সবুজ সাপটির জন্য লেখা

সুমাদ্রী এর ছবি
লিখেছেন সুমাদ্রী (তারিখ: সোম, ১৬/০৭/২০১২ - ১২:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একটা মানুষের প্রাণের সাথে একটা সবুজ সাপের প্রাণ এর তফাৎটা কোথায়? কিংবা চলতে গেলে পায়ের তলে পড়ে পিষে যাওয়া পরিশ্রমী, চঞ্চল পিঁপড়া; ঘাসের ডগা থেকে খপ করে ধরে এনে ডানা ছিঁড়ে ফেলা হয় যে ঘাসফড়িংয়ের, অথবা দেয়ালে রক্তের দাগ নিয়ে চ্যাপ্টা হয়ে থাকা মশাটির সাথে মানুষের মোটা দাগে পার্থক্যটা কোথায়? ট্রিলিয়ন-বিলিয়ন মানুষের ভেতর সলোমন দ্বীপের একটা জেলে মরে গেলে আমি কি তার কথা ভেবে আকুল হই? ‘আরে ধুর, প্রতি মিনিটেই, প্রতি সেকেণ্ডেই মরছে মানুষ কোথাও না কোথাও ঠিক যেভাবে প্রতি মুহুর্তে জন্ম নিচ্ছে কোথাও না কোথাও কয়েকটা শিশু’ বলে ভাবনাটাকে ফালতু বলে গুরুত্ব না দিয়ে টিভির চ্যানেলটা বদলিয়ে দিই। হুম, আমি আসলেই জানি, অবচেতনায় জানি, আমি আর ঐ পিঁপড়া, বা ঘাসফড়িং বা দেয়ালের মশক, আমাদের মধ্যে আদতে খুব একটা পার্থক্য নেই। সকাল থেকে রাত অব্দি মোটামুটি আমাদের চারজনেরই একই কাজ কারবার। খাবারের অন্বেষণ, বংশধারা বজায় রাখার স্বার্থে প্রেম, দিনশেষে বিশ্রাম। আর শরীরের ভেতরের প্রাণ নামক অদ্ভুত বাতিটির ফিলামেন্ট ছিঁড়ে গেলে আমি, পিঁপড়া, ফড়িং, মশা সবাই পঞ্চভূতে আবার বিলীন।নক্ষত্রচূর্ণ সবাই, নক্ষত্রচূর্ণ সবই।

একটা মানুষ মরে গেল। তার কাছের মানুষগুলোর কাছে এ মৃত্যু বিশাল এক ক্ষতি। অসহনীয় শোক। পিঁপড়ার তাতে কী আসে যায়? কিংবা ঘাসফড়িংটির তাতে কী ক্ষতি? তারা কি গোপনে ভাবে এই মানুষটির কথা? সরোবরে ক্লান্ত বসে থাকা সাদা পাখিটিকে নির্ভুল নিশানায় গুলিবিদ্ধ করে শিকারে উল্লাস করছি যখন তখন যেমন করে ভাবিনা পাখির জন্য অপেক্ষায় থাকা তার প্রেয়সীটির কথা কিংবা শরীরে তুলতুলে রোম নিয়ে খড়ের ছোট্ট বাসায় খাবারের জন্য প্রতীক্ষারত শাবকদের কথা তেমনিই ফড়িংয়ের দল মোটেও বিচলিত হয়না মানুষের মৃত্যুশোকে। এক অদ্ভুত, সুন্দর, নির্মোহ জগৎশৃঙ্খল। শুধু অনু আর পরমানুর খেলা চারিদিকে। আমার ভেতরে খেলছে, খেলছে এই বোকাসোকা ল্যাপটপটার ভেতরেও। ল্যাপটপটাকে তাইতো ভালবাসি, সে আর আমি ঘুরেফিরে একই বস্তু।

উত্তম কুমারের লিপে মান্না দে’র দারুণ একটা গান আছে।
‘ মানুষ খুন হলে পরে, মানুষই তার বিচার করে, নেইতো খুনীর মাফ,
তবে কেন পায়না বিচার নিহত গোলাপ, বৃন্ত থেকে ছিঁড়ে নেওয়া নিহত গোলাপ।’
নিহত গোলাপের জন্য কেউ শোক করেনা। কেউ কোন অভিযোগ দাখিল করেনা আদালতে। প্রেমিকার খোঁপায় গোলাপের লাশ গুঁজে দেয় নির্বোধ প্রেমিক। ফুলের শরীরটাকে শত টুকরায় ছিঁড়ে ভরে দেয় প্রেমের চিঠির খামে। বাঁচার অধিকার শুধু যে মানুষেরই তা হবে কেন? এই যে গোলাপ, পিঁপড়ে বা ঘাসফড়িঙ এদেরও বেঁচে থাকার তীব্র অভিলাষ। পৃথিবীর উপর অধিকার এদের মানুষের চেয়ে কোন অংশে কম কি?

