার ভিতরে চলন্ত ব্যক্তি/বস্তুকে ট্র্যাক করতে প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতিও সংখ্যায় অনেক।

কিউবের অর্ধেক উচ্চতায় চারপাশে সমান দূরত্বে মোট ২৪টি ইনফ্রারেড ক্যামেরা বসানো আছে যারা একই সাথে রূমের ভেতর ইনফ্রারেড আলো ছুড়ে মারতে পারে এবং সেই আলো কোন বস্তুতে প্রতিফলিত হয়ে ফিরে এলে সম্মিলিত জ্ঞান দিয়ে প্রতিফলক বস্তুর অবস্থান নির্ণয় করতে পারে। উল্লেখ্য ত্রিমাত্রিক অবস্থান নির্ণয়ের জন্য একই প্রতিফলক থেকে অন্তত তিনটি ক্যামেরার দূরত্ব জানতে হবে।

dof1cap

dof2cap

dof3cap

যেহেতু ক্যামেরার অভাব নেই, প্রতিটা প্রতিফলকের অবস্থান সম্পর্কে জানা কোন সমস্যাই নয়। ধরা যাক দুইটা প্রতিফলক একই সাথে নড়ছে এবং একটা সময় এরা পরস্পরের খুব কাছাকাছি চলে এলো, এবং পরমূহুর্তে এরা আবার দূরে সরে যাওয়া শুরু করলো। কিউব তখন আর কে কোনটা সেটা বুঝতে পারবে না। চিন্তা করা যাক বিশ কিংবা ত্রিশ জন একই সাথে নড়াচড়া করছে। কিউব বেচারা হতবুদ্ধি হয়ে রাগে দুঃখে বিগক্রাঞ্চের মাধ্যমে একটা বিন্দুতে পরিণত হলেও তাকে দোষ দেয়া যাবে না। তাহলে, এ থেকে বাঁচার উপায়?

আরেকটা ব্যাপার হচ্ছে, ইনফ্রারেডকে সবাই যথেষ্ট শক্তিশালীভাবে প্রতিফলিত করতে পারে না। এই জন্য যে ব্যক্তি বা বস্তুকে ট্র্যাক করা হবে, তার গায়ে রূপালি রঙের ইনফ্রারেড প্রতিফলক গোলকাকৃতির সেন্সর বসিয়ে দেয়া হয়। এতক্ষণ যে সমস্যা নিয়ে বলছিলাম, ক্রসওভারের পরেও যেন প্রতিটা ব্যাক্তি/বস্তুকে ইউনিক ভাবে চেনা যায় তার জন্য দরকার একটা বুদ্ধিদীপ্ত সমাধান। উল্লেখ্য সেন্সর থেকে প্রতিফলিত রশ্মির শক্তির কোন তারতম্য নেই। ধরা যাক আমাকে ট্র্যাক করবে কিউব। এই জন্য আমি মাথায় একটা হ্যালমেট পরে নিলাম। সেই হেলমেটের গায়ে ৪/৫টি সেন্সরকে একটা বিন্যাসে বসানো হলো।
orientation

এখন আমি কিউবকে ক্যালিব্রেশনের জন্য কিছুটা সময় দেব। কিউব এই সময়ে এই ৪/৫টি সেন্সরের ত্রিমাত্রিক বিন্যাসকে একটা ট্র্যাক করার লক্ষ্য হিসাবে মনে রাখবে। পরবর্তী ব্যক্তির মাথার হেলমেটে আরো ৪/৫টি সেন্সর সম্পূর্ণ আলাদা ত্রিমাত্রিক বিন্যাসে বসিয়ে সেটাকে দ্বিতীয় লক্ষ্যবস্তু হিসাবে মনে রাখা হবে। এই ভাবে প্রতিটা জিনিসের জন্য আলাদা আলাদা ত্রিমাত্রিক বিন্যাস মনে রাখা হবে। পরবর্তীতে সবগুলো লক্ষ্যবস্তু যখন এক সাথে চলাফেরা শুরু করবে, ক্রসওভারের পরেও তাদের হেলমেটের সেন্সরের ইউনিক ত্রিমাত্রিক বিন্যাস থেকে প্রতিটা লক্ষ্যবস্তুকে আলাদা আলাদা ভাবে চিহ্নিত করা সম্ভব হবে। পুরো প্রক্রিয়াটিকে সরলীকরণ করে নীচের ছবিতে দেখানো হলো।

