মা ভেবেছিলেন সেবার তার মেয়ে হবে। জামা বানানো হয়েছিলো, সবাইকে তিনি আগাম বলে রেখেছিলেন তার মেয়ের কথা। কিন্তু সেই শীতে তার মেয়ে হয়নি। ধুন্দুমার বাঁধিয়ে, জীবন ও মৃত্যুর মাঝে তিনি এক ছেলেকে জন্ম দিয়েছিলেন। তার শারীরিক সকল সক্ষমতা কেড়ে নিয়েছিলো সেই শিশু। সেই থেকে সন্তান জন্মের ক্ষত ধারণ করতে হচ্ছে তাকে। সেই ধুন্দুমার লাগিয়ে, মাকে জন্মের মতো অসুখি করে পৃথিবীতে আসা শিশুটাই আমি।
গতক...
বাবাইর স্কুল ছুটির দশ মিনিট পর আমি গেটের ভেতর যাই। এর আগে গেলে সে রাগ করে, কারণ আমি গেলে তার খেলা হয় না। আজও সেইমতোই গেলাম। ছোট্ট কঙক্রিটের উঠোনে তারে খুজি। দৌড়াদৌড়িতে নাই। চোখ মেলে মেলে ধরি শেষে। এককোনায় দাড়িয়ে আছে। আমি এগিয়ে যাই। অন্যদিন আমাকে দেখেই ছোট্ট শরীরটা উড়িয়ে নিয়ে আসে। লাফ দিয়ে কোলে চড়ে। বাবা বলে চিৎকার করে। আজ সেসব কেছুই নাই! আমি বুঝি কিছু একটা হয়েছে। হাটুমুড়ে বসি সাম...
বৃষ্টির মতো বিনাশী বালিকা আজ ছুটি নিয়েছে। আজ রোদের দিন
আজ কৃষ্ণচুড়া আগুন ঢেলেছে এই পথে, প্রান্তরে, কংক্রিটের
উঠোনে। আজ জারুল মেলেছে পেখম গ্রামময় প্রান্তরে।
মন ভার করেছিলো, ...ইশ্বর, তুমি ছিলে বলে লাল হলো
কৃষ্ণচুড়া, জারুল মমতায় মেলেছে চোখ, সে হেসেছে
কৃষ্ণ হে, কোথায় তুমি? বাঁশি কি তৈরি?
লীলাবতী চোখ তুলেছে...
মা গুনে গুনে টাকা দিতো। ডানোর কৌটো থেকে বের হতো সেই টাকা। সাত টাকার ডাল, এক টাকার কাচা মরিচ... এভাবে টাকার অংক ধরে ধরে বাজারে পাঠাতো আমাকে। ততদিনে আমি জেনে গেছি, এভাবে হিসেব করেই বাজারে যেতে হয় আমাদের। এভাবে হিসাব করে বাজার করা যায় না তবু সেটা মেনে নিতে হবে। এও জেনেছি, সাত টাকায় এক পোয়া ডাল আর তেরো টাকায় আধা সের, এক টাকা বাচানোর এই হিসাবে আমরা যেতে পারবো না। আমাদেরকে রোজ আট আনা বেশি দি...
একেকটা রাত মৃত্যুর মতো দীর্ঘ হয়ে আসে...
মানুষ মূলত মিথ্যুক জেনেও ভালোবাসা বিলায় প্রকৃতি।
এইসব প্রেম ও অপ্রেমে, করুণা ও কার্পণ্যে ভেজার সময় কোথায় বলো?
প্রতারিত আলবাব অভিমান ভুলেছে, বিশ্বাস হারিয়েছে মানুষে
সরল রেখার জীবন, এইবার তবে ছুটি নাও
বাবার একটা আলাদা রুম ছিলো। দাদাজান যখন বাড়ি বানান, বাবা তখন যুবক। ছেলের জন্যে আলাদা একটা রুম বানিয়ে দিয়েছিলেন তিনি। সেই ঘর ঠাসা ছিলো নানান রকমের বই এ। বাবা সেই ঘরে ডুব দিলেন। বড়দা এক রাতে ট্রেন ধরার জন্যে যখন বাড়ি ছাড়ছিলো, তার আগে বাবার সাথে দেখা করার জন্যে গেলো সেই রুমে। বাবার সাথে কি কথা হয়েছিলো বড়দার সেটা আমরা জানি না। এই কথা শুধু মনে আছে, বড়দা বেরিয়ে এসে আর দাড়ায়নি। হন হন করে বা...
স্কুলের ইউনিফর্ম ছিলো সাদা শার্ট আর নেভি ব্লু পেন্ট। রোজ বিকেলে স্কুল থেকে ফিরেই শার্ট টা ধুয়ে দিতে হতো। সাদা শার্ট একদিনের বেশি পরা যায় না। আমার একটাই শার্ট। পরের দিন পরতে হলে আগের দিনে সেটা ধুয়ে দিতেই হয়।
সকালে, সেটা সাতসকাল ছিলো না। আবার রোদও কড়া হয়নি এমন সময়ে বাবাই আমার ঘড়িটা পরলো। বেশ দামি এই ঘড়িটা। বলাই বাহুল্য, এটা আমি কিনিনি। লিল্লাহ পেয়েছি। (এইটা কেনার মুরোদ আমার নাই।) আমি হালকা রা..রা.. করলাম। সে রুম থেকে বেরিয়ে হেডকোয়ার্টারে আশ্রয় নিলো। চিফ অব ফ্যামেলির আশ্রয়ে থেকে একটা আছাড়া মারলো। শখের ঘড়ি গেলো...
সাত সকালে উঠতে হতো আগে। শহর যারা রাঙাতো আমিও তাদের একজন ছিলাম। এখন আর সেইসব ...
. ...
সঙ্গম শেষে মানুষ মূলত ক্লান্তই হয়।
তবু প্রতিরাতে শহরে, গ্রামে, নিয়নে ও জোনাকের আলোতে
মানুষ মিলিত হয় জৈবিক উল্লাসে।
দীর্ঘ বিরতি বিরহের মতোনই কাঙাল করে, বিলাপ শেখায়।
সময় বেঁধে স্কুলের পেছনে প্রেমিকার জন্যে অপেক্ষা করা বালক জানে
ঘড়ির কাটা কতো স্থবির, কচ্ছপ। দুপুরের ছায়া লেপ্টে থাকে, দুঃসময়ের মতো।
বিকেল হতে কতক্ষণ লাগে?
আজ বিকেল হবে কখন?