ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পর্ব-৫।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শনি, ১৭/১১/২০০৭ - ৫:১৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"তার চুলে ছিল জমাট বাঁধা কালবোশেখীর মেঘ।"
চন্চলকে যেদিন আমি প্রথম দেখি সেদিন উপরের কথাটি মনে হয়েছিল। এই লাইনটি আমি কি কোথাও পড়েছিলাম, নাকি নিজের মাথা থেকে বেরিয়েছিল,তা ঠিক মনে নেই।

চঞ্চলের শারিরীক গড়ন ছিল হালকা পাতলা। খুব লম্বা বা বেঁটে ছিল না সে। তার ছিল মাথা-ভরতি একরাশ কোঁকড়া চুল। খুব বেশী লম্বা নয়, জাস্ট কাঁধ ছুঁই-ছুঁই করছে। তাকে দেখতে অনেকটা মাইকেল জ্যাকসনের মতো লাগতো। বর্তমানের মাইকেল নয়, প্লাস্টিক সার্জারীর আগেকার আসল মাইকেল জ্যাকসন। তবে চঞ্চলের গায়ের রং অবশ্য মাইকেলের চাইতে আরো ফর্সা ছিল।

চঞ্চল ঢাকার ছেলে। সে থাকতো বেইলি রোডের আশপাশের কোন এক জায়গায়। আমি ঢাকার বাইরের ছেলে হওয়াতে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম দিকের বছর গুলোতে চঞ্চলের সাথে তেমন বেশী একটা অন্তরঙ্গতা হয়নি। তখন পরীক্ষা আর ল্যাব-রিপোর্ট নিয়েই নাকানি-চুবানি খাচ্ছি। গায়ে মফস্বলের সিল থাকায় ঢাকার পোলাপান বেশী পাত্তা দেয়না।

তার সাথে কিভাবে বন্ধুত্ব গড়ে উঠলো, সেটা মনে নেই। তবে অনার্সের শেষ দিকে অথবা মাস্টার্সের প্রথম দিকে আস্তে আস্তে কথাবার্তা চালু হোল। ততদিনে 'ভাল ছাত্র'র তকমা উঠেছে গায়ে। ঢাকার পোলাপানেরা অত বেশী তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে না।
একসময় খেয়াল করলাম যে চঞ্চলকে সকাল বেলার কোন ক্লাশে দেখা যায়না। তাকে দুপুর তিনটের পরে ক্যাম্পাসে দেখি।
একদিন জিজ্ঞেস করলাম, "তোমার কেইসটা কি ভাই? আমরা নিয়মিত ক্লাশ করেও দুশ্চিন্তায় থাকি পরীক্ষা নিয়ে, আর তুমি ক্লাশে দেখা না দিয়েও দিব্যি ঘুরে বেড়াচ্ছো।"
চঞ্চল হেসে বলে,"চল, চায়ের দোকানে যাই। তুই পয়সা দিবি।"
জ্ঞান আহরণের জন্য কড়ি তো ফেলতেই হবে। গেলাম।
চায়ের কাপে চুমুক দিয়ে চঞ্চল বললো,"ব্যাপারটা গোপনীয়। কাউকে বলবি না স্পেশালি আমার মাকে।" (অ্যাজ ইফ ওর মায়ের সাথে আমার প্রায়ই দেখা হচ্ছে)।
"আচ্ছা-বলবো না।"
"বাসায় বলিনি এখনো, বললে ভেজাল আছে। আমি পড়াশুনা বাদ দিয়েছি। অনার্সটাতো পাশ করেইছি, আর লেখাপড়ার দরকার নাই আমার। অলরেডী চাকরি করা শুরু করেছি। শুধু খাতায় নাম রাখার জন্য আর তোদের সাথে দেখা করার জন্য ক্যাম্পাসে আসি।"
আমি তার দিকে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে থাকি। পোলার বুকের পাটা আছে। "কি চাকরি?"
"একটা ইংরেজী স্কুলে পড়াই।"

আস্তে আস্তে আরো অন্তরঙ্গতা বাড়লো। জানলাম সে লেখে। ইংরেজীতে, এবং বাচ্চাদের জন্য। তখন "অবজারভার" সংবাদপত্রে বাচ্চাদের একটা সেকশন থাকতো, নাম "ইয়ং অবজারভার", সেখানেই সে নিয়মিত গল্প-কবিতা লেখে। তখন আমিও টুকটাক লেখা শুরু করেছি বাচ্চাদের জন্য। 'শিশু', 'ধান-শালিকের দেশ' টাইপের পত্রিকায় ছাপা হয়েছে বেশ কয়েকটা লেখা, তার জন্যে পারিশ্রমিকও পেয়েছি (সেই গর্বে আমার পা আজও মাটিতে পড়েনা)। কিন্তু ইংরেজীতে লেখা? সেতো মহা কঠিন ব্যাপার। চঞ্চলের প্রতি শ্রদ্ধা জন্মালো।

কিছুদিন পর জানলাম যে তার পারিবারিক জীবনে মহা-অশান্তি। বাবা-মায়ের মিল না থাকায়, বাড়ির পরিবেশ থমথমে থাকে সর্বক্ষণ। অতএব যতটা কম সময় বাড়িতে থাকা যায়, তার চেয়ে বেশী সময় সে বাড়িতে থাকেনা। আমাদের হলে চলে আসে, বা পরে আমি যখন ছোট একটি এক কামরার ঘর সাবলেট নিলাম সেখানেই কাটায় বেশীর ভাগ সময়। রাতে যখন সে বাসায় ফেরে, তখন তার ঘুম আসেনা। এক সময় ঘুমের ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করে দিলো সে।

আমরা দুই লেখক তখন হরিহর আত্মা, শাহবাগের কোণার ছোট্ট দোকানে বসে চা-সিংগাড়া ধ্বংস করে তারপর রমনার ভিতর দিয়ে হাঁটতে হাঁটতে চলে যাই। ততদিনে আমিও রোজগার করি (মানে শাকুরকে পড়াই, পর্ব-৪)। পকেটে সদ্য পাওয়া ছ'শো টাকা কড়কড় করে। জীবনে নিজেকে এত সুখী আর কখনো মোনে হয়নি। রমনার ঝরাপাতায় ঢাকা পথে দুই কবি পথ হাঁটি। সবকিছু ভুলে 'বেদনার পায়ে চুমু খেয়ে বলি, এইতো জীবন' লাইনটির প্রকৃত অর্থ নিয়ে আলোচনা করি।

তাকে বলি,"তুই বাংলায় লিখিস না কেন? ইংরেজী ক'জন পড়ে?"
সে হাসে। "আমার বাংলা দেখলে তুই হার্টফেল করবি। এত বানান ভুল। আচ্ছা শোন- তুই আমাকে নিয়ে বাংলায় কিছু একটা লেখ্‌। আমার দুঃখ, আমার নিদ্রাহীনতার কথা। আর আমি তোকে নিয়ে ইংরেজীতে লিখবো। তুই কিভাবে ঢাকায় এলি আর সেখানে সারভাইভ করলি।"
"ধুর-আমাদের কথা নিয়ে লেখার কি আছে? আমাদের জীবনতো বোরিং, আমাদের অবিচুয়ারী পড়ে লোকে বমি করে দেবে। এতো বোরিং।"
"দ্যাটস্‌ আ গুড আইডিয়া। মরে গেলে তুই আমার অবিচুয়ারী লিখবি, আর আমি তোর। তুই বাংলায়, আমি ইংরেজীতে।"
পাগলকে থামানো মুশকিল। "আচ্ছা -ঠিক আছে।"
"আমরা প্রমিস করলাম কিন্তু।"
"এই জীবনে কত প্রমিস করলাম তার কি কোন ইয়ত্বা আছে। গুনতে গেলে বছর গড়িয়ে যাবে।"

একদিন বললাম,"তুই কি তোর বাসায় বলেছিস তোর চাকরির কথা।"
"এখনো বলিনি, তবে মনে হয় খুবই শিগগীরই বলতে হবে। মা মনে হয় কিছু একটা আন্দাজ করতে পারছে।"

সপ্তাহ দুয়েক পর শাকুরকে পড়ানো ইস্তফা দিলাম। আমি আবার ব্যাক টু দ্য মিসকিন স্ট্যাটাস। চঞ্চল শুনে বললো,"তুই শালা কপাল নিয়ে জন্মেছিস। তোকে দেখলেই রাগ লাগে।"
আমি এ কথায় সাত হাত পানির নীচে। "আমি তো এখন অফিসিয়ালি মিসকিন, গ্রামীন ব্যাংকের লোনের জন্য কোয়ালিফাই করি। এটাকে তুই কপাল বলছিস কিভাবে?"
"এর উত্তর এখন দেবো না। দেবো দুদিন পর।"