tracking

ভার্চুয়াল জগতে প্রবেশের দরজা
খালি চোখে কিউবের ভেতর তাকালে নিজেকে বাক্সবন্দীই মনে হবে, ভার্চুয়াল জগতে আর প্রবেশ করা হবে না। সেই কাজের জন্য নানা প্রযুক্তি ব্যবহার করা যেতে পারে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কিউবের ব্যবহারকারীরা অকুলাস রিফটের হেড মাউন্টেড ডিসপ্লে ব্যবহার করে। প্রথমেই ইউনিটি গেম ইঞ্জিনে ত্রিমাত্রিক মডেল পুরে দিয়ে, সেটাকে কিউবের ত্রিমাত্রিক মাত্রার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ(স্কেল ম্যাচিং) করা হয়। তার পর কিউবের ট্র্যাকিং সিস্টেমের সাথে এই মডেলকে যুক্ত করে দেয়া হয়। ত্রিমাত্রিক মডেলে নড়াচড়া করার সহজ উপায় হচ্ছে মডেলের ক্যামেরার অবস্থান বদলানো। ফার্স্ট পার্সন পারস্পেকটিভ থেকে এই গতির জন্য মডেলের ক্যামেরাকে ব্যবহারকারীর মাথার সাথে সমাপতিত করে দিতে হয়। ফার্স্ট পার্সন শ্যুটিং গেইম খেলা যে কেউ এই ব্যাপারটাকে সহজেই বুঝতে পারবে।

তাহলে ব্যাপারটা দাঁড়ালো, অকুলাস রিফট চোখে দিয়ে কিউবের শুন্য বিন্দুতে পা দিলে ত্রিমাত্রিক মডেলের একটা শুরুর বিন্দুতে নিজেকে দেখতে পাবে ব্যবহারকারী। তার পরে সে অন্য কোথাও সরে গেলে, কিউবের ট্র্যাকিং সিস্টেম তার নতুন অবস্থান হিসাব করে ইউনিটির গেইম ইঞ্জিনকে জানাবে। ইউনিটি তখন ত্রিমাত্রিক মডেলের ক্যামেরাকে সেই নতুন অবস্থানে নিয়ে গিয়ে চারপাশের দৃশ্যাবলি নতুন করে রেন্ডার করবে। আর এই ভাবেই বাস্তবসম্মত মডেলিং আর সঠিক পরিমাণ ক্যালিব্রেশনের মাধ্যমে কিউবের মধ্যে হেঁটে বেড়ালে সেই ভার্চুয়াল জগতে বাস্তবে হেঁটে বেড়ানোর অনুভূতি অনেকটাই পাওয়া সম্ভব।

ধরা ছোঁয়ার উপায়
ভার্চুয়াল জগৎ যদি বাগান কিংবা পার্ক হয় তাতে শুধু হেঁটে বেড়ানোই যথেষ্ট হওয়ার কথা। কিন্তু আমরা যদি অশরীরির মত শুধু হেঁটে চলে বেড়ানোতে সন্তুষ্ট না থেকে ভার্চুয়াল জগতের বস্তুকে ধরতে চাই কিংবা বদলাতে চাই, দরকার হবে বাড়তি প্রযুক্তির। একটা দারুণ উপায় হচ্ছে লিপমোশনের হ্যান্ডট্র্যাকার। এই লিপমোশনের ছোট ডিভাইসটার সামনে হাত নাড়ালে সে হাতের আলাদা আলাদা ভঙ্গিকে চিনতে পারে। লিপমোশনের ট্র্যাকিং ইনফরমেশনকে ইউনিটিতে পাঠালে প্রোগ্রামিং এর মাধ্যমে হাতের নানা ভঙ্গিকে বাস্তব জগতের নানা কাজের সমতূল্য করা সম্ভব। যেমন কেউ তর্জনী তুলে কোন বস্তুর দিকে নির্দেশ করলে সেটাকে অনুবাদ করা যায় সেই বস্তুকে নির্বাচন করার কাজে।

