তবু এই ভালোবাসা ধুলো আর কাদা

নূপুরের ছন্দ এর ছবি
লিখেছেন নূপুরের ছন্দ [অতিথি] (তারিখ: শনি, ০২/০৫/২০০৯ - ১২:১৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

auto
বারান্দা থেকে দেখা আকাশের একাংশ
ছবি কৃতজ্ঞতা: নজরুল ইসলাম

তবু এই ভালোবাসা ধুলো আর কাদা
নুপুরের ছন্দ

অনেক প্রতীক্ষিত ঝড় এলো, বৃষ্টি হলো অনেকক্ষন। বারান্দাটায় দাঁড়িয়ে নজুর সাথে বৃষ্টির ছাঁট উপভোগ করলাম অনেকক্ষন।

ছোটবেলা থেকে নাখালপাড়ায় বড় হয়েছি। বিয়ের পর যখন উত্তরায় এলাম। খুব খারাপ লাগতো। কেন নীরবতাময়। কেমন যেন। প্রায়ই মন টিকতো না। মাঝে মাঝেই তাই চলে যেতাম বাপের বাড়ি। আস্তে আস্তে উত্তরার সাথে সম্পর্ক হতে লাগলো। মাঝে মাঝেই আমি আর নজু রিক্সায় করে ঘুরতাম। উত্তরায় এখনো রিক্সায় করে অনেকক্ষন ঘোরা যায়। পুরো ঢাকায় বুঝি আর কোথাও এমনভাবে রিক্সাবিহার এখন আর সম্ভব না। মস্ত চাঁদের নিচে খোলা রাস্তায় জোৎস্নায় মাখামাখি হয়ে ঘুরতাম দুজনে। একসময় আড়াইজন হলাম। সবাই মিলেই ঘুর ঘুর। খোলা ছাদে বৃষ্টিতে ভেজা, বৃষ্টিতে হাত ধরে ধরে হাঁটা। একসময় উত্তরাটা আপন হয়ে গেলো।

বাড়িটার একটা ছোট্ট বারান্দা আছে। সেই বারান্দার কোলে আছে মস্ত এক আকাশ। এত্ত বড় আকাশ এখন শহরের খুব কম বারান্দা থেকেই দেখা যায়। এত্ত খোলা আকাশ। মেঘ দেখি, সূর্য দেখি, চাঁদ দেখি। এই বারান্দাতেই বৃষ্টি আমায় ভিজিয়ে দেয়, পাগলা হাওয়া আমায় উড়িয়ে দেয় মাতাল করে।

আজো দিলো। আর তখনই খুব কষ্ট হতে লাগলো। মনে হলো এই বারান্দাটা আর বেশিদিন আমার থাকবে না। আর তিন/চারদিন পরেই এই বাড়িটা ছেড়ে দেবো, যাবো নতুন ঠিকানায়। সেই ঠিকানায় অনেক ব্যস্ততা। চারদিকে অনেক গাড়ির কলরব। গ্রিলঘেরা বারান্দার ফাঁকে অন্য অনেক দালান কোঠা। আর এক ফাঁক দিয়ে দেখা ছোট্ট আকাশ। জানি না সেই ছোট্ট আকাশ থেকে কতটুকু বৃষ্টি ঝড়বে, কতটুকু ভিজিয়ে দেবে আমায়।

আগে কখনও হয়নি, আজ হচ্ছে, এই উত্তরা, এই খোলা বারান্দা, এই আকাশ- খুব মিস করবো। খুব। খুব। খুব।

এক হাতের পাতায় নদীর পর নদীর রেখা
এক হাতের পাতায় মহাদেশ
এর মধ্যে কোথায় আমার বাড়ি কোনটুকুনি আমার গ্রাম
আমরা পথিক
আমাদের উত্তর দিতে নেই

(জয় গোস্বামী)

nazmush_nupur@yahoo.com


মন্তব্য

সবজান্তা এর ছবি

আমিও দেখি, কিন্তু তফাৎ হইলো আপনার মতো HDR কইরা দেখতে পারি না মন খারাপ


অলমিতি বিস্তারেণ

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

সাতটা ছবি মিলিয়ে এরকম ছবি তৈরি করার কায়দাটা আপনার কাছ থেকে শিখতে হবে... এখন পারবো, এখন আমার ট্রাইপড আছে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

