কতিপয় বাংলা বাগধারার উৎসে ভ্রমণগমন-২

মহাস্থবির জাতক এর ছবি
লিখেছেন মহাস্থবির জাতক (তারিখ: বিষ্যুদ, ১৮/০৩/২০১০ - ৬:০৮অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

৩) বাগধারা: অগ্নিপরীক্ষা।
প্রচলিত অর্থ: চরম পরীক্ষা, অত্যন্ত কঠিন পরীক্ষা।
পেছনের কথা: এর প্রসঙ্গ অন্যত্র থাকলেও মূল প্রয়োগ রামায়ণে। রামচন্দ্রের পত্নী সীতার সাথে ওতপ্রোতভাবে সংশ্লিষ্ট এটি।
প্রাচীন ভারতে অগ্নিপরীক্ষার প্রচলন ছিল। এবং, এর মানে নির্ঘাৎ প্রাণ বা মানসংশয়। বুঝলেন না তো?
অগ্নিপরীক্ষার দুটি ধরনের কথা জানি, জানাচ্ছি আপনাদেরও।
একটি, নারী সতী কি না, তা প্রমাণ করার জন্যে তাঁকে প্রবেশ করতে হবে আগুনে। যদি তিনি দগ্ধ হন, তাহলে তিনি সতী নন। আর না হলে, পরম সতী।
দ্বিতীয়টি, যে-নারীর চরিত্র সম্বন্ধে সন্দেহ জাগ্রত হবে, তাঁকে লেহন করতে হবে লাঙলের তপ্ত লোহার অংশটি। যদি তাঁর জিভ পুড়ে যায়, তাহলে তিনি অসতী।
এবার যাঁরা নিজেদের সৎ বা সতী বলে জানেন, বলুন তো এধরনের পরীক্ষার নাম কি বাধ্যতামূলক মৃত্যুদণ্ড নয়?
মনে পড়ে যাচ্ছে মার্ক টোয়েনের একটা ছোটগল্পের কথা যেখানে এস্কিমোদের মধ্যে প্রচলিত এমনি এক সততা প্রমাণের পরীক্ষা আছে যা লিঙ্গনির্বিশেষ। যাকে অপরাধী বলে সন্দেহ করা হয়, তাকে ছুঁড়ে ফেলা হয় ঠাণ্ডা জলে। মৃত্যু নিশ্চিত করে তার সততা। বাঁচলেই অপরাধ সপ্রমাণ।
যাক, ফিরে আসি সীতাকথায়।
রাবণ নিহত। যুদ্ধ সমাপ্ত।
সীতা এসেছেন রামের সামনে। বিভীষণ কিঞ্চিৎ আপত্তি জানিয়েছিলেন সীতাকে এভাবে লোকসমক্ষে আনায়, কিন্তু, রাম তাঁকে দিব্যি তত্ত্বকথা শুনিয়ে দিয়েছেন, "বিপদে, রোগে, যুদ্ধে, স্বয়ংবর সভায়, যজ্ঞে আর বিবাহকালে নারীকে সবাই দেখতে পারে। ওতে দোষ নেই।"
তো, বহুদিন পরে অধীর চারচক্ষুর মিলন।
পাঠক, কল্পনা করুন আপনার বিরহব্যথার অবসানে কী আনন্দ উপজিল আপনার ক্ষুদ্র বুকে, যা ধারণ করার মতো মহান আপনার শরীর নয়। যেন আকাশে, বাতাসে সে-আনন্দ ছড়িয়ে পড়েছে।
দু'চারটা সামান্য কথা বলে হঠাৎ রামচন্দ্রের মাথায় পুরুষতান্ত্রিকতার কঠিন ভূতটা যেন মাথাচাড়া দিয়ে উঠলো। কী বললেন তিনি? শুনুন সেই মহান বাণী বিষ্ণুর অবতার রামের মুখ থেকে। সেই রাম, যাঁর সম্বন্ধে আদিকবি বাল্মীকি নারদকে যে-প্রশ্ন করছেন, তা রবীন্দ্রনাথের ভাষ্যমতে এইমত,
"...কার নাম অমর বীণার ছন্দে বাজে।
কহো মোরে, বীর্য কার ক্ষমারে করে না অতিক্রম,
কাহার চরিত্র ঘেরি সুকঠিন ধর্মের নিয়ম
ধরেছে সুন্দর কান্তি মাণিক্যের অঙ্গদের মতো,
মহৈশ্বর্যে আছে নম্র, মহাদৈন্যে কে হয় নি নত,
সম্পদে কে থাকে ভয়ে, বিপদে কে একান্ত নির্ভীক,
কে পেয়েছে সবচেয়ে, কে দিয়েছে তাহার অধিক,
কে লয়েছে নিজশিরে রাজভালে মুকুটের সম
সবিনয়ে সগৌরবে ধরা-মাঝে দুঃখ মহত্তম-
কহো মোরে, সর্বদর্শী হে দেবর্ষি, তাঁর পুণ্য নাম।"

