অপ্রকাশিত

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি
লিখেছেন আনন্দী কল্যাণ (তারিখ: রবি, ০৩/১০/২০১০ - ৫:০৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমি তখন ক্লাস টেন। নিউ টেন। জানুয়ারি মাস। আর আমাদের বারান্দার টবের গোলাপ গাছেরা আফরিনদের বারান্দা ছুঁই-ছুঁই। গতবছর ওরা দুই ভাই-বোন মিলে ফুল ছিঁড়ে ছিঁড়ে পাপড়িগুলি সব বোতলে জলে রেখে পারফিউম বানাতো। এ বছর দেখি আফরিন ওপরতলা থেকে পানি দেয় আমাদের গাছে, ফুল আর ছেঁড়ে না। আমি ভুল করে বা ঠিক করে মাথা বাড়িয়ে দেই। আফরিনের দেয়া পানি জল হয়ে আমার মুখে নামে, কেন যেন খুব কান্না পায় আমার। গোলাপ গাছের কাঁটায় আঙুল বিঁধিয়ে বলি, গোলাপ তুমি ফোট অনেক লাল হয়ে, শুধু আফরিনের জন্য, ওই যে নাইটিঙ্গেল, অস্কার ওয়াইল্ড। ভুলেই যাই গাছটা সাদা গোলাপের, অসম্ভব লাল গোলাপ ফুটবেই না।
-ভাইদাআআআ মাথা সরাও, তুমি ভিজে যাচ্ছ।

গতবছর দুর্গাপূজায় নবমীতে আমরা আর জহিরচাচারা একসাথে পূজা দেখতে গেলাম। নবমীর দিন আরতির প্রচণ্ড ভিড়ে আমি আর আফরিন গেলাম হারিয়ে। আমরা অমল কিশোর-কিশোরী হাত ধরে, পায়ে ধুলা মেখে হেঁটে বেড়াই নাগরদোলায়, চুলের ফিতায়, হাওয়াই মিঠাইয়ে। কাগজের ঠোঙা ভরে মিছরির হাতি, ঘোড়া, পুতুল কিনি। আফরিন অনর্গল কথা বলে যাচ্ছে। আফরিনের মুখটাকে মনে হয় দুর্গাঠাকুর, তার মানে অস্ত্র আর অসুরবধ? না। আফরিন তবে সরস্বতী হোক। সাদা রাজহাঁস, হাতে বীণা, আফরিন গাইছে, এই সুন্দর ফুল, সুন্দর ফল, মিঠা নদীর পানি, খোদা তোমার মেহেরবানি। হঠাৎ ঠোঙার ভেতরের মিছরির ঘোড়াটা সত্যি হয়ে যায়। সন্ধে হল, সূর্য নামে পাটে, এলেম যেন জোড়াদিঘির মাঠে। আমরা কোথায় যাচ্ছি কে তা জানে, অন্ধকারে দেখা যায় না ভাল। এমন সময় হা রে রে রে রে রে। ওই যে কারা আসতেছে ডাক ছেড়ে। বড়রা আমাদের খুঁজে পেয়ে যায়।

পূজার পরপরই সে বছর রোজা শুরু হয়ে যায়। মা দেখি একসাথে চারটা সোয়েটার বোনা শুরু করে। কাদের জন্য বুনছ? ওই যে আমার আরো চারটা ছেলে-মেয়ে আছে, জানিস না? আমার মা না হয়ে তুমি আর কারো মা হলে ভাবছ তোমায় চিনতেম না, যেতেম না ঐ কোলে? মজা আরো হত ভারি, দুই জায়গায় থাকত বাড়ি, আমি থাকতেম এই গাঁয়েতে, তুমি পারের গাঁয়ে। ইফতারির সময় হলেই আমি আর নন্দিতা সুরসুর আফরিনদের বাড়ি। আর আফরিন ইফতারি খেয়েই ঘুম, পরে জহিরচাচা “আম্মা গো” বলে ওকে তুলে ভাত মেখে খাইয়ে দিতেন। শেষ রোজার দিন চাঁদ দেখা গেছে বলে লাফাতে লাফাতে কলোনির মাঠ থেকে তিন চারটা সিঁড়ি ভেঙে আমরা উপরে আসি। মা চারটা সোয়েটার বের করে দেন। আর চাচি নতুন কিনে রাখা শার্ট আর কামিজ। আমি, নন্দিতা, জামিল আর আফরিন।

