জাহিদ হোসেন এর ব্লগ

গল্প। জলের ভুবন।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শুক্র, ০৬/১১/২০০৯ - ১২:৩৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এখানে দেখা যায়না তাকে। শুধু জল গড়িয়ে পড়ার আবছা শব্দে টের পাওয়া যায় নদীটির অস্তিত্ব।

পাহাড় এখানে সমতলভূমিকে স্পর্শ করেছে। বিভিন্ন রকমের ঝোপঝাড় এবং লতাগুল্মে স্থানটি কিছুটা অন্ধকার। বিকেলের দিকেই সূর্য্য পাহাড়টির অন্যপাশে ঢলে পড়ে। এখানে সন্ধ্যা নামে অনেক আগেই।

নদীটির জন্ম পাহাড়ের চূড়ায়। তিনটি ছোট ঝর্নাধারা একসাথে মিশে তৈরী হয়েছে ক্ষীণকায়া এই নদীটি। এখন শীতকাল বলে নদীটি...


বাঘ।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: বুধ, ০২/০৯/২০০৯ - ২:৩১পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

একদম কাছে না এলে তার উপস্থিতি টেরই পাওয়া যাবে না।
এখন রাত একটা-দুটো হবে নিশ্চয়ই। এমদাদ আলী লঞ্চের একদম পিছন দিকে বসে আছে। নীচু রেলিংএ পিঠ ঠেকিয়ে দু'পা ছড়িয়ে। সর্বক্ষণের সাথী দোনলা বন্দুকটি পাশে শুইয়ে রাখা। তারপাশে একটা প্লাস্টিকের মগে কিছুটা সস্তা মদ। রাত জাগতে গেলে এর চেয়ে ভালো রসদ আর নেই।

এমদাদ আলী বনবিভাগের নাইটগার্ড। সুন্দরবন এলাকাতেই তার চাকরী। প্রায় সতেরো বছর হয়ে গেল।...


মধ্যরাতের বন্ধু-২।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শনি, ২৯/০৮/২০০৯ - ৮:১৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

মাঝখানে বেশ কয়েকটা মাস ভালই গেল। ইয়াদ আলী আমাকে আর ইয়াদ করেনি। মাঝরাতে ফোন করে আমাকে আর জাগায়না সে।
যারা ইয়াদ আলীকে চেনেন না তাদেরকে বলছি যে সে আমার এক বন্ধু। নিউইয়র্কে থাকে। মাঝেসাঝে গভীর রাতে ফোন করে আমাকে, আর তারপর উলটোসিধে কথা বলে। তার সাথে তর্কাতর্কি করার সাহস বা শক্তি আমার নেই বলে বেশীর ভাগ সময়েই তার কথা চুপচাপ হজম করি আমি।

আমেরিকাতে এখন সামার চলছে। শীতপ্রধান শহরগুলোতে ...


মধ্যরাতের বন্ধু-১।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শনি, ২২/০৮/২০০৯ - ১:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আর দশটা মানুষের মতো আমার একগাদা বন্ধু নেই। বাঙ্গালীদের বন্ধুভাগ্য দেখে পৃথিবীর অন্য দেশের মানুষেরা ঈর্ষান্বিত হয়ে পড়ে। এখানে যাকেই দেখিনা কেন, তারই চতুর্দিকে ইয়ার-দোস্তের ছড়াছড়ি।

হয়তো গ্রোসারী করতে গিয়ে দেখা হলো এক দেশী ভাইয়ের সাথে। নতুন আলু বাছতে বাছতে টুকটাক কথা বলছি তার সাথে। দশ মিনিটের মধ্যে পাঁচ বার তার সেলুলার ফোন চলতি হিন্দী গানের সুরে গাঁকগাঁক করে উঠবে। ভাইটি লজ্জ...


(অণু)গল্প-২০। রগ।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: মঙ্গল, ০৪/০৮/২০০৯ - ৪:৪৭পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বিয়ের ঠিক তিনদিনের মাথায় পপি টের পেয়েছিল যে তার নব্য স্বামীটির একটি সমস্যা আছে। খুব মারাত্মক কোন সমস্যা না, তবে এটা একটা সমস্যা।
তার স্বামী সাইফ এমনিতে খুবই ভালো লোক। শান্ত এবং মার্জিত। শিক্ষিত এবং উদার। সভ্য এবং দয়ালু। শুধু তার ঘাড়ের একটা রগ একটু ত্যাড়া। সেই রগের অ্যান্টেনায় যদি একবার কোন কিছু ধরা পড়ে, তাহলেই হয়েছে। মুহুর্তের মধ্যে শান্ত, শিক্ষিত সভ্য এবং দয়ালু মানুষটি সম্পূ...