দুদিন পর বললো,"তোর জন্য চাকরি ফিট করেছি। না বলতে পারবি না।
"কি চাকরি?"
"কিসের আবার? তোর যোগ্যতা তো একটাই। মাস্টারী।"
"আবার মাস্টারী?" আমি ঘাবড়ে যাই। শাকুর পর্বের (পর্ব-৪) পর আমি ঘরপোড়া গরুর মতো হয়ে গেছি। "একটু খুলে বল দেখি।"

ঘটনা জটীল। সার সংক্ষেপ হচ্ছে যে ঘটনাচক্রে কয়েকদিন আগে চঞ্চল তার বাসায় বলেছে তার লেখাপড়া ছেড়ে স্কুলে পড়ানোর কথা। প্রাথমিক চেঁচামেচির পর তার বাবা লেখাপড়া বাদ দেওয়াটা মানতে পারলেও স্কুলে চাকরি করাটা মানতে পারছেন না। এই অবস্থায় তিনি তার এক বন্ধুকে ধরে চঞ্চলের জন্য আরো ভাল একটি চাকরি যোগাড় করেছেন। সেটি হচ্ছে ফাইজারে মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ এর চাকরি। ইনিশিয়াল বেতনই স্কুলের বেতনের প্রায় তিনগুণ। এখন চঞ্চলকে স্কুলের চাকরি ছাড়তে হবে। সে স্কুলে গিয়ে তার চাকরিটি আমাকে দেবার জন্য সুপারিশ করেছে, এবং তার সুপারিশের ("আমি নাকি ইংরেজীর জাহাজ") জোরে আমার জন্য ওই চাকরি মোটামুটি পাক্কা। শুধু একটা লোক দেখানো দরখাস্ত আর ইন্টারভিউ ফেস করতে হবে।
"এখন বুঝলি তো তোর কপাল কিরকম ভাল। লোকে চাকরি পায়না আর সেখানে চাকরি তোর জন্যে অপেক্ষা করছে।"

ক্ষুধার্ত মানুষের বিচারবুদ্ধি লোপ পায়। গেলাম স্কুলে। (স্কুলটি ভয়ানক নামকরা বলে নামটি গোপন রাখলাম।) প্রিন্সিপাল আমার সার্টিফিকেট ইত্যাদি দেখে বেঁকে বসলেন।
"আপনার তো রেজাল্ট ভাল, আপনিতো বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়ানোর চাকরি পেয়ে যাবেন শিগগীরই। তখন আমাদের কি হবে?"
তাকে কথা দিলাম যে যদি আমি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ানোর চাকরি পাই তাহলেও এই স্কুলে অন্ততঃ পার্ট-টাইম হলেও পড়াবো। (সে কথা পরে রেখেছিলাম আমি)।
ব্যাস-হয়ে গেল চাকরি। পরদিন থেকেই পড়াতে হবে। প্রিন্সিপাল শুধু একটু সতর্কবাণী দিলেন,"এখানকার ছেলেমেয়েরা ভয়ানক পরিমানে বদ। আপনি নরম হলে কিন্তু এরা আপনার মাথায় উঠবে।"
চাকরির প্রথম দিনেই একটা জিনিস পরিস্কার ভাবে বুঝে গেলাম। চঞ্চল তার স্টুডেন্টদের কাছে ভয়ানক প্রিয় শিক্ষক ছিল। তারা চঞ্চলের জায়গায় আমাকে দেখে যারপর নাই ক্ষিপ্ত এবং রাগান্নিত। কোনমতে দিনটা পার করলাম।
সন্ধ্যায় চঞ্চল এলো। "কিরে। কেমন লাগলো?"
"এরাতো সব বন্য ঘোড়া রে। কিছুই মানেনা।"
চঞ্চল হাসে। "এইজন্যেই তো এদেরকে পোষ মানানোটা এত একসাইটিং।"

স্কুলের চাকরি চলতে থাকে। বন্য ঘোড়ারা ক্রমে ক্রমে পোষ মেনে আসে। স্কুলের কাহিনী বলতে গেলে আর একটা মহাভারত হয়ে যাবে। সে কথা আরেক পর্বে হবে।

মাসদুয়েক পর একদিন সন্ধ্যেবেলা চঞ্চলের আগমন। "জরুরী কথা আছে।"
"বল্‌।"
"আমি আমার চাকরি ফেরত চাই। তুই প্রিন্সিপালকে বল।"
"তোর মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ এর চাকরির কি হবে তাহলে?"
"লাথ্‌থি মার ওই চাকরির পিছে। আমার পড়াতে ভাল লাগে। বাচ্চাদের মিস করছি খুব।"
"কোন অসুবিধা নাই। আমি কালই কথা বলবো।"