নারদ কহিলা ধীরে, 'অযোধ্যার রঘুপতি রাম।'"

সেই রাম, যাঁকে ঘিরে আজও লক্ষভক্তপ্রাণ উদ্বেল হয়ে ওঠে। সেই রাম, যাঁর সম্ভাব্য জন্মস্থান রক্ষার জন্যে অগণিত মানুষের প্রাণ ঝরে যায়। সেই রাম, গান্ধিজি মৃত্যুমুহূর্তে যাঁর নামেই শরণ নেন।
বেশ খেয়াল করে শুনুন।
"তোমার চরিত্রের বিশুদ্ধতা সম্বন্ধে আমি কিন্তু নিঃসন্দিগ্ধ হতে পারছি না। চোখের রোগী যেমন প্রদীপের শিখাকে সহ্য করতে পারে না, আমিও তেমনি তোমাকে সহ্য করতে পারছি না। রাবণ তোমাকে কোলে তুলে নিয়েছিল। তোমাকে খারাপ চোখে দেখেছে সে। এখন তোমাকে ফিরিয়ে নিয়ে আমাদের বংশমর্যাদা রাখবো কিভাবে?
সীতা! আমি বেশ ঠাণ্ডা মাথায়ই বলছি, তুমি ইচ্ছা করলে লক্ষ্মণ, ভরত, শত্রুঘ্ন, সুগ্রীব বা বিভীষণ-যাকে তোমার পছন্দ-তার কাছেই যেতে পারো। কিংবা, তোমার প্রাণে যা চায়, তা-ই তুমি করো।
তবে, তোমার মত সুন্দরীকে নিজের কাছে পেয়েও রাবণ তোমাকে স্পর্শ করে নি, এ কথা বিশ্বাস করা দুষ্কর।"
সীতাও আর পারলেন না।
জানান দিলেন নিজের সম্মানবোধ।
বললেন, "প্রভু! নীচ লোকেরা যে-ভাষায় নিজের স্ত্রীর সাথে কথা বলে, আপনি সে-ভাষায় আমার সাথে কথা বলছেন কেন? হনুমানকে যখন লঙ্কায় পাঠালেন, তখনই কেন আমাকে বর্জন করার কথা জানিয়ে দিলেন না? আমি তখনই এ-দেহ ত্যাগ করতাম। আপনাদেরও আর অহেতুক সীতা-উদ্ধারের ঝামেলায় যেতে হতো না।...এতদিন একসঙ্গে বাস করেও, আর আমার বংশ-মর্যাদার কথা মাথায় রেখেও, আপনি এভাবে কথা বলতে পারলেন!"
লক্ষ্মণকে আদেশ দিলেন, "চিতা সাজাও। আমি আগুনে আত্মাহুতি দেবো।"
লক্ষ্মণ চরম ক্ষুব্ধ। তাকালেন অগ্রজের দিকে। কিন্তু, রাম ইতিবাচক ইশারাই করলেন।
সীতা রাম, দেবতা ও ব্রাহ্মণদের নমস্কার করে অগ্নিদেবকে বললেন, "হে অগ্নিদেব! আমি যদি রাঘব ছাড়া আর কোনও পুরুষের প্রতি আসক্ত না হয়ে থাকি, রাঘব যাকে সন্দেহ করছেন 'নষ্টচরিত্র' বলে, সেই আমার চরিত্রে যদি কোন কলঙ্ক স্পর্শ করে না থাকে, তবে উপস্থিত সবাইকে সাক্ষী রেখে রক্ষা করুন আমায়।"
অগ্নি নিজে সীতাকে কোলে করে উঠে এলেন আগুন থেকে। বললেন, "হে রাম! সীতা অপাপবিদ্ধা! রাক্ষসীদের শত প্রলোভনে বা ভীতিপ্রদর্শনেও সীতা কখনই তোমাকে তার হৃদয়াসন থেকে সরিয়ে দেয় নি। তার মনে রাবণের কোনো জায়গাই নেই। আমি বলছি, তুমি সীতাকে নিশ্চিন্তমনে গ্রহণ করো।"
রাম শিরোধার্য করলেন অগ্নির আদেশ।
কে সম্মান করতে চায় এই চরিত্রটিকে (রঘুপতি রাঘব) আর কেনই-বা, তা বহু যুক্তিতর্কের বা অন্ধ ভক্তির বিষয় হতে পারে। কিন্তু, এই একটি অপরাধের জন্যই তার যথেষ্ট নীচাসনে বসা উচিত।
দ্বিতীয় অগ্নিপরীক্ষাও দিয়েছিলেন সীতা।
এবং, সেবার সোজা মাতা ধরিত্রী তাঁকে সযত্নে টেনে নিয়েছিলেন বুকে।
হায়! যুগে যুগে, এমনকি আজও, নারীদেরই কেন অগ্নিপরীক্ষা দিতে হয় বারবার!!
(দুঃখিত, এবার আর লেখায় কোনো রসিকতা এলো না)
৪) বাগধারা: অর্ধচন্দ্র দেওয়া।
প্রচলিত অর্থ: গলাধাক্কা দেওয়া।
পেছনের কথা: মানুষকে অপমান করার জন্যে একাধিক পদ্ধতিই মানুষ উদ্ভব করেছে। তেমনি একটি প্রক্রিয়াই এটি, কিন্তু, অনেক সাহসিক (শব্দটির আগের মানে ছিল ডাকাত)-এর এতেও লজ্জা হয় না, হবে না। অতএব, বরাহনন্দনদের জন্য বরাহগদামই সই। গলাধাক্কা দেওয়ার সময় হাতটার ভঙ্গিমা অনেকটা আধখানা চাঁদের মতো হয় বলেই (তাকান হাতের দিকে) কোনো সুরসিক এই নাম দিয়েছিলেন বলে প্রতীয়মান হয়। ধন্যি বলি সেই পূর্বপুরুষকে।
এই প্রসঙ্গে এর একটা ব্যবহার দেখাই। কিছুটা পিএনপিসি হবে। আশা করি, কেউ কিছু মনে করবেন না। এবং যা তুলে ধরবো, তা মুখের কথা নয়, রীতিমত ছাপার অক্ষর। সুতরাং আমি নিরাপদ।
"একসময় খবরের কাগজের আপিসেও শুরু হয় নাইমের অতি চালাকের বিরুদ্ধে বিস্ফোরণ। কাজী শাহেদ আহমেদের ব্ল্যাংক-চেকের অপব্যবহার করেছে নাইম। কাজী শাহেদ আহমেদ অর্ধচন্দ্র নয়, পূর্ণচন্দ্র দিয়েই বিদায় করেন নাইমকে।" (ক: তসলিমা নাসরিন)
দেখুন প্রত্যুত্তরটি।
"নাঈম ভাইকে নাকি শাহেদ আহমেদ অর্ধচন্দ্র নয়, পূর্ণচন্দ্র দিয়েই বিদায় করেছিলেন। আহা, সেই পূর্ণচন্দ্রের দাগ তো তাহলে আমাদের অনেকের কপালেই তিলক হয়ে আছে! নাইম ভাইয়ের সঙ্গে আমরা সবাই তো সেদিন বেরিয়ে এসেছিলাম। কাজী শাহেদকে খুশি করতে গিয়ে বালিকা আমাদের সবাইকে প্রতিপক্ষ বানিয়েছে। সবাইকে পূর্ণচন্দ্র মানে পূর্ণিমা দিয়েছে। আর নিজের জন্য রেখেছে সেই অর্ধচন্দ্র মানে গলাধাক্কা। এই উদারতার জন্য ঈশ্বর বালিকার মঙ্গল করুন।" (অর্ধসত্য: আবু হাসান শাহরিয়ার)
বক্তা আজ প্রয়াত, বস্তুত, অকালপ্রয়াত। সাংবাদিক, গায়ক, সুরকার, লেখক সঞ্জীব চৌধুরী।
একেই বলে চাঁদ নিয়ে লোফালুফি! ইংরেজিতে শব্দটি 'মুনমুন' হতে পারে কি? পাঠকবৃন্দ বিবেচনা করবেন।

