আপকো দেখকর তো যমীন ডর জায়েগী, আপ যমীন সে কিউ ডরতি হ্যায়!!

শ্যাজা এর ছবি
লিখেছেন শ্যাজা (তারিখ: সোম, ৩০/০৬/২০০৮ - ১:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

-৩-

এক ঘন্টা লেটে নিউ জলপাইগুড়ি ষ্টেশনে ট্রেন যখন পৌঁছুলো তখন বেলা আটটা। ইতিমধ্যে আমাদের মেজবানদের তরফ থেকে বার তিনেক ফোন এসে গেছে ট্রেনের দেরি দেখে। ওরা অপেক্ষা করছেন ষ্টেশনে, আমাদের জন্যে। ট্রেন থেকে নামতেই পরিচিত মুখ দেখলাম, সাড়ে চার ফুট উচ্চতার দীপ। গাঢ় কমলা রঙের টিশার্ট পরা দীপকে দেখে সকলেই একবার মুখ চাওয়াচাওয়ি করে নিল! দীপ তুন্নু'র দেওর। বিয়েতে দেখা হয়েছিল। দীপের চেহারা মনে থাকার এবং ও‌ই মুখ একে অন্যের মুখ দেখার আরও কারণ আছে, সেটা পরে বলছি। ষ্টেশন থেকে সদলবলে বেরিয়ে এসে দেখা গেল, বেশ কয়েকখানি গাড়ি পরপর দাঁড়িয়ে আছে, আকারে সেগুলো বিশাল। আটজন লোক সেসব গাড়িতে এনিটাইম বসতে পারে আর সেও আরামসে! দীপের সাথে আরও কয়েকজন ছিলেন, তারা ঝটপট আমাদের লাগেজপত্র প্রায় ছিনিয়েই নিলেন আমাদের হাত থেকে। এখানেও ট্রেনের মতই ঘটনা ঘটল, বড়রা সব ওদিককার দুটি গাড়িতে গিয়ে উঠলেন আর আমরা পাঁচজনে একটা গাড়িতে। ড্রাইভারের সাথে দীপও উঠল আমাদের গাড়িতে। পেছনে আরও দুটি গাড়ি প্রায় খালি, তাতে দীপের সঙ্গীরা একজন দু'জন করে মালপত্র নিয়ে পেছন পেছন এলো প্রায় একটা কনভয়ের মত করে।

নিউ জলপাইগুড়ি ছাড়িয়ে গাড়ি খানিক এগুতেই দূরে দেখা গেল পাহাড়শ্রেণী। শুভ দেখাল, ও‌ই দ্যাখো, ওখানেই দার্জিলিং, ও‌ই পাহাড়ের মাথায়! আমরা ট্রেনেই ঠিক করেছিলাম, পৌঁছেই গাড়ির বন্দোবস্ত করে বেড়াতে বেরুবো। যদিও বৌভাতে এসেছি কিন্তু সে তো রাতের বেলা। সন্ধের আগে আগে ফিরে এলেই হলো। শিলিগুড়ি এসে শুধুমাত্র বৌভাত খাওয়া আর তুন্নুর শ্বশুরবাড়ির আতিথেয়তা নেওয়ার কোন মানে হয় না। সকলেই একমত। গাড়ি এসে দাঁড়াল সেবক রোডের উপরে একটি হোটেলের সামনে। ধারণা ছিল কোন বাড়িতে উঠব তাই হোটেলের সামনে দাঁড়াতে একটু অবাক হলেও চুপ করেই থাকলাম। ব্যস্ত রাস্তা, দু'পাশে সারসার দোকান, হোটেল, শপিং কমপ্লেক্স। আমাদেরকে যে হোটেলের ভেতরে দীপ নিয়ে ঢুকল তার নাম হোটেল রাজেশ। দীপ বুদ্ধিমান ছেলে, আঙ্কেলদের সে এই হোটেলে রাখার ব্যবস্থাই করেনি, তাদের জন্যে পাশের গেষ্ট হাউস! তিনখানি ডবল বেড এসি রুম, শুভ বলল, রুম পছন্দ করে নাও, কে কোনটায় থাকবে। রুম নম্বর ৭০১, ৮০১ আর ৯০১। এক সারিতে তিনটি ঘর আর তাদের নম্বর এরকম! মাঝের রুমটি অর্থাৎ ৮০১এ আমি ঢুকলাম, ৯০১এ ঢুকল শুভ আর তথা আর ৭০১এ নীলু-শুক্লা। বেশ বড়সড় ঘর, ওয়াল টু ওয়াল পরিস্কার কার্পেট পাতা। রুমে ঢুকেই মনে হলো, আগে ঘুমুবো! সারারাত জেগে থাকার ক্লান্তি মাথা চেপে বসে আছে প্রবল যন্ত্রণার রূপ নিয়ে। ঘুম ছাড়া এখন আর কিচ্ছু চাই না।

রুমে ঢোকার আগেই দীপ বলল, গাড়ি রইল তোমাদের কাছে দুটো, তোমরা বেড়াতে চাইলে বেড়িয়ে আসতে পারো, সন্ধের আগে ফিরে এলেই হবে। এ যেন না গাছে না উঠেই এক কাঁদি! আরে আমরাও তো তাই চাইছিলাম! তথা বলল, ঝটপট ফ্রেশ হয়ে রেডি হয়ে নাও সব্বাই, বেরুবো। দীপ হোটেলের ম্যানেজারকে ডেকে এনে ব্যবস্থা করে দিয়ে গেল, যার যখন যা চাই, সব যেন চাহিবামাত্রই হাজির হয়! শুক্লা বলল সেও ঘুমোতে চায় খানিক, ওকে সময় দেওয়া হল আধঘন্টা, বিশ্রাম নিয়ে রেডি হয়ে আসার জন্যে। শুভদের রুম ঠিক হল কমন প্লেস হিসেবে। ব্রেকফাষ্টের জন্যে ও‌ই ৯০১এই আসবে সবাই। দুপুরে লাঞ্চের ব্যবস্থাও দীপ করে রেখেছে, কয়েকটি হোটেলের নাম করে বলল, সব জায়গায় বলা আছে, লাঞ্চ থাকবে, শুধু গিয়ে খেয়ে আসবে আর যদি পাহাড়ে যাও তো সেখানেও ব্যবস্থা আছে। আমরা সত্যিই চমৎকৃত।

বেশ ঠান্ডা ঠান্ডা ওয়েদার। এসি চালানোর কোন প্রয়োজনই নেই।ংহুমোনোর চিন্তা বাদ দিয়ে বাথরুমে গিজার আছে কাজেই গরম জলে স্নান করে রেডি হয়ে শুভদের রুমে গিয়ে দেখা গেল শুক্লা একটা বিছানায় কম্বল মুড়ি দিয়ে শুয়ে পড়েছে। স্নান করে তার মাঝপিঠ পর্যন্ত লম্বা চুল খুলে দিয়েছে শুভ। নীলু তখনও তার নিজের রুমে আর তথা খবরের কাগজ টাগজ নিয়ে বাথরুমে ঢুকেছে। টিভির রিমোট শুক্লার হাতে, সে মন দিয়ে টম এন্ড জেরি দেখছে। বাইরে ততক্ষণে আবার ঝিরঝিরে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। কোনদিকে যাওয়া হবে সেটা তখনও ঠিক হয়নি যদিও তথা বলেছে মঙপঙ যাবে। টেলিফোনে সুমেরু আমাকে মঙপঙ শুনেই বলল, গরম কাপড় সাথে আছে কি? যদি না থাকে তবে যে বেডশিটটা আছে সেটা অবশ্যই সাথে নিয়ে নেবে, ওটাই চাদরের কাজ করবে! আগ্রহভরে শুধাই, ঠান্ডা হবে ওখানে? বলল, দিনের বেলা তো ও‌ই একটা চাদরেই হয়ে যাবে! ভাবি, ভাগ্যিস একটা বেডশিট ছিল সাথে।

