চামেলী হাতে কিছু নিম্নমানের মানুষ (প্রাক কথন)

আশফাক আহমেদ এর ছবি
লিখেছেন আশফাক আহমেদ [অতিথি] (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৯/০৮/২০১৩ - ১:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ঢাকা শহরে বের হলে আপনাকে চোদনা হতেই হবে। আপনি যদি যথেষ্ট বুদ্ধিমান প্রক্‌তির মানুষ হয়ে থাকেন এবং আপনার আই কিউ যদি এভারেজ এর চেয়ে কয়েক ধাপ উপরেও থাকে, এই শহর আপনাকে সুনিশ্চিতরূপে একজন প্রথম শ্রেণীর চোদনা বানিয়ে ছেড়ে দেবে।
ঢাকা শহর কোনোকালেই প্ল্যানড কোন শহর ছিল না। আদৌ কোনকালে এর কোন প্ল্যানার ছিলেন কিনা জানি না। আর এখনকার প্ল্যানাররা ঠিক কী করেন, সে বিষয়েও আমার বিশেষ অভিজ্ঞতা নেই। তবে একটা কাজ তারা বেশ যত্ন সহকারেই করেন। আর তা হচ্ছে ক’দিন পরপর বড় বড় রাস্তায় রিকশা আটকে দেয়া। আরে বাবা, রিকশা আটকাবি আটকা---গোটা ব্যাপারটাকে একটা সিস্টেমের মধ্যে ফেললেই তো হয়। শান্তিনগর মোড়ে রিকশা প্রবেশ চিরকালের জন্য নিষিদ্ধ করে দিলেই হয়। তা না। আজ হয়তো পল্টনের রাস্তা বন্ধ, কাল সেগুনবাগিচার আর পরশু শান্তিনগরে ঢোকার।
আপনি যদি খিলগাঁও থেকে শাহবাগ রিকশায় যেতে চান, আপনি কখনোই নিশ্চিত হতে পারবেন না, ঠিক কোন রাস্তা দিয়ে আপনি যেতে পারবেন। গৌরবময় অনিশ্চয়তার খেলায় এমনও হতে পারে, সবগুলো রাস্তাই আজ বন্ধ। পল্টন প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা অনশন করছে, সেগুনবাগিচা দিয়ে মন্ত্রীর হেলিকপ্টারসম গাড়ির বহর যাবে আর শান্তিনগরে সচেতন জনতার অনুরোধে ট্রাফিক পুলিশ ঐ রাস্তা দিয়ে রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছে।
আজ মনে হচ্ছে সেরকম একটা দিন।
শান্তিনিগর মোড়ে রিকশা আটকে দিল, চললাম পল্টন অভিমুখে। পল্টনে এসে আবার ব্যারিকেড। অনেক গলিঘুঁজি ঘুরে শেষ পর্যন্ত সড়ক ভবনের মোড় পর্যন্ত এলাম। এইখানে এসে পুলিশ ফাইনাল বাগড়াটা দিল। বলে যে এদিক দিয়ে যাওয়া যাবে না। আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইডি কার্ড দেখালাম। আমরা মানে আমি আর মুশফিক, আমার ছোট ভাই।
যে ভদ্রলোক আমাদের আটকালেন, তাকে দেখেই আমার কেন জানি বাংলা মুভির জুনিয়র আর্টিস্ট মনে হল। হয়তো সত্যি সত্যি শাকিব খানের মুভিতে পুলিশের অভিনয়-টভিনয় করে থাকেন।
আকাশে একফোঁটা রোদের দেখা নেই। ব্‌ষ্টি এসে এই একটু আগে শহরটাকে ধুয়ে গেছে। এর মধ্যেও হারামজাদাটা সানগ্লাস পড়ে আছে। কষে থাবড়ানো দরকার এই জোকারটাকে---পাশে ফিসফিস করে বললো মুশফিক।
আমি ওকে ইঙ্গিতে চুপ থাকতে বললাম।
ভদ্রলোক ভীষণ ঘাড়ত্যাড়া। এবং সেই সাথে যুক্তিবাদী। সানগ্লাসটা খুব ভাবের সাথে খুলে আমাদের বোঝাতে শুরু করলেন, এখন যদি আমরা আইডি কার্ডের সুবিধা নিয়ে এই রাস্তায় রিকশা নিয়ে ঢুকে পড়ি, তাহলে নীতিগতভাবে তিনি অন্য অনেক যাত্রীকেও এই সুবিধা দিতে বাধ্য থাকবেন। আফটার অল, আমরা সবাই-ই তো বাংলাদেশের নাগরিক।
অকাট্য যুক্তি। এরপর আর আসলে কিছু বলার থাকে না। বলতে গেলে ঝগড়া বেধে যাবে। এই মুহূর্তে কারো সাথে ঝগড়া করার মানসিকতা আমার বা মুশফিকের-কারোরই নেই। তার চেয়ে রিকশাওয়ালাকে দশ-বিশ টাকা বেশি দিয়ে নাহয় বিশ্ববিদ্যালয় ঘুরেই গেলাম।
আসলে, রিকশায় করে কোথাও যাওয়াটা ঢাকা শহরে এক ধরণের অপরাধ। খোঁজ করলে হয়তো দেখা যাবে, ফৌজদারী কার্যবিধি অনুযায়ী এর যথাযথ শাস্তির বিধানও হয়তো আছে। সর্বনিম্ন একশো টাকা জরিমানা, অনাদায়ে ছয় মাসের জেল জাতীয় কিছু। অথচ বাসে যে যাব, সে উপায়ও নেই। বাবার জন্য দুপুরের খাওয়া-দাওয়া প্লাস দুই বোতল পানি নিতে হচ্ছে। এতো ঝঞ্ঝাট নিয়ে বাসে ওঠাটা ঠিক আসে না।
আরেকটা অপশন আছে-সিএনজি। ওটার কথা আর না বলি। তার চেয়ে পাঠকদের একটা গল্প বলি। খুবই কমন গল্প। অনেকেই শুনে থাকবেন।
এক সিএনজিওয়ালার ম্‌ত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে। তো ঈশ্বর এক ফেরেশতাকে পাঠালেন তার জান কবজ করে নিয়ে আসার জন্য। কিছুক্ষণ পর আজরাঈল খালি হাতে ফিরে এলেন। ঈশ্বর তার স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্য নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “ওহে আজরাঈল, খালি হাতে ফিরে এসেছো যে!” আজরাঈল যথেষ্ট রুষ্ট স্বরে বললেন, “প্রভু, কার না কার জান কবজ করতে পাঠাইসেন? ঐ হারামী তো কোথাও যাইতেই চায় না।“
আজকের রিকশাওয়ালাটা এই লেভেলের হারামী না। আমাদের মত সেও যুক্তিবাদী পুলিশের উপর হেভী খ্যাপা। গালিগালাজের ব্‌ষ্টি ছুটিয়ে সে রিকশা ঘোরাতে লাগলো। মাদার্চো* থেকে শুরু করে আমাদের জানা কোন গালিই বাদ পড়লো না। গালিগুলো যুক্তিবাদী পুলিশের কানে গেলো কিনা কে জানে। আশা করছি, উনি রেগুলার এই ধরণের গালি শুনে অভ্যস্ত।