৪) বাগধারা: অলক্ষ্মী।
প্রচলিত অর্থ: অশুভ লক্ষণযুক্ত বা ক্ষতিকারক নারী।
পেছনের কথা: মূলত নারীদের উদ্দেশে প্রযুক্ত এই বাগভঙ্গিটি নানান রকমে ব্যবহৃত হয়। এমনিতে এর মানে কাজে কর্মে শ্রীহীনা বা কখনো, দুর্ভাগ্যবতী। এছাড়া, অলক্ষ্মীতে পাওয়া মানে দুর্দশাগ্রস্ত হওয়া বা দুর্দশাপন্নদের মতো আচরণ করা। অলক্ষ্মীর দশা মানে শ্রীহীনতা বা দারিদ্র্যে নিপতিত হওয়া। আর অলক্ষ্মীর দৃষ্টি পড়া মানে দুর্ভাগ্যের আছর হওয়া।
ইনিও উপমহাদেশীয় পুরাণস্থিতা।
ধনদায়িনী দেবী লক্ষ্মীর জ্যেষ্ঠা ভগ্নী ইনি। দেবতা আর দানবেরা মিলে যখন সমুদ্রমন্থন করে নানান লাভের ও লোভের বস্তু হাসিল করছিলেন, তখন ছোট বোনের সাথে ফাউ হিসেবে এই বড় বোনটিও উঠে আসেন। গলায় তাঁর রক্তবর্ণের মালা, শরীরের নানান জায়গা রক্তকমলে ভূষিত। গায়ের রং কালো, কাপড়ের রংও কালো। হাত মাত্র দুটো। ঝাঁটাহস্তেন সংস্থিতা, মানে হাতে ঝাঁটা, সারাগায়ে লোহার অলঙ্কার, চেপে আছেন গর্দভে। সারাগায়ে কাঁকরলেপ্টানো (দুএকটা ডিটেলিং বাদ দিলে যেন চেনা দু'একটা মুখের সাথে মিলে যায়)।
দুঃসহ নামে একজন উগ্রতপা ঋষি তাঁকে বিয়ে করেন। কারণ, দেবতা বা দানব, কেউ-ই তাঁকে গ্রহণ করতে রাজি হচ্ছিল না। দুঃসহ নিজেও যথেষ্ট দুঃসহ ছিলেন অন্যদের কাছে, কিন্তু তিনিও শেষমেষ অলক্ষ্মীকে হজম করতে পারেন নি। অতিষ্ঠ হয়ে অগত্যা তিনি তালাক দেন ভদ্রমহিলাকে।
তিনি তখন দেবতাদের কাছে তাঁর ভবিষ্যত বাসস্থান সম্পর্কে জানতে চান।
দেবতারা ফতোয়া দেন, তুমি রবে নীরবে যেখানে সবসময় ঝগড়াঝাঁটি চলে (উদা: এই বাংলার 'মহান' জাতীয় সংসদ); যেখানে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে দ্বন্দ্ব অহর্নিশ, সেখানেও তোমার আছে, আছে স্থান। এছাড়া, যে-ব্যক্তি সর্বদা মিথ্যাভাষী, যে-ব্যক্তি কদাচারী, তাকেও তুমি আশ্রয় করতে পারবে।
এরপর হইতে ঘরে ঘরে অলক্ষ্মীর অধিষ্ঠান হৈল। এবং, বঙ্গভাষাতেও।


