গরিবের বিনোদন

??? এর ছবি
লিখেছেন ??? (তারিখ: শুক্র, ২২/০৬/২০০৭ - ১০:২৯অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

small

- আপনে গো টিভি-তে কি জি-সিনেমা আছে?
- আছে।
- স্টার প্লাস?
- স্টার প্লাস তো নাই!
- না থাকলে কেমনে চলে? স্টার প্লাসের সিরিয়াল না দেখলে আমার ঘুম আহে না।

শহুরে গরিবগোষ্ঠীর কাগুজে ক্ষমতায়ন নিয়ে উচ্চ/মধ্যবিত্তের সমাজে নানান চুটকি চালু আছে। গার্মেন্টস শিল্পের প্রসারে সমাজ থেকে যেভাবে ‘কাজের বুয়া’ নামক শ্রেণীটি বিদায় নিচ্ছে, তা বিত্তবানের জন্য বেশ দুশ্চিন্তার। তাই, যারা গার্মেন্টস-মোহমায়ার চক্করে না গিয়ে এই প্রাচীন পেশায় বর্তমান আছেন, তারা পাণ্ডা প্রজাতি থেকে কিন্তু কোনো অংশে কম মহান নন। আর, বলা হয়, সেই মহত্বের পূর্ণ মূল্য আদায় করতেও সক্ষম তারা। ফলে, নিয়োগকর্তার টেলিভিশনে কী কী চিত্তাকর্ষক চ্যানেল আছে, সেইটা কখনও তাদের কর্মস্থল নির্বাচনের ক্রাইটেরিয়া হয়ে দাঁড়ায়। এরকম সম্ভাবনাকে চুটকি বানিয়ে খুব একচোট হাসেন তারা।

তারা আসলে হাসেন কী নিয়ে? স্পষ্টতই গরিবের বিনোদন-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে। যেন ‘বিনোদন’ নামক কর্মকাণ্ডে বিত্তবানেরই একচ্ছত্র অধিকার! গরিব বিনোদন চাইলে তাদের হাসি পায়। বিত্তবানের বুয়াসংকট বা ডিমান্ড-সাপ্লাই পেজগির চক্করে গরিব তার বিনোদন আদায় করে নিচ্ছে, এটাই হাসির উপলক্ষ।

বিনোদন-বাজারে গরিব ঢুকল কিভাবে
বাংলাদেশে সত্তর দশক পর্যন্ত অডিওভিজুয়াল বিনোদনমাধ্যমগুলো মোটামুটি মধ্যবিত্তের এখতিয়ারে ছিল। যারা বিনোদনমাধ্যমে ‘রুচির পতন’ দেখতে পান তারা সেটা দেখতে শুরু করেন আশি দশকের গোড়া থেকে। তার আগে Ñ কী চলচ্চিত্র, কী সঙ্গীত, কী টেলিভিশনে Ñ দাপট ছিল মধ্যবিত্তের। মূলধারার ভিতরে থেকেই আলমগীর কবির ‘সূর্যকন্যা’ বা ‘সীমানা পেরিয়ে’র মত ছবি বানাচ্ছেন, অডিওতে ধুন্ধুমার বাজছে হেমন্ত, মান্না দে বা শ্যামল মিত্র। আর টেলিভিশনের পক্ষে একটা হার্ডঅয়্যার হিসাবেও তখন মধ্যবিত্তের ড্রয়িংরুমের বাইরে আসা সম্ভব ছিল না।

অডিও বাণিজ্যে গরিবের পক্ষে প্রথম সত্যিকারের ব্রেক-থ্রু ঘটে সঙ্গীতশিল্পী মুজিব পরদেশী-র আবির্ভাবের সাথে সাথে। তার আগে, সত্তর দশকে ব্যান্ডগুরু আযম খান ‘ওরে সালেকা ওরে মালেকা’ গেয়ে গেয়ে একটা পরিবেশ তৈরি করেন বটে, কিন্তু সেই গান যতটা না ‘গরিবের গান’ তার চেয়ে বেশি ছিল ‘গরিবের জন্য গান’। শ্রেণীদূরত্ব কম থাকায় জনপ্রিয়তা বাড়ল বটে, কিন্তু সেই গানের জন্য গরিবের কানের তৃষ্ণা তৈরি হল না সেভাবে। একইভাবে, ফকির আলমগীর যেসব গান গেয়েছেন তা শেষপর্যন্ত গণসঙ্গীতের মধ্যবিত্তপনা। নিম্নবর্গের মানুষের বিদ্রোহ নিয়ে মধ্যবিত্তের নিজস্ব কল্পনা এবং ভ্যালু জাজমেন্ট।