আমার কথা শুনে প্রিন্সিপালের সদা গোমড়া মুখ আরো গোমড়া হোল। "একটা সমস্যা আছে। চঞ্চলকে ফেরত নিতে আমাদের কোন অসুবিধা নাই, কিন্তু আপনাকে ছাড়তে চাইনা।"
"তাহলে উপায়?"
শেষমেশ উপায় হোল এই যে আমরা দুজনেই থাকবো। একজনের চাকরিকে ভেঙ্গে দুভাগ করা হোল। আমাদের প্রত্যেকের বেতন কমলো কিছুটা। তাতে আমাদের কোন দুঃখ নেই। মাসখানেক পরে আমি বিশ্ববিদ্যালয়ের চাকরিতে জয়েন করলাম এবং স্কুলে পার্ট-টাইম হয়ে গেলাম।

চঞ্চল আর আমি একইসাথে স্কুলে চাকরি করেছিলাম সাত-আট মাসের মতো। মাস গেলে এগারোশ টাকা পাই। বাসা ভাড়া, খাওয়া, সিগারেট, রিক্সা সব কিছু মিলিয়ে আট-ন' শো টাকা লাগে। মাসের শেষে হাত থাকে দু-আড়াই শ'র মতো। নিজেকে এত ধনী আর কোনদিন মনে হয়নি। পরে যখন এর উপর বিশ্ববিদ্যালয়ের বেতনও পাওয়া শুরু করলাম, তখন তো আমি রীতিমত মাউন্ট এভারেস্টের চূড়ায় বসে থাকা বিল গেট্‌স্‌। ইচ্ছেমত খাই-দাই, বই কিনি। কি চমত্কার সরল এবং সুন্দর ছিল জীবনটা। এখন হাজার মাইল পিছনে হেঁটে গেলেও তার দেখা পাবোনা।

যাই হোক, চঞ্চলের কথা বলছিলাম। স্কুলের চাকরির ফাঁকে লেখালিখি নিয়ে তর্কাতর্কি হয়। একদিন চঞ্চল প্রস্তাব করলো,"এইসব লুকিয়ে লুকিয়ে লেখালিখি আর ভাল্লাগছে না। চল-এবার একুশে ফেব্রুয়ারীতে বাংলা একাডেমীতে কবিতা পড়ি।"
"তোর কি মাথা খারাপ?"
"আরে চল-দুজনে দুটো কবিতা পড়ি।"
"আচ্ছা আমি নাহয় কোন মতে একটা কবিতা তৈরী করলাম। তুই কি করবি? শহীদ দিবসে ইংরেজী কবিতা পড়বি?
"আমার কবিতা অলরেডী কমপ্লিট। বাংলায় লেখা। খুব ছোট্ট কবিতা। শুনবি?"
"পড় শুনি।"
পকেট থেকে কাগজ বের করে সে আবৃত্তি করে,
"হে কাক, তুমি বসে থাকো টেলিফোনের তারে,
কত কথা যাওয়া-আসা করে,
এ প্রান্ত থেকে ও প্রান্তে,
তুমি তার কিস্‌সু বোঝনা।"

কিছুদিনের মধ্যে বাইরে পড়তে চলে গেলাম। স্কুলের বাচ্চারা ততদিনে আমাকেও পছন্দ করা শুরু করে দিয়েছিল। ফেয়ারওয়েল-এর দিনে তাদের অনেককেই কাঁদতে দেখেছি। চঞ্চলকে বললাম, "এদেরকে দেখে রাখিস। কোনমতে ডিগ্রিটা শেষ হলেই ফিরে আসছি।"

বিদেশে আসার পর দেশের বন্ধুদের সাথে যোগাযোগ কমে যায়। সে আমলে ই-মেল বা ফোন করারও সুবিধে ছিলনা। মাঝে মাঝে দু একটা চিঠি পাই এর ওর কাছ থেকে। ভালই আছে সবাই।

এর মধ্যে একদিন হীরা এক লম্বা চিঠি পাঠালো। তাতে তার এনগেজমেন্টের বিস্তারিত বর্ণনা, ভাবী স্ত্রীর সাথে কয়েকখানা ছবি এবং তার বিয়ের দাওয়াত। আমি রাগে দাঁত কিড়মিড় করতে করতে চিঠিটা পড়ি। এখানে থার্মোডাইনামিক্স পড়তে পড়তে আমার জান শেষ, আর তুই শালা তোর হবু বৌয়ের গল্পে মশগুল। একবার হাতের কাছে তোকে পেলে হয়।