মানুষের চেয়ে আর বেশী কেইবা ক্ষতি করেছে পৃথিবীর? কোথাও না কোথাও এই মুহুর্তে চলছে যুদ্ধ। এশিয়ায়, আফ্রিকায়, ইউরোপে, আমেরিকায়। কোথাও না কোথাও মানুষ এই মুহুর্তে মগ্ন আছে ভয়াবহতম মারনাস্ত্রটি তৈরীর গবেষনায়। এই মুহুর্তে পৃথিবীর কোন এক আকাশে উড়ে বেড়াচ্ছে বোমারু বিমান, কোন এক সিন্ধুতে ভেসে বেড়াচ্ছে রণতরী। কোথাও না কোথাও খাবারে মেশাচ্ছে বিষ। বাংলাদেশে? কোন না কোন সমুদ্রে ফেলছে রাসায়নিক বর্জ্য। পশ্চিম আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূলে। কোথাও না কোথাও উজাড় করছে চিরহরিৎ বন। ইন্দোনেশিয়ায়, ব্রেজিলে, কোত দিভোয়ায়। মানুষের চেয়ে কেইবা বেশী আর পৃথিবীতে ছড়াচ্ছে ঘৃনার বাণী।ওয়াশিংটনে, কাবুলে, রেঙ্গুনে। সবুজ সাপেরা, ঘাসফড়িং এর দল, সরোবরের পাখি, কঙ্গোর গরিলারা যুদ্ধে মেতে নেই কোথাও পৃথিবীর বিরুদ্ধে। পৃথিবীটাকে তাদের মত করে আর কেইবা ভালবাসে? একটা প্রজাপতি বা একটা ভ্রমর বা একটা হামিং বার্ড ফুলের মধু খেতে এসে ফুলটাকে ছিঁড়ে নিয়ে যায়না, দলিয়ে দিয়ে যায়না, উলটো পরাগরেনুগুলোকে সাজিয়ে দিয়ে যায় পুংকেশরে-কেশরে। কোথাও কি শোনা গেছে এমন কোন কথা, বতসোয়ানার সিংহের বিশাল বাহিনী আক্রমণ করতে গেছে তাদের জ্ঞাতিভাইদের নামিবিয়ায় কিংবা কেনিয়ায়?

পাগলা হাতির দল নাকি লোকালয়ে এসে হানা দিয়েছে, লন্ডভন্ড করে দিয়ে গেছে ফসলের মাঠ, বাড়ি-ঘর, পিষে মেরেছে মানুষ। বনের বাঘ ঢুকে পড়ছে লোকালয়ে। থাবা মেরে নিয়ে যাচ্ছে মানুষের প্রাণ। অথচ হাতি জানেনা তার ব্যাধির কথা। বোঝেনা কোনটা লোকালয় আর কোনটা তার অরণ্য। হাতির চলার পথে দখলদারি মানুষ গড়ে তুলেছে বসতি, তার ঘাসের বনে তারা জ্বালিয়ে দিয়েছে আগুন। তাইতো হাতি চলার পথে মাড়িয়ে যায় ঘর-বাড়ি, ঘাসের বন ভেবে মুখ দেয় ধানের ক্ষেতে। বনে বনে ঢুকে পড়েছে আবার লোভী মানুষ। নগরকে নিয়ে আসতে চায় সে বনের মাঝে। ঘাসখোর হরিণ, শূয়োর, বানরগুলো যে যেদিকে পারে গা ঢাকা দেয়। বনের বাঘের পেটে ক্ষুধা কিন্তু মরে যায়না। তার তাড়নায় সে ঢুকে পড়ে লোকালয়ে। গোশালায়। খোঁয়ারে। মানুষের আস্পর্ধাকে কখনও কখনও সে চ্যালেঞ্জ জানায়, তার সীমানার ভেতরে ঢুকে পড়া মানুষদের প্রতিহত করতে সে মরিয়া হয়ে ঝাঁপিয়ে পড়ে লবনাক্ত মাংশের উপরে। এশিয়ায়, আফ্রিকায় হাতি আর বাঘেরা প্রতিদিন একটু একটু করে তাদের ভূমিটুকু হারাচ্ছে। আমি যে দেশে এই মুহুর্তে আছি তার নামের সাথে জড়িয়ে আছে হাতির নাম। আটলান্টিকের এই উপকূল একসময় হস্তীনিনাদে মুখরিত ছিল। লোভী মানুষ সেইসব অতিকায় তৃণভোজীদের দাঁত উপরে নিয়ে গিয়ে তাতে করেছে শিল্পকর্ম। আজ এই অঞ্চলে হাতিদের সঙ্খ্যা দুহাতের আঙুলে গননা করা যায়। আমার জন্ম-শহর চট্টগ্রামের বৃক্ষশোভিত মনোরম পাহাড়ী একটা এলাকার নাম টাইগার পাস। হয়ত সাহেবদের রেলের বাংলো থেকে একদিন দেখা যেত বাঘেরা পার হয়ে যাচ্ছে রাস্তা। আজ আর এইসব রাস্তা দিয়ে লাজুক শেয়ালেরা হয়ত সন্ধ্যার পর অতি সন্তর্পনে বের হয় কোথাও কোন খাবারের উচ্ছিট্টাংশ পাওয়া যাবে এই আশায়। দুদিন পর তাদের দেখাও মিলবেনা হয়ত আর। পাহাড়ের খাঁজে তাদের গর্তগুলোর ভেতরেই হয়ত ডেরা বাঁধবে মানুষ।