আশির গোড়াতেই মুজিব পরদেশী এসে গাইলেন ‘আমি বন্দী কারাগারে’। হামলে পড়ল গরিব, কান ভারি হয়ে উঠল মধ্যবিত্তের। এসব আবার কী ধরনের গান? কাদের জন্য? প্রথম প্রশ্নের উত্তর তাদের দরবারে হয়ত এখনও পৌঁছায় নাই, কিন্তু দ্বিতীয় প্রশ্নের জবাব মিলল চটজলদি: এসব হচ্ছে গরিবের গান।

গরিব তাহলে গানও শোনে? তাও ক্যাসেট কিনে পয়সা খরচ করে? ততদিনে মধ্যপ্রাচ্য থেকে পাঠানো পয়সায় গ্রামে গ্রামে ক্যাসেট প্লেয়ার ছড়িয়ে পড়ছে। মুজিব পরদেশীর ‘কলঙ্কের ঢোল’ এর কাটতি হল রেকর্ড পরিমাণ। সেই প্রেরণায় রেকর্ড কোম্পানিগুলো গ্রামে-গ্রামে ঘোরা বয়াতিদের ধরে-ধরে ক্যাসেট বের করল বেশ কিছু। সেগুলোও মন্দ চলল না।

শহুরে শিক্ষিত শ্রেণী এটাকে একটা আকস্মিক ঘটনা হিসাবেই দেখল শুরুতে। তাদের কেউ কেউ শংকা প্রকাশ করলেন রুচির পতন বিষয়ে, কারো কারো কাছে মনে হল এটা কোনো মুনাফালোভী ব্যবসায়ীর কীর্তি। এরকম একটা সিদ্ধান্তহীনতা যখন চলছে, মমতাজ তখন দৃশ্যপটে এলেন ভীরু ভীরু পায়ে। সেটা আশি দশকের শেষাশেষি।

মাত্র পাঁচ বছর ব্যবধানে বাংলাদেশের অডিও বাজারের পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ নিয়ে নিলেন মমতাজ। তার জন্য গান লিখতে থাকলেন আরেক বয়াতি শাহ আলম সরকার। এসব গানে চরিত্র হিসাবে আসতে থাকল শহরের অদৃশ্য আর বোবা জনগোষ্ঠী: গার্মেন্টস শ্রমিক, রিকশাওলা, বাস ড্রাইভার, বেওয়ারিশ লাশ ইত্যাদি। এসব গানে প্রেম মানে হল অতি অল্প সময়ের মধ্যে কিছু জরুরি বোঝাপড়া, বিরহ মানে হচ্ছে ছেড়ে-আসা গ্রামের প্রতি টান বোধ করা, মৃত্যু মানে হচ্ছে দাফনকাফন ছাড়া ভূগর্ভস্থ হওয়া, নৈঃশব্দ মানে হচ্ছে চোখের সামনে বড়লোকের দুর্নীতি দেখে দেখে মুখ বন্ধ রাখার চর্চা। তারা এসে পপুলার বাংলা গান থেকে প্রবল বিক্রমে হটিয়ে দিলেন সংখ্যালঘু শিক্ষিত বেকার, বিলাসী এবং বিরহী প্রেমিকদের। সর্বাধিক একক এলবামের গায়িকা হিসাবে মমতাজের নাম উঠল গিনেস বইতে। ‘বুকটা ফাইট্টা’ গেল শিক্ষিত মধ্যবিত্তের! তাকে ‘অশ্লীল’ আখ্যা দেয়া হল নানান তরফ থেকে, বলা হল এগুলো ‘অপসংস্কৃতি’ এবং ক্ষতিকারক।