চা খাবি?
না।
দুধ খা, মা মিনতিভরা স্বরে বলেন। এদের দুধটা বেশ ভালো।
এদের দুধ আমি খেয়ে দেখেছি। দুধওয়ালা কয় গ্যালন পানি মেশায় কে জানে। তবে, এই দুধের একটা অন্যরকম স্বাদ আছে। ভেজাল জিনিসের মধ্যেও একটা ডিফারেন্ট ফ্লেভার থাকে। একবার খেলে অনেকদিন মনে থাকে।
দুপুরে কি দিয়ে খাইছিস?
ভাত, ডিম ভাজি, ডাল। আমরা ঠান্ডা স্বরে বলি।
বাসায় ঠিকা কাজের লোক নেই কেউ। সেক্ষেত্রে এই খাওয়াকে শাহী খাওয়াই বলতে হবে।
ক্যান্টিন থেকে খেয়ে আয় কিছু।
লাগবে না। সন্ধ্যার দিকে যাব নে।
এই বোতলে করে চা নিয়ে আসিস।
আচ্ছা, আনবো নে।
বারডেমের ক্যান্টিনে এই একটা সুবিধা আছে। ছোট মাউন্টেন ডিউর বোতলে করে মাপমত দু-চার কাপ চা নিয়ে আসা যায়। গরম থাকতে থাকতে খেলেই হল।
মা’র মুখটা মলিন দেখাচ্ছে। স্বাভাবিক। সাতদিন ধরে তিনি বাসায় যান না। এই হাসপাতালের ওয়ার্ডে বাবার জন্যে পড়ে আছেন। কখনো হয়তো বেডে ঘুমান, কখনো মেঝেতেই চাদর বিছিয়ে শুয়ে পড়েন।
রাতভর এ্যাম্বুলেন্সগুলো জরুরী রোগী নিয়ে আসে। সাইরেনের অত্যাচারে ঘুম হবার কথা না। তা আপনি ৮ তলার ওয়ার্ডেই থাকুন, আর ১৪ তলার কেবিনে। অল দ্যা সেইম।
পাশের বেডের লোকগুলোও খুব সুবিধার নয়। কিছুক্ষণ পরপরই জুলজুল চোখে এরা আমাদের দিকে তাকিয়ে থাকে। অস্বস্তিকর। এদের পেশেন্টের আবার ঠাণ্ডার সমস্যা। রাতে তাই ফ্যান ছাড়তে দেয় না এরা। অনেক রিকোয়েস্ট করেও এদের মন গলানো যায়নি। মা নিশ্চয়ই রাতে দরদর করে ঘামেন। এদিকে আমরা ঠিকই সিলিং ফ্যান, পারলে টেবিল ফ্যান ছেড়ে আরামসে ঘুম দিই। এইসব কথা ভাবলে মার জন্য খারাপ লাগে। কিন্তু কিছু করারও নেই। এই অসুস্থ মানুষের সাথে কে থাকবে মা ছাড়া? মানুষটা বাথরুম পর্যন্ত করতে পারে না মার সাহায্য ছাড়া। আমরা চাইলে থাকতে পারি রাতে, কিন্তু থেকে কী করবো? মানুষটা যখন বাথরুমে যাবার জন্য চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করবে, তখন কে এই ঠ্যালা সামলাবে?
আপনার আব্বার এখন কী অবস্থা?
পাশের বেডের সবচেয়ে খাটাস দর্শন লোকটা জিজ্ঞেস করে।
এই তো, আগের চেয়ে একটু ভালো। আমি হাসিমুখে উত্তর দেবার চেষ্টা করি।
আল্লার কাছে খাস দিলে দোয়া করেন। সব ঠিক হইয়া যাইবো।
জ্বি, খাস দিলে দোয়া করবো।
আমরা তো পরশুদিন চইলা যাইতেসি।
আমি মনে মনে বলি, আলহামদুলিল্লাহ।
আপনাদের কথা খুব মনে পড়বো।
আমি চুপ থাকি।
আমার নাম্বারটা রাইখা দেন। কিশোরগঞ্জ আসলে বাড়িত যাইয়েন আপনার আব্বা-আম্মাকে নিয়া। শাজাহান মিয়া বললে ঐখানে সবাই বড়ি দেখায় দিবো।
লোকটা মোটামুটি জোর করেই তার নাম্বারটা আমার মোবাইলে গছিয়ে দেয়।
আপনার আব্বা-আম্মা দুই জনই খুব ভালো মানুষ। উনাদের দিকে নজর রাইখেন।
আমি মাথা নাড়াই। জ্বি, রাখবো। দোয়া রাখবেন।
অবশ্যই। অবশ্যই।
লোকটা করিডোর ধরে অদ্‌শ্য হয়ে যায়। কী একটা ওষুধ কিনতে রাস্তার ওপারে ফার্মেসাইট যেতে হবে। হাসপাতালের ভেতরের ফার্মেসিগুলোর উপর বিশ্বাস নাই। দরকারী ওষুধ আছে কি নাই কে জানে।

