আমার বউ আর আমার ফুটবল খেলা

হাসিব জামান এর ছবি
লিখেছেন হাসিব জামান [অতিথি] (তারিখ: মঙ্গল, ২২/০৬/২০১০ - ১০:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ফুটবল খেলা আমার বউ এবং আমার দুজনের খুব পছন্দ। খেলাধূলাপ্রেমী মেয়ে আগে তেমন একটা দেখা যেত না। আজকাল মেয়েদের মধ্যে সচেতনতা বেড়েছে। তারা ক্রিকেট, ফুটবল থেকে শুরু করে রেসলিং পর্যন্ত বুঝতে শিখেছে। অবস্থা এমন যে সুযোগ পেলে ঘরে – বাইরে খেলতে শুরু করে দেয়।

ভাল কথা। খেলাধূলায় আমার কোন না নাই, বরং মাত্রাতিরিক্ত উৎসাহ। সমস্যা অন্যখানে। এবং গুরুতর সমস্যা। আগে জানলে বিয়েই করতাম না, ধুরো। বউ আমার কট্টর ব্রাজিল সমর্থক। আর আমি জন্ম থেকে আর্জেন্টিনা। এবার বাছাই পর্বে আমার করুন দশা দেখে বউ বলে, “আহারে আমার সোনা, বুকে আসো।” মেজাজ কেমন লাগে!

তারপর কোনরকমে চান্স পেয়ে গেলাম। বিশ্বকাপে আর্জেন্টিনা না থাকলে কেমন হত ভাবলে আতংকে গা শিউরে ওঠে। যাক এখন মাথা ঠান্ডা।
এক রাতে আদর সোহাগের মধুর পর্যায়ে বউকে জিজ্ঞেস করলাম, “তুমি ব্রাজিল করো কোন দুঃখে? ওদের বেশীরভাগ খেলোয়াড় দেখতে খুব বাজে।”
মেয়েদের আমি যতটুকু জানি, তারা দলের থেকে সুন্দর খেলোয়াড়দের প্রতি অধিক আকৃষ্ট থাকে। এই কারনে ইটালী, আর্জেন্টিনার মেয়েভক্ত তুলনামূলক ভাবে বেশী।
বউ আদর করে বলে, “দেখো চেহারা নিয়ে আমার বিশেষ মাথাব্যথা নাই। তাইতো তোমার ঘর করি। আমার প্রিয় খেলোয়াড় রোনালদিনহো। তারে এবার ডুঙ্গা নেয় নাই দেখে খুব খারাপ লাগতেসে।”
বউ আমাকে জড়িয়ে ধরে কষ্ট শেয়ার করতে চায়। আমার কেমন জানি অস্বস্তি লাগে।

রাতে ভাল ঘুম হয় না। সকালে অফিস যাবার আগে অভ্যেস মত একবার আয়নার সামনে দাঁড়াই। ভুত দেখার মত চমকে উঠি। দাঁত বের করে হাসছে রোনালদিনহো। মাথা থেকে দুশ্চিন্তা ঝেটিয়ে বিদায় করি। বিশ্বকাপে মেসি ছাড়া কেউ নাই, কেউ নাই। বউ এর আমার দলে আসতে সময় লাগবে না। আর মাত্র কয় দিন। মেসিডোনা শুরু হলো বলে।

সপ্তাহশেষের ছুটিতে বউ নিয়ে শ্বশুরবাড়ী যাই। দুপুরের খানাপিনার পরে ড্রয়িংরুমে শ্বশুরমশাই গল্প শুরু করেন আমার সাথে। এই ভদ্রলোক কখনো বুঝতে চান না, আমি গল্প করতে আসছি আমার একমাত্র শ্যালিকার সাথে, উনার সাথে না। অযথা এই প্যাচাল সেই প্যাচাল শেষে আসল বিশ্বকাপ।
“বুঝলা বাবা, রোনালদোর চেয়ে বড় কোন প্লেয়ারই নাই। আহ, কি সব গোল। এখনো চোখে লেগে আছে।” আমি জিজ্ঞেস করি, “কোন রোনালদো?”
চশমার ভেতর থেকে চোখ বড় বড় করে তিনি বললেন, “তুমি ব্রাজিলের সাপোর্টার না?”
মিষ্টি হেসে বলি, “জ্বী না বাবা, আমি আর্জেন্টাইন সমর্থক। আমার দেখা সেরা খেলোয়াড় মেসি। আপনি কি ব্রাজিল সাপোর্ট করেন?”
শ্বশুরমশাই আমার দিকে ফিরেও তাকালেন না, রিমোট কন্ট্রোল নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়লেন। হাসিমুখে আমি দুইবোনের রুমের দিকে অগ্রসর হই।

আস্তে আস্তে বুঝলাম ঘটনা বিস্তারিত। বাপের ব্রাজিল্প্রেম মেয়েদের মধ্যে সংক্রামিত হয়েছে। না বুঝে না শুনে এরা অন্ধকারে পতিত হয়েছে। এখন মেসি দুনিয়া উলটানো খেলা খেললেও তাদের মন ভরবে না। আর এখানেই শেষ নয়। শ্বশুরমশাই পুরোদমে এন্টি-আর্জেন্টিনা, সেই সাথে সাথে আমার বউ। আমি অবশ্য এন্টি-ব্রাজিল ছিলাম না। কিন্তু ছোটবেলা থেকে ব্রাজিল সাপোর্টারদের কাছে পঁচানি খেতে খেতে মন বিষিয়ে গেছে। এখন ব্রাজিল দুচোক্ষে দেখতে পারি না। হায় খোদা, ব্রাজিলের মেয়ে জুটাইলা আমার কপালে! মন চায় আর্জেন্টিনা চলে যাই, সেখানের কোন এক রমনীকে বিবাহ করে সুখে শান্তিতে ফুটবল খেলি।

নাহ, এত সহজে ছেড়ে দিলে হবে না। বিগ ম্যাচে মাথা ঠান্ডা রেখে খেলতে হবে। দুর্দান্ত ট্যাকটিকস খাটাতে হবে। আমি কোন ছাড় দিব না। অফিস থেকে ফেরার পথে স্টান্ডার্ড মাপের একটা আর্জেন্টিনার পতাকা কিনে বাসায় ফিরি। বউ এর সাথে আহ্লাদ করার আগে, কোনকথা বলার আগে বারান্দার বাইরে পতাকা উড়িয়ে দেই। তারপর সন্ধ্যা শেষ হয়, রাত বাড়ে। বউ কোন কথা বলে না। আমি ফেইসবুক, ব্লগ আরো নানাবিধ দরকারী বিষয় নিয়ে ব্যস্ত থাকি। বউকে এত পাত্তা দেয়ার কি আছে? রাতে তো তাকে আমার কাছে আসতেই হবে।

সে পাশ ফিরে শুয়েছিল। আমি আলতো করে ফেরালাম। চাঁদের আলো পড়েছে অনিন্দ্য সুন্দর মুখটায়। বড় বড় চোখে তাকিয়ে আছে আমার দিকে।
- আমার ব্রাজিলের ফ্লাগ কই?
- ব্রাজিলের ফ্লাগ আমি কই পাবো, লক্ষ্মী! (আমার আহ্লাদ)
- শোনো, তুমি কি আমাকে ভালোবাসো না? (বউ গম্ভীর)
- এটা তুমি কি বলো, জান!
- তাহলে তুমি অবশ্যই কালকে একটা ব্রাজিলের ফ্লাগ আর জার্সি কিনে নিয়ে আসবা। মনে থাকবে?
কোন উত্তর দেই না। এ অসম্ভব! আমার বারান্দায় উড়বে ব্রাজিলের পতাকা? তার আগে আমার মরণ ভাল।
“আচ্ছা লক্ষ্মী, ঠিক আছে।” ক্লোজ হবার চেষ্টা করি। ব্রাজিল ভুলিয়ে দিবো ভালোবাসা দিয়ে।
কিন্তু বউ সিরিয়াস। “তুমি আগে কিনে নিয়ে আসো। তার আগে চান্স নাই। গুড নাইট, সোনা।”
টেনশনে আমার মাথার চুল যে কয়টা অবশিষ্ট আছে টেনে ছিড়ে ফেলতে ইচ্ছে করে। এখন আমি কি করবো? বউ আগে না ফুটবল আগে!

যথাসময়ে বিশ্বকাপ শুরু হলো। দ্বিতীয় দিনেই আর্জেন্টিনার খেলা। জার্সি গায়ে দিয়ে রুচি চানাচুর মাখা মুড়ি নিয়ে বসে পড়ি, “কই আসো, খেলা শুরু হয়ে গেল জান।”
মেসি মাঠে নামার আগে আচমকা আমার মাথা ঘুড়ে গেল। কোন এক সহাস্য ব্রাজিলিয়ান দেবী আমার সামনে এসে দাঁড়িয়ে আছে, “আমাকে কেমন লাগছে?”
সত্যি বলতে কি, অদ্ভুত সুন্দর লাগছে বউকে। ক্যাটকেটে হলুদ রঙের সবকিছু আমার দুচোখের বিষ। আজ সব এলোমেলো হয়ে গেল। আমি কিছু বলি না। চুপচাপ চেয়ে থাকি।
দেবী হাসে, “কি কিছু বলো না কেন? তুমি আর্জেন্টিনার জার্সি গায়ে দিয়ে থাকবা আর আমি বসে বসে তোমাকে দেখবো তা হবে না।”
খেলা শুরু হয়। একটা গোল হয়ে যায়। আমার মনে বসে না সেদিকে। আমার তখন অন্য কিছু খেলতে খুব করে ইচ্ছে করে।

ব্রাজিলের খেলা শুরু হলো রাতে। ভোরবেলা অফিস। আমার খালি ঘুম পায়। তবু বউকে রেখে তো ঘুমানো যাবে না। অগত্যা রাত জেগে ম্যাড়ম্যাড়ে খেলা উপভোগ(!) করি। আমার জন্য চূড়ান্ত বোরিং। কারন এসময় সে থাকে মহা টেনশনে। তাই সম্পূর্ন টাচ ফ্রি থাকতে পছন্দ করে।

প্রথমদিনের খেলা নিয়ে দুজন দুজনকে পঁচাই। আমরা নিজেরাও নিজেদের খেলায় তুষ্ট না। পঁচায়ে তেমন আরাম পাই না। উলটো সাউথ কোরিয়ার সাথে আর্জন্টিনার খেলা কিছুটা ভয় ভয় নিয়ে শুরু করি। সব শংকা কাটায়া গোল, গোলের পর গোল। ছোট ভাইরে সাথে নিয়ে উল্লাস শুরু করি। বউ দেখি চুপচাপ বিশেষজ্ঞের মতন খেলা দেখতেছে। হঠাত একটা গোল দিয়ে দিল কোরিয়া। মেজাজ চরম খারাপ। ডিফেন্সের হাবলামি ভুলে গোল। এদিকে আমার বাসার মধ্যেই আমাদের কাজের ছেলে গোল গোল করে চিৎকার করতেসে।
- কিরে বেকুব, তুই লাফাস কেন?
- ভাইয়া, আমি আফামনির দলে।
বউ দেখি অন্যদিকে তাকায়া মুচকি হাসে। বুঝলাম সে চিল্লানোর জন্য লোক ভাড়া করে রাখসে। হায়রে, খেলা পারে না অথচ এদের টেকনিকের শেষ নাই।

