প্রাণ কী ১২: জীবের বাইরে কোষের জীবন, গবেষণাগারের কোষের ইতিহাস

সজীব ওসমান এর ছবি
লিখেছেন সজীব ওসমান (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৭/১২/২০২০ - ১:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই সিরিজের শুরু করেছিলাম একধরনের কোষের গল্প দিয়ে। হেলা কোষ, যার মালিক মারা গিয়েছেন বহুদিন আগে। কিন্তু প্রজন্মান্তরে গবেষণাগার থেকে গবেষণাগারে এই কোষ বেঁচে আছে এবং এটা পৃথিবীর গবেষণাগারে সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত স্তন্যপায়ী কোষ।

অর্থাৎ জীবের বাইরে যে কোষ বেঁচে থাকতে পারে সেই তথ্য আমাদের কাছে নতুন নয়। শুধু সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে তাই নয়, চাইলে বিভিন্ন কাজ, এমনকি কর্মক্ষম অঙ্গও তৈরি করতে পারে বলে সাম্প্রতিক সময়গুলোতে আমরা দেখেছি! এমনকি একদম সাম্প্রতিক সময়ের কৃত্রিমভাবে বৃদ্ধি করা মাংসের বাজারে আসার খবর শুনেছেন। সেটা নিয়ে এই লেখাটা পড়ে দেখতে পারেন। সেটাও মুরগির পেশীর এরকম এক সেল লাইন বা কোষধারা দিয়ে তৈরি করা হয়েছিলো। এভাবে পৃথিবীর বিভিন্ন গবেষণাগারে বহু ধরনের কোষধারার অস্তিত্ব আছে। কোষধারা হলো কোন নির্দিষ্ট ধরনের কোষকে কৃত্রিমভাবে বিকাশ ঘটিয়ে জিনগত পরিশুদ্ধতা বজায় রেখে জিইয়ে রাখা। এরকম পেশিরা কোষধারা, বিভিন্ন ক্যান্সারকোষের কোষধারা, ভ্রূণের কোষধারা, নিধিকোষের কোষধার ইত্যাদি বহুরকম কোষধারা রয়েছে। এখন প্রশ্ন হলো, এতো বিচিত্র কোষধারাকে দেহের বাইরে বাঁচিয়ে রাখারা পদ্ধতি কিভাবে আরম্ভ হলো? সেই গল্প বলছি আজকে।

সিডনি রিংগার নামের একজন বিলেতি ডাক্তার এবং ওষধবিজ্ঞানী শারীরতাত্ত্বিক গবেষণার জন্য ব্যাঙ ব্যবহার করতেন। তিনি দেখতে চাইতেন যে জীবের শরীর থেকে কোন অঙ্গকে বের করে আনার পরও সেটা জীবিত থাকে কিনা। তাহলে নষ্ট হয়ে যাওয়া কোন মানুষের অঙ্গকে প্রতিস্থাপিত করা যেতে পারে। ১৮৮২ সালের একদিন এই সরীসৃপের হৃৎপিন্ডকে তিনি দেহের বাইরে বের করে আনলেন, যে হৃৎপিন্ডটি তখনও ধুকপুক করছিলো। এই ধুকপুকে জীবিত হৃৎপিন্ডের জন্য যে কৌশলটি নিতে হয়েছে সেটা হলো একধরনের স্যালাইন বা দ্রবণের ব্যবহার। কিছু অজৈব লবণের সাথে গ্লুকোজ ইত্যাদি মিশিয়ে হৃৎপিন্ডকে সরবরাহ করা হয়েছিলো। এটাই আসলে কৃত্রিমভাবে কোষকে বাঁচানো এবং টিকিয়ে রাখার জন্য তৈরি কোষ লালন মাধ্যমের প্রথম উদাহরণ।

কোষের লালন মাধ্যম আসলে দেহের ভেতরে যেমন পরিবেশ থাকে সেরকম একটি দ্রবণ তৈরি করা, যা দেহের পরিবেশকে নকল করে। অম্লতা, ঘণত্ব, অভিস্রবন চাপ ইত্যাদিকে কোন কোষ বা কলার জন্য সুখকর করে তোলে। এভাবে বেশ কয়েকদিন এই মাধ্যমে কোষ বেঁচে থাকতে পারে।

