বাংলা বানানের ভুলতাড়ুয়া

আয়নামতি এর ছবি
লিখেছেন আয়নামতি [অতিথি] (তারিখ: রবি, ১৬/০৩/২০১৪ - ৭:৪৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মনে আছে একবার স্কুলে ইংরেজির শিক্ষক শ্রেণীকক্ষে এসেই ঘোষণা দিলেন- "আজ কোন পড়া হবে না। আমি ডিকটেশন দেবো। দেখতে চাই বানানে তোমরা কতটা পাকা।"

কাঁচা পাকার সে পরীক্ষায় কমবেশি সবাই বেশ উতরে গিয়েছিলাম। যারা তেমন হালে পানি পায়নি তাদের নিয়ে হাসাহাসির ধুম পড়ে গিয়েছিল আমাদের মধ্যে। বানান ভুলের দুয়োতে জর্জরিত একজন রাগে ফুঁসে ওঠে বলেছিল, "ভুল তো হতেই পারে। এ তো আমার মাতৃভাষা নয়। যদি নিজের মাতৃভাষায় ভুল করতাম তবে এভাবে লজ্জিত করাটা খুব ঠিক ছিল।" দুরন্ত বয়সের তোড়ে ওর সে অভিযোগ সেভাবে আমল পায়নি সেদিন। এখনো কী পায় সেভাবে? একবার নিজেই ভেবে বলি তো মাতৃভাষা বাংলার বানান ভুল হলে কতটা লজ্জিতবোধ করি, যতটা বিব্রত হই ইংরেজি বা অন্যকোন ভাষার ক্ষেত্রে?

আমি নিজেও অনেক বাংলা বানান ভুল করি। দীর্ঘ একটা সময় ধরে 'আত্মীয়' শব্দটি ভুল বানানে 'আত্নীয়' লিখে এসেছি। মাত্র সেদিন আমার এক বন্ধু ভুলটা শুধরে দেয়। এরকম সবাই যদি তার আশ পাশের বানানগুলো শুদ্ধ করার কাজে একটু সময় ব্যয় করতো, তাহলে দেশ থেকে অশুদ্ধ বানান অনেকাংশে নির্মূল হয়ে যেতো। দেশের অনেক বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান থেকে শুরু করে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান পর্যন্ত এরকম ভুল বানানে সাইনবোর্ড, বিলবোর্ড, বিজ্ঞাপন ইত্যাদি লিখে থাকে।। কারো এতে যেন ভ্রক্ষেপ নেই, লজ্জাবোধ নেই। কত দামে কেনা এই বাংলাভাষা সে কী আমরা ভুলে গেছি তবে! জন্ম নিয়েই মানব সন্তান মায়ের ভাষায় কথা বলে। সেই মাতৃভাষার ব্যাপারে এতটা উদাসীন থাকা কতটা লজ্জার ব্যাপার, ভাবা যায়?

যে নিজের ভাষা শুদ্ধভাবে লিখতে পারেনা তার কাছে ভিনদেশি ভাষাও কি খুব নিরাপদ? মাঝে মাঝে দেশি চ্যানেলে কিছু বিজ্ঞাপন দেখা যায় যেমন তার ভাষা তেমনই তার বানানের দশা! এসব দেখে সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের মত বলতে ইচ্ছে করে "ওরে তুই মুখ না পেছন!" এগুলো দেখবার কী কেউ নেই? মনে হয় নেই।

