পরিবর্তনঃ পরাজিত সৈনিকের মহান বক্তৃতা

জিজ্ঞাসু এর ছবি
লিখেছেন জিজ্ঞাসু (তারিখ: বুধ, ০৫/১১/২০০৮ - ১১:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমেরিকা ইতিহাসে আরেকটি নতুন অধ্যায় সৃষ্টি করল। ইতিহাসের সর্বপ্রথম কালো আমেরিকান প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হল গত রাতে।

এটা এক বিশাল বিজয়। নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা ৫৩৮ টি ইলেক্টোরাল ভোটের মধ্যে সর্বশেষ ফলাফল অনুযায়ী ৩৪৯ পেয়েছেন এবং তার প্রতিদ্বন্দ্বী জন ম্যাককেইন পেয়েছেন ১৭৩ টি ইলেক্টোরাল ভোট।

এই খবরের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল বারাক ওবামার প্রতিদ্বন্দ্বী জন ম্যাককেইনের ভাষণ যেখানে তিনি ওবামার বিজয় মেনে নিয়েছেন এবং তাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন এবং দেশ পরিচালনায় তাকে সর্বাত্মক সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন।
তিনি তার নিজের শহর ফিনিক্সে (অ্যারিজোনা রাজ্যের রাজধানী) তার সমর্থক, প্রচারণা কর্মী ও মিডিয়ার সামনে যে ভাষণ দেন তাতে একজন বাঙলাদেশী হিসেবে আমি অভিভূত।

জন ম্যাককেইনের ভাষণ -

"ধন্যবাদ বন্ধুরা। অ্যারিজোনার এই সুন্দর সন্ধ্যায় এখানে একত্রিত হওয়ায় আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাই।
বন্ধুরা, আমরা একটা পথ পরিক্রমন শেষ করেছি। আমেরিকার জনগণ তাদের বক্তব্য স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে।
কিছুক্ষণ আগে আমি সেনেটর বারাক ওবামাকে টেলিফোন করে বিজয়ের জন্য অভিনন্দন জানিয়েছি। অভিনন্দন জানিয়েছি দেশের পরবর্তী প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ায় যে দেশকে আমরা দু'জনেই ভালবাসি।
এ ধরনের দীর্ঘ ও কঠিন প্রতিযোগিতায় সাফল্যের পেছনে তার সামর্থ ও প্রত্যয়কে আমি শ্রদ্ধা করি। তিনি লক্ষ লক্ষ আমেরিকানের মাঝে আশা জাগিয়েছেন। আমেরিকার জনগণের - যাদের এই ভুল বিশ্বাস ছিল আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের প্রভাব সামান্য তাদের - মধ্যে জেগে ওঠার স্পৃহা জাগাতে সমর্থ হয়েছেন ওবামা। তার এই অর্জনকে আমি দারুনভাবে প্রশংসা করি।

এটা একটা ঐতিহাসিক নির্বাচন। আমি সশ্রদ্ধ চিত্তে স্বীকার করছি যে এই নির্বাচন আজ রাতে কালো আমেরিকানদের জন্য গৌরব ও ভিন্নরকম গুরুত্ব বয়ে এনেছে।
আমি সর্বদা বিশ্বাস করি আমেরিকায় তাদের জন্য সুযোগ অপেক্ষা করছে যারা পরিশ্রম ও আগ্রহের সাথে সে সুযোগকে কাজে লাগাতে চায়। সেনেটর ওবামাও এ কথা বিশ্বাস করেন।
আমরা দু'জনেই স্বীকার করি আমেরিকা ইতিহাসের দীর্ঘ পথ পেরিয়ে এসেছে। অতীতের কিছু অবিচার - যা অনেক নাগরিককে তাদের পরিপূর্ণ অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে - আমাদের ইতিহাসকে কলঙ্কিত করেছে। সেই স্মৃতি আজও আমাদের আহত করে।