দু'প্রস্থ রং চা সহযোগে ভরপেট ব্রেকফাষ্ট খেয়ে আমরা যখন বাইরের দিকে এগুই বেলা তখন দশটা পার। তথার হাতে দেখা গেল রঙীন ফুলছাপ ছাতা। গাড়িবারান্দায় গিয়ে দেখা গেল যাকে আমরা ঝিরঝিরে বৃষ্টি ভাবছিলাম সে মোটেই ঝিরখিরে বৃষ্টি নয়, বেশ তোড়েই পড়ছে সে। সকলেই জিনস আর টিশার্ট পরে আছে, তথা বলল, জিনসগুলোকে ভেজানোর কোন মানে হয় না, শর্টস পরে নেওয়া বেটার! শুক্লা তার জিনসটাকে মুড়ে নিয়ে থ্রী কোয়ার্টার করে নিল, আমি রুমে গিয়ে চেঞ্জ করে থ্রী কোয়ার্টার পরে এলাম আর নীলু, তথা আর শুভ সকলেই দেখলাম বেশ ফুলছাপ শর্টস পরে এল। সক্কলকে দেখে টেখে নিয়ে নীলু মন্তব্য করল, পাহাড়ে যাচ্ছি বলে তো মনে হচ্ছে না, বরং বীচে যাচ্ছি মনে হচ্ছে! হাওয়াই চটি পরা আমরা সকলে বৃষ্টি মাথায় করে দীপদের নিজস্ব গাড়ি স্করপিওতে গিয়ে উঠলাম।


মন্তব্য

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

সিরিজ ভাল লাগছে
আচ্ছা সাথে কি ছবি যোগ করা যায় যদি তোলা থাকে
*******************************************
A life unexamined is not worthliving.-Socrates

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

শ্যাজা এর ছবি

ছবি প্রচুর তোলা হয়েছে আড় সেগুলো আছেও কিন্তু ওগুলোকে রিসাইজ করতে হবে, যেটা আমি পারি না। ছবি আপলোড করতে গেলে নিচ্ছে না। অগত্যা ছবি ছাড়াই..

আপনাকে ধন্যবাদ।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

নুরুজ্জামান মানিক এর ছবি

নীলুর মত আমার মনে হল " পাহাড়ে যাচ্ছি বলে তো মনে হচ্ছে না, বরং বীচে যাচ্ছি মনে হচ্ছে! "

*******************************************
A life unexamined is not worthliving.-Socrates

নুরুজ্জামান মানিক
*******************************************
বলে এক আর করে আর এক যারা
তারাই প্রচণ্ড বাঁচা বেঁচে আছে দাপটে হরষে
এই প্রতারক কালে (মুজিব মেহদী)

অতিথি লেখক এর ছবি

আবারও মুগ্ধতা !!

বেশ ভাল ভ্রমন কাহিনী হয়ে উঠছে।

-পথিক

শ্যাজা এর ছবি

ধন্যবাদ পথিক।

ভাল লাগলো আপনার মন্তব্য পেয়ে..


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

কীর্তিনাশা এর ছবি

এতো অল্প অল্প ছাড়ছেন কেন শ্যাজাদী ?
-------------------------------------
সোনার স্বপ্নের সাধ পৃথিবীতে কবে আর ঝরে !

-------------------------------
আকালের স্রোতে ভেসে চলি নিশাচর।

শ্যাজা এর ছবি

আলসেমি কীর্তিভাই। আর কিছু না..