ইতিমধ্যে বউ ঘোষনা দিয়ে দিয়েছে, আমার বাসায় দুইখানা পতাকা পাশাপাশি পতপত করে উড়লেও তার নাকি এটা শত্রুশিবির মনে হয়। সুতরাং ব্রাজিল ফাইনালে উঠলে সে নিজ গৃহে বসে ফাইনাল খেলা দেখবে। আর সেই সাথে আমাকে তাদের বাসায় খেলা উপভোগ করার নিমন্ত্রন।
আমি ও বলে দিয়েছি, “আর্জেন্টিনা বিশ্বকাপ জিতলে তোমাকে একটা স্পেশাল গিফট দিবো।”

কি দিবো এখনো অবশ্য ঠিক করি নাই, আগে বিশ্বকাপটা জিতে নেই। সময়ে দেখা যাবে।

(কল্পিত চোখ টিপি)


মন্তব্য

ফাহিম এর ছবি

মজার লেখা ভাই। অফিস থেকে বেরোনোর আগে মনটাই ভালো হয়ে গেল। বুড়া আঙ্গুল উপ্রে...

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

হাসিব জামান এর ছবি

ধন্যবাদ ভাই, মজা দিতে পেরে ধন্য দেঁতো হাসি
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

রাহিন হায়দার এর ছবি

আপনার লেখা পইড়া সিদ্ধান্ত লইলাম আর্জেন্টিনার সাপোর্টার ছাড়া বিয়া করুম না। সিরাম জমবে! দেঁতো হাসি
________________________________
মা তোর মুখের বাণী আমার কানে লাগে সুধার মতো...

হাসিব জামান এর ছবি

হুম, ব্রাজিলীয়দের আর্জেন্টাইন বিবাহ করা উচিত, জমবে ব্যাপক চোখ টিপি
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

ফাহিম এর ছবি

এই জেনেটিক ক্রসের ফলাফল কী দাঁড়াবে?

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অবস্থা এমন যে সুযোগ পেলে ঘরে – বাইরে খেলতে শুরু করে দেয়।

চোখ টিপি
সকালে অফিস যাবার আগে অভ্যেস মত একবার আয়নার সামনে দাঁড়াই। ভুত দেখার মত চমকে উঠি। দাঁত বের করে হাসছে রোনালদিনহো।

হো হো হো হো হো হো
এই ভদ্রলোক কখনো বুঝতে চান না, আমি গল্প করতে আসছি আমার একমাত্র শ্যালিকার সাথে, উনার সাথে না।

খাইছে
“দেখো চেহারা নিয়ে আমার বিশেষ মাথাব্যথা নাই। তাইতো তোমার ঘর করি।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি, বস, আপনে ভাই বস!
সেখানের কোন এক রমনীকে বিবাহ করে সুখে শান্তিতে ফুটবল খেলি।

এক কালে আমারো ইরাম লাগত চোখ টিপি
খেলা শুরু হয়। একটা গোল হয়ে যায়। আমার মনে বসে না সেদিকে। আমার তখন অন্য কিছু খেলতে খুব করে ইচ্ছে করে।

বেশি খেলাধুলা ভালু না ভাই, মন দিয়া খেলা দেখেন মিয়াভাই, আর দেড় ঘন্টা পরে প্রলয় নামবে গ্রীসের কান্ধে হো হো হো

ভাইজান, কি কমু, চোখ ভিজ্জা গেছে হাসতে হাসতে, ইরাম একখান লেখা কেমনে লিখলেন, ভাইজান, শ্বাসকষ্ট হইতেছে হাসতে হাসতে। লক্ষ-কোটি তারা আপনার লেখায়। হাসি থামাইতে পারতেছি না
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হাসিব জামান এর ছবি

সাইফ ভাই, আমার তো বউ নাই। বানায় আর কদ্দূর লিখা যায়? আপনেরা দোয়াটোয়া দিয়েন ইয়ে, মানে...

লেখা ভাল লাগসে জেনে উৎফুল্ল হইলাম। এখন গ্রীসের কান্ধে মেসির প্রলয় দেখার অপেক্ষায় আছি। দেঁতো হাসি

-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

সাইফ তাহসিন এর ছবি

বউ ছাড়াই যা দিসেন, আর বিয়া করনের কি কাম চোখ টিপি বরং শালিরে ধুগোদার কাছে পাচার কইরা দেন। আর্জেন্টিনা পুইতা ফালাইলো দেখি গ্রীসরে, পুরা ম্যাচ নিজেদের দখলে ছিল পুরা সময়, বিয়াফক আনন্দ পাইলাম খেলা দেইখা। আর ঘোড়ার ডিমের গোল-পোস্ট, মেসির পাস চেড়া ডিফেন্স ডিঙ্গানি শটটা অল্পের জন্যে ঢুকতে পারে নাই
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সাহাদাত উদরাজী [অতিথি] এর ছবি

বউ না থাকাতে লিখতে পেরেছেন। বটে!!!!
বউ থাকলে হয়ত খেলাই দেখতে পারতেন না। অনেকের কোপালে এমনই হচ্ছে!!!
আপনার কল্পনা ভাল ই!!

