গদ্য কবিতার / সৈয়দ আফসার

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ০২/০৯/২০০৯ - ৬:৪৮পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

গদ্য কবিতার
সৈয়দ আফসার

আমি ধরে নিয়েছি যা ভাবি-ভাবছি তা কবিতা নয়। কবিতা কি কথার কথা, কথার ঝাপটা? যা চোখের সামনে ছবি হয়ে ভাসে। পাঠ্যবিষয় আমার কাছে কখনো কোমল, কখনো গুঞ্জন, কখনো রোমঞ্জক মনে হয়। যা প্রাণের ভেতর ঢুকে শ্বাস নেয়, আমাকে জাগিয়ে রাখে, সেও বাঁচে। জল কবিতাকে ডাকে, নদী কবিতাকে বুকে টানে, আকাশ কবিতাকে রূপ দেয়, বাতাস কবিতাকে ধান্যক্ষতে মেখে শিষ দেয়। বংশী বাজায়।

রহস্যের সাথে ক’বার দেখা হয়েছিল জানি না। তবুও তাকে নিয়ে লিখি। সিক্ত-ইতস্তত এই জীবনে লুকানো উষ্ণতা কমে গেলে, তার পরের বছর থেকে আমি রাতে ছাদে দাঁড়িয়ে সন্ধ্যাকে কিনে জ্যোৎস্না দেখবো। বর্তমান যাই হোক ভবিষ্যত চিরকাল ছন্দময় গতিময়, বিনষ্ট হবে না রহস্য-কল্পনা। বয়স বাড়লেও ভুলতে পারবো না এক সাথে একাধিক চিন্তা-ভাবনা। অনেক কিছু বেড়ে উঠতে দেখি লতানো দেহে, গাছে-ডালে-পাতায়, তার সাথে যদি স্বস্তি আসে, যদি বিপরীত গতির সাথে দেখা হয়ে যায়। যা দেখি সহসা ভালো লাগে না। নিসর্গ গাছপালা আর আকাশ ছাড়া আর কোনো দৃশ্য দেখতে ভালো লাগে না। ভালো আছি বলে মনে থেকে যায় তরুণ বয়স, বিস্মরণশীলা। তোমার কি মনে হয় লোমে পরিপূর্ণ থাকে কল্পপ্রচেষ্টা? এতোকাল শুধু সন্ধান। শুধু আয়োজন-সংগোপন। ব্যর্থ প্রত্যাশা। বেদনা নিজের সাথে রাখি তাতেও সুখ! কেননা ‘ফিরে এসো চাকা’ ভাবতে ভাবতে সহজে বানাতে পারি মাংস দিয়ে রকমারি কিমা। দেহের জ্বালার মতো, সহজে ওড়াতে পারি নিকোটিনের ধোঁয়া। সহজে কল্পনা করতে পারি কথকতা, যা হৃদয়ে প্রতিমা-প্রিয়তমার মুখোমুখি দাঁড়ায়, ওই যা আঘাতদায়ী স্মৃতি ... হাবিজাবি-নিমেষলভ্য ভাবনার বিষয় হবার কথাও নয়। দৃশ্য দেখি হৃদয়ের রোগ মুক্তির তাগিদে। এরূপ ভাবা ... ভাবনা-কল্পনা-আশা-আকাঙ্খা আমার কাছে এতো লোভনীয় মনে হয়। এসব ভেবে অবয়বহীন হয়ে যাই এমন বিষয়ে বাস্তব চিন্তাগুলো বুকের ভেতর হৃদয় জাগাতে গরম লাল চায়ের পেয়ালায় চুমুক বসাই। তারপর প্রশ্ন উঠতেই পারে! আপনার কি এ-রকম হয়?

