ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পর্ব-৬(গ)।

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ৩১/০১/২০০৮ - ১১:০৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

(আগের অংশটুকু জানার জন্য ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়। পর্ব-৬(ক) এবং পর্ব-৬(খ) পড়ুন)

লোকটি বলে, "শুনেন ভাই, কক্সবাজারে তো আসল সমুদ্র নাই। আসল সমুদ্র যদি দেখতে চান, তাহলে একটু কষ্ট করে চলে যান টেকনাফ। সেইখানে আছে সমুদ্র। আহহা-পানির সেকি রং। কক্সবাজারে পানির কোন রং নাই, যাও একটু আছে তাও পানসে। টেকনাফের পানির রং হচ্ছে নীলচে সবুজ। সেই পানি যখন তার সাদা ফেনা নিয়ে ছুটে আসবে, তখন আপনার খালি একটা কথাই মনে হবে। মনে মনে বলবেন, আল্লাহ্‌ আমার মউত যেন এতো সুন্দর হয়।"

গল্পের মাঝখানে হঠাত্ করে আবার মৃত্যুর কথা কেন? আমরা একটু ঘাবড়ে যাই। লোকটির মতলবটা কি?

সে বলেই চলে,"বালুর চরে দেখবেন লাল কাঁকড়া, দেখবেন ইয়া বড় জেলী ফিশ। চোখ বন্ধ করে সমুদ্রের আওয়াজ শুনবেন। দেখবেন বাতাস আর পানি কেমন এক সাথে মিলছে এইখানে। কক্সবাজারে আছে এইসব?"
আমরা ঘাড় নাড়ি। নাহ এইসব জিনিস কক্সবাজারে কোথায় পাবো?

লোকটার সিগারেট শেষ হয়ে গিয়েছিল। সে পকেট থেকে আর একটা বার করে। তার পাশে বসা মাসুদ তাড়াতাড়ি ম্যাচ বের করে সেটা ধরিয়ে দেয়।

"তারপর একটা রিক্সা নিয়ে সমুদ্র থেকে যাবেন নদীর কাছে। মানে নাফ নদীর ঘাটে।"
"কেন? সেখানে কি?"
"নদী পার হয়ে ওপার যাবেন।"
"ওপারে তো বার্মা।"
"হ্যাঁ। বার্মা যাবেন। প্রতিদিন টেকনাফ থেকে একশো মানুষ নিয়ে একটা ফেরী ওপার যায়, আর ওপার থেকে আর একটা ফেরী একশো মানুষ নিয়ে এপার আসে। বাজার-সদাই করার জন্য। এখানে পাসপোর্ট-ভিসা লাগেনা। বিকালে আবার তারা যার যার দেশে ফিরে যায়। ওই ফেরী ধরে ওপার যাবেন। যাওয়ার সময় নাফ নদীর সৌন্দর্য্য দেখবেন। এই রকম নদী আপনারা জিন্দেগীতে কোনদিন দেখেন নাই, দেখবেনও না।"

"নদীরে গুল্লি মারেন। ওপারে যেয়ে কি করবো বলেন?"
আমাদের প্রশ্নে লোকটি হাসে। "কি করবেন? বলি ভাই, বলি। ওপারে আছে একটা ছোট্ট বাজার। সেখানে টুকটাক জিনিস কিনতে পারেন, দামে অনেক সস্তা। ভাল চুরুট পাবেন, গায়ের চাদর পাবেন, বার্মিজ লুংগি পাবেন। কিন্তু এইগুলি আসল ব্যাপার না। বাজারের পূর্ব কোণায় আছে একটা ছোট্ট দোকান। খাবার দোকান। দোকানের মালিকের নাম লুইন, বয়েস পয়তাল্লিশ এর মতো হবে। সে বাংলা ভালই বুঝে, কিন্তু সে কানে কম শুনে, আপনাদের চিল্লায়া কথা বলতে হবে।"

