টোপ দিলেই যে কেঁচো মাছ খেয়ে ফেলবে তার গ্যারান্টি কি? ৫

সুমন চৌধুরী এর ছবি
লিখেছেন সুমন চৌধুরী (তারিখ: রবি, ০৯/০৩/২০০৮ - ৯:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

চাকা ঘুরতে থাকে। সেকেন্ডের কাঁটা ডিগবাজী দিয়ে ঘোরায় মিনিটের কাঁটাকে আর মিনিট ঘন্টাকে। ঝুঝতে শিখি, ঘড়িকে যে গ্রীপেই ধরি না কেন প্রতিটি ডেলিভারিই গুগলি। যখনকার শট তখনই নিতে হবে। প্রস্তুতিটুতি কিছু না। পৌন:পুণিক উইকেট পতনে ঝুলি ...চাকা ঘুরতে থাকে। সেকেন্ডের কাঁটা ডিগবাজী দিয়ে ঘোরায় মিনিটের কাঁটাকে আর মিনিট ঘন্টাকে। ঝুঝতে শিখি, ঘড়িকে যে গ্রীপেই ধরি না কেন প্রতিটি ডেলিভারিই গুগলি। যখনকার শট তখনই নিতে হবে। প্রস্তুতিটুতি কিছু না। পৌন:পুণিক উইকেট পতনে ঝুলি খালি হতে বুঝি, জমালেই সবকিছু জমে না। জানতে থাকি বুঝতে থাকি ব্যাজার মুখে। আকাশে বাতাসে জ্যামিতিক প্রসব বেদনা। ক্ষেত্ররা সব ফলের আশায় কর্মযজ্ঞের যোগাড়যন্ত্র করে। বড্ড তাড়াতাড়ি বুড়ো হই আমরা। সরে যেতে থাকি,সরে যাই,সরে যাচ্ছি ডাইভ দিতে দিতে। পাখনায় টান পেলে অজ্ঞাতবাসে তুরীয় সন্ধ্যা। মরচের ক্যাচঁ ক্যাঁচে পুরনো সুরের মৌজ বাড়ে। পাগলা কলন্ধর ঊর্ধ্ববাহু নাচে।

১৭ মে ২০০১। কোন এক ক্লাসে ব্যাজার বসে থাকা থেকে বাঁচতে প্রিয়দর্শিনী সহপাঠিনীর সাথে কাটাকুটি খেলছিলাম। জীবনের বেশীরভাগ খেলা জাগামতো খেলা হয় না। তাই ভুল খেলাতেই তুষ্ট ছিলাম। এর মধ্যে হঠাৎ মৃদু ঠক্ ঠক্ খিড়কিতে। প্রিয়দর্শিনী উঠে বাইরে গেল। ফিরে এসে চিরকুট গুঁজে দিলো হাতে । সবুজ বাঘ লিখেছে :

মৃতরেখা রাত দশটা; ১০১ কামালুদ্দিন হল

জলের গভীরে মাছরাঙার যন্ত্রণা

বুঝলাম। বুঝে ইজি থাকলাম। তারপর বাকি দিন ঠিকঠাক পানাহার। উদর লাইনে রেখে পৌছলাম আগেভাগে। শুনলাম পল শুয়োরের জোগান দেবে। মন ভালো হলো। সেই ১৯৯৯ সালে বান্দরবানে মাসীর বাড়িতে জমজমাট মজমার পর দুবছর আর ঘোঁৎঘোঁৎ পেটে পড়েনি। মাল এলো। তাস ফুরলো। আমরা টানার সময় খেলি না। সবুজ বাঘের চনমনে মেজাজে বোঝা গেল দিলীপের আস্তানায় ভালোমন্দ মেরে এসেছে। মৃতরেখা পেরিয়ে সাড়ে দশটা হলো। একে একে পাপীদের সমাবেশ ভারী হলো। ১০১ কামালুদ্দিনে থাকতো শশাঙ্ক বরণ রায় আর ফিরোজ। ঘর ভরা কবিতার বই আর কাটাকুটি। দেয়ালে আঁকাবাঁকা বোধিসত্ত্ব। প্রথম আবর্তন পেরোতেই ১০২ থেকে ভালোমানুষ ছোকরা এসে হাত জোড় করতে সিদ্ধান্ত হলো ছাদের নীচে আবার কিসের মজমা?

ছুটলাম মুক্তমঞ্চে। সবাই। সব মিলিয়ে জনা আটেক। বাংলার ছিপি খুললো। পল খুললো হটক্যারিয়ারের ঢাকনা। ভুনা-শুয়োরের সাথে পুর্ণিমা রাতে চোলাইয়ের রোশনি হারানো স্বপ্নগুলি ইত:স্তত মেরামত করে। আমি, ফিরোজ, পল আর সবুজ বাঘ উদ্দাম নৃত্য করি, কেউ কেউ কাঁদে কিজানিএক্টা অপ্রাপ্তির শোকে, বোতল ফুরোলে কেউ কেউ যায় শুকনোর খোঁজে। খালি ক্যারিয়ার আর গোটাদুই ৭৫০ এমএলের খালিবোতলের পাশে ভোলানাথ তাজা হন। আমরা রেলগাড়ি চালাতে লাইনের প্রশ্নে একমত হই। তার আগের আরো আগের আরো অনেক রেললাইন আর রেলগাড়ির কথা আসে। আমরা বুঝেশুনে চেপে যাই। চেপে আনন্দিত হই। একটা কিছু অন্তত চেপে যাওয়া গেলো.......