দু'একটা ব্লগ ঘুরে কিছু পোস্ট পড়ে দেখেছি বিচিত্র সব বানানে চলছে সাহিত্যযজ্ঞ। পড়ে হাসিও পায় রাগও হয়। নিবন্ধন না থাকায় কিছু বলা হয়ে ওঠেনা। সচল সেদিক থেকে ব্যতিক্রম। এখানকার অধিকাংশ লেখক বানানের ব্যাপারে সচেতন। তবে সচলেও আমি একটা বিষয় নিয়ে দ্বন্দ্বে থাকি। একই বানানের দু'রকম লেখনরীতি বেশ কিছু সচল/হাচলদের মধ্যে দেখি এখানে।(যেমন: শান্ত্বনা/সান্ত্বনা, ঠান্ডা/ঠাণ্ডা, উঠে/ওঠে,পোষ্ট/পোস্ট, দ্বন্দ/দ্বন্দ্ব,পোষাক/পোশাক, জিনিষ/জিনিস/যত/যতো,তত/ততো ইত্যাদি)। কোনটা যে সর্বতোভাবে সঠিক সেটা প্রায় ঘুলিয়ে ফেলি। যে কোন একটা বানানরীতিতে স্হির থাকতে পারলে আমার মনে হয় এমন দ্বন্দ্বের সৃষ্টি হতো না।

আরো একটি বাড়তি অনুরোধ জুড়ে দিতে চাই এ সুযোগে। যে কারো (ফেসবুক/ব্লগ/সচল/বন্ধুর ইমেইল) বানান ভুল দেখলে তা শুদ্ধ করে দিন। মনে পড়ে একসময় সচল বুনোহাঁস কষ্টসাধ্য এই কাজটা খুব চমৎকার করে করতেন। সেরকম অনেক বুনোহাঁস যদি থাকতো আমাদের! বানানভুলের মিছিলে আমিও একজন হওয়াতে সেরকম কারো উপস্থিতি খুব মিস করি। আপনার সদিচ্ছা আর সামান্য সময়ব্যয় বাংলা বানানের দীনতা ঘুচে যেতে সাহায্য করবে।

পত্রিকার এইখবরটি পড়েই চটজলদি পোস্টটি লেখা। এত ভালো লাগলো খবরটি পড়ে! নিজের ভাষার প্রতি গভীর ভালোবাসা নিয়ে সিলেট শহরে 'কাকতাড়ুয়া' নামের একটি স্বেচ্ছাসেবী দলের ২০জন তরুণ তরুণী বানান শুদ্ধি অভিযানে নেমে পড়েছেন। তাদের এই আন্তরিক প্রচেষ্টাকে অভিনন্দন। দেখেও না দেখবার ভাণ করে আমরা যারা পথে ঘাটে নানাভাবে লিখিত এসব বানান ভুলকে প্রশ্রয় দিয়ে এসেছি এতকাল তাদের যদি এ ঘটনায় কিছুটা টনক নড়ে তবে 'কাকতাড়ুয়ার' দল ভারী হতে বেশি সময় লাগবে না।

সিলেটের তরুণেরা যা করছেন, ঢাকা(বা অন্যন্য) শহরের তরুণেরা কী এ কাজটিতে এগিয়ে আসতে পারেন না? তিলোত্তমা ঢাকাসহ অন্যান্য শহরের কপাল থেকেও হরেক কিসিমের বানানভুলের জঞ্জালগুলো সরানো দরকার। কাকতাড়ুয়ার মতো ভুলতাড়ুয়া কোন সংগঠন কী দেশব্যাপি গড়ে তোলা সম্ভব? আমার মতে আমাদের একটু আন্তরিক প্রচেষ্টাই এর জন্য যথেষ্ট। মানছি আমরা প্রবাসীরা সরাসরি এতে কোন কাজ করতে পারবো না, কিন্তু আর্থিক সাহায্যের ক্ষেত্রে আমরা এগিয়ে আসতে পারি। দেশে কেউ যদি এরকম একটা উদ্যোগ নেয়, তাহলে এটা অবশ্যই সম্ভব। দেশীয় সচলসহ অসংখ্য ভাই বোনেরা কী ভেবে দেখবেন ব্যাপারটা? আপনার/আপনাদের সময় হবে কী বাংলা ভাষার মর্যাদা রক্ষার এই মিছিলে সামিল হতে?