ইয়া আল্লাহ ইডা কেরম আসমান।।।।

আমিতো খালি নীল আকাশ দেখি।

লুৎফুল আরেফীন এর ছবি

অন্যরকম লাগলো....বৃষ্টি একটু মনে হয় আমার গায়েও লাগলো। ভালো থাকুন। নতুন বাসায় প্রথম কয়দিনই নতুন থাকবে। পরে আবার সেটাই পুরাতন বাসা হয়ে যাবে .... ... হাসি
___________________________
বাংলাদেশ আমার বাংলাদেশ

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

আমিতো সারাখন বৃষ্টির ছোয়াই পেতে চাই।

পুরাতন বাসা হোক কিনবা নতুন বাসা ,উত্তরা টা আসলে উত্তরাই।।।

দ্রোহী এর ছবি

সালাম ভাবী।

আনোয়ার সাদাত শিমুল এর ছবি

৩ | দ্রোহী | শুক্র, ২০০৯-০৫-০১ ১৩:২৬

সালাম ভাবী

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়া রাহমাতুলিল্লাহে ওয়া বারকাতুহু.....................

শাহেনশাহ সিমন [অতিথি] এর ছবি

পেন্নাম ভাবী, বেশ লাগল লেখা চলুক

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

আপনেরে ধইন্নাপাতা।।

অনিন্দিতা চৌধুরী এর ছবি

শেষ পর্যন্ত বৃষ্টির সাথে সাথে আপনিও সচলে এলেন!
সুস্বাগতম।

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

সচলে তো আরো অনেক আগেই এসেছি।।

ধোইন্নাপাতা আপু।।

রায়হান আবীর এর ছবি

খুব্বালা হইছে দেঁতো হাসি

ভাবী নতুন বাসায় ঠিকানা দিয়েন। দাওয়াত খাইতে যাবো।

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

হ।
পুরান বাসায় আইসা নতুন বাসার ঠিকানা লৈয়া যাইয়ো।

এনকিদু এর ছবি

আপনারা চলে গেলে ভেবেছিলাম বাসাটা আমি ভাড়া নিব, আমার সঙ্গী সাথী সহ । কিন্তু বিভিন্ন কারনে হল না । নতুন বাসা থেকে কি কি দেখা যায় ?


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...


অনেক দূরে যাব
যেখানে আকাশ লাল, মাটিটা ধূসর নীল ...

সবজান্তা এর ছবি

আমার জানামতে প্রচুর বার ... দেঁতো হাসি


অলমিতি বিস্তারেণ

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

তাও দেখা যায় মিঞা ভাই।

সবজান্তা এর ছবি

আরে ! ভাবী আপনি !

গত পরশু রাতে বনানী ছিলাম একটা কাজে। রাতে আসার সময় দেখলাম নর্থ সাউথের সামনে বাঁশ টাঙ্গায়। জিজ্ঞেস করে জানতে পারলাম, ওরা নতুন ক্যাম্পাসে চলে যাচ্ছে বাড়িধারায়। চলে যাওয়ার আগে পুরানো ক্যাম্পাসে একটা কনসার্ট করতে চায়, Tribute to banani campus

আমার মনে হয় আপনারও কনসার্ট করার সময় আসছে...


অলমিতি বিস্তারেণ

ইশতিয়াক রউফ এর ছবি

যাইয়েন না, যাইয়েন না। উত্তরাই থাকেন। নানার বাড়ি বেড়াতে গেলে ঢুঁ মারা যাবে! খাইছে

এত কম কম লেখেন কেন??