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

মুশফিকা মুমু এর ছবি

মজার হাসি পড়ে আমারো এক্সাইটেড লাগছে হাসি ।। আপু পরের লেখা ছবি সহ দিয়েন। হাসি
------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

------------------------------
পুষ্পবনে পুষ্প নাহি আছে অন্তরে ‍‍

শ্যাজা এর ছবি

ধন্যবাদ মুমু। সাথে থাকার জন্যে।

ছবি দেওয়ার চেষ্টা করব।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ ভালো লাগলো।

- একরামুল হক শামীম

শ্যাজা এর ছবি

ধন্যবাদ শামীম..


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

রণদীপম বসু এর ছবি

হুঁম, আমারও তো আপনাদের সাথী হতে ইচ্ছে করছে !

চলতে থাকুক।

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

তানবীরা এর ছবি

ছবি আমিও আপলোড করতে পারি না ঠিকমতো কিন্তু কিছু কিছু লেখার সাথে ছবি অপরিহার্য্য।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

শ্যাজা এর ছবি

কিছু কিছু লেখার সাথে ছবি অপরিহার্য্য।

ঠিক!

পরের পোষ্ট ছবি সহ।

ধন্যবাদ তানবীরা।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবিগুলো কী দেখাবেন ?? ছবির সাথে ভ্রমনকাহিনী একাত্ম করা গেলে আরো ভালো লাগত।

-পথিক

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনাকে ছবি সাইজ করা শিখিয়ে দিচ্ছি। ফটোশপে ওপেন করুন একটা ছবি। তারপর ফটোশপের সবচে ওপরে ফাইল এবং এডিটের পরেই আছে "ইমেজ" বাটন। সেখানে ক্লিক করলেই যে বারটি চলে আসবে, সে বারের একটু নিচের দিকে নামলেই একটা অপশন আছে "ইমেজ সাইজ" । সেখানে ক্লিক করলেই যে একটি বার চলে আসবে যেখানে ছবিটির "হাইট" এবং "ওয়াইডথ" দেয়া আছে। আপনি হাইটটাকে ৪ বা ৫ করে দিন। ওয়াইডথটা কমে যাবে আপনাআপনি। হাইট কমিয়ে এবার ওকে দিন। দেখবেন ছবিটার সাইজ ছোট হয়ে গিয়েছে। এবার এটাকে আলাদা করে সেইভ করুন। এরকম করে ছেঁটে ফেলুন বাকি ছবিগুলো। এবার সেই ছবিগুলোই আপলোড করে পাঠিয়ে দিন। ছবি আপলোড করার নিয়ম সচলায়তনের "সাহায্য" অপশনেই সম্ভবত আছে।
আর... আপনি কলকাতা থাকেন? কলকাতায় আমি গিয়েছিলাম গত ডিসেম্বরে, ভারী ইতিহাসের গন্ধমাখা শহর! সবচে ভালো লাগে মোড়ে মোড়ে ভাস্কর্যগুলো, সবচে খারাপ লেগেছে ট্যাক্সি ড্রাইভারদের। কলকাতার অনেক ছেলেমেয়ের সাথেই আগ বাড়িয়ে কথা বলতে ইচ্ছে হয়েছে, জানতে ইচ্ছে করেছে, কী তাদের লাইফস্টাইল, কী ভাবে তারা জীবনকে নিয়ে? কিন্তু স্বভাবত অমিশুক বলে কারো সঙ্গে আলাপ করাই হয় নি। আবার কখনো গেলে আপনার বন্ধুবান্ধবদের সঙ্গে আলাপ সেরে আসব।
আর হ্যাঁ, তিরিশ বা চল্লিশ রুপিতে একটা নুডলস পাওয়া যায় কফি হাউসে, সেটা দেদারসে খেয়েছি আমি ভুখানাঙ্গা মানুষের মতো। এই সেই কফি হাউস? রোমাঞ্চিত হতে হতে ভোজনরসিক আমি ধামার মতো পেটটা ভরে নিয়েছি একরাশ নুডলসে...
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