বিকালবেলাটা আমি সাইকেল চালাই। কলোনির অন্য ছেলেমেয়েরা কেউ মাঠে খেলে, গল্প করে, বই পড়ে, কেউ কিছুই করে না।প্যাডেলে পা রাখলেই মনে হয়, সাতসাগরের ফেনায় ফেনায় মিশে, আমি যাই ভেসে দূর দিশে, পরীর দেশে বন্ধ দুয়ার দেই হানা, মনে মনে। রাস্তার একপাশে সারি সারি জামগাছ। জামগাছের ওদিকটায় নদী। ব্রহ্মপুত্র। রাস্তার প্রায় শেষ মাথায় বোকা বুড়ো বটগাছ আর এক পাগলি। প্রতিদিন একটাই সবুজ শাড়ি-লাল পাড়, খুনখুনে ঝুরি চুল। আমাকে দেখে বুকের আঁচল নামিয়ে দিত। আমার কি ভাল লাগত? কেন যেতাম ওই শেষ মাথায়? ফেরার সময় তাই আফরিন থাকত আমার একপাশে, রাজহাঁসে চড়ে, আর এক পাশে অপরাধবোধ। কলোনির মাঠে ফিরে এসে দেখতাম আফরিন বৌ হয়ে দাঁড়িয়ে আছে বউচি খেলায়। সাত নম্বর দম চলছে, শেষ দম। আফরিন ঘরে ফিরতে পারে না। বৌ হয়ে আটকে থাকে গোল দাগকাটা নিষেধে। মাগরিবের আযান পড়লে আমরা বাসায় ফিরি, তাই নিয়ম ছিল তখন।

রাত হলে আমাদের শহর বড় আশ্চর্য হয়। রিকশার নিচে হারিকেন বেঁধে সার সার চলে। প্রতিটা রাতই দীপাবলি। আর আমরা তারাবাতি আর পটকা ফুটাই ছাদে উঠে, শবেবরাত আর কালীপূজায়। আফরিন মাথায় ওড়না দিয়ে রুপালি রাঙতায় মোড়ানো শবেবরাতের হালুয়া নিয়ে আসে।
- ভাইদার জন্য আম্মা বুটের ডালের হালুয়াটা বেশি করে পাঠিয়েছে।

আচ্ছা, আফরিন কি নন্দিতা? নন্দিতা আমার ছোটবোন। আমরা যখন পানির ট্যাঙ্কিতে পা ঝুলিয়ে বসে চারজন বারমুডা ট্রায়াঙ্গল, ইয়েতি আর ইউনিকর্নের গল্প করি বা ছাদে মা আর চাচির রোদে দেয়া আচার লুকিয়ে খাই, তখন আফরিন কে ঠিক আমার নন্দিতা মনে হয়। কিন্তু গতবছর ভাইফোঁটায় যখন আফরিন শিশির দিয়ে কপাল মুছে আঙুলে চন্দন নিয়ে কপালে ছোঁয়ায়, আমার বিচ্ছিরি রাগ হয়। ভাইয়ের কপালে দিলাম ফোঁটা, যমদুয়ারে পড়ল কাঁটা, যম যেমন অমর, ভাই হোক তেমনি অমর, যমুনা দেয় যম কে ফোঁটা, আমি দেই আমার ভাই কে ফোঁটা। আফরিন কাছে এসে ফিসফিস করে বলে, রাগ করোনা ভাইদা, তোমার ভালোর জন্য দিয়েছি। যদিও আফরিনের ধূপের গন্ধ ভাল লাগে না, যদিও আমি কখনও জুঁইফুল দেখিনি, কিন্তু ও কাছে আসলে আমি ধূপ আর জুঁইফুলের একটা দমবন্ধ গন্ধ পাই। ঘরের দেয়ালের পুরনো পালেস্তারা খুটে খুটে প্রতিরাতে একটা করে নতুন দেশ আঁকি, খুঁজি। আমি যাই ভেসে দূর দিশে।