শহীদ কাদের মোল্লা ভাই যদি বেহেশত থেকে আবারো ভি সাইন দেখাতে চান, তাহলে লিপ মোশনের সামনে ভি দেখিয়ে সেই তথ্য কোন বেহেশতী নেটওয়ার্কের মাধ্যমে পাঠিয়ে দিলেই দুনিয়ার মানুষ সেটা দেখতে পাবেন। এমনকি উনার ফাঁসি চাওয়াতে যে দেশটা ব্লগার আর মুক্তচিন্তকদের বধ্যভূমিতে রূপান্তরিত হয়ে গেলো সেই খুশিতে উনি মধ্যমা দেখালে সেটাও লিপ মোশন বুঝতে পারবে।

hand

মাইনরিটির রিপোর্টের সেই দৃশ্যের কথা নিশ্চয় মনে আছে যেখানে টম ক্রুজ দুই হাতে ওরাকলদের নানা স্বপ্নদৃশ্যকে একটা একটা দৃশ্য করে বিশ্লেষণ করছিল? লিপ মোশন এই ব্যাপারটাকে মোটামুটি বাস্তবের ব্যাপারে পরিণত করেছে। অবশ্য লিপমোশনই একমাত্র উপায় নয়, যে কোন ট্র্যাকিং সিস্টেম যথেষ্ট প্রোগ্রামিং এর সাহায্যে এই কাজে ব্যবহার করা সম্ভব।

কিউবের কিছু ব্যবহার
এই কিউবকে নানা কাজে ব্যবহার করা সম্ভব, বিনোদন কিংবা সিরিয়াস গবেষণায়। তবে আগের দিনের টাইম শেয়ারড কম্পিউটারের মতই এতে সময় পেতে গেলে বিরাট হ্যাঁপা। অনেক দিন পর পর কয়েক ঘন্টার জন্য একে পাওয়া যায়। এখন পর্যন্ত যেসব সিরিয়াস প্রজেক্টে একে ব্যবহার হতে দেখেছি, তার মাঝে আছে বিশালাকৃতির জৈব অণু ভিজ্যুয়ালাইজ করা, ঘূর্ণিঝড় ভিজ্যুয়ালাইজ ও বিশ্লেষণ করা। এছাড়া আছে ডাটা ভিজ্যুয়ালাইজ এবং দরকার মত কেটে ছেঁটে বিশ্লেষণ করা। একটা ক্লাস প্রজেক্ট করছি ফিউচার হাউস নিয়ে, যেখানে একেকজন একেক অংশ নিয়ে কাজ করছে। একটা অংশ হচ্ছে টার্মিনেটরের মত কোন বস্তুর দিকে তাকালে তার সম্পর্কিত যাবতীয় তথ্য ভার্চুয়াল জগতে দেখতে পাওয়ার ব্যবস্থা করা।

