বোগেনভিলিয়া বাড়ির ল্যান্ড রোভার বালিকা

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ০৯/০৪/২০০৯ - ৭:৫৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

যে-ই হেঁটে যাক তুমি যেওনা
আহা তোমার ল্যান্ড রোভারটা কষ্ট পাবে

পেছনের ডান কোণায় রোজদিন বস, ব্যতিক্রম হলে রেক্সিনের গদিটা ভুগবে বিমর্ষতায়
তার মন খারাপে কেমন হয় তুমি জান
তাকে বঞ্চিত করনা

পাদানিতে জুতো খুলে পা রাখ
একদিন জুতো সমেত রেখেছিলে
তোমার মেঘসাদা গাড়ির খয়েরী পাদানির রাগ তুমি দেখনি সেদিন

আর তোমার রিয়ার ভিউ মিরর-
কতদিন রাতে রাতে সে তোমার স্পর্শের কামনায় পাগল হয়েছে
তুমি বোঝনা দিনে তিনবার তোমার আদেশী চালক ঠোটে তাক করে মুখ

যেমনি হোক পাশের বাড়ির দোলন চাপা তোমার বিশাল আঙিনার সবুজ মারিয়ে ছুয়ে নিতে চায় তোমার জানালা
গ্রিল গলে সূর্যটা উকি দেয় অহরহ
দূর থেকে এক দূরবীনচোখ চোখে পরে থতমত

আমি থাকি ওই নীচতলায়
তোমার দেয়ালের বোগেনভিলিয়ার পাপড়ি উড়ে যায় যেখানে বাতাসে

দিনরাত নেই
ল্যান্ড রোভার বাড়ির দারোয়ান হাক দেবেই ফুটপাতে হাটলে
বুল ডগ দুটো একটা মানুষ দেখার বদলে সাতবার ঘেউ ঘেউ করার নিয়ম
এসব আমার হিসেব করা তোমার হিসেবও জানি

ভেবেছ কবিতা লিখি বলে একদিন কুকুর দুটোর টুটি চেপে তোমার বারান্দায় হানা দিতে পারবনা
সাদা টপসের ভেতর থেকে চর্বির পিন্ড ছিরে নিতে জানিনা

যেদিন আর কবিতা লিখবনা
তোমার সাদা টপস লাল রঙে ভিজে উঠবে ফোটায় ফোটায়
তোমার মৃত শরীরও কি সমান প্রিয় হবে তাদের
যতটা আমার

-অর্জুন মান্না


মন্তব্য

মূলত পাঠক এর ছবি

চন্দ্রবিন্দু কি কম পড়িয়াছে?
ঠোটে
দোলন চাপা
ছুয়ে
উকি
হাক
হাটলে
টুটি
ছিরে
ফোটায় ফোটায়

এই বার র/ড় সমস্যা:
মারিয়ে
পরে (পড়ে হবে যদি না 'আগে পরে' বলতে চেয়ে থাকেন)
ছিরে

২৭ লাইনের কবিতার পক্ষে ১২ খানা ভুল খুবই বেদনাদায়ক। তবে আশা করছি এই ভুল ধরে দেওয়া আপনাকে অভিমানী ক'রে তুলবে না।

বিষয় নিয়ে কিছু বললাম না। তার মানে অবশ্য এ নয় যে সেটা অ-কহতব্য কিছু। এতেও অভিমানী হবেন না আশা করতেই এই খোলসা করা। আগে কেউ আহত হয়েছেন, তাই এবার সব স্পষ্ট ক'রে বললাম।

আরিফ জেবতিক এর ছবি

এটা হচ্ছে পত্রিকায় কাজ করার কুফল ।
আমরা সকল পত্রিকাজীবিরাই এটাতে ভুগি ।
যা ইচ্ছা লিখেন , প্রুফ রিডার তো আছেই ...এই মনোভাবের কারনে এখন আমাদের সবার বানানের অবস্থাই বড্ড খারাপ ।