চিঠির শেষ পাতায় হীরা লিখেছে,"তোকে একটা খবর না দিয়ে পারছিনা। চঞ্চল দুদিন আগে মারা গেছে। ব্লাড ক্যান্সার। রোগ ধরা পড়ার দু সপ্তাহের মধ্যেই সে মারা যায়। আমাদের তেমন কিছুই করার ছিলনা। তুই দোয়া করিস ওর জন্য। খুব দুঃখী একজন মানুষ ছিল সে।"

চিঠি হাতে বজ্রাহত মানুষের মত বসে থাকি। এ আমি কি পড়লাম?

জীবন বহতা নদীর মতো আপন গতিতে এগিয়ে যায়। আমিও আস্তে আস্তে উঠি এক সময়। রবার্ট ফ্রস্ট-এর কবিতার লাইন মনে পড়ে, "আই হ্যাভ প্রমিসেস টু কিপ।"

টেবিলে কাগজ কলম নিয়ে বসি। আমার সারা জীবনের সবচেয়ে কষ্টের লেখাটি এখন আমাকে লিখতে হবে। "আই হ্যাভ প্রমিসেস টু কিপ।" চোখের পানিতে অস্পস্ট হয়ে যায় কাগজের লাইনগুলো, আঙুলে হাজার বছরের জরা এসে ভর করে। তবুও আমাকে লিখতে হবে। "আই হ্যাভ প্রমিসেস টু কিপ।"

কাঁপা কাঁপা আঙুলে আমি লিখি,"তার চুলে ছিল জমাট বাঁধা কালবোশেখীর মেঘ।"

আইডি: "নির্বাসিত"।


মন্তব্য

junayed এর ছবি

অপুর্ব

বজলুর রহমান এর ছবি

মাস গেলে এগারোশ টাকা পাই। বাসা ভাড়া, খাওয়া, সিগারেট, রিক্সা সব কিছু মিলিয়ে আট-ন' শো টাকা লাগে। মাসের শেষে হাত থাকে দু-আড়াই শ'র মতো।

কতদিন আগেকার কথা এটা ? আপনি যদি এত সিনিয়র হন, এই প্রজন্মের মতো অনায়াসে এবং তাদের অনেকের চাইতে নির্ভুল বাংলায় টাইপ করছেন দেখে ভালো লাগল!

কিংকর্তব্যবিমূঢ় এর ছবি

এই সিরিজের পরের লেখাগুলি সচলায়তনে আসতে পারতো ... শ্রদ্ধেয় মডুগণ, এই অতিথিকে এইবার ঘরে ঢোকানো যায় না?

ছায়ামূর্তি [অতিথি] এর ছবি

অসাধারণ।

এই সিরিজ কী এইখানেই শেষ ?

জাহিদ হোসেন এর ছবি

গোটা সিরিজটি ভিন্ন নামে অন্যত্র প্রকাশিত হয়েছিল। আপনি চাইলে এখান থেকে পড়া শুরু করতে পারেন। আপনার আগ্রহের জন্য ধন্যবাদ।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

ছায়ামূর্তি [অতিথি] এর ছবি

আপনিতো পুরা খনির সন্ধান দিলেন, বস। হাসি

ধন্যবাদ, ধন্যবাদ।

জাহিদ হোসেন এর ছবি

আপনার ভালো লাগলেই আমি খুশী।
_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

_____________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

রায়হান উদদীন  এর ছবি

খুব ভালো লাগলো ভা্ই আপনার লেখা পড়ে ।আপনার কাছ থেকে এই সিরিজের আরো লেখা আশা করছি ।

সাইফ তাহসিন এর ছবি

বর্তমানের মাইকেল নয়, প্লাস্টিক সার্জারীর আগেকার আসল মাইকেল জ্যাকসন। তবে চঞ্চলের গায়ের রং অবশ্য মাইকেলের চাইতে আরো ফর্সা ছিল।

গড়াগড়ি দিয়া হাসি গড়াগড়ি দিয়া হাসি

বুকের মাঝে একেবারে আস্ত কীলক গেঁথে দিলেন জাহিদ ভাই ইয়ে, মানে...
=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

=================================
বাংলাদেশই আমার ভূ-স্বর্গ, জননী জন্মভূমিশ্চ স্বর্গাদপি গরিয়সী

অলস ফানুস এর ছবি

চলুক
চঞ্চলের জন্য রইল শ্রদ্ধা

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।