W

অনিকেত এর ছবি
লিখেছেন অনিকেত (তারিখ: শনি, ১৮/১০/২০০৮ - ৯:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই মাত্তর অলিভার স্টোনের "W" দেখে ফিরলাম।

W দিয়ে কি হয়?

W দিয়ে War হয়, Weapon হয়, WMD হয়,হয় টাংস্টেন এর প্রতীক, এমনকি পদার্থবিজ্ঞানে এক মৌল কণিকার নাম W বোসন।

W দিয়ে আরো হয় welcome, হয় win, ইংরাজীতে শব্দের বানান শুরু হয় w দিয়ে---word।

কিন্তু অলিভার স্টোন যে W নিয়ে ছবি বানিয়েছেন সেটা আর কিছু নয়, বিগত প্রায় এক দশকে আমাদের পৃথিবীর মানচিত্র পালটে দেয়া এক লোক George W Bush।

যারা অলিভারের ছবির সাথে পরিচিত তারা জানেন যে এই লোক কি পরিমান প্রতিভাধর চিত্র পরিচালক। তার সাফল্যের কোমরবন্ধে ঝুলছে Natural Born Killer, Platoon, Born on the fourth of July, JFK সহ অসংখ্য অসাধারন ছবি।

ভিয়েত্নাম যুদ্ধ নিয়ে সম্ভবত সব চাইতে হৃদয়স্পর্শী ছবিগুলোর বেশির ভাগই অলিভারের তৈরী। তার খাপ খোলা বিবেকবান দৃষ্টিভঙ্গী তাকে আমেরিকায় নন্দিত ও নিন্দিত---দুই-ই করেছে। বিশাল প্রেক্ষাপট জুড়ে তার বিচরন। তিনি যুদ্ধের ছবি যেমন করেছেন, তেমনি করেছেন আমেরিকার হৃদস্পন্দন যেখানে ধ্বনিত হয়---সেই walstreet নিয়ে। দেখিয়েছেন টাকার মুল্যে বিকিয়ে যাওয়া কর্পোরেট জীবন, লোভের জলে ভেসে যাওয়া মানবিকতা---আর এরপরও সব ঠেলে, সকল স্রোতের বিপরীতে দাঁড়িয়ে মানুষ হয়ে ফিরে আসা।

অলিভারের অনেক বদনামগুলোর মাঝে একটা হচ্ছে---তিনি অনেক conspiracy theory-র উদ্গাতা। মার্কিন রাষ্ট্রপতিদের নিয়ে তিনি অনেক ছবি করেছেন। ছবি করেছেন কেনেডি কে নিয়ে(JFK) ---দেখিয়েছেন তার হত্যাকান্ডে খোদ সরকারের অন্দর মহলের গোপন সম্মতির কথা। করেছেন Nixon কে নিয়ে। সমালোচকদের মত----কল্পনা আর সত্যের সীমানা বার বার ঝাপসা হয়ে গেছে ছবি গুলোতে। এতে খেপে গিয়ে অলিভার তার চিত্রনাট্য জন সমক্ষে প্রকাশ করেছেন। উল্লেখ করেছেন তার সমস্ত তথ্য সুত্র।

তার হাত ধরে আসা সর্বশেষ ছবিটি আমাদের সকলের 'প্রিয়' বুশ কে নিয়ে। আজকেই আমাদের এখানে মুক্তি পেয়েছে। বন্ধুদের নিয়ে দল বেঁধে গিয়েছিলাম। হলে ঢুকে, ঠিক যেমনটি প্রত্যাশা করেছিলাম, খুব একটা বেশি জন সমাগম দেখলাম না।

ছবি শুরু হল বুশ বাবাজির fraternity তে যোগ দেবার কালে নাকাল হবার দৃশ্য নিয়ে। একে একে আমরা যা জানতাম, যা জানতাম না, যা জানতে চাইনি---প্রায় সবকিছুই অলিভার নিয়ে এসেছেন। শুধু এক গোয়ার একরোখা অবিমৃষ্যকারী ব্যক্তি নয়---এখানে উঠে এসেছে বাবার কাছে স্বীকৃতি চেয়ে বার বার ব্যর্থ হওয়া অভিমানী এবং এক পর্যায়ে ক্রুদ্ধ মানুষের কথকতা। মদের বোতলে জীবন চুবিয়ে রেখে এক সময় ডুবতে বসা মানুষের অন্ধ ধর্ম ভক্তির লাঠি ধরে ভেসে ওঠার কাহিনী।

ছবিটি নিয়ে আমার নিজের মতামতটা এখানে আর বেশি বলতে চাইছি না। শুধু এইটুকু বলব---দেখে আসুন ছবিটি।


মন্তব্য

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

Woman, Wine বাদ পড়লো ক্যান? অ্যাঁ

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
Life is what happens to you
While you're busy making other plans...
- JOHN LENNON

