“সঙবাদ” ১

বাবুবাংলা এর ছবি
লিখেছেন বাবুবাংলা (তারিখ: শুক্র, ০৬/০৮/২০১০ - ১০:২৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

খবরঃ জাতীয় সংগীতকে মোবাইল ফোনে রিং টোন হিসেবে এবং তা বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করাকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দিয়েছেন হাইকোর্ট। (প্রথম আলো)

বুঝলাম আইনের ভিত্তিতেই এই আদেশ। কিন্তু রিট মামলা যে দায়ের করলো তার প্রাণে কি গান নাই? সঙ্গীত ভালোবাসার জিনিস। দেশপ্রেমও ভালোবাসার জিনিস। ভালোবেসে তা আমি আমার ফোনে ব্যবহার করলে সমস্যা কি? কিন্তু সে রকম আইনী শ্রদ্ধা দেখাতে হলে তো ফেসবুকের অনেকের প্রোফাইল ফটোতে রাখা জাতীয় পতাকার ছবিও নিষিদ্ধ করে দিতে হয়। সম্ভ্রম ও শ্রদ্ধা দেখিয়ে দুরত্ব বজায় রেখে চলা আর ভালোবেসে কাছে টেনে নেয়ার মধ্যে একটিকে বেছে নিতে বললে আমি ভালোবেসে কাছেই টেনে নিতে চাইবো। পাড়ার মুরব্বী খালাম্মাদের আমি সন্মান দেখিয়ে শ্রদ্ধাবনত চিত্তে দুরত্ব বজায় রেখে চলি। আর পাশের বাড়ীর সুন্দরী প্রেয়সীকে কাছে টেনে নিয়ে চুমু খাই। তুমি খাল্লামা হতে চাও নাকি প্রেয়সী?

খবরঃ দেশের সর্বত্র জামায়াতের নতুন সদস্য সংগ্রহ কমে গেছে, শুধু পাবনায় কমেনি। (প্রথম আলো)
হেমায়েতপুর গারদ তো পাবনায়। তাইলে আর সদস্য সংগ্রহ কমবে কেমনে? হেমায়েতপুরের গারদে নিশ্চয়ই এবার তুমুল মাত্রায় জামায়াতের সদস্য সংগ্রহ অভিযান চলেছে। দৃশ্যকল্পটা হতে পারে এরকমঃ
জামায়াত কর্মীঃ ও মতি মিয়া, তুমি কি জামায়াতের সদস্য হইতে চাও?
মতি পাগলাঃ অবশ্যই হইতে চাই। গারদ থেইকা বার হইয়া আমি ইনশাল্লাহ মাওলানা মনি সিং-এর নেতৃত্বে দেশে ইসলামী বিপ্লব করবো।
জামায়াত কর্মীঃ আলহাদুলিল্লাহ, তুমি হইলা সদস্য নম্বর ৪২০।

খবরঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগের জনৈকা শিক্ষিকাকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি ও বিভাগীয় সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। (প্রথম আলো)

সহযোগী অধ্যাপক সাহেব বিভাগীয় সভাপতি হইয়া যাবার পর আর নিশ্চয়ই ক্লাস নিতে পারতেছিলেন না। ছাত্রীর অভাবে তাই ধরছিলেন শিক্ষিকারে। এখন জুনিয়র সহকারী অধ্যাপক হিসাবে জুনিয়র ক্লাসের কচি কচি ছাত্র-ছাত্রীদের শিক্ষকতা করবেন। ধর্ষকের জন্য তো এটা প্রমোশন! আসল প্রশ্ন হলোঃ এই অধ্যাপক মিয়ার চাকরি টিকলো কেমনে? নাকি ১০০ ধর্ষণের মানিক মিয়ার সেঞ্চুরী রেকর্ড দেখার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে উনার যৌন নিপীড়ন এখন “ও কিছু নয়, সবে তো মাত্র রানের খাতা খুললো”!

খবরঃ নিঊইয়র্কের এক বাংলাদেশী সম্মেলনে সাবেক যাযাদি সম্পাদক শফিক রেহমান বলেছেন, “বাংলাদেশের ডিবি পুলিশ পুলিশী হেফাজতে আমার গোপনাঙ্গ দেখতে চেয়েছিল। পুরুষ পুলিশ পুরুষের গোপনাঙ্গ দেখে কী আনন্দ পায়?” (সাপ্তাহিক আজকাল)

বড়ই যৌক্তিক প্রশ্ন। স্মৃতিভ্রষ্ট হবার কারনে হয়তো শফিক রেহমানের আজ এই প্রশ্নের উত্তর জানা নেই। কিন্তু এর উত্তর বোধহয় আমি জানি। বছর পনের আগের চালু থাকা এক গল্পের কথা মনে করা দরকার। গল্পটা এমনঃ এক আরব শেখ তাঁর বিলাস বহুল প্রমোদ ভবনে সুন্দরী বিলেতি যুবতীকে নিয়ে মৌজ়মাস্তিতে ব্যস্ত। মৌজ-মাস্তির এক একান্ত ঘনিষ্ট পর্যায়ে আরব শেখের গোপনাঙ্গের বিশাল আকৃতি দেখে বিমোহি্ত বিলেতি ললনা বিস্মিত কন্ঠে বললো, “ওয়াও”।আরব শেখ তখন যুবতীর আরবী গ্রামাটিকেল মিসটেক সংশোধন করে দিয়ে বললেন, “ আকৃতিতে এটা ওয়াও নয়, এটা আলিফ”। যতদুর মনে পড়ে, এই গল্প বাজারে এনেছিলেন শফিক রেহমান নিজেই তার যাযাদি কলামে। শফিক সাহেব হয়তো ভুলে গেছেন, কিন্তু ডিবি পুলিশ এখনো ভুলনি। তারা হয়তো একটু চেক করে দেখতে চেয়েছিল শফিক সাহেবেরটা ওয়াও না আলিফ।


মন্তব্য

অনিন্দ্য রহমান এর ছবি

সিরাম ... দেঁতো হাসি
___________________________
Any day now, any day now,
I shall be released.


রাষ্ট্রায়াত্ত শিল্পের পূর্ণ বিকাশ ঘটুক

হিমু এর ছবি

শফিক রেহমান আর হেল কাফীরে একত্রে হেমায়েতপুরের একটা সেলে রাখা গেলে ভালৈতো।



বুকে BOOK রেখে বন্ধু চলো আজ যাবো বরাহশিকারে মোরা ধার ধার ধার দিও বল্লমে ♪♫

সচল জাহিদ এর ছবি

সঙ্গীত ভালোবাসার জিনিস। দেশপ্রেমও ভালোবাসার জিনিস। ভালোবেসে তা আমি আমার ফোনে ব্যবহার করলে সমস্যা কি? কিন্তু সে রকম আইনী শ্রদ্ধা দেখাতে হলে তো ফেসবুকের অনেকের প্রোফাইল ফটোতে রাখা জাতীয় পতাকার ছবিও নিষিদ্ধ করে দিতে হয়।

বিষয়টা বোধকরি জাতীয় সংগীতের বানিজ্যিক ব্যবহারের বিরুদ্ধে। জাতীয় সংগীত আপনি, আমি বা অন্য যে কেউ মোবাইল বা অন্য কোথাও শুনলে সমস্যা নেই কিন্তু মোবাইল কোম্পানিগুলো এটাকে নিয়ে ব্যবসা করে মুনাফা কুড়াচ্ছে সমস্যা সেইখানে এবং নিষেধাজ্ঞাও সেইখানে। মোবাইল কোম্পানীগুলো বিনামূল্যে রিংটোন হিসেবে সবাইকে দিলে কোন সমস্যা থাকায় কথা নয়। রায়ের সারমর্ম বোধকরি সেটাই বলে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

বাবুবাংলা এর ছবি

কোন কিছু নিয়ে ব্যবসা করা বা মুনাফা করাকে আমরা নেতিবাচক ভাবে দেখবো কেন? জাতীয় পতাকা বানিয়ে ব্যবসা করে মানুষ মুনাফা করে না?
জাতীয় সংগীত গেয়ে ক্যাসেট বা সিডি বানিয়ে তা বিক্রি মানুষ বিক্রি করে না?
শুধু তাই না, জাতীয় পতাকার আদলে তৈরী ফুতুয়া বা টিশার্ট নিয়ে ব্যবসা হয় না? দেশাত্ববোধক পন্য বিক্রি করে কেউ যদি মুনাফা করতে পারে-সে তো এক অর্থে আমাদের দেশপ্রেমেরই স্বাক্ষর। এসব পন্য যদি আমাদের দেশপ্রেমের অনুভুতির প্রতি আবেদন সৃস্টি করতে, তবেই সে পন্যের বাজার তৈরী হবে।
জাতীয় সঙ্গীতের রিংটোন দেশের সর্বোচ্চ বিক্রিত রিংটোন—এটা যদি একটা খবর হয়, তবে আমরা কি গর্বিত হব না? আইন খাটিয়ে এসব সবই বন্ধ করে দেয়া যায়। তবে আমার মনে হয় তার চেয়ে জাতীয় পতাকা বা জাতীয় সঙ্গীতকে আমাদের জীবনে মিলে মিশে যেতে দেয়াটই কাম্য। দেশপ্রেম শুধু যুদ্ধের ময়দানের বা রাজপথের জিনিস না। দেশপ্রেম মিশে থাকা উচিত আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সব কিছুতে।

জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অতিথি লেখক এর ছবি

দেশপ্রেম অবশ্যই আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে মিশে থাকা উচিত কিন্তু জাতীয় সংগীতের আলাদা একটা সম্মান আছে। এজন্যই জাতীয় সংগীত বাজলে দাঁড়িয়ে সম্মান জানাতে হয়। যেখানে সেখানে মোবাইল রিংটোন হিসেবে এটা বাজতে থাকলে এতে যদিও আমাদের দেশপ্রেমের প্রকাশ পায় (!) কিন্তু জাতীয় সংগীতের মর্যাদাটা আর থাকে না। আমার কাছে জাতীয় সংগীত একটা গর্বের ব্যাপার, এটাকে এভাবে ব্যাবহৃত হতে দেখতে ভালো লাগে না। তবে সবারই নিজের নিজের মতামত থাকতে পারে।

পাগল মন

সচল জাহিদ এর ছবি

আপনার যুক্তির সাথে দ্বিমত করছিনা বা করার অবকাশ নেই। আমি শুধু আদালত কতৃক রায়ের সম্ভাব্য ব্যখ্যাটি দিয়েছি। আপনার লেখাতে এই বিষয়টা অগোচরে রয়ে গিয়েছে।

----------------------------------------------------------------------------
এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি
নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।


এ বিশ্বকে এ শিশুর বাসযোগ্য করে যাব আমি, নবজাতকের কাছে এ আমার দৃঢ় অঙ্গীকার।
ব্যক্তিগত ওয়েবসাইট
কৃতজ্ঞতা স্বীকারঃ অভ্র।

বাবুবাংলা এর ছবি

আপনার বক্তব্য বুঝতে পেরেছি, জাহিদ ভাই।
কাল টিভিতে রিটকারীর আইনজীবী যে ব্যাখ্যা দিলেন তার পুরোটাই ছিল জাতীয় সঙ্গীত ব্যবহার বিষয়ক। তার ভাষ্য ছিলঃ আইনানুযায়ী যত্রতত্র জাতীয় পতাকা প্রদর্শন বা জাতীয় সঙ্গীত ব্যবহার করা যায়না। এর জন্য একটা ভাবগম্ভীর পরিবেশ দরকার। এই আইনটা ব্যবহার করেই ঊনি মামলা জিতে নিয়েছেন। সেটাই আমি বলতে চেয়েছিলাম। ভাবগম্ভীর পরিবেশে শ্রদ্ধানিবেদন হয়, ভাবগম্ভীর পরিবেশে প্রেম হয় না। অবশ্য আমি পাড়ার খালাম্মার প্রেমে পড়লে একটা ভাবগম্ভীর পরিবেশে প্রেমের সম্ভাবনা তৈরী হলেও হতে পারে। দুর্ভাগ্যবশতঃ সেই অভিজ্ঞতা আমার এখনো হয় নাই। ঃ)

জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

সুরঞ্জনা এর ছবি

তুমি খাল্লামা হতে চাও নাকি প্রেয়সী?

এটা কি প্রেয়সীর প্রতি প্রশ্ন, না কি প্রেয়সীকে শাঁসানো??? চিন্তিত
............................................................................................
স্বপ্ন আমার জোনাকি
দীপ্ত প্রাণের মণিকা,
স্তব্ধ আঁধার নিশীথে
উড়িছে আলোর কণিকা।।

............................................................................................
এক পথে যারা চলিবে তাহারা
সকলেরে নিক্‌ চিনে।