সাসপেনসে আমাদের চোখ বড় হয়ে আসে। কে এই লোকটি? কেন সে এই গল্প বলছে আমাদের?
"তারপর কি হবে?"
"লুইনকে বলবেন যে আপনারা ভাত খাবেন। মুরগীর গোস্ত দিয়ে ভাত খাবেন।"
"তারপর?"
"সে আপনাদের মুরগীর গোস্ত দিয়ে এক প্লেট ভাত এনে দিবে।"
"তারপর?"
আমাদের এই প্রশ্নে লোকটি যারপর নাই বিরক্ত হয়। "তারপর আবার কি? মুরগীর গোস্ত দিয়ে ভাত খাবেন। ব্যাস।"
আমরা হতভম্ব। ভাত খাবো মানে?
লোকটির স্টপ বোধহর এসে যায়। সে উঠে দাঁড়ায়। আমাদের মুখের দিকে তাকিয়ে বোধহয় তার মায়া হয়।
"ভাইসকল, আমি আমার জান বাজি রেখে বলতে পারি আপনারা জীবনে কোনদিন এতো স্বাদের জিনিস খান নাই। একদম বেহেশ্‌তি জিনিস। সারাজীবন আর কোন কিছু খেয়ে ভাল লাগবেনা। আমার কথাটা বিশ্বাস করেন।"

লোকটি নেমে যায়, আমরা কেমন যেন একটা ঘোরের মধ্যে থাকি। পৌঁছাবার আগেই কক্সবাজারকে অপছন্দ করা শুরু করে দেই। আমাদের মাথায় তখন শুধু টেকনাফ আর টেকনাফ।

কক্সবাজারে হোটেলে উঠেই স্যারকে বলি,"এখানেতো কিছু নাই স্যার। চলেন টেকনাফ যাই।"
বাসের মধ্যে স্যার আর অন্য কিছু ছেলেরা পিছনের দিকে বসেছিল, তাই তারা লোকটির গল্প শুনেনি। তারাতো সবাই আকাশ থেকে পড়লো। তাদের প্ল্যান হচ্ছে হিমছড়ি যাওয়া। শুরু হোল মহাতর্ক, হিমছড়ি বনাম টেকনাফ। শেষ পর্যন্ত রফা হোল এই যে টেকনাফ গ্রুপ চলে যাবে টেকনাফ, আর হিমছড়ি গ্রুপ--। হু কেয়ার্স হিমছড়ি গ্রুপ কি করবে?

পরদিন খুব সকালে সূর্যোদয়ের আগেই আমরা রওনা দিলাম। টেকনাফ-বী রেডী। উই আর কামিং। কামিং এর বারোটা বাজলো পয়তাল্লিশ মিনিট পর। একটা বিকট ঘড় ঘড় আওয়াজ করে বাস থেমে গেল। কি কেইস? কতক্ষণ লাগবে? বাস ঠিক করতে লাগলো প্রায় এক ঘন্টা। পথে আরো খুচরো কিছু দেরী হোল। ফলে আমাদের পৌছাতে পৌছাতে প্রায় দু ঘন্টা বেশী সময় লাগলো। টেকনাফ নেমেই দৌড় দিলাম নদীর দিকে।

কিন্তু ভাগ্যদেবী সেদিন আমাদের সাথে ছিলেন না (পরে জেনেছি উনি বেশি পয়সার লোভে হিমছড়ি গ্রুপের সাথে ছিলেন। হিমছড়ি জায়গাটা নাকি উনার আগে দেখা হয়নি)। নদীর ঘাটে এসে শুনলাম ফেরীটি আধা ঘন্টা আগে চলে গেছে ওপারে। পরের দিন সকালের আগে আর কোন ফেরী নেই। আমাদের সবার মুখ অন্ধকার হয়ে এলো।

কি আর করা? গেলাম সমুদ্রতীরে। যেয়েই মনটা ভাল হয়ে গেল। লোকটি যা যা বলেছিল একদম তাই। ছবির মত সুন্দর। "হায়রে আমার মন মাতানো দেশ"। এমন একটা সুন্দর দেশে জন্ম হয়েছে আমার! আনন্দে চোখে পানি আসে।
(সমুদ্রের বর্ণনা দিয়ে পাতা ভরিয়ে লাভ নেই। ইচ্ছে হলে গিয়ে দেখে আসতে পারেন।)