সেদিন বিকালে সাইকেলের চাকা পাংচার হয়ে গেল। ঠিক করাতে গেলাম অখিলকাকার দোকানে। নানান গল্প করেন মানুষটা। নিচু স্বরে, ঘসটে ঘসটে। একটা চোখ ভাল, আরেকটা চোখ নষ্ট। নদীর ধারে শ্মশানের পাশে একটা ঘর তুলে থাকেন, অমাবস্যার রাতে শেয়ালদের ভোগ দেন। শমীখোকা, আমি এই এক চোখ দিয়ে অনেককিছু দেখি, তোমরা যার সুলুক পাও নাই। তোমরা আইন-আদালত করে, এত বই লিখে কী করস? তোমাদের নিয়ে আমার শেয়াল-কুকুররা হাসাহাসি করে। খালি লাশ আর লাশ। মারো আর কাটো। আমার শকুন-শেয়ালেরা খেয়েপরে বেঁচে আছে, ভাল আছে, শমীখোকা। আমি ওর কিছু কথা বুঝি, কিছু বুঝি না। ফেরার সময় পকেট ভরে মার্বেল নিয়ে বাসায় ফিরি, অদ্ভুত রঙিন, অখিলকাকার দেয়া।

ফিরে দেখি খাবার টেবিলে বাবা,মা, জহির চাচা, রাবেয়া চাচির খুব আড্ডা হচ্ছে। আসছে পূর্ণিমায় রাত জেগে ব্রহ্মপুত্রে নৌকায় চড়া হবে। মা গান গাইবে, বড়রা ব্রিজ খেলবে, খিচুড়ি-মাংস, চা-পরোটা ইত্যাদি ইত্যাদি। আমি ঘরে ঢুকতেই জহিরচাচা বললেন, শমী আফরিনদের ডাক্, সবাই মিলে প্ল্যানটা করে ফেলি, কাগজকলম আন্ তাড়াতাড়ি। আমি, নন্দিতা, আফরিন, জামিল মোড়া আর অন্য ঘর থেকে চেয়ার টেনে এনে বড়দের পাশে পাশে গুঁজে বসে পড়লাম। হঠাৎ আমার মনে হল, আমরা একটা বিশাল পরিবার, বাবার কালো ফ্রেমের চশমাটা জহিরচাচা পড়লে চাচাকে কি বাবার মত দেখাবে না? অথবা চাচি যদি মার মত টিপ পরেন আর মা চাচির ফুল-ফুল প্রিন্ট শাড়িটা? আফরিনের নামটা আরতি? বা আমার নামটা শফি?

কিছুদিন পর আবার যাই অখিলকাকার ওখানে। এমনিই। সাইকেল কই, শমীখোকা? এর পরেরদিন আইনো মনে করে। একটা নতুন মেশিন পাইছি। হাওয়া-মেশিন। আর একটা শোলক। দেখবা, উড়তে পারবা।

আমার কিচ্ছু ভাললাগেনা, কিচ্ছু না। পানি, জল। চাচি, কাকি। ধূপ, আতর। সত্যি, বৌদি, শমী কী ভাল ছেলে, নম্র-ভদ্র, প্রতিবছর ফার্স্ট হচ্ছে। আফরিন বড় হলে ঠিক শমীর মত ছেলে চাই আমার। শমীর মত, শমীর মত, শমী নয়।পাঁচফোড়ন, পেয়াজ। বৌদি, ভাবি। মা, আম্মা। ভাবি, কী যে বলেন, আফরিনও তো খুব লক্ষী, ঠিক প্রতিমার মত মুখটা। শমীটা যে কবে বড় হবে, আফরিনের মত একটা মেয়ে পেতাম। আফরিনের মত, আফরিনের মত, আফরিন নয়। রোজা, উপাস। পশ্চিম, পূর্ব। সুরা, শ্লোক।আল্লাহ্, তিনি ছাড়া অন্য কোন উপাস্য নেই। তিনি চিরঞ্জীব, অনাদি। তাঁকে তন্দ্রা বা নিদ্রা স্পর্শ করে না। আকাশ ও পৃথিবীতে যা কিছু আছে সবই তাঁর। ঈশ্বর, তিনি জাতমাত্র সমস্ত জগতের একমাত্র ঈশ্বর। তিনি দ্যুলোক, ভূলোক ও অন্তরীক্ষলোক ধারণ করে আছেন।

