কিছুদিন আগে আয়নায় প্রথম খেয়াল করলাম মাথায় অনেকগুলো কালো চুলের ভীড়ে ঠিক একটা শাদা চুল। বাঁ কানের উপরে লুকিয়ে ছিল, কিন্তু ব্যাটা আমার চোখ এড়াতে পারেনি। চুলটা দেখে অটোম্যাটিক আমার শ্রদ্ধেয় পিতাজীর কথা মনে পড়ে গেলো। আশির দশকের গোড়ার দিকে নাখালপাড়ার এক চিলতে জমিটার উপর একটা স্থায়ী আবাস গড়তে গিয়ে আমার বাবার অবয়বে এক আমূল পরিবর্তন ঘটেছিল। ১৯৮২ সালে তার মাথা জুড়ে ছিল নিকষ কালো চুলের এক ঈর্ষণীয় সমাহার। তিন বছর পরে বাড়ি বানানোর তুমুল ধকল যখন একা হাতে সামাল দিয়ে যাচ্ছেন -- চার তলার প্ল্যানের দুই তলাও ঠিকমতো কমপ্লিট হয়নি -- তখন দেখা গেল তার সমস্ত চুল ধবধবে শাদা হয়ে গেছে। বয়স তখনো ৪০ পেরোয়নি, কিন্তু শুধুমাত্র তার চুল দেখে নির্দ্বিধায় আরো দশ বছর জুড়ে দেয়া যেতো।
বাবার মত হিসাবী বা বৈষয়িক কখনো হতে পারলাম না। অবশ্য তার মতো এতোগুলো দায়িত্বও কখনো আমার ঘাড়ে চাপেনি। তারপরেও মনে হয় যে ইদানীং নানা কারনে বেশী স্ট্রেস করছি। এভাবে চলতে থাকলে এক চুল থেকে এক মাথা হবে। কাজ-টাজের ফ্যাঁকড়া তো আছেই। ব্যস্ত শহরে ব্যস্ত জীবনের নানান চাহিদা আছে - কোন সন্ধ্যাতেই সময়মতো বাসায় ফেরা তো দূরের কথা, মাঝরাতের আগে ঘরে ঢোকা হয় না। ঘরটা এখন শুধু রাত্তিরে একটা শোবার স্থানে পরিণত হয়েছে। হাউজমেটদের দেখা মেলে কালে-ভদ্রে।
আর তার উপরে আছে নিজের ইনফরমেশন মেনিয়া। এই দোষটা চিরকালের। যেই আমলে ইন্টারনেট আর গুগল ছিল না, যেই সময় আমার বন্ধুরা জাঁকিয়ে প্রেম করেছে, সংস্কৃতি চর্চা করেছে, টিউশনি করেছে বা স্রেফ আইবিএ-টিএসসিতে আড্ডা মেরে অপূর্ব সুন্দর সব বিকেল পার করে দিয়েছে, সেই আমলে আমি প্রায়ই পড়ে থাকতাম রমনার বিভিন্ন চিপা-কাঞ্চির লাইব্রেরীগুলোতে, মনের নানা রকম জবাব-না-মেলা প্রশ্নের উত্তরের সন্ধানে।
হোক সে পাঠাগার জীর্ণ বা ঝকঝকে। ধুলোয় মোড়া শেলফের ততোধিক ধূলি-ধূসরিত বই আর জার্নাল আর এনসাইক্লোপিডিয়া সংগ্রহগুলো নামিয়ে যখন দেখতাম যে হাতে উঠে এসেছে ব্রিটানিকার ১৯১১ সালের এডিশন বা রিডার্স ডাইজেস্টের ১৯৩৩ সালের সংকলন - এই তো এডোলফ হিটলার-কে নিয়ে লেখা একদম কারেন্ট আর্টিকেল!!! - তখন চিত্তে যে পুলক অনুভব করতাম, স্বয়ং ক্রিস্টোফার কলম্বাস প্রথম আমেরিকা দর্শন করে সেই পুলক অনুভব করেছিলেন কিনা সন্দেহ।