লসিকা স্নায়ুকোষকে বংশবৃদ্ধি করায়

এই পথে তারপরের গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাটি হয়েছিলো ১৫ বছর পরে। রস গ্র্যানভিল হ্যারিসন (১৮৭০-১৯৫৯) এক ব্যাঙাচির স্নায়ুতন্তুকে পূর্ণবয়স্ক ব্যাঙের তাজা লসিকা রসে ছেড়ে দিয়ে দেখলেন যে স্নায়ুকোষগুলি কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত বেঁচে থাকছে। লসিকা রস হলো প্রাণীর দেহে থাকা একধরনের স্বচ্ছ তরল যাতে রক্তকণিকা ভেসে বেড়ায়। এইভাবে, এই আমেরিকান জীববিজ্ঞানী কেবলমাত্র নিউরনগুলিকেই বাঁচিয়ে রাখতে সক্ষম হননি, এমনকি কয়েক সপ্তাহ ধরে সেগুলি বংশবৃদ্ধি করাতেও সক্ষম হয়েছিলেন। এই পরীক্ষাটি প্রাণী কোষের লালন মাধ্যম পরীক্ষার জন্মলগ্ন হিসেবে বিবেচিত করা চলে। রস হ্যারিসন এই আবিষ্কারের জন্য মোট ১৫ বার মেডিসিন ও ফিজিওলজিতে নোবেল পুরস্কারের জন্য মনোনীত হন, কিন্তু প্রতিবারই খালি হাতে ফেরেন।

তবে রক্তনালীর শল্য চিকিত্সার ক্ষেত্রে যুগান্তকারী আবিষ্কারের জন্য ১৯১২ সালে অ্যালেক্সিস ক্যারেলকে এই পুরষ্কার প্রদান করা হয়েছিল। ১৮৭৩ সালে জন্মগ্রহণকারী ফরাসি এই ডাক্তার এবং জীববিজ্ঞানী বহু বছর ধরে তার "প্লাজমেটিক মিডিয়াম" মানে মূলতঃ "লসিকা লালন মাধ্যম" দিয়ে কোষ লালন মাধ্যমের গবেষণার ক্ষেত্রে আধিপত্য করেছিলেন। এটি একটি লবণের দ্রবণ উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছিল যা ক্যারল মুরগির রক্তের লসিকা এবং মুরগির ভ্রূণের একটি নির্যাসের সাথে মিশ্রিত করে বানিয়েছিলেন। নিয়মিতভাবে কোষবৃদ্ধির মাধ্যম প্রতিস্থাপন করে তিনি প্রাথমিকভাবে দীর্ঘ সময় ধরে মুরগির ভ্রূণের হৃৎপিন্ডে যোজক কলার কোষ এবং পরে স্তন্যপায়ী প্রাণীর কোষগুলি চাষ করতে সক্ষম হন।

কোষ লালনে স্নায়ুকোষ কেমন জীবিত দেখতে পারেন নিচের ভিডিও থেকে। একটি কোষ আরেকটির সাথে যোগাযোগ করছে, ঠিক আমাদের মস্তিষ্কের মতোই।

একজন দুষ্ট যুগন্ধর

বিজ্ঞানী হিসাবে ক্যারেলের কৃতিত্বগুলি নিয়ে কোন বিতর্ক নেই। তবে ১৯৩৫ সালে তার প্রকাশিত প্রধান বই "ম্যান, দ্য আননোওন" এ তিনি একজন এমন বর্ণবাদী হিসেবে আবির্ভূত হন যিনি স্পষ্টভাবে জার্মান নাৎসিদের ইহুথানসিয়া/খোঁজা করে দেয়া আদর্শকে প্রশংসা করেছিলেন এবং বিশেষভাবে যুক্তি দিয়েছিলেন যে, “ত্রুটিযুক্ত, মানসিকভাবে অসুস্থ এবং অপরাধীদের বংশবৃদ্ধি" রোধ করা উচিত উপযুক্ত গ্যাস (নাৎসীদের চালানো বিষাক্ত গ্যাসের পরীক্ষার কথা জানেন নিশ্চয়ই) ব্যবহারের মাধ্যমে। অ্যালেক্সিস ক্যারেল ১৯৪৪ সালে প্যারিসে মারা যান; ১৯২১ সালে মুরগির ভ্রূণ থেকে তৈরি করা লালনমাধ্যমে বৃদ্ধিকরানো হৃদকোষগুলি তার চেয়েও দুইবছর বেশি বেঁচে ছিলো!