অখিলকাকা, অনেকগুলি চাকার একটা অনেক বড় সাইকেল চাই আমার। তোমার হাওয়া-মেশিনটা দিয়ে হাওয়া ভরে দেবে। আর ওই শোলকটা। আমি, নন্দিতা, বাবা-মা, চাচা-চাচি, আফরিন, জামিল সবাই একসাথে যেন দ্যুলোক, ভূলোক, অন্তরীক্ষলোক, আকাশ, পৃথিবী ছাড়িয়ে অনেক দূরে কোথাও চলে যেতে পারি- অত শক্তি আছে তোমার শোলকের?

উৎসর্গপত্রঃ প্রিয় ব্লগার, প্রিয় মানুষ দুষ্ট বালিকার করকমলে খাইছে হাসি


মন্তব্য

স্নিগ্ধা এর ছবি

আনন্দী, এখানে এখন অনেক সকাল। একটু পরই প্রমিকে স্কুলের জন্য রেডি করতে হবে, নিজেকেও তৈরী হতে হবে। এই করতে হবে, সেই করতে হবে, আজকের মধ্যেই এটা আর ওটা সারতে হবে - অনেক ব্যস্ততা, মাথায় অনেক কিছু। এটা ঠিক পাঠ প্রতিক্রিয়া জানানোর সময়ই নয়। কিন্তু, তারপরও না বলে পারছি না -

গত কয়েকদিন ধরে খুব গভীরভাবে রেগে আছি। তোমার গল্পটা পড়ে এক ধরনের বিষণ্ণতা এসে সেটাকে কিছুটা হলেও হটিয়ে দিলো। তোমাকে কি আমার ধন্যবাদ দেয়া উচিত? হাসি

কিছু কিছু লাইন গল্পকার হিসেবে তোমার শক্তি চেনায় -

বড়রা আমাদের খুঁজে পেয়ে যায়।
ফেরার সময় তাই আফরিন থাকত আমার একপাশে, রাজহাঁসে চড়ে, আর এক পাশে অপরাধবোধ।
আমি, নন্দিতা, আফরিন, জামিল মোড়া আর অন্য ঘর থেকে চেয়ার টেনে এনে বড়দের পাশে পাশে গুঁজে বসে পড়লাম।

তবে, শেষটা কি একটু হুট করে এসে গেলো কিনা বুঝছি না। নাহ, এবার থামা উচিত। এই সময়ের মন্তব্যে লেখাটার প্রতি সুবিচার করা হবে না হয়তো। গল্প দারুণ, যথারীতি!

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ এত ব্যস্ততার মাঝে সময় নিয়ে মন্তব্য করার জন্য হাসি

শেষটা? হুম, দেখি চিন্তা করে।

হরফ এর ছবি

আনন্দী খুব ভাল লিখেছেন।
------------------------------------------------------------------------

"ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে"

ছুটলে কথা থামায় কে/আজকে ঠেকায় আমায় কে

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

তাসনীম এর ছবি

খুব সুন্দর লাগলো।

+++++++++++++++++++++++++++++++++++++++++
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

________________________________________
অন্ধকার শেষ হ'লে যেই স্তর জেগে ওঠে আলোর আবেগে...

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

সাইফ তাহসিন এর ছবি

প্রথম লাইনে আপনে 'টেন' মানে বুঝলাম না! এটা কি আমার বুঝার ভুল নাকি জ্ঞানি লেখিকার জ্ঞানের প্রকাশ যা আমার রাডারে ধরার পড়ে নাই ইয়ে, মানে...

