আয়না: আইজাক সিঙ্গার-এর গল্পের অনুবাদ (পর্ব ২ ও ৩ একত্রে)

??? এর ছবি
লিখেছেন ??? (তারিখ: শনি, ৩০/০৬/২০০৭ - ৯:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

small

২.
পরের সাতদিন জিরেল ওর আয়নাঘরে যাওয়া থিকা বিরত রাখল নিজেরে। আয়নার ভিতর আমি হালকা হালকা ঘুমাইলাম। জাল ছড়ান হৈছে; ভিকটিম রেডি। ওর মারাত্মক কৌতুহলের কথা জানতাম আমি। তাই এখন আমার কাজ হৈল খালি হাই তোলা। একজন খোদার বান্দারে এইরকম পটান কি উচিত আমার? উচিত কি নববধুরে তার পুরুষের সঙ্গ থিকা বঞ্চিত করা? সিনাগগের চিমনিতে আগুন দেয়া? সাবাথের মদকে ভিনেগার বানায়া দেয়া? কুমারীর জন্য বামনসোয়ামী উপহার দেয়া? বর্ষবরণের অনুষ্ঠানে ভেড়ার শিং ঢুকায়া দেয়া? তেলাওয়াতের সুরের মধ্যে অসুর ঢুকায়া দেয়া? পিচ্চি শয়তানের এরকম কাজকামের অভাব তো নাই, বিশেষত আতংকদিবসগুলাতে, যখন পানির মধ্যে মাছগুলাও ভয়ে কাঁপতে থাকে। এমনি এক দিন আমি বৈসা বৈসা মুন জুস আর টার্কি সীডস-এর খোয়াব দেখতেছিলাম - তখনি ঢুকল সে। তাকাইল আমার দিকে, কিন্তু দেখতে পাইল না। আয়নার সামনেই বসল, আমি দেখা দিলাম না।

..............................
................


মন্তব্য

ভাস্কর এর ছবি

রস নিতে পারলাম মনে হয় সুমন ভাই...


বরফখচিত দেশ ক্যান এতোদূরে থাকো!


স্বপ্নের মতোন মিলেছি সংশয়ে...সংশয় কাটলেই যেনো মৃত্যু আলিঙ্গন...

??? এর ছবি

ভাল লাগল শুইন্যা, ভাস্কর!

??? এর ছবি

সব ধরনের লেখার ক্ষেত্রে এ ধরনের অনুবাদকৌশল হয়ত ঠিক হবে না রাসেল। তুমি দেখেছ, আমি মার্কেজ অনুবাদ করেছি, কথ্যভাষা ব্যবহার করি নি। এইটা ডিপেন্ড করে। কথ্যভাষাকে লেখ্য ফর্মে খুব চিন্তা করে ব্যবহার করা দরকার, নয়ত অনভ্যস্ত পাঠকের কানে গোড়াতেই রেজিস্ট্যান্স তৈরি হয়ে যাবে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

অনুবাদটা বেশ ভালে হইছে। কিন্তু কথা হইল, এইটা একপ্রকার ধর্মপ্রচারনা মূলক লেখা? দোযখের ভয় দেখায়ে ঈশ্বরমূখী করা?

====
চিত্ত থাকুক সমুন্নত, উচ্চ থাকুক শির

??? এর ছবি

না মাহবুব মুর্শেদ, এইটা ধর্মপ্রচারণামূলক লেখা না। তবে ধর্মের এসেন্স-এর ওপর খাড়ানো লেখা বলতে পারেন, যদিও ধর্মের প্রায়-সমান্তরাল একটা ইমাজিনেশন আছে এই গল্পে। সাহিত্যিক পদ্ধতি হিসাবে এইটা অর্বাচীন নয়, পৃথিবীর তাবৎ মহৎ সাহিত্যের একটা বেশ বড় অংশ এইরকম প্রণোদনা থেকে আসছে।

সিঙ্গারের এই গল্পের মোর‌্যাল বাইবেলীয়, যদিও আমার ভাল লাগার বিষয় অন্যত্র। এই গল্পের সম্পদ তার বর্ণনা, তার ইমাজিনেশনের ব্যাপ্তি এবং এর কথকের চরিত্র। আপনি কোনো গল্প বলতে চান, কার মুখ দিয়ে বলবেন এটা যে কত গুরুত্বপূর্ণ সেটা বোঝা যায় এই গল্পে। আমাদের অনেক গাল্পিকের এ বিষয়ে তেমন হুঁশ আছে বলে মনে হয় না। অন্যত্র একটা পোস্টে এরকম আলোচনা হচ্ছিল, তাই এই গল্পটার কথা মনে পড়ল।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

