মায়াপুরের মায়ায়

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি
লিখেছেন সৈয়দ আখতারুজ্জামান (তারিখ: সোম, ১৮/০৩/২০১৯ - ৬:৩০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যাওয়ার কথা ছিলো দার্জিলিং। কিন্তু কপাল কখনো কখনো বিশ্বাস করিয়ে ছাড়ে - ‘আমি আছি’। এখানে লেখা না থাকলে জোটে না অনেক কিছুই। কোলকাতায় সারাদিন ঘুরেও জলপাইগুড়ির ট্রেনের টিকেট পাওয়া গেলো না। এমনকি বাসের টিকেটও না। সাথের অন্যান্য ভ্রমণসঙ্গীরা আমার ভরসায় গালে হাত দিয়ে ব্যাকুল চিত্তে বসে আছে, হয়ত কিছু একটা ব্যাবস্থা করে ফেলতে পারবো। কোলকাতায় আমার এক বড়ভাই-বন্ধু আছেন – বাপ্পীভাই। তিনিও আমাদের সাথে ট্রেন টিকেট/বাস টিকেট খোঁজাখুঁজি করে হয়রান।

একটা পুরো দিন কেটে গিয়ে সন্ধ্যা নেমে এলো। কলকাতার রাস্তায় নিয়ন বাতি জ্বলে উঠেছে। কোথাও থাকার মতো সামান্য ব্যাবস্থাটুকুও না পেয়ে শেষে সেই বন্ধুর বাড়িতেই গিয়ে আশ্রয় নিলাম। বাপ্পী ভাই অনেকটা টেনে হিচড়েই তার বাড়িতে নিয়ে গেলেন। বললেন, ‘চল, একটা অন্য আইডিয়া আছে।’ ডিনার করতে করতে রাত দশটা বেজে গেলো। বৌদি সবার জন্য দুধ-চা বানিয়েছেন। সেই চা খেতে খেতে বন্ধুবর বাপ্পী ভাই ঘোষণা করলেন, ‘চা খেয়ে সবাই তৈরি হয়ে নাও, এখন আমরা সবাই মায়াপুর যাবো।’ হঠাৎ রুমে পিনপতন নিরবতা নেমে এলো এবং কেউ আর দ্বিতীয় কোনো কথা বলার সাহস পেলো না। না জানি কিছু বললে, এই সুযোগটাও হাতছাড়া হয়ে যায়। আমি শুধু বললাম, ‘এই মাঝরাতে! কী করে?’ বাপ্পী ভাই চায়ের কাপ থেকে চোখ না তুলেই বললেন, চা শেষ করেন। আমার সাথে বাইরে চলেন। সব বলছি। আর বাকিরা দ্রুত রেডি হয়ে নাও।’

বাপ্পী ভাইয়ের নিজের একটা টাটা স্করপিও জীপ ছিলো। ওটা স্টার্ট নিচ্ছে কিনা সেটা চেক করা হলো। কাছেই পেট্রোল পাম্পে গিয়ে তেল ভরা হলো। জোড় করে তেলের টাকাটা আমিই দিলাম। রাত সাড়ে এগারটা বেজে গেছে। বাইরে হালকা শীত। অল্প অল্প কুয়াশা টের পাচ্ছি। তেল নিয়ে ফিরে এসে দেখি অন্যারা তৈরির তোড়-জোড় করছে।

রওয়ানা হতে হতে রাত তখন দুটা বেজে গেলো। বাপ্পীভাইয়ের এই হঠাৎ আদেশে বউদি একটু বিরক্ত, বাপ্পীভাইয়ের মাথামুন্ডু উদ্ধার করছেন, আবার ভ্রমণের আনন্দের খুশিটাও চেপে রাখতে পারছেন না। দুজনেই ভীষণ ভ্রমণ-প্রিয়। শীতের সময়। বাইরে কুয়াশার রাজত্ব। সমস্ত চরাচর ঘুমিয়ে আছে। হঠাৎ হঠাৎ কিছু মালবাহী ট্রাক পিচঢালা রাস্তায় কাঁপন ধরিয়ে অনাগত অন্ধকারের পথে হাওয়া হয়ে যাচ্ছে।

