তীর্থের কাক ১৭

পুতুল এর ছবি
লিখেছেন পুতুল (তারিখ: রবি, ০৫/০৮/২০১২ - ৫:২২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আগের পর্ব
বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছি এর আগে আরো তিন বার। প্রতিবারই মনে হয়েছে অভাবকে পেছনে রেখে এসেছি। এবার মনে হয় অভাব পিছু ছাড়তে বাধ্য হবে। দুই হাজার মার্ক মাসিক বেতন। এই টাকার জন্য যে কোন কাজ করতেই আনন্দ হয়। নিরানন্দ হলেও ক্ষতি নেই। এখানে ঢুকলে আর বের হওয়ার পথ নেই। যে দরজা দিয়ে খাবারটা বের হয়; তার কোমড় সমান উপরে একটা চৌকোণা ছিদ্র আছে। ছিদ্রটার সামনে খাবারের থালা সাজিয়ে রাখার একটা টেবিলের মত কাঠ দরজাটার বাইরের দিকে। ভেতরের দিকেও এমন একটা কাঠ লাগানো। রান্না ঘরের ভেতরে ঢুকে দরজা বন্ধ করলে বের হওয়ার আর কোন জায়গা নেই। পেছনে বাঁ দিকে তাওহিদ ভাইয়ের পিসসা বানানোর ওবেন। তাতে জানালা খুলে বের হওয়ার পথ বন্ধ। ভিকি সিং-এর সামনে গ্যাসের চুলোর পরে দেয়াল। কাজেই ভাল না লাগলে বা কাজ করতে না চাইলেও বের হওয়ার উপায় নেই।

ভিকি বার বার বলছে; গরম বলে কাজ কম। শীতের সময় জান পানি হয়ে যাবে কাজ করতে করতে। মনে মনে ভাবি আমার জানতো এখনই পানি হয়ে যাচ্ছে ভিকি সিং। কিন্তু কোন না কোন মানুষ তো কাজটা এখানে করে গেছে। আর কেউ পারলেই আমিও পারব এমন কোন কথা নেই। কিন্তু এই থালা-বাসন মাজার কাজটাতো পারার কথা। প্লাষ্টিকের জালের ভেতর ঝিনুক গুলো টেবিলে রাখতে রাখতে ভিকি বলছে; এখন কাজ কম, ঝিনুক গুলো বেছে দাও। ভিকির হাতের ডানে ছোট একটা ডিপ ফ্রীজ আছে। তার পাল্লাটা উপরের দিকে খোলে। মাঝে মাঝে সেটাতে হাত দিয়ে ছয়টা ছোট শামুক বের করে তাদের মুখে একটু বাটার মেখে পিসসা ওবেনে ঢুকিয়ে আবার বের করে থালায় সাজিয়ে দরজায় রেখে বেল বাজায়। জিয়াকুমো এসে নিয়ে যায়। শামুক-ও মানুষ খায় ব্যাপারটা জানা ছিল না। আমি বিপুলা এই ধরণীর কতটুকুই বা জানি! কিন্তু আমার না জানায় মানুষ উপোষ করবে কেন! আহার বিলাসী খদ্দের আসার আগেই ঝিনুক থেকে আবর্জনা বেছে দিতে হবে। আমাদের দেশে শুনেছি ঝিনুকে মুক্তা থাকে। ঝিনুক মাছ ধরার সময় জালে উঠে আসে। আবর্জনার মতো আমরা ফেলে দেই। আর এরা পয়সা দিয়ে কিনে খায়। গাছের ডালার মতো ঝিনুকের গায়ে হাঁসে খায় এমন সাইজের কিছু শামুক লেগে আছে। ছুড়ি দিয়ে কেটেও ঝিনুকের শরীর থেকে শামুক গুলো আলাদা করা কঠিন। কিছু শ্যাওলা তো আছেই।