শেখ নজরুল এর ছবি

তারা হয়তো একটু চেক করে দেখতে চেয়েছিল শফিক সাহেবেরটা ওয়াও না আলিফ।

মজারু হলেও প্রশ্নটা গুরুত্বপূর্ণ
শেখ নজরুল

শেখ নজরুল

ইশতিয়াক এর ছবি

চার নম্বর খবর টা একটু বেশি হয়ে গেছে !! এটা ব্লগে না দেয়াই ভালো।

আর জাহিদ sir র কথার সাথে একমত।

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

ধর্ষকের জন্য তো এটা প্রমোশন! আসল প্রশ্ন হলোঃ এই অধ্যাপক মিয়ার চাকরি টিকলো কেমনে? নাকি ১০০ ধর্ষণের মানিক মিয়ার সেঞ্চুরী রেকর্ড দেখার পর জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে উনার যৌন নিপীড়ন এখন “ও কিছু নয়, সবে তো মাত্র রানের খাতা খুললো”!
সরকারী দলের লোক এরা দুজনেই।

অতিথি লেখক এর ছবি

সিনেমা হলে শো শুরু হওয়ার আগে জাতীয় পতাকা দেখনো এবং জাতীয় সংগীত বাজানোটা নিয়ম। কিন্তু কোনও সিনেমা হলই জাতীয় সংগীতের প্রথম ৩-৪ লাইন বাজিয়ে আর বাজায় না। ব্যাটাগুলারে প্যাঁদানী দেয়া ফরজ হয়ে গেছে।

তবে একটা কথাঃ সিনেমা হলে ব্লু ফিল্ম দেখানোর আগেও আংশিক জাতীয় সংগীত বাজানো হয়। এটা কি না হলেই নয়?

রাতঃস্মরণীয়

অতিথি লেখক এর ছবি

শফিক রেহমান প্রসঙ্গঃ

মনে করে দেখেন শফিক রেহমান ভালো একটা দাবড়ানি খেয়েছিলেন যখন তার দিনের পর দিনে মঈন ক্যাপ্টেন জিশানের বউ লতার সাথে সেক্স করেছিলো। শফিক রেহমানকে গোয়েন্দা পুলিশের যে অফিসার জিজ্ঞাসাবাদ করছিলেন তিনি মনে হয় সেই ঘটনা জানতেন। তাই তিনি শফিক সাহেবের 'জিনিস' দেখতে চেয়েছিলেন। হাজার হোক শফিক সাহেব আর মঈন তো ভিন্ন ভিন্ন কিছু না। তাই অফিসার সেই বিখ্যাত 'জিনিস' দেখার লোভ সামলাতে পারেননি।

রাতঃস্মরণীয়

দ্রোহী এর ছবি

ডিবি পুলিশের মতো আমারও খায়েশ ছিল শফিক চাচার জিনিস ছোট না বড় তা জানার।


কি মাঝি, ডরাইলা?

সালেহীন [অতিথি] এর ছবি

খবরঃ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে একই বিভাগের জনৈকা শিক্ষিকাকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের এক সহযোগী অধ্যাপককে সহকারী অধ্যাপক পদে পদাবনতি ও বিভাগীয় সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। (প্রথম আলো)

আহ! কি আনন্দ !!!
আন্দোলনরত শিক্ষক ছাত্রগণ অবশ্য এটি প্রত্যখ্যান করেছ বলেই শুনেছি।আমার ক্ষুদ্র জ্ঞানে এটি বাংলাদেশের নারী সমাজের প্রতি অত্যন্ত অবমাননাকর এং প্রচলিত আইনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।এটি বিশ্ববিদ্যালয়ের অভ্যন্তরীণ কোন শৃংখলা ভংগকারি বিষয় নয়।এখানে নারী নির্যাতনের বিষয় জড়িত রয়েছে।কোন প্রতিষ্ঠান তা সে যত স্বায়ত্ত্বশাসিত হোক না কেন কর্তৃপক্ষকে অবশ্যই এটিকে নিকটস্থ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতনের অভি্যোগ দায়ের করতে হবে।উক্ত থানার ওসি এ ব্যাপারে তদন্ত করে এটিকে মামলা হিসেবে গ্রহণ করতে পারবেন।যেহেতু বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ উক্ত শিক্ষকের বিরুদ্ধে অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে,বিশ্ব বিদ্যালয় ছাত্র ছাত্রী গণের অভিবাবক হিসেবেও এই মামলা করতে পারে।অভিবাবকগন এই বিশ্ববিদ্যালয় এর কর্তৃপক্ষের উপর বিশ্বাস স্থাপন করে তাদের ছেলেমেয়েকে এখানে উচ্চ শিক্ষার্থে প্রেরণ করেছেন।বিশ্ববিদ্যালয় এখানে তার নৈতিক দ্বায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হয়েছে।এর দ্বায়িত্ব শুধুমাত্র বিভাগীয় শাস্তির মধ্য দিয়ে শেষ হতে পারেনা। তাছাড়া এটি নারী ও শিশু নির্যাতনের কেস।এই কেসের ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় সিন্ডিকেট পদাবনতির শাস্তি দিতে পারেনা।ফৌজদারি আইনে বিচার্য্য মামলার ব্যাপারে শেষ সিদ্ধান্ত নেবে কোর্ট।বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের উচিত হবে, উক্ত শিক্ষককে সাময়িকভাবে বরখাস্ত করে, তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া।
জাহাঙ্গীর বিশ্ববিদ্যালয় কি ছাগলনাইয়া গ্রাম হয়ে গেছে নাকি,যে মাতব্বর এসে ধর্ষণের ঘটনার মীমাংসা করে দেবে ? এতো বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষে্র ফতোয়া জারী করার মত হয়ে গেল না ?