সবুজ সাপটি বাতাসে জিভ বের করে দিয়ে ঠাহর করার চেষ্টা করে আশেপাশে লুকিয়ে আছে কিনা কোন ইঁদুর। মানুষের পায়ের শব্দ তার শীতল চামড়ায় বিপদের সংকেত পাঠিয়ে দিলে সে দ্রুত লুকিয়ে পড়তে চায় পাতায় ঢাকা গর্তে। কিন্তু শরীর ঢুকে গেলেও একটু করে থেকেই যায় তার সবুজ লেজ। সে লেজ দেখেই মানুষের মাথায় চেপে যায় রক্ত। তারপর লাঠির আঘাতে আঘাতে সবুজ সাপটি একসময় হলুদ হয়ে গেলে খুনী মানুষেরা বলাবলি করে, ‘ আফ্রিকার সাপের বিষ ভয়াবহ। এতটুকুন সাপ, অথচ ঠিক ফনা ধরে তেড়ে আসে, দেখেছ?’ নিজের উপর আমার অশ্রদ্ধা বেড়েই চলে। মানুষের দলে থেকে আমিও দেখি ছোট্ট সবুজ সাপটির ফনার উপর পড়ছে লাঠি। আপত্তি জানালে হাসির খোরাক হতে হয় দেখেছি। তাই ইদানিং খুব করে চাই মানুষের পায়ের শব্দ যেন অনেক দূর থেকেই পেয়ে যায় ওরা।

বুড়ো নাবিকটির অভিশাপের কথা মনে পড়ে। ঐ যে সৌভাগ্য বয়ে আনা পাখিটিকে হত্যা করে যে নাবিক অভিশপ্ত হয়ে ক্ষুধায়, তৃষ্ণায় কাতর হয়ে মৃত্যুর চেয়েও অধিক যন্ত্রণায় ছটফট করছিল উত্তর সাগরে। একদিন সেও দেখেছিল এমন সাপ। সবুজ, লাল, ঊজ্জ্বল নীল রঙের অপূর্ব সাপেরা সাঁতরে বেড়াচ্ছে জাহাজের চারপাশে। এ এক এমন সৌন্দর্য যা সে দেখেনি কখনও আগে। তার তখনই বোধের উন্মেষ ঘটে যায়, বুঝতে পারে সৃষ্টিজগতের সবকিছুর মধ্যে বিরাজ করছে এক মোহনীয় সুন্দর। সেই উপলব্দিটাকে জাগিয়ে তুলতে হয়, নাহলে হয়ত মানুষের জীবনটাই বৃথা।

সবুজ সাপের মৃত্যুতে আমি দুঃখ পাই। নিজের উপর অশ্রদ্ধা বেড়ে যায়। মনে মনে বলি, ‘ বুড়ো নাবিকের মত আমাদের উপরও নেমে আসুক অভিশাপ। সে অভিশাপের আগুনে পুড়তে পুড়তে একদিন হয়ত আমাদের মাঝে উপলব্দি হবে আমাদের মতই বেঁচে থাকার চিরবাসনা সবুজ সাপেদের, ঘাসের বনের হাতিদের, চিরহরিৎ অরন্যের ঐ ওরাংওটাং এর। সেই উপলব্দিটুকু মানুষের মনে এলে হয়ত তাকে দেখে আর ফুড়ুৎ করে উড়ে পালাবেনা চড়ুই পাখিটি কিংবা কাছে গেলে তেড়ে ফুঁড়ে আসবেনা মা হাতিটি।’


মন্তব্য

ক্রেসিডা এর ছবি

সিম্প্লি অসাম একটা লেখা। আমাদের বৃত্তে বাঁধা পড়া.. সেই বৃত্ত ভাঙ্গার চেষ্টা .. আবার সেই চেষ্টটাও একটা রুটিন ওয়ার্ক হিসেবে দাঁড়িয়ে যাওয়া... এগুলো ভাবায় বইকি!