এরকম বহু লোকের সাথে না চাইতেও এই কয়দিনে বেশ খাতির হয়ে গেছে।
এক আন্টি আছে, দেখলেই ‘বাবা, বাবা’ বলে আমাদের অস্থির করে ফেলেন। পুরাণ ঢাকায় উনাদের বিরাট সম্পত্তি। আঙ্কেলের ডায়াবেটিস প্লাস অন্যান্য হাজারো প্রবলেম। এর মধ্যে নাকি লাখখানেক খরচ হয়ে গেছে। মোটামুটি দশ লাখের মত বাজেট নিয়ে এরা মাঠে নেমেছেন। বিজয়ী হয়েই ফিরবেন, নয়তো নয়।
এসবই মা’র মুখে শোনা।
মানুষকে আপন করে নেবার এক অদ্ভূত ক্ষমতা নিয়ে জন্মেছেন এই মহিলা। আমরা হয়তো নতুন কোন বাসায় উঠলাম, যেখানকার বাসিন্দারা বহু বছরেও একে অন্যের মুখ দেখেননি। মা গিয়ে দিন পনেরোর মধ্যে সেখানে আসর জমিয়ে ফেলবেন। হাসপাতালেও যে তিনি দিন সাতেকের মধ্যে গোটা চারেক সমবয়সী-অসমবয়সী বান্ধবী জুটিয়ে ফেলবেন, এতে আর বিচিত্র কী?