এর মধ্যেই প্রথম অর্ডার এলো। শুরুর খাবার; কাঁচা গরুর গোস্ত ডিপ ফ্রীজ থেকে বের করে দিল ভিকি। কাগজের মতো পাতলা করে কেটে থালায় বিছিয়ে উপরে একটু জলপাইয়ের তেল। তারপর লোহার মতো শক্ত পারমিজান পনিরের গুরো ছিটিয়ে একটা লেবুর ফুল দিতে হবে থালার কোণায়। সালাত তিনটে। গরু যে ভাবে ঘাস খায়; জার্মানদের সালাত খাওয়াও তেমন। শুধু পেয়াজ, শশা লবন তেল আর ভিনিগার দিলেই হবে না। চার-পাঁচ রকমের সালাত পাতা দিতে হবে সাথে। সালাতের থালাটাও দেখতে গরুর ঘাস-পানি খাওয়ার খাদার মতো। জুলাই মাসে গরম আবহাওয়া। হঠাৎ কোন আভাস না দিয়ে শুরু হলো বৃষ্টি।
ছোট কাগজের উপর অর্ডার লেখা স্লিপ আসতে লাগল। প্রথম কয়েকটা গুনে দেখেছি। এখন সতরটা সালাত দেয়ার পর আর গুনে দেখছি না। শুধু যেটা পরে আসছে সেটা ডান দিকে রাখছি। ভিকির খাবার ঢালার বাসন সাজিয়ে দিতে হচ্ছে। মাছ হলে লেবুর ফুল, মাংশ হলে টমেটোর ফুল। একই খাবারের জন্য ভিকি ব্যবহার করে দুই বা তিনটে ফানে। থালা ভিকির সামনে রেখে খুব দ্রুত পেছনে সরতে হয়। কারণ খাবারটা থালায় ঢেলে সে ফানেটা আমার সামনে দিয়ে ছুড়ে মারে আমার বাঁয়ের বেসিনে। সেখানে ছুটতে হচ্ছে ফানেটা ধুয়ে দিতে। এটাতেই এখন অন্য একটা খাবার রান্না হবে। সাবধানে ধরতে হচ্ছে ফানেটা। ভীষণ রকম গরম। এর মধ্যে এ্যঁটো থালা রেখে গেছে জিয়াকোমো। সেগুলো সরিয়ে রাখতে হবে। না হলে ভিকি নতুন খাবারের থালা রাখার জায়গা পাচ্ছে না। ওয়াইন সসের খাবার রান্ন করছে এখন। ফানের আগুন রান্না ঘরের ছাদ ছুঁই ছুঁই করছে। পেছনে তাওহীদ ভাইয়ের পিসসা ওভেন খোলা। সেখান থেকে পাঁচশ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপ মাত্রার লু হাওয়া। বাঁয়ে বাসন ধোয়ার মেসিন থেকে তরল সাবানের বাষ্প। শরীরের ঘামেই ভিকি-র ফানে ধোয়া হয়ে যাচ্ছে। সার্কাসের শিল্পীদের মতো; চরকীর মতো ঘুরে ঘুরে সব দিক সামলাতে হচ্ছে। ময়লা বাসনের স্তুপ জমা হচ্ছে টেবিলের নীচে। এদিকে জিয়াকুমো বলছে; চামচ দাও। বাসন ধোয়ার মেসিন থালা-বাসন ধুয়ে কুলিয়ে উঠতে পারছে না। তার মধ্যে আবার চামচ ধুয়ে দিতে হবে। উপায় নেই। চামচ ছাড়া লোকে খাবে কী ভাবে! এদিকে আরেক টেবিলে শুরুর খাবারই যায়নি এখনো। জিয়াকুমোর তাগাদা। এই সার্কাসের ব্যালেন্স রাখা সময়ের সাথে কঠিন হয়ে যাচ্ছে।