মূলত পাঠক এর ছবি

এখানে তো আছেই প্রচুর প্রুফ রিডার, তবে আমরা লেখা ছাপা হবার আগে সেটা করতে পারি না এই যা ফারাক। হাসি

কনফুসিয়াস এর ছবি

কবিতা ব্যাপক পছন্দ হয়েছে।

-----------------------------------
আমার ইচ্ছে হলো বাজাতে গীটার, মন আমার, মন আমার, মন আমার-

-----------------------------------
বই,আর্ট, নানা কিছু এবং বইদ্বীপ

অতিথি লেখক এর ছবি

মূলত পাঠক,
একটুো অভিমান নয়। বরং আপনার এমন সুন্দর করে ভুল ধরিয়ে দেয়ায় আনন্দিত।
-অর্জুন মান্না

মূলত পাঠক এর ছবি

যাক, আশ্বস্ত হলাম। বিষয় নিয়েও কথা বলা যায়, যদিও আমি কবিতা বিশেষজ্ঞ নই আদৌ। তবে সেটা আপনি শুনতে চাইলেই বলবো, এবং বুঝতেই পারছেন অবিমিশ্র প্রশংসা হবে না (হলে লাফিয়ে লাফিয়ে ইতিমধ্যেই বলে ফেলতাম)। হাসি

আরিফ জেবতিক এর ছবি

ভালো লাগেনি জনাব ।
কেন ভালো লাগেনি সেটা ব্যাখ্যা করতে পারব না , তবে আরাম পেলুম না ।

অতিথি লেখক এর ছবি

পাঠক,
সানন্দে স্বাগত

অতিথি লেখক এর ছবি

জেবতিক স্যার,
পত্রিকার ব্যাপারটা ঠিক বলেছেন।
আর আরামের জন্য অপেক্ষা করুন দয়া করে

অতিথি লেখক এর ছবি

কনফুসিয়াস,
ব্যাপক উৎসাহ পেলাম
ধন্যবাদ

মূলত পাঠক এর ছবি

কবিতাকে আমি সোজা করে বোঝার চেষ্টা করি, শিল্পের একাধিক ব্যাখ্যা নিয়ে আমার দ্বিমত নেই, তবে অন্ততঃ একটা ব্যাখ্যা থাকতেই হবে এই আমার মত। তো আমি এই কবিতাটারও একটা নিজস্ব ব্যাখ্যা বার করলাম, এবং এটা যেহেতু ভয়াবহ দুর্বোধ্য পর্যায়ের নয় তাই আশা করছি সেটা কবির নিজস্ব ব্যাখ্যার কাছাকাছি থাকবে।

দুটি চরিত্র: একটি সুন্দরী রমণী যে কিনা খুব ধনীও বটে, এবং তার প্রতিবেশী এক কবি যে তাকে কামনা করে, অথচ তার ধনের জন্য (বা গজদন্তমিনারে বাস করে সেই জন্যও) ঈর্ষা বা ঘৃণা গোছের কিছু একটা করে। অনুভূতির এই বৈপরীত্য সত্ত্বেও এই অবধি ঠিক ছিলো। কিন্তু এরপর তার যে ভাবটি প্রকাশিত হলো সেই রক্তলোলুপতাটা আমার খুব বেমানান ঠেকলো। বলতে ইচ্ছে হচ্ছিলো যে ঠিক করে নিন কী লিখবেন, "পুনশ্চ"র স্টাইলে গদ্যভঙ্গীতে মৃদুমন্দ প্রেমের কবিতা, নাকি "ছাড়পত্র"র শ্রেণীসংগ্রাম। তাছাড়া লেখার স্টাইলটা বেশ পুরোনো, আজকাল আর চলছে না। কবিতা ফ্যাশন মেনে লিখতে হবে এমন কথা হয়তো নেই, তবে সাধারণতঃ সেটাই হয়। যাঁরা তা না মেনেও সার্থক হন, তাঁরা নিজস্ব স্টাইল নিয়ে আসেন, এই কবিতাটি সেইরকম প্রতিশ্রুতি বহন করছে ব'লে মনে হল না।