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভালো Wit and humour.
ওলি
oli

হাসিব জামান এর ছবি

ধন্যবাদ অলি
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

বোহেমিয়ান এর ছবি

ওরে!!! বিয়াপক হইছে!!! গড়াগড়ি দিয়া হাসি
_________________________________________

_________________________________________
ওরে! কত কথা বলে রে!

ধুসর গোধূলি এর ছবি
হাসিব জামান এর ছবি

হা হা হা। আপনে এখনো মনে রাখসেন অ্যাঁ
আপনে তো ব্রাজিল্প্রেমী, আমার শ্বশুর মশায়ের সাথে আলাপ সালাপ করতে পারেন। হো হো হো
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

কুলদা রায় এর ছবি

বিশ্বকাপ স্পেশাল : পাঁচসিকার চিনি আর ম্যারাডোনার কালা যাদু--এই কথা ইতিহাসে লেখা নাই

আমি ফুটবল খেলা দেখি না। কারণ আমার টিভি নাই। একটা আছে--সেটা দিয়ে শুধুমাত্র আবহাওয়া চ্যানেল দেখা যায়। এই আবহাওয়ার আগাম সংবাদগুলো ১০০% ঠিক হয়। আমার ঘরের জানালা খুলে দিলে টিভির দরকার হয় না। যদি দেখা যায় রাস্তায় লোকজন বগলে ছাতা নিয়ে চলছে--তাহলে বৃষ্টি। খালি হাত হলে রোদ। তাইরে নাইরে না। সুতরাং নো টিভি। নো ঝামেলা। যদি একান্ত দরকারই হয় তাহলে এফ ট্রেন হলে সোজা ম্যানহাটন। টাইম স্কয়ারে বড় পদার্য় শাকিরা নেচে নেচে গাইছে। দর্শক মেতে গেছে। তাইরে নাইরে না। আওয়ার গ্রেট শাকিরা। শাকিরার চেয়ে মহৎ আর কিছু নেই এই ভবে। এই বুঝেছি সার। মিছে এ সংসার। শাকিরাকে নিয়ে একটি মহাকাব্য লিখব অবসর পেলে। অবসর, তুমি কবে আসিবে?
টিভি না থাকার কারণে ফুটবল দেখি না--এর চেয়েও বড় আরেকটি কারণ আছে। আমি জীবনে একবার ফুটবল খেলা দেখেছিলাম। সে খেলায় মানুষের সঙ্গে স্বয়ং ঈশ্বর খেলতে নেমেছিলেন। আকাশ থেকে পুষ্প বর্ষিত হয়েছিল। ঘটনা স্বপ্নের মত। চোখে লেগে আছে। নতুন কোনো খেলা দেখে আমার চোখ থেকে অই খেলাটি হারিয়ে ফেলতে চাই না। ঈশ্বরের লীলা হারিয়ে গেলে আর কী থাকে হে বেরাদার! সর্বহারা হয়ে লাভ নেই। এক সময় সর্বহারাদের জন্য সারা দুনিয়াটা চিল। এখন গোল্লা। দাও শট। ভো করে শূন্যে আমাদের গোল্লা উড়ে যায়। সকল শূন্য মহাশূন্য হয়ে যাবে। একথা একদিন ভাবি নাই তো মনে সজনী রে।

এর আগে একটি ঐতিহাসিক কাহিনী বর্ণনা প্রয়োজন। পঁচাত্তর সালে আমাদের ক্লাশে চাঁদা তোলা হয়েছিল। প্রাইমারী বনাম হাই স্কুল ফুটবল ম্যাচ। সে এক হৈ হৈ রৈ রৈ বেপার। আমার ফুটবল খেলার কোনো পূর্ব অভিজ্ঞতা না থাকায় আমাকে গোলকীপার মনোনীত করা হয়েছিল। গোলকীপারকে গোলকী বলা হত। আমরা মাঠে হাজিরও হয়েছিলাম। কিন্তু খেলাটি জাতির স্বার্থে বাতিল করেছিল স্কুল কর্তৃপক্ষ। দুপক্ষের খেলোয়াড়দের সাইজ দেখে হেডস্যার বললেন, নো, ইমপসিবল। তালগাছের সঙ্গে তালগাছের খেলা হতে পারে। ঝামটি গাছের নয়। আমরা খুব দুঃখ পেয়েছিলাম। আমাদের হৃদয় ভেঙে গিয়েছিল। ভেঙে টুকরো টুকরো হয়ে গিয়েছিল। এখনো জোড়া লাগে নি। মাঝে নিঃশব্দে জলপতন হয়। বুঝেছিলাম, বৈষম্য কোনো মহৎ কর্ম হতে দেয় না। বৈষম্য নিপাত যাক।