কিন্তু ঠেকানো গেল না তাকে: মমতাজই হয়ে উঠলেন গরিবের বিনোদন-আইকন। তাকে ঘিরে আশপাশের পালাবদল আরো মজাদার। ক্যাসেট প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান সাউন্ডটেক আর সঙ্গীতার দীর্ঘদিনের আধিপত্যে ভাগ বসাল সিলেট বেজড শাহজালাল রেকর্ডিং। নিম্নবর্গের উত্থানের তাত্ত্বিক কিংবা কর্পোরেট প্রেরণায় ব্যান্ড শিল্পী জেমসের কাঁধে গামছা ওঠল, মাকসুদ আর বিপ্লব জিনস ছেড়ে বাউলের আলখাল্লার ভেতর ঢুকে পড়লেন। তাদের এলবামের প্রমোশনালে এবং স্টেজ শো-তে গীটারের সমান মর্যাদা পেতে শুরু করল দোতারা। ড্রামের চেয়ে কখনও কখনও দেশী ঢোল দড় হয়ে ওঠল। বাজার ফিরে পাওয়ার আশায় অবশেষে মমতাজের সাথে ডুয়েট এলবাম করলেন অনেক নামীদামী শিল্পী। একসময় যেটা ‘পাপ’ ছিল, ক্রমে সেটাই হল পাপস্খালন।

যে গরিব এতকাল দূর থেকে তার মনিবের টেলিভিশন বা মিউজিক প্লেয়ারের নীরব অনাকাক্সিক্ষত গ্রাহক হয়ে ছিল, ক্রমে তারাই হয়ে দাঁড়াল এর রুচিনির্ধারক। বিত্তবানের নিন্দা কিংবা ভ্রুকুটি কোনোটাই আর এই প্রবাহের রাশ টেনে ধরতে পারল না। গরিবের মমতাজ-বন্যায় ভেসে গেলেন ছোটবড় অনেক জনপ্রিয় সঙ্গীত তারকা। সিনেমা হলের দখল গরিব সত্তর দশকেই নিয়েছিল, এখন দখল নিল অনেকটা টেলিভিশন আর প্রায় সবটা অডিও বাজারের। ‘রুচিশীল’ বিত্তবানের জন্য কেবল বাকি থাকল রাইফেলস স্কয়ার, বসুন্ধরা কিংবা আইডিবি ভবনের দুয়েকটা ডিভিডি-র দোকান। কিন্তু কতদিন?

গরিব এত বিনোদন চায় কেন
সায়দাবাদ ধলপুর সিটিপল্লী বস্তিতে অডিও-ভিডিওর পাঁচ-পাঁচটা চালু দোকান দেখে আমার মনে এই প্রশ্নের উদয় হল। কথা বললাম একজন দোকান-মালিকের সাথে। এর আগে তার দোকান ছিল মধ্যবিত্ত এলাকা মালিবাগে। সেখান থেকে গুটিয়ে তিনি এসেছেন এই বস্তিতে, শ্রেয়তর ব্যবসার আশায়। তার অ্যাডভেঞ্চার যে সফল, সেটা আকর্ণ হাসি থেকেই বেশ বোঝা যাচ্ছিল। একটা বস্তিতে পাঁচ-পাঁচটা অডিও-ভিডিওর দোকান, একটাও ব্যাংক নেই, এনজিও আছে দুতিনটা।

ব্যাংক নাই, কিন্তু ব্যাঙের ছাতার মত সঞ্চয়ী সমিতি আছে বস্তিতে। তারাও এনজিও, নানান হারে গরিবকে টাকা জমাতে উদ্ধুদ্ধ করে, তারপর এক সুন্দর সকালে সবাই ঘুম ভেঙে উঠে দ্যাখে, সমিতির সাইনবোর্ড উধাও। বস্তির খুব কম লোককেই দেখেছি যাদের জীবনে একবার এরকম দু-দশহাজার টাকা খোয়া যায় নাই। সাইনবোর্ড উধাও হয়, নতুন সাইনবোর্ড আসে, নতুন নতুন মুচলেকা সহ। কিন্তু যে লাউ সেই কদু-ই শেষপর্যন্ত।

বস্তির গরিব আসলে কতটা আয়গরিব? স্বাস্থ্য ও স্যানিটেশন নিয়ে একবার বস্তিতে কাজ করতে গিয়ে তাদের রোজগারের ডাটা নিতে হয়েছিল। দেখলাম, তাদের অনেকের রোজগার আমাদের নিম্নমধ্যবিত্ত মানুষের চেয়ে বেশি। কিন্তু তবু তারা গরিব, নিম্নমধ্যবিত্তও নয়। কারণ, নিম্নমধ্যবিত্ত উত্থানরহিত নয়। তাদের সম্ভাবনা আছে স্বচ্ছল জীবনের, বস্তির গরিবের সেটা নাই। তাদের জন্য আছে এক কঠিন পাপচক্কর (vicious cycle):

গরিবি leads to কম উদ্বৃত্ত leads to সঞ্চয় সুবিধার অভাব leads to অতিভোগ leads to গরিবি

(ছবিটা আপলোড করা গেল না, তাই এই ব্যবস্থায় দিলাম)

গাঁটে টাকা থাকলেই সেটা হয় সঞ্চয় সমিতি নামধারী প্রতারকদলের পেটে যাবে, না হয় চুরি ছিনতাই রাহাজানি পুলিশি ধরপাকড়ে যাবে। এই বাস্তবতা শহুরে গরিবকে নগদ ভোগের দিকে ঠেলে দেয়। তবে, গরিবের নগদ ভোগ মানে চিত্তবিনোদন, যেখানে বিত্তবানের ভোগ মানে মূলত উদর কিংবা যৌনবিনোদন। কেন? এটাও ভাবার বিষয়।

গরিবের বিনোদন মানে চিত্তবিনোদন কেন

‘বিনোদন’ - এই শব্দটাকে যেভাবেই বলা হোক, গরিবের তাতে স্পষ্ট আপত্তি থাকে। এটা আমি ঢাকা শহরের প্রায় সব বস্তিতে দেখেছি। টেলিভিশন দেখাকে তাদের কাছে ‘বিনোদন’ মনে হলেও গানবাজনা শোনা-কে তারা কোনোভাবেই স্রেফ ‘বিনোদন’ হিসেবে ভাবে না। ভাবলে কী ক্ষতি, আমি ভ্যানচালক মজিবুরকে জিজ্ঞেস করি। মজিবুর অল্পকথার মানুষ, কিছুটা নাটকীয়তা পছন্দ করে। আমাকে সে নিয়ে গেল ধলপুর বস্তি-লাগোয়া সরকারি সিটিপল্লী নামক তিনতলা ভবনের ছাদে। বলল, দেখেন তো, আমাদের বস্তিরে কী মনে অয়?

নয়ন খুলে গেল আমার। দেখলাম প্রত্যেকটা ঘরের চালের ওপর হয় লাল না-হয় সবুজ পতাকা।

মজিবুর বলল, লাল মানে মাইজভাণ্ডার আর নীল মানে সুরেশ্বর। বস্তিগুলোতে এই দুইটাই তরীকা। লাল হোক আর নীল হোক, গান দিয়াই আমরা আল্লারে ডাকি। আর কোনো রাস্তা নাই। প্রত্যেক বিষ্যুদবার বস্তিতে সুরেশ্বর তরীকাপন্থীদের গানের মজমা হয়। সারারাত গান হয়, জ্ঞান হওয়ার পর এই নিয়মের ব্যতিক্রম কেউ দেখে নাই বস্তিতে। এটাও একটা সাংগঠনিক প্রক্রিয়া, সমবায়ের ভিত্তিতে এর খরচনির্বাহ হয়। শহুরে বস্তিতে নেয়া নানান উন্নয়ন কর্মকাণ্ডের ব্যর্থতাকে ভেংচি কাটার জন্যই কি এই গানের মজমা চালু আছে?

