সহজ কথা যায় না বলা সহজে

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৫/০৭/২০১০ - ৩:১৪পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

আমাদের দেশে একটা খুবই গরম বিষয় এত বছর ধরেই চলে আসছে আর সেটা হলো "যুদ্ধপরাধীদের বিচার" কিন্তু এত বছর হয়ে গেলো কতটুকু সাফল্য এলো এই ব্যাপারে তা নিয়া আমার সন্দেহ আছে। কিন্তু আমার যেই ব্যাপারটা তে খটকা লাগে সেটা হলো এই জিনিস টা নিয়ে নানা মুনির নানা মত। না মুনিদের নিয়ে আমার কোনো ঝামেলা নাই বা তাদের মত নিয়েও না। আমার ঝামেলা অন্য জায়গায়-
১.দেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করার পর সেই স্বাধীন দেশের অধিবাসী হয়ে সেই দেশের সরকার এর বিরুদ্ধে কাজ করার মানে হলো রাষ্ট্রদ্রোহিতা। রাষ্ট্রদ্রহিতাকে এক কোথায় গাদ্দার বলা যায় আর দুনিয়ার কোনো আইন একে সমর্থন করেনা তার থেকেও বড় কথা কোনো ধর্ম একে সমর্থন করে না।
২.যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিতে দেশের সাধারণ পেশাজীবি বা বুদ্ধিজীবিদের পৈশাচিক ভাবে হত্যা করা পৃথিবীর কোনো দেশের আইন বা ধর্ম সমর্থন করেনা।
৩.ধর্মের নামে মানুষ হত্যা করার ক্ষমতা বা নির্দেশ পৃথিবীর কোনো ধর্মেই উল্ল্লেখ করা হয়নি।
৪.ধর্মকে রাজনীতির বর্ম হিসেবে প্রয়োগ করা নেক্কারজনক একটি পদ্ধতি।

উপরের এই চারটি খুব সরল ও সাধারণ কথায় প্রকাশ করা অভিযোগ যা যেকোনো সাধারণ শ্রবন ক্ষমতা সম্পন্ন মানুষের বোঝার কথা।কিন্তু যেই দেশের এবং যেই দেশের মানুষের বিরুদ্ধে এই ঘৃণ্য কাজগুলোর জন্য কতিপয় ব্যাক্তি অভিযুক্ত এবং যাদের বিরুদ্ধে অনেক প্রমান আছে তাদের বিচার করার প্রশ্ন আসলেই সেই দেশেরই কতিপয় নাগরিক এর যুক্তি চিন্তা ও মানবাধিকার বোধ যখন উথলে ওঠে তখন সত্যি অবাক লাগে।
প্রশ্ন হচ্ছে যাদের আপনজন কে এভাবে হত্যা করা হয়েছে মানবাধিকার এর যুক্তিগুলো কি তাদের জন্য আসেনা???যারা এখনো সক্রিয় ভাবে দেশের স্বাধীনতার বিরুদ্ধে কাজ করে যাচ্ছে সবার চোখের সামনে দিয়ে এরকম রাষ্ট্রদ্রহির বিচার করার জন্য দেশের সরকার এর আর কত কে.জি প্রমান হলে পর্যাপ্ত হয়???আর যেই যুক্তিবাদী মানবাধিকার প্রিয় মানুষ গুলো এই ঘৃণ্য পশুগুলোকে মানুষ হিসেবে দেখার মতো যোগ্যতা রাখে আমি মনে করি তাদের আসলে আবার ৭১ সালে জন্ম নেওয়া উচিত।
এখন আমি যেটা বলতে চাই সেটা হলো এদের কে বিচার করতে এত বছর ধরে কেন এত লুকোচুরি খেলা হচ্ছে?যেই অভিযোগে এরা অভিযুক্ত সেটাতে তাদের গ্রেফতার না করে অন্য কোনো মামুলি অভিযোগে কেন তাদের গ্রেফতার করে দেশের জনগনের সামনে রঙ্গ নাটক উপস্থাপন করা হচ্ছে?কেন সহজ ভাষায় এদের অমানুষ হিসেবে,যেকোনো যুগের কালের ধর্মের সব রকমের নিয়ম এবং দোহাই উপেক্ষা করে বিচার করা হচ্ছেনা?কেন শুধু মাত্র এদের বিচার এর কথা আসলেই আমাদের মনে যুক্তির বুদবুদ ওঠে?
এদের কে সমর্থন দেওয়ার জন্য আজকাল ব্লগ বানানো হচ্ছে জনপ্রিয় সামাজিক সাইট গুলোতে পেইজ খোলা হচ্ছে তাতে আবার আমাদের দেশেরই সোনার সন্তানেরা যোগ দিয়ে একে সাধুবাদ জানাচ্ছে নানারকম যুক্তির পসরা সাজাচ্ছে মানবাধিকার এর দোহাই দিচ্ছে।এসব দেখে আসলেই বলতে ইচ্ছা করে "বাহ! কি চমত্কার দেখা গেলো"।
অন্য মহাদেশের দুই ফুটবল দলকে নিয়ে আমাদের দেশে মাতামাতির শেষ নেই তারা গোল দিয়ে যত না নাচে আমরা তার দশগুণ নাচি তারা হারলে আমরা একজন আর একজনের মাথা ফাটাই!রাস্তায় রাস্তায় মিছিল হয় আর আমার আবারও পুরনো সেই কথাটা মনে পরে যায় "সত্যি সেলুকাস কি বিচিত্র এই দেশ"!
আমদের দেশের ভিতরে বসে থাকা পরজীবি গুলোর কাজ আমাদের মনে কোনো ভাবাবেগ তৈরী করেনা তাদের বিচার এর জন্য আমরা মিছিল করতে পারিনা।আমরা পারি তাদের জয়ধ্বনি দিতে তাদের ভোট দেওয়ার জন্য মিছিল করতে আমরা সহজ ভাবে তাদের মুখে বলতে পারিনা তোমরা তো "সারমেয়র দল" মানুষ হয়ে আমি কেন তোমাদের ভোট দিবো?
আমাদের দেশের অবনতির জন্য পার্শবর্তী দেশগুলোকে আমরা অনেক গালি দেই,ভালো লাগে মন হালকা হয়,অন্তত কাওকে মন খুলে আজকাল গালি তো দাওয়া যায় এতে মানবