সায়েন্স ফিকশন : ব্যাংকস এর কালচার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ৩১/০৩/২০০৯ - ১০:২৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমার কিছু বন্ধুর মত একেবারেই ছোটবেলা থেকে বিজ্ঞান কল্পকাহিনীর অত বড় ফ্যান ছিলাম না আমি। রেগুলার আসিমভ ইত্যাদি পড়ি নাই তা না (ফাউন্ডেশন তো আমাদের প্রজন্মের স্টেপল-ই বলা যায়, তবে বাংলা রূপান্তর এর থেকে ইংরেজিটা পড়ে অনেক বেশি তৃপ্তি পেয়েছি), তবে ফ্যান্টাসি, গোয়েন্দা কাহিনী ইত্যাদি বেশি ভাল লাগতো।

গত তিন বছরে হঠাৎ আবার আবিষ্কার করলাম সাই-ফাইকে। বড়খালার বাসার ভাড়াটে রাব্বি ভাই-এর শেলফ-এ পিটার এফ হ্যামিলটনের 'দ্য নিউট্রোনিয়াম আলকেমিস্ট' বইটার পিছনের সারাংশ পড়ে আগ্রহ জাগলো। ডাউনলোড করে পড়ে বেশ ভাল লাগলো। সেই থেকে শুরু আরকি এই 'পূনরাগমন'টা।

যাহোক, ধীরে ধীরে আমারো পুরো বিবর্তনটাই বলবো, কিন্তু এখনকার জন্য আলোচনা করতে চাই ব্রিটিশ লেখক (স্কটিশ, মোর লাইক ) আয়ান এম ব্যাংকস কে নিয়ে।

ব্যাংকসের লেখায় বেশ বৈচিত্র্য আছে, বেশ কয়টি 'জনরঁ'-য়, বা শাখায় লেখেন। আমি তাঁর বিজ্ঞান কল্পকাহিনী পড়ি, 'কালচার' সিরিজের। এগুলো ছাড়াও ব্যাংকস সাহেব অন্যান্য বিজ্ঞান কল্পকাহিনী লেখেন, কিন্তু কালচার-ই মূখ্য এবং সর্বাধিক জনপ্রিয়।

কালচার একটা 'গ্রুপ সিভিলাইজেশন', সামষ্টিক সভ্যতা। আমাদের তুলনায় 'কালচার' আদর্শিক বা ইউটোপিয়ান সভ্যতা। দারিদ্র্য বলে কালচারে কিছু নেই, সবাই পূর্নাঙ্গভাবে শিক্ষিত (আবারো, আমাদের তুলনায়)। কালচার এর সর্বমোট জনসংখ্যা ৩০ ট্রিলিয়ন-এরও বেশি, তবে এর মধ্যে ১৩ ট্রিলিয়ন যান্ত্রিক/কৃত্রিম নাগরিক। এটা আরেকটা আগ্রহের জিনিস আমার কাছে। কালচারে উঁচুমানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে মানুষের সমকক্ষ বা তার চেয়ে উপরে ধরা হয়। কালচার এর মূল নিয়ন্তা ধরা হয় এরকম অত্যন্ত ক্ষমতাশালী কিছু কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তাকে। এদেরকে বলা হয় 'মাইন্ড', মন; বেশ মোক্ষম নাম।

জানি না গরীব দেশের নাগরিক বলে কি না, নাকি এটা মানুষের সাধারণ আশাবাদিতাই (এটাই মনে হয়, নাহলে ধনী দেশগুলোতে এই সিরিজ এত জনপ্রিয় হল কি করে?) , কালচার এর ধারণাটা আমার বেশ ভাল লাগে। স্বভাবতই আদর্শিক সভ্যতাগুলোর কোন সমস্যা থাকে না, সুতরাং ব্যাংকস কালচার নিয়ে লিখতেও পারেন না।

একটু আগে বলেছিলাম যে ব্যাংকস কালচারকে নিয়ে লিখতে পারেন না। আদর্শিক সভ্যতা যেহেতু আদর্শিক-ই, এদের আদৌ বড় ধরনের তেমন কোন সমস্যা হয় না, সুতরাং লেখার জন্য কালচার কোন কাজের জিনিস না।

তাহলে কি নিয়ে লেখেন ব্যাংকস? যেহেতু কালচারের নিজের (তেমন কোন) সমস্যা নেই, সুতরাং এরা অন্যান্য সভ্যতার 'উপকারে' (তাদের মতে) ব্যস্ত থাকে। এগুলো করতে গিয়ে কালচার কিছু সমস্যায় পড়ে। এসব নিয়েই মূলত ব্যাংকসের বইগুলো।

এই বিশাল যে কালচার (১ ট্রিলিয়ন = ১ লাখ কোটি, বা ১০০০ বিলিয়ন; কালচারের লোকসংখ্যা ৩০ ট্রিলিয়নেরও বেশি), এর বেশিরভাগই কিন্তু এই 'উপকারমূলক হস্তক্ষেপে' জড়িত না। কালচারের ক্ষুদ্র একটা অংশ 'কন্টাক্ট' সাধারণত এ কাজগুলো করে। কন্টাক্টের একটা অংশ হল 'স্পেশাল সারকামস্টানসেস', যাদের (জৈবিক সদস্যদের) অতিসরলীকরন করলে কালচারের মাসুদ রানা টাইপ ধরা যায়।

তবে বিভিন্ন বইয়ে ব্যাংকস সাহেব প্রমান করেছেন যে এই 'মহাশক্তিধর' কালচারও কিছুই না তাঁর বিশাল ব্রক্ষান্ডে। 'এক্সেশন' - এ অন্য বিশ্বের একটা মহাশূন্যযানের সামনে কালচারের ব্যবহার অনেকটা কালচারের একটা নভোযান পেলে আমাদের যে অবস্থা হবে, তার মত।


মন্তব্য

আলাভোলা এর ছবি

হে সাই-ফাই লেখক, আপনার নামটাতো জানা হলো না !
--
আমার এই দেশেতে জন্ম, যেন এই দেশেতেই মরি...

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।