শকুনের নখর থেকে মুক্ত স্বদেশ

আড্ডাবাজ এর ছবি
লিখেছেন আড্ডাবাজ (তারিখ: শুক্র, ১৪/১২/২০০৭ - ৯:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"...যারা অন্ধ সবচেয়ে বেশি, আজ চোখে দ্যাখে তারা;
যাদের হৃদয়ে কোনো প্রেম নেই-প্রীতি নেই- করুণার আলোড়ন নেই
পৃথিবী অচল আজ তাদের সুপরামর্শ ছাড়া।
যাদের গভীর আস্থা আছে আজো মানুষের প্রতি,
এখনো যাদের কাছে স্বাভাবিক ব’লে মনে হয়
মহৎ সত্য বা রীতি, কিংবা শিল্প অথবা সাধনা
শকুন ও শিয়ালের খাদ্য আজ তাদের হৃদয়"।

দু’দিন আগে কোর্টে দাঁড়িয়ে অধ্যাপক ড: আনোয়ার হোসেন এই ক’টা লাইন আওড়ালেন। সময়ের হাত ধরে বছর ঘুরেছে। বদলায়নি বাস্তবতা। ১৪ই ডিসেম্বরের আজকের দিনে বর্বর হানাদার শকুনের দল নির্মমভাবে হত্যা করেছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আর বুদ্ধিজীবিদের। আর আজকে নতুন শকুনের দল নিস্তব্দ করে দিতে চাচ্ছে ছাত্র-শিক্ষক ও বুদ্ধিজীবিদের। মিথ্যে মামলা দায়ের করে জেলে পুরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষকদের।

ক্ষমতার দম্ভ বড্ডো ভয়াবহ। নির্বোধরা বুটের আঘাতে থামিয়ে দিতে চায় গণতন্ত্র, মুক্তবুদ্ধি আর স্বাধীন মননকে। হয় জেলে পুরে না হয় পকেটে পুরে তারা থামিয়ে দিতে চায় সময়ের কাঁটাকে। বুদ্ধিজীবিদের হত্যা করে ৭১-এ স্বাধীন বাংলাদেশকে বিকলাঙ্গ করতে চেয়েছিল হানাদার বাহিনী আর তাদের দোসর রাজাকাররা। আজকে আবারও স্বৈরাচারের নখর গ্রাস করতে চায় এদেশের মুক্তবুদ্ধি ও স্বাধীন সত্ত্বাকে। তাই, অবাক বাংলাদেশ বাকরুদ্ধ হয়ে প্রত্যক্ষ করছে, এ দেশের ছাত্র-শিক্ষকরা কি অসহায়ভাবে বিচারের নামে প্রহসনের শিকার। ক্ষমতার দম্ভে আচ্ছন্ন অন্ধত্ব কোনকালেই নিরাময়যোগ্য নয়।

ড. হারুন অর রশিদ, ড. নিমচন্দ্র ভৌমিক, ড. সদরুল আমিন ও ড. আনোয়ার হোসেনসহ ১৫জন ছাত্র এ মুহুর্তে জেলের চার দেয়ালে অন্তরীণ। বুদ্ধিজীবি দিবসে সশ্রদ্ধ সালাম জানাই আমাদের সময়ের গণতন্ত্রের সাহসী সৈনিকদের। অন্ধকারের চাদর দিয়ে কি ঢাকা যায় স্বাধীনতার সূর্য সকালকে। অন্ধ দম্ভ আর ঔদ্ধত্য কি থামিয়ে রাখতে পারবে কালো রাতের ঘড়ির কাঁটাকে? স্বৈরাচারী শকুনের নখর থেকে মুক্ত স্বদেশের প্রত্যাশায় অপেক্ষমান জনতার সারি থেকে প্রতিধ্বনিত হোক: মুক্তি চাই সকল ছাত্র-শিক্ষকের। নিপাত যাক স্বৈরাচার আর তাদের দোসররা।


মন্তব্য

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

১৯৭১ সালে এই দিনে জামাত-রাজাকাররা বুদ্ধিজীবী নিধন করেছিল। আর আজ জলপাই-নেকড়ে আর জলপাইলেহী কুত্তারা মানসিক ভাবে নিধন করতে চাইছে বুদ্ধিজীবীদের। তফাত কি আছে বড়ো একটা?

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

আড্ডাবাজ এর ছবি

কস্টকর সত্য হলো, কোন তফাত নেই। এরা শুধু বদলেছে মুখোশ।

মুহম্মদ জুবায়ের এর ছবি

বুদ্ধিবৃত্তি ও যুক্তির চর্চাই বারবার আক্রান্ত হয়।

-----------------------------------------------
ছি ছি এত্তা জঞ্জাল!

কেউনা এর ছবি

স্যালূট..

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

হু, এই সরকারের ধারাবাহিক বিপর্যয়ের নথিতে আরোও একটা কলং্ক যুক্ত হলো!

আমরা আবারও বিনোদিত!! কি বলেন?

হাসান মোরশেদ এর ছবি

----------------------------------------
পাখীটা উড়ে যেতেই চাঁদ উঠে পড়লো-
আজো সেই রক্তমাখা মুন্ডুটাই উঠলো ।।

-------------------------------------
জীবনযাপনে আজ যতো ক্লান্তি থাক,
বেঁচে থাকা শ্লাঘনীয় তবু ।।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।