মন্তব্য

দ্রোহী এর ছবি

প্যারাগুলো আলাদা করে দিলে পড়তে সুবিধা হয়।

স্পর্শ এর ছবি

ভালো লাগছে এই সিরিজ।
চলুক চলুক


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...


ইচ্ছার আগুনে জ্বলছি...

কাকুল কায়েশ এর ছবি

সিরিজটা ভাল হচ্ছে, কিন্তু প্রথম পর্বটা বেশী মজার ছিল।

প্রথম পর্বেই একটা আশংকার কথা বলতে চেয়েছিলাম, দ্বিতীয় পর্বে এসে না বলে পারছিনা। আপনার এই সিরিজটা শেষ হবে কিনা বা সিরিজ চলতে থাকলেও মুগ্ধতা ধরে রাখতে পারবে কিনা, এটা নিয়ে আমার একটু সন্দেহ আছে। কেন, সেটা বলি......এত এত বাগধারা আছে, আপনি যদি সবগুলা ধরে ধরে এগুতে থাকেন, তাহলে কিন্তু আসলেই সমস্যা। এছাড়া সবগুলার পেছনের কাহিনীও কিন্তু মজার নয়। (দ্বিতীয় পর্বেই আমরা এটা জেনে গেছি)।

তাই আমি আপনাকে অনুরোধ করছি, আপনি সবগুলা বাগধারা থেকে এমন কতকগুলো (ধরুন গোটা পঞ্চাশেক) বাগধারা বেছে নিন, যেগুলার পেছনের কাহিনী অন্যগুলার চাইতে অনেক অ-নে-ক বেশী সরস ও মজার। যেগুলার কাহিনী অত মজার নয় বা খুব সহজেই অনুমেয়, সেগুলাকে বাদ দিলেই ভাল।

আমার কমেন্ট কি আপনাকে আহত করল কিনা বুঝতে পারছিনা। কিন্তু এজন্য বলছি যে, আপনি অনেক কষ্ট করে এই সিরিজটা আমাদের উপহার দিচ্ছেন। তাই সিরিজ়টা যেন পানসে না হয়ে যায়, তাই এই অনুরোধটা করলাম।

যাই হোক, পরের পর্বের অপেক্ষায়......

=====================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

==========================
একটাই কমতি ছিল তাজমহলে,
......তোমার ছবিটি লাগিয়ে দিলাম!

অতিথি লেখক এর ছবি

সহমত।

-স্নিগ্ধা করবী

নাশতারান এর ছবি

সিরিজটা খুব ভালো লাগছে।


অগ্নিপরীক্ষা প্রসঙ্গে মনে পড়ল ভারতের একটা অ্যানিমেটিত শিশুতোষ চলচ্চিত্র দেখেছিলাম রামায়ণ নিয়ে। সীতাকে উদ্ধার করে রামের অযোধ্যায় প্রত্যাবর্তনের মধ্য দিয়ে ওটার দি এন্ড হয়। এটুকু দেখার পর অভ্যেসবশত শিশুরা ভাবতে বাধ্য যে অতঃপর উহারা সুখেশান্তিতে বসবাস করিতে লাগিলেন। স্বভাবতই পরের ইতিহাস দেখিয়ে শিশুদের মনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে চাননি নির্মাতারা। রেখেঢেকে ধর্ম গুলিয়ে খাওয়ানোর এ প্রচেষ্টা যথেষ্ট অসৎ মনে হয় আমার।