সুতরাং এই বৈষম্যের কারণে আমাদের হাতে বেশ কিছু টাকা পঁয়সা বেচে গিয়েছিল। অনেকদিন পড়েছিল কামরুলের কাছে। কী করা যায় এই অর্থ দিয়ে ভাবতে ভাবতে অনেকদিন কেটে গেল। আমাদের দুএকজনের হুটহাট করে গোঁফ গজাতে শুরু করেছিল। এটা দেখে কামরুল একদিন একটি ছাপানো চটি পত্রিকা নিয়ে এল। প্রচ্ছদে একটি গোলাকার বস্তুর ছবি আকা। বড় করে লেখা ফুটবল। ফুটবলটি আকাশে উড়িতেছে না মাটিতে পড়িতেছে বোঝা যায় না। কারণ ততদিন ততদিনে আইনস্টাইনের মাথা থেকে কোনো আপেল আমাদের বইয়ের পাতায় পড়ে নাই। মাধ্যাকর্ষণ বলের ঘটনা তখনো জানা হয় নাই। বলটি তা্ই উড়িতেও পারে—আবার পড়িতেও পারে। যা ইচ্ছা তাই মনে করে নিলেই হল। ওটা যে একটা ফুটবল তাতে কিন্তু সন্দেহ নাই। নিচে লেখা আছে—বড় করে—ফুটবল। ভিতরের পাতায় লেখা—একটি ঐতিহাসিক স্মৃতি ফুটবল টুর্নামেন্ট উপলক্ষে প্রকাশিত অজর সাহিত্য পত্রিকা। সম্পাদক সেলিম ওমরাও খান। তারপরে সেলিম ওমরাও খানের একটি কবিতা ছাপা করা আছে—‘আমার মৃত্যুর পরে থেমে যাবে ব্যথার গুঞ্জন’। এটা যে একটি কবিতা—এটা যে আমাদের ওমরাও খান সেলিম লিখেছে সেটা আবিষ্কার করতে কয়েকটি বছর কেটে গিয়েছিল। পত্রিকাটির বাকী পৃষ্ঠাগুলি কোনো এক নৌকামালিক সমিতির বার্ষিক কার্যবিবরণী। আয় ব্যয়ের হিসাব।
কামরুলদের প্রেসে ছাপা। কামরুল খুব সৎ ছেলে। কোনো দুর্নীতি তখনো ওর মধ্যে উদ্গত হয় নি। ফুটবলের টাকা পঁয়সা হালাল করেই কাজটি করেছে। সেলিমের কবিতার পাশাপাশি আমাদের সেই ওয়ার্ল্ড কাপ ফুটবল টিমের নাম ছিল। এতেই আমরা ধন্য। আমি গোলকী। এ আনন্দ অপার।
এই ফাঁকে আমাদের বন্ধু সেলিম—স্কুলের রেজিস্ট্রারের ওমরাও খান যখন সেলিম ওমরাও খান হয়ে গেল তখন থেকেই সেলিম লেখালেখির মাঠে নেমে পড়ল। সুকান্তর কবিতা টবিতা বাদ দিয়ে বিবাহাদির শুভ পরিণয়, বার্ষিক ওরশ মোবারক, আসিতেছে আসিতেছে প্রিন্সেস ময়না কথা কয় না থেকে শুরু করে বিভিন্ন দলের লিপলেট হ্যান্ডিবিল লিখতে লিখতে একদিন পৌছে গেল সাপ্তাহিক বিচিত্রা পত্রিকার অফিসে। বিচিত্রা থেকে বিটিভিতে। তখন যমুনা সেতুর উদ্বোধন। অনেক লোকজন গমগম করছে। সেলিম বিটিভি চিহ্নিত মাইক্রোফোন নিয়ে হাসিনার আগে আগে ক্যামেরায় ধারা বিবরণী দিচ্ছে। একটু পূর্বাঞ্চলীয় টানে। নো প্রবলেম। তারপর লাল গাড়ি। নলি শাড়ি। ঢাকায় বাড়ি। সেলিমকে আর দেখা যায় নি। আকাশে –না, মাটিতে, সেলিম ওমরাও খান কোথায় –জানি না। এসবই ফুটবলের মহাযাদুর খেলা। আমাদের বাল্যে যদি ফুটবল খেলাটির আয়োজন না হত তাহলে কি এসব হতে পারত সেলিম? মোর নাম এই বলে খ্যাত হোক/ আমি ফুটবলেরই লোক।

এরকম প্রশ্ন দার্শনিকসুলভ। সেকালে আমার সেজো বোনটির বিয়ে হল খূলনায়। আমি ময়মনসিংহে। বৃষ্টির দিনে যেতে হল খুলনায়। সঙ্গে ছোট বোনটি। তালপিঠা ভেজে নিয়েছে। বড় বয়রা—আইজারের মোড় তখনো খুলনা হয়ে ওঠে নি। গ্রাম গ্রাম চেহারা। পথের দুপাশে ধানক্ষেত। এর মধ্যে বোনের শ্বশুরবাড়ি। সবে ঘরটি উঠেছে। টিনের চাল। আর দরমার বেড়া। পিছনে ডোবা আর ঝোপজঙ্গল। ব্যাঙ ডাকে—গ্যাঙ গ্যাঙ। ঢোল কলমী গাছে গঙ্গা ফড়িং নাচে।

মায়ৈমা ডেকচি ভর্তি করে খিছুড়ি রান্না করলেন। ইলশ ভাজি হচ্ছে। তালে পিঠা। বৃষ্টি না পড়ে পারে? ঝুম ঝুম করে বৃষ্টি নামল। টিনের চাল ভেদ করে ঘরেরর মধ্যে বৃষ্টির ফোটা পড়তে শুরু করেছে। কিছু হাড়ি কুড়ি দেওয়া হল। কিন্তু থামাথামি নেই। অঝোরে বৃষ্টি পড়ছে। এর মধ্যে আমরা খিচুড়ি খেয়ে নিচ্ছি। গরম গরম। ইলিশ ভাজি। তালের বড়া পিঠা। একটি ছাতি মেলা হল। ছাতিটি রাখা হল ঘরের কোণে রাখা টিভিটার উপরে। খাটের উপরে মিন্টুদা আর আমি। ছোট বোনটি কী একটা সেলাই নিয়ে বসেছে ফ্লোরে। মেজবোনটি আর অমিতবাবু অন্য একটি খাটে। টিভি অন হল। মায়ৈমা কপালে হাত ঠেকিয়ে বললেন, দূর্গা দুর্গা। আমার ম্যরাডোনার মুখ রাইখো গো ঠাকুর। তুমি করুণা সিন্ধু। আমরা কজন হিন্দু।
বোঝা গেল আজ ফুটবল খেলা। মায়ৈমার ম্যারাডোনার খেলা। ফ্রান্সে না জার্মানীতে। আর আমরা খূলনায়—মধ্যরাতে। ঘরের মধ্যে বৃষ্টি পড়ছে ঝম ঝম—পা পিছলে আলুর দম।

ফুটবল খেলা আমার পছন্দ নয়। বাইশজন মানুষ। আর একটিমাত্র ফুটবল। সবার উদ্দেশ্য ঐ একটিমাত্র ফুটবলকে অমানুষিকভাবে লাথি মারা। চড় চাপড়ও নয়। লাথি। সজোরে পদাঘাত। কী দোষ করেছে বলটি? একদম ফ্যাসীবাদি কাণ্ডকারখানা। কেন বাবা, বাইশটি ফুটবল নিয়ে নামলে কী হয়? বাইশজন লোক একটি নয়—বাইশটি বলকে লাথি মারতে পারে। সেটা অনেকটা শোভনীয়। একটু কম ফ্যাসিবাদ। অনেকটা গণতান্ত্রিক। কিন্তু আমার মায়ৈমা বলছেন—দুর্গা দুর্গা। আমার ম্যারাডোনারকে রক্ষ্যা করো গো মা। তুমি ছাড়া এ জগতে কে আছে ওর।
খেলা শুরু হয়ে গেল। দুর্দান্ত খেলা। বল পায়ে পায়ে ঘোরে। কখনো মাথায় মাথায়। খেলোয়াড় যতটা ছোটে তার চেয়ে বেশি ছোটে রেফারী আর মাঝে মাঝে কে একজন মাঝারী সাইজের লোক বল ধরলেই মায়ৈমা চেচিয়ে ওঠেন, বাবা ম্যারাডোনা। বাবা ম্যারু। টিভিতে হাজার হাজার দর্শক মায়ৈমাকে সাপোর্ট দিয়ে বলে, ম্যারাডোনা ম্যারাডোনা। যাদুকরী বেপার।
মিন্টুদাও লাফিয়ে ওঠেন। আর খাটটা মচ মচ করে ওঠে। ভেঙে পড়ার আগে মিন্টু খাট থেকে নেমে পড়লেন ফ্লোরে। মাঝে মাঝে খিচুড়ী খাওয়া হচ্ছে। মাঝে মাঝে উল্লাশ---ম্যারাডোনা, ম্যারোডোনা। বাবা ম্যারু।

আমি মাঝে মাঝে ঘুমিয়ে পড়ছি। মাঝে মাঝে চোখ মেলে দেখছি—মায়ৈমা মাঝে চঞ্চল হয়ে উঠছেন, মাঝে মাঝে ক্ষিপ্ত। মাঝে মাঝে আর্তনাদ। কে যেন ম্যারাডোনার পায়ে পেছন থেকে আঘাত করেছে। ম্যারাডোনা মাটিতে পড়ে গেছে। মায়ৈমা মাথায় জল দিচ্ছেন। খেয়ে নিচ্ছেন প্রেসারের আরেকটি ট্যাবলেট। বৃষ্টি পড়ছে ঝম ঝম করে। ঘরের বিড়ালটি ভিজতে ভিজতে লেজ উচু করে ঘুরছে। ঘুমোতে চায়। আমি মাঝে মাঝে ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে বুঝতে পারছি মায়ৈমা মানতি করছেন, দোহাই ত্রিণাথ, তোমার জগতের নাথ। ম্যারাডোনার বাঁচাও। রক্ষ্যা করো গো ঠাকুর। গোল আর হয় না। রাত কেটে যাচ্ছে। বৃষ্টি ঝরে যাচ্ছে। ঘুম টুটে যাচ্ছে। সময় শেষ হয়ে যাচ্ছে। কোচ মাথার চুল ছিড়ছে। দর্শকদের গলা ভেঙে গেছে। হায় হায়--ম্যরাডোনা হেরে যায়--হেরে যায়!

মায়ৈমা আমাকে ঠেলে ওঠালেন। বললেন, বাবা—হাত তোলো। দেখি, ঘরের সবাই প্রার্থনার ভঙ্গিতে বসে গেছে। মায়ৈমা তদগত ভাবে বলছেন, চোখ মুদে। আমরা তার সঙ্গে গলা মেলাচ্ছি,, হে ঈশ্বর, তুমি অগতির গতি। তুমি সর্বশক্তিমান। তুমি বিনা গাছের একটি পাতাও নড়ে না। তুমি রক্ষ্যা না করলে কে করবে আমাদের। আমাদের ম্যারাডোনাকে।

মায়ৈমা কাঁদতে কাঁদতে বলছেন, হে জগদীশ্বর, ম্যারাডোনা পা দিয়ে কিছুই করতে পারছে না। তুমি এবার তোমার খেলা দেখাও। পায়ের দরকার নেই। তুমি তোমার গোপন হাতটি পাঠাও। ম্যারাডোনার জন্য গোল করে দাও হে পরমেশ্বর। আমি তোমার জন্য পাঁচসিকার চিনি দেব। সত্যি সত্যি দেব। কোনো ভুল নাই।