এসএম৩'র মন্তব্যটা বেশ ইয়ে ।
অনুবাদ ভালো লেগেছে । মুলগল্প আগে পড়া হয়নি ।
পাঠক আরো দাবী রাখে ।

-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

??? এর ছবি

ধন্যবাদ হাসান মোরশেদ। আসলে ব্লগের "সাহিত্য" বোধয় একটু ভিন্ন। তবে এই গল্পটা গত বছর এক দৈনিকের সাহিত্য পাতায় ছাপা হয়েছিল। তারো আগে ব্রাত্য রাইসু সঞ্চালিত "কবিসভা"য় গিয়েছিল। সেসব জায়গায় এর অনেক পাঠ এবং পাঠপ্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। আর কথ্যভাষা নিয়ে আপনি যে ইস্যুটা অন্য পোস্টে তুলেছেন, সেটারো অনেক বিশদ আলাপ সেখানে হয়েছিল, মনে পড়ে।
এই আসরে আপনারা যারা পড়লেন তাদের অনেক ধন্যবাদ।

হাসান মোরশেদ এর ছবি

ব্লগের সাহিত্য' বলতে আসলে কোনো মানদন্ড দাঁড়িয়ে গেছে কিনা আমি জানিনা ।
সচলায়তন একেবারেই নতুন একটা প্লাটফর্ম । এখনো আমরা হাতেগোনা কয়েকজন । আপনাদের মতো অভিজ্ঞজন পাশে থাকলে হয়তো একটা প্রমিত মানদন্ড সৃষ্টি করা যাবে ।
ব্লগের সাহিত্য বলে কোন বামুন লেখালেখি দরকার আছে বলে আমি মনে করিনা । এটা স্রেফ কেবল আরেকটা প্লাটফর্ম । যে যেমন যা লিখি তাই এখানে আসুক ।
-----------------------------------
'পড়ে রইলাম বিধির বামে,ভুল হলো মোর মুল সাধনে'

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

??? এর ছবি

ফর্ম কনটেন্টকে অনেক সময় নিয়ন্ত্রণ করে। দৈনিকের সাহিত্য, লিটলম্যাগের সাহিত্য এবং পুস্তকের সাহিত্যের মধ্যে ভিন্নতা আছে। থাকবে। তেমনি ব্লগও একটা আলাদা মিডিয়া, তার সাহিত্যের মধ্যে ব্লগীয় স্বকীয়তা থাকারই কথা। সেটা বামন সাহিত্য হবে কিনা, এই মন্তব্য করার সময় এখনো আসে নি। পাঠকের এত সরাসরি ইন্টার‌্যাকশন এবং কম্যুনিকেশনের এইরকম ধরন সাহিত্যের উপর কী প্রভাব ফেলে সেটা নিঃসন্দেহে দেখার মত একটা বিষয়। আর সেই লোভেই আমি আপনাদের সাথে লটকে আছি।

দ্রোহী এর ছবি

একটা অপ্রাসংগিক ব্যাপার তুলছি।

আমার মাথায় একটা ব্যাপার ঢুকে না।
আমাদের নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে, "তোমরা পৃথিবীতে লাগালাগি করো না, মদ খেও না। তাহলে স্বর্গে যাবে, আর স্বর্গে গেলে ইচ্ছামত হুরপরী লাগাতে পারবা, এবং তোমাদের জন্য রয়েছে শরাবন তহুরা।"

ব্যাপারটা কেমন প্যারাডক্সিক্যাল না?
__________
কি মাঝি? ডরাইলা?

??? এর ছবি

দ্রোহী, এই বিষয়ে আমার জ্ঞান খুব সীমিত। যতদূর বুঝি, ধর্মে প্যারাডক্স অনেক আছে, কনট্রাডিকশনও কম নাই। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনেও তাই। ফলে ধর্ম একটা সমাজ বাস্তবতা। ধর্মহীনতাও তাই।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।