কত বিকালের কথা মনে পড়ে - লাইব্রেরী বন্ধ করার শেষ ঘন্টা বেজেছে - চিকা যেমন চোখ পিতপিত করতে করতে অন্ধকার গর্ত থেকে বেরোয়, ঠিক তেমন লাইব্রেরীর অন্ধকার গুহা থেকে বেরিয়ে আমি উঠেছি শাহবাগের চক্করে বা ফুলার রোডের উপরে কিম্বা নজরুলের মাজারের সামনে। দেখি বিকেলের মনোরম রোদ, শুনি নিঃসঙ্গ কাকের কা-কা, রিকশার টুংটাং ধ্বণি। এই তো যুবক-যুবতীরা বিদ্রোহী কবির আহবানে তারই কবরের উপর বসে প্রেম করছে। বাদামওয়ালা তাদের বিরক্ত করছে, টিএসসির ওদিক থেকে সাংস্কৃতিক কর্মকান্ড কিম্বা রাজনৈতিক সমাবেশের শব্দ ভেসে আসছে। আর এদিকে আমি ভাবছি, আজকে কি গো-এষণা করলাম, নতুন কি ঘেঁটে বের করলাম।
প্রায়ই সেটাও শেষ স্টপ হতো না - পা চালিয়ে সোজা চলে যেতাম নীলক্ষেতের পুরান বইয়ের দোকানে - নতুন কি বই এসেছে এক ঝলক দেখে যাই, টাকা নেই তো কি হয়েছে, বাসি একটা পত্রিকা তো কিনতে পারবো ৫ টাকা দিয়ে - আর অন্য দিকে গেলে চলে যেতাম বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রে, আরেকবার বইগুলোর উপর চোখ বুলিয়ে তারপরেই বাড়ি ফেরা।
মাগরেবের আজান তখন যায় যায়, মায়ের প্রশ্ন - তোর ক্লাস শেষ হইসে কখন? এতো দেরী হইলো ক্যান? সারাদিন কই আসিলি?
কিউরিয়সিটি বিড়াল মারে কি না জানি না, কিন্তু সেই স্বর্ণযুগের অনেকগুলো দুপুর-বিকাল যে আমার মেরে দিয়েছিলো, সেটা নিশ্চিত। এখনো সেই কিউরিয়সিটি গেল না - সারা জীবনের রোগ। কপাল ভালো যে এখনকার চাকরিতে সকাল বিকাল পেপার পড়াটাও কাজেরই একটা অংশ!
*
অবশ্য বই ছাড়া তেমন অপশনও ছিল না। বাবা-মা দুজনই বিশেষ ধর্মপ্রাণ - বাসায় কেবেল টিভি নেই, নেই ভিসিআর, এমনকি শালার টিভিটাও ১৯৯৯ সালের আগে পর্যন্ত শাদা-কালোই থেকে গিয়েছিল। মিউজিক শোনাতে মায়ের আপত্তি ছিল। একবার কি না কি হলো - আশির দশকের মাঝামাঝি সময়ের কথা - আদ্দিকালের টু-ইন-ওয়ানে কি এক গান বাজছে, আজান দিয়ে দিয়েছে এর মধ্যে, আম্মা কয়েকবার নামাজের কথা বলেছেন, আমরা ভাইয়েরা গরিমসি করছি - হঠাৎ হন্তদন্ত পায়ে ঘরে ঢুকে আম্মা ক্যাসেট প্লেয়ারটা আকাশে তুলে সজোরে আছাড় দিলেন। গেলো আমাদের ক্যাসেট শোনার খায়েশ। ভাগ্যিস আমার জাপান-প্রবাসী সবুজ ভাইয়া ক্লাস টেনে পড়ার সময় একটা সনি ওয়াকম্যান পাঠিয়েছিলো!
তবে আছাড় খাওয়ার পরেও অন্তত রেডিওটা কাজ করতো। সেটাতে শুনতাম ওয়ার্ল্ড সার্ভিসে টেস্ট ম্যাচের কমেন্ট্রি - আটাশির ওয়েস্ট ইন্ডিজ বনাম ইংল্যান্ড, বল করে যাচ্ছেন মার্শাল, উইকেট নিয়ে যাচ্ছেন টপাটপ পুরো সামার জুড়ে... অথবা তারও কয়েক বছর পরে অস্ট্রেলিয়া থেকে ট্রান্সমিশন - হিয়ার্স ম্যাগ্রা, বোলিং টু টেন্ডুলকার...