এই একশ' বছর আগেও প্রেসিডেন্ট রুজবেল্ট বুকার টি ওয়াশিংটনকে হোয়াইট হাউজে নিমন্ত্রণ করায় বিভিন্ন গোষ্ঠি সমালোচনা করেছে।
আজ আমেরিকা সে সময়ের নির্মম, ভয়ঙ্কর (নোংরা) গোঁড়ামি থেকে অনেক দূরে। একজন কালো আমেরিকানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হওয়া একথাই প্রমাণ করে।
বিশ্বের এই মহান আমেরিকান জাতির একজন নাগরিক হিসেবে আজ কারোই গর্বিত না হওয়ার কোন কারণ নাই।
সেনেটর বারাক ওবামা দেশের জন্য এবং তার নিজের জন্য অনেক বড় সাফল্য অজর্ন করেছেন। এজন্য আমি তার প্রশংসা করি। আজ তার নানী বেঁচে থেকে তার এই সাফল্য দেখতে পারলেন না বলে আমি তার প্রতি আন্তরিক সমবেদনা জানাই। যদিও আমি বিশ্বাস করি তিনি অন্তিম শয়ানে থেকেও ওবামাকে একজন ভালমানুষ হিসেবে গড়ার সাফল্যে গর্ববোধ করছেন।

আমাদের দু'জনের মতদ্বৈততা ও বিতর্কের মাঝে ওবামার যুক্তি শেষ পর্যন্ত প্রতিষ্ঠা পেয়েছে। তবুও অনেক মতপার্থক্য এখনও আছে, এতে কোন সন্দেহ নাই।
এখন আমাদের খুব খারাপ সময় যাচ্ছে। এই সময়ে দেশকে সঠিক পথে পরিচালনা করতে ও সমস্যা মোকাবেলা করতে ওবামাকে আমার যথাসাধ্য সহযোগিতা দানের অঙ্গিকার করছি।
আমি সকল আমেরিকান এবং আমার সমর্থকদের বলব বারাক ওবামাকে অভিনন্দন জানাতে তারা যেন আমার সাথে সামিল হন। চলুন সবাই মিলে আমরা আমাদের নতুন প্রেসিডেন্টকে আশির্বাদ জানাই এবং দেশের জন্য, ভবিষ্যত প্রজন্মের জন্য একটা শক্ত ভিত গড়তে তাকে সাহায্য করি যাতে আমরা মতভিন্নতা দূর করে দেশের উন্নয়নের জন্য, দেশের নিরাপত্তার জন্য এক হয়ে কাজ করতে পারি।

মতপার্থক্য যাই থাক আমরা সবাই আমেরিকার নাগরিক। আমি যখন বলি আমার কাছে আমেরিকার নাগরিকত্ব সর্বদাই অনেক বড় কিছু - একথা বিশ্বাস করুন।

এটা স্বাভাবিক যে আজ রাতে আমি কিছুটা আশাহত। কিন্তু কাল থেকে সব ভুলে আমাদের দেশের জন্য এক হতে হবে।
আমরা লড়েছি কিন্তু যদিও আমাদের কিছু অপূর্ণতা ছিল তার সবটুকুই আমার ব্যর্থতা। আপনারা যারা আমার নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন ও সমর্থন দিয়েছেন তাদের কোন ব্যর্থতা নেই, ছিলনা।
আমার নির্বাচনী প্রচারণায় আমার বন্ধুদের এবং দেশজুড়ে আমার সমর্থকদের প্রতি আমি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ। বন্ধুরা, আমার আশা ছিল ফলাফল আমাদের পক্ষে আসবে।