"আমি বলছি যাব, যাব
ঘর বলছে না;
অবাধ্য সেই দুয়ার আমার
আটকে রাখে পা।" - কবির নাম ভুলে গেছি!

অসম্ভব সুন্দর লেখা। আজকের দিনের জন্যে সেরা।

__________________________
বুক পকেটে খুচরো পয়সার মতো কিছু গোলাপের পাঁপড়ি;

অমি_বন্যা এর ছবি

দিন দিন মানুষের বুঝে আর না বুঝে করে চলা অনিয়মের এক বিরূপ প্রভাব পড়ছে আমাদের প্রকৃতির উপর। প্রকৃতি আর প্রাণী এদের সাথে আমাদের তৈরি হচ্ছে এক বৈরী সম্পর্ক । পাহাড় কেটে প্রাসাদ , জঙ্গল কেটে ইটভাটা, হরিণ শিকার করে তার চামড়া এগুলো করে আমরা নিজেদের অজান্তেই অনেক শক্ত প্রতিপক্ষ দাড় করিয়েছি আমাদের সামনে। এদের প্রত্যক্ষ কোন শক্তি নেই যার বলে তারা আমাদের প্রতিরোধ করতে পারে কিন্তু আমরা কি নিজেরাই এদের ক্ষতি করে শক্তিহীন হয়ে পড়ছি না?

অনেক ভালো লিখেছেন দাদা। আমাদের শুভবুদ্ধি উদয় হোক সে কামনায় করছি।

ইয়াসির এর ছবি

চলুক চলুক চলুক চলুক

তারেক অণু এর ছবি

উত্তম জাঝা! উত্তম জাঝা! গুল্লি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- চলুক

অসাধারণ লেখা, এমন লেখা আরো আসুক, আমরা যেন এই জ্ঞান চারদিকে ছড়িয়ে দিতে পারি, যেন এমন লেখা পাঠ করতে পারি শিশুকাল থেকেই। জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

চমৎকার। প্যারাগুলোর গ্যাপ বাড়িয়ে দেবেন?

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ভাল লেগেছে। মনটা ভরে গেছে। চলুক

কানিজ ফাতেমা এর ছবি

চমৎকার লেখা। চলুক

শাব্দিক এর ছবি

অসাধারণ চলুক

ব্যাঙের ছাতা এর ছবি

বাকরুদ্ধ আমি। এত ছুঁয়েছে লেখাটি আমায়। প্রাণের মধ্যে কী যেন জেগে উঠছে - নিজেকে নিয়ে বেঁচে থাকার জন্য নাকি মানুষ হয়ে প্রতিদিন এত কিছু হত্যার জন্য ধিক্কার, জানিনা।
কী অনবদ্য লিখেছেন আপনি! মুগ্ধতা মাপার স্কেল থাকলে সেখানে আমি এখন সর্বোচ্চ পরিমান মুগ্ধ। এত চমৎকার লেখার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

কড়িকাঠুরে এর ছবি

অসাধারণ... উত্তম জাঝা!

জগতের সকল প্রাণী সুখী হোক

জুন এর ছবি

মন খারাপ গুরু গুরু খুব খুব ছুঁয়ে গেল।

যদি ভাব কিনছ আমায় ভুল ভেবেছ...

রিয়েল ডেমোন এর ছবি

চমৎকার করে অনুভূতিগুলো লিখেছে।

কৌস্তুভ এর ছবি

জীবহিংসা তো কত প্রাণীর মধ্যেই আছে, এমনকি গাছেদের মধ্যেও। তবে 'মানুষের চেয়ে আর বেশী কেইবা ক্ষতি করেছে পৃথিবীর?' এইটা ঠিক কথা।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

সাপের জন্য আমার আজীবন ঘৃণা আর ভয়।
কিন্তু সাপের জন্য এত মমতাময় লেখা একটিও পড়িনি। অসাধারণ একটি গদ্য পড়লাম। চলুক

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

পাঁচতারা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

শিশিরকণা এর ছবি

কোলাকুলি এমন করে আর কয়জন ভাবে?