আপনার আগের লেখার লিঙ্কটি উল্লেখ করে দিন। উৎসাহী পাঠকদের সুবিধে হবে।


আপনার নিকটি জানিয়ে দিন দয়া করে।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

বইখাতা এর ছবি

'অগ্নিপরীক্ষা'র ইতিহাসটাই শুধু জানতাম। সিরিজটা খুব ভালো লাগছে। চলুক

তাহসিন আহমেদ গালিব এর ছবি

লেখা ভাল লাগছে... আগামী পর্বের অপেক্ষায় থাকলাম

ধুসর গোধূলি এর ছবি

- ভাই স্পেস মারেন।

একটা লাইনের সাথে আরেকটা লেগে গেলে ভালো লাগে না।

মানুষ বইয়ে একটা লাইনের গায়ের ওপর আরেকটা লাইন তুলে দেয় কারণ জায়গার অভাব। এখানে তো সেই সমস্যা নেই। ফর্মার হিসেবে কোনো প্রকাশক আপনার কলম টেনে ধরবে না।

লিখুন জায়গা নিয়ে। আর কায়েশ ভাই যেরকম বললেন, সেরকম পরিকল্পনায়। চমৎকার বিষয় নিয়ে লেখাটা চলতে থাকুক সম-পাঠক চাহিদা নিয়ে।
___________
চাপা মারা চলিবে
কিন্তু চাপায় মারা বিপজ্জনক

তিথীডোর এর ছবি

মহাস্থবির_ জাতক (ঠিকঠাক লিখেছি তো?)
পরামর্শগুলোতে চোখ বুলিয়ে লিখতে থাকুন.... হাসি

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

মাহবুব লীলেন এর ছবি

সিরিজটা চমৎকার
চলুক

অলক্ষীর বিষয়টা জানাতাম না। আমি ভাবতাম লক্ষ্মীর বিপরতী বুঝি

সৈয়দ নজরুল ইসলাম দেলগীর এর ছবি

আমারও তাই ধারণা ছিলো
______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

______________________________________
পথই আমার পথের আড়াল

অতিথি লেখক এর ছবি

১) আমার এই সিরিজের প্রথম লেখাটার লিংক দেওয়া হল এই অংশে

২) আমার নিকটা কেউ কেউ লিখেছেন, তারপরও আবার লিখলাম: মহাস্থবির জাতক। তবে, সাধারণত অন্যের পোস্টে মন্তব্য করলে তা 'মহাস্থবির', এই নামে করে থাকি।

৩) আসলে, বাগধারার সবগুলোর পেছনের গল্পটা মজাদার, তা তো নয়ই। তবে, পেছনের গল্পটা জানলেই হয়তো কেউ কেউ আনন্দ পেতে পারেন, এই তাগিদে লেখা। যেমনটা আমি পেয়েছিলাম। জানারও একটা অন্যরকম মজা আছে। তবে, জানানোর ভঙ্গিটাও গুরুত্বপূর্ণ, এটাও মানছি। এবং, আমার হাতে সেই সোনার তুলি নেই, যা দিয়ে সব লেখা রাঙিয়ে দেবো উজ্জ্বলতর রঙে, এটাও স্বীকার করি।
উপদেশসমূহ ভবিষ্যতে মাথায় রাখার চেষ্টা করবো। তবে পরিপালন কতটা করতে পারবো, তা বলতে পারছি না।

৪) স্পেস দেওয়ার ব্যাপারটা খেয়াল রাখা উচিত। আসলে তাড়াহুড়ো করে লেখা ও পোস্ট করা হয় বলে ফরম্যাটিং-টা হয়তো অতটা জোরদার হয় না, দুঃখিত।

সবাইকে ধন্যবাদ আবারো।

নাশতারান এর ছবি

পেছনের গল্পগুলো জেনেই যথেষ্ট মজা পাচ্ছি। মজারু ঢংটাকে প্রাধান্য দিচ্ছি না সে তুলনায়। আপনি লিখতে থাকুন। এই গতিতে লিখলে আমাকে পাঠক হিসেবে পাবেন নিশ্চিত।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তিথীডোর এর ছবি

অট: বোধহয় চিনতে পেরেছি! দেঁতো হাসি

মহসিন কলেজ> ০৫ ব্যাচ> সায়েন্স> প্রিয়ম, বাঁধন, সুদীপা, শান্তা, মৌলি, নাদিয়া, পিংকী, নাবিলা> লেখার ধাঁচ-- একজনকেই নির্দেশ করে....