[সমাপ্তিটীকা: আন্তরিক চেষ্টা সত্ত্বেও এই পোস্টে একাধিক বানান ভুল থেকে যেতে পারে। তাই কেউ যদি মন্তব্যে শুদ্ধ করে দেন বিশেষ কৃতজ্ঞ থাকবো]


মন্তব্য

সাইদ এর ছবি

কাকতাড়ুয়া বানানে ূ নাকি ু ??

আয়নামতি এর ছবি

ঐ পত্রিকায় ' কাকতাড়ূয়া' লেখা হয়েছে। উইকি বলছে 'কাকতাড়ুয়া' আমিও তেমনটাই জানি।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমার বানানেও অনেক সমস্যা হয়। যেমন আমি লেখতাম ''হতো'', ''যতো''। এখন দেখছি মহা বিপদে পড়লাম মন খারাপ

Shah Waez (শাহ্‌ ওয়ায়েজ।)
Facebook

..............................................................................................
কোথাও নেই ঝুমঝুম অন্ধকার
তক্ষক ডাকা নিশুতিতে
রূপকথা শুনে শিউরে উঠে না গা
স্বপ্নে আমার শরীরে কেউ ছড়ায় না শিউলি ফুল
আলোর আকাশ নুয়ে এসে ছোঁয় না কপাল

আয়নামতি এর ছবি

এই হ্যাপায় আমিও কাতর ভাই। তবে আপনার গত পোস্টে 'তিথির শাড়ি পড়া' লিখেছিলেন।
ওটা 'পরা' হবে। সেদিন কেন জানি বলা হয়ে ওঠেনি।
সচলের বানান বিশারদেরা আমাদের সাহায্যে এগিয়ে আসবেন বলে আশা রাখি হাসি

শাব্দিক এর ছবি

বানান ভুলের জন্য সব সময় নম্বর কম পেয়ে আসছি, সেই আমি কি না আসলাম সচলায়তনে।
ভাল লাগল লেখাটা আপু। কাকতাড়ুয়াকে স্বাগতম।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

আয়নামতি এর ছবি

কথায় আছে না মারি তো গণ্ডার, লুটি তো ভাণ্ডার? আপনি ঠিক জায়গাতেই এসে পড়েছেন শাব্দিক।
আমাদের বাংলায় ভালো নম্বর তোলা ঠেকায় কে দেঁতো হাসি

আয়নামতি এর ছবি

মজা তো হবেই দাদাই। তোমার বানানের সমস্যা নেই।
অন্যের দিকেও এট্টু নজর টজর দাও না বাপু কুঁড়েমি ভুলে।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

লোকে বলে কেউ কথা রাখেনা। আরে এইতো আয়নামতি কথা রেখেছে। ত্বরাই লেখা দিয়েছে। হাসি
বাংলা বানান শুদ্ধি অভিযান! তা বেশ ভাল একটা কাজ হবে কিন্তু।

আয়নামতি এর ছবি

আসলে পত্রিকায় 'কাকতাড়ুয়া'দের নিয়ে খবরটা পড়ে ত্বরাই লিখে ফেলেছি দেঁতো হাসি
'ভালো কাজ' বলে হাত গুটিয়ে বসে থাকলে চলবে না কিন্তু। বানানভুল থাকলে ধরিয়ে দেবার অনুরোধ থাকলো।

এক লহমা এর ছবি

আয়নাদিদি, মজাই হল! তোমার এই পোস্ট থেকে উদ্ধৃতি দিতে গিয়ে দেখি গোটা লেখাটাই উদ্ধৃত করলে ভাল হয়! অতএব সে চেষ্টায় ক্ষান্ত হলাম। হাসি
বানান নিয়ে সতর্কতা জারী রাখা অত‌্যন্ত ভাল কাজ। চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

চমৎকার পরামর্শ। বুনোহাঁসের প্রয়াসের সময় আমি ব্লগ জগতেই ছিলাম না বোধহয়, তাই জানি না। তবে ভালো লাগলো আপনার লেখা ও পথ প্রদর্শন। বানানের ট্রাফিক পুলিশ হওয়ার কাজ শুরু করে দিলাম। পকেট অভিধান খোঁজ করে দেখি - মোবাইলে ডাউনলোড করে রাখা যায় কিন!!