খাওয়া-দাওয়ার পর্ব আজকের মত শেষ। আমরা ওঠার জন্য তোড়জোড় করি।
মা বলেন, আরেকটু থেকে যা।
আমরা বলি, ঠিকাসে।
অসুস্থ মানুষের সাথে গল্প করা উচিত। অসুস্থ মানুষ তাতে সময় কাটে ভালো। আমি নিজে খুব ভালো গল্পবাজ নই। এমনকি, বন্ধুদের আড্ডাতেও আমি মোটামুটি চুপচাপই থাকি। মাঝেমধ্যে কেউ কোন বিষয়ে মতামত চাইলে আন্দাজে হুঁ হাঁ করি। আগ বাড়িয়ে কারো সাথে গল্প করাটা তাই আমার আসে না।
আর বাবার সাথে আমাদের ভাইদের এক ধরণের গ্যাপ আছে। সব ছেলেরেই থাকে হয়তো। আমরা আমাদের তুচ্ছাতিতুচ্ছ কোন প্রয়োজনেও মায়ের কাছে গিয়ে হাজির হই।
আম্মু, একটা রেজার কিনা লাগবে। বিশটা টাকা দাও।
আম্মু, হাঁটতে যাচ্ছো? তিরিশ টাকা ফ্লেক্সি করে দিও তো। নাম্বার মুখস্থ আছে না?
আম্মু, এই পাঞ্জাবি তো পুরাই গ্যাসে। এই ঈদে একটা না কিনলেই না। কবে ফ্রি আছো?
এই জাতীয় শতেক আবদারের স্থান হচ্ছে মায়ের দরবার। স্বাভাবিকভাবেই বাবা বেশ কমপ্লেক্সে ভোগেন এ নিয়ে। তার যুক্তিটা এরকম, খাওয়াচ্ছি আমি, পরাচ্ছি আমি, তাইলে সব আবদার মায়ের কাছে কেনো? আমি কি মরে গেছি নাকি?
ব্যাপারটা আমরাও বুঝি। কিন্তু, একবার গ্যাপ তৈরি হয়ে গেলে সেটা ফিলআপ করা মুশকিল।
তামিমের জন্য একটা চিপ্স নিয়ে যাস। মা’র কথায় আমি আবার বাস্তবে ফিরে আসি।
আচ্ছা, নিবো। যন্ত্রের মত বলি আমি।
আর তোর দাদুর জন্য পান।
জর্দাসহ না ছাড়া?
ছাড়া। খালি পান।
আচ্ছা, নিবো নে।
মশারি টানিয়ে ঘুমাস।
মশা নাই তো।
তবুও, একজন এম্নিতেই বিছানায় পড়ে আছে। এখন তোরা কেউ বিছানায় পড়লে উপায় থাকবে?
আমরা মা’র কথা মেনে নিই। মশারি টানিয়ে ঘুমাবার প্রতিশ্রুতি দিই।
আর তুই গল্পের বই-টই পড়িস না। মা আমার দিকে শীতল দ্‌ষ্টিতে বলেন।
আচ্ছা, পড়বো না।
জিআরইর বই-টই একটু দেখিস।
আচ্ছা, দেখবো।
হাসপাতাল থেকে বের হবার আগে এই হচ্ছে মোটামুটি রুটিন কথাবার্তা।

খিলগাঁর বিখ্যাত জ্যামে আটকে আছি অনেকক্ষণ হল। আদৌ এই জ্যাম ছাড়বে, এমন কোন সম্ভাবনা আপাতত দেখা যাচ্ছে না। আশেপাশের লোকজনের মধ্যে ইতিমধ্যে হাঁসফাঁস শুরু হয়ে গেছে। এক লোক কিছুক্ষণ পরপরই মাথা উঁচু করে দেখার চেষ্টা করছে, জ্যাম ছাড়লো কিনা। সাথে তার বউ বা গার্লফ্রেণ্ড। মহিলা এই লোকের কর্মকাণ্ডে যথেষ্টই বিব্রত। লোকটা মাথা উঁচু করছে আর মহিলা তার হাত টেনে ধরছে বসানোর জন্য। পারফেক্ট দাম্পত্য দ্‌শ্য।
পাশের রিকশার বাচ্চাটা আকাশ ফাটিয়ে কান্না জুড়েছে। মায়ের কাছে যাবে, দুধ খাবে---দাবিদাওয়ায় লিস্টি খুব লম্বা নয়। বেচারা বাপটাকে বড্ড অসহায় লাগছে। সে বাচ্চাটাকে শান্ত করার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ফলাফল, বাচ্চাটা দ্বিগুণ ডেসিবেলে কাঁদতে শুরু করেছে।
এর মধ্যে এক ভিক্ষুক এসে দ্বারে দ্বারে দুঃখিত রিকশায় রিকশায় এসে ভিক্ষা চাইছে। অন্য সময় হলে হয়তো জিন্সের প্যান্টের ভেতর থেকে পুরনো কোন দুই টাকার নোট খুঁজে বের করে পুণ্য কামাই করতাম। আজকাল পুণ্য কামাই করতে ইচ্ছা করে না। এই ভিক্ষুককে তো আর বলা যায় না, ভাই, আমরা নিজেরাও যথেষ্ট আর্থিক সঙ্কটে আছি। আপনারে কী ভিক্ষা দেব? কিছুক্ষণ মুলামুলির পর যখন বুঝে যাবে, এই অঞ্চলে কিছু হবার নয়, তখন আপনাআপনিই সরে পড়বে।
বাচ্চাটাকে নিয়ে ঐ ভদ্রলোক ফুটপাতে হাঁটাহাঁটি করছেন। এই অসহনীয় জ্যামের মাঝখানে এই বাপ-বেটা মোটামুটি দর্শনীয় বস্তুতে পরিণত হয়েছে। ঢাকা শহরে মানুষের দ্‌ষ্টি আকর্ষণ করা কঠিন। বাপ-বেটা মোটামুটি অনায়াসেই তা করতে পেরেছে।
বাচ্চাটার মুখে হাসি দেখা যাচ্ছে। আনন্দের হাসি। বাবো হয়তো এককালে আমাদের কাউকে নিয়ে এইরকম জ্যামের মাঝখানে হাঁটাহাঁটি করেছেন। কে জানে। বাবাকে কখনো জিজ্ঞেস করা হয়নি।