জয় গোস্বামী যখন লিখেন ‘জীবন নিয়ে এক লাইন লিখা অসম্ভব’ তখন অন্ধকারে হাঁটি, অপরিচিতাকে হৃদয় দিয়ে বাঁধি। চোখ বন্ধ করে জানালায় দাঁড়াই। সময় বিস্ময়ে তাকাই। কেননা জীবনের বর্ণিল ছায়াগুলো যেভাবে ছায়াছবিতে ফুটে ওঠে, তেমনি কবিতা জীবনের রূপগুলোকে ধরে রাখে। কবিতা কি? জানার জন্য বুঝার জন্য অনেক ধী-সম্পন্ন পাঠকের সাথে আলোচনা করে তাদের জিজ্ঞাসা করেছি- কবিতায় এতো রহস্য, এতো ভাবনার দৃশ্যরূপ, এতো মগ্নতা-মুগ্ধতা, এতো চিন্তার খোরাক যেন মনের দর্পণ, দ্বিতীয় আয়না। একই কথা ঘুরে ফিরে আসে কবিতাকে কোনো অলঙ্করণ করা যায় না। আসলে কবিতা কি? কবিতা কি পরিস্ফুট সত্তা? না-কথা? অস্থির ভেতর স্বস্থি রাখা? ক্ষতস্থানে নিজেকে খোঁজা? বুকের ভেতর দীর্ঘস্থায়ী চাপা ঘ্রাণের এপাশে-ওপাশে ক্রোধ জমিয়ে রাখা? নাকি রসাত্মক বাক্য লিখে কিছুটা সময় ভালোবেসে শীতবসন্ত হাওয়ার ঘুমে পার্কে বসে থাকা? ... আদি শুশ্রূষায় বেজে ওঠা সেতার। মুক্ত-চিন্তা, চিন্তার মুক্তি? যা পূর্ণতৃষ্ণায় জাগে। না তাও মনে হয় না। কবিতা কি তারচে’ বেশি কিছু? যার দীর্ঘ আলোড়ন আছে, পাল্টা প্রশ্ন করে না। বিষয়বস্তু আছে। কথা জমিয়ে রাখার ক্ষমতা আছে। স্বয়ং প্রকাশ-জিজ্ঞাসার নেশা আছে। কিন্তু আমার মনে হচ্ছে আমার দীর্ঘশ্বাসে জমা স্মৃতিগুলো এক একটি কবিতা। উলটো হলেও ... না তাও কবিতা হতে পারে না। কবিতা অন্য কিছু ...

কবিতা আমায় অন্তর্লোকে জ্বালায়, পোড়ায়। উত্তাপে নাড়ায়। অবিশ্বাসের ভেতর অভিনয় শিখায়। নিজের ভেতর প্রাণপণ ঠেলাঠেলি করছি শেষ হচ্ছে না, সহজে ফসকে পড়ছি ধাঁধায়। দ্বিধায়। কবিতা কি শুধু কথার কথা? হাসায়-কাঁদায়। না, তাও কবিতা নয়, কবিতা অন্য কিছু। যা লিখিনি, যা লিখা হবে না এ-জনমে তা কি কবিতা? আহা! কত কিছুই ভাবি, যা মনে রাখিনি, যখন ঘুমে থাকি। অতি সহজে পেতে পারি অনেক কিছু কিন্তু কবিতা?... মনে মনে যা ভাবি কাজের ফাঁকে ঘরে ফেরার আগে ভুলে যাই, তাও কি কবিতা? যা উপলব্ধি দ্বারা ঘাত হই, ঘোরে মিশে যাই, অপেক্ষা গুনতে থাকি, মুরুগের ডাক শুনার আগে যা লিখি তাও কি কবিতা? কবিতা তাও নয়, কবিতা তারচে’ বেশি কিছু।