ঝড়ের মতো কাজের গতিও থামল এক সময়। তাওহীদ ভাই সিগারেট ধরিয়েছেন। খাবার দিলেই তাদের কাজ শেষ। আমার কাজ শেষ হবে সব গেষ্ট খাবার খেয়ে থালা ফেরত দিলে সেটা ধোয়ার পর। রাত দশটা। ভিকির ঝিনুক এখনো পরিস্কারের অপেক্ষায় টেবিলে। শরীরের সব শক্তি, মাথার সব বুদ্ধি, বুকের সব সাহস এক সাথে করেও কাজের কোন কূল-কীনারা করতে পারছি না। ঘামে ভিজে কাপড় শরীর সাথে লেগে গেছে। আমি হাত পা চালিয়ে যাচ্ছি বিরামহীন ভাবে। আমাকে পারতে হবে। বাবার একমাত্র আবাদযোগ্য জমিটুকুর ফসল এখন অন্যের ঘরে উঠবে। ছোট ভাই-বোনগুলোর স্কুলের ইউনিফর্ম নেই। ভর্তির টাকা, বেতন। না জানি কী ভাবে অর্ধাহারে অনাহারে চলছে তাদের জীবন। আমার সামনের এই থালার স্তুপটা ধুয়ে দিতে পারলেই তাদের সব সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। এখন আর অতো কঠিন লাগছে নাতো। আর তিন চারবার মেশিনে ঢুকালেই শেষ হবে থালার স্তুপ। মাঝে একবার চামচ ধুয়ে দিয়েছি। এখন চামচ আর বেশী হবার কথা নয়। বিনটা ফেলে, ঘরটা ঝাড়ু দিলেই কাজ শেষ।

লে ইয়ার, পিলে। কাজের সাথে এই সব ভাবনা মিসে থাকায় অন্য কিছু ঠিক খেয়াল করিনি। ভিকি বিয়ারের গ্লাস হাতে নিয়ে পেছন থেকে বলেছিল, ঠিক মতো বুঝিওনি। ফিরে দেখি বিয়ের গ্লাস আমার দিকে বাড়িয়ে দাঁড়িয়ে আছে সে । ভাল করে পান করে নে। তারপর কাজ করতে পারবি। কাজ পালিয়ে যাবে না। বিয়ারের গ্লাসটা হাতে নিয়ে তাওহিদ ভাইয়ের দিকে তাকালাম। কোন সমস্যায় নায়, আফনে খাউক্যা। ভিকি বলল; বিয়ার না খেলে এই কাজ তুই করতে পারবি না। পিপাসা সত্যিই খুব ছিল। কাজের শুরুতে এক গ্লাস পানি এনে রেখেছিলাম রিজার্ব। সে পানিতে চুমুক দেয়ার কোন সময়ও পাইনি। বিয়ারটা এতো ঠাণ্ডা যে গ্লাসের বাইরের দিকে বাতাসের জলিয় বাষ্প জমা হয়েছে। অর্ধেক গ্লাস খালি করে ফেললাম এক টানে। ভিকি বলল; ধীরে ধীরে পিও। তাওহীদ ভাই একটা সিগারেট এগিয়ে দিল। খাবার দেয়ার ছিদ্রটা দিয়ে মিষ্টি একটা হাসি মাখা মুখ উঁকি দিল। ছোট তিনটা গ্লাস রেখে নিজেরটা হাতে রেখেই হাসিটা আরো একটু বিগলিত করে বললো; প্রোষ্ট।

হঠাৎ করে বৃষ্টি শুরু হওয়ায় অনাকাঙ্খিত ভাবে বেশী গেষ্ট এসে গেছে। আমরাও জান-প্রাণ দিয়ে খেঁটে সবাইকে খাবার দিয়েছি। অনেক টাকা আয় হয়েছে মালিকনীর। সে খুসী এবং আমাদের কাজের স্বীকৃতী হচ্ছে এই ছোট গ্লাসের পানীয়। সবাই হাতে গ্লাস নিয়ে গ্লাসে গ্লাসে ঠুকে ঠুকে বললাম; প্রোষ্ট।


মন্তব্য

সুমন চৌধুরী এর ছবি

প্রোস্ট!

আউফ দ্দীণূ !

পুতুল এর ছবি

দুর্দান্ত ভাই আসছেন মহা পবিত্র ওরশ শরীফ অক্টোবর ফেস্টে। দেখেন না একবার মহা পবিত্র ওরশ শরীফের ওসিলায় আরেক্টা আড্ডায় দলে দলে যোগ দান করে দুজাহানের অশেষ নেকী হাসিল করা যায় কী না। ভাবীকেও আমরা দেখিনি তিনিও আমাদের আল্পস দেখেন নি। হিমু আর মনির হোসেন তো সব থেকে ফ্লেক্সিবল। তারা তো আসতে পারবেনই। আসার সময় হাসিব্বাইকে না হয় ধরে নিয়ে আসবেন। তখন ঠিকমত প্রোস্ট আইফ দ্দীণূ ও ভাল জমবে। এবার আসলে দুনিয়ার সব থেকে বড় এবং বিরল বিয়ারের বোতল খুলুম।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সজ এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

পুতুল এর ছবি

ধইন্যা পাতার জন্য ধন্যবাদ সজ।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

মন মাঝি এর ছবি

চলুক

এভাবে ভেঙে ভেঙে অনেকদিন পর পর পড়তে ইচ্ছে করছে না, যদিও পড়ার খুব ইচ্ছে। শেষ হবে কবে, আর ই-বুক বা পি-বুক আকারে কবে পাব?