গোলাপ গাছেরা নাকি গোলাপগাছেরা? হয়ত টাইপো হবে! আর বেশ কিছু স্পেস ছুটে গেছে, ফরম্যাটিং জনিত সমস্যা মনে হয়।
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

দময়ন্তী এর ছবি

কেন পরিস্কার লেখা আছে তো 'আমি তখন ক্লাস টেন'|

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

সাইফ তাহসিন এর ছবি

দমুদি, ঐযে বল্লাম আমার মত ভুদাই চরিতের রাডারে ধরা পড়ে নাই, আসলে অভ্যস্থ না, মনে করেছিলাম 'ক্লাস টেনে' হবে :)। লাইনটা পড়ে মনে হচ্ছিল কেউ জীববিদ্যার শ্রেণী গোত্র বর্ণনা করতেছেন। নিতান্তই আমার সীমাবদ্ধতা।

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

"আমি" টেন না। গল্পটা যে বলছে সে। " আমি তখন ক্লাস টেন" মানে "আমি তখন দশম শ্রেণীতে পড়ি"।

ফরম্যাটিং ঠিক করলাম।

"গোলাপগাছেরা" টাইপো নয়। আমার জানার ভুল।

আমি নেহাতই মূর্খ মানুষ, ঠিক কী কারণে আমাকে আপনার জ্ঞানি (জ্ঞানী) মনে হল জানালে খুশি হতাম।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

গল্পের ভাষারীতি দেখে এরকম মনে হল হাসি, আসলে গল্পটা দারুণ এবং সেইসাথে বলার ভংগিটাও দারুণ কিন্তু শুরুই লাইনে হোঁচট খেয়েছি কিনা! তাই দৃষ্টি ফিরে পেতে সময় লেগেছে কিছুটা
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

দময়ন্তী এর ছবি

যথারীতি খুবই ভাল লাগল আনন্দী|
শেষটা আরেকটু রয়েসয়ে ধীরেসুস্থে করলেও হত হয়ত|
-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

-----------------------------------------------------
"চিলেকোঠার দরজা ভাঙা, পাল্লা উধাও
রোদ ঢুকেছে চোরের মত, গঞ্জনা দাও'

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

ঠিক আছে, শেষটা পরে আরেকবার লিখবো।

বাউলিয়ানা এর ছবি

ভাল লেগেছে গল্প।

অনেক চেনা মানুষের কথা মনে করিয়ে দিলেন যাদের ফেলে এসেছি ছোটবেলার অবুঝ সময়টাতে।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

হুম, এই গল্পটাতে আমারও অনেক চেনা, আপনজনেরা আছেন।

ধন্যবাদ হাসি

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

স্বপ্নগুলা হুট কইরাই শেষ হয়া যায় ... এক হুট থাইকা আরেক হুটের মাঝখানে
আমাদের আত্মপরিচয়ের বাস্তবতা দানা বাঁধার টাইম পায় কই?


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

স্বপ্নগুলা শেষ হয়। সত্যিগুলাও শেষ হয়। সেই।

বিষণ্ণ বাউন্ডুলে [অতিথি] এর ছবি

অন্যরকম, অদ্ভুত সুন্দর ।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক দিন পর অসাধারণ একটি গল্প পড়লাম!
রোমেল চৌধুরী

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধন্যবাদ হাসি

মর্ম এর ছবি

লগ ইন করতে বাধ্য করলেন!!

গল্প নিয়ে কিছু বলব না, তবে মাথায় চট করে এসে পালাতে চাওয়া ক'খানা কথা আপনাকে জানিয়ে যাই (অফটপিক কিন্তু)-

ক। এ হে হে! লিখে ফেলেছে রে!
খ। রবীন্দ্রনাথ একেশ্বরবাদী ছিলেন!
গ। শেষ কবে যেনো গিয়েছিলাম পূজা দেখতে?
ঘ। শুনেছি পাশের ফ্ল্যাটে দুই বান্ধবী তাঁদের মেয়েদের কোচিং উপলক্ষে ঢাকায় এসে একসাথে আছেন, ওঁদের ধর্ম আলাদা। ওঁরা নিজেদের শহরেও একই বাসায় থাকেন!