শ্যাজা এর ছবি

মৃদুল,
আপনাকে অসংখ্য অগুন্তি ধন্যবাদ। পরের পোষ্ট ছবি সহ দিতে পারব আশা করি।

হ্যাঁ। আমি কলকাতায় থাকি। আপনি কথা বললেই পারতেন। পরেরবার এলে জানান দিয়ে আইসেন, লোকজনের সাথে আলাপ করিয়ে দেয়া যাবে।

আপনি কফিহাউসে গিয়েছেন মানে অনেকটাই দেখেছেন। আমি কফিহাউসের ও‌ই নুডলস খাইনি কখনো, শুধু চা-কফি নিয়ে বসে থেকেছি যে কয়বার গিয়েছি। এতসব গূণী মানুষেরা আসেন ওখানে, চোখের সামনে দেখেও বিশ্বাস হয় না সত্যি কাকে দেখছি!

নুডলসের কথা বলি, এখানে নুডলস খুব কম লোকেই বলে। চাউমিন কথাটাই বেশি প্রচলিত। যেটা এখন 'চাউ'তে এসে ঠেকেছে। গলির মোড়ে মোড়ে চাউয়ের দোকান, অফিসপাড়ার ফুটপাথ থেকে নিয়ে পাঁচতারা হোটেল অবদি সর্বত্রই চাউয়ের অবাধ গতিবিধি। অফিসপাড়ায় অসংখ্য মানুষ দুপুরের খাওয়া সারেন ফুটপাথে গাড়ির উপরের চাউয়ের দোকানের চাউ খেয়ে। চাইনীজ রেষ্টুরেন্টগুলিতে ফ্রায়েড রাইস থেকে লোকে চাউমিন বেশি খায়। নিউমার্কেটের সামনে সদর ষ্ট্রীট আর লিন্ডসে ষ্ট্রীটের মাঝে এক ঘুপচি গলিতে দুটো দোকান আছে, দোকানের সানে দাঁড়ানোর জায়গা নেই, রাস্তার অন্যধারে লম্বা বেঞ্চ পেতে বসার জায়গা, সেখানে বসে ও‌ই হাক্কা বা উইথ গ্রেভি চাউমিন লাইন দিয়ে বসে খায় বিদেশী পর্যটকেরা। আমার বড় সাধ একদিন ওখানে বসে ও‌ই চাউমিন খাওয়ার, কিন্তু কেউ রাজী হয়নি আজ পর্যন্ত আমার সাথে ওখানে বসে চাউ খেতে! ওখানে নাকি সব পাত্তাখোর আর দালালরা বসে থাকে, ধান্দার উদ্দেশ্যে!!


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আমি যখন কোলকাতা যাই, তখনও আমি সচলায়তনের সঙ্গে পরিচিত ছিলাম না! এর পরের বার গেলে নিশ্চয় খবর দিয়ে যাব!
আপনার সাধ পূর্ণ হতে আশা করি কোনো অসুবিধে হবে না... আমরা এলে গ্রুপ নিয়েই আসব, আর সেই গ্রুপে ছেলে মেয়ে সবকটাই ভ্রমণের পাগল...
নিউমার্কেটের ওখানে গিয়ে গুষ্টিসুদ্ধ "চাউ" খাব!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অতিথি লেখক এর ছবি

ছবির অপেক্ষায় আছি.....

অমিত আহমেদ এর ছবি

বড় বড় করে দেন। এত ছোট লেখায় মন ভরে না। আর ছবির ব্যাপারটি তো গণদাবীতে পরিণত হয়েছে। লেখা পড়তে খুব ভালো লাগছে। আপনার লেখার একটি ধীর ভাব থাকে। কোনো তাড়াহুড়ো নেই। যেন ঢালু জমিনে আস্তে আস্তে জল গড়াচ্ছে। এই জিনিসটি আমার খুব ভাল্লাগে।

