খ্রীষ্টমাস ঈভ্

দময়ন্তী এর ছবি
লিখেছেন দময়ন্তী (তারিখ: বুধ, ২৪/১২/২০০৮ - ৮:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ডিসেম্বরে মাস এলেই চারিদিকে কেমন একটা খুশী খুশী ভাব দেখা যায়৷ এই উত্সব সেই উত্সব শুরু হয়ে যায় ৷ যত ধ্রুপদী সঙ্গীতের সারারত্রিব্যপী অনুষ্ঠান - ডিসেম্বর থেকে শুরু হয় ৷ 'রাজস্থান ফেস্টিভাল' , "ক্ষুদ্র ও কুটীরশিল্প মেলা' , অমুক তমুক খাদ্য উত্সব - সেসবও এই ডিসেম্বরেই শুরু হয়৷ পাড়ার ছোট্ট দোকানে সাজিয়ে রাখে কেক, চাক্কি, চিকলি, মাইসোর পাক --- এটাসেটা নানারকম ৷ বিদেশ থেকে বন্ধুরা বেশীরভাগ এইসময়ই দেশে আসে৷ স্কুলগুলোতে খ্রীষ্টমাসের ছুটি আসবো আসবো করছে -- দোকানপাট, বাচ্চাদের স্কুলে লাল নীল সোনালী চিকমিকে কাগজ দিয়ে সাজানো --- কোথায়ও বা সান্টা বেরিয়েছে ঘোড়ায়টানা গাড়ী চেপে -- বাচ্চারা তাকে ঘিরে আনন্দে লাফাচ্ছে -- নীল আকাশ--- ঝকঝকে রোদ -- আকাশ থেকে টুপটাপ খসে পড়ছে চিকমিকে ঝিলমিলে খুশীর বল৷

ডিসেম্বর মানে ডেডলাইনের অসহ্য চাপ
ডিসেম্বর মানে বিদেশে থাকা বন্ধুদের দেশে আসা
ডিসেম্বর মানে ইনভেস্টমেন্ট প্রুফ জমা দেবার তাড়া
ডিসেম্বর মানে সওয়াই গন্ধর্ব উত্সবে রাতভোর পন্ডিত যশরাজ , জাকির হুসেন
ডিসেম্বর মানে ............

অনেক অনেক দিন আগের একটা 24শে ডিসেম্বর ............
তখন অ্যানুয়াল পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোত 24 শে ডিসেম্বর৷ ক্লাস টুয়ের ঝুমার সেবারে 20 তারিখ থেকে জ্বর চলছে৷ বাবা বলেছে বড়দিনের দিন খুব মজা হবে, কিন্তু কী মজা তা কিছুতেই বলে নি৷ মা'র কথায় তাই ঝুমা চুপটি করে বিছানায় শুয়ে থাকে, যাতে তাড়াতাড়ি জ্বর কমে যায়৷

23 তারিখ বিকেলে বাবা যখন বলল সেদিনই কেক নিয়ে আসবে তখনও ঝুমার জ্বর কমে নি ৷ তাই বাবা, ওর ভাই বুড়োকে নিয়ে চলে গেল ফ্লুরিজে ৷ বলে গেল 25 তারিখে ঠিক কমে যাবে জ্বর আর তখন ও-ও যাবে মজা করতে ৷ বাবারা ফিরে এল প্রায় দেড় ঘণ্টা পর৷ দেখা গেল কি একটা জিনিষ দোকানদার উল্টোপাল্টা দিয়েছে ৷ বুড়োকে বাড়ীতেই রেখে বাবা আবার গেল দোকানে পাল্টাতে ৷ উরিব্বাসরে কি চমত্কার সব চকোলেট এনেছে বাবা, ছোট্ট ছোট্ট রুপালী রুপালী রাংতায় মোড়া ৷