শেষ কথা
যদিও ব্লগিং করা খুব খারাপ কাজ, কিন্তু এই ব্লগটা মোটেও কোপ খাওয়ার মত কিছু না। এটা বিজ্ঞান বিষয়ক ব্লগও না, পুরোপুরিই প্রযুক্তি বিষয়ক ব্লগ। অনলাইনের ছাগুসর্দার ত্রিভুজ পর্যন্ত দেশের একজন খ্যাতনামা প্রযুক্তিবিদ। এছাড়া "যে দশটি উপায়ে স্ত্রী স্বামীকে সন্তুষ্ঠ রাখবে" ইত্যাদি জনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য আমাদের কাছে পৌঁছে দেয়া প্রিয় ডট কম কিংবা দেশের যে কোন বিষয়ে সবচেয়ে সঠিক তথ্য প্রচারকারী বাঁশের কেল্লা গ্রুপ পর্যন্ত প্রথিতযশা প্রযুক্তিবিদদের হাতে গড়া এবং পরিচালিত। সুতরাং প্রমাণিত হলো প্রযুক্তি বিষয়ক লেখালেখি ভালো।

ঋণস্বীকারঃ
হেলমেট, মানুষ এবং রোবটের ফ্রি ত্রিমাত্রিক মডেল http://www.blendswap.com/ ওয়েবসাইট থেকে নেয়া। ব্লেন্ডারে দরকার মত পালটে নিয়ে দরকারী ছবিগুলো তৈরী করা হয়েছে।


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

দারুণ! চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সজল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ফাহিম হাসান এর ছবি

দুর্দান্ত! হাততালি

ভার্চুয়াল দুনিয়া সম্পর্কে আগ্রহী হই Randy Pausch এর শেষ লেকচার দেখে। তারপরে কল্পবিজ্ঞানের জগৎ এগিয়ে গিয়েছে বহুদূর, মাঝে মাঝে টেড টকে এমন সব ভিডিও দেখি যেটা সিনেমাকেও হার মানায়।

প্রশ্ন: লিপমোশনের হ্যান্ডট্র্যাকার যে হাতের ভঙ্গী চিনে, এইটা কী কোন মেশিন লার্নিং অ্যাল্গরিদ্ম ব্যবহার করে শিখেছে? এটা কি নিজে থেকেও শিখে নাকি?

ছোটবেলায় দুষ্টামির জন্য বিস্তর চড়-থাপ্পর খেয়েছি। ধরেন, আমার যদি এমন একটা ট্রেইনিং ডেটাসেট থাকে যেটাতে হাতের বিভিন্ন ভঙ্গী এবং তার পরবর্তী কাজ বিশ্লেষণ করে দেওয়া আছে। আমি কী শিখাতে পারব যে হাত উঠানো মানে হ্যান্ডশেইক নাকি চটকানা? মোটামুটি তো প্রডিক্ট করতে পারবে নাকি?

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ। স্পেইস কিংবা টাইম ট্রাভেল সংক্রান্ত বিষয় বাদ দিলে সাইফাইএর অনেক কিছুই বাস্তবে তৈরী করে ফেলা সম্ভব। ব্যাপারটা নির্ভর করে উপযোগিতা আর খরচের উপর।

উত্তরঃ লিপমোশন ইনফ্রারেড আলোর একটা ক্ষেত্র তৈরী করে আপনার হাতের বাঁধা থেকে হাতের প্রতিটা আংগুল এবং জয়েন্টের ম্যাপ তৈরী করতে পারে। হাত বা আংগুলের সংখ্যা, গতির দিক, গতির বেগ ইত্যাদি জিনিস সে রেকর্ড করতে পারে। এইটুকুর করার জন্য শুরুর দিকে হয়ত মেশিন লার্নিং দিয়ে প্যারামিটার ঠিক করতে হয়েছে, তবে রানটাইমে সে রকম করার সম্ভাবনা কম। ডিটারমিনিস্টিক ভাবেই তার আগে উল্লেখ করা পরিমাপগুলা দিতে পারার কথা। এখন হাতের আংগুলগুলার বিন্যাস কেমন, হাত কোন দিক দিয়ে কত জোরে নড়ছে তার উপর নির্ভর করে আপনি হয়ত নিজেই ঠিক করতে পারবেন হাতটা চড় দিতে আসছে, নাকি হ্যান্ডশেইক করতে আসছে। তবে এক্ষেত্রে যেহেতু হাতের ভঙ্গি অ্যামবিগ্যুয়াস হতে পারে, মেশিন লার্নিং একটা কাজের টুল হতে পারে। নীচে দেখতে পারেন লিপমোশনের সাথে আসা ভিজ্যুয়ালাইজারে কীভাবে হাতে গতি দেখানো হচ্ছে।