সবাই বেরিয়ে আসার পর বৌদি দরজায় তালা লাগালেন। গাড়িতে তিন পরিবারের মোট জনা সাতেক মানুষ যাত্রা শুরু করলাম মায়াপুরের পথে। এরই নাম কপাল। কল্পনাও করতে পারিনি দার্জিলিং যাওয়া হবে না। সেই গন্তব্য পাল্টে গিয়ে হয়ে যাবে মায়াপুর। গাড়ি এগিয়ে চলছে কোলকাতা শহর থেকে ১৩০ কিলোমিটার উত্তরে নদীয়া জেলার মায়াপুরের উদ্দেশ্যে। ড্রাইভিং সিটে অভিজ্ঞ নিশাচর ড্রাইভার বাপ্পী ভাই। আমাদের দুশ্চিন্তার কোন কারণ নেই। সুযোগ পেলেই বন্ধু বান্ধবসহ সারা ভারতবর্ষের আনাচে কানাচে ঘুরে বেড়ান এই মজার মানুষ।

মায়াপুর সম্পর্কে একটু বলা দরকার। মায়াপুর শ্রী চৈতন্য দেবের জন্মস্থান। প্রায় পাঁচশ বছর আগে শ্রী চৈতন্য দেব এই মায়াপুরে কৃষ্ণের ধর্মবানী প্রচার করেন। ইন্টারন্যাশনাল সোসাইটি ফর কৃষ্ণ কনশাসনেস বা ইসকন ১৯৭০ সালে এই মায়াপুরেই তাদের প্রধান কার্যালয় এবং এক বিশাল আশ্রম গড়ে তোলেন। এটি এখন এক উল্লেখযোগ্য তীর্থস্থান ও পর্যটন কেন্দ্র। প্রতি বছর প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ মায়াপুর ভ্রমণে আসেন। তারা কৃষ্ণের জীবন দর্শন সম্পর্কে জানেন। জানেন রাধাকৃষ্ণের ঐতিহাসিক ঘটনাবলীর বিস্তারিত বিবরণ আর উপভোগ করেন কোলাহলমুক্ত, শান্ত, নিবিড় মায়াপুরের প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্য।

সকাল সাতটায় আমরা মায়াপুর পৌঁছে গেলাম। মায়াপুরের ইসকন ক্যাম্পাস অনেক বড়। বাপ্পী ভাই পর্যটন সেন্টারের সামনে গাড়ি থামালেন। পাশেই গদা ভবন। গদা ভবন মূলত গেষ্টহাউজ, মূল রিসেপশন, তথ্যকেন্দ্র, রুম ও ট্যুর বুকিং সংক্রান্ত কার্যালয়। আমরা প্রথমেই আমাদের রাত্রিযাপনের জন্য রুম বুক করতে দোতলার বুকিং কাউন্টারে গেলাম। প্রথমেই কাউন্টার থেকে খারপ খবর - ‘কোন রুম খালি নেই।’ সকাল আটটা চেক আউট টাইম। যদি কেউ রুম ছেড়ে দেয় তবেই আমাদের থাকা নিশ্চিত হবে। অগত্যা আমরা ওয়েটিং লিস্টে আমাদের নাম তুলে দিয়ে আটটা বাজার অপেক্ষায় সকালের নাস্তা সারতে গদা ভবনের নিচ তলায় নেমে এলাম। এখানে নানা পদের নাস্তার আয়োজন। সবজি, পনির, রুটি, পরাটা, মিষ্টি আরো অনেক কিছু। তবে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য দিক হচ্ছে, এখানে প্রাপ্ত সকল খাবার নিরামিষ।
কপাল ভালো আটটায় আমরা আইসোদিয়ান ভবনের গেষ্ট হাউসে দুটো রুম পেয়ে গেলাম। রাত কাটানো ব্যবস্থা হলো। এই রুম দুটো না পেলেও যে কোন অসুবিধা হতো তা নয়, কাছেই সুলভে আরো অনেক থাকার জায়গা আছে। তবে ক্যাম্পাসের ভেতরকার আবাসিক আয়োজনে জায়গা পেলে পায়ে হাঁটার দূরতে¦ অধিকাংশ দর্শনীয় স্থানই ঘুরে দেখা সহজ হয়। রুমে লাগেজ পত্র রেখে সবাই একটু বিশ্রাম নিয়ে নিলাম। এক ঘন্টার বিরতির পর আমরা মায়াপুর ঘুরতে বেরিয়ে পড়ি।