****************************************

পুতুল এর ছবি

ঠিকই বলেছেন প্রিয় মন মাঝি, একবার পুরোটা লিখেও ছিলাম। কিন্তু আমার বোকামীতে আবার লিখতে হচ্ছে। সংকল্প হচ্ছে এই বছরের ভেতর লিখে ফেলব। গাধার খাটুনী হচ্ছে যেখানটায় গিয়ে আমি লিখে আর আপনি পড়ে মজা পাবেন সে জায়গা পর্যন্ত পৌঁছানো। আর তিন চারটা পর্ব লিখলেই মজার জায়গাটা পাব। আর এভাবে লিখে পোস্ট করতে না পারলে লেখার উৎসাহ পাই না। তাই বছর নাগাদ পর্বগুলো দেব। লেখা শেষ হলে ময়মুরব্বীর পরামর্শ নিয়ে ই বা পি একটা কিছু করে ফেলব। সে পর্যন্ত একটু ধৈর্য্য রাখতে হবে আর কী। ধন্যবাদ মন্তব্যের জন্য।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ট্যাগে লিখেছেন উপন্যাস, আবার লিখেছেন স্মৃতিচারণ। আপনার এই সৃতিচারণ হৃদয়ে অসম্ভব নাড়া দেয়।
ভাল থাকুন, আনন্দে থাকুন।

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ বস।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

সজল এর ছবি

চলুক

---
মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড়

পুতুল এর ছবি

থেঙ্কু সজলদা।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

প্রতি পর্বে মন্তব্য করি না, তবে এই পর্বে দুটো কারণে মন্তব্য করছি। এক, এটা জানিয়ে রাখার জন্য যে প্রতিটি পর্বই পড়ছি এবং পরবর্তী পর্বের জন্য তীর্থের কাকের মতোই অপেক্ষা করি। দুই, রান্নাঘরের আর সেখানকার কাজের বর্ণনা এতো অথেনটিক যে একেবারে নিজের চোখে দেখতে পেলাম, নিজের সমগ্র অনুভূতিতে অনুভব করলাম।


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ পাণ্ডবদা।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

অতিথি লেখক এর ছবি

আমিও

প্রতিটি পর্বই পড়ছি এবং পরবর্তী পর্বের জন্য তীর্থের কাকের মতোই অপেক্ষা করি।

আপনার তীর্থের কাকের মতই অনেক টুকরো টুকরো স্মৃতিচারণ শুনেছি অনেকের মতই তবে সেগুলোর এমন কন্টিনিউটি ছিল না তাই এমন করে কখনো অনুভব করতে পারিনি। আশা করি এখন সবাইকে নিয়ে ভাল আছেন।

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ। এখন ভাল আছি। সচলায়তনে স্বাগতম।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

জুলিয়ান সিদ্দিকী এর ছবি

বুকিং দিয়া গেলাম। সময় সুযোগে শুরু থেকে সাইরা ফেলবো।

___________________________
লাইগ্যা থাকিস, ছাড়িস না!

পুতুল এর ছবি

অনেক দিন পর সচলায়তনে আপনাকে দেখে খুব ভাল লাগল। ঠিক আছে।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

Hasan Rahman এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

পুতুল এর ছবি

ধন্যবাদ হাসান রাহমান। সচলায়তনে স্বাগতম।

**********************
ছায়াবাজি পুতুলরূপে বানাইয়া মানুষ
যেমনি নাচাও তেমনি নাচি, পুতুলের কী দোষ!
!কাশ বনের বাঘ!

কল্যাণ এর ছবি

গুরু গুরু

_______________
আমার নামের মধ্যে ১৩

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।