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

উত্তরা তো ছেরেই দিলাম।

নিধি সব সময় নিয়ে নেয়।

নিবিড় এর ছবি

বহুকাল আগে একবার লিখেছিলেন অতিথি হয়ে আজ আবার লিখলেন। লেখা ভাল লাগল।


মানুষ তার স্বপ্নের সমান বড় ।

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

আপনাকে অনেক ধন্যবাদ।

অতিথি লেখক এর ছবি

খুব ভাল লাগলো। আমারো মাঝে মাঝে মনে হয়... যেন কিছু মিস করছি.... সবচাইতে বেশি মাকে...

তন্ময়

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- আমি যে বাসায় থাকি সে বাসায় বারান্দা নাই, ছাদের মতো একটা অংশ আছে। ঐখান থেকে আকাশ দেখতে হইলে ঘাড় কাইত করে উপরে তাকাইতে হয় আর আল্লা'র সৃষ্টির অপার মহিমা দেখতে হইলে সোজা নিচে! দইভাবেই ঘেড্ডি ব্যাকা হয়া যায়, আরাম পাইনা! মন খারাপ
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তানবীরা এর ছবি

পাঁচ তারা নুপূর। খুব মিষ্টি লিখেছো কিন্তু।
ঢাকা শহরটা দিন দিন গ্যাঞ্জাম হয়ে যাচ্ছে। তবে মেয়েদের মনই থাকে মায়াভরা। থাকবো না থাকবো না করে কত্তোদিন এখানে হয়ে গেলো। এখন এই বাড়ির জন্যেও মায়া জন্মে গেছে।

তানবীরা
---------------------------------------------------------
চাই না কিছুই কিন্তু পেলে ভালো লাগে

*******************************************
পদে পদে ভুলভ্রান্তি অথচ জীবন তারচেয়ে বড় ঢের ঢের বড়

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

আপুমনি আপনি ই একমাত্তর বুঝলেন।

নীড় সন্ধানী এর ছবি

এরকম একটা বারান্দা থাকলে ছেড়ে যেতে মন খারাপ হবেই।

আমার বারান্দা থেকে চট্টগ্রাম শহরের বিশাল একটা অংশ দেখা যায়। ডিসি হিল ও সিআরবি হিলের সবুজের কিয়দংশ কর্মক্লান্ত চোখের জন্য কিরকম আরাম সেটা অফিস থেকে কোনদিন বিকেলে ফিরে বারান্দায় বসলেই টের পাই। কিন্তু প্রতিদিন সেই সুখ সুযোগ হয় না।

যদি কখনো এই নীড় ছেড়ে যেতে হয় সেই একই বেদনার সুর বাজবে, যা আপনার বাজছে।

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-
সেই সুদুরের সীমানাটা যদি উল্টে দেখা যেত!

‍‌-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.--.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.-.
সকল লোকের মাঝে বসে, আমার নিজের মুদ্রাদোষে
আমি একা হতেছি আলাদা? আমার চোখেই শুধু ধাঁধা?

কল্পনা আক্তার এর ছবি

লেখা ভালো হয়েছে নূপুর। তোমরা কি আজকালের মধ্যেই চলে যাচ্ছো নাকি?

........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা


........................................................................................................
সব মানুষ নিজের জন্য বাঁচেনা

টুটুল এর ছবি

কবে যাচ্ছো?

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

তার হয়া আমি উত্তর দেই। আশা করি আমরা ৫ তারিখ নতুন বাড়িতে যাচ্ছি। আল্লাহ রে... বাড়ি পাল্টানোর কথা মনে হইলেই জ্বর আসে...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

রেজওয়ান এর ছবি

বৃষ্টি ছুঁয়েছে আমাকেও।

আপনাদের বাড়ী বদল নির্বিঘ্নে হোক।

পৃথিবী কথা বলছে আপনি কি শুনছেন?

সুলতানা পারভীন শিমুল এর ছবি

বৃষ্টির জন্মদোষ।
ছুঁয়ে যায় ভীষণ...
আপনি নিয়মিত লিখেন না কেন, বলেন তো?

...........................

সংশোধনহীন স্বপ্ন দেখার স্বপ্ন দেখি একদিন

...........................

