তুলিরেখা এর ব্লগ

ইমা(৩)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৬/০২/২০১৫ - ৮:২৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাঁতারখেলা খেলতে খেলতে তখন আমরা দু'জনেই নদীর বেশ গভীর অংশে। রিমা আমার সামনেই। দূরের দিকে তাকিয়ে নিশ্চিন্তে এগোচ্ছে। আমি ওর একেবারে কাছে চলে যাই। তারপরে দুই হাতের দশ আঙুল বাড়িয়ে চেপে ধরতে যাই ওর গলাটা।


ইমা(২)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: রবি, ২২/০২/২০১৫ - ৩:৩৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গ্রীষ্মের ছুটিতে আমরা মানে আমি রিমা মা-বাবা আর তিন্নিমাসীরা মানে তিন্নিমাসী, অরুণমেসো আর ওদের তিনবছর বয়সী ছোট্টো মেয়ে বুবলি সবাই মিলে বেড়াতে এসেছি। তিন্নিমাসী মায়ের স্কুলের বন্ধু ছিল। মা আর তিন্নিমাসী একসঙ্গে পড়েছিল ক্লাস ফাইভ থেকে টেন অবধি।


ইমা

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৯/০২/২০১৫ - ৩:৫৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

নদীটা এখনো একইরকম আছে, চুপ করে গিয়ে দাঁড়াই ওর কাছে। অদ্ভুত সুন্দর কলধ্বনি তুলে নদীর ধারা ছুটে যাচ্ছে সমুদ্রের দিকে। স্রোতোধারা ছুঁয়ে যাচ্ছে পাড়ের পাথর, বালি, ঝুঁকে পড়া গাছের পাতা। চারিপাশের মাঠ পাহাড় গাছপালা সবই যেন ওর কাছে মুহূর্তের দেখা হওয়া বন্ধু। নিরাসক্ত ভালোবাসায় তাদের ছুঁয়ে বা না ছুঁয়ে নদী চলে যায় নিজের পথে। ও কি কারুকে মনে রাখে?


মায়াহরিণ

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: বুধ, ২১/০১/২০১৫ - ৬:৩৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঘদুপুরের ফড়িংডানা-রোদ্দুরে আস্তে আস্তে মিশে যায় তোমার জাফরানি ওড়নার রঙ। দিঘির পাশের নারকেলগাছগুলোর নিচ দিয়ে যে পথটুকু চলেছে আলোয় ছায়ায়, সেই পথের নাম ছায়াবিতান । এখন ঘুঘুর ঘুমেলা ডাকে ভরে আছে এই রাস্তা। আর একটু পরে এই পথ দিয়ে তুমি আসবে।


বাঁশি

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ১০/১১/২০১৪ - ৬:১১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এই ঘর, ওই ঘর, বাগান, উঠান, কুয়াতলার নিম হাওয়া, পুকুরঘাটের নারিকেলছায়ায় কয়েক দন্ড, এইসব ঘোরাঘুরিতেই বেলা কেটে যায়। ব্যস্ত সকাল গড়িয়ে কখন দুপুরে মিশে যায়, ঘুঘুর ডাকে নির্জন হয়ে আসে। কাজের মাঝে তখন একটুখানি বিশ্রামের নিভৃতি।


ইস্কুলবেলার গল্প(৩২)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ১১/০৮/২০১৪ - ৩:১২পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

দেখতে দেখতে লোকজনে ঘর ভরে উঠতে লাগলো, গোল করে পাকানো ডায়াগ্রামের তাড়া নিয়ে সেমিনার দিতে আসা ছাত্রছাত্রীরা, সঙ্গে তাদের গাইড শিক্ষকরা বা শিক্ষিকারা, তাছাড়া এমনি দর্শক, শ্রোতা, ছাত্রছাত্রীরাও আসছে। জাজেরাও শোনা গেল এসে গিয়েছেন, তবে তাঁরা তখন অন্য ঘরে বিশ্রাম করছেন আর টিফিন খাচ্ছেন।