আমাদের পথ ছিল দুর্গম আর আপনাদেরও সমর্থন ও সহযোগিতার কোন কমতি ছিল না। আমি আপনাদের কাছে কতটা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ তা পরিপূর্ণভাবে প্রকাশ করতে পারছি না।
আমি আমার প্রাণপ্রিয় মা, আমার স্ত্রী সিনডি ও আমার সন্তানদের প্রতি কৃতজ্ঞ। আমি আমার পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও আমার অনেক পুরনো বন্ধু, যারা আমার এই দীর্ঘ নির্বাচনী প্রচারণায় আমাকে সমর্থন দিয়েছেন তাদের প্রতিও কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমি সবসময়ই একজন ভাগ্যবান। আপনাদের ভালবাসা ও উৎসাহ পেয়ে আমি আরও বেশি ধন্য।
আপনারা জানেন নির্বাচনী প্রচারাভিযান প্রায়শ প্রার্থীর চেয়ে প্রার্থীর পরিবারের জন্য কঠিন বিবেচিত হয়। আমার এই প্রচারাভিযানও তেমন ছিল।
সকলের এই ভালবাসার বিনিময়ে আমি আমেরিকার সামনে আরও শান্তিপূর্ণ দিনের প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি।

আমি অবশ্যই গভর্নর স্যারাহ প্যালিনের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই যিনি আমার দেখা একজন ভাল ক্যাম্পেইনার। তিনি আমাদের দলের পূনর্গঠনে এবং আমাদের চেতনাকে সংহত রাখতে এক নতুন স্বর। আমি স্যারাহ প্যালিনের স্বামী টড এবং তাদের সুন্দর বাচ্চাদেরও এই নির্বাচনী প্রচারাভিযানের নানা প্রতিকুলতার মধ্যেও তাদের সাহস ও ধৈর্য অব্যাহত রাখার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাই।
আমরা সবাই আশা করি সে আলাস্কার জন্য, রিপাবলিকান পার্টির জন্য এবং দেশের জন্য ভবিষ্যতে আরও অবদান রাখবে।
রিক ডেবিস, স্টিব শ্মিট ও মার্ক সল্টার এবং প্রত্যেক স্বেচ্ছাসেবীকে, যারা নির্বাচনী প্রচারে মাসের পর মাস অনেক কষ্ট করেছেন, ধন্যবাদ জানাই। আপনাদের ভালবাসা ও বন্ধুত্বের কাছে আজকের এই পরাজয় তুচ্ছ হয়ে যাবে।
আমি জানি না আমরা আর কী করলে এ নির্বাচন জিততে পারতাম। আমি অন্যদের কাছে এর বিচার ছেড়ে দিচ্ছি। সকল প্রার্থীই ভুল করেন এবং আমি নিশ্চিত আমিও ভুল করেছি। কিন্তু এ নিয়ে সামনের দিনগুলোতে আমার কোন আফসোস থাকবে না।

এই ক্যাম্পেইন আমার জীবনে একটা বড় সম্মান। এ জন্য আমি আমেরিকান জনগণের প্রতি ধন্যবাদ জানাই যে তারা আমাকে সে সুযোগ দিয়েছেন। এবং শেষ পর্যন্ত আমেরিকার জনগণ সেনেটর ওবামা ও আমার পুরনো বন্ধু জো বাইডেনকে এ দেশের নেতৃত্বের ভার দিয়েছেন।
একজন আমেরিকান হিসেবে আমি যদি আমার প্রায় অর্ধ শতাব্দী এ দেশের সেবা করার সুযোগকে কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ না করি তাহলে আমার আমেরিকান পরিচয়কে খাটো করা হবে।
আজ সারাদিন আমি যে দেশকে ভালবাসি সে দেশের সর্বোচ্চ পদের একজন প্রার্থী ছিলাম। আজ রাতে আমি আমার দেশের একজন সেবক হিসেবে রয়ে গেলাম। এ সুযোগ যে কারো জন্য অনেক বড় সৌভাগ্যের। আমি এজন্য অ্যারিজোনার জনগণকে ধন্যবাদ জানাই।