সন্ধ্যে 7 টা থেকে হঠাত্ই বাবার খুব শরীর খারাপ লাগতে লাগল ৷ মা খবর পাঠাল ডাক্তারকাকাকে ৷ এই তো 10 মিনিটের রাস্তা ৷ ডাক্তারকাকা নাকি কোথায় কলে গেছেন, এসে যাবেন ৷ বাবা ভীষণ ঘামছে আর বুকে অল্প অল্প ব্যথা হচ্ছে ৷ রাত আটটা পনেরো নাগাদ ডাক্তারকাকা এল ৷ কিন্তু প্রেশার মাপার যন্ত্র আনে নি যে ৷ আরো আধঘন্টা লাগল মোটামুটি চেক্আপ হতে ৷ ইতিমধ্যে বাবা দুইবার বমিও করেছে ৷ বাবার প্রেশার নাকি উঠছে আর নামছে ৷ ঝুমা ভেবে পায় না এই প্রেশারটা কী? কোথা দিয়ে উঠছে আর নামছে? বুড়ো ঘুমিয়ে পড়েছে৷ ঝুমাও আর পারে না জেগে থাকতে ৷ কিন্তু ঝুমা দেখে বাবার ভীষণ কস্ট হচ্ছে ৷ মাঝে মাঝেই কত্ত বড়
হাঁ করছে নি:শ্বাস নেবার জন্য৷ ঝুমা ভেবেই পায় না কি করবে ৷ মা-ও তো তাকাচ্ছেই না ওর দিকে ৷ ঝুমার মনেই নেই কখন ও ঘুমিয়ে পড়েছে আর কখন ওদের দুই ভাই-বোনকে তুলে নিয়ে ওপরে ছোটপিসির ঘরে শুইয়ে দেওয়া হয়েছে ৷

ঝুমা জানে না কতরাতে, ওর ছোটপিসি ওকে তুলে, আর ভাইকে কোলে নিয়ে নীচে আসে ৷ ঘুমচোখে দ্যাখে ঝুমা বাবা, মা কেউই নেই ঘরে ৷ পিসি বলে বাবাকে পিজি হাসপাতালে নিয়ে গেছে ৷ ঝুমা চেনে ওটা ৷ ওর স্কুলের ঠিক উল্টোদিকেই তো ৷ আবার ঘুমিয়ে পড়ে ঝুমা ৷

মা আর দাদা, ওর মেজপিসির ছেলে বাড়ী ফিরে আসে সকাল সাড়ে ছটা নাগাদ ৷ তখনই ঝুমা, বুড়ো ঘুম থেকে ওঠে ৷ শোনে বাবাকে নাকি রাত দেড়টা থেকে পৌনে তিনটে পর্যন্ত মাটিতে শুইয়ে রেখেছিল৷ বাবার নাকি ভীষণ কষ্ট হচ্ছিল ৷ এখন ঘুমোচ্ছে ৷ মা কিরকম একটু এলোমেলোভাবে চা, ওদের খাবার গোছাতে শুরু করে ৷ ঝুমাকে বলে "তুই আজ স্কুল বাসে চলে যা রেজাল্ট আনতে" ৷ এরই মধ্যে বেজে ওঠে ফোন ৷ ঝুমাই লাফিয়ে গিয়ে ধরে ৷ ওদিক থেকে এক খ্যানখ্যানে স্বর বলে "হাসপাতাল থেকে বলছি, পেশেন্টের কন্ডিসান খুব খারাপ"৷ ইতিমধ্যে দাদা এসে ফোনটা নিয়ে নিয়েছে ৷ ঝড়ের বেগে কিসব বলে দাদা আর মা হুড়মুড়িয়ে বেরিয়ে যায় ৷ ঝুমা, বুড়ো কেমন যেন একটা অস্বস্তির মধ্যে খেয়ে নেয় দুধ-পাঁউরুটি ৷ বোধহয় পনেরো মিনিটের মধ্যেই ফিরে আসে মা আর দাদা ৷ ঝুমা ভাবে বাবাকে বোধহয় ছেড়ে দিয়েছে৷ সিঁড়ির কাছে গিয়ে দ্যাখে কই বাবা তো আসে নি ৷ আর একি? মা তো সোজা ঘরে গিয়ে মেঝেতে কিরকম ঝুপ করে বসে পড়ল ৷ কারো দিকে তাকাচ্ছে না ৷ আর দাদা ভীষণ জোরে জোরে কাঁদছে আর মাথার চুল টানছে ৷ ঝুমা কিচ্ছু বোঝে না, বুড়ো ও না ৷ ওর আর সেদিন স্কুলে যাওয়া হয় না ৷ কত লোক এসে ঢুকে পড়ে ওদের বাড়ী ৷ ঝুমার কিচ্ছু মনে নেই ভাল করে ৷ দুপুরে নাকি বিকেলে কে যেন বলে "বাবাকে দেখবি চল"৷ নীচে নিয়ে যায় ৷ বাবাকে সামনের রাস্তায় একটা কটকটে কমলা রঙের খাটে শুইয়ে রেখেছে ৷ ঝুমা দেখেছে এই খাটগুলো জগুবাজারে বিক্রী হয় ৷ আর কত্ত লোক ৷ এরা কারা? কোথা থেকে এল? ঝুমাকে সবাই বলে "একটু কাঁদ"৷ কিছুতেই ওর কান্না আসে না ৷ ও কিছুতেই বোঝে না কেন বড়পিসি ওরকম বাবার বুকের ওপরে মাথা ঠুকছে৷ বাবার যে কাল বুকব্যথা করছিল! আরো ব্যথা লাগবে তো! মা কেন মানা করছে না? দাদু, দিদা, পিসিরা, পিসেমশাইরা, বড়মামা, বড়মামীমা, ছোটদি, ছোটমামা সব্বাই কাঁদছে ৷ শুধু আট বছুরে ঝুমা আর দুই বছুরে বুড়ো বড় বড় চোখ করে দেখছে ৷ গাদা গাদা লোক মিলে খাটটা কাঁধে তুলে নিয়ে চলে যাচ্ছে ৷ ঝুমাকে জোর করে কারা যেন ওপরে নিয়ে আসে ৷ বাবাকে নাকি আর কক্ষণো দেখতে পাবে না ৷ সে কী??? তাহলে বাবা যে বলেছিল 25শে ডিসেম্বর খুব মজা হবে?