এটি কি সম্ভব এই বিশ্ববিভ্যালয়ের বুকে বসে এতো বড় আইনভংগ করা ? আমরা কি কোন সভ্য জগতে বসবাস করছি ? আইন ও শালিস কেন্দ্রের কোন প্রতিক্রিয়া চোখে পড়েনি এত বড় একটি ব্যত্যয় এর পরেও।

আমি মাঝে মাঝে ভেবে অবাক হই, যে দেশের ছাত্ররা ভাষার জন্য রক্ত দিয়েছে, মুক্তিযুদ্ধ করেছে,স্বাধীন দেশে স্বৈরাচার বিরোধী আন্দোলনে নেতৃ্ত্ব দিয়েছে,সামরিক বাহিনীর ক্যামপ ক্যাম্পাস থেকে উচ্ছেদ করেছে তারা কিভাবে বছরের পর বছর কিছু শিক্ষকের এই লালসাকে চোখের সামনে দেখে চুপ করে থেকেছে।নিজের সহপাঠিনীদের অসহায়ত্বে চোখ বন্ধ করে থেকেছে।হয়তো নিজেরাও স্বপ্নে বিভোর থেকেছে, আমিও একদিন শিক্ষক হবো।যে সমস্ত শিক্ষক এই ধরনের অনাচারে লিপ্ত থেকেছেন তারা একটি বলয়ে চলাফেরা করেন।যে বলয়ের সদস্য না হলে প্রথম শ্রেণী পাওয়া এবং শিক্ষক হওয়া সম্ভব হয়না। নারীর প্রতি নির্যাতনে পুরুষ এখানে একাট্টা।নাহলে ব্যাপারটি সম্ভব হত না।

শাহীন(ছদ্দ নাম)বৃটিশ একটা নামী কোম্পানীতে বিবিএ শেষ করার পরপরই যোগ দিয়েছিল।এম বি এ পড়াটাও চলছিল পাশাপাশি। মিষ্টি মেয়ে বিপাশা(ছদ্দ নাম)তখনো বিবিএ পড়ছে, শাহীনের স্ত্রী,একই ইউনিতে।বাবার চল্লিশায় শিক্ষক বাসায় দাওয়াত করে সব অতিথির চলে যাওয়ার পরও মেয়েদেরকে উনি যেতে দেননি বিভিন্ন অজুহাতে।বিপাশা উঠে যেতে চাইলে অন্য সব মেয়ের সামনেই ঘাড় ধরে বসিয়ে দেন তিনি।বিপাশা বসে থাকলেও এক ফাঁকে শাহীনকে ফোন করে ব্যপারটি জানায়।অফিসে কর্মরত অবস্থায় একটি ফেক ইমেইল থেকে উক্ত শিক্ষককে একটি হুমকি দিয়ে মেইল পাঠায়।আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সহায়তায় সনাক্ত করা হলে শাহীন সবকিছু স্বীকার করে নেয়।তাকে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয় এবং তার কোম্পানীকে জানানো হয়।তাকে উক্ত কোম্পানীটি অফিসিয়াল কম্পিউটার ব্যবহার করে এই হুমকি দেয়া মেইল পাঠানোর জন্য চাকুরীচ্যুত করেছে।তার এম বি এ শেষ করার আর মাত্র দু'টি কোর্স বাকী ছিল।এখানে উল্লেখ করা যায়, বাংলাদেশে তখন সাইবার ক্রাইম সংক্রান্ত কোন আইন ছিলনা।এনিওয়ে, ছেলেটি বর্তমানে একটি ভাল দেশী কোম্পানীতে চাকরি করছে।উক্ত শিক্ষকের ভূত এখনো তার পিছু ছাড়েনি।কিছুদিন আগে উক্ত শিক্ষককে আবার কেউ একজন ইমেইলে থ্রেট দিইয়েছিল।উনার সন্দেহ এটি শাহীন।কাজেই বেশ কিছুদিন উক্ত ছেলেটি একই সাথে পুলিশের তিনটি অফিসে দৌড়াদৌড়ি করল।