পুরো এলাকা সুন্দর ছিমছাম, ছবির মতো সাজানো। জানা-অজানা নানান ফুলের নজরকাড়া বাগান। পাতাবাহারের গাছের সারি দিয়ে সাজানো হয়েছে রাস্তাগুলো। যেখানেই চোখ যায়, মনে হয় দাঁড়িয়ে ছবি তুলি। গাছে গাছে অনেক পাখি কিচির মিচির ডাকছে। রাস্তার মোড়ে মোড়ে আছে দিকনির্দেশনা। কোথায় কী আছে আপনি সহজেই জেনে যাবেন। তথ্য কেন্দ্র থেকে সংগ্রহ করতে পারেন মায়াপুর সম্পর্কে ছোট্ট পুস্তিকা যেখানে আপনার প্রয়োজনীয় প্রায় সকল তথ্যই গুছিয়ে লেখা আছে। বাপ্পী ভাই প্রথমেই গাড়িতে করে পুরো মায়াপুর ক্যাম্পাসের মধ্যে একটা চক্কর লাগালেন। আধা ঘন্টার এই চলতি পথে আমরা আশ্রমের বর্হিদৃশ্য সম্পর্কে একটা ধারণা পেয়ে গেলাম। চটজলদি দেখে নিলাম মন্দির, পদ্ম ভবন, শঙ্খ ভবন, গোশালা, গৌরাঙ্গ কুটির আর গোবিন্দ রেস্টুরেন্ট। এগুলো একই পথে একের পর এক দেখে নেয়া যায়। আর যেদিকে মেইন গেট তার পথেই আছে প্রভুপদ পুষ্প সমাধি মন্দির, সুলভ প্রাসাদ কক্ষ, নতুন ভক্ত প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, আর ভজন কুটির। মূল রিসেপশনের গদা ভবনের পথ ধরে এগুলে দেখা যাবে চক্র ভবন, গদা প্রাসাদ কক্ষ, ভক্তিবেদান্ত বুক ট্রাস্ট, নামহট্ট ভবন, গৌর নিতাই ধর্মশালা। এক এক ভবনে এক এক ধরণের কর্মযজ্ঞ। অল্প সময়ে সব কিছু বুঝে ওঠাও মুশকিল। মাঝে মাঝেই ছোট ছোট পার্ক। আশ্রমে আর ভক্তদের শিশুরা খেলছে আপন মনে। হঠাৎ আমাদের চমকে দিয়ে সামনে রাস্তা দিয়ে কয়েকটি হাতির এক পাল হেলেদুলে চলে গেল। বাপ্পী ভাই জানালেন, কৃষ্ণের ইতিহাস স্মরণে এখানে একটি গোশালা আর একটি হাতিশালাও আছে। এই হাতিগুলো আশ্রমেরই হাতি। আশ্রম ঘুরে আমরা মেইন গেট থেকে বাইরে বেরিয়ে এলাম। উদ্দেশ্য নবদ্বীপ যাত্রা।

নবদ্বীপ মায়পুরের পাশেই ভাগিরথী (গঙ্গা) নদীর ওপারে এক দ্বীপাঞ্চলের নাম। নয়টি দ্বীপ মিলে এই নবদ্বীপ। এখানে চৈতন্য মহাপ্রভূর অনেক লীলার জন্মস্থান। শ্রী কৃষ্ণভক্তদের কাছে এই দ্বীপ তাই অনেক পবিত্র। দোলযাত্রা বা রাশপূর্ণিমার সময় দেশ-বিদেশের কৃষ্ণ ভক্তদের সমাগমে এই দ্বীপ লোকে লোকারণ্য হয়ে যায়। তাদের কাছে এই দ্বীপে পা রাখাই অনেক পুণ্যের কাজ। তাই হাজার হাজার ভক্তরা ইঞ্জিত চালিত বিশাল বিশাল আকারের খোলা নৌকায় নদী পাড় হয়ে যাচ্ছেন নবদ্বীপে। পা রেখেই আবার ফিরে আসছেন ফিরতি নৌকায়। আমরা তিন টাকার টিকেট কেটে বিশাল নৌকায় নবদ্বীপ ঘুরে এলাম। তারপর ফিরে এলাম আশ্রমে।

চারটায় গীতা মেলা দেখতে গেলাম। নাম শুনেই বোঝা গেল এই মেলা হিন্দুদের পবিত্রগ্রন্থ গীতা সংক্রান্ত। মেলায় ঢোকার গেটেই বিশাল মঞ্চে চলছে ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ’ সংগীত। গোটা বিশেক স্টলে সাজানো হয়েছে গীতায় উল্লেখিত নানা ঘটনার প্রতীকী উপস্থাপন। চলছে কৃষ্ণের বানীর সম্প্রচার। আরো অবাক হয়ে লক্ষ্য করলাম যারা মূল আয়োজনের কেন্দ্রে আছেন তাদের অনেকেই বিদেশী অর্থাৎ ভারতীয় নন।