অন্বেষার মুখ আরো খানিক ভয়-ভয় হয়ে গিয়েছে, আমি কিছু জোকস বলে খানিকটা হাসি হাসি করে দিলাম ওকে।


নীলাভ উড়ান

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: বুধ, ০৬/০৮/২০১৪ - ৩:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ছোট্টো সেই খাতা, প্রত্যেকটা পাতা হাতের পাতায় ধরে যায়।আর সেই কলমটি, ছিপছিপে পাতলা গাঢ় নীল রঙের কলম, গলার কাছে এক চিলতে সোনালীর ঝিকমিক।

কমলালেবুগন্ধী শীত-দুপুরের রোদে পা মেলে দিয়ে সাবধানে খুলি খাতা। পাতাগুলো জীর্ণ, পুরানো, ঝুরঝুরে। কতকাল কেটে গেল ঐ শৈশবের খেলাখেলা লেখাগুলোর পরে? কতবার সূর্যপ্রদক্ষিণ করে এলো পৃথিবী তার অন্তহীন পরিব্রজনের পথে?


জলছবির জ্যোৎস্না

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: সোম, ০৪/০৮/২০১৪ - ৪:০৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১।

রুপোলী জরির মতন ফিনফিনে জ্যোৎস্না ছড়িয়ে আছে আমার রাত্রি বাগানে, আকাশে ঝমঝম করে তারারা। ঝোপঝাড়ের ভিতর থেকে ঝিঁঝিঁদের সম্মিলিত অর্কেস্ট্রা। অদ্ভুত নেশা ধরানো এই সঙ্গীতসভা।

এমন রুপোজরি জ্যোৎস্নারাতেই চলে গিয়েছিল টিপু, শেষবারের মতন দেখা করে গিয়েছিল এইরকম এক রাতেই। জ্যোৎস্নারাতে বাগানে বসে থাকলেই টিপুর কথা মনে পড়ে।


ইস্কুলবেলার গল্প(৩১)

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: শুক্র, ২৫/০৭/২০১৪ - ৪:০০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

ক্লাস এইটে বদলি হয়ে বড় শহর থেকে একজন এসে আমাদের স্কুলে ভর্তি হলো। চন্দ্রাণী চট্টরাজ। খুব নামডাক তার, পড়াশোনায় নাকি দারুণ সে। বড় শহরের পালিশ তার, সবাই বলতে লাগলো, আমাদের মতন গাঁ-মফস্বলের মেয়েদের সে তুড়ি মেরে হারিয়ে দেবে। আমাদের সেকশানে এসে বিশেষ করে আমাদের সেই ক্লাস ফাইভ থেকে ব্যতিক্রমহীন ভাবে ফার্স্ট হয়ে আসা অন্বেষাকে কায়দা করে শুনিয়ে যেতে লাগলো অন্য সেকশনের মেয়েরা। চন্দ্রাণী বদলি হয়ে ভর্তি হয়েছিল


ক্ষমা নামের সেই নদীটি

তুলিরেখা এর ছবি
লিখেছেন তুলিরেখা (তারিখ: মঙ্গল, ০১/০৭/২০১৪ - ৩:০৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার ছোট্টো নদীটা হারিয়ে গিয়েছিল। ওর নাম ছিল ক্ষমা, আমার পাথরঘরের কাছ দিয়ে কুলকুল করে বয়ে যেত ওর চঞ্চল ধারা। ও ছিল ছোট্টোবেলার প্রিয় খেলার সাথীর মতন, স্বচ্ছ, অনাবিল, যার মধ্যে নিবিড় শান্তি আর আনন্দ, যার মধ্যে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যা্য, যার কাছে সব কথা বলা যায়। মধ্যগ্রীষ্মের প্রচন্ড বালিঝড়ে একদিন নদীটা নেই হয়ে গেল ।