বাসায় ঢুকতেই দারোয়ান চাচার সাথে দেখা। দেখা হলেই মিষ্টি একটা হাসি দেন এই লোক। কিছু কিছু লোক আছে যাদের চেহারা সামান্য বদসুরত হলেও হাসি দেখলে মন ভরে যায়। এই লোকটি ঠিক সেই ক্যাটাগরীর।
আপনাদের বাবা কেমন আছেন, এখন?
জ্বি, আগের চেয়ে একটু ভালো। আমাদের উত্তর রেডী করাই ছিল।
বাসায় আসবেন কবে?
এই তো দিন সাতেকের মধ্যে। গত এক সপ্তাহ ধরেই এই উত্তর দিয়ে আসছি।
আচ্ছা যান। আর চাবি-উবি লাগলে আমারে বইলেন । কোন সংকোচ করবেন না।
জ্বি আচ্ছা। করবো না।
মা বলেছেন, বাবা সুস্থ হয়ে ফিরলে এই লোককে ১০০টাকা দেবেন। যত সব মেয়েমানুষী সেন্টিমেন্ট। আমি আর মুশফিক হিসেব করে দেখেছি, বাবাকে রিলিজ করে নেবার পর আয়া, ড্রাইভার আর হাসপাতালের দারোয়ানকে খুশি করে আসতেই একটা ভালো অঙ্কের টাকা খরচ হবে। এম্নিতেই টাকাপয়সা যা ছিল, সব শেষ হয়ে আসছে। তখন আবার এতোগুলো টাকা কোথ থেকে পাবো, কে জানে।
মা’র কথা---হাজার হোক, এই লোকগুলো তো আমাদের জন্য খেটেছে। গরিব মানুষ। কতো টাকাই বা বেতন পায়? ওদেরও তো আমাদের উপর হক আছে। আসবার সময় কিছু টাকাপয়সা না দিলে নাকি এই গরিব মানুষদের অভিশাপ পড়বে আমাদের উপর।
এইসব অভিশাপ-টভিশাপে আমাদের বিশেষ বিশ্বাস নেই। মানুষ তার কর্মের ফল পায়। আজ কিংবা কাল। বড়জোর পরশু হতে পায়। কিন্তু, পায়। এবং ইহজীবনেই পায়।