চিনি খুব মিষ্টি। এর চেয়ে মধুর আর কী আছে ডায়াবেটিকদের কাছে। সত্যি সত্যি কাজ হল। ঈশ্বর সত্যি সত্যি পাঁচসিকার চিনির লোভে পড়ে গেল। ততক্ষণে ম্যারাডোনা বলটি পাস দিয়ে এগিয়ে গেছেন গোল পোস্টের কাছে। কে যেন পা দিয়ে ঠেলে দিল বলটি। মাথা দিয়ে জালে পাঠাতে চেষ্টা করল। ম্যারাডোনা ফেইল। মাথায় লাগেনি। আরেকবার হতাশা। মায়ৈমা চোখ বুজে আছেন। হাত জোড় করা। বলছেন, হে ঈশ্বর, হে ঈশ্বর। পাঁচসিকা চিনি দেব। আর এ কথা বলার সঙ্গে সঙ্গেই কোত্থেকে একটি হাত এসে ঠিকই ঠেলে দিল বলটিকে জালের মধ্যে। আমরা দেখছি—গো-ও-ও-ল। রেফারী অবাক। তিনি বাঁশি বাজাতে ভুলে গেলেন। ঈশ্বরের হাতকে কী করে তিনি ফাউল বলবেন। বলার মত হিম্মত তার কি আছে! আকাশ থেকে পুষ্প বৃষ্টি শুরু হয়ে গেছে। আর চারদিক থেকে কোটি কোটি কণ্ঠে উল্লাশ ভেসে যাচ্ছে—ম্যারাডোনা। ম্যারাডোনা।

আমার মায়ৈমা মা ফ্লোরে অনেকক্ষণ পরে বসলেন। চোখ মুছে এক খিলি পান বানালেন। মুখে পুরলেন। হাসতে হাসতে বললেন, দূর্গা দূর্গা।
বৃষ্টি থেমে গেছে। সকাল হয়ে আসছে। পাঁচ সিকার চিনি আনতে হবে। এই চিনি ছাড়া কি ঈশ্বরের হাতটি পাওয়া যেত?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

সাইফ তাহসিন এর ছবি

ভালু লাগল দাদা, কিন্তু আইনস্টাইনের লগে আপেল পড়ার সম্পর্কটা বুঝলাম না মন খারাপ, আর মন্তব্য আকারে না দিয়ে পোস্ট আকারে দিলেই পারতেন।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হাসিব জামান এর ছবি

বস লেখা বস, পোস্ট আকারে দিলেই পারতেন।
অনেক অনেক ধন্যবাদ।
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

কৌস্তুভ এর ছবি

ফাটাফাটি হইছে মশয়, আর কিছু কইতে পারি না...

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার যে বউ নাই সেটা লেখা পড়েই বোঝা যায়। দোয়া করি বউ যেন তাড়াতাড়ি পেয়ে যান। অবশ্য কতজনের জন্য দোয়া করি বলেন? সচলায়তনে অনেকের জন্যই দোয়া করতে হচ্ছে চিন্তিত

সাইফ তাহসিন এর ছবি

অবশ্য কতজনের জন্য দোয়া করি বলেন? সচলায়তনে অনেকের জন্যই দোয়া করতে হচ্ছে

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি পিপিদা রক্স চোখ টিপি
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

হাসিব জামান এর ছবি

হে হে হে, দাদাদের আগে ব্যাবস্থা হউক, আমেন খাইছে
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

সাফি এর ছবি

ব্যাচেলর বয়সে মনে হয় সবাই এমন সকাল দুপুর বিকেল রাত জুড়ে আদর সোহাগের খোয়াব দেখে

হাসিব জামান এর ছবি

পরে কি তারা মাইর খায়?? ইট্টু খোলাসা করেন ভাই :-/
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

সাফি এর ছবি

লাড্ডুর রহস্য ফাঁস করছিনা... নিজে খেয়ে দেখুন, দিল্লী বেশী দূরে না চোখ টিপি

অতিথি লেখক এর ছবি

হ... মুরগীর ছুডো রান কিসিমের সুনার অইডার জন্যি আস্লেই ব্যাপক ঝামেলা হইতেসে...
তয় আমিও আপনার (কল্পিত !!) বউয়ের দলের... দেঁতো হাসি

''চৈত্রী''

হাসিব জামান এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

বউ না থাইক্কাই এতো বর্ণনা ! খাইছে !
ফুটবল খেলাটা দেখলেই আমার মেজাজ খারাপ হয়ে যায় ! তাই খেলা প্রসঙ্গে আর না যাই । তবে লেখাটা ফিউডিবুলাস হয়েছে ।

(নিশা)

হাসিব জামান এর ছবি

হুম, থাকলে কি হত একবার ভেবে দেখেন খাইছে
আরে ফুটবল খেলা ভাল আছে, বিশেষ করে আর্জেন্টিনার খেলা, মাঝে মাঝে দেখবেন দেঁতো হাসি
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

রেশনুভা এর ছবি
রিজভী [অতিথি] এর ছবি

ব্যাপক মজা পাইলাম...