আজ রাতে অন্য যেকোন সময়ের চেয়ে আমি আমার দেশের জন্য অনেক ভালবাসা বোধ করছি। ভালবাসা প্রকাশ করছি আমেরিকার সকল জনগণের জন্য। তারা আমাকে সমর্থন করুন অথবা সেনেটর ওবামাকে সমর্থন করুন।
আমি আমার প্রেসিডেন্ট ও সাবেক প্রতিদ্বন্দ্বীর জন্য সফলতা প্রার্থনা করছি। সকল নাগরিকের প্রতি আমি আহ্বান জানাই যেন কেউ এই মুহূর্তে হতাশ না হন। বরং সকলকে আমাদের দেশের বিশালত্বে এবং মহত্বে বিশ্বাস করতে বলব, কারণ এখানে নিয়তিই সব নয়।
আমেরিকানরা কখনো পলায়ন করেনা। কখনো হাল ছাড়ে না।
আমরা ইতিহাসকে বিকৃত করি না। আমরা ইতিহাস তৈরি করি।
ধন্যবাদ সবাইকে।"

রিপাবলিকান প্রার্থী জন ম্যাককেইন এর বয়স ৭২। তিনি এ নির্বাচনে পরাজিত হয়ে যে বক্তব্য প্রদান করলেন তাতে তার প্রতি শ্রদ্ধা জাগে। এই বক্তৃতা শুনে আমার মনে হয়েছে আমাদের দেশে যদি একদল নির্বাচনে হেরে গেলে অপর দলকে বা এক প্রার্থী নির্বাচনে হেরে গেল অপর প্রার্থীকে এভাবে অভিনন্দন জানাতো তাহলে আমরাও পেতাম গণতন্ত্র।

ম্যাককেইনের ভাষণ


মন্তব্য

এনকিদু এর ছবি

আমাদের দেশের 'নেতা' রা কবে এই শিষ্টাচার গুলো শিখবে কে জানে মন খারাপ

-----------------------------------------
অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

অনিন্দিতা এর ছবি

আমাদের প্রত্যেক রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীদের কাছে এই অসাধারণ ভাষনের কপি বিলি করতে পারলে ভাল হতো।

শোহেইল মতাহির চৌধুরী এর ছবি

নির্বাচনী ফলাফল শেষে লাইভ এই বক্তৃতা শুনেছি।
জিজ্ঞাসুকে অনেক অনেক ধন্যবাদ বক্তৃতাটা এখানে দেয়ার জন্য।
এই বক্তৃতাটার মধ্যে প্রশংসা করার অনেক কিছুই আছে। সবচে বড় কথা ম্যাককেইন পরাজয় স্বীকারের বক্তৃতায় এসে তার আসল চারিত্রিক মহত্ত্ব দেখালেন। প্রচারণার সময় তার বক্তৃতার কৌশলটা খারাপ ছিল। নতুবা হারটা এত করুণ হতো না।
-----------------------------------------------
সচল থাকুন... ...সচল রাখুন

-----------------------------------------------
মানুষ যদি উভলিঙ্গ প্রাণী হতো, তবে তার কবিতা লেখবার দরকার হতো না

রণদীপম বসু এর ছবি

এই বক্তৃতাটা পড়ে ম্যাক কেইনের প্রতি আমার যে ব্যাখ্যাহীন শ্রদ্ধা জেগেছে, সাথে সাথে দুঃখবোধও চারিয়ে উঠছে আমাদের নেতা-নেত্রীদের প্রতি কেন এই শ্রদ্ধাবোধ প্রকাশের সুযোগ আমাদেরকে দেয়া হচ্ছে না !
ভিনদেশি এক এমেরিকানের প্রতি শ্রদ্ধায় মাথাটা নুযে আসছে, অথচ নিজেদের দিকে তাকালে ঘেন্নায় শরীরটা বিষিয়ে উঠে !
আসলেই হতভাগা জাতি আমরা। আর কতকাল যে এমন হতভাগা থাকবো !!!