তারপর আর সময়ের হিসাব নেই ঝুমার ৷ ও শোনে বড়মামীমা মা'কে বলছে "দিদি তুই তো আর এই লাল টিপটিপ ব্লাউজটা ব্যবহার করবি না তাহলে মুন্নির জন্য নিয়ে নিই?" (সেকী! ছোটদি তো শাড়ী পরে না ৷ কি করবে ওটা নিয়ে!) ঝুমা শোনে ছোটপিসি বলছে "এবার থেকে তোদের চটের জামা আর টায়ারের চটি পরতে হবে ৷(টায়ার তো বাবার গাড়ীতে আছে ৷ তা আবার পায়ে পরবে কি করে? অমন গোল, মোটা জিনিষ পায়ে পরা যায় নাকি?) ঝুমা শোনে ডাক্তারকাকা বলছে বাবার নাকি হার্টের ভাল্ভ্গুলো একটা একটা করে বন্ধ হয়ে আসছিল, কিন্তু বাবা কিছুতেই মা'কে জানাতে দেয় নি ৷ বলেছিল নতুন বছরের ফেব্রুয়ারী মাসে ভাল করে চিকিত্সা করাবে, এখন ভীষণ কাজের চাপ তো ৷

ডিসেম্বর মানে ডেডলাইনের অসহ্য চাপ
ডিসেম্বর মানে বিদেশে থাকা বন্ধুদের দেশে আসা
ডিসেম্বর মানে ইনভেস্টমেন্ট প্রুফ জমা দেবার তাড়া
ডিসেম্বর মানে পার্কসার্কাস ময়দানে অলিম্পিক সার্কাস
ডিসেম্বর মানে ............
শেষ হয়ে যায় 24শে ডিসেম্বর৷

ঝুমা কিচ্ছু বোঝে না ৷ কেন বাবা ডাক্তারকাকার কথা শোনে নি? মা তো ঝুমা বুড়োকে অসুখ করলে জোর করে শুইয়ে রাখে, কেন ডাক্তারকাকা মা'কে বলে দেয় নি ৷ মা তাহলে ঠিক বাবাকে শুইয়ে রাখত ৷

কাল বড়দিন .................
ঝুমার কিচ্ছু কিচ্ছু ভাল লাগে না .


মন্তব্য

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ঠিক বলেছেন। হাসি মন খারাপ দুটোই।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

মন খারাপ করা লেখা।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দময়ন্তী লিখেছেন:
ঝুমাকে সবাই বলে "একটু কাঁদ"৷ কিছুতেই ওর কান্না আসে না ৷ ও কিছুতেই বোঝে না কেন বড়পিসি ওরকম বাবার বুকের ওপরে মাথা ঠুকছে৷ বাবার যে কাল বুকব্যথা করছিল! আরো ব্যথা লাগবে তো!
খুবই মন খারাপ হয়ে গেল পড়ে। "স্মৃতিচারণ" যেহেতু, তারমানে সত্যি ঘটনা, ঠিক?