কবিতার আকর্ষণ, বলতো পারো নিজের মতো করে নান্দনিক উচ্চারণ, আর্তি-আত্মজিজ্ঞাসার বলতে না-পারা গুঞ্জন। কীর্তিনাশা-স্পন্দন - উদ্যম-চিন্তা একজন লিখেন অন্যজন পাঠ করেন তাও কি কবিতা? হৃদয়ের কল্পনায় কি এমন রহস্য থাকে যে পাঠের পর এক ধরণের আত্মতৃপ্তি-তৃষ্ণা-পিপাসা মিটে যা বারবার দীর্ঘশ্বাস ফেলে ভাবায়, বাস্তবিক জীবনের মুখোমুখি করে। আত্মবিশ্বাসে মনোজগৎকে বুকের সন্নিকটে কাঁপায়, অবিশ্বাস রকম আবেগি করে তুলে, স্বপ্নগুলো মনে হয় স্পর্শহীন নিঃসঙ্গ। তখন কেন জানি মনে হয় কিছুই জানে না শোকপাখি ...। কবিতা তাও মনে হয় না। তাহলে কবিতা কি? কেন কবিতার জন্য পথ খুঁজে নেয়া হাজার বছর ধরে। কবিতায় কি এমন চুম্বকত্ব থাকে (উৎপ্রেক্ষা-উপমা-চিত্রকল্প) যা পাঠককে দুই মেরু থেকে টানে, স্পর্শ করে। তার ব্যাখ্যা করা যায় না। কবিতা কি প্রিয়তমার উপহার দেয়া রুমালে ভাঁজে লুকানো দু’লাইন লেখা, ''ভুলনা আমায়''। কবিতা তাও নয়, অন্য কিছু- কবিতা নিয়ে ঘুমাই। কবিতার রস-যশ আস্বাদন করি, নির্বাসনে জীবন বাস্তবতার ফাঁকে কবিতা খাই। কবিতা চিবাই। যান্ত্রিক জীবন-দর্শনের প্যানপ্যানানিতে দূর্বল মুহূর্তগুলোকে ফোটাই, অন্যতায় ক্ষিধে পাই।

ইন্দ্রিয় ও বোধির অন্তনাট্য ঋদ্ধ করে, ব্যক্তিগত লক্ষ্যভেদী ঘাত-প্রতিঘাত-অবস্থান-ভীরুতা-পরগাছাবৃত্তিও কবিতার ভেতর আবছায়ার মর্মস্থলে ঘুরতে দেখা যায়। ব্যক্তিক জীবন সবাই তাঁর সত্তার কাছে নিভৃতচারী। তাও কি কবিতা? কবিতা অন্য কিছু। কবিতা কি শুধু শব্দবদ্ধ করা। কবিতা বিষন্নতা-বেদনা-মুদ্ধতা-নারীপ্রেম-সজীবতা সময়কে ধরে রাখে। না তাও নয় কবিতা। কবিতা স্বপ্নের মতো মনে হয়, কিন্তু অন্তরাত্মার টানে স্বপ্ন দেখি না। সারাক্ষণ কবিতা নিয়ে ভাবি-কবিতা আমাকে কাছে টানে স্পর্শ করে, কবিতা কি যাদু জানে? কবিতা সুখে বাজে, দুঃখে বাজে, মনে বাজে, ক্ষণে বাজে। কবিতা চেতনে বাজে অবচেতনে বাজে। কবিতা সুরে বাজে ভোরে বাজে। তনুমন সেঁচে-ছেনে দেহের ভেতর অনুভূতিগুলো আলোড়িত-বিলোড়িত করে অনুরণন তোলে। স্পষ্ট জিজ্ঞাসার ব্যাপ্তি খুঁজে, কবিতা তাও নয়; কবিতা অন্য কিছু- অন্তর্লোকে যে সকল জিজ্ঞাসা ঘড়ির টুংটাং শব্দে প্রকট হয়ে ওঠা কিংবা নিজের ভেতর জেগে ওঠা নিজস্বতা।

দ্বিধা ও দূর্বলতা দ্বারা কবিতা প্রপীড়িত, তাও বলা যায় না। কারণ কবিতার নিজস্ব একটি দাবী আছে। কবিতা নদীর মতো হতে পারে, কিন্তু ভিনদেশে নদী দেখি না। এমনই নির্বাসন! নদী-খাল-বিল-গাছ-লতা-পাতার কোলাহল নেই। ঋতুর রূপ-পরিবর্তন নেই, মাঠ-ঘাট-মেঠোপথ নেই। পানির কলতান নেই। তবুও কবিতা তার ছন্দে বাজে। তার বিষয়বৈচিত্রের সহজতা রপ্ত করে বাজে। কবিতা আবশ্যক কিছু স্বকীয়তা কিছু সত্যকে আড়াল করে বাজে। কবিতা কি নিজের চারপাশে গড়ে-তোলা প্রতিরোধকৌশল,আত্মিক নিঃসঙ্গতা-বোধ, নিজের বিশালতা, সত্তার কাছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, একাকীত্বের ভয়াবহতা, ভাঙনের স্পর্শকাতরতা। কবিতা কি গভীর সমুদ্রের ঢেউ নাকি মোমবাতি শিখা? যার জন্য বুকের গভীরে বেদনাপ্রবাহ মোমবাতির সাথে জ্বালিয়ে রাখি।

কবিতা কি ঝিনুকের খোলে লুকানো মুক্তাদানা। কবিতা কি রোদে পোড়া, বৃষ্টিতে ভেজা কোনো রূপকথা, তাও হয় না কবিতা। কবিতা ভালো লাগে তাই পড়ি। কবিতার স্পর্শে গড়াই। কবিতার ছন্দে হাঁটি, নিজেই পথ হয়ে যাই। কবিতা নিয়ে ঘুমাই। কবিতায় শান্তি পাই। কবিতার খুঁজে লংড্রাইভে ঘুরি। কবিতাকে উঁচা-উঁচা গাছের পাতায় খুঁজি। ওভারব্রিজের দিকে তাকাই, কবিতার ধ্যানে প্রাণপাখিকে আকাশের ডানায় উড়াই। কিন্তু কবিতা কি? আমি জানি না। আমার সমস্ত অনুভব-অনুভূতি-কাঙ্খা তারায় তারায় হাসে-কাঁদে। চুল-মাথা-চোখ-নাক-কান-ভ্রু-মুখ-ঠোঁট-জিহ্বা-হাত-পা শিরায়-শিরায় উত্তেজনা চড়ায়। কবিতা আলাদা জগতে বাস করে নতুন ভূবন সৃষ্টি করে, যেখানে আশা-আকাঙ্খার হাত ধরাধরি করে চলে।

জীবনের ছবি আঁকি, জীবনের চর্চা শিখি। কিন্তু কবিতা ...? কবিতা ছাড়া কি আর ব্যাকুল-অস্থিকে উদভ্রান্ত করবে? কে আমাকে বাঁচার স্বপ্ন দেখাবে? কে আমাকে রোদে স্নান করাবে, শান্তি দেবে? কবিতা ছাড়া কে হৃদয়ের ভেতর, ধ্যানের ভেতর, স্বপ্নের ভেতর বিবর্ণ ইচ্ছের মতো দ্যুতি-ব্যঞ্জনা ছড়াবে।

কবি কবিতা লিখেন, পিপাসার বেগে। সময়কে কাছে টেনে। কবিতায় কবিকে সর্বদা পীড়িত করে জীবনের পথে, কাঠ চেরাইয়ের শব্দে, অপরিণত ফল কিংবা অপরিচিত ফুলের সৌরভে, নারী-নিসর্গের স্পর্শে, জীবনের গ্লানি টেনে টেনে। কবি তাঁর ভাবনার জনক, কল্পনার জনক, উপমার জনক, আনন্দ-বেদনা-হাসি-কান্নার জনক। কবিতা পাপড়ি মেলে, রূপ ছড়ায়, আষাঢ়ে ফাগুণে, আঁধার ও আলোতে রহস্য বাড়ায়। মনোবেদনায় পোড়ায়, আশা-বিরহ ভালোবাসায়। আশ-পাশ থেকে তুলে আনা আমাদের আটপৌরে কথা, জ্ঞান-বিজ্ঞান প্রয়োজনাতিহাসসহ প্রাত্যহিক জীবন ধারণের অনেক সত্যকে কবি অনাবশ্যক ভেবে এড়িয়ে চলতে হয়। কেননা মানুষ কখনও সমষ্টির ভেতর নিজেকে বিলীন করে দিয়ে নিঃস্বার্থ হতে পারে না। কবিতার রন্ধ্রে-রন্ধ্রে এতো আনন্দ, এতো প্রীতি এতো ছোঁয়া, এতো স্পর্শ স্মৃতিকথা, কথকতা ...। কবিতা ছাড়া-জীবন ধোঁয়ার মতো,- জীবন ছায়ার মতো ভাসে, যে অঙ্গার জ্বলে জ্বলে নিভে যাবে,- হয়ে যাবে ছাই,- সাঁপের মতন বিষ লয়ে-সেই আগুনের ফাঁসে জীবন পুড়িয়া যায়,- আমরাও ঝরে পুড়ে যাই! আকাশে নক্ষত্র হয়ে জ্বলিবার মতো শক্তি - তবু শক্তি চাই (জীবনানন্দ দাশ/ জীবন) কবি যা ভাবেন তাই লিখেন, কবি ছাড়া কে আর ভাবতে পারে - পৃথিবীর সমস্ত ধূসরপ্রিয় মৃতদের মুখ নক্ষত্রের রাত দেখতে পারে (জীবনানন্দ দাশ/ হাওয়ার রাত) কবি ছাড়া কে আর লুকাবে রহস্যের ভেতর? কবি ছাড়া কে বাস্তব - সন্ধানে তাকাবে দূর্বাভাসে উপলব্ধি করবে-পৃথিবীর সবরূপ লেগে আছে ঘাসে, (জীবনানন্দ দাশ/ সন্ধ্যা হয়-চারিদিকে) আলোতে আঁধারে কবিতা খুঁজি, খুঁজি সারারাত জুড়ে।