____________________________

আয়নামতি এর ছবি

বুনোদি বানান ভুল নিয়ে একটা সাইট খুলেছিলেন শুনেছি(সাইটা আমি দেখিনি অবশ্য)।
বানান শুদ্ধ করবার ব্যাপারে তার আন্তরিক চেষ্টা প্রত্যক্ষ করেছি কিছু কিছু হাসি
লেগে পড়ুন পকেট ডায়রী বা যেকোন সাহায্যকারী উৎস নিয়ে।
আপনার 'প্রদর্শণ' বানানটি দিয়েই শুরু হোক নাকি? ওটাতে 'ন' হবে প্রোফেসর।

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

ঠিক করে দিলুম। হে হে হে - অভ্র আর সচলের পাল্লায় পড়ে কোথায় কোথায় যে এরাম ভুল করে রেখেছি কে জানে!!

____________________________

আয়নামতি এর ছবি

নিজে তো দিব্বি টাইপো শুধরে ভালু মানুষটি সাজলেন! এদিকে আমার তো অন্ধকারেই রইনু পড়ে অবস্হা।
সম্পাদনা বাবাজি হাওয়া হয়ে গেছেন বলে সাইট'টা ঠিক করা গেলু না রেগে টং

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক দরকারি লেখা। বছর দেড়েক আগে যখন সচলায়তনে লিখতে শুরু করি তখন বানান বিভ্রাট নিয়ে বেশ হতাশায় পড়ে গিয়েছিলাম(বরাবরই বাংলা ২য় পত্রের দুর্বল ছাত্র আমি)। প্রথম দিকের পোষ্টগুলিতে ব্যবহৃত অনেক শব্দের সঠিক বানান দেশে ফোন করে বন্ধুদের কাছ থেকে জানতে হয়েছে!
এখনও অনেক ভুল হয় কিন্তু চেষ্টা করি খসড়া বারবার পড়ে তারপর পোষ্ট করার। কোন শব্দের বানান নিয়ে দ্বিধা থাকলে একই সাথে পোর্টেবল বাংলা অভিধান আর গুগল ট্রান্সলেটের মাঝে ক্রস চেক করে নিই।

.........জিপসি

আয়নামতি এর ছবি

বানানের ব্যাপারে আপনার দুর্বলা কাটছে জেনে ভালো লাগলো জিপসি।
আমারসহ অন্যের প্রতিও এ ব্যাপারে একটু সদয় দৃষ্টি দেবেন আশা রাখি।
'পোস্ট' হবে হে ওটি!

তানিম এহসান এর ছবি

আমার প্রচুর বানান ভুল হতো। সচল তারাপ কোয়াস বহুদিন আগে পরামর্শ দিয়েছিলেন অভ্র স্পেল-চেকার ব্যবহার করতে।

বানান ভুল নিয়ে লিখতে বসে বানান ভুল করলে হপে মশাই? লাইনে আসুন দেঁতো হাসি

আয়নামতি এর ছবি

অভ্র স্পেল চেকার আমিও ব্যবহার করেছি। এখন ওটা অকেজো হয়ে বসে আছে ইয়ে, মানে...
ভুল দেখলে শুদ্ধ করে দিতে কার্পূণ্য করলেই বা চলে কিভাবে হে রেগে টং

তিথীডোর এর ছবি

ভাল উদ্যোগ। চলুক
নিজে বাংলা- ইংরেজি দুই ভাষাতেই বানানে বিস্তর ভজঘট পাকাই বলে বাকিদের ওপর ফাউল মাতবরি করার চেষ্টাও ছেড়ে দিয়েছি।

তা সময় করে এট্টু পুরোনো পোস্টটোস্ট ঘাঁটো বাছা, এই সচলেই যে এককালে রীতিমতো পয়েন্টের ভিত্তিতে বানান শোধরানোর মতো প্রতিযোগিতা হয়েছিল-- টের পাবে তাহলে। চোখ টিপি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আয়নামতি এর ছবি

