ক্যালিডোস্কোপ - ১০

এক লহমা এর ছবি
লিখেছেন এক লহমা [অতিথি] (তারিখ: শুক্র, ২০/০২/২০১৫ - ৫:১০অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

পাঁচ মাসের উপর হয়ে গেছে ক্যালিডোস্কোপ-কে নামিয়ে রেখেছিলাম। আবার তুলে নিলাম।

শক্ত খোলা ভেদ করে উঠে আসছে নরম, সবুজ কচি পাতা। সে যে কি বিপুল উত্তেজনা, কি অপূর্ব আনন্দের ঘটনা! আসার ও কত রকমফের! কেউ উঠে আসে বীজের ভিতর থেকে ছোট্ট শরীরটি বার করে। কেউ আবার মাথায় মুকুটের মত করে বীজের খোলাটিকেই ধরে থাকে। কেউ আসে জোড়া পাতা নিয়ে, কেউ আসে সরু ছুঁচলো নলের মতো হয়ে। কেউ আসে এখানে ওখানে একটি-দুটি, কেউ আসে ঝাঁকে ঝাঁকে। ঠাকুমা যত্ন করে একটুখানি বীজতলা বানিয়েছে, রান্নাঘরের দেয়ালের পাশে। পুঁতে দিয়েছে লাউ কি কুমড়োর বীজ। বাবা সে জমিতে প্রথমে কয়েকটি পাটকাঠি গেঁথে তারপর সেই পাটকাঠি থেকে দড়ি টেনে দিয়েছে রান্নাঘরের ছাদের উপর। টালির ছাদ। সময় মত লাউ-কুমড়োর লতা পৌঁছে গেছে টালির উপর। তারপর ঢালু ছাদ জুড়ে তাদের ছড়িয়ে পড়া, দৌড়ে চলা। আমার কাছে পরম বিস্ময়ের ছিল আঁকশিগুলো। কি সার্থক কৌশল! ডাল থেকে বেরিয়ে এসে প্যাঁচানো স্প্রিং-এর মত আঙ্গুলে জড়িয়ে নিয়েছে কাঠি, দড়ি, টালির খাঁজ, যা পেয়েছে, যেমন পেরেছে! অবাক হয়ে ভাবতাম, কি করে বোঝে তারা - সামনে আছে কেউ নির্ভর করার মত, আঁকড়ে ধরার মত! কি করেই বা আঁকড়ে ধরে? উদ্ভিদ-বিজ্ঞান বইয়ের পাতায় এ সব ধাঁধার সমাধান কিংবা তার দিকনির্দেশ আছে হয়ত। কিন্তু, আমার জ্ঞান ত সামান্যই। আমার বিস্ময় আজো যায়নি। বেড়েছে। দেখেছি আরো, শুধু গাছ নয়, মানুষও আঁকড়ে ধরে। একটু স্নেহ, একটু ভালবাসা। কাঙ্গাল প্রাণ আঁকড়ে ধরে তাকে। সোজা-উল্টো, ছোট-বড় নানান ঘেরের সে বন্ধনে কি যে টান, কি যে যাদু! বিপুল শক্তি সে মায়ার বাঁধনে। ছিন্ন যারে করতে হয় সে বোঝে বিস্তারিতে।