উক্ত শিক্ষক যখন দ্বিতীয়বার এই ইমেইল থ্রেট এর অভিযোগ নিয়ে বড় একটি চ্যানেল ধরে আসলেন,তখন ডেস্কে যে অফিসারকে এই দ্বায়িত্ব দেয়া হয়,উনি শাহীনকে ডেকে তার কাছে পুরো ঘটনা শুনেন।প্রথম ইমেইল থ্রেট এর ব্যাপারটি সে যথারীতি স্বীকার করে।দ্বিতীয়টির ব্যাপার অস্বীকার করে।যাই হোক, তাদের পুরো গল্প শুনতে গিয়ে কেঁচো খুঁড়তে বেরিয়ে আসে সাপ। সেই সময়ের উক্ত ফ্যাকাল্টির গ্রুপ মেইলগুলি থেকে উক্ত শিক্ষকের ব্যাপারে অনেক অভিযোগ বের হয়ে আসে।টেলিফোনে অনেকে অনেক কথা বললেও একটি ছাত্র ছাত্রীকে পাওয়া যায়নি যে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক নামধারী ঐ ক্ষমতাবান লোকটির ব্যাপা্রে প্রকাশ্যে মুখ খুলবে।
বিশ্ববিদ্যালয় পড়তে আসা ছাত্রীদের অনেক করুন কাহিনী আছে।অনেক রাতে ঘুম ভেঙ্গে যখন মনে পড়ে,শিক্ষকের অফিসে গেলে কি সুন্দর ইজি ভয়েস এ টেবিলের উপর উঠে বসতে বলতে পারে শিক্ষক,বাসায় গিয়েই কনসাল্ট করতে হবে তারপর ইউনিভার্সিটি ক্যাম্পাসের স্যারের বাসায় গিয়ে দেখা যায় ভাবী বাচ্চা সবাই ওয়াটার কিংডমে, মাথাব্যথা তাই স্যার দয়া করে থেকে গেছেন, থেকে যাবেন যে তা তিনি আগেই জানতেন।অনেক চালাকচতুর মেয়ে আছে, যারা জানে কিভাবে বাঁচতে হয়,টাকে হাত বুলিয়ে কাজ আদায় করে চামড়া বাঁচাতে হয়, কেউ আবার পা হড়কে পড়েছে, গড্ডালিকা প্রবাহে গা ভাসাতে গিয়ে চোখের সামনের দেখা সর্ষে ফুলটাকে সরাতে বোকা মেয়েটা এখন স্যারকেই সম্বল ভাবছে,কেল্লাবাড়ী প্রাইমারী স্কুলের হেডমাষ্টারের মেয়ে নীতার ভাল রেজাল্টের উপর নির্ভর করছে অনেক কিছু,আমাদের মিষ্টি মেয়েটা কেমন করে যেন হঠাৎ ক্যারিয়ারিষ্ট হয়ে গেল, কোন নীতি নৈতিকতার ধার ধারছেনা,আসলে ওতো নিজের পথ নিজেই বেছে নিয়েছে সেই ইউনিতে পড়ার সময় থেকে, আমরা তো তাকে রক্ষার কোন চেষ্টা করিনি।

আমরা চরম নৈতিকতাহীন একটা সমাজে সচলায়তন নামক একটা ভার্চুয়াল কাভার নিয়ে বসে বসে আঁখ চিবাচ্ছি না তো ?

প্রকৃতিপ্রেমিক এর ছবি

আপনার পুরো মন্তব্য পড়ে শেষের লাইনের মানে বুঝতে ব্যর্থ হলাম।

দ্রোহী এর ছবি

সালেহীন ভাই বাংলা ব্লগ জগতে বহু ব্যবহারে জীর্ণ সেই প্রশ্নটাই আবার করেছেন। প্রশ্নটা হচ্ছে: ব্লগে লিখে কী হয়?


কি মাঝি, ডরাইলা?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।