-------------------------------------
কেউ যাহা জানে নাই- কোনো এক বাণী-
আমি বহে আনি;

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

জায়গায় জায়গায় অশালীন, তবে লেখা খাসা। পোলাপাইনেরে ধরাইয়া ধরাইয়া বিয়া করাইয়া দেওনের কাম। তাইলে, ফুটবল নিয়ে মারামারি কমবো।
_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা।।ফাটাফাটি মজা পাইলাম।হাসতে হাসতে মাথা ব্যাথা করতাছে।।
অসাধারন হইছে।।

[বিষন্ন বাউন্ডুলে]

হাসিব জামান এর ছবি

লেখাটা রাতে পোস্ট করার পরেই খেয়াল করে দেখি উপ্রে আর্জেন্টিনার ব্যানার। আনন্দে লাফাইতে মন চাইতেসিল।
-----------------------------------------
ব্যস্ততা আমাকে দেয় না অবসর ...

সুহান রিজওয়ান এর ছবি

মজা প্লাম...

ইয়ে, আমিও ব্রাজিল সাপোর্টার...

আপনি তো খেলা বুঝেন না- তবুও বলি- ব্রাজিলের মহিলা সমর্থকেরা সুন্দর হয়...দেঁতো হাসি

_________________________________________

সেরিওজা

হাসিব জামান এর ছবি
সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

হো হো হো

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

তারানা_শব্দ এর ছবি

ইতালি আর আর্জেন্টিনা সাপোর্টারদের কিছুতেই বিয়ে করা যাবে না...
সব 'খেলা'ই ইন্টারেস্টিং ভাবে খেলতে হবে না? চোখ টিপি

লেখাটা পড়ে বিয়ে করতে ইচ্ছে করতেসে... খাইছে

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

হাসিব জামান এর ছবি
তারানা_শব্দ এর ছবি

কারণ ঐ দুটো দল আমি সাপোর্ট করি...

বিয়ে করার এখন সময় আসে নাই... তাই করা যাচ্ছে না!

"মান্ধাতারই আমল থেকে চলে আসছে এমনি রকম-
তোমারি কি এমন ভাগ্য বাঁচিয়ে যাবে সকল জখম!
মনেরে আজ কহ যে,
ভালো মন্দ যাহাই আসুক-
সত্যেরে লও সহজে।"

হাসিব জামান এর ছবি
কুলদা রায় এর ছবি

ইয়ে, বিয়ে করণটা কি ঠিক হবে? শ্যাষে ফুটবল হৈবার মঞ্চাইল?
...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

...............................................................................................
'এই পথ হ্রস্ব মনে হয় যদিও সুদূর'

তিথীডোর এর ছবি

গড়াগড়ি দিয়া হাসি

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

নিয়াজ মোর্শেদ চৌধুরী এর ছবি

গত কালই পড়েছিলাম। ইংল্যান্ডের খেলা থাকায় দৌড়ের উপর ছিলাম। তাই মন্তব্য করতে পারি নি তখন। এক কথায় জটিল হয়েছে। আপনার (কল্পিত)বৌ এর মত বৌ পাওয়া ভাগ্যের ব্যাপার চোখ টিপি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

ব্যাপক হইছে
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

হাসিব জামান এর ছবি
অতিথি লেখক এর ছবি

ভাই ব্যাপক মজা পাইছি
আমি আর্জেন্টিনার সাপোর্টার, এরকম ব্রাজিল সাপোর্টার কোন মেয়ে পাইলে ভাই বিয়ে শাদী করে ফেলতাম খাইছে
এই লেখাটা পড়ে আমার আগের কিছু খাপছাড়া লেখা নিয়ে অনেকদিনের ব্লগিং এর ইচ্ছাটা বেশ জাঁকিয়ে বসল, এজন্য ভাই আপনাকে অশেষ ধন্যবাদ।
**ভাই আপনার শ্যালিকা কি কর্মখালি আছে? এরকম একজন ব্রাজিল সাপোর্টার মেয়ে খুজতেছিলাম?
________________________________
ত্রিমাত্রিক কবি
E-mail:

হাসিব জামান এর ছবি

ইচ্ছে জাগ্রত থাকতে থাকতে বেশ কিছু লেখা লিখে ফেলুন। হাসি

আমার লেখাটা পড়ে একটা কনফিউশন অনেকের হতে পারে। এইটা ক্লিয়ার রাখা দরকার। বাস্তবে অবশ্যই আমি আর্জেন্টাইন বালিকাদের বেশী ভালবাসি। তারপরে আর সবাইকে চোখ টিপি
কারন কল্পনা এমন শান্তিপূর্ণ হলেও বাস্তব ভয়ংকর হতে পারে, ঘরে রেসলিং যত কম তত মঙ্গল দেঁতো হাসি

-----------------------------------------
এই গল্প ভরা রাতে, কিছু স্বপ্ন মাখা নীল নীল হাতে
বেপরোয়া কিছু উচ্ছাস নিয়ে, তোমার অপেক্ষায় ...

নূপুরের ছন্দ এর ছবি

আমার জামাই রে আমি ব্রাজিল এর জার্সি উপহার দিছি,কিন্তু সে আমারে এখন পর্যন্ত কিছুই দিলোনা।:(

হাসিব জামান এর ছবি

নজুদারে মাইনাস। ছি ছি, বেশরম লোক।
আপনে মনে হয় আমাদের দলের মানে আর্জেন্টিনার সাপুর্টার দেঁতো হাসি
-----------------------------------------
এই গল্প ভরা রাতে, কিছু স্বপ্ন মাখা নীল নীল হাতে
বেপরোয়া কিছু উচ্ছাস নিয়ে, তোমার অপেক্ষায় ...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।