হাল ছাড়লে চলবে না তিথী। লেগে থাকো। আখেরে সবারই লাভ বৈ ক্ষতি হবে না।
হুউম হিমুভাইয়ের একটা পোস্ট পড়েছিলাম বানান নিয়ে। মজারু গল্পের ছিল।
বানান সংক্রান্ত সব পোস্টের আলাদা একটা বিভাগ থাকলে বেশ হতো রে! আছে নাকি তেমন কিছু?
'বেতারায়নের' মত 'বানানায়তন' নামের আলাদা একটা বিভাগ থাকলে আমার মত নতুন পাগলেরা উটকো বায়না করবার আগে ভাবতো হয়ত খাইছে

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালোই হলো। লেখাতে বানান ভুল থাকলে আসলেই খুব খারাপ লাগে। আপনার সাথে সাথে যতটুকু পারি, আমিও চেষ্টা করে যাবো, ইনশাআল্লাহ।
ভালো থাকুন খু-উ-ব।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

আয়নামতি এর ছবি

চেষ্টায় সব হয় নিয়াজভাই। অনেক ধন্যবাদ আপনার আন্তরিকতার জন্য।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

পত্রিকা পড়ি না বলে সিলেটের 'কাকতাড়ুয়া'দের খবরটা জানতাম না। আজ পড়ার পর চমৎকৃত হলাম দিদি। অনেক ধন্যবাদ আপনারে। ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াবার লোক যে এদেশে এখনো আছে সেটা খুব আশ্চর্য খবর। বানানশুদ্ধি অভিযানের ঐসব তরুণ তরুণীদের অভিবাদন। সারা দেশে এরকম অভিযান চললে কী দারুণ ব্যাপারই হতো।

অট-আপনি মনে হয় এই প্রথম এক মাসে দুটি লেখা দিলেন। লেখা -গুড়- হয়েছে

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

আয়নামতি এর ছবি

ঘরের খেয়ে বনের মোষ তাড়াবার মানুষ সমাজে সব সময়ই থাকেন। তাঁদের চোখে পড়েনা সব সময় এই যা পার্থক্য।
কেন এক মাসে দুটো লেখা দেয়া যায় না নাকি! দেঁতো হাসি

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

ভুল বানানেই লিখো প্রিয়……

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

আয়নামতি এর ছবি

ভুল বানানেই লিখো প্রিয়……

আহা এমন ক্ষমার্হ উচ্চারণ যদি পরীক্ষার খাতা দেখবার সময় টিচারসকল বলতেন ভাইয়া দেঁতো হাসি

মেঘলা মানুষ এর ছবি

ক্লাস নাইনে থাকার থাকর সময় একটা ঘটনা মনে পড়ল। স্কুলে দু'জন বাংলা শিক্ষক ছিলেন, যারা উত্তরপত্রের প্রতিটি লাইন পড়তেন এবং ভুল বানানের নিচে দাগ দিয়ে দিতেন (এবং নম্বরও কেটে রাখতেন)। আমরা সবাই ধরে নিতাম কিছু বানান ভুল হবেই, কিছুই করার নেই আমাদের। ক্লাসে রাসেল বলে একটা ছেলে ছিল যে, খুব ভালো বাংলা লিখতে পারত। ও একদিন আমাদের সবাইকে বলল, আমার খাতা থেকে কোন বানান ভুল বের হবে না এবং পরে তার কথাটা সত্যি হয়েছিল।সেদিন আমি ভেবেছিলাম, ও যদি পারে আমরা কেন পারি না? তারপর থেকেই আমি বানানে আরও মনযোগ দিয়েছিলাম।

