পুণে শহরে জলাভাব বরাবরই। সেই কবে ব্রিটিশরা এসে খড়গওয়াসলা বাঁধ ও জলাধার বানিয়েছিল, সেই জলাধারই বহুবছর পুণের মানুষজনকে গৃহস্থালীর কাজকর্ম ও খাবার জলের যোগান দিয়ে গেছে। তারপর আস্তে আস্তে এলো পানশেত, পওনা, মুলশি, কাসারসাই ইত্যাদি জলাধারগুলো। যতবেশী জায়গা জুড়ে তোলা জল নল বেয়ে ঘরে ঘরে পৌঁছাতে লাগল ততই মানুষের থেকে দূরে সরতে লাগল মুঠাই, নীরা, মুলা নদীরা।
৮ই নভেম্বর ২০১৬
বাড়ী ফিরতে ফিরতে প্রায় পৌনে আটটা, এর মধ্যেই দেখি অফিসের লীডারশিপ গ্রুপটায় লোকজন উত্তেজিত, কি না 'প্রধানমন্ত্রীজি ভাষণ দেনেওয়ালে হ্যাঁয় রাত আট বাজে টিভি পর'। ধ্যাত্তেরি, দিতে থাকুক, ভেবে গুরুত্ব দিই নি। ওবাবা সমানে টুংটাং মেসেজের ঝড়। খুলে দেখি সব ৫০০ আর ১০০০ টাকার নোট মাঝরাত থেকে বাতিল ব্লা ব্লা ব্লা। প্রথমেই মাথায় এল আর সিগনালে রবীন্দ্রসংগীত বাজানোর আদেশে আমরা কিনা পশ্চিমবঙ্গের ওনাকে মহম্মদ বিন তুঘলকের সাথে তুলনা করেছিলাম। তারপর আলমারীর ড্রয়ার হাঁটকে দেখলাম যা খুচরো আছে তাতে এক্ষুণি এটিএমে গিয়ে লাইন দিতে হবে না। যাক আপাতত নিশ্চিন্ত। শনিবারে দেখা যাবেখনে
একটা গোটা বছর চলে গেল, সচলে কিচ্ছুটি লিখিনি| আগে তাও মাসে একটা করে লিখতাম, সেটা কমে এলো বছরে একটা, তাও হয় না| এখানে একটা বিরস মুখের ইমোজি দেওয়াই যেত, কিন্তু থাক --- কী হবে! যা হয় নি, হয় নি| ২০১৫য পড়া বই নিয়ে, লেখককে নিয়ে লেখার আহ্বানটা দেখে অবশেষে লিখেই ফেললাম| আগের কয়েকটা বছরের তুলনায় ২০১৫ তে পড়া হয়েছে প্রচুর| কাজেই লিখতে গেলে তিন চারখানা ব্লগ লিখে ফেলাই যায়| আপাতত বেশী ভ্যানতাড়া না করে একটা অন্তত লিখেই ফেলি|
"ড্যাঞ্চীনামা' দিয়ে পরিমল ভট্টাচার্য্য পড়া শুরু করেছি ২০১২তে, কিন্তু এই লেখককে নতুনভাবে আবিষ্কার করলাম ২০১৫তেই| যে দুটো বই চেটেপুটে পড়েছি --
১) "শাংগ্রিলার খোঁজেঃ- হিমালয়ে গুপ্তচারণার তিন শতক"
২) "দার্জিলিং ঃ- স্মৃতি সমাজ ইতিহাস"
১)
দুই ক্ষেপ মিলিয়ে নয় নয় করেও পাঁচ বছর হয়ে গেল পুণেতে| বেড়ে ওঠার সেই ছোট্ট মফস্বল কোন্নগরের পরেই জীবনে সবচেয়ে বেশীদিন ত্থাকছি পুণেতে| সহ্যাদ্রির কোলে শান্ত ছোট্ট শহরটাকে প্রায় চোখের সামনেই মেট্রোসিটি হয়ে যেতে দেখলাম|
'হোক্কলরব' নামে এই যে শ্লোগান এবং হ্যাশট্যাগটা এখন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতেও দিব্বি জায়গা করে নিয়েছে, তার শুরুটা কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের এই পচাগলা রাজনীতির আর পাঁচটা ঘটনার মতই হয়েছিল| পশ্চিমবঙ্গে 'শ্লীলতাহানি' আর 'ধর্ষণ' আজকাল 'হাসি' আর খুশী'র মতই হরহামেশা খবরের কাগজের পাতায় বা মানুষের আলোচনায় থাকে| তো সেই নিত্যনৈমিত্তিক প্রাত্যহিকতায় 'যাদবপুরের এক ছাত্রীর শ্লীলতাহানি'র অভিযোগকে তেমন গুরুত্ব দিয়ে ফলো করার কথা অনেকেই ভাবেন নি| বরং বিশ্বভারতীর যে ছাত্রী ধর্ষণের বিচার চেয়ে না পেয়ে পড়া ছেড়ে সিকিমে ফেরত চলে গেল, তাকে নিয়ে কিছু আন্দোলন হল না কেন সেই নিয়েই আলোচনা চলছিল কোথাও কোথাও| তো, আসুন প্রথমে একটু ঘটনাক্রমটা দেখে নিই
'নারিকেল ভোজনে অহিত যদি হয়, তন্ডুলেতে উপশম জানিবে নিশ্চয়||
আম্রফলে দুগ্ধে ঘৃতে জামীরের রস| কদলীর ফলে ঘৃত পাচক সরস||'
"কাঁঠালে কদলী ফল, কদলীতে ঘৃত| ঘৃতপাকে জম্বুরস জীর্ণমতে ধৃত||
জামরস বিগুণে লবণ প্রতিফল| বিঘ্নকর লবণে তন্ডুলধৌত জল||"
খুকী তোমাদের কিচ্ছু বোঝে না মা'--