‘তথাকথিত ছোট সুখ ও ছোট দুঃখের পেছনে রয়ে যায় সমাজ ও সময়ের অনেক বড় সত্যের উপকূল রেখা। এই জন্য ছোট সুখ বা দুঃখ বলে কিছু হয় না।’ কেননা অণুকে ভাঙলে যেভাবে অসংখ্য পরমাণু পাওয়া যায় তেমনি অনেক সুখ-দুঃখ কল্পনার চোখে চোখে দেখলে তাতেও অনেক ভালোলাগা ভালোবাসার স্মৃতি-তৃপ্তি-ঘ্রাণ-আকাঙ্খা-বাসনা সান্ত্বনা পাওয়া যাবে। কবিতা শান্তি দেবে, তৃপ্তি দেবে। তোমাকে না-খুঁজে সারাক্ষণ সারা জীবন কবিতাকে খুঁজবো তার রক্ত খাবো মাংস খাবো হাড়গোড় খাবো। তুমি আমাকে না-বাসলেও ভালো, কবিতা আমাকে ছেড়ে যাবে না এই জীবনে। তাকেই আমি মনে-প্রাণে বাসবো ভালো।

আমার ভেতর জেগে ওঠা কতিার ঘোর-কল্পনা ... জীবনের কঠিন বাস্তবতাকে খুব সহজ করে জীবনের গান গাওয়া একেই তো আমরা বলি কাব্যময়তা। নিজের শৈশব-কৈশোর দেখেছি স্মৃতি উপরে তুলে। গাছ যেভাবে মাটিতে মূল ঘেড়ে তার ডালপালা ছড়ায়, পাতায় পাতায় হাওয়া উড়ায়, নিজস্বজগৎ ও বহির্জগত থেকে তাঁর অভিপ্রায়-কল্পনা-ভাবকে দোলায়-উৎরায়। মনে হয় যেন‘চেতনাগর্ভে ঋদ্ধ হওয়া এক সম্মোহনী ভ্রুণ।’ অন্তঃপুর-মনোবেদনা-রহস্য-স্পর্শ-প্ররোচনার ভেতর কবিকে নাড়ায়। পাঠককে নাড়িয়ে তুলে। যেন প্রাণের মায়াধারণ। কবিতা পাঠে কখনো তৃপ্তি দেয়, কখনো ভাবায়, নিরবতায় পাঠায়। হাসায়-কাঁদায়। জীবনকে নেশার মতো ঘুরায়। দুঃখ ঘুচায়। অন্যের সুরে বলি, কিন্তু কবিতা কি? কেন কবিতার গ্রহণ-যাত্রা জীবনে-জীবনে?


মন্তব্য

ফকির ইলিয়াস এর ছবি

গদ্যটি হতে পারে কবিতার
অথবা জীবনের।
যে জীবন আমাদের চারপাশে
ঘুরঘুর করে অবাধ্য
কুকুরের মতো !

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।