অণুগল্প-১৯। এক্সটারমিন্টর।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শনি, ০১/০৮/২০০৯ - ১০:৫৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

‘জয়নাল ভাই- আমরার কাজডা কি ঠিক হইতাছে?’

আজকে গরম পড়েছে বেশ। রোদের ঝাঁজে গোটা শহরটি যেন তাইতাই করে ফুটছে। কিন্তু তাই বলে তো আর সবকিছু থেমে থাকবে না। কাজ-কাম তো বাদ দেওয়া যাবে না।
বোশেখ-যষ্টি মাসে গরম যে পড়বে, সে তো সবারই জানা। কিন্তু এখন আষাঢ়ের প্রায় শেষ, এখনো যদি বৃষ্টি শুরু না হয় তাহলে জয়নালকে তো কাজে যেতেই হবে।
গরম গত কয়েক দিন ধরে চলছে, কিন্তু আজকে একদম সকালেই টের পাওয়া যাচ্ছিল যে...


(অণু)গল্প-১৮। যুদ্ধ।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: শুক্র, ৩১/০৭/২০০৯ - ১০:৫৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাধারণতঃ বাড়ী ফিরতে রাত দশটা বেজে যায় প্রতিদিন। আজকে তার চেয়ে একটু বেশী দেরী হোল।
তার পরের শিফটে কাজ করে ভারতীয় ছেলে মনোজ। আজকে সে আসতে প্রায় কুড়ি মিনিট দেরী করেছে। তাকে সব কিছু বুঝিয়ে দিয়ে তারপর বেরোতে বেরোতে দেরী হয়ে গেল।
এত রাতে গোটা পাড়াটিই নিঝুম হয়ে যায়। ড্রাইভওয়েতে গাড়ীটা পার্ক করে পিছনের সীট থেকে ব্যাকপ্যাকটা বের করলো জালাল।

এই রকম দেরী হয়ে গেলে রুবী আগে মন খারাপ করতো...


অণুগল্প-১৭। রূপকথা।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: বিষ্যুদ, ৩০/০৭/২০০৯ - ১০:১৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

রাজ্যটির নাম --।
থাক, রাজ্যের নাম বলে আর কি লাভ? এমন কোন মানচিত্র নেই যেখানে ওই রাজ্যটিকে খুঁজে পাওয়া যাবে।

সেই রাজ্যে আছেন এক রাজা, আছেন রানী, আর আছে এক রাজকন্যা। রাজার সুশাসনে সারা রাজ্যে শান্তি বিদ্যমান। রাজকন্যা অতীব সুন্দরী, আর সেই সাথে তার গুণেরও অভাব নেই। রাজা রানী প্রায়ই ভাবেন যে মেয়েটিকে বিয়ে দিতে হবে। কিন্তু তার যোগ্য পাত্র কই?

একদিন খুব সকালে এক যুবক এসে উপস্থিত হোল রা...


অণুগল্প-১৬। ঝাপসা।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: বুধ, ২৯/০৭/২০০৯ - ১১:০৭অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

‘গুডমর্ণিং মা।’
‘গুডমর্ণিং গুলটুসোনা। রাতে ভাল ঘুম হয়েছিল?’
‘হুঁ।’

প্রতিদিন সকালে ঘুম ভাঙবার পর প্রথমেই চোখ পড়ে পায়ের কাছের দেয়ালে। সেখানে মায়ের একটি বড় ছবি লাগানো আছে।

ঘুম ভাঙ্গার পরের এই সময়টুকু তুপার খুব ভালো লাগে। তখন তার চোখে হাই পাওয়ারের চশমাটি থাকে না বলে সবকিছুই কেমন যেন অস্পষ্ট মনে হয়। মনে হয় যেন সব কিছু একটা ঘষা কাঁচের দেয়ালের অপর পাশে রয়েছে। শুধু ঝাপসা ভাবে অবয়ব...


অণুগল্প-১৫। পাথর।

জাহিদ হোসেন এর ছবি
লিখেছেন জাহিদ হোসেন (তারিখ: মঙ্গল, ২৮/০৭/২০০৯ - ১০:০১অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

‘আই উইল গিভ ইউ দ্য বেস্ট রক, বেইবী। আই প্রমিস।’

কতকাল আগের কথা।
দু বছর আগে তাদের বিয়ের পঞ্চাশ বছর পূর্তি উৎসব হয়েছিল। ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনি আর অন্য আত্মীয়স্বজন মিলিয়ে অনেক লোকের মেলা বসেছিল বাড়ীতে। সেদিন কিন্তু এই কথাটি মনে পড়েনি ইসাবেলার। কিন্তু আজ মনে পড়লো।

তার মানে বায়ান্ন বছর আগে কথাগুলো বলেছিল জ্যাক। ভালো নাম হ্যারিসন স্মিট, বন্ধুরা আদর করে ডাকতো জ্যাক। সেদিন সন্ধ্যেবে...