এখন কি করি?
আমি বললাম, "চল থানায় যাই। থানাটা দেখে আসি।"
সবাই আমার দিকে অবাক হয়ে তাকায়। কেন, থানায় যাবো কেন? তোর কিছু হারিয়েছে নাকি?
মিন মিন করে বলি,"ওখানে একটা কুয়ো আছে বলে শুনেছি। আসলেই আছে কিনা সেটা খুব দেখার ইচ্ছে ছিল।"

নির্বাক চলচ্চিত্রের এক সময়ের পর্দা-কাঁপানো নায়ক ধীরাজ ভট্টাচার্য্যের "যখন পুলিশ ছিলাম" বইটিতে এই কুয়োটির উল্লেখ আছে। বিস্তারিত বললাম না, উত্সাহীরা বইটি পড়ে দেখতে পারেন। একসময় বইটি পড়ে কেঁদেছিলাম মনে আছে।

কাজ যখন আর কিছু নেই, অগত্যা সবাই গেল আমার সাথে। আমি ভিতরে ভিতরে উত্তেজনায় টান-টান হয়ে আছি । কুয়োটি কি সত্যিই আছে? যেহেতু তারা বইটি পড়েনি, অন্যেরা বুঝতেই পারছেনা কেন আমি এমন করছি।
একসময় পুলিশ ব্যারাকে হাজির হলাম। দূর থেকে দেখলাম, সত্যি-বইয়ের কথাটি সত্যি। কুয়োটি বাস্তবে বিদ্যমান। কারণে অকারণে চোখে পানি আসাটা আমার চিরকালের বদ অভ্যাস। এবারেও তার ব্যতিক্রম হোলনা। অন্যেরা খুবই অবাক হচ্ছে আমাকে দেখে।
আমি রায়হানকে বললাম,"তুই না তাজমহল দেখতে চেয়েছিলি। এটাও এক ধরণের তাজমহল। দেখে রাখ। আমার কাছে নগন্য এই কুয়োটির মূল্য তাজমহলের চেয়ে এক রতিও কম নয়।"
রায়হান অবাক হয়ে বলে,"কুয়োটির মাজেজা কি বল? পুরো স্টোরী না জানলে তো ভিতরে আবেগ আসছে না।"
আমি বললাম,"এর কাহিনী বলার মতো যোগ্য ভাষা বা অনুভূতি কোনটাই নেই আমার। ঢাকা ফিরে তোকে একটা বই পড়তে দেব। সেখানেই সব কিছুর উত্তর পেয়ে যাবি।"

সে যাত্রা আমাদের আর নাফ নদী পার হওয়া হয়নি। দেখা মেলেনি লুইন বা তার বিখ্যাত খাবারের। তবে আজো মাঝে মাঝে মনে ভিতরে এক ধরণের দুঃখবোধ জাগে। না জানি কেমন ছিল তার স্বাদ। স্ত্রীর কাছে শুনেছি যে আমি নাকি খুব স্ট্রেসে থাকলে মাঝে মাঝে ঘুমের মধ্যে ফুঁপিয়ে উঠে বলি,"খাবো, আমি খাবো"। কি খেতে চাই অমন করে, জানিনা। হয়তো বা মিস্টার লুইনের রান্না করা মুর্গির গোস্ত দিয়ে এক প্লেট ঝরঝরে চালের সাদা ভাত।

___________________________
ফুটনোটঃ
সেবার সস্তায় পেয়ে টেকনাফ থেকে আমরা সবাই বার্মিজ চুরুট কিনেছিলাম অনেক গুলো। এক বছর পরে একদিন খুব সকালে দেখি আমাদের হলের চতুর্দিকে পুলিশ। ঘরে ঘরে তল্লাশী হবে। আমাদের ঘরে এসে পুলিশ সেই চুরুটের কয়েক খানা পেয়েছিল। তাতে হুজুরদের কি হম্বিতম্বি!
"জানেন আপনাদের মতো চোরাচালানীদের সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদন্ড। দেশের দুশমন আপনারা। দেশের বিড়ি বাদ দিয়ে বার্মিজ চুরুট খান। এখন যদি আপনাদের ধরি খবরের কাগজের প্রথম পাতায় ছবি ছাপা হবে আপনাদের। শুধু দয়া করে আর আপনাদের বাপ-মায়ের কথা চিন্তা করে আজকে আপনাদের মাপ করে দিলাম। কথাটা মনে থাকে যেন।"
সেদিনের চেয়ে বেশি অবাক আমার জীবনে খুব কমই হয়েছি।

(শেষ)

-নির্বাসিত


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

এই লেখাটি এবং তার আগেরটি প্রথম পাতা থেকে অদৃশ্য হোল কোন যাদুবলে তা ঠিক বুঝলাম না।
কপাল!