বাংলা বানান জটিল, সন্দেহ নেই। তবে, চেষ্টা করলে কিন্তু অনেক ভুলই ঝেড়ে ফেলা যায়।

শুভেচ্ছা হাসি

আয়নামতি এর ছবি

মনকে যোগ করেছিলেন শিওর? ব্যবহারিক বাংলা অভিধান বলছে মনোযোগ দেঁতো হাসি
টাইপো হয়েছে বলে কেটে পড়লে হবেনা ধরে ধরে বলতে হবে কোনটা এবং কোথায়।
এ'ব্যাপারে সাহায্য পাবো আশা রাখি। ইয়ে 'থাকর' কি রে?খাইছে

সাফিনাজ আরজু এর ছবি

এরকম সবাই যদি তার আশ পাশের বানানগুলো শুদ্ধ করার কাজে একটু সময় ব্যয় করতো, তাহলে দেশ থেকে অশুদ্ধ বানান অনেকাংশে নির্মূল হয়ে যেতো।

সেই, তুমি খালি বল টাইপো ঠিক করতে, মাঝে মাঝে একটু ধরিয়ে দিলে কি হয়। ইয়ে, মানে...
আমি মাঝে মাঝে কিছু শব্দ নিয়ে দ্বিধায় পড়ে যাই, অভ্র স্পেল চেকার কেন জানি আমার কম্পু তে কাজ করেনা। মন খারাপ
বানানের কোন সাইট থাকলে দারুন হত কিন্তু। হাসি
কাকতাড়ুয়ার কথা জেনে খুব ভালো( ভালো নাকি ভাল? চিন্তিত ) লাগল।
ওদের জন্য শুভকামনা রইল, একদিন হয়ত সারাদেশে এর প্রভাব ছড়িয়ে যাবে...... অপেক্ষায় রইলাম । হাসি

নতুন লেখা পেয়ে মন খুশ খুশ হয়ে গেছে দর্পণদি দেঁতো হাসি
আছ কেমন?

__________________________________
----আমার মুক্তি আলোয় আলোয় এই আকাশে---

আয়নামতি এর ছবি

দর্পণদি! দারুণ লাগলু রে শুনতে দেঁতো হাসি ওকার নিয়ে হ্যাপা আমারও আছে হে।
এক্ষেত্রে আমি যখন ভালো লিখি তখন পাইকারিদরে সব কিছুতেই ওকার জুড়ে দেই খাইছে
এব্যাপারে তুখোড় সচলেরা এট্টু হল্পাইতে পারেন ইয়ে, মানে... বুনোদি'র ঘরে গিয়ে হানা দাও বুঝলে?
আমি ভালু আছি, তুমি কেমন আছু?

আব্দুল্লাহ এ.এম. এর ছবি

আমার ধারনা প্রযুক্তির কারনে সাধারন মানুষ অংক এবং শব্দের বানানে ধীরে ধীরে অপারদর্শী হয়ে যাচ্ছে। আগে গ্রামের হাটুরে দোকানদার মুখে মুখে জটিল সব হিসাব করে ফেলত, এখন গলির পান দোকানদার ক্যালকুলেটর ছাড়া কোন হিসাব করতে পারে না। আমি বাংলা এবং ইংরেজি, দুই ভাষার বানানই ধীরে ধীরে ভুলে যাচ্ছি। কারন, অনেক বছর ধরে প্রায় সকল লেখাই কম্পিউটারে করা হয়, স্পেল টেল সেই চেক করে দেয়, মাথায় আর কিছু জমা হয় না।

আয়নামতি এর ছবি

খুব সত্যি একটা কথা বলেছেন আব্দুল্লাহ ভাই। প্রযুক্তির উপর এত বেশি নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি সবাই।
তারপরও মাতৃভাষা যেহেতু সেটাতে ভুলভ্রান্তি কাটিয়ে উঠতে আসুন সচলের সবাই সবাইকে খানিকটা সাহায্য করি।

অতিথি লেখক এর ছবি

কত বানান যে ভুল করি মন খারাপ , মাঝে মাঝে মনে হয় নিজেই দুই আঙ্গুলের মাঝখানে পেন্সিল রেখে ডলে দেই ইয়ে, মানে...