গীতা মেলা ঘোরা শেষ হতেই আমরা বেরিয়ে কিছু শপিং করতে। মায়াপুর পর্যটনকেন্দ্রের নীচতলায় বেশ কিছু স্যুভিনিয়র শপ আছে। প্রার্থণা সংক্রান্ত জিনিসপত্র যেমন জপমালা, জপব্যাগ, মন্দিরা, শাঁখ, দেবদেবীর মূর্তি ছাড়াও জামা-কাপড়, শীতবস্ত্র, প্রসাধনী, জুতা, অলংকার অনেক কিছুই পাওয়া যায় এখানে। এরপর চললাম জগন্নাথ মন্দিরে। মাতা শচীদেবী ও পিতা জগন্নাথ মিশ্রের সন্তান শ্রীচৈতন্য দেবের জন্মস্থান দেখতে। যে নীম গাছের নীচে জন্ম হয়েছে বলে তাকে নীমাই বলে ডাকা হয়, দেখলাম সেই নিমগাছটি।

আমাদের রাতে খাবার আয়োজন করা হয়েছে শ্রীচৈতন্য মঠে। এই মঠে দর্শনার্থীদের খাবারের জন্য কোন মূল্য রাখা হয় না। শুধু আগেভাগে একটু জানিয়ে রাখতে হয়। আমরা শত শত পর্যটকের সাথে মাটিতে আসন পেতে গাছের পাতার তৈরি থালায় সবজি, পনির আর ডাল দিয়ে রাতের খাবার খেলাম। কী সুশৃংখল! এত লোকের আয়োজন! কোন হৈ চৈ নেই! ভাবা যায় না।

রাত তখন নটা বাজে। বাপ্পীভাই আমদের নিয়ে চললেন গরম রসগোল্লা খাওয়াতে। পূর্ব পরিচিত সেই মিষ্টির দোকানে গিয়ে দেখি এলাহী কা-! কত শত মিষ্টির আয়োজন সেখানে। পাশেই চুলা। গনগনে আগুন জ্বলছে। চুলায় বিশাল দুধের কাড়াই। তার তিন পাশে দাঁড়িয়ে দুই হাতে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে গোল গোল করে রসগোল্লা ফেলা হচ্ছে কড়াইয়ের দুধে। আর কিছুক্ষণ পর পর উঠে আসছে ধোঁয়াওঠা আগুনগরম রসগোল্লা। ফুঁ দিয়ে ফুঁ দিয়ে সেই রসগোল্লা আমরা খেয়ে চললাম। কত যে খেলাম! তবে জীবনের সেরা রসগোল্লা যে মায়াপুরে খেয়েছি সে কথা বলতে আর কোনদিন দ্বিধায় ভুগবো না। তারপর তৃপ্তির ঢেকুর তুলে চললাম হোটেলে।

পরদিন ভোর চারটায় ঘুম থেকে ওঠালেন বাপ্পী ভাই। সকালের আরতি দেখানোর জন্য। সে এক এলাহী ব্যাপার! এত ভক্ত কোথায় ছিলো! কুয়াশায় চারপাশ আবছা মতো চোখে পড়ে। আমরা রাস্তা ধরে শত শত ভক্তদের সাদা চাদর আর সাদা ধূতি পড়ে মন্দিরের দিকে ধাবিত হতে দেখলাম । কপালে তিলক আঁকা। সবার মুখে ‘হরে রাম হরে কৃষ্ণ‘ জপমন্ত্র। মন্দিরের ভেতর আলোয় ঝলমল। বেদীতে ৮জন সখীসহ রাধার মূর্তি। মূর্তিগুলোকে অপূর্ব পোশাকে সাজানো হয়েছে। আলোর নীচে মনে হচ্ছিলো সব যেন জ্যান্ত। ঢোল আর মন্দিরার বাজনায় প্রার্থনা এক সময় তুঙ্গে উঠলো। শত শত ভক্তের মিলিত কণ্ঠে যখন প্রার্থনা শেষ হলো তখন বাইরের আকাশে আলো ফুটতে শুরু করেছে।