পরের লেখা আরেক জলদি আসুক সে আশা করা যদি করি, সে কি অন্যায় হবে!?
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ক। বুঝিনাই মন খারাপ
খ। হ
গ। এটা আমারও প্রশ্ন হাসি
ঘ। আপনি কি শমী চরিত্রটা কে মেয়ে ভাবলেন?

আমিও আমার কাছে আশা করছি পরের লেখা জলদি আসুক। ধন্যবাদ, হাসি

মর্ম এর ছবি

ক। পাশের বাসার ব্যাপারটা জানার পর মনে হল কিছু একটা লিখব, আপনার লেখা সে সম্ভাবনা বা ইচ্ছায় যবনিকা টেনেছে। এ লেখার পর আর কিছু লেখার নাই।

খ। বলেই নিয়েছিলাম, অফটপিক মন্তব্য। লেখাটা পড়তে যেসব চিন্তা ঘুরে গেল মনে তারই চারটা লিখেছিলাম, শমী চরিত্রটিকে মেয়ে ভেবে ঘটনা মেলাইনি। মনে হয়, 'ভিন্নধর্মী কাছের মানুষ' ব্যাপারটাই মাথায় ঘুরছিল! মনের নাগাল পাওয়া দায়!
~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ক। আপনি লিখুন প্লীজ আপনার মত করে। আমরা সবাই মিলে পড়ব হাসি
খ। ও, আচ্ছা। বুঝতে পেরেছি। ভালো থাকুন।

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

দি, শেষে এসে তাড়াহুড়ো করলে মনে হয়। গল্পটা এক্কেবারে আমার গল্প। একবার আমি আফরিন হয়ে ভাইফোঁটা দেই আরেকবার সাইকেল নিয়ে অখিলকাকার কাছে পকেটভরা মার্বেল নিয়ে কেমন যেন আকাশের আয়নায় নিজেকে দেখি!

তুমি পিলিজ লাগে শেষটা আরেকবার লিখো! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ঠিক আছে, গল্পটা দুষ্ট বালিকা কে উৎসর্গ করা হইল হাসি

প্রমিজ লাগে শেষটা আরেকবার লিখবো হাসি

দুষ্ট বালিকা এর ছবি

ওরে সব্বোনাশ! সকালে উঠে মনটাই ভালো হয়ে গেলো দি! হাসি

-----------------------------------------------------------------------------------
...সময়ের ধাওয়া করা ফেরারীর হাত থিকা যেহেতু রক্ষা পামুনা, তাইলে চলো ধাওয়া কইরা উল্টা তারেই দৌড়ের উপরে রাখি...

**************************************************
“মসজিদ ভাঙলে আল্লার কিছু যায় আসে না, মন্দির ভাঙলে ভগবানের কিছু যায়-আসে না; যায়-আসে শুধু ধর্মান্ধদের। ওরাই মসজিদ ভাঙে, মন্দির ভাঙে।

মসজিদ তোলা আর ভাঙার নাম রাজনীতি, মন্দির ভাঙা আর তোলার নাম রাজনীতি।

মনামী এর ছবি

অনেক দিন পরপর তোমার লেখা পাই দূরদেশের আপনজনের আকাঙ্খিত চিঠির মত - উপুড় হয়ে শুয়ে অনেকক্ষণ ধরে যেটা চোখের সামনে ধরে রাখতে হয়, মাঝে মাঝে ভাবতে হয়, স্মৃতির আস্বাদ নিতে হয়।

ছোটবেলায় কলোনীতে থাকতাম। আমরা নীচতলায় আর চারতলায় মালা আন্টিরা। সব মনে পড়ে গেল তোমার গল্প পড়ে।

আরো বেশী লেখ, অনুরোধ রইলো।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

লিখতে চাই, কিন্তু পারি না, হয় না। তোমাদের দুজনের লেখার জন্যও অনেক অপেক্ষা করে থাকি, জান?