আমাদের বাড়িতে ফুল-ফলের চাষ ছিল নিতান্তই শখের, জীবীকার নয়। বৈচিত্র্য ছিল, তবে সবই হত অল্প পরিসরে। উঠানের একধারে আয়তাকার এক খন্ড জমিতে বছরের বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন গাছের জায়গা হত। আবার সব বছর সবার জায়গা জুটতনা। কখনো সেখানে শসার মাচা, কখনো ঢেঁড়সের সারি, কখনো লাল শাকের গাছেরা দাঁড়িয়ে আছে দল বেঁধে। আর একদিকে কখনো পিঁয়াজকলিরা গল্প করছে, কখনো আবার শটিবনে কে জানে কাহাদের ছায়া পড়িয়াছে। বারান্দার ধার ঘেঁষে এক চিলতে জমিতে সর্ষের দানা ছড়িয়ে দেওয়া হত। এক সময় সেখানে মাথা তুলত সর্ষে গাছের ঝাঁক। তারপর তাতে ফুল ধরত। সবুজ জমিতে হাওয়ায় দুলত হলুদ-এর ঢেউ। আজ দেখলে হয়ত তেমন কিছু মনে হত না। কিন্তু সে কৈশোরে সেই ঢেউ বিরাট ছিল। আমি মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে থাকতাম। সারি সারি হলুদ ফুলেরা - একজনে মন দিলে বাকিরা একটু ঝাপসা। হাওয়ায় হাওয়ায় দুলছে, সকলে মিলে একটাই অবয়ব। অলস দুপুরের কল্পনায় সেই ঝাপসা অবয়ব আদিগন্ত বিস্তৃত হয়ে যেত। ফুলের গাছেরাও আকারে কিছু বড় হয়ে যেত। অনেকদিন বাদে সেই কল্পনাকে প্রায় অনুরূপ একটি ছবিতে দেখে মুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলাম। তফাত ছিল, ফুলের রং হলুদ নয় লাল। সে ফুল হলুদ বরণেরও হয়। তবে লাল-এই এ বেশী পরিচিত। শিল্পীও লাল ফুল-ই এঁকেছেন। পোস্ত ফুল। শিল্পী - ক্লদ মনে। Coquelicots, La promenade (Poppies)। সে ছবির একটি প্রতিলিপি টাঙ্গিয়ে নিয়েছি ঘরের দেয়ালে। ও ছবির দিকে তাকিয়ে আমি লালের পাশাপাশি চরাচর ছেয়ে থাকা হলুদ ফুলের ক্ষেতও দেখতে পাই। ফিরে যাই উত্তরবঙ্গের সেই দিনগুলোর এক কিশোরের মগ্নচৈতন্যে। তাই আরও অনেকদিন পরে, আন্তর্জাল-এর সুবাদে, ফ্লিকার-ফটোগ্রাফীর জগতের দক্ষ শিল্পী বাখেটনির ছবিতে, যখন দেখি উঠে এসেছে সেই রকম ঝাপসা হলুদ ফুল, চমকে উঠি আমি। আমাকে দিয়ে সে ফুলেরা তখন লিখিয়ে ন্যায় কিছু পংক্তি। থাক সে কথা।

প্রায় অর্ধ শতাব্দী আগের সেই দিনগুলিতে আমার মা-ঠাকুমাদের ভাঁড়ারে আজকের যুগের সার-কীটনাশকদের সমাহার ছিল না। যতদূর মনে পড়ে, গোবর, ছাই, নিম, হলুদ, চুন এই রকমের সব সামগ্রী দিয়েই চলত পুষ্টি আর প্রতিরক্ষার কাজ। বাড়িতে চাপাকল থাকায় জলের অভাব হতনা। আমাদের বাড়িতে মা-ঠাকুমার পাশাপাশি বাবাও তার ব্যস্ত সময়ের মধ্য থেকেই সময় বার নিয়ে গাছেদের পরিচর্যা করত। সকলের বড় যত্ন ছিল। গাছেদের যত্ন করা অবশ্য আমাদের তিন ভাইয়ের যত্ন নেওয়ার থেকে সহজ ছিল। তারা কেউ দুষ্টামি করে বেড়াতনা। আমরাও করতে চাইতামনা। কিন্তু করা হয়ে যেত। খেলতে খেলতেই খেলাগুলো কি করে, কি করে যেন ঝামেলা ডেকে আনত।

আমার প্রিয় খেলাগুলোর মধ্যে একটা ছিল প্যারাস্যুট ছোঁড়ার খেলা। পাতলা হাল্কা প্লাস্টিকের একটা চৌকো টুকরোর চারকোণায় চারটে সুতো বাঁধা হত। সুতোগুলোর অন্যপ্রান্ত একসঙ্গে করে গিঁট বেঁধে সে প্রান্তে একটা ছোট ঢিল ভাল করে বেঁধে দেওয়া হত। হয়ে গেল প্যারাস্যুট। এটাকে ঠিকমত উপরে ছুঁড়ে দিলে নামার সময় প্লাস্টিকটা ফুলে ছাতার মত হয়ে যেত। হেলে দুলে নেমে আসত প্যারাস্যুট। ঢিলের ওজন কম হলে প্যারাস্যুট হাওয়ায় ভেসে যেত। ওজন বেশী হলে প্যারাস্যুট ঠিকমত খুলতে পারার আগেই হু হু করে নেমে আসত সেটা। প্লাস্টিক জড়িয়ে গিয়েও কখনো কখনো গণ্ডগোল হয়ে যেত - প্যারাস্যুট খুলত না তখন। হয়ে যেত স্রেফ একটা ঢিল। কারো উপরে পড়লে ঘটনা-শিকলের শেষপ্রান্ত আমার পিঠে। বড় সাবধানে খেলতে হত তাই।