লিন্ডসে স্ট্রিটের চাউ খেয়েছি। খুব ভালো লেগেছে বললে মিথ্যে বলা হবে। কাঠফাঁটা রোদ্দুরে গরম বেঞ্চে বসে মসল্লা মারা গরম চাউ তেমন জমেনি। কুলফি খেয়ে ভাঁপ কমাতে হয়েছে।

আমি বেশ মিশুক। কলকাতা-দিল্লীতে অনেক ছেলে-মেয়ের সাথেই আড্ডা পিটিয়েছি। আর প্রতিদিন নতুন সিগারেট কিনতাম। চারমিনার দিয়ে শুরু। এর পর গোল্ডফ্লেক, উইলস, আর যা যা ছিলো।

কলকাতায় হোটেলে বিয়ার আনতে বলে ঝঞ্জাটে পরেছিলাম। আমি বলেছি ছয় বোতল আনতে। আমরা দুই জন তিনটে করে পার মাথা। হোটেলের বেয়ারা বলে এত বোতল দুইজনে কি করবেন? আমি ভাবি বলে কি! ছয় বোতল তো আমি একাই মারতে পারি। সে বলে আগে দুই বোতল আনি পরে লাগলে আরও। আমি বলি ঠিক হ্যায়! পরে বোতলের সাইজ দেখে আমি টাশকি। এত বড় বোতলে বিয়ার হয় আমার জানাই ছিলো না।

কফিহাউস আমার কাছে দুর্দান্ত লেগেছে। তাই গন্দমে টেনে এনেছিলাম।


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

শ্যাজা এর ছবি

অমিতের কমেন্ট আমি এখন দেখলাম!!

লিন্ডসে ষ্ট্রীট কি ও‌ই রাস্তাটা? সদর ষ্ট্রীট আর লিন্ডসে ষ্ট্রীটের মাঝে একটা সরু গলি, কি জেন এক আংরেজী নাম আছে ও‌ইটুকু রাস্তার যা আমার আজও মুখস্ত হয়নি।যউগ্গিয়া। চাউ পছন্দ হয় নাই ওখানকার? আমি না খাওয়া ইস্তক কোন নেগেটিভ কথা শুনতে রাজী না হাসি

বীয়ারের বোতল তো দুটো সাইজেই পাওয়া যায়, বড় আর ছোট। তবে বীয়ার তো বীয়ারই। বড় বোতলের তিন বোতল একজনের জন্যে ব্যপার না হাসি তিন বা পাঁচ তারায় বইসা খাইতে গেলে অবশ্য নোটের কথা মাথায় রাইখা ছোট বোতলেই খুশ থাকতে হয় মন খারাপ

কফি হাউস তো দুর্দান্তই।


---------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা। (সুইস প্রবাদ)

অমিত আহমেদ এর ছবি

রাস্তার নাম আমারও মনে নাই। অতিরিক্ত গরমের জন্য চাউ খেতে গিয়ে একটু হাঁসফাঁস লেগেছে। বিকেল বেলা সূর্যের তেজ কমলে মজাই লাগার কথা। ওখান থেকে একটু হেঁটে গেলে আরেকটা রাস্তায় ভেলপুরি, ফুচকা পাওয়া যায়। ক্যান জানি লোকাল বিয়ারের বড় বোতলই দেখেছি শুধু। কানাডা থেকে গিয়ে কলকাতা আমার কাছে স্বর্গ মনে হয়েছে। বারে টনিকের দাম এত্তো কম! প্রথমদিনই কেবল বিয়ার, এরপর শুধু আন্ডারগ্রাউন্ড।

ধুররু... আপনার সাথে কমেন্টাইতে গিয়ে মাথায় খাবার-দাবার ঢুকে গেলো... এখন কি করি কন?


ওয়েবসাইট | ফেসবুক | ইমেইল

zaman এর ছবি

আমার তো মন্তব্য চালাচালি দেক্তে ভাল্লাগে (এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না)

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।