ভাল থাক, অনেক হাসি

সবজান্তা এর ছবি

আমার কাছে শেষটা ঠিকই মনে হলো। এই গল্পের শক্তি লুকিয়ে আছে এর ভাষায়, এর ভিতরের নিঃসঙ্গতায়, এর অসহায়ত্বে।

আপনার গল্প বলার এই অনুচ্চ স্বরটা খুবই চমৎকার লাগে। আমার ব্যক্তিগত মতামত- আপনার থেকে বোধহয় আরেকটু বড় দৈর্ঘ্যের লেখা আশা করা যায়, আরেকটু গভীর গাঁথুনির, আরেকটু বিস্তৃত প্লটের।

অট: আপনারা তো পুরা পারিবারিকভাবে পাল্লা দিয়ে ভালো লিখছেন !


অলমিতি বিস্তারেণ

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

নাহ্‌, শেষটা পাল্টাবোনা, আরেকটু ডিটেইলে লিখবো, পরে।

অনেককিছু নিয়ে অনেক চাপ আর টেনশন যাচ্ছে, প্রচুর কাজ জমে আছে। কিন্তু এরকম মন্তব্য পড়লে মনে হয়, ধুর সব বাদ দিয়ে কাগজ আর কলম নিয়ে বসে পড়ি। কাজেই এরকম মন্তব্য করা একদম ভাল কাজ নয় হাসি

অটঃ দেঁতো হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

অদ্ভুদ ভাল লাগল। ছোট বেলার অনেক কথা মনে পড়ে গেল। আর শেষে এসে বিষন্নতায় ছেয়ে গেল। আমাদের মধ্যে অসহায় এক দ্বিধা কাজ করে। সবসময়ে একে জোড়াতালি দিয়ে সমঝে চলি। তারপরো একসময়ে আর পারিনা। সবকিছু দুমড়ে মুচড়ে ছেড়ে চলে যেতে ইচ্ছে করে। কিন্তু ওই অতটুকুই। শেষটা ভাল লেগেছে।

অনন্ত

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

জ়োড়াতালি। দ্বিধা। চলে যাওয়া।

অনেক ধন্যবাদ, পড়বার জন্য।

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

আমাদের সময়ে স্কুলে একধরনের নাটক অভিনীত হতো, যাতে কোনো নারী চরিত্র থাকতোনা। মা'কে নিয়ে সেখানে লম্বা লম্বা সংলাপ থাকলেও মা-চরিত্রটা থাকতোনা। কারণ, নয়তো বয়েজ স্কুলে অমন নাটক অভিনয় করা সম্ভব হতোনা। অনেকে 'মৃত সৈনিক' বা 'নেপথ্যে কোলাহল' হতে চাইলেও মা সাজতে কেউই রাজি হতোনা। এই গল্পটা যদি শুধু স্বপ্নভিত্তিক বা আকাঙ্খাভিত্তিক হয়ে থাকে তাহলে ঠিক আছে। নয়তো বাস্তব জীবনের গল্পের অনিচ্ছায় বা অনভ্যাসে থেকে যাওয়া কয়েকটা শুঁয়াপোকা বা ঘুনপোকা এখানে অনুপস্থিত। বাস্তবভিত্তিক বলা হলে ঐ পোকাগুলো ছাড়া গল্পটা বয়েজ স্কুলের নাটকের মতো। পাঠক পোকাগুলোর কথা সম্ভবত ভুলে যান লেখকের ভাষার গুণে। কবির ভাষা এমন মায়াময়ই হয় বোধহয়।



তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

পাণ্ডবদা, বুঝতে পারছি কী বলতে চাইছেন। আপনার সাথে একমত। লেখাটা শুরুর সময় মাথায় ছিল পোকাগুলোর কথা। কিন্তু লেখা শেষ হবার পর দেখি কোনও পোকার কথাই আসেনি। ভাবলাম, থাকুক একটা কল্পগল্প।

অনেক ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যর জন্য। আপনার প্রতিটি মন্তব্য থেকে অনেককিছু শিখেছি।

তিথীডোর এর ছবি

"কবির ভাষা এমন মায়াময়ই হয় বোধহয়।"
সহমত।

চমৎকার লাগল দিদি!