চবিতে রসায়নে পড়ছেন কি??

--------------------------------------------------
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

________________________________________
"আষাঢ় সজলঘন আঁধারে, ভাবে বসি দুরাশার ধেয়ানে--
আমি কেন তিথিডোরে বাঁধা রে, ফাগুনেরে মোর পাশে কে আনে"

অতিথি লেখক এর ছবি

হা, হা, হা, এতোই সহজে কি আর চেনা যায় বুনডি?

না, মন্তব্য ভুল খাতে।

ধন্যবাদ।

---মহাস্থবির---

আনন্দী কল্যাণ এর ছবি

চলুক সিরিজটি। ভাল লাগছে। অলক্ষ্মীর ব্যাপারটা জানতাম না।

গৌতম এর ছবি

১. আপনার নামে এইমাত্র থানায় জিডি করে এলাম- অন্তত প্রতি সপ্তাহে সিরিজের একটা লেখা প্রকাশিত না হলে পুলিশ এসে ধরে নিয়ে যাবে। নিয়ে এ্যায়সা প্যাঁদানি দিবে না! (ভয় পাচ্ছেন বুঝি! আচ্ছা, ঠিক আছে ওদের বলব কম প্যাঁদানি দেয়ার জন্য। ঠিক আছে?) তো, পরের পর্ব লিখতে শুরু করুন।

২. আমার বক্তব্য কাকুল কায়েশের ঠিক বিপরীত। লেখার বা কাহিনীর মজার চেয়ে এসব বাগধারার কোনটি কীভাবে এলো সেটা জানার প্রতি আমার পক্ষপাতটা বেশি। অবশ্য এই জানতে গিয়ে মজাটা থাকলে মন্দ হয় না! সেক্ষেত্রে কাকুল কায়েশ যেটা বলেছেন- প্রথমে মজার মজারগুলো দিতে থাকুন। তারপর অন্যগুলোও দিন। সবগুলো তেমন মজার না হলেও এই সিরিজের পাঠক হারাবেন না- নিশ্চিত।

৩. সবগুলো লেখা হয়ে গেলে কিংবা এখন থেকেই সিরিজটিকে পূর্ণাঙ্গ করার ব্যাপারে ভাবতে থাকুন যাতে একসময় ই-বই বা ছাপাক্ষরের বই বের করতে পারেন। এতে এই বিষয়গুলো আরো অনেকের জানার সুযোগ হবে। ধন্যবাদ।

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

শিক্ষাবিষয়ক সাইট ::: ফেসবুক

.............................................
আজকে ভোরের আলোয় উজ্জ্বল
এই জীবনের পদ্মপাতার জল - জীবনানন্দ দাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

১) এই প্রথম বা দ্বিতীয়ও হতে পারে। আমার নামে কেউ থানায় অভিযোগ করল। বেশ, বেশ। পুলিশকে অগত্যা কিছু টাকা দিয়েই ব্যাপারটা মেটাতে হবে আর কি!!

২) দেখি। এমনিতেই আমার নিজের ক্ষেত্রে জানার মজাটাই বেশি প্রাধান্য পায়। আমার মতামত আমার একটা মন্তব্যেই করা আছে (ওপরে দ্রষ্টব্য)।

৩) আহা, বই! সে-সুযোগ কী আর কখনো হবে!!!

ধন্যবাদ।

অ.ট.: মুক্তাঙ্গন-এ দেখি না অনেকদিন। ভাল আছেন তো?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।