কড়িকাঠুরে

আয়নামতি এর ছবি

ভুল আমিও করি, বলা ভালু খুব করি। তারপরও চেষ্টা করছি মাতৃভাষা র্নিভুলভাবে লিখতে।
চেষ্টায় কত কিছুই তো সম্ভব, ঠিক না? আঙ্গুলে পেন্সিল ডলা দিয়ে কাজ নেই চোখ কান সজাগ রাখলেই হবে দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

হে হে হে... মাইরের উফ্রে কুনু ওষুধ নাই!! সচলে 'ভার্চুয়াল পিডানি' টাইপ কিছু একটা থাকা দরকার!!! ভুল হইলেই পিডানি দিবে। তাহলে আমার মত বানান নিয়ে সবসময় ভুলভুলাইয়া তে থাকা লোকজন সোজা হয়ে যাবে। দেঁতো হাসি

সুবোধ অবোধ

আয়নামতি এর ছবি

যদিও বদ বুদ্ধিটা মন্দ লাগেনি সুবোধ(সুবোধ অবোধের ভালু নমুনা দেখা যায় খাইছে )
সচলে এমন একটা নগদে গাট্টার ব্যবস্হা করলে মন্দ হয় না কিন্তু!
লিখতে বসলাম, একটা বানাম্বুল হলু, অমনি খটাশ্! একটা গাট্টা!! শয়তানী হাসি
সচলের টেকিগণ এমন একটা টেকনিক বের করলেই পারেন।

আয়নামতি এর ছবি

আগে ভাবতাম আমিতো আর বই লেখছি না যে দুই-একটা বানান ভুল হলে মহা-ভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন মনে করি আমি যদি অবহেলা করি তবে নতুনরা তো আরো যত্নহীন হবে।

চমৎকার উপলব্ধি মাসুদ চলুক

অতিথি লেখক এর ছবি

ফেবুতে বেংলিশ লিখতে লিখতে ইংরেজি সব বানানি এখন কম বেশি ভুল হয়।আর বাংলা বানানের বেশি ভুল হয় তাড়াহুড়ো আর অসচেতন হওয়ার জন্যে, আগে ভাবতাম আমিতো আর বই লেখছি না যে দুই-একটা বানান ভুল হলে মহা-ভারত অশুদ্ধ হয়ে যাবে। কিন্তু এখন মনে করি আমি যদি অবহেলা করি তবে নতুনরা তো আরো যত্নহীন হবে। তাই সচলে আসার পর অবশ্য এই বিষয়ে যত্নবান হওয়ার চেষ্টা করছি। তারপরও ভুল হয়, আশা করি ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন। আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মাসুদ সজীব

অতিথি লেখক এর ছবি

আগে ভাবতাম বানান বিষয়ে আমি বোধহয় খুব ভালো। তারপর চাকুরি করতে এসে মহা বিপাকে! যে কাজ করতে হয় তাতে সারাক্ষণই বানান নিয়ে একটা গবেষণার মধ্যে থাকতে হয় চোখ টিপি এত কষ্ট! মন খারাপ কেউ যদি বানানগুলো ঠিকঠাক করে দিতো!!

দেবদ্যুতি

আয়নামতি এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
সারাক্ষণ যে মানুষ বানানের গবেষণায় থাকেন তার কাছ থেকে আমরা অবশ্যই কিছু শিখতে পারবো।
আমি নিজে বানান ভুল করি অনেক।
বেশি প্যাচ লাগে যখন দেখি একই বানান অন্য কেউ ভালো লেখিয়ে অন্যভাবে লিখছেন।
বাংলা বানান ব্যাপক জটিল বিষয় লাগে আমার ওঁয়া ওঁয়া

অতিথি লেখক এর ছবি

এই গবেষণা করিয়া আমি কী করিতেছি? চিন্তিত বরং সোজা সরল বিষয়গুলাও প্যাঁচ খাইয়া যাইতেছে-বানানের অত্যাচারে কান্না পাইতে থাকে আমার মন খারাপ মন খারাপ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।