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

হাসি ধন্যবাদ।

মহাস্থবির জাতক এর ছবি

মণীশ ঘটকের দুই ভিন্নধর্মী পরিবারের সৌহার্দ্য আর তাদের সবুজবয়েসি ছেলেমেয়েদের কাছাকাছি আসার অনন্য গল্পটা স্রেফ বর্ণনা আর ভাষার টানে ধরে রেখেছিল। এরপর অবশ্য সুনীল-বুদ্ধদেব গুহ-সমরেশের এমনি নানান গল্প পড়া হয়েছে, কিন্তু, ওটাই মনে থেকে গেছে বেশি।

গল্পটা পড়তে পড়তে ভাবছিলাম কখন ধড়াম করে শমী ছেলেটার সপরিবার দেশছাড়ার কাহিনি পাই। না পেয়েই ভালোবাসলাম লেখাটা।

আপনার ভাষা মায়াময়, সবুজ অন্ধকার ছায়াময়, চলতে থাকুক...

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

_______________________________
খাঁ খাঁ দুপুরে, গোধূলিতে আর রাতে বুড়ি পৃথিবী
কেবলই বলছে : খা, খা, হারামজাদা, ছাই খা!

(ছাই: মণীন্দ্র গুপ্ত)

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

মনীশ ঘটকের গল্পটা পড়া হয়নি। খুব পড়তে ইচ্ছা করছে। অনলাইনে কি পাওয়া যাবে? নামটা জানা যাবে?

নাহ্‌, দেশ ছাড়ার মত কোন পরিস্থিতি হয়নি তো গল্পে, শুধু শুধু কেন দেশ ছাড়বে।

অনেক ধন্যবাদ পাঠ ও মন্তব্যর জন্য হাসি

যাযাবর ব্যাকপ্যাকার এর ছবি

ঘরের দেয়ালের পুরনো পালেস্তারা খুটে খুটে প্রতিরাতে একটা করে নতুন দেশ আঁকি, খুঁজি। আমি যাই ভেসে দূর দিশে।

কিছুদিন পর আবার যাই অখিলকাকার ওখানে। এমনিই। সাইকেল কই, শমীখোকা? এর পরেরদিন আইনো মনে করে।

এই মেয়েটা... কী করে এত সুন্দর করে লিখে রে ভাই?! এত চমৎকারভাবে কী করে উপমা দেয়? প্রিয় গল্পকার তুমি তো আবারো জীবনের একটা পুরনো জানা গল্প, নতুন করে, নতুনভাবে জানিয়ে ছুঁয়ে গেলে!
আর আমার কাছে শেষটা খারাপ লাগেনি। তাড়াহুড়োও লাগেনি।

অফ টপিক: একটু যদি ফরম্যাটিং-এ মন দিতে, মনে হয় মন্দ হত না। আর যখন কেউ কথা বলছে, কোটেশন মার্ক ব্যবহার করলে হয় না?
___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

___________________
ঘুমের মাঝে স্বপ্ন দেখি না,
স্বপ্নরাই সব জাগিয়ে রাখে।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

ধুর, এতদিন পর কি আর জবাব দিব হাসি । ধনেপাতা দিলাম আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

কোটেশন দেবার পক্ষপাতী না। আমি চাই, সংলাপ, নিজের মনে ভাবা, কথা-বলা, বা গল্পকারের বলা গল্প সব মিলেমিশে কিছু একটা দাঁড় করাক, আলাদা করতে চাই না। তবে, পাঠকের যদি বুঝতে খুব অসুবিধা হয়, তাহলে অন্য কথা। আর ফরম্যাটিং, ঠিক আছে মন দিব হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

কি অপরূপ দ্বন্দ ।

শমীর মত, শমীর মত, শমী নয়..

আফরিনের মত, আফরিনের মত, আফরিন নয়। রোজা, উপাস।

ভাল লাগা রেখে গেলাম।

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

অনেক অনেক ধন্যবাদ, হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।