আর একটা খেলা ছিল খেজুরকাঁটার। সেটার ভোঁতাদিকে একটু চিরে সেখানে কার্ডবোর্ডের ছোট দুটো টুকরো গোঁজা হত। টুকরো দুটো প্রান্ত মিলিয়ে ভাঁজ করে একটা গুণচিহ্ন বা যোগচিহ্ন বানানো হত। কার্ডবোর্ডের টুকরো আসত বড়দের ফেলে দেওয়া বাক্স থেকে। এইটিরও চল প্যারাস্যুটের-ই মত ছিল। কাঁটার মাঝখানে ধরে উপরদিকে ছুঁড়ে দেয়া হত। ঠিকমতো ছোঁড়া হলে কাঁটা নিজের দৈর্ঘ্য বরাবর অক্ষের চারপাশে ঘুরতে ঘুরতে নেমে এসে ছুঁচলো মুখ মাটিতে গেঁথে দাঁড়িয়ে যেত। কত যে কাঁটার খোঁচাখুঁচি খেয়েছি। কিন্তু সেটা বাবাকে জানতে দেওয়া চলত না। কাঁটার খোঁচার থেকেও বাবার হাতের থাপ্পড় কি কানমলা বেশী বেদনার ছিল।

উপরের দিকে ছুঁড়ে দেয়ার আরও একটা খেলা ছিল। আট থেকে বারো ইঞ্চি লম্বা, আধা থেকে এক ইঞ্চি চওড়া একটু ওজনদার একটা বাঁশের বাখারির টুকরো। তার এক মুখ ভোঁতা অন্য মুখ ছুঁচলো। ভোঁতা দিকে ধরে এমন ভাবে উপরের দিকে ছুঁড়ে দেয়া হত যে বাখারিটা ছুঁচলো মুখ নীচের দিকে করে নেমে এসে মাটিতে গেঁথে যেত। এক্ষেত্রেও গেঁথে গিয়ে বাখারিকে সোজা দাঁড়িয়ে থাকতে হত। এই খেলাটায় আমার বেশ দক্ষতা এসেছিল। তাতেই হয়ত সতর্কতা কমে গিয়েছিল। এক বিকালে বাখারিটা নেমে এসে চমৎকার ভাবে গেঁথে গেল - মাটিতে নয়, আমার ডান পায়ের কড়ে আঙ্গুল আর তার পাশের আঙ্গুলের মাঝের খাঁজে। বাখারি টেনে বার করার সাথে সাথেই তোড়ে বেরিয়ে এল লাল স্রোত। এবারে অবশ্য আর বাড়িতে মার খেতে হয়নি। আমার চোট সামলাতেই বাবার অবস্থা কাহিল হয়ে গিয়েছিল। তবে খেলাটা বন্ধ হয়ে গিয়েছিল পুরোপুরি।

যাই খেলি না কেন, যেখানেই যাই না কেন সন্ধ্যার আগে বাড়ি ফিরে আসতে হত। আর, উঠানে ঢোকার দরজাটা সব সময় বন্ধ রাখতে হত। না, কোন চোর-ডাকাতের ভয়ে নয়। সে সব আমরা ভাবতাম-ই না। ঐ দরজায় কখনওই কোন তালা পড়ত না। যে কোন লোক যে কোন সময় ঐ পলকা দরজার আগল খুলে ঢুকে আসতে পারত, আসতও। কিন্তু দরজা আগল না দিয়ে রাখা যেত না। কারণ - ছাগল। কোথা দিয়ে কোথা থেকে যে তারা চলে আসত! রাস্তার ধার ধরে বাড়ি বাড়ি ঢুঁ মারতে মারতে ঘুরে বেড়াত তারা। দরজা খোলা থাকলে আর রক্ষা নেই। মুড়িয়ে গাছ খেয়ে চলত। তাড়া দিয়ে বার করতে করতে গাছের পর গাছের দফা রফা হয়ে যেত। ছাগলের মতই দু’-এক সময় গরু-বাছুর-ও ঢুকে এসেছে। কিন্তু তাদের নিয়ে বাড়ির লোকের অতটা চিন্তা ছিল না, যতটা ছিল ছাগল নিয়ে। ঠাকুমা বলত, গরুতে মুখ দিলে গাছের স্থায়ী ক্ষতি হয়না। কিন্ত ছাগলে মুখ দিলে আর রক্ষা নেই, সে গাছের বাঁচা কঠিন হয়ে যায়।

ছাগলে মুখ দিলে 'গাছের' বাঁচা কঠিন হয়ে যায়। আর, ছাগুতে মুখ দিলে?