যাই হোক, এই সাফল্যের পরবর্তী ধাপ অবশ্যম্ভাবী ভাবেই হলো নকল লসিকা তৈরি করা। যেমন, কিছু দ্রবণ যেখানে গ্লুকোজকে পুষ্টি উৎস হিসেবে কিছু অজৈব লবণের সাথে মিশিয়ে তৈরি করা হয়েছিলো। সেই থেকেই লবনের ঘণত্ব, পিএইচ (অম্লত্ব এবং ক্ষারত্ব নির্দেশক) মান, অভিস্রবণ চাপ এগুলিকে শারীরতাত্ত্বিক দ্রবণের মতো করে তৈরি করার পরীক্ষা চলেছে। কোন কোষ এবং কলা কোন দ্রবণে বেশিদিন সুস্থভাবে বেঁচে থাকে সেগুলি খুঁজে বের করা হয়েছে।

হ্যারি ঈগল এবং কোষগুলির প্রধান খাদ্য

ক্যারেলের ""লসিকা লালন মাধ্যম" ১৯৫০ সাল অবধি আদর্শ মান হিসাবে রয়ে গিয়েছিল এবং ক্যারেল যে রহস্যগুলো রেখে গিয়েছিলেন দেহের বাইরে কোষকে বাঁচিয়ে রাখার মতো কৃত্রিম লালন মাধ্যম তৈরিতে তার জাল কেবল অল্প অল্প করেই খুলছিলো: রক্তের লসিকা বা রক্তরস এবং ভ্রূণের নির্যাসের কোন পদার্থটুকুর প্রয়োজন হয় গবেষণাগারে কোষকে বৃদ্ধি করাতে? তাদের পুষ্টির চাহিদাগুলি আরও স্পষ্টভাবে বর্ণনা করা প্রথম ব্যক্তিদের একজন হলেন হ্যারি ঈগল (১৯০৫-১৯৯২)। নিউ ইয়র্কের জন্মগ্রহণকারী এই চিকিৎসক এবং শারীরতাত্ত্বিক আবিষ্কার করেছেন যে অ্যামিনো অ্যাসিড এবং ভিটামিন একটি বড় তালিকা প্রাণী এবং মানব উভয় কোষকে বাঁচিয়ে রাখতে অপরিহার্য। এই আবিষ্কারগুলির ভিত্তিতে ১৯৫০ এর শেষে ন্যাশনাল হেলথ ইনস্টিটিউটে তিনি "ঈগলের ন্যূনতম প্রয়োজনীয় মাধ্যম" (Eagle’s Minimal Essential Medium) আবিষ্কার বা উৎপাদন করেন। এই মাধ্যমের মধ্যে গ্লুকোজ, ছয়টি অজৈব লবণ, ১৩ টি অ্যামিনো অ্যাসিড, আটটি জল-দ্রবণীয় ভিটামিন এবং ছাঁকন করা রক্তরস রয়েছে।

হ্যারি ঈগল তাঁর তৈরি জীবন্ত কোষের চাষ করানোর শিল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন বলা চলে। তাঁর নাম কৃত্রিমভাবে কোষ বংশবৃদ্ধি পদ্ধতির সাথে ওতোপ্রতভাবে জড়িত। প্রায় ৭০ বছর পরে আমরা এখনও গবেষণাগারে ঈগলের এই মাধ্যমকে ব্যবহার করি। তাদের মধ্যে কিছু কিছু মাধ্যমকে কিছুটা সংশোধিত, উন্নত করে কোন নির্দিষ্ট ধরণের কোষের জন্য বিশেষভাবে উপযুক্ত হিসেবে তৈরি করা হয়েছে পরবর্তীতে - যেমন "ডালবেক্কোর পরিবর্তিত ঈগল মাধ্যম" (Dulbecco‘s Modified Eagle Medium), যা ইতালীয়-আমেরিকান ক্যান্সার গবেষক এবং চিকিৎসায় নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রেনাটো ডালবেক্কো সহোৎপাদন করেছিলেন।