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অনিকেত এর ছবি

ঐ দুইটা আপনার জন্যে রেখে দিয়েছিলাম
হে হে হে

ধুসর গোধূলি এর ছবি
স্নিগ্ধা এর ছবি

ইসসস, ফিরে যেতে যেতে মনে হয় দুখান ভালো মুভি হলে দেখা থেকে বঞ্চিত হবো মন খারাপ

না থাক, দুক্কু কর্বো না, যা মজা করছি দেশে তাতে দুক্কু কর্ল্লে রীতিমতো 'অধর্ম' হবে, আর আমি বাপু ধার্মিক মানুষ -

অনিকেত এর ছবি

আরে স্নিগ্ধা'পু দেখি পুরা হাওয়া বুইঝা গেসেন---
হে হে হে
যাউক গা---মিষ্টি নিয়া বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য রেখেছি---কিন্তু আপনার কাছ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাই নি

এমতাবস্থায়--মাননীয় আদালত--প্রবাসে নির্বাসিত, দুঃস্থ, ও মিষ্টকের বিরহে বেদনার্ত এই গ্রাজ়ুয়েট স্টুডেন্টের কাতর আহবানে সাড়া না দেবার অপরাধে বেগম স্নিগ্ধা'পু (!) কে দ্বিগুন পরিমান মিষ্টি আমার জন্যে নিয়ে আসার হুকুম দেয়া হোক

স্নিগ্ধা এর ছবি

মিষ্টি নিয়া বিভিন্ন জায়গায় বক্তব্য রেখেছি---কিন্তু আপনার কাছ থেকে কোনো ইতিবাচক সাড়া পাই নি

"হে হে হে" (কপিরাইটঃ অনিকেত)

প্রবাসে নির্বাসিত, দুঃস্থ, ও মিষ্টকের বিরহে বেদনার্ত এই গ্রাজ়ুয়েট স্টুডেন্টের

সে তো আমিও!!! আমার দুঃখ তো দেখি কেউ দ্যাখে না মন খারাপ

শিক্ষানবিস এর ছবি

অলিভার স্টোনের একটা মুভিই দেখছি: জেএফকে। প্রথম দিকে বোধহয় তার মুভি আরও ভাল ছিল। অর্থাৎ বর্ন অন দ্য ফোর্থ অফ জুলাই, প্ল্যাটুন বা ন্যাচারাল বর্ন কিলার্সের সময়। আমেরিকার ইতিহাস ও সাম্প্রতিক ঘটনা নিয়া এখন দেখি অনেক সিনেমাই করতেসেন।
ডব্লিউ দেখার ইচ্ছা আছে। সাথে আগের নিক্সন আর ওয়ার্ল্ড ট্রেড সেন্টারও। তবে ডব্লিউর ভাল প্রিন্ট পেতে মনে হয় দেরী হবে।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

"বর্ণ অন দা ফোর্থ অভ জুলাই" দেখতে অনেক কষ্ট হইসে! কোন মুভি শুরু করলে আমি আবার শেষ না করে উঠি না, তাই দেখতে ভাল না লাগা সত্ত্বেও শেষ করসিলাম। তবে ওঁর "ওয়ার্ল্ড ট্রেইড সেন্টার" খুব ভাল্লাগসিলো।

প্রথম প্যারা পড়ার পর আমিও বলতে চাচ্ছিলাম "উওম্যান" বাদ পড়ল কেন! চিন্তিত পরে দেখি সন্ন্যাসীদা তাঁর মদিরা কমেন্টে বলে ফেলসেন সেটা! চোখ টিপি
_______________
বোকা মানুষ মন খারাপ

অনিকেত এর ছবি

বস...... কও কি মিয়া?

Born on the 4th of July তোমার ভাল লাগে নাই??
আমার অবশ্য বেশ লেগেছিল। তবে দেখেছি অনেক আগে।
জানিনা এখন দেখলে কেমন লাগবে, কিন্তু প্রথম দেখায় আমার দারুন লেগেছিল।

টিটো রহমান এর ছবি

দেখব বলে আশা রাখি

মৃদুল আহমেদ এর ছবি

আপনেরা ব্যাকতে মিলা আমার মাথায় একটা স্টোন মারেন। আমি অলিভার স্টোনের এই একটা ছবিও দেখি নাই!
---------------------------------------------
বুদ্ধিমানেরা তর্ক করে, প্রতিভাবানেরা এগিয়ে যায়!

--------------------------------------------------------------------------------------------
বললুম, 'আমার মনের সব কপাট খোলা ভোজরাজজী। আমি হাঁচি-টিকটিকি-ভূত-প্রেত-দত্যি-দানো-বেদবেদান্ত-আইনস্টাইন-ফাইনস্টাইন সব মানি!'

অভিজিৎ এর ছবি

W দেখলাম গতকাল। জুইত পাই নাই বেশি। ঝুলায়া ফেলাইছে। আর ডকুমেন্টেরি টাইপের মুভিতে কমেডি কিসিমের ঠাট্টা না থাকলে মজা পাইনা। এর চেয়ে বিল মারের রিলিজুলাস টা দেখেন। মজা পাইবেন। সিরিয়াসলি!



পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)


পান্ডুলিপি পোড়ে না। -- বুলগাকভ (মাস্টার এন্ড মার্গেরিটা)

অনিকেত এর ছবি

ঠিক হ্যায় অভিজিৎ দা।

মাথায় রইল

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।