-------------------------------------------
‘চিন্তারাজিকে লুকিয়ে রাখার মধ্যে কোন মাহাত্ম্য নেই।’

জিজ্ঞাসু এর ছবি

এটা পরমত সহিষ্ণুতার এক জাজ্জ্বল্য প্রমাণ। আমরা বিরোধী মত বা পথের লোককে তো সহ্যই করতে পারি না।

ওয়েস্টের কাছে বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষ কী শিখে? বিয়ার খাওয়া, পিজা-বার্গার খাওয়া। আমাদের নজরে পড়ে শুধু এখানকার vernacular সংস্কৃতির চালচলন, কথাবার্তা। ডমিনোস পিজা, কেন্টাকি চিকেন আমাদের দেশে কবেই চালান হয়েছে। কিন্তু এখানকার মানুষের ভাল জিনিসগুলো, শিক্ষিত মানুষের কথাবার্তা চালচলন ও সংস্কৃতি, রাজনীতি আমরা থোড়াই কেয়ার করি। এগুলো বাংলাদেশে চালান করা গেল না!!

রাত বারটায় যখন অপেক্ষা করছি ওবামার ভাষণের তখনই সামনে চলে এল জন ম্যাককেইন। কথা বলার ঢংঙে প্রথম বাক্য থেকেই আমার ঠিক 'তব্দা লাইগা' গেল। নেশার মত প্রত্যেকটা কথা শুনতে লাগলাম। শ্রদ্ধায় মাথা অবনত হয়ে গেল এ দেশের একজন রাজনীতিবিদের বক্তৃতা শুনে। মনে হল আমরা কবে পারব এমন ভদ্রতা দেখাতে।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভাষণ নিয়ে কিছু বলার নাই, ম্যাকু কাকুরে জাঝা ।

তবে ম্যাকু কাকু নিশ্চই তাঁর পাশে হাস্যোজ্জ্বল মোসাম্মৎ প্যালিন আক্তারকে দেখে মনে মনে তাকে ইয়ে মারছিলেন! এই মোহতারামা'র জন্যই বোধকরি ম্যাকু কাকুর আজকের অবস্থান আপনার দেয়া শিরোনামের মতোই।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

রানা মেহের এর ছবি

বক্তৃতাটা সরাসরি শুনলে কেমন লাগতো জানিনা।
তবে আপনার অনুবাদের গুনে খুব ভালো লেগেছে
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

জিজ্ঞাসু এর ছবি

এই মোহতারামা'র জন্যই বোধকরি ম্যাকু কাকুর আজকের অবস্থান

কথা সত্য। মোহতারামার অবস্থা যখন তিনি টের পেলেন তখন ম্যাককেইনের আর কিছু করার ছিল না। তানারে ব্যাকআপ দেয়া ছাড়া।

___________________
সহজ কথা যায়না বলা সহজে

শামীম এর ছবি

এটা স্বাভাবিক যে আজ রাতে আমি কিছুটা আশাহত। কিন্তু কাল থেকে সব ভুলে আমাদের দেশের জন্য এক হতে হবে।
আমরা লড়েছি কিন্তু যদিও আমাদের কিছু অপূর্ণতা ছিল তার সবটুকুই আমার ব্যর্থতা। আপনারা যারা আমার নির্বাচনী প্রচারণা করেছেন ও সমর্থন দিয়েছেন তাদের কোন ব্যর্থতা নেই, ছিলনা।

আল জাজিরা চ্যানেলে লাইভ দেখেছিলাম। আমিও মুগ্ধ হয়েছি। তবে স্বীকার করতেই হবে বারাক ওবামাও খুব ভাল বক্তা।

বক্তব্যের কোট করা অংশটুকু শুনে আমি হতভম্ব হয়েছি .... .... এ্যাত দারুন - শিষ্টাচার /দায়িত্বশীলতা /দায় স্বীকার করার মানসিকতা - আমি প্রচারণার সময় কাঁদা ছোড়াছুড়ির করার ইমেজ থেকে আন্দাজ করিনি।

ব্যক্তিগতভাবে ম্যাককেইন জয়ী হলে আমি খুশি হতাম। কারণ এনাকেই বেশি বোকা মনে হয়েছিল - আমেরিকার পতন দ্রুততর হত।

বিশ্বজুড়ে আমেরিকার ইমেজ সংকট চরমে
- মিথ্যাবাদী হিসেবে
- যুদ্ধবাজ হিসেবে
- সন্ত্রাসী হিসেবে
- রেসিস্ট হিসেবে
- সর্বাপেক্ষা ঋণগ্রস্থ হিসেবে
ইত্যাদি ইত্যাদি।