যাই হোক, এই কারনে বিদেশে আসার আগে বেশী গান শোনা হয়নি। বাংলা ব্যান্ড খুব প্রিয় ছিল - ওয়ারফেজ, ফিডব্যাক, জেমস, মাইলস। সুমন, নচিকেতাও একই। আর বাপের কল্যাণে মান্না, হেমন্ত, শ্যামল আর লতা। কিন্তু বিদেশী সঙ্গীতের সাথে বলতে গেলে পুরোপুরিই অপরিচিত ছিলাম।
*
আমেরিকা যখন পৌঁছালাম, তখন হাতের পাঁচ মিনিট কাছে পেলাম বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশাল লাইব্রেরী, সেখানে রুমের পরে রুম শুধু সিডি কালেকশান। যেন আলী বাবার গুহা - শুধু মিউজিক পাওয়া যায় এখানে! সেই লাইব্রেরী থেকে এন্তার সিডি নিয়ে এসে, বন্ধুদের থেকে ধার-টার করে অনেক অনেক নতুন মিউজিক শোনা হলো এর পরের কয়েকটি বছর।
ইন্ডিয়ানার তুষারে বন্দী অবস্থায় শুনেছিলাম সেজারিয়া এভোরা-র বিষাদমাখা মোর্না আর লিসা এক্ডাল-এর নর্ডিক সংস্করণের জ্যায্। পিংক ফ্লয়েডের ডার্ক সাইড অফ দ্য মুন প্রথমবার ভালো করে শোনার পরে বিশেষ ঘোরগ্রস্ত অবস্থায় ভেবেছিলাম - এই জিনিস আমি এতো বছর পরে আবিষ্কার করলাম? হারানো বছরগুলোর মাশুল দেওয়ার জন্যেই হয়তো ফ্লয়েডের সেই এলবাম এর পরে শুনেছিলাম মাসের পর মাস, অনবরত রিপিট দিয়ে, ৪৫ মিনিটের প্রতিটা নোট মগজের শিরায় উপশিরায় মিশে যাওয়া না পর্যন্ত।
ক্রাউডেড হাউজ-এর 'ডিস্ট্যান্ট সান' শুনে বিচলিত হয়েছিলাম - কারন সেই সুরে ভেসে আসতো ভূলে যাওয়া পুরানো স্মৃতি, নতুন করে আমাকে তাড়িয়ে বেড়াতো। বিদেশে আমার সবচেয়ে অনটন আর কষ্টের সময়ে আমার পাশে ছিল আইরিশ বাউল ভ্যান মরিসন তার হৃদয়-নিংড়ানো 'মুনড্যান্স' এলবাম নিয়ে। ক্যালকুলাসের অংক করতাম, এর পরের মাসের ভাড়া কিভাবে দেব সেই দুশ্চিন্তায় ডুবে থাকতাম -- আর ভ্যানের গান শুনে শক্তি-সাহস না পেলেও নিদেনপক্ষে আশা আর আশ্বাস পেতাম। ভ্যান কখনোই জানবে না আমার কৃতজ্ঞতার কথা।
যখন মাইকেল জ্যাকসনের থ্রিলার শুনলাম, তখন সেই মিউজিকের ১০০%-প্রুফ আনন্দ আমার বেয়াড়া পা-কে নিজের অজান্তেই নাচিয়ে ছাড়লো। ইউকে-তে আসার পরেও একইভাবে আনন্দ দিয়েছে আউটকাস্ট বা এমিনেম, সমবেদনার সাথী হয়েছে এল্টন জন বা নোরা জোন্স।
বিভিন্ন সময়ে শোনা সঙ্গীতের কাছে ঋণগুলো থেকে যায়। যদিও বা অনেক বছর পরে যখন সেই একই গান শুনি, একইভাবে হয়তো সেটা আর আমাকে আন্দোলিত করে না, কিন্তু অতীতের একটা স্থান আর কালের উপর যে দাগ রেখে গিয়েছিল, সেটা কখনো মোছে না।
*
দুনিয়ার সব আলতু-ফালতু সিরিয়াস লেখা লিখে লিখে কীবোর্ড পচিয়ে ফেলেছি। আজকে তাই একটা নিরেট সুখের পোস্ট দিতে ইচ্ছা করলো। নীচে আমার খুব প্রিয় এক ডজন গান জুড়ে দিলাম, প্রথম শোনার সিরিয়াল অনুসারে। অনেকগুলোই ৭০-৮০র দশকের 'ক্লাসিক রক' ঘরানার, আর আছে কিছু সুরেলা কন্ঠী গায়িকা।
1. Dire Straits - Tunnel of Love
Album - Making Movies
2. Cesaria Evora - Besame Mucho
Album - Great Expectations OST
3. Lisa Ekdahl - Nature Boy
Album - Back to Earth
4. Crowded House - Distant Sun
Album - Recurring Dream
5. Eminem - Stan
6. Van Morrison - Into the Mystic
Album - Moondance
http://www.deezer.com/track/910437
ভ্যানের অরিজিনাল গান ইউটিউবে পাওয়া প্রায় অসম্ভব মনে হলো। তাই ডিজার লিংক দিলাম।
7. The Eagles - Take It Easy
Album - Greatest Hits 1971-1975
8. Pink Floyd - The Great Gig in the Sky
Album - Dark Side of the Moon
9. Michael Jackson - Billie Jean
Album - Thriller
10. Elton John - Goodbye Yellow Brick Road
Album - Goodbye Yellow Brick Road
11. Norah Jones - I've Got to See You Again
Album - Come Away With Me
12. John Mayer - Gravity
Album - Continuum
মন্তব্য
আপনের আর আমার পছন্দের ঘরানা একটু কাছাকাছি মিলসে। পিংক ফ্লয়েড, ঈগলস, মাইকেল জ্যাকসন খুব পছন্দের। এলটন জন আর জন মেয়ারের কয়েকটা গান বেশ ভাল লাগে। নোরা জোন্স শুনলে ঘুম পায়, গলায় কোন ভ্যারিয়েশন নাই।
আহা এমন কথা বললেন, মনে বড় দাগা দিলেন হে! নোরা জোনস শুনে এত ভালো লাগে যে একবার একটা পোস্ট দেব ভেবেছিলাম।
তানভীর মিয়ার কথায় পিছ পা হইয়েন না! নোরা আমারও খুব ভালো লাগে, বিশেষ করে যেই গানটা দিলাম, সেইটার কথাগুলো, ইমোশনগুলো, বেশ নাড়া দেওয়ার মতো। তবে এটা ঠিক যে প্রথম রিলিজ হবার পর নোরা'র 'কাম এওয়ে উইথ মি' গানের জ্বালায় কোথা যাওয়া যেতো না। দোকানে, সুপারমার্কেটে, শপিং মলে সবখানে এই গানটা বাজতো ২০০২-০৩ সালের দিকে।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
পাঠক ভাই, ইশ...আহা, দাগা দিলাম নাকি! পোস্ট অবশ্যই দেবেন। নোরা জোন্সকে তো খারাপ বলি নাই...কিন্তু সব গান একই ধাঁচের লাগে- এই যা...সুবিনয়দা ঠিক বলছেন- 'কাম এওয়ে উইথ মি' বের হওয়ার পরে আকাশে-বাতাসে 'ডোন্ট নো হোয়াই আই ডিডন্ট কাম'-এর জ্বালায় মেজাজ খারাপ হয়ে গেসিল। তারপর শুরু হইল 'সানরাইজ'...শুনতে না চাইলেও রেডিওওয়ালারা জোর করে শুনায়।
আমাদের বন্ধুদের ক্রিকেটদলে আটজন থাকতো। তার সাতজন মাঠে খেলতো আর একজন মাঠের পাশে বসে ঢাউস উপন্যাস নিয়ে বসে থাকতো। সেটাই তার খেলার দৌড়। প্রতি শীতের আগে প্রচণ্ড জ্বর হতো। মাথা ব্যথায় ঘর ছেড়ে বেরিয়ে যেতাম। হাঁটতে হাঁটতে আমাদের বগুড়ার শ্মশানে কিংবা উডবার্ন পার্কে গিয়ে বই নিয়ে বসতাম। আহা উডবার্ন, সেই প্রাচীন, স্যাঁতসেঁতে, খয়েরি আলোর পাঠাগারটি। শামসুর রাহমানের একটি কবিতার বই চুরি করেছিলাম ওখান থেকে।
আপনার লেখার সুর আর গানের সুর, দুই-ই দুলিয়ে গেল। ভালই, আজ বাইরেও খুব বাতাস। কী বলেন, বেরিয়ে পড়া যায় না?
হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।
আসলেই। সেই আমলে লাইব্রেরী আর জান্নাতুল ফেরদৌসের মধ্যে কোন পার্থক্য চিনতাম না। পড়ার অভ্যাস/সময় অনেক কমে গেছে, সেটাই আফসোস।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
নাহ্... সচলায়তনে ঢুকা বন্ধ কইরা দিতে হইবো। এখানকার লোকজন খালি অতীতে ফিরায়া নিয়া যায়। ফিরায়া নিয়া যায় দারুণ কৈশোরের দিনগুলাতে... আর মনে করায়ে দেয় যে মাথার চুলের অনেকটা অংশই এখন সাদা হয়ে গেছে...
গানের পছন্দে আমারও কিছুটা মিল আছে। কিছু কিছু শুনি নাই...
আপনার এই পোস্টটা আমি একেবারে পানির মতো সহজে বুঝতে পারছি...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
আপনার এই পোস্টটা আমি একেবারে পানির মতো সহজে বুঝতে পারছি
হাহাহা এই পোস্ট তো তাইলে পুরাই বিফলে গেল! দাঁড়ান কিছু ইকনমিক্সের ইকুয়েশান ঢুকাইতেছি...
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
কোন গাছে যে ঝাকা দিলেন, ভাই... টুপটাপ সব প্রিয় গান পড়ছে একের পর এক। পছন্দ মিলে গেল। মিলতে তো হবেই, অবশ্য। এঁদের গান শুনলে পছন্দ হতেই হবে।
বেসামে মুচো! কত্তদিন পর যে শুনলাম। দিলেন আমার গানবন্দীর একটা পর্ব মেরে।
রবীন্দ্রসঙ্গীত, পিঙ্ক ফ্লয়েড, আর ডায়ার স্ট্রেইটস... এইগুলো আমি একবার শুনলে এক সপ্তাহ এগুলোর উপরই থাকি। দিলেন একটা সপ্তাহের জন্য কাবু করে!
হোটেল ক্যালিফোর্নিয়া সবার প্রিয়, কিন্তু আমার কাছে টেক ইট ইজি আরো অনেক বেশি ভাল লাগতো কেন জানি।
আমি দ্বিতীয়বার জন্মানোর সুযোগ দেওয়া হলে মার্ক নফলারের পড়শি হয়ে জন্মাতে চাইতাম।
বেসামে মুচো হইলে নতুন পর্ব চাই।
আর টেক ইট ঈজি যদি ভালো লাগে, তাইলে ঐ দেশ ছাড়ার আগে অন্তত একবার অবশ্যই Winslow, Arizona তে ড্রাইভ করে যেও, দেশের ঐ পাশটা অপূর্ব সুন্দর। গেলোবার রোডট্রিপের সময় এক রাত ছিলাম উইন্সলোতে, আর পরদিন সকালে কর্ণারে দাঁড়িয়ে ছবিও তুলেছি।
তবে ফ্ল্যাটবেড ফোর্ডে কোন গার্ল (মাই লর্ড!) চোখে পড়েনি সেদিন
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
আমি দ্বিতীয়বার জন্মানোর সুযোগ দেওয়া হলে মার্ক নফলারের পড়শি হয়ে জন্মাতে চাইতাম।
আর আমি জন ডেনভার ... আমি একটা সময় কল্পনা করতাম কোন নির্জন পাহাড়ের চূড়ায়, গভীর রাতে, খোলা আকাশের নীচে শুয়ে, তারা গুনতে গুনতে ডেনভারের পাশে বসে গান শুনতেছি ....
কাল সারারাত জাগছি... ভোরে রবীঠাকুর শুনতে শুনতে ঘুম দিছি। দুপুরে উঠে এই পোস্ট পড়ে ভাবছিলাম আমারে আছড় করবে না। আমি মনের আনন্দে কিছুক্ষন অন্য অন্য গান শুনে টুনে তারপর সেই যে পিঙ্ক ফ্লয়েড-এ আসন নিছি... মনে হইতেছে দুয়েকদিন খালি গোলাপীতেই থাকতে হবে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল
ম্যাজিকাল পোস্ট !
কবে যে বাসায় বসে ইউটিউব দেখতে পারব
ভালো লাগলো।
আপনাদের নাখালপাড়ার বাসাটি কি এখনো আছে?
জ্বী, ২৬-২৭ বছর তো ওখানেই কেটে গেল। বাড়ি বিক্রি করে দিয়ে উত্তরা মুভ করার কথা উঠেছিল একবার, কিন্তু সবারই এক রকম ইমোশনাল এটাচমেন্ট আছে বাড়িটার প্রতি।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
বাহ। বেশ ভালো লাগলো শুনে।আমি জন্মের আগে থেকে নাখালপাড়ায় ছিলাম।বিয়ের পর থেকে উত্তরায় আছি।তারপরো ইমোশনাল হোয়ে বারবার ওখানে চলে যাই,জামাই বাবাজির খোটা খাই।
দাদা কি ইদানীং সহজ করে লিখছেন?
না কি আমি জটিল লেখা পড়ে বুঝতে শিখছি?
ঘটনা যাই হোক, সুখের এই পোস্ট খুবই ভাল্লাগছে।
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
হাহা রেপুটেশান খারাপ হয়ে যাচ্ছে! আবার পুরান ধাঁচে ফিরতে হবে শিগগির।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
নেহিইইইইই...
...........................
সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন
...........................
একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা
সাউন্ডকার্ড নেই, আপনার গানগুলো তাই এখনই শুনতে পারলাম না। আর আমি ইংরেজী গানও তেমন শুনিনি...বড়জোর বিটলস, জন ডেনভার, বব ডিলান, বব মারলে...
তবু বই আর গানপ্রীতি নিয়ে আপনার লেখাটা খুব মন ছুঁয়ে গেলো। মনে পড়ে গেলো উড়াল দেওয়ার সেই প্রথম যৌবন!
অনেক ধন্যবাদ।
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...
বিপ্লব-দা, এই গানগুলো একটু ট্রাই করে দেইখেন তাইলে। ১২টার মধ্যে থেকে অন্তত ৩-৪টা পছ্ন্দ হবে আশা করছি।
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
-------------------------
হাজার বছর ব্লগর ব্লগর
দোষ কেন বলছেন!? এ তো বিশাল গুণময় ব্যাপার!
আমার ছোটবেলা তো অ-কাজ দিয়ে একেবারে পরিপূর্ণ! বড়বেলাও যে কর্মময়, সে দাবী করছি না
আপনার লিস্টের মাত্র কয়েকটা মিললো আমর সাথে। আমি গান খুব বাছি না। তবে আপনার মতন এতো শোনা হয়নাই।
লেখার যার হাত, তিনি যা লিখবেন তাইই ভালো লাগবে -এখানেও ব্যাতিক্রম নেই
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ
আমি পিঙ্কফ্লয়েড আসক্ত কিছুটা। সিড ব্যারেট মারা যাওয়ার পর বেশ কষ্ট পাইছিলাম। পিঙ্ক ফ্লয়েডের কত গানই যে আমার কী পছন্দ !
এইতো কয়মাস আগে, শেষ সেমিস্টারে আমরা পুরা ক্লাস গেলাম কক্সবাজারে। রাত চারটার সময় গলা ভিজিয়ে সী বীচে শুয়ে তারা ভরা আকাশের দিকে তাকিয়ে শুনছিলাম Marooned, Comfortably Numb সহ আরো পছন্দের অনেক ট্র্যাক।
পিঙ্ক ফ্লয়েড - অসাধারণ।
অলমিতি বিস্তারেণ
অলমিতি বিস্তারেণ
আপনার বড়বেলার অর্থনীতি বিষয়ক লেখাগুলো দেখেই আন্দাজ করা যায়, টিএসসিতে বসে আড্ডা মারার পাবলিক আপনি না। তবে শিক্ষার্থীজীবনে আপনি যা কষ্ট করেছেন, তার সুফল ভোগ করছি আমরা, দারুণ দারুণ সব লেখা পেয়ে ।
-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!
-------------------------------------
হাত বাঁধা, কিন্তু দড়ি মুক্ত - হায় পৃথিবী!
ভাল্লাগলো। আমার শোনার রেইঞ্জ আরেকটু মেটাল ঘরানার। কিছু গান নিয়ে পোস্ট দিবো দেখি।
====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির
"I dont have to fear it
I want to rock your gypsy soul
Just like way back in the days of old
And together we will float into the mystic"
.....আহা
নতুন মন্তব্য করুন