ধারাবাহিক রহস্য গল্প: সাধারণ দূর্ভেদ্য? (শেষ পর্ব) {বাই-দলছুট)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ০১/০৯/২০০৯ - ৪:০৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

লেখক: এম, কে, জামান (দলছুট)
ইমেইল:m_kzaman111@hotmail.com
শেষ পর্বঃ
গ্রামে আজান শুনতে যে এত মধুর লাগে সেটা রাহি এর আগে কোন দিন বুঝে নি। আজ মগরীবের আজান শোনার পর তাঁর কাছে মনে হলো এর চেয়ে মিষ্টি মধুর আর কোন সুর হয় না। তাই তো আজানের সুরে বিমুগ্ধ হয়ে কবি কায়কোবাদ লিখেছিলেন তাঁর মহান “আজান” কবিতাটি।
“কে ঐ শোনাল মোরে আজানের ধ্বনি
মর্মে মর্মে বাজিল কি সুমধুর
আকুল হইল প্রাণ, নাচিল ধমনী
কে ঐ শোনাল মোরে আজানের ধ্বনি।”

খুব নিশ্চুপ থেকে রাহি আজানটা শুনল। আজান শেষ হবার পরপরই বের হলো রুম থেকে। উদ্দেশ্য সবার সাথে একটু কুশল বিনিময়। হালকা শীত পড়াতে রাহি পাতলা কালো একটা জ্যাকেট সাথে কালো জিন্স প্যান্ট আর কালো ক্যাপ পড়েছে। পিস্তলটা কোমরে গুঁজে নিল সাবধানে। রুম থেকে বের হলো। শহরের সন্ধ্যা ঠিক বুঝা যায় না, সূর্য ডুববার আগেই সবাই লাইট জ্বালিয়ে রাখে তাই সন্ধ্যার আভা ঠিক ধরা পরে না। গ্রামের সন্ধ্যাকাল অন্য রকম। আস্তে আস্তে দিনের আলোটা রাতের আঁধারের কাছে মিলিয়ে যায়। গ্রামে এত বেশী বিদ্যুতের আলো জ্বলেনা, তাই সন্ধ্যাকাল দীর্ঘস্থায়ী হয়।

বিরহী সন্ধ্যা যাকে বলে সেটা গ্রামে না এলে বুঝা যায় না। সেই বিরহী সন্ধ্যায় পুকুর ঘাঁটে ঝাপসা আলো আঁধারে বসে আছে দানা আর কাজের মেয়ে শেফালী। রাহি দূর থেকে স্পষ্ট দেখতে পারছে তাঁরা খুব গল্পে মশগুল। তবে গল্পের বিষয় বস্তু কি হতে পারে সেই নিয়েই রাহি ভাবছে। রাহি আসে পাশে আর কেউ আছে কিনা একবার চারপাশে তাকিয়ে দেখল। কাউকে পেল না। আস্তে আস্তে হেঁটে পুকুর ঘাঁটের দিকে এলো। সে জোড়ে একটা কাশি দিয়ে দানার দৃষ্টি কাড়ার চেষ্টা করল। দানা রাহির উপস্থিতি টের পেয়ে সাবধানী হলো। বসা থেকে উঠে দাঁড়াল। শেফালী অনেক লাজুক ভাব নিয়ে পাশে দাঁড়িয়ে রইল। রাহি দানাকে উদ্দেশ্য করে বলল-“আচ্ছা সকাল থেকে সুশীলকে দেখছি না, ও কী কোথাও গেছে?” দানা প্রশ্নে খুব একটা খুশি হতে পারল না। অন্য দিকে তাকিয়ে বলল-“কে কোথায় গেলো সেটা নিয়ে আপনার না ভাবলেও চলবে। কোন কিছুর দরকার হলে বলতে পারেন, শেফালী আছে করে দেবে।” রাহি বুঝতে পারল দানা প্রশ্নটা ভালো ভাবে নেয়নি। তাই আর কথা না বাড়িয়ে ওখান থেকে নিজেকে প্রস্থান করে নিল।

রাহির মনে একটা বিষয় বারবার খোঁচা দিতে লাগল। সুশীল সকাল থেকে নেই। দানা কাল ঢাকা চলে যাবার কথা বলল। শেফালীর সাথে এই সাত দিনে এত সখ্যতা চোখে পরেনি। তাহলে কি এই তিনজনের মধ্যে কোন যোগসাজশ আছে? হাঁটতে হাঁটতে গোলাপ বাগানের কাছে চলে এলো। দেখে সিরাজুল হক সাহেব কামরানকে নিয়ে বের হওয়ার জন্য গেঁটের দিকে এগিয়ে যাচ্ছে। রাহি সিরাজুল হক সাহেব কে ধরার জন্য বড় বড় পা ফেলে কাছে এলো।

সিরাজুল হক সাহেব রাহি কে দেখে বলল-“আমরা একটু বাজারে যাচ্ছি, যাবে নাকি আমাদের সাথে?” রাহি প্রস্তাবটা শুনে ক্ষণিক সময় ভাবল। তারপর সিদ্ধান্ত নিল তাদের সাথে বাজারে যাবার। কিন্তু মনের মধ্যে সুশীলের অনুপস্থিতি বারবার উঁকি দিতে লাগল। যেকোন জিনিস জানার আগ্রহ রাহির চিরদিনের। তাই আর আগ্রহটা পেটের ভিতর রাখতে পারল না। অনেকটা মেয়েদের মত। পেটে কথা রাখতে পারে না রাহি। বিশেষ করে প্রোফেশনের সাথে যেটা জড়িত সেই ব্যাপারে রাহি কোন কথা পেটের ভেতর রাখতে ইচ্ছুক নয়। তাই সিরাজুল হক সাহেবকে বলল-“আঙ্কেল সুশীলকে কী কোথাও পাঠাইছেন, সকাল থেকে দেখছিনা?” সিরাজুল হক সাহেব হাঁটতে হাঁটতে বলল-“না আমি তো পাঠাইনি, দানা থানা সদরে পাঠাইছে কি যেন আনতে। ওর কি যেন জরুরী লাগবে। কাল নাকি চলে যাবে, ওটা আজ নাহলে নাকি হবে না।” কথা গুলো বলছিল আর দুজন হাঁটছিল। তাঁদের পিছন পিছন আসছে কামরান। কামরান কিছু বলছে না। নীরবে তাঁদের অনুসরণ করে যাচ্ছে মাত্র। বাড়ি থেকে একটু আগাতেই একটা রিকশা পেয়ে গেলো। সিরাজুল হক সাহেব কামরানের দিকে তাকিয়ে-“ আমরা এটাতে যাচ্ছি, তুই হাঁটতে থাক, আর একটা পেলে চলে আসিস। “ কামরান মনে মনে রাহির উপর বিরক্ত হলো। রিকশা চলে যেতেই বলল-“বেটা শুধু শুধি আইছে, কামের কাম কিছুই করতে পারতাছেনা, খাইতাছে আর ঘুরতাছে। ফাঁক তালে আপার সাথে পিরিত করবার চান্স খুঁজতাছে। ইস্ আমি যদি সেই দিন ধরা না খাইতাম, তাইলে বেটার খবর আছিল।” কথা গুলো আওড়াতে আওড়াতেই দেখে একটা রিকশা পাশ দিয়ে যাচ্ছে। ডাক দিয়ে থামিয়ে রিকশায় উঠে বসল। রিকশা ছুটে চলল বাজারের দিকে।

বাজারে রাহির বেশী ক্ষন মন টিকল না। সে তাঁদের রেখে বাড়ি চলে এলো। গেট দিয়ে ঢুকেই সোজা নিজের আবাস স্থলের দিকে পা ফেলল। পুককুরটা পার হওয়ার সময় রাহি দেখতে পেল সুশীল পুকুর ঘাঁটে হাত-মুখ ধোয়া- মুছা করছে। রাহি নিজের গতি পথ পরিবর্তন করল। পুকুর ঘাঁটে এসে সুশীলকে ডাকল। সুশীল ডাক শুনে সুবোধ বালকের মত দ্রুত উপড়ে চলে এলো। রাহি বেশি কিছু না বলে শুধু বলল-চল্ আমার সাথে আমার ঘরে, তোমার সাথে কথা আছে। দানা ঘর থকে ব্যাপারটা লক্ষ্য করছিল। বাড়ির বাইরে পর্যাপ্ত লাইটের ব্যবস্থা থাকায় অনেক কিছুই স্পষ্ট বুঝা যায়। দানাও সেই লাইটের আলোতে সব খেয়াল করল। দানা ঝট্পট্ সিদ্ধান্ত নিল বের হওয়ার এবং সুশীলকে রাহির রাহু গ্রাস থেকে মুক্ত করার।

রাহি দ্রুত পায়ে সুশীল কে নিয়ে নিজের রুমে ঢুকে গেলো। উত্তেজনার কারণে নিজের রুমের দরজা বন্ধ করতে ভুলে গেলো। রাহি রুমে ঢুকেই সুশীল টুলে বসতে বলল। সুশীলের চেহারায় সারা দিনের ক্লান্তির ছাপ। চোখ দুটো বসে গেছে। মনে হয় দুপুরে ঠিক মত খাওয়া হয়নি। সেই দিকে রাহি আর গেলো না।নিজের কাজটা দ্রুত সারতে হবে, দানা যে ভাবে টিকটিকি লাগায় দিছে তাতে আবার না সব জেনে যায়। তাই দেরি না করে সুশীলকে জিজ্ঞেস করল-“সারাদিন কোথায় ছিলে?” সুশীল চট্পট্ উত্তর দিল-“আপা একটা কাজে পাঠাইছিল।” রাহি একটু ঝুঁকে এসে-“কোথায় পাঠাইছিল? কি আনার জন্য?” প্রশ্নটা শেষ না হতে হতেই দানা রাহির রুমে কোন প্রকার অনুমতি না নিয়ে প্রবেশ করল। এবং চেহারায় যে একটা বিরক্তি আছে সেটা রাহি দেখেই বুঝে গেলো। মনে মনে নিজের উপর রাহি বিরক্ত হলো। নিজের রাগ সংবরণ করে বলল-“আরে আপনি! আসুন আসুন।, প্লিজ বসুন।” দানা বসল না। দাঁড়িয়ে থেকেই বলল-“ওকে আমি পাঠিয়ে ছিলাম।” রাহি কথার পৃষ্ঠে দ্রুত কথা বলল-“কেন জানতে পারি কী?” এইবার দানা একটু উত্তেজিত হয়ে-“মেয়েদের অনেক গোপন জিনিস থাকে যেটা সবাইকে জানানো যায় না, এইটুকু বুদ্ধি আশা করি আপনার মগজে আছে?” কথাটা শেষ করে সুশীলের দিকে তাকিয়ে-“যা তুই তোর কাজ কর গিয়ে।” সুশীল যেন কারাগার থেকে মুক্তি পেল। কোন কথা না বলে সোজা রুম থেকে বের হয়ে চলে এলো। রাহি অনেকটা শ্লেষ করে বলল-“মেয়েদের গোপন জিনিস যে একজন প্রাপ্ত বয়স্ক ছেলেকে দিয়ে কেনানো হয় সেটা আমার জানা ছিল না, আজ জানলাম।” দানা তখনও দাঁড়িয়ে ছিল। রাহি চেয়ারটা এগিয়ে দিয়ে বসতে বলল। দানা চেয়ারে বসতে বসতে-“তা আপনি কবে যাচ্ছেন?” রাহি প্রাশ্নটা শুনে একটু অবাক্ হলো। নিজেকে যতটা সম্ভব স্বাভাবিক রেখে বলল-“আমি যে মিশন নিয়ে এসেছি, সেটা হয়ে গেলেই চলে যাবো।” দানা উঠে জানালার পাশে গিয়ে দাঁড়াল। আঁধারে আকাশের দিকে তাকিয়ে-“সেটা আপনি পারবেন বলে মনে হচ্ছেনা, শুধু শুধু বাড়ির প্রতিটা মানুষের মনে ভয় ঢুকিয়ে দিচ্ছেন, ছেলে মেয়ে গুলা স্বাভাবিক ভাবে কোন কাজ করতে পারছে না।আপনার জন্য এই বাড়ির স্বাভাবিক পরিবেশটা অস্বাভাবিক হয়ে গেছে। আপনি সকালে চলে গেলে আমরা খুশি হই।” কথা গুলো শেষ করে ঘুরে রাহির দিকে তাকাল। রাহি অনেকটা মুগ্ধ শ্রোতার মত কথা গুলো শুনল, তারপর বলল-“দেখুন দানা, প্রথমত আমি আপনার ডাকে এখানে আসিনি, আর দ্বিতীয়ত একটা জিনিস জেনে রাখুন অপরাধীরা চিরকাল পুলিস দেখলে ভয় পায়।” দানা একটু হালকা হাসি দিয়ে-“আপনি পুলিস নাকি? আমিতো জানতাম আপনি একজন ছা পোষা গোয়েন্দা।” রাহির রেগে যাওয়ার সম্পূর্ণ কারণ থাকা সত্ত্বেও নিজেকে অনেক কষ্টে স্বাভাবিক রাখল। নরম স্বরে-“আপনি কী আর কিছু বলবেন।” দানা পিঠে ছড়ানো কালার চুল গুলো হালকা একটা ঝাঁকি দিয়ে “না” বলে চলে গেল।

সিরাজুল হক সাহেব বাজার থেকে ফিরে ফ্রেস হয়ে খাটে এসে বসলেন। স্ত্রী শায়লা বেগম টিভিটা বন্ধ করে দিয়ে স্বামীর পাশে এসে বসলেন। সিরাজুল হক সাহেব বুঝতে পারলেন তাঁর স্ত্রী এখন তাঁকে কিছু একটা বলবে। তাঁদের দীর্ঘ ৩৫ বছরের সংসার জীবনে এইটুকু জিনিস হক সাহেব বুঝছেন খুব সহজে। তাই স্ত্রীর মুখের মধুর বাণী শোনার জন্য অপেক্ষা করছিলেন। স্ত্রী শায়লা বেগম কাছে এসে গলার স্বর নরম করে-“ওদের বিয়ের কথা কী ভাবলেন?” সিরাজুল হক সাহেব ব্যাপারটা ভুলে গেছিলেন, তাই কিছুটা বিস্ময় নিয়ে-“কাদের বিয়ে?” প্রশ্নবোধক চাহনীও দিলেন স্ত্রীর দিকে। শায়লা বেগম একটু রেগে গিয়ে-“আপনার দেখছি ইদানীং কোন কথাই মনে থাকে না। কামরান-শেফালীর বিয়ে নিয়ে?” সিরাজুল হক সাহেবের মনে পড়ল। হাতে বাজার থেকে আনা ব্যাপারটা ছিল। সেই দিকে চোখ দিয়ে-“আগে আমার ঝামেলাটা মিটুক, তারপর একটা ভালো দিনক্ষণ দেখে বিয়ের ব্যবস্থা করবো।”

সিরাজুল হক সাহেবের স্ত্রী আর কথা বাড়ালেন না। খাট থেকে নেমে টিভির সামনে যাবে এমন সময় দরজায় টোকার আওয়াজ হলো। শায়লা “কে” বলতেই দানা রুমে প্রবেশ করল।সিরাজুল হক সাহেব মেয়ের প্রবেশে খুশি হয়ে-“আয় মা আয়, তুইতো আজকাল আমার কাছে আসিস না।” দানা সিরাজুল হক সাহেবের পাশে বসে অনেকটা অভিমানী সুরে-“তুমিতো তোমার ঐ অকেজো গোয়েন্দাকে নিয়েই ব্যস্ত, আমার দিকে তাকানোর তোমার সময় আছে?” বলে চুপ হয়ে গেলো। সিরাজুল হক সাহেব মেয়ের মাথায় হাত বুলিয়ে -“নারে মা, দেখ পরপর আমার কতগুলো টাকা ক্ষতি হলো, কেন এমন হয় ব্যাপারটা জানা দরকার। আর ঐ ছেলেটা অকেজো নয়, আমি জেনে শুনেই ওকে এনেছি। তোর বারেক আঙ্কেল আছে না, ওর ফার্মে কাজ করে, অনেক কর্মঠ মেধাবী। ওর জন্যই বারেকের আজ রমরমা ব্যবসা।” দানা কথা গুলো ভালো ভাবে নিল না। বরং অভিমান বজায় রেখে বাবাকে বলল-“এই গুলো বাধ দাও, চলো আমরা আবার শহরে ফিরে যাই, আমার হলে থাকতে একটুও ভালো লাগে না।” বলেই কান্না শুরু করে দিল। সিরাজুল হক সাহেব কি বলবেন বুঝতে পারছেন না। কারণ তাঁর আর এখন শহর ভালো লাগেনা। মেয়ের কষ্টটাও ওনি বুঝতে পারেন। শায়লা বেগম মেয়েকে সমর্থন দিয়ে বলল-“হ্যাঁ চলো ছেলে-মেয়ের জন্যইতো সব, ওর যদি ভালো না লাগে, তাহলে আমাদের এই গুলো দিয়ে কী হবে। চলো আমরা শহরে চলে যাই।” সিরাজুল হক সাহেব একটা দীর্ঘ নিশ্বাস ছাড়লেন। স্ত্রীর দিকে তাকিয়ে বলল-“আমি সারা জীবন শহরে থাকতে থাকতে হাঁপিয়ে গেছি।তোমরা এক কাজ করো, একটা ছোট ফ্ল্যাট ভাড়া করে থাক, আমি এখানেই থাকি, সময় পেলেই তোমাদের দেখে আসবো।” কথাটা শুনে দানার চোখে মুখে হাসির ঝিলিক খেলে গেলেও শায়লা বেগম খুশি হতে পারলেন না। তাই তিনিও অভিমান করে বললেন-“জীবনের শেষ বয়সে তোমাকে ছাড়া থাকতে পারবো না।” দানা এবার একটু ক্ষেপে গিয়ে বলল-“ তোমরা আসলে স্বার্থপর, নিজেকে নিয়েই ভাব, আমার কথা ভাব না।” বলেই কান্না শুরু করে দিল। সিরাজুল হক সাহেব মেয়েকে শান্ত করার জন্য বলল-“আচ্ছা মা, তুই এক কাজ কর, তোর সখিনা খালারে আর সুশীলকে নিয়ে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে থাক, আমি আর তোর মা মাঝে মাঝে গিয়ে তোকে দেখে আসবো।” দানা খাট থেকে উঠে দাঁড়াল। তোমার কিচ্ছু করতে হবে না, দেখি তুমি কতদিন এখানে থাকতে পার, আমি তোমাদের ঢাকা নিয়েই ছাড়বো।” কথা গুলো বলেই দানা দ্রুত চলে গেলো। সিরাজুল হক সাহেবের কানে দানার শেষ কথা গুলো কেমন যেন শোনাল। তাঁর রাহির কথা গুলো মনে পরে গেলো। সে কিছুতেই কিছু মেলাতে পারছেনা। নিজের মেয়ে এইগুলো করবে? না এটা সম্ভব না। মনে মনে ভাবল। শায়লা বেগম একটা ঠেস মেরে-“আর ভাবতে হবে না, আপনার গোয়েন্দা কে ডাকেন খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ুক।” সিরাজুল হক সাহেব ঘড়ির দিকে তাকালেন, তারপর বললেন-“মাত্রতো বাজে নয়টা, শহরের মানুষ যে এত তাড়াতাড়ি খায় না সেটা তোমার ভালোই জানার কথা। দশটার দিকে ডাকব।” শায়লা বেগম কোন কথা না বলে, খাট থেকে নেমে আবার টিভি অন করলেন, সিরাজুল হক সাহেব পত্রিকায় মনোনিবেশ করলেন।

দানা কামরানের ঘরের সামনে এসে কামরানকে ডাকল। কামরান দানার ডাক শুনে আলনা থেকে জামাটা নিয়ে দ্রুত বের হয়ে এলো। কামরানকে দেখে দানা বলল-“আমার মোবাইলে টাকা নেই, এখন কী টাকা লোড করা যাবে?” কামরান হাত দিয়ে মাথা চুলকাইতে চুলকাইতে বলল -“দেন দেখি পাওয়া যায় কিনা।” দানা ১০০টাকা হাতে দিয়ে বলল-“যদি লোড না করা যায় তাহলে দুটা ৫০টাকার কার্ড নিয়ে আসবেন। আমার নম্বর জানেন তো?” কামরান হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়িয়ে চলে গেলো। দানা দাঁড়িয়ে কামরানের চলে যাওয়া দেখছিল। কামরান মেইন গেট পার হতেই সুশীলের দরজায় নক করল। সুশীল দরজায় শব্দ হতেই ভয়ে আঁৎকে উঠল। শুষ্ক গলায় বলল-“কে?” দানা আস্তে করে বলল-“আমি, দরজা খোল।” সুশীল সাবধানী হাতে দরজা খুলে দিল।দানা চারপাশ তাকিয়ে দেখল রাহি আছে কিনা। তারপর ঘরে ঢুকে দরজাটা বন্ধ করে দিল। আস্তে আস্তে সুশীলকে বলল-শুনো, খুব সাবধানে করতে হবে। সবাই যখন ঘুমায় যাবে তখন, এইবার কাজটা করতে পারলে তোরে একটা মোবাইল কিনে দিব।” এতক্ষণ সুশীল ভয়ে কুঁকড়ে ছিল। মোবাইলের কথা শুনে, চঞ্চল হয়ে উঠল। দানা আস্তে আস্তে বুঝিয়ে দেয়ার জন্য বলল-শুনো রাত ২টার দিকে, সবাই যখন ঘুমিয়ে যাবে, আজকে যে বিষ গুলো আনছিস সেগুলো পুকুরের চারপাশে মিশিয়ে দিবি। আর কাজটা করার আগে ঐ বদমাশটার ঘরের দরজা বাইর থেকে আট্কাইয়া নিবি। বুঝলি? আর কিছু বলতে হবে?” সুশীল পাকা অপরাধীর মত মাথা নেড়ে সম্মতি জানাল যে সে সব বুঝতে পেরেছে। দানা আস্তে করে দরজা খুলে, চারদিকে ভালো করে দেখে নীরব পায়ে নিজের রুমে চলে এলো।

রাহি নোটবুকটা নিয়ে বসল। সন্দেহের তালিকা থেকে আপাতত কামরানের নামটা বাদ দিল। কলম নিয়ে নোট বুকের একটা ফ্রেস পৃষ্ঠায় বড় করে দানার নাম লিখল। তারপর একটা সার্কেল দিল। পাশে ছোট করে সুশীল আর শেফালী নাম লিখল। সে দানাকে ১নম্বর দিয়ে সুশীলকে ২ নম্বরে রাখল। শেফালীকে নিয়ে ভেবে আবার নামটা কেটে দিল। সে কীভাবে কি করবে বুঝতে পারছিলনা। চিন্তার সাগরে হাবুডুবু খেতে লাগল। কিছুতেই সমাধান খুঁজে পাচ্ছিলনা। রাহির মাথাটা টনটন্ করে ব্যথা শুরু করল। বেশী ক্ষণ আর ভাবতে পারল না। একটা পেইন কিলার খেয়ে লাইটটা অফ করে শুয়ে পরবে ভেবে ছিল কিন্তু বিছানায় গেলো না। ঘুম আসছে না। এপাশ ওপাশ করতে লাগল। রাত ১টা, চোখে হালকা ঘুম ঘুম ভাব। রাহির ভেতর যে একটা রাহি আছে তাঁর অনুমান আজ রাতে কিছু একটা ঘটবে। কম্বলের নিচে থেকে নিজেকে বের করে নিল। আজকের রাতটা অবজার্ভ করার জন্য মনস্থির করল। ঝট্পট্ ভাবল আজ ঘরের ভেতর থাকবে না, বাইরে কোথাও অস্থায়ী আস্তানা গড়তে হবে, কিন্তু বাসার কেউ যেন না বুঝে। যেই চিন্তা সেই কাজ বাড়ির পূর্ব পাশটা একটু গাছের আধিক্য বেশী এবং অন্ধকারটা বিরাজ থাকে। ওই দিকে চেয়ার নিয়ে আস্তানা গড়লে পুকুর পাড় থেকে কেউ আঁচ করতে পারবেনা। কিন্তু বসতে হবে এমন জায়গায় যাতে সুশীল বা কামরান পুকুরের দিকে এলে খুব সহজে নজরে পরে। রাহি আস্তে নিজের ঘরের দরজা জানালা বন্ধ করে একটা চেয়ার নিয়ে অন্ধকারে চেয়ার নিয়ে বসল। সময় তখন ঘড়ির কাটায় একটা ত্রিশ মিনিট। কালো পোশাকে নিজেকে আচ্ছাদিত করে আঁধারে গিয়ে বসল

কামরানের আজ ঘুম পাচ্ছিল না। সুশীলের দরজা খোলার আওয়াজ পেয়ে কামরান সতর্ক হয়ে উঠল। সুশীল ঘর থেকে বের হয়ে এলো। কামরান চুপচাপ শুয়ে ছিল। প্রথমে ভাবল সুশীল মনে হয় বাথরুমে যাচ্ছে। অনেক ক্ষন হওয়ার পরও যখন সুশীল রুমে ফিরছিল না তখন কামরান আস্তে করে জামাটা পরে বেড় হয়ে হলো। রাহি শিকারী ধরার প্রত্যাশায় ঘাপটি মেরে বসেছিল। তার চোখ উত্তর-পূর্ব কোণার দিকে যেই দিকে সুশীল আর কামরান থাকে। রাহি একটা মানুষের ছায়া দেখে সটান হয়ে চেয়ার ছেড়ে দাঁড়াল। কোমর থেকে পিস্তলটা বেড় করল। সে আলো আঁধারে লোকটার গতিবিধি লক্ষ্য করার চেষ্টা করছে। একটু পর দেখল লোকটা তার ঘরের দিকে আসতেছে। সে নিজেকে গাছের আড়ালে নিল। বাড়ির দক্ষিণ বারান্দার লাইটের আলোতে স্পষ্ট দেখতে পেল কামরান তাঁর ঘরের দিকে আসছে। সে প্রথমে অবাক্। কামরান? তাঁর ধারণা ভুল প্রমাণিত হচ্ছে? সে আরেকটু সচেতন দৃষ্টি দিল। হ্যাঁ কামরান, কিন্তু খালি হাত! কী করবে কামরান? ভাবতে ভাবতে দেখল, কামরান তার পূর্ব দিকের জানালার দিকে যাচ্ছে। এইবার রাহি বিড়াল পায়ে কামরানের পিছু নিল যথেষ্ট আড়াল রেখে। কামরান তার জানালায় এসে প্রথমে টোকা দিতেই পেছন থেকে রাহি মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে বলল-“কামরান হাত উপড়ে তুলে পেছন দিকে ঘুরো। কামরান বিস্মিত হয়ে পেছন দিকে ঘুরেই বলল-“স্যার আমি না, সুশীল। ও পুকুরে বিষ মেশাচ্ছে, আপি আপনাকে ডাকতে এসেছি”। রাহি প্রথমে বিশ্বাস করল না, বলল-“তুমি না, দিমু গুলি করে। ধরা খাওয়ার পরও মিথ্যা বলে? চল আঙ্কেল সামনে।” কামরান হাত উপর দিকে তুলে হাঁটতে হাঁটতে-“স্যার আমাকে বিশ্বাস করেন আমি বিষ মিশাই না, আপনি তাড়াতাড়ি পুকুর পারে যান, তানাহলে এবারও মাছ গুলো মারা যাবে। রাহি কামরান কে নিয়ে দ্রুত পায়ে পুকুর পারে চলে এলো।

রাহি পিস্তল তাক করে পুকুর পাড়ের দিকে এলো, সে অন্ধকারে ভালো করে লক্ষ্য করল, কিছু দেখা যাচ্ছেনা। একটু চম‌কে গেলো। তাহলে কামরান কি মিথ্যা বলে তাকে নিয়ে এলো। অন্য কোন উদ্দেশ্য নেইতো। একটু নিজেই ভয় পেয়ে গেলো। চারদিক একবার তাকিয়ে নিল। রাতে বাড়ির লাইট খুব একটা জ্বালায় না। মূল বাড়ির বাইরের একটা লাইট জ্বালানো তার একটু আলো পুকুরের পশ্চিম পাড়ে এসে পরে। সেখানে একটা মানুষের ছায়া দেখতে পেয়ে রাহি সেই দিকে এগিয়ে গেলো। কামরানকে বলল-“যাও তুমি গিয়ে আঙ্কেলকে ডেকে নিয়ে আস। কামরান রাহির কথা মত সিরাজুল হক সাহেব কে ডাকার জন্য চলে গেলো।

রাহি পুকুরের দক্ষিণ পাড় দিয়ে আস্তে আস্তে পশ্চিম পাড়ে এসে ছায়াটা লক্ষ্য করে টর্চটা মারল। লাইটের আলো দেখেই সুশীল ভয়ে দাঁড়িয়ে গেলো। বিষের ব্যাগ রেখে দৌড় দেয়ার জন্য তৈরি হতেই রাহি চিৎকার দিয়ে বলে উঠল-“সুশীল দৌড় দিবে না, দৌড় দিলে আমি গুলি করবো।” গুলি করার কথায় কাজ হলো, সুশীল আর দৌড় দিলনা। সোজা হয়ে দাঁড়ায় গেলো। রাহি সুশীলকে হাত দুটো উঁচু করে উপড়ে আসতে বলল। সুশীল হাত উঁচু করে উপড়ে চলে আসল। রাহি কাছে এসে সুশীলের জামার কলার ধরে বাড়ির দিকে নিয়ে আসতেই দেখে কামরান সবাইকে নিয়ে এই দিকে আসছে। রাহি ঘরের বারান্দার আলো যেখানে এসে পড়েছে সেখানে এসে থামল। সিরাজুল হক সাহেব, শায়লা বেগম, শেফালী, সখিনা খালা, আর দানা এসে হাজির। রাহি কোন কথা না বলে দানার দিকে তাকাল। দেখে দানা বিমর্ষ চেহারা নিয়ে মাটির দিকে তাকি আছে। সিরাজুল হক সাহেব নিজের রাগ সামলাতে পারলেন না, কাছে এসে জোড়ে দুই গালে দুইটা থাপ্পড় লাগালেন সাথে কিছু অশ্লীল বাংলা গালি। সুশীল থাপ্পড় খেয়ে হাউমাউ করে কেঁদে সিরাজুল হক সাহেবের পা জরিয়ে ধরে বলল-“চাচা আমার কোন দোষ নেই, আপা আমাকে টাকার লোভ দেখাইয়া, মোবাইল দিবু কইয়া এই কাজ করাইছে। আমি না করছিলাম, আমারে কয় তাইলে তোরে বাড়ি থেইকা বেড় করে দিমু। চাচা আপনে আমারে মাফ করেন।” সুশীলের কথায় সিরাজুল হক সাহেবের গালিগালাজ বন্ধ হলো। সুশীল তখনও পা ধরা। সিরাজুল হক সাহেব সুশীলকে হাত দিয়ে টেনে তুলল। ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিয়ে নিজের মেয়ের দিকে তাকালেন-“ছিঃ আমার ভাবতেও লজ্জা লাগছে তুমি আমার মেয়ে।” দানা হাউমাউ করে কেঁদে দিল। শায়লা বেগম মেয়ের কান্না দেখে বিরক্ত হয়ে-“সর্বনাশ করে এখন মায়া কান্না হচ্ছে? যা আমার চোখের সামনে থেকে।" রাহি কোন কথা না বলে চলে গেলেন। সিরাজুল হক সাহেব মাথায় হাত দিয়ে মাটিতে বসে গেলেন। দানা বাবার পায়ের উপর এসে পরে-“বাবা আমাকে ক্ষমা করো আমি আর এমন করবো না।” সিরাজুল হক সাহেব পিতৃস্নেহে মেয়েকে বুকে জরিয়ে ধরলেন।
সমাপ্ত।
===================================
বিঃ দ্রঃ যারা ৪টি পর্ব ধর্য্য ধরে পড়েছেন তাঁদের সবাইকে জানাই আন্তরিক ধন্যবাদ। যতটুকু আশা নিয়ে পড়া শুরু করেছিলেন ততটুকু আশা পূরণ করতে না পারার কারণে ক্ষমা চাচ্ছি। বাংলা টাইপিং সমস্যা আর অভ্র আর ফোনেটিক ফন্টের সমস্যার কারণে অনেক বানান জনিত বিড়ম্বনা দিয়েছি, তার জন্য আরেক বার ক্ষমা প্রার্থী। আশা করি হৃদয়বান্ পাঠক বন্ধুরা ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন।

আমি সাধারণ একটা ঘটনা নিয়ে লিখেছি, তাই বেশী জমাতে পারিনি। তবে একটা জিনিস বুঝাতে চেয়েছি যে আমরা সবাই নিজ নিজ অবস্থানে কিছুটা স্বার্থপর। যা দূর থেকে ভেদ করা যায় না বা বুঝা যায় না। আমরা নিজের ক্ষুদ্র স্বার্থকে চরিতার্থ করার জন্য অন্যের বিশাল স্বার্থের কথা বিন্দুমাত্র ভাবি না। তাই অন্যের ক্ষতি করে যাই হাসতে হাসতে অবলীলায়।

আমি নবীন লেখক হিসাবে অনেক ভুল করেছি, আর ভুল করেছি বলেই অগ্রজদের কাছ থেকে অনেক মূল্যবান্ উপদেশ পরামর্শ, নির্দেশনা এবং সর্বোপরি ভালো করার যে প্রেরণা পেয়েছি তা আমি কোন দিন ভুলবো না। আমি তাদের পরামর্শ ও উপদেশ পরবর্তী লেখা গুলোতে প্রয়োগ করার আপ্রাণ চেষ্টা করবো। ধন্যবাদ এতক্ষণ আমার সাথে থাকার জন্য।
===================
বন্ধু হবো, যদি হাত বাড়াও।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

যাক, শেষ হল এবং আমিও পুরোটাই পড়লাম। বানান সমস্যা আগের থেকে অনেক কম।
আরো লিখবেন।

/
রেশনুভা

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

নিজেই যদি বুঝতে পারলেন জমাতে পারেননি তাইলে দিলেন কেন পাঠকরে পড়তে? এই যে এটা ৪ পর্ব ধরে ধৈর্য্য ধরে পড়লাম। এবং ভালো লাগলো না। এরপর থেকে তো আপনার লেখা আর পড়তে ইচ্ছে হবে না। এরচেয়ে ভালো ছিলো না যে- ভালো একটা লেখা দিয়েই শুরু করা?

লেখাটা নিয়ে অনেক কথাই বলার ছিলো, কিন্তু ফুটনোটে দেখছি আপনি নিজেই জানেন যে এটা কিছু হয় নাই... আর কী বলবো? এটা এক পর্বেই সুন্দর করে গুছায়ে লেখা যেতো...
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

গুরু নবীন মানুষ, লেখার চেষ্টা করছি, যদি না লিখতাম তাহলে কী আপনার এতো সুন্দর গঠনমূলক মন্তব্য পেতাম? আপনাদের গঠনমূলক সমালোচনা আমাকে অনেক কিছু বুঝতে শিখিয়েছে। আমি এই লেখাটাকে নিয়েছি আমার শিক্ষণীয় বিষয় হিসাবে। একবার ভেবেছিলাম আর লিখবো না, পরে ভাবলাম, যতটা পাড়ি গুছিয়ে লেখার চেষ্টা করবো আর আপনাদের পরামর্শ গুলো হজম করবো।

আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

দলছুট
===================================
বন্ধু হবো,যদি হাত বাড়াও।

সমুদ্র এর ছবি

রহস্য গল্পে আপনি যদি দুইদিকের (গোয়েন্দা এবং ভিলেন) কাজ-কারবারই এমন বিশদ করে বলে দেন, তাহলে পাঠক তো রহস্য ভেদ করে ফেলবেন, গোয়েন্দার কিছু করা লাগবে না, গল্পের শেষ পর্যন্ত যাওয়াও লাগবে না।