একজন কৃষ্ণাঙ্গ প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে ইমেজটা একটু ভাল হবে .... এই আর কি।
________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

________________________________
সমস্যা জীবনের অবিচ্ছেদ্য অংশ; পালিয়ে লাভ নাই।

মাহবুব লীলেন এর ছবি

আমার মনে হয় না অত আপ্লুত হবার কিছু আছে এই বক্তৃতায়
এটা একটা ফর্মালিটি এবং আগের পরাজিতদের বক্তৃতা থেকে তফাত খুবই সামান্য
(শুধু ওবামার কালো সম্পর্কিত অংশটাই নতুন দেখতে পাচ্ছি)

০২

আমাদের দেশের পলিটিক্সের সাথে আমেরিকার পলিটিক্সকে মিলিয়ে ফেলার কোনো সুযোগ নেই
আমেরিকায় পার্টি আছে কিন্তু পার্টিজান নেই
তারা পার্টি কেন্ডিডেটকে ভোট দেয় তাদের প্রচারের ইসু দেখে
আর আমাদের দেশে নির্বাচন হয় পার্টিজান
এখানে ভোটাররা পার্টিকে ওউন করে। কিন্তু আমেরিকায় কোনো ভোটার এবং কর্মীই পার্টিকে ওউন করে না
এমনকি অনেক ক্ষেত্রে কেন্ডিডেটরাও না

আমেরিকায় নির্বাচন পরিচালনাকারীদের একটা বড়ো অংশ প্রফেশনাল পেইড স্টাফ
আর আমাদের দেশে নির্বাচন পরিচালনাকরারীরা হয় পার্টি কিংবা কেন্ডিডেটের সমর্থক ও কর্মী

ওখানে ভোটাররা পার্টিজান না বলে ভোটের পরে পরাজিত কেন্ডিটেটের সাথে আর কেউ থাকে না
(যেহেতু কেউ থাকে না তাই সবাইকে বিজয়ীকে সমর্থন জানানোর অনুরোধ করারটাই বুদ্ধিমানের কাজ)

কিন্তু আমদের দেশে প্রার্থী পরাজিত হলেও তার সমর্থকরা তাকে ছেড়ে যায় না

আমাদের দেশে প্রতিদ্বন্দ্বীতা হয় পার্টি পার্টি এবং কেন্ডিডেট বনাম কেন্ডিডেটে কিন্তু আমেরিকায় হয় ইসু এবং প্রচার বনাম ইসু আর প্রচারে

০২

আমেরিকানরা মাইর খেয়েও থ্যাংক ইউ বলে পাল্টা ঘুসি চালায় বলে যারা মনে করেন আমাদেরও থ্যাংক ইউ বলার প্রাকটিস চালু করা উচিত তাদেরকে আমি সমর্থন করতে পারি না বলে দুঃখিত

০৩

আমেরিকার মিলেনিয়াম গোল থেকে ওবামা কিংবা ম্যাককেইন কেউই আলাদা না কিংবা দূরেও না
যাদের সুযোগ আছে তাদেরকে অনুরোধ করব ক্লিনটনের মিলিনিয়াম নিউইয়ার উদ্বোধনের ভাষণটা আরেকবার শুনে নিতে
ওখানে ক্লিনটন যা বলেছে তার পরে অন্য পার্টির বুশও একই কথা বলেছে আর প্রচারে ভিন্ন ভিন্ন ভাষা আর আঙ্গিকে ওবামা এবং ম্যাককেইনও বলেছে একই কথা

এবং
পরাজিত ভাষণে মেককেইন যা বলেছে তাও ক্লিনটনের সেই মিলিনিয়াম ভাষণ থেকে আলাদা না
ওবামার বিজয়ী ভাষণটার জন্য অপেক্ষা করেন
দেখবেন একই কথা
শুধু শব্দ আর বাক্য আলাদা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।