একটি নিমেষ ধরতে চেয়ে আমার এমন কাঙালপনা

নীল ভ্রমর [অতিথি] এর ছবি

এটাকে লেখার মত মনে হল না। যেন অনেক পুরোন বন্ধুর সাথে অনেক কথা ভাগাভাগি করতে গিয়ে অল্প কথায় সব বলে ফেলা।

সচলায়তনের পুরোন মুখচোরা বন্ধু যদি হঠাত কিছু বলে ফেলে তাহলেই বোধহয় এমনি হৃদয় ছুঁতে পারে।

অনেক অনেক ধন্যবাদ।

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

আপনাকেও অনেক অনেক ধন্যবাদ।

পান্থ রহমান রেজা এর ছবি

আপনে না একবার সচল হইতে চাইয়া আবেদন করছিলেন, ওইটার কী হইলো?

নূপুরের ছন্দ [অতিথি] এর ছবি

আরেকবার হুমকিপত্র দিমু চিন্তা করসি।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

স্লামালেকুম ভাবিজান। লেখাখান খুব ভাল হইছে। নতুন বাড়িতে যান, গুছায়া নেন, তারপর আসতেছি খাইদাই করতে খাইছে

নিয়মিত লিখবেন এখন থেকে, এইটা একটা রিকোয়েস্ট... হাসি

সাইফুল আকবর খান এর ছবি

হ, প্রথম কথা হৈলো- আমিও নিয়মিত লেখা-দেখা চাই আপ্নের! হাসি
আর, ২ নম্বরি কথা হৈলো- এই সবে আমার একটা সম্পর্ক হৈতে যাইতেছে উত্তরা'র সাথে, এই আসতেছে জুন-এর ১ থেইক্যা, আর আপ্নেরা পলাইতেছেন ওইখান থেকে চাট্টিবাট্টি গোল কৈরা! মন খারাপ না কি, নতুন বাসা-ও উত্তরায়? [অনেক আচমকা আশা নিয়া কথাটা জিগাইলাম।]
৩ নম্বরি: উত্তরা যাইতে হৈতেছে আবারও অর্ধেকটা ফ্যামিলি [বাপ আর ছোটবোইনের লগে, তাগোরে দেখাশোনা করা দরকার বইলাই আমিও যাইতেছি] মিইল্যা থাকনের লেইগ্যা।
তো, অলরেডি আমার রামপুরার একলা "অন্যপুর"এর লেইগ্যা পেটে মোচড় লাগতে শুরু করছে! ইশ, আর কেউ থাকতো না আমার সাথে, শুধু ওই চিলেকোঠা ঘরটা, দুইটা জানলা আর এত্ত বড় একটা খোলা ছাদ- বৃষ্টি, রোদ, চাঁদ, বাতাস সবাই যেইখানে এখন ভীষণ ভিজায়া ধুয়া যায় আমারে।
হায়রে, আর ভিজাইবো না! মন খারাপ
উপরন্তু, ৪ নম্বর কথাও আছে একটা।
আপ্নের লেখা অনেক ভালো হৈছে নূপুর আপু [আমি ভাবী টাবী ডাকতে পারি না, হেহ্!]
অনেক ভিজছি আপ্নের এই পাঁচ-প্যারা বৃষ্টিতে, খালি মনের না, চোখের কোণেও।
অতোটা ভয় করছিলাম না শুরুতে।
তো, যেইখানেই যান, আপ্নেরা আড়াইজনই যাতে অনেক ভালো সম্পর্ক নিয়া থাকতে পারেন ওইখানকার সাথে, সেইটাই কামনা করি।
হাসি
যাউক, আরেক্টা ৫ নম্বর দিয়াই শ্যাষ করি মিল-মতো- আইচ্ছা, নজরুল ইসলাম-ডা কে? চিনলাম না তো! চোখ টিপি খাইছে
___________
স্বাক্ষর?!
মাঝেসাঝে বুঝতে পাই- আমি
নিরক্ষর!

___________
সবকিছু নিয়ে এখন সত্যিই বেশ ত্রিধা'য় আছি

রেশনুভা এর ছবি

"বৃষ্টি ধুয়ে দেয়, কান্না জল যা তোমায় নিয়ে।"

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।