আজকে মানুষ হয়ে অক্সিজেন নিচ্ছি, মরে গেলে কবরের মাটিতে মিশে সার হয়ে গাছের শরীরে আশ্রয় নিব, অক্সিজেন ছাড়ব, আবার গাছের পাতা যখন ছাগলে খেয়ে নেবে, তখন হয়ে যাব ছাগলের অংশ, কি ফুলের মধু হয়ে পাখির অংশ, তারপর পাখি কি ছাগল কিংবা ফুলে থেকে আবার চলে আসব মানুষের শরীরে। ঘুরে ফিরে সবই এক বিশ্ব ভ্রহ্মান্ডের অংশ।

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

Monjur Elahi এর ছবি

সেদিন সি এন আর এ মান রোডে বৈকালিক ভ্রমনের সময় একতা পুঁচকে সাপের বাচ্চা আমাদের সামনে দিয়ে লাফিয়ে রাস্তা পার হচ্ছিল , দৈর্ঘ্য হবে এক ফুটের ও কম । আমরা কিন্তু বাচ্চাটা কে মারিনি ।

বাণীব্রত এর ছবি

চলুক চলুক

ভালো লাগলো।

তানভীর এর ছবি

লেখার সাথে মোটাদাগে একমত হলেও দ্বিমত আছে কিছু। মানুষের সাথে অন্য প্রাণীর পার্থক্য অবশ্যই আছে। আজকের মানুষ দাঁড়িয়ে আছে অতীতের মানুষের সঞ্চিত জ্ঞানের ওপর ভর করে, ভবিষ্যতের মানুষও দাঁড়িয়ে থাকবে বর্তমানে যা যোগ হচ্ছে বা হবে তাকে ভিত্তি করে। দশ হাজার বছর আগের মানুষের জীবনযাত্রা আর আজকের মানুষের জীবনযাত্রা কিন্তু এক নয়। কিন্তু দশ হাজার বছর আগেও সবুজ সাপ যেভাবে বেঁচে থাকত, আজও তারা ওভাবেই বাঁচে।

আপনি লেখায় পরিবেশের যেভাবে বর্ণনা করেছেন সেটাকে আমি পরিবেশবাদীদের ডাইলেমা হিসেবে দেখি। অনেকেই 'পরিবেশের জন্য মানুষ'কেই প্রায়োরিটি দেয়। আমেরিকায় অনেক পরিবেশবাদী আছে যারা পরিবেশের জন্য বসতির পর বসতি উচ্ছেদকে সমর্থন করে। এইখানে তেমন পরিবেশবাদীদের কথা পাবেন। কীটপতঙ্গ বেঁচে থাকবে- এইজন্য তারা বিলিয়ন বিলিয়ন ডলার খরচ করে, অথচ মানুষ না খেয়ে মারা যাচ্ছে আফ্রিকায়, ঘরের পাশে মেক্সিকোয়। আমি পরিবেশ বলতে 'মানুষের জন্য পরিবেশ'ই বুঝি। মানুষের জন্য সুষ্ঠু পরিবেশ নিশ্চিত করার জন্যই অন্য প্রাণীর বেঁচে থাকা এবং জীববৈচিত্র্য সমর্থন করি। আর কোন কারণে নয়।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

খুব ভাল লাগল আপনার পোষ্ট।
তবে তানভীর ভাইয়ার মন্তব্যের জবাব দেখার প্রতীক্ষায় রইলাম।

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

অসাধারণ একটা লেখা...
৫ তারা
প্রকৃতিকে মানুষের ভোগের বিলাস বানানেওয়ালাদের হাত থেকে পৃথিবী মুক্ত থাকুক

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

লিখাটা ভাল লেগেছে খুব।।আমার ভাবনার সাথে মিলে গেছে। আমি নিজেও দেখেছি জীবজন্তুর প্রতি অকারণ নিষ্ঠুরতা।।বেড়ালের ছানার গলায় ফাঁস পরানো,কাককে রশি দিয়ে বেঁধে আছড়ে আছড়ে মারা।খুবই নিষঠুর কাজ এগুলো। আশা করি আমাদের শুভবুদ্ধির উদয় হবে। তবে আজকের দুনিয়ায় মানুষ যেখানে মানুষের জন্যই ভাবে না সেখানে এ আশাবাদ কতটা সার্থক হবে সংশয়।
ধন্যবাদ একটি সুন্দর লিখার জন্য। হাসি
ভাবুক মন।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

চমৎকার!

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।