তো এই হলো বক্তব্য, এবার গালাগাল করতে হয় করুন। লিখে ভাবলাম মুছে দিই, কী হবে শুধুশুধু সমালোচনায়। কিন্তু আলস্য চেপে ধরছে, এতোটা টাইপ ক'রে মুছে দিলেই হলো? তাই পোস্টালাম, খারাপ লাগলে কি রাগ হলে ব'লে ফেলুন কিন্তু অভিমান-জাতীয় কিছু করবেন না যেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনাকে আগেই ভরসা দিয়েছি। অভিমান বা এ জাতীয় সবই এখন পর্যন্ত অনুপস্থিত।
আপনি যেভাবে বুঝেছেন, আমার কোনো সমস্যা নেই।
শুধু একটা বিষয় মানতে পারছিনা।-
প্রেমের কবিতা নাকি শ্রেণী সংগ্রাম; কে কি লিখবে কিংবা দুটোই লিখবে কি-না বা তার বাইরের কিছু লিখা, পুরোটাই লেখকের একতিয়ার বলে মনে করি। বিশ্বাসও।

অতিথি লেখক এর ছবি

সাদা টপসের ভেতর থেকে চর্বির পিন্ড ছিরে নিতে জানিনা

যেদিন আর কবিতা লিখবনা
তোমার সাদা টপস লাল রঙে ভিজে উঠবে ফোটায় ফোটায়

বুঝলাম না এ অংশটা,তবে পড়ে ভাল লেগেছে যদিও না বুঝে ভাল লাগা ঠিক না

(জয়িতা)

অতিথি লেখক এর ছবি

জয়িতা,
রূপক অর্থে... বাকিটা ব্যাখ্যার সাহস পাচ্ছিনা।

রানা মেহের এর ছবি

কবিতা ব্যাপকরকম ভালো হয়েছে
কিন্তু মেয়েটা কে চিন্তিত
-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

-----------------------------------
আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

অতিথি লেখক এর ছবি

রানা মেহের,
আপনি কি ল্যান্ড রোভার কিনেছেন?

অর্জুন মান্না

জাকির জাহামজেদ [অতিথি] এর ছবি


আমার মাঝে এক মানবীর ধবল বসবাস
আমার সাথেই সেই মানবীর তুমুল সহবাস

এটা তো অনেক আগে শোনা-
অর্জুন মান্নার ?

অনিকেত এর ছবি

আমি কবিতা তেমন বুঝি না।
আমি যেটা বুঝতে পারি সেটা হল---কিছু একটা পড়ার পর ভাল লাগা বা খারাপ লাগা।

আপনার লেখাটা ভাল লেগেছে---

শুভেচ্ছা রইল--

অতিথি লেখক এর ছবি

অনিকেত,
তাই যথেষ্ট। আপনার মন্তব্য ভাল লেগেছে।

তারেক এর ছবি

আরো পাঠ প্রত্যাশী। লিখুন আমাদের জন্য হাসি
_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

_________________________________
ভরসা থাকুক টেলিগ্রাফের তারে বসা ফিঙের ল্যাজে

অতিথি লেখক এর ছবি

ফিঙের ল্যাজে ভরসা বাড়ছে
ধন্যবাদ

নজমুল আলবাব এর ছবি

শুরুর মতো শেষটা না।

------------------------
ভুল সময়ের মর্মাহত বাউল

অতিথি লেখক এর ছবি

অপু,
আত্মের বিশ্বাস বাড়ছে।

জাকির জাহামজেদ [অতিথি] এর ছবি


আমি থাকি ওই নীচতলায়
তোমার দেয়ালের বোগেনভিলিয়ার পাপড়ি উড়ে যায় যেখানে বাতাসে

ভালো লেগেছে।

জাকির জাহামজেদ

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বেশ ভাল লাগল। বিশেষ করে শুরুর দিকটা।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।