মন্তব্য

শেখ জলিল এর ছবি

জোস্। বেশ ঝরঝরে।

যতবার তাকে পাই মৃত্যুর শীতল ঢেউ এসে থামে বুকে
আমার জীবন নিয়ে সে থাকে আনন্দ ও স্পর্শের সুখে!

বিপ্লব রহমান এর ছবি

সবুজ বাঘের চনমনে মেজাজে বোঝা গেল দিলীপের আস্তানায় ভালোমন্দ মেরে এসেছে।

এই সবুজ বাঘ কি সহব্লগার? আর দিলীপ কি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের (পিসিপি) দিলীপ কুমার চাকমা?

পিসিপির দিলীপ আমার ছোট্ট বন্ধু। ১৯৯৬ সালে কল্পনা চাকমা অপহৃত হলে সে সময় অনুসন্ধানী প্রতিবেদন করার জন্য দিলীপ আমাকে কল্পনার বাড়িতে পৌঁছে দিয়েছিলো। সে তখন জাবি'র অনার্সের প্রথম কি দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র।

...লেখাটি এক কথায় জাঝা।


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সবুজ বাঘ সহক্লগার।
এই দিলীপ সেই দিলীপ না। এই লোক সাভার বাজারে সুধা ফেরী করতো।



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

আজ দেখি শুধু পরপর সব পানাহারের কাহিনী! চোখ টিপি

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

বিপ্লব রহমান এর ছবি

...পানাহারের সময় এসেছে,
রাতের নির্জনে।... হো হো হো


আমাদের চিন্তাই আমাদের আগামী: গৌতম বুদ্ধ


একটা ঘাড় ভাঙা ঘোড়া, উঠে দাঁড়ালো
একটা পাখ ভাঙা পাখি, উড়াল দিলো...

অতিথি লেখক এর ছবি

"জলের গভীরে মাছরাঙার যন্ত্রণা " ........................... " ভুনা-শুয়োরের সাথে পুর্ণিমা রাতে চোলাইয়ের রোশনি হারানো স্বপ্নগুলি ইত:স্তত মেরামত করে। "

আমার কিছু বলার নাই.........

রাকিব হাসনাত সুমন

নজমুল আলবাব এর ছবি
দুর্দান্ত এর ছবি

মারহাবাহ।

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

সে এক কাণ্ড! সেই গোলচক্কর মজমার ঘোর যে আজো কাটেনি, পঞ্চম কেঁচোকাহিনী তার প্রমাণ। কিন্তু কান্নাটা বোধহয় সেই যে থেমেছে আর চালু হয়নি।
সে এক কাণ্ড বটে! আহা ফুরাতো না যদি সেসব স্বপ্ন আমাদের!!!
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শব্দের ঘরে নি:শব্দ করে
সদাই তারা আছেন জুইড়ে
- সাঁইজী



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

ফারুক ওয়াসিফ এর ছবি

হুমম, লালন কি শেষপর্যন্ত অটোসেন্সরের দর্শনদাতা হলেন নাকি? না, পাগলের সাঁকো নাড়াচ্ছি না।
দিয়ে জীবের নজরে ঘোর টাটি
পরের হাতে কল কাঠি...
::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::::
মনে হয় তবু স্বপ্ন থেকে জেগে
মানুষের মুখচ্ছবি দেখি বাতি জ্বেলে

হাঁটাপথে আমরা এসেছি তোমার কিনারে। হে সভ্যতা! আমরা সাতভাই হাঁটার নীচে চোখ ফেলে ফেলে খুঁজতে এসেছি চম্পাকে। মাতৃকাচিহ্ন কপালে নিয়ে আমরা এসেছি এই বিপাকে_পরিণামে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

সাইঁজী তো দর্শন দিয়েই যাচ্ছেন। আমিও টুকে রাখছি ভুল বানানে বরাবরের মতো.....মন খারাপ



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

সবুজ বাঘ এর ছবি

হাতের তাইলায় ভুলরে আমার পায়ের তাইলায় ভুল...

সুমন চৌধুরী এর ছবি

শ্যাষে?



ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

হাসি

ধুসর গোধূলি এর ছবি
দ্রোহী এর ছবি

বদ্দা আপ্নে কতোদিন ল্যাখেন্না!!!!!!!!!!


কি মাঝি? ডরাইলা?

Barkat Ullah Maruf এর ছবি

বাংলায় ল্যাখে ক্যামনে? keyboard diya na lkhle moner bhab thik phote na.

ki jani likhte chaisilam, tao ato bhajale bhuila galam.

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।