প্রয়োজনের ভিত্তিতে-তৈরি লালন মাধ্যমের দিকে অগ্রসর

প্রথম সম্পূর্ণ কৃত্রিম সংশ্লেষিত পুষ্টি দ্রবণটি ১৯৬৫ সালে রিচার্ড জি হ্যাম তৈরি করেন কলোরাডো বিশ্ববিদ্যালয়ে। তবে, "Ham’s F12" মাধ্যমটি কেবল সিএইচও (CHO) কোষের জন্য কাজ করতো। সিএইচও কোষ হলো চীনা হামস্টারের ডিম্বাশয়ের একটি কোষধারা। এই লালন দ্রবণটিতে অন্যান্য ধরণের কোষকে চাষ করানো খুব কঠিন প্রমাণিত হয়েছিল। ১৯৭০-এর দশকে, রক্তরসমুক্ত, সংশ্লেষিত লালনমাধ্যমগুলির বিকাশ তারপরে বেশ অনেকদূর এগিয়েছে। গবেষকগণ ক্রমবর্ধমানভাবে আরও ভাল ধারণা অর্জন করেছেন যে কোন প্রাকৃতিক পরিবেশের বাইরে কোষবৃদ্ধি এবং বিকাশের জন্য কী কী "বৃদ্ধি উপাদান" (growth factors), হরমোন, ভিটামিন এবং স্বলপরিমান তবে প্রয়োজনীয় উপাদানগুলি (trace elements) সনাক্ত করতে হবে। এবং কোষের ধরণের উপর নির্ভর করে এর প্রয়োজনগুলি পৃথক হতে পারে।

আজকের দিনে, বিক্রয়যোগ্যভাবে প্রস্তুত বিভিন্ন প্রবৃদ্ধি বা লালন মাধ্যম রয়েছে, প্রত্যেকটি বর্তমানে গবেষণাগারে ব্যবহৃত কোষধারাগুলির জন্য উপযুক্ত করে বানানো হয়েছে। রোগের অধ্যয়নের জন্য, চিকিত্সার নির্ণয়ের জন্য, টিকা এবং রক্তরস তৈরি করতে, বা প্রজনন চিকিৎসায় - ইত্যাদি বহু গুরুত্বপূর্ণ গবেষণায় কৃত্রিমভাবে কোষকে বাঁচিয়ে রাখার এই পদ্ধতি, কোষধারা, লালন মাধ্যম ইত্যাদি অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। সেই সিডনি রিংগার দিয়ে শুরু হওয়া লালনমাধ্যমগুলির বিবর্তন ছাড়া এটি কখনই সম্ভব হত না।

এসব জেনে লাভ কী?

আমরা যে কতো ভালভাবে আমাদের দেহের বাইরেই কোষকে জীবিত রাখতে পারি সেটা তো বুঝেছেন। মানে হলো একটা প্রাণকে প্রাণ হতে হলে কোন দেহের মধ্যে আবদ্ধ থাকতে হয়না। কোষের বাইরেও পর্যাপ্ত পরিবেশ পেলে এরা টিকে থাকে। তবে দেহের বাইরে টিকে থাকার মতো করে অভিযোজিত হওয়ার কোন প্রয়োজন পরেনাই বলে কোষের বাইরে ছেড়ে দিলেই অনেকক্ষণ ধরে টিকে থাকতে পারেনা। নির্দিষ্ট পরিবেশে রাখতে হয়। এককোষী জীবেরা বাইরেই টিকে থাকার মতো করে বহু কোটি বছর ধরে অভিযোজিত, বিবর্তিত।

তবে আমি মূল যে কথাটা বলতে চাচ্ছি তা হলো প্রাণের সংজ্ঞায়ন কিভাবে করবেন তাহলে? বহুকোষী জীবটা প্রাণ না বহুকোষী থেকে পাওয়া কোষটা প্রাণ? উত্তর হলো - দুটোই। দুটো দুই স্তরে সংঘবদ্ধ রসায়ন দেখাচ্ছে যেটাকে আমরা প্রাণ বলছি।


লেখাটা মূলতঃ তৈরি করেছি এই লেখাটির ওপর ভিত্তি করে। আরও বিস্তারিত জানতে চাইলে লেখাটির শেষে দেয়া তিনটি সূত্র অনুসরণ করতে পারেন।

https://handling-solutions.eppendorf.com/cell-handling/about-cells-and-culture/detailview/news/history-of-cell-culture-growth-media/?utm_source=facebook&utm_campaign=cell-handling-campaign&utm_medium=Eppendorf+Group


আগের পর্ব:
১। জীবনের সংজ্ঞা
২। আত্মাহীন রসায়ন
৩। বিশ্বভরা প্রাণ!
৪। আরএনএ পৃথিবীর আড়ালে
৫। শ্রোডিঙ্গারের প্রাণ!
৬। প্রথম স্বানুলিপিকারকের খোঁজে
৭। প্রাণের আধ্যাত্মিক সংজ্ঞার পরিসর দিন দিন ছোট হয়ে আসছে
৮। ত্বকের কোষ থেকে কিভাবে পূর্ণাঙ্গ মানুষ তৈরি করবেন
৯। গবেষণাগারে কিভাবে প্রাণ তৈরি করছেন বিজ্ঞানীরা
১০। সম্পূর্ণ সংশ্লেষিত জেনোম দিয়ে প্রথমবারের মতো ব্যাকটেরিয়া সৃষ্টি: এ কি কৃত্রিম ব্যাকটেরিয়া তৈরি হলো?
১১। প্রাণ কী ১১: উল্কাপিণ্ডে প্রথমবারের মতো প্রোটিনের উপস্থিতির প্রমাণ