যথারীতি ইলেকট্রিসিটি ফেইল করলো।
এবং---ফাক। মুখ দিয়ে আপনা আপনিই বেরিয়ে গেলো।
সরকার বাহাদুরকে আরো কিছু ভদ্র-অভদ্র গালি দিয়ে শরীরটা বিছানায় এলিয়ে দিলাম। জানালা খোলা। বাইরে থেকে বিন্দুমাত্র বাতাস আসছে না যদিও। ক্যামন একটা ভ্যাপসা ভাব চারদিকে।
আকাশে মস্ত একটা চাঁদ উঠেছে। সেদিকে তাকিয়ে থাকতে ইচ্ছে করছে। তাহলে আবার চিৎ হয়ে শুতে হবে। আমার উপুড় হয়ে শোবার অভ্যাস। আরাম লাগে।
আকাশে গোলগাল চাঁদ দেখলেই কেয়া ফোন দিতো।
জানিস, আজকে আকাশে কী দারুণ একটা চাঁদ উঠসে?
আমি চুপ।
এক্ষুনি তোদের ছাদে চলে আয়। দু’জনে একসাথে চাঁদ দেখবো।
এইটা কেয়ার একটা অদ্ভূত পাগলামি। ওর বাসা আমাদের বাসা থেকে বেশ কয়েক ব্লক দূরে। একসাথে চাঁদ দেখার ব্যাপারটা তাই এক ধরণের সেমি ভার্চুয়াল রোমান্টিকতা। ও ওর ছাদ থেকে চাঁদ দেখছে, আমি আমার ছাদ থেকে। দু’জন আবার দু’জনকে দেখছি। খুবই সস্তা রোমান্টিকতা। একটু পর ও হয়তো আমাকে ফোন দিলোঃ
কিরে, চাঁদটা জোস না?
আবার জিগস। আমিও ওর সাথে তাল মেলাই।
ইচ্ছে করতেসে খেয়ে ফেলতে।
আমারও।
আমি মনে মনে একটা কবিতা লিখসি চাঁদকে নিয়ে। শুনবি।
কেয়ার কবিতাগুলো মোটামুটি জঘন্য প্রক্‌তির হয়। অণুকাব্য হিসেবে হয়তো চলে যায়। কিন্তু কবিতা আখ্যা দেয়া টাফ। ও আবার এই কবিতাগুলো নিয়ে ভীষণ সিরিয়াস। একটা উদাহরণ দিচ্ছিঃ
লাল চাঁদ আকাশে
আমি তোর পাশে
ঐ ফ্ল্যাটের বাচ্চটা
খুক খুক করে কাশে।
আমি একবার ওকে বলেছিলাম, তুই ফান ম্যাগাজিনগুলোতে তোর এই কবিতাগুলো পাঠাস না কেনো? পাঠক পড়ে মজা পাবে।
ও ভীষণ ক্ষেপে গিয়েছিলো। মাসখানেক আমার সাথে কোন কথা বলেনি। আমিও আর এ নিয়ে ঘাঁটাইনি।
কিরে কেমন লাগলো আজকেরটা?
অসাধারণ। জোস---আমি না শুনেই সার্টিফিকেট দিয়ে দিই।
কোথায় যেন এ আর রহমানের মিউজিক বাজছে। ‘হাম সে হ্যায় মুকাবিলা’ ফিল্মের টাইটেল ট্র্যাক। অসাধারণ একটা কম্পোজিশন। যতোবার শুনি, ততোবারই মুগ্ধ হই।
হঠাৎ খেয়াল হয়, এটা তো আমার সেলের রিংটোন। বড় চাচা কলিং।
হ্যালো চাচা, স্লামালাইকুম।
কী, তুমার আব্বা এখন কেমন আছেন?
জ্বি, আগের চেয়ে একটু ভালো। আমাদের টেমপ্লেট জবাব।
বাসায় নিয়ে আসবা কবে?
এই তো চাচা দিন সাতেকের মধ্যে। এটাও টেমপ্লেট।
তোমার চাকরি-বাকরির কী খবর? কোথাও চেষ্টা করতেসো?
মাত্র তো রেজাল্ট দিল চাচা। এই প্রথম টেমপ্লেটের বাইরে গেলাম।
তোমার সিভিটা নিয়া একদিন আমার অফিসে আইসো। দেখি, কী করতে পারি।
চাচা ফোন রেখে দেন। ‘জ্বি, আচ্ছা’ শোনার মত সময়ও তার হয় না।

বাবারা চার ভাই। বাবা মেজো।
সংসারে একটা ধারণা প্রচলিত আছে, বাপের বড় ছেলে বোকাসোকা হয় আর মেজোটা বুদ্ধিমান। ক্ষুদ্র পরিসরে আমার বাবাকে বুদ্ধিমানই বলা চলে।
বাসায় একটা লাইট ফ্যান কিছু নষ্ট হলে আমাদের ইলেক্ট্রিশিয়ানের প্রয়োজন হয় না। বাবা দক্ষ হাতে সব সামাল দেন।
বেসিনের কল খুলে গেলো। বাবা খুটখাট করে কীভাবে কীভাবে যেন লাগিয়ে দেন।
কোন গরিব আত্নীয় হয়তো সরকারি হাসপাতালে সীট পাচ্ছে না। বাবার চেনাজানাও কেউ নেই। বাবা কিন্তু ঠিকই লাইনঘাট করে একটা কেবিন যোগাড় করে ফেলবেন।
অথচ এই আপাত বুদ্ধিমান লোকটাই বড় পরিসরে ভীষণভাবে ব্যর্থ। শুধু ব্যর্থই না, ক্লান্ত এবং পরাজিত। ব্যর্থ, ক্লান্ত, পরাজিত।
বড় চাচা একটা ওকালতির ফার্ম চালান। ব্যাঙ্কে ফিক্সড ডিপোজিট থেকে আমরা মাসে যে টাকাটা পাই, উনি হয়তো দিনেই তার দ্বিগুণ বা তিনগুণ রোজগার করেন। মহাখালীতে ছয় কাঠার উপর উনাদের একটা বাড়ি আছে। বাড়ির নাম সন্ধ্যা। মোটামুটি আলিশান বাড়ি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, আমরা কখনোই ও বাড়িতে যাইনি।
বাবার একটা গোঁ ছিল, উনার বড় ভাই ঢাকা শহরে বাড়ি করেছে। উনি নিজে একটা বাড়ির মালিক না হওয়া পর্যন্ত বড় ভাইর বাড়ির মুখ দর্শন করবেন না। বলা বাহুল্য, বাবার সে স্বপ্ন পূরণ হয়নি। মিডলক্লাস ভাড়াটিয়া হিসেবেই তিনি মোটামুটি একটা গ্লানির জীবন কাটিয়ে গেলেন।
ছোটচাচা সোনালী ব্যাঙ্কের একটা ব্রাঞ্চের ম্যানেজার। অতি সম্প্রতি উনিও সিলেট সদরে বাড়ির কাজে হাত দিয়েছেন। একদিন আমাকে ফোন করে বললেন, তুমি তো বাবা ইঞ্জিনিয়ার। এইসব ভালো বুঝো। দিন কয়েকের জন্য আমাদের এইখানে ঘুরতে আইসো।
তার কন্ট্রাক্টর নাকি বিরাট ধড়িবাজ লোক। সব সিমেন্ট কৌশলে সরিয়ে ফেলছে। আমি এসে হাতেনাতে চোর ধরবো---এমন একটা আবদার তার।
বাবা সেই তুলনায় কিছুই করতে পারেননি জীবনে। আদমজী থেকে যখন গোল্ডেন হ্যাণ্ডশেক দিয়ে তাদের বিদায় করে দেয়া হল, তখন তার ব্যাঙ্কের ব্যালেন্স সহকর্মীদের তুলনায় নিতান্তই রুগ্ন।
পরিচিত সব আঙ্কেলের যেখানে ঢাকার এখানে-ওখানে মাথা গোঁজার মত একটা নিজস্ব ঠাঁই আছে, নিদেনপক্ষে বনানী বা নিকেতনে একটা ফ্ল্যাট আছে, সেখানে আমরা খিলগাঁওর এই ভীষণ গলিতে বছরের পর বছর বসবাস করে চলেছি। এটাকে জীবন ধারণ বলে, জীবন যাপন বলে না।
বাবা বলেন, তিনি ভীষন সৎ ছিলেন। জীবনেও ইধারকা মাল উধার করেননি। হবে হয়তো। মুশফিক বলে, ঘুষ খাবার জন্যও ক্যালিবার লাগে। বাবার হয়তো ঘুষ খাবার ক্যালিবারই ছিল না। নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে তিনি সততার ঢাল ব্যবহার করতেন। সব ব্যর্থ লোক তাই করে।
দাদা নাকি বলতেন, তার তিন ছেলের মধ্যে এই ছেলেটা জীবনে সবচেয়ে উন্নতি করবে। উন্নতি করার সব গুণই হয়তো বাবার মধ্যে তিনি দেখতে পেয়েছিলেন। বাবা হাতের কাজে পাকা, যে কোন মানুষকে মুহূর্তের মধ্যে ম্যানেজ করে ফেলেন---এই গুণগুলো তার ভাইদের মধ্যে বিরল। আমরাও এর ছিঁটেফোঁটাও পাইনি।
এগুলো মা’র কাছ থেকে শোনা।
আচ্ছা, মা এখন কী করছেন?
হাসপাতালের ওয়ার্ডে কাঁথা মুড়ি দিয়ে শুয়ে আছেন? না বাবার বাথরুমে যাবার আবদার মিটিয়ে চলেছেন?
এসব আর ভাবতে ভালো লাগছে না।
আমার এখন ঘুম পাচ্ছে। ভীষণ ঘুম পাচ্ছে।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

মুহূর্তের জন্য হলেও আমাকে আপনার এই সময়ের হাত ধরে আমার সেই সময়ে নিয়ে গেলেন।
ভাল লিখেছেন।
শাকিল অরিত

তিথীডোর এর ছবি

এক সিএনজিওয়ালার ম্‌ত্যুর সময় ঘনিয়ে এসেছে। তো ঈশ্বর এক ফেরেশতাকে পাঠালেন তার জান কবজ করে নিয়ে আসার জন্য। কিছুক্ষণ পর আজরাঈল খালি হাতে ফিরে এলেন। ঈশ্বর তার স্বভাবসুলভ গাম্ভীর্য নিয়ে জিজ্ঞেস করলেন, “ওহে আজরাঈল, খালি হাতে ফিরে এসেছো যে!” আজরাঈল যথেষ্ট রুষ্ট স্বরে বললেন, “প্রভু, কার না কার জান কবজ করতে পাঠাইসেন? ঐ হারামী তো কোথাও যাইতেই চায় না।“

হো হো হো
জোকটা শুনিনি আগে।

সিরিজটা ভাল্লাগছে। বলার ভঙ্গি সাদামাটা, সহজ.. তবে সুন্দর! হাসি
কিপিটাপ। চলুক

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

গল্পের নায়কের রিসবোধ অতি উচ্চমর্গের।গল্পটাতে হুমায়ুন হুমায়ুন একটা গন্ধ পেলাম।আশা করি বাকী অংশে সেই ছায়াটুকু পেরিয়ে যাবে।পরেরটার অপেক্ষায় থাকলাম।

মাসুদ সজীব

শিশিরকণা এর ছবি

প্রাক কথন পেয়ে খুশি হলাম। চলুক! (‌Y)

~!~ আমি তাকদুম তাকদুম বাজাই বাংলাদেশের ঢোল ~!~

জোহরা ফেরদৌসী এর ছবি

চলুক

পড়ছি। চলুক। লেখায় পাঁচ তারা।

অনুচ্ছেদ এর মাঝখানে এন্টার চাপুন। আমার মত বুড়ো মানুষদের পড়তে আরাম হবে হাসি

__________________________________________
জয় হোক মানবতার ।। জয় হোক জাগ্রত জনতার

আশফাক আহমেদ এর ছবি

ওকে, জোহরাপু

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

আশফাক আহমেদ এর ছবি

যারা আগে মন্তব্য করেছেন এবং আবারও করলেন আর যারা নতুন মন্তব্য করলেন----সবাইকে ধন্যবাদ

-------------------------------------------------

ক্লাশভর্তি উজ্জ্বল সন্তান, ওরা জুড়ে দেবে ফুলস্কেফ সমস্ত কাগজ !
আমি বাজে ছেলে, আমি লাষ্ট বেঞ্চি, আমি পারবো না !
আমার হবে না, আমি বুঝে গেছি, আমি সত্যি মূর্খ, আকাঠ !

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার লেখা অত্যন্ত শক্তিশালী।
- একলহমা

তমসা এর ছবি

এতো ঝরঝরে!! খুব ভাল লাগছে পড়তে। হুমায়ূনের গন্ধ আছে কেউ বলে যদি তাতে ক্ষতি কি? সেই অপূর্ব টানটান গদ্য মিস করি যে সবসময়।

ফাহিম এর ছবি

ঝরঝরে লেখা! হুমায়ূন আহমেদের ছায়া প্রবল। ভালো লেগেছে।

=======================
কোথাও হরিণ আজ হতেছে শিকার;

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

ভাল লাগল আপনার লেখা। পাঁচতারা।

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

অতিথি লেখক এর ছবি

কোথায় যেনো হারিয়ে গিয়েছিলাম আপনার লেখা পড়তে পড়তে- সহজ সরল ভাষায় অসাধারণ কাব্য।

-নিয়াজ

Zahir Raihan এর ছবি

১০ তারা

বন্দনা এর ছবি

লেখা এত ঝরঝরে, লম্বা হওয়া সত্তে ও টানা পড়ে গেলাম । মাঝের কিছু কিছু লাইন পড়ে বেশ মজা ও পেলাম।

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

অগোছালো ধারাবাহিক ভাল লেগেছে। চলুক

সাত্যকি এর ছবি

সুন্দর হইসে রে ! হাসি

guest_writer এর ছবি

আশফাক ভাই, মন খারাপ নাকি?
কোন কমেন্টের রিপ্লাই নাই কেন?
জব্বর লেখা হইসে। খুব ঝরঝরে। পড়তে আরাম লাগে।
তৃতীয় পর্বের অপেক্ষায় রইলাম। চলুক

----------------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

আমি জানি না এর ছবি

আপনার বাবাকে নিয়ে আরও লিখুন। ভালো লাগল।

আমি জানি না

সাকিন উল আলম ইভান  এর ছবি

উপরে ট্যাগ টা আবার দেখে নিলাম । বাস্তব নাতো । ব্যাপার টা চিন্তা করেই মন টা খারাপ হয়ে গেলো।

বাস্তবতার সাথে কেমন যেন মিলিয়ে গেলো হুট করেই ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।