জমাট রহস্য গল্পে যা হয় - শেষে এসে গোয়েন্দা যুক্তি আর প্রমাণে রহস্যের জট ছাড়াবেন, পেঁয়াজের খোসার মতন, আর পাঠকও হা করে গিলবে। ফেলুদা, হোমস অথবা ব্যোমকেশ- নিশ্চয়ই পড়েছেন। টিপিক্যাল গোয়েন্দা গল্পগুলো সাধারণত এমনই হয়।
আপনি অবশ্যই নতুন ধারায় লিখতে পারেন, তবে টিপিক্যাল (এবং প্রমাণিত) ধারাটা না জেনে নতুন কিছু করা যায় এইটা আমার বিশ্বাস হয়না।

লিখে যান।

"Life happens while we are busy planning it"

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। আপনাদের সাথে থেকে অনেক কিছু জানতে পারলাম। যা অন্য কোন ব্লগে পাওয়া যায় না। আমি পরের লেখা গুলোতে আপ্রাণ চেষ্টা করবো আপনাদের কথা গুলো মাথায় রাখার। দোয়া করবেন যেন ভালো করতে পারি।

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

বানান সমস্যা আগের চাইতে অনেক কমেছে। এটা অনেক ইতিবাচক একটা দিক।

গল্পটা শেষ পর্যন্ত একদমই সাদামাটা রয়ে গেল। তেমন কোনো চমক পেলাম না। তবে আপনি চেষ্টা করলে অনেক ভালো লিখতে পারবেন, এই বিশ্বাস আছে। লিখুন আরো।

ভালো থাকবেন।

অতিথি লেখক এর ছবি

সাদার মাঝে সব রংয়ের বসবাস। সাদা দিয়ে শুরু করলাম। আশাকরি রঙ্গিন জিনিস হবে। ধন্যবাদ আপনার সুন্দর মতামতের জন্য।

তাহমিনা এর ছবি

সব গুলো পর্ব পড়লাম, বানান অনেক ঠিক হলেও শুধু বানানজনিত সমস্যা নয়, যেমন-
"শহরের সন্ধ্যা ঠিক বুঝা যায় না"-বুঝা না হয়ে এটা হবে বোঝা। আবার "তোর সখিনা খালারে আর সুশীলকে নিয়ে একটা ফ্ল্যাট নিয়ে থাক" একটা বাক্যতে খালারে, সুশীলকে --রে ও কে-বসবে নে।
গল্পটি মনে হল "চিড়িয়াখানা" মুভিটার ছায়া অবলম্বনে লেখা!
‍‍‍‍‍‍***************************************************
When I'm right nobody remembers; when I'm wrong nobody forgets!

When I'm right nobody remembers; when I'm wrong nobody forgets!

অতিথি লেখক এর ছবি

আপু অনেক ধন্যবাদ সুন্দর মতামতের জন্য। মানুষ ভুল করেই শিখে, আমি অনেক শিখলাম এই কেখাটা লিখে। সবাইকে অনেক অনেক ধন্যবাদ।

আর আপু আপনি বললেন লেখাটি "চিড়িয়াখানা" মুভিটার ছায়া অবলম্বনে লেখা কিন্ত আমি মুভিটা কোন দিন দেখিনি আর এর কাহিনীও কোনদিন শুনিনি। গল্পটা সম্পূর্ণ আমার কল্পনা। ধন্যবাদ, মুভিটা দেখতে হবে। লিংটা কি আপু দেয়া যায়?

মূলত পাঠক এর ছবি

কী সর্বনাশ, গোয়েন্দা গল্প লিখছেন ব্যোমকেশ না পড়েই? (আঁতকে ওঠার ইমো)

অতন্দ্র প্রহরী এর ছবি

দলছুট, আপনার ইতিবাচক মনোভাব খুব ভাল লাগল। যেভাবে সব মন্তব্যগুলোকে গ্রহণ করলেন, সত্যিই প্রশংসনীয়। আপনি নিয়মিত লিখুন। পাঠক হিসাবে পাবেন আশা করি। আপনার জন্য শুভকামনা থাকল। ভাল থাকবেন।

তবে, ৩য় পর্বে 'দুর্ভেদ্য' লিখেও এই পর্বে আবার তা 'দূর্ভেদ্য' করে ফেললেন কিন্তু।

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ। আমি লেখার সাথে শিখি, কেউ সমালোচনা করলে বিরক্ত হই না। সমালোচনা আমার জন্য আশীর্বাদ।

মূলত পাঠক এর ছবি

আমিও প্রচুর সমালোচনা করলাম, তাতে রাগেন নি দেখে প্রচুর খুশি হলাম। আরো লিখুন (তখনও সমালোচনা করবো জানি য়ে রাখছি, যতদিন না লেখা সুপার-চমৎকার জায়গায় পৌছচ্ছে)। হাসি

ভালো থাকুন।

অতিথি লেখক এর ছবি

সমালোচনা গ্রহণ করতে না পারলে যে শিখতে পারবো না, আর শিখার যে কোন সময় , কাল, পাত্র বা ধরন নেই। সব কিছুতেই শিখনীয় কিছু উপাদান থাকে। আমি সেই গুলো আহরণ করার চেষ্টা করি। আর আপনাদের সমালোচনা আমার জন্য আশীর্বাদ, আপনারা সমালোচনা না করলে আমি শিখবো কী করে? তাই দয়া করে বেশী বেশী সমালোচনা করুন। ধন্যবাদ কষ্ট করে পড়ার জন্য। জানি আপনার প্রত্যাশার বিন্দুমাত্রও পূরণ করতে পারি নাই, ভবিষ্যতে চেষ্টা করবে ইনশাল্লাহ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।