[img]lmt[/img]

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

ঈয়াসীন এর ছবি

অসাধারণ। জানলাম অনেক অজানা বিষয়। জটিলকে খুব সহজে বর্ণনা করা একটা শিল্প বটে!

------------------------------------------------------------------
মাভৈ, রাতের আঁধার গভীর যত ভোর ততই সন্নিকটে জেনো।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ ঈয়াসীন!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

রানা মেহের এর ছবি

বাহ!
আপনার হালাল ব্লগ খুব ভাল লাগলো। দেঁতো হাসি

এই পুরো জিনিসটার একটা ভিডিও দেখতে পেলে দারুন হতো।

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ দেঁতো হাসি
এই ভিডিওটা দেখতে পারেন ভিডিও লিংক

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

এক লহমা এর ছবি

বেশীর ভাগ হিসাব-নিকাশ মাথার উপর দিয়ে গেলেও এইটা বুঝলাম, বিশাল সব ব্যাপার-স্যাপার হচ্ছে। খুব ভালো লাগল যে আপনি এই অসাধারণ ঘনকটি ব্যবহার করেন।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সজল এর ছবি

মাথার উপর দিয়ে গেলেতো হলো না। কোন বিশেষ প্যারা ধরে বললে, আরেকটু বোধগম্য করে লিখার চেষ্টা করতে পারি হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

আয়নামতি এর ছবি

চলুক
ছায়েঞ্ছ ভালু না। প্রযুক্তিনির্ভর ব্লগ ভালৈছে দেঁতো হাসি

সজল এর ছবি

বিজ্ঞান একটা অভিশাপ। ধন্যবাদ হাসি

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মাসুদ সজীব এর ছবি

ব্লগার মানেই এখন মৃত্যুযোগ্য অপরাধ, আগে ছিলো মৌলবাদীদের শত্রু আর এখন আওয়ামিলীগেরও শত্রু। সুতরাং ব্লগ লেখলে কোপ খাওয়া মোটামুটি এখন রাষ্ট্রীয় ভাবে বৈধ। চোখ টিপি

অনেকদিন পর লিখলেন, লেখা যথারীতি মুগ্ধকর। হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ মাসুদ!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মেঘলা মানুষ এর ছবি

চলুক

সজল এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে!

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

তারেক অণু এর ছবি

জোস লাগল, যদিও পুরোপুরি বুঝতে আবারও পড়ব। এমন লিখেন কয়েকটা ঝটফট-

সজল এর ছবি

কিছু বুঝতে অসুবিধা হলে জানায়েন। অনেক কিছু নিজে অনেক দিন ধরে জানি বলে অন্যরা এমনিতেই বুঝবে ধরে নিয়ে লিখে থাকতে পারি, ফিডব্যাক পেলে সহজ ভাষায় লিখা সম্ভব হবে।

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

মরুদ্যান এর ছবি

আপনি বা যারা এই জিনিস তৈরি করেন বা এটা নিয়ে গবেষণা করেন তারাও বিজ্ঞান পড়েছেন, আমিও পড়েছি। পার্থক্য হল আমি সেই শিক্ষা দিয়ে ভেরেণ্ডা ভাজছি আর আপ্নারা কত কি করছেন! দীর্ঘশ্বাস!

হালাল ব্লগ আরো লিখেন। চলুক

-----------------------------------------------------------------------------------------------------------------
যদি তোর ডাক শুনে কেউ না আসে তবে একলা চল রে

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।