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা এত সুন্দর! অর্ধশতাব্দী না হোক, অর্ধযুগ বা তারও কিছু আগেপরে আমাদের উত্তরবঙ্গের বাড়িটাতেও মা এমনি করেই পেঁযাজ, রসুন থেকে শুরু করে আরও শতেক আনাজের বীজ বুনতো, বাবা টিনের চাল পর্যন্ত গেঁথে দিত বাঁশের লম্বা কঞ্চি, কখনও লাঠি, কখনও পাটকাঠি। আর ঐ সময়টায় আমরাও এমনি করেই খেলতাম-তবে এসব বাখারি বা খেজুরকাঁটা ছুঁড়ে দেয়ার খেলার চল অবশ্য আমাদের বাড়িতে ছিল না। হায়! সেসব দিন এখনও প্রতিক্ষণে আমার সম্পদ, আমার ভালোবাসা... তবে আপনার শেষের প্রশ্নের উত্তর বেশ কঠিন, নয়? প্রতিদিনই দুই/তিনজন স্বল্প পরিচিত মানুষের রাজনৈতিক আলাপ শোনার সৌভাগ্য বা দুর্ভাগ্য হয় আমার। একজন বাদে (বলাই বাহুল্য সে বেচারা কোণঠাসা থাকে) বাকিদের আমার কতবার জিজ্ঞেস করতে ইচ্ছে করেছে তাঁদের পুরো পরিবারই আদতে ‘ছাগু’ পরিবার কি না। জিজ্ঞেস করতে পারিনি, কেন যে, তাও জানি না।

দেবদ্যুতি

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ দেবদ্যুতি। ভালো লাগল যে আমার ছোটবেলাটা আমার সময়ের সাথেই মিলিয়ে যায়নি।
সেইটাই ত কথা দিদি, ছাগুতে মুখ দিলে সবুজ হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাঁচা কঠিন হয়ে পড়ে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

সময়ের হিসাবটা নিতান্তই গোলমাল করে ফেলেছি ইয়ে, মানে... অর্ধযুগটা আসলে একযুগ হবে

দেবদ্যুতি

এক লহমা এর ছবি

বুঝেছি, হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

সুন্দর!

আনন্দ বেদনার মিশ্রণে ফেলে আসা দিন সম্ভবত সুন্দরই হয়!

অনিঃশেষ শুভকামনা জানবেন।

ভালো থাকবেন। অনেক। সবসময়।

দীপংকর চন্দ

এক লহমা এর ছবি

"আনন্দ বেদনার মিশ্রণে ফেলে আসা দিন সম্ভবত সুন্দরই হয়!" - হাসি
অনেক ধন্যবাদ।
আপনাকেও অনেক শুভকামনা।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মুক্তমন এর ছবি

পুরোনো দিনের কথা মনে পরে গেল৷

এক লহমা এর ছবি

হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

ডুপ্লি, ঘ্যাচাং।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

প্যারাস্যুট ছোঁড়া খেলা যে কত খেলেছি।-- আহ, আর হেলিকপ্টার, কাগজের।

মুগ্ধতা জানিয়ে গেলাম।

স্বয়ম

এক লহমা এর ছবি

হাসি আচ্ছা, হেলিকপ্টার খেলাটার একটা বিবরণ হয় না?
অনেক ধন্যবাদ।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অন্যকেউ এর ছবি

এই যে কাগজের হেলিকপ্টার।

_____________________________________________________________________

বরং দ্বিমত হও, আস্থা রাখো দ্বিতীয় বিদ্যায়।

এক লহমা এর ছবি

বাঃ! অনেক আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- অন্যকেউ। এ দেখি আমাদের সেই খেজুর কাঁটার খেলাটার নিরাপদ শোভন সংস্করণ। খুব ভালো হ'ল। এবার এটা এখানেও খেলা যাবে। হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