-নির্বাসিত

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ অরূপ।
যেহেতু পুরো লেখাটি যথেষ্ট বড়, তাই তিনটে ভাগ করতে হয়েছিল। আর একসাথে তিনটে ভাগ পোস্ট করতে চেয়েছিলাম যাতে পাঠকদের অপেক্ষা করতে না হয়। ফ্লাডিং করাটা উদ্দেশ্য ছিলনা।
পূর্ব প্রকাশিত লেখা পোস্ট করা নিয়ে সচলের নীতিমালাটি আমার কাছে একটু অস্পষ্ট। আমি কিন্তু অনেক লেখাই অন্য জায়গাতেও পড়েছি।
যাই হোক-ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে আমার লেখাগুলো আমি সচলে পোস্ট করছিনা, এই কথা দিচ্ছি।
ধন্যবাদ আবারো।

-নির্বাসিত

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

ভাই নির্বাসিত,
আপনার লেখার উপরে আস্থা রাখুন। ওগুলো একটু বড় হলেও মনে হয় অনেকেই পড়বেন।
লেখাটা যদি টেনে ধরে রাখে, তাহলে পাঠকের যাবার আর জায়গা কই?

আপনি দ্রুত স্রল হউন, এই আশা করি।

আর ভুলেও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্মৃতিচারণ করা এখানে বন্ধ করবেন না। লেখক হয়ে পাঠকের কথা ভুলে যান কি করে?

বুড়োরা সবাই সমস্বরে বললো, "নবজন্ম", আমি চাইলাম "একটা রিওয়াইন্ড বাটন"

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ উত্সাহ দেবার জন্য। পর্ব-৭ আসছে শিগগীরই।

-নির্বাসিত
---------------------------------------------------------
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

অতিথি লেখক এর ছবি

অরূপ-- আপনার বিস্তারিত জবাবের জন্য অসংখ্য ধন্যবাদ।
ভল থাকুন।

-নির্বাসিত

স্নিগ্ধা এর ছবি

প্রিয় নির্বাসিত, অতিথিদের ব্যক্তিগত মেসেজ পাঠালেও সেটা সমষ্টিগত ভাবে পড়া যায় - অতএব এখানেই লিখছি। ইন্টারনেট এর জগতে আমার বিচরণ খুবই সীমিত। বেশীরভাগ বাংলা ব্লগের অস্তিত্বের কথাই আমি কিছুদিন আগ পর্য্যন্ত জানতাম না। সচলায়তনে আসার আগে আমি শুধু মুক্তমনার সাথে পরিচিত ছিলাম - তাও ব্যক্তিগত বন্ধুতার কারণে। সেসব বন্ধুরাই আমাকে সচলায়তনের খোঁজ দেয় এবং লেখা টেখা পড়ে আমার ভালো লাগে। আমাকেও নিবন্ধন করার পরে অনেকদিন অপেক্ষা করতে হয়েছে এবং আমিও খুব বিস্ময় এবং বিরক্তির সাথে ভাবতাম একটা ব্লগ এ সদস্য হতে এত কিছু এটা কি এমন জিনিষ???? কিন্তু দু’তিন সপ্তাহ আগে আমি বুঝতে পারি , কেন। একটা বহুল পরিচিত বাংলা ব্লগে গিয়ে আমি - ঠিক ভাষাটা কি হবে বুঝতে পারছি না - হতভম্ব, নাকি বাকরুদ্ধ, নাকি শোকাহত, না কি যে আমি হলাম আমি নিজেই ঠিক জানি না। এবং তারপর সচলায়তনের এই লিখিয়ের ধাঁচ বুঝে সদস্য করার (অসহ্য) নিয়ম প্রবর্তন করার জন্য মডুদের মাফ করে দিলাম (তারা আমার মাফের জন্য বসে থাকুক বা না থাকুক, মাফ আমি করবোই হাসি ) । সচলায়তনের - আমার মতে - সবচাইতে বড় গুণ হচ্ছে নোংরামীকে প্রশ্রয় না দেয়া। সচলদের (নিজেকে বাদ দিয়ে) লেখার মান নিয়ে বাড়তি কিছু বলার নেই কারণ সেটা একেবারে চাক্ষুষ। আপনার লেখার ধরন অপূর্ব, আপনার গল্প বলার কায়দা আকর্ষণীয়, আপনার পরিমিতিবোধ ও প্রশংসার যোগ্য। এত কিছুর পরও না লিখে আপনি পাঠকদের শাস্তি দেবেন কি বলে ? হাসি

জিহাদ এর ছবি

আপনি কোন ব্লগ সাইটটির কথা বলেছেন সেটা যাদের ব্লগিং এর জগতে এক আধটু বিচরণ রয়েছে তাদের কারো বুঝতে বাকি নেই।আমিও পুরোপুরি একমত।সদস্যপদ দেয়ার ব্যাপারে একটু কঠোর হবার প্রয়োজন আছে বৈকি।কিন্তু আমিও এখন ঐ দলের,সদস্যপদ পাবার আশায় যারা অনভ্যস্ততার থোড়াই কেয়ার করে নিয়মিত কী বোর্ড খটখটানোর চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
অপেক্ষার প্রহর আসলেই অনেক দীর্ঘ হয়... সচলায়তনে এসে সে কথাই আবার রিভাইজ দিতে হচ্ছে... মন খারাপ

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

সচলায়তনের - আমার মতে - সবচাইতে বড় গুণ হচ্ছে নোংরামীকে প্রশ্রয় না দেয়া।

একশো ভাগ সহমত। আর এই কারণেই সচলায়তনে অসাধারণ এবং অতীব প্রীতিকর পরিবেশ। ওই "বহুল পরিচিত বাংলা ব্লগে" কয়েকদিন ঢুঁ দিয়েছিলাম। ভালো লেখা ওখানেও আছে, কিন্তু পাশাপাশি আবর্জনার পরিমাণ দেখে রুচি উঠে গেছে।

"লিখিয়ের ধাঁচ বুঝে সদস্য করার (অসহ্য) নিয়ম প্রবর্তন করার জন্য মডুদের" আপনি ক্ষমা করে দিচ্ছেন, আর আমি এই নিয়ম রীতিমতো সমর্থন করি।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

স্নিগ্ধা ও সন্ন্যাসী- আপনাদের বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। যেহেতু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপর লেখা সিরিজটি অন্যত্র প্রকাশিত হয়েছে, তাই সচলে পুনর্মুদ্রন করার ব্যাপারে আমি উপরের মন্তব্যটি করেছিলাম।
আপনাদের কথাগুলোর সাথে আমিও একমত। লেখার মান রক্ষার্থে সচলের কঠিন নীতিমালা যে যৌক্তিক তা মানছি, তবে বোঝেনইতো, আমরা সবাই মানুষ । মাঝে মাঝে মন খারাপ লাগে, এই যা।
পর্ব-৭ টি একবারেই দিয়ে দেব। আশাকরি তাতে পাঠকেরা বিরক্ত হবেন না।

-নির্বাসিত

--------------------------------------------------------
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

তিথীডোর এর ছবি

আপনার লেখার ধরন অপূর্ব, আপনার গল্প বলার কায়দা আকর্ষণীয়, আপনার পরিমিতিবোধ ও প্রশংসার যোগ্য। এত কিছুর পরও না লিখে আপনি পাঠকদের শাস্তি দেবেন কি বলে?

আহা, পাঠকদের ক্যান এরকম ঠকালেন রে ভাই! আপনার লেখা মিস করি।

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিকই বলেছেন। যখন পড়েছিলাম, তখন ভয়ানক কষ্ট পেয়েছিলাম। জানিনা এখন কেমন লাগবে।
-নির্বাসিত

সংসারে এক সন্ন্যাসী এর ছবি

আপনাদের স্যারটাকে কিন্তু আমার খুব মনে ধরলো। আমার ধারণা, খুব চমত্কার মানুষ তিনি।

~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~~
টাকা দিয়ে যা কেনা যায় না, তার পেছনেই সবচেয়ে বেশি অর্থ ব্যয় করতে হয় কেনু, কেনু, কেনু? চিন্তিত

অতিথি লেখক এর ছবি

ফজল স্যারের বর্তমান হদিশ আমরা কেউই জানিনা। কোথায় যে উবে গেলেন তিনি?

-নির্বাসিত

অতিথি লেখক এর ছবি

অলৌকিক-কিছু কিছু প্রাণী আছে যারা পানি ঘোলা না করে খেতে পারেনা। আমিও বোধকরি সে দলের একজন। এখন বোধোদয় ঘটেছে। একবারেই দিয়ে দেব পুরো পর্বটি।
আমার লেখা পড়ার জন্য এবং আমাকে সচল বানানোর অজস্র অনুরোধের জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

-নির্বাসিত
----------------------------------------------------
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

অতিথি লেখক এর ছবি

আমাদের ক্যাডেট কলেজ থেকে সাতদিনের শিক্ষা- সফরে কক্সবাজার, টেকনাফ দুই জায়গাতেই নিয়ে যাওয়া হয়। আমার মনে আছে টেকনাফ এ যেয়েই আমরা ছুটেছিলাম বার্মিজ মার্কেটের উদ্দেশ্য। কলেজের ছোট ভাইদের জন্য আচার কিনতে। আমাদের ৫০ জন ছেলের মধ্যে মাত্র ২ জন সৈকতে গিয়েছিল। টেকনাফ ছেড়ে আসার সময় আমরা যখন বাসে উঠলাম, এডজুটেন্ট স্যার জিজ্ঞেস করলেন, "কে কে বিচে গিয়েছ?" যখন শুনলেন মাত্র দুইজন, তখন আমাদের উদ্দেশ্য করূণ ভাবে মাথা নাড়লেন। যার একটাই মানে "ছিঃ"। পরবর্তীতে এই বিচ দেখার জন্য আমি আবার টেকনাফ গিয়েছিলাম। ভাগ্য এতোটাই ভালো ছিল যে, নাফ নদীর পাশে রেস্টহাউসে থাকার অনুমতি পেলাম। নাফ নদীর অপরূপ সৌন্দর্য আমি কোনদিন ভুলবনা। ভুলবনা টেকনাফের সৈকতের কথা, যেখানে থরে থরে সাজানো আছে চোখ জুড়ানো নকশা করা নৌকগুলো। নস্টালজিক করে দিলেন ভাই। আর লিখবেন না কেন? রাগ কইরেননা। অতি দ্রুত সচল হয়ে যাবেন আশা করি। তখন আপনার আর অন্য কোথাও লেখা দিতে নিশ্চই ইচ্ছা করবেননা।

রায়হান আবীর

অতিথি লেখক এর ছবি

আবীর-আমরা যখন গিয়েছিলাম সেটি বহুযুগ আগের কথা। তখন টেকনাফে কোন বার্মিজ মার্কেট ছিলনা। কক্সবাজারে গোটা দশেক দোকানের একটা বার্মিজ মার্কেট ছিল।। আমরাও সেখানে ভিড় জমিয়াছিলাম। প্রত্যেকেই বার্মিজ দোকানী (মহিলা) দেখে প্রেমাতুর হয়ে পড়েছিল, মনে আছে। ফজল স্যার পর্যন্ত।

আর আমি আসলে সচল হবার বিষয়টি নিয়ে রাগ করিনি কখনো। একটু অবাক হয়েছি কখনো কখনো। কেউ কেউ তিন চারটে পোস্ট করেই সচল হয়ে গেল, অথচ আমি হচ্ছিনা, সেটা দেখে একটু জানতে চাচ্ছিলাম যে বিষয়টা কি। এইটুকুই।

সচলের মান নিয়ে আমার কোন প্রশ্ন নেই। এটি যে ভাল লেখাকে সাপোর্ট করে তা তো সর্বজনবিদিত।

আমার লেখা পড়ার জন্য এবং পছন্দ করার জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ।

-নির্বাসিত
_______________________________
যতদূর গেলে পলায়ন হয়, ততদূর কেউ আর পারেনা যেতে।

যুমার এর ছবি

বেশ ঝরঝরে লেখা,বেশ লাগল পড়তে। চলুক

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।