মন্তব্য

অনার্য সঙ্গীত এর ছবি

আমি খুব পড়াশোনা করে দেখিনি, তবুও একটা "খানিকটা আন্দাজের" মন্তব্য করার লোভ সামলাতে পারলাম না। ঈগলের এমইএম, আর ডালবেক্কোর ডিএমইএম (যদিও উপাদানের হিসেবে দুটাই বেশ কাছাকাছি মাধ্যম, শুধু পরিমাণ কমবেশি) দুটাই দশক দশক ধরে এতো বেশি সফল যে কেউ নতুন কিছু করার সেরকম চেষ্টা করেনা। আর তাছাড়া মাধ্যমগুলো তেমন খরুচেও না, তাই নতুন মাধ্যম বানাতে বিশেষ খাটাখাটনি করার দরকার হয়না।

অথচ, ঈগলের মাধ্যম যে আসলেও নূন্যতম প্রয়োজনিয় উপাদানগুলো দিয়েই বানানো, সেই প্রমাণ কই? এরচে কম (সংখ্যায় এবং পরিমাণে) উপাদানেও হয়তো কোষ বেঁচে যেত। হয়ত নির্দিষ্ট কিছু কোষ ভালোরকম বাঁচত, বাড়ত।

খানিকটা গবেষণা হয়/হয়েছে বরং ফিটাল সেরামের (ভ্রূণ-রস?) বিকল্প খোঁজায়। তাতে রসায়নিকভাবে নির্দিষ্ট (কেমিকালি ডিফাইনড) মাধ্যম তৈরি হলেও তার ব্যবহার বেশ সীমিত। এইক্ষেত্রে গবেষণার বিস্তীর্ণ দূয়ার খোলা বলে আমার মনে হয়। ১ লিটার ভ্রূণরসের দাম ১ লাখ টাকা বলে দিলে হয়তো মানুষের ভ্রূণরসের বোতলও পাওয়া অসম্ভব হবেনা স্বল্পোন্নত দেশে!

______________________
নিজের ভেতর কোথায় সে তীব্র মানুষ!
অক্ষর যাপন

সজীব ওসমান এর ছবি

আসলে সব কোষের জন্য ব্যবহার করা যায়না। একটা জিনিস খেয়াল রাখা যায় যে লালন কোষদের মধ্যে দুই তিনটা ধারার কোষকে (কোষধারা) নিয়েই বেশিরভাগ গবেষণা হয়। সেজন্য বলা চলে সব কাজের কাজি এই দুই মাধ্যম। সাথে আরপিএমআই যোগ করে নিতে পারেন। বিরল বিশেষায়িত কোষগুলার ক্ষেত্রে বাড়তি উপাদান লাগে।

নিশ্চয়ই আরও কম উপাদান লাগতে পারে কোষের। তবে কোষও তো বিভিন্ন ধরনের হয়, তাদের নূন্যতম চাহিদাও ভিন্ন হতে পারে। মজার ব্যাপার হবে এইটা খুঁজে বের করা যে কোন কোষের জন্য কতগুলা নূন্যতম উপাদান প্রয়োজন।

ভ্রূণরসের বিকল্প খুঁজে ব্যবসা শুরু করতে হবে দেখছি!

অবনীল এর ছবি

বহুকোষী জীবটা প্রাণ না বহুকোষী থেকে পাওয়া কোষটা প্রাণ? উত্তর হলো - দুটোই। দুটো দুই স্তরে সংঘবদ্ধ রসায়ন দেখাচ্ছে যেটাকে আমরা প্রাণ বলছি।

উত্তম জাঝা!

আস্তে আস্তে একটা বইয়ের আকার নিচ্ছে ব্লগ সিরিজটা। সামনে কোন বইমেলায় বই আকারে পেলে আসলেই খুব ভালো লাগবে। অনেক শুভকামনা।

___________________________________
অন্তর্জালিক ঠিকানা

এক লহমা এর ছবি

বরাবরের মতই - চমৎকার লাগল।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

সোহেল ইমাম এর ছবি

চলুক

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।