বাপ্পী ভাই আমাদের তাজা খেজুরের রস খাওয়াতে পরিচিত একজনের বাড়িতে নিয়ে গেলেন। পথেই আমরা চাঁদ কাজীর সমাধি দেখলাম। যে চাঁদ কাজীর সাথে সংগ্রাম করে পাঁচশ বছর আগে শ্রীচৈতন্য দেবকে ধর্মপ্রচার করতে হয়েছিলো। চাঁদ কাজী মুসলমান। এখনো এই অঞ্চলে অনেক মুসলিম পরিবার বাস করেন। সমাধির পাশেই অদ্ভূত আকারের বিশাল এক পুরনো গাছ। রাধাকৃষ্ণের পাশাপাশি এই গাছও পূজা করা হয়।

মিনিট পাঁচেক এগুতেই দেখলাম, রাস্তার পাশে রস জ্বাল দেয়া হচ্ছে। আমাদের জন্য কিছু কাচা রস আলাদা করা রাখা ছিলো। আমরা গেলাসে গেলাসে ঢেলে সেই অমৃত রস পান করলাম। তারপর চোখের সামনে দেখলাম কী করে রস বাটালি গুড় হয়ে যায়। সেই বাটালি গুড় দুই কেজি কিনে বাপ্পী ভাই গাড়ী ঘোরালেন কোলকাতার পথে। ততক্ষণে কুয়াশার দেয়াল ভেদ করে আকাশে সূর্যের দেখা মিলতে শুরু করেছে।

যেভাবে যাবেন:
কোলাকাতা থেকে মাত্র ১৩০ কিলেমিটিার পথ। গাড়িতে, বাসে, ট্রেনে যেকোন ভাবেই যাওয়া যায়। সময় লাগে মাত্র ৪ ঘণ্টা। তবে সড়ক পথের অবস্থা খুব একটা ভালো না হওয়া পর্যন্ত ট্রেনে যাওয়াই নিরাপদ। বিভিন্ন শ্রেণি অনুযায়ি ট্রেনে খরচ পড়বে জনপ্রতি তিনশ থেকে ৭শ’ টাকা।

যেখানে থাকবেন:
মায়াপুর ইসকন আশ্রমে থাকাই সবচেয়ে ভালো। নন এসি ডাবল রুম ৮০০ টাকা, এসি রুম ১২০০ টাকা। এছাড়াও ১০০০ টাকায় খুব সহজইে ডাবল রুম পেয়ে যাবেন আশ্রমের বাইরেও। তীর্থযাত্রীরা বিড়লা আশ্রমেও থাকতে পারেন। এখানে রুম খালি পেলে থাকার জন্য কোন খরচ নেই। তিনবেলা খাওয়া দাওয়া করতে পারেন শ্রীচৈতন্য মঠে, বিনা খরচে। অন্য কোথাও খেলে জনপ্রতি প্রতিদিন ৪০০ টাকা বাজেট রাখলেই যথেষ্ট।


মন্তব্য

নজমুল আলবাব এর ছবি

ওরেএএএএএ!!! কত্তো বছর পরে আসলেন? খুবই ভালো লাগছে। গদ্য চমৎকার হয়েছে। আরো ছবি আসলে মন্দ হতোনা।

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

এসে গেছি মামু জান! নীড়পাতা থেকে এই লেখা অস্ত গেলেই নতুন লেখা নিয়ে উদয় হবো। আবার সবাই যদি ফিরে আসতো, প্রতিদিন হুড়হুড় করে কত লেখা যে পোষ্ট হতো! দেখতে দেখতে দশটা বছর কেটে গেলো,নাকি আরো বেশি! আঙুলগুলো মরিচাবৃৃত, সারা শরীর এখনো অবশ হয়ে আছে।

নজমুল আলবাব এর ছবি

নিজে সচল হলে আরো অনেককে সচল করা যায়। আপনি এইটারে নিজের পাতায় নিয়ে নতুন লেখা দিয়ে দিন এখনই।

তারেক অণু এর ছবি

যাইতে হবে! শ্রী চৈতন্যের ডান হাত নরোত্তম ঠাকুরের আশ্রম কিন্তু রাজশাহীর কাছেই প্রেমতলিতে, যেখানের খেতুর ধামে ফি'বছর মেলা হয় যা বৈষ্ণবদের কাছে ২য় গুরুত্বপূর্ণ স্থানে । শ্রী চৈতন্য সেখানে এসেছিলেন বলেও ইতিহাস বলে। আবার আসেন রাজশাহী, ঘোরা হয়ে যাবে

সৈয়দ আখতারুজ্জামান এর ছবি

মেলায় যেতে হবে।
শীঘ্রই আসছি।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।