ডিসেম্বর মানে খারাপ মাস। খুব খারাপ।

দ্রোহী এর ছবি

মনটা খারাপ হয়ে গেল।


কী ব্লগার? ডরাইলা?

দৃশা এর ছবি

কি দিদি, কি পড়ব আশা করে এলাম, আর কি পড়তে পেলাম। মনটা গেল হাঁসের পেটের মত হঠাৎ করে খারাপ হয়ে। ভাল থাকুন।
--------------------------------
দুঃখ তোমায় দিলেম ছুটি...
বুক পাঁজর আজ ফাঁকা।
দুঃখ বিদায় নিলেও সেথায়...
দুঃখের ছবি আঁকা।

দৃশা

গৌতম এর ছবি

দয়মন্তী, আপনি এতো কম লিখেন কেন?
.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

ব্লগস্পট ব্লগ ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শান্ত [অতিথি] এর ছবি

পান্থ রহমান রেজা লিখেছেন:
মন খারাপ করা লেখা।

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

বিষন্ন লেখা...

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

ধুসর গোধূলি এর ছবি
ভূঁতের বাচ্চা এর ছবি

মনটা খুব খারাপ হয়ে গেল দিদি।
কিন্তু করার কিছুই নেই ভাল-খারাপ মিলিয়েই তো জীবন।

--------------------------------------------------------

শ্যাজা এর ছবি

আজ সারাটা দিনই বাইরে কাটলো। খুঁচখাচ কাজ, এখানে ওখানে ঘুরে ঘুরে। বাড়ি যাবো, প্রস্তুতি.. তাড়া ..তাড়া.. লেখাটায় এখনও খানিকটা কাজ বাকি..

এত মানুষ ... এত মানুষ... রঙীন সব জামা কাপড়, টুপি, বেলুন আর হাসিমুখ সব কচি-কাঁচা.. সারসার সব গাড়ি ছুটে চলেছে প্রবল তাড়ায়, কোন ট্যাক্সি থামে না কারোর জন্যে। অপেক্ষায় ক্লান্ত মানুষটি দৌঁড়ে গিয়ে লাথি মারেন ছুটন্ত ট্যাক্সিকে, খিস্তিরা উড়ে আসে কাঁচের ফাঁক গলে।

মদের দোকানের সামনে লম্বা লাইন। নিত্যযাত্রীদের সাথে আজ ভীড়ে সামিল কিশোর-কিশোরীদেরও..
হগ সাহেবের বাজারে গিয়ে মাথাটা কেমন যেন হয়ে গেল। বড়দিন।। বড়দিন।।

ভাবলাম আজ একটা ব্লগ লিখি, খ্রীষ্টমাস ইভ।

এই লেখাটা পড়ার পর আর লিখতে ইচ্ছে করল না..

------------
অনেক সময় নীরবতা
বলে দেয় অনেক কথা

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

ভাল থাকুন।

অমিত আহমেদ এর ছবি

আনন্দের সদরদুয়ার ঘুরিয়ে এনে এমন কষ্টে ফেলে দিলেন! খুব মন খারাপ হয়েছে।


ওয়েবসাইট | ব্লগস্পট | ফেসবুক | ইমেইল

দময়ন্তী এর ছবি

এই লেখায় আলাদা করে উত্তর দেওয়া আমার পক্ষে একটু কঠিন ৷ তাই, আলাদা করে কাউকে লিখলাম না৷
এটা যাঁরা পড়েছেন এবং যারা মন্তব্য করেছেন সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ ৷
-----------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

স্নিগ্ধা এর ছবি

দময়ন্তী, আপনার সিগনেচারই আপনার লেখায় আমার মন্তব্য -

আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷

আনন্দে থাকবেন।

দময়ন্তী এর ছবি

হ্যাঁ স্নিগ্ধা, ওটাই আমার জীবনদর্শন ৷
------------------------------------------
"নিভন্ত এই চুল্লিতে মা
একটু আগুন দে
আরেকটু কাল বেঁচেই থাকি
বাঁচার আনন্দে৷'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

কষ্ট পেলাম। ভীষণ কষ্ট পেলাম।
~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
একলা পথে চলা আমার করবো রমণীয়...

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।