হয়তো। কিন্তু মুশকিল হলো, আলসেমি। তাও, ওই যে, কাগজ ছিঁড়ে, মাথায় দুটো পাখার মতো করে, উপরে ছুঁড়ে দেয়া। ওই যে একটা হেলিকপ্টার ঘুরতে ঘুরতে নেমে আসে, পথে বা ঘাসে। ওই যে মাঝে মাঝে আততায়ীর মতো একটা কাগজের প্লেন, ছোঁ করে নিয়ে যায় আমার কপ্টারের একক পাখা, যেন একটা চিল। এটা মূলত বারান্দার একলা দিনের খেলা ছিল। সঙ্গী এলে, প্লেন আর বৃষ্টি এলে নৌকার দিন।

এইতো।

স্বয়ম

এক লহমা এর ছবি

এই ত আলসেমি কাটিয়ে কেমন চমৎকার গপ্পোসপ্পো হয়ে গেল! এই হচ্ছে ব্লগের মজা। (বড় লেখকদের মহাব্যস্ত জীবনে এ সবের স্বাদ নেওয়ার সুযোগ থাকে না, আহারে বেচারারা! শয়তানী হাসি )

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

আগের পর্বগুলো সব পড়িনি। স্মৃতিচারণ খুব ভাল লাগলো। আপাতঃ নিরানন্দ শহুরে জীবনে বড় হওয়ায় স্মৃতি হাতড়ে খুব বেশি কিছু পাই না।
মজা পেলাম এই কথাতে,

ছাগলে মুখ দিলে 'গাছের' বাঁচা কঠিন হয়ে যায়। আর, ছাগুতে মুখ দিলে?

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

এক লহমা এর ছবি

পড়ে ফেলেন সাদিয়া-দিদি, সময় করে। আপনি পড়লে আমার খুব ভালো লাগবে অবশ্যই।
শহুরে জীবন নিরানন্দ হবে কেন দিদি! আমি ত সেখানেও অনেক কিছু খুঁজে পাই। আপনি এট্টু খুঁজেন না! আপনার চমৎকার লেখনীতে সে যে পরম উপভোগ্য হয়ে উঠবে গো!

ঐ প্রশ্নটা আসলে বড়ই বেদনার, তাই না? ছাগলে মুখ দিলে গাছ বাঁচে না; আর, ছাগুতে মুখ দিলে, একটু আগে যেমন লিখেছি, সবুজ হৃদয়ে মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাঁচা কঠিন হয়ে পড়ে।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

প্যারাসুটের কথা দেখে অনেক আগে পড়া চমৎকার একটা রুশ গল্পের কথা মনে পড়ল।
আচ্ছা, দেশ-কাল-পাত্র ভেদে সবার শৈশব আসলে ঘুরেফিরে একই রকম, তাই না? ইয়ে, মানে...

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

এক লহমা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-
পুরো এক না হলেও, অনেক কিছু মিল ত থাকেই।

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

এক লহমা এর ছবি

ডুপ্লি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

মাসুদ সজীব এর ছবি

মাহমুদুল হক বলেছেন

আসলে জীবন মানেই শৈশব; জীবনভর মানুষ এই একটা ঐশ্বর্যই ভাঙ্গিয়ে খায়, আর কোনো পুঁজিপাট্টা নেই তার।

আমি তাই শৈশবের লেখা পড়ি সবচেয়ে বেশি, লেখার মাঝে লেখকের কল্পিত শৈশবে ঘুরে আসি। যে জীবন নিজের নয় সে জীবনও দেখে আসি। এ এক অন্য সুখ, বই না পড়লে এ সুখের সন্ধান মেলে না। আপনার ক্যালিডোস্কোপ তাই আমার প্রিয় সিরিজের একটি। চলুক আজীবন, বেঁচে থাকি শৈশবে। হাসি

-------------------------------------------
আমার কোন অতীত নেই, আমার কোন ভবিষ্যত নেই, আমি জন্ম হতেই বর্তমান।
আমি অতীত হবো মৃত্যুতে, আমি ভবিষ্যত হবো আমার রক্তকোষের দ্বি-বিভাজনে।

এক লহমা এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ মাসুদ সজীব-ভাই।
ফেলে আসা দিনগুলোর এত দুঃসহ স্মৃতি আছে আমার যে আমি আদৌ সে দিনগুলোতে ফিরে যেতে চাই না। কিন্তু সদাই সযত্নে লালন করি সেই দিনগুলোর নানান মধুর স্মৃতি। বেঁচে থাকার রসদ যোগায় যে তারা! হাসি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।