ভিক্ষা করে নদীভাঙা গুলবানু। বলল, বাপজান, আমাগো রক্তের মইধ্যে গান গো। আমাগো আর কিছুই নাই। খালি গানই আছে। অন্ধ কুদ্দুসও একই কথা বলল।

গান কেন স্রেফ ‘বিনোদন’ নয়? বড় ক্যানভাসে ভাবা যাক। শহরে গরিব আসে নিরুপায় হয়ে, ভাগ্যান্বেষণে। নদীভাঙা, ভিটাবেচা, সহায়শূন্য উন্মুল এই জনগোষ্ঠী। হাড়পেঁষা শ্রমের বিনিময়ে শহর তাদের খাদ্য দেয়, কোনোরকম থাকার সংস্থান দেয়। বিনিময়ে কেড়ে নেয় স্বাধীন প্রকাশভঙ্গি, বাকস্বাধীনতা এবং আরো কিছু মূল্যবোধ। এই শহরে যে রিকশা চালায়, তার মুখ দেখি না আমরা, শুধু পাছা দেখি। যে ভিক্ষা করে, তার হাত দেখি। এইরকম অদেখার চাপে তাদেরও মুখে মুখোশ চেপে বসে। তারা মধ্যবিত্তের দাপুটে মূল্যবোধের উপরিগ্রাহক হয়ে যায়। হঠাৎ করে তাদের দেখলে মনে হবে, তারা যেন ব্যক্তিস্বাতন্ত্র্যের বড় গ্রহীতা। মনে হবে, যেন নগরসভ্যতার অ্যালিয়েনেশন তাদের মজ্জাগত। মনে হবে, অসহায় অভিবাসনের কোনোই বেদনা নাই এইসব উন্মুল মানুষের চোখেমুখে। শহরের রুচি অনুযায়ী এমনি একটি শাদা মুখ পরে থাকে শহুরে গরিব।

অন্ধ কুদ্দুস যেমন বলে, দিনশেষে বস্তিতে যখন ফিরে আসে কর্মক্লান্ত মানুষ, তখন তার আয়নার সামনে দাঁড়ানো ফরজ হয়ে যায়। একমাত্র সঙ্গীত-ই পারে তার সারাদিনের মুখোশ খুলে তাকে নিজের অতীতের সামনে, সত্যিকারের বেদনাগুলোর সামনে দাঁড় করাতে। উদর কিংবা যৌনবিনোদন তাকে সেই বিশ্রামটুকু দেয় না। নিজের আবছা হতে-থাকা অস্তিত্ব, সেটা যত বেদনাময় হোক, তাকে হারাতে না দেয়াই গরিবের সবচেয়ে বড় বিনোদন। এবং প্রয়োজন। এজন্যেই গান। আর সে কারণেই গানকে তারা বিনোদন বলতে রাজী নন। এই গানই তাদের ধাঁধিয়ে যাওয়া চোখ থেকে মেট্রোপলিটান শহরের নিয়নবাতিগুলো খুলে নেয়। একচিলতে ঘরে কয়েক ঘণ্টার ঘুম ঘুমায় তারা, যদিও সেখানে দুঃস্বপ্নের ভেতর তাড়া করে আগুন আর বুলডোজার।

সূত্র: স্নাতকোত্তর (উন্নয়ন সমীক্ষা)এর অভিসন্দর্ভ (২০০৩) ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়, ঢাকা।


মন্তব্য

যূথচারী এর ছবি

এই পোস্টটারে কিভাবে আমি আমার প্রিয় পোস্ট হিসেবে সংরক্ষণ করতে পারি?@মডুরামবৃন্দ


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...


চোখের সামনে পুড়ছে যখন মনসুন্দর গ্রাম...
আমি যাই নাইরে, আমি যেতে পারি না, আমি যাই না...

নজমুল আলবাব এর ছবি

এই না হলে সচল।

সৌরভ এর ছবি

এইটা হইলো সচল কোয়ালিটি!
গর্বে বুক ফাইট্টা যায় যায় অবস্থা।

------ooo0------
বিবর্ণ আকাশ এবং আমি ...


আবার লিখবো হয়তো কোন দিন

অমিত আহমেদ এর ছবি

অসাধারণ!

************************
আমার বেলা যে যায় সাঁঝ-বেলাতে
তোমার সুরে সুরে সুর মেলাতে

??? এর ছবি

বস্তির যে ছবিটা দেয়া হৈছে, সেইটা ইন্টারনেট থিকা পাওয়া। আমার নিজের তোলা অনেক ছবি আছে, কিন্তু আপলোড করতে পারলাম না। নিজের কালেকশনের ছবি আপলোড করবার পদ্ধতিটা ফলো করলাম, কিন্তু একটা লেভেল পর আর আগানো যায় না। মাহবুব মুর্শেদ এর মামলা।

লম্বা পোস্ট, সম্ভবত ব্লগের জন্য একটু বেশি লম্বা। তাও কেউ কেউ পড়ে ফেলছেন, এত তাড়াতাড়ি পড়া হৈয়া যাবে ভাবি নাই।

কখনো পাঠক একটা লেখায় লেখকের সমান শরিক হৈয়া যায়। ধন্যবাদ দিয়া সেই শরিকানার বোধ থিকা আপনাদের বিচ্যুত না করি!

সুমন চৌধুরী এর ছবি

ভালো লাগলো।
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

হাসান এর ছবি

সকালেই পড়ে বিনা মন্তব্যে চলে গিয়েছিলাম, এইবার শুধু মন্তব্যের জন্য আবার পড়লাম।

অতীব সুস্বাদু!!!

--------------------------
আমার রুজি রোজগার

সুমন চৌধুরী এর ছবি

হাসান কি এখন লন্ডনে না দেশে?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

এই লেখাটা আমার স্নাতকোত্তর গবেষণাকর্ম থিকা বাংলায় তৈরি করা। আগামি আগস্ট মাসে আবার এইটা ভাঙ্গায়া দুই দেশে দুইটা সেমিনার দিতে হৈবে। ব্লগে পড়ার জন্য হয়ত খুব জুইতের না, তবে যেনারা পড়েছেন যদি এই লেখার মূল আর্গুমেন্টকে একটু ক্রিটিক্যালি এনগেজ করেন, তাইলে বদমাইশ প্রফেসরগুলার "ওয়ান্ডারিং" মোকাবিলা করনের কিছু হোমওয়ার্ক হয় আমার। বর্তমানে আমি নগরগরিবের "প্রতিদিনের রাজনীতি" (Everyday Politics) লৈয়া কাজ করতেছি। ফলে, এইখানেও বর্তমান লেখাটির জায়গা থাকবে।

সুমন চৌধুরী এর ছবি

আপনি কি আমার কাছাকাছি কোন প্রবাসে?
.......................................
ঋণম্ কৃত্বাহ ঘৃতম্ পীবেৎ যাবৎ জীবেৎ সুখম্ জীবেৎ

??? এর ছবি

আপনি কোন্ প্রবাসে আমি তো জানি না। তয় আমি আছি সিঙ্গাপুর রাজ্যে। সেইখানকার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি অব সিঙ্গাপুর-এ। আপনে কি আশেপাশেই আছেন?

ভাস্কর এর ছবি

সুমন ভাই
আমরা মনে হয় আসলেই মনে করি গরীবের আবার বিনোদন কিসের! দেখেন মমতাজরে আমরা ঠিকই তার বিচ্ছেদগীতির থেইকা বাইর কইরা আইনা এখন ফাইট্টা যাইতে বেচি!
অধুনা মধ্যবিত্ত হইয়া উঠা শাহ আলমের ফিকির বুঝনের সাধ্য কই মমতাজের!


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

??? এর ছবি

ভাস্কর, মমতাজরে তার বিচ্ছেদগীতি থিকা কে বাইর কৈরা আনছে, সেইটা জটিল প্রশ্ন। আর কে কারে বেচে, সেইটাও বোঝা মুশকিল। তুমি ভাবতেছ শাহআলম সরকার মমতাজরে বেইচা মধ্যবিত্ত হৈয়া গেছে, আবার মমতাজ যে শাহআলমরে বেইচা উচ্চবিত্ত আর সেলিব্রেটি হৈয়া গেল, সেইটাও কারো ভাবনার বিষয় হৈতে পারে।

আর মমতাজ তার বিচ্ছেদগীতি লৈয়া জীবন পার কৈরা দিবেন, এইটা কিন্তু আমাদের রোমান্টিক আবদার। এই দু:খ দেখি অনেকের মনেই! কাঙালিনী সুফিয়ার গান ঢাকার স্টেজে গাইয়া আনুশেহ সুপারস্টার হৈয়া গেলে কোন সমস্যা নাই, কিন্তু কাঙালিনী সুফিয়া এই ফরম্যাটে আসলে সমস্যা!

ফার্দারমোর, আমি বিষয়টারে আদর্শিক দিক থিকা দেখতেছি না। আমার অভিজ্ঞতায় দেখছি, বস্তির মানুষ যে সঙ্গীত গ্রাম থিকা বহন কৈরা আনে, সেইটার সাথে যে কোন ফিউশন তারও প্রাণের চাহিদা, অনেকসময়। ফলে, মমতাজের বুক ফাইট্টা যাওনের বিবৃতি, বা গাড়িয়াল ভাইয়ের প্রণয় রিকশাঅলা ভাইয়ে স্থানান্তর হৈতেই পারে। এইটা বাজারের একতরফা ইন্টারভেনশন না।

ভাস্কর এর ছবি

ঠিকাছে


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

??? এর ছবি

রাগ কৈরা কৈরা নাতো! আমি তর্ক চাইতেছি, আমার যুক্তিতে ফাক থাকলে ধরায়া দেও। ব্রায়ান টার্নার বা অর্জুন আপ্পাদুরাই-এর হাতে ধরা পড়ার চাইতে তোমার হাতে ধরা পড়ন ভাল। হা হা হা...

ভাস্কর এর ছবি

না আমি নিজেও হুদাই কইছিলাম বিতর্ক টাননের লেইগা কিন্তু পরে বুঝলাম যে এই বিষয়ে বিতর্ক টাননের মতো খুব বেশী বৈপরীত্য নাই আমার। গরীবের সংস্কৃতি রক্ষার মহান দায়িত্বটাও তো আমার না। তারা যা মনে করবো সেইটাই তাগো সংস্কৃতি। তয় আমি পুঁজিবাজারের চরিত্রটা বুঝাইছিলাম। যেই চরিত্র মমতাজরে ফাটাইয়া ফালায়...সে এখন টিকেট বেচে। কিন্তু আমি দূরদূরান্তে অনেক মফস্বলের মানুষরে এখনো তার বিচ্ছেদগীতির সুনাম করতে শুনি, আমরা যেই মমতাজরে হয়তো সেইরমভাবে কখনো চিনিই নাই।


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

??? এর ছবি

পুঁজিবাজারের চরিত্র আমার বিষয়টার প্রেক্ষিতে একটা ইন্টারেস্টিং ডিসকোর্স। এইখানটায় আমার মন্তব্য নিজের কাছেও একটু সুইপিং লাগে, যেহেতু ইমপিরিক্যাল ডাটা সাপোর্ট নাই। যদি আমাদের দেশের মিউজিক প্রোডাকশন হাউজগুলোর এক-দুইটার কেস স্টাডি করতে পারতাম, তাইলে খুব ভাল হৈত। তখন আমার সময় ছিল না, ফলে ইচ্ছা থাকা সত্বেও এড়ায়া গেছি। ভবিষ্যতে সময় পাইলে এইটা করার ইচ্ছা আমার।

অতিথি লেখক এর ছবি

ফকির আলমগীর দিয়ে সার্চ করে কীভাবে যেন এখানে এসে পড়লাম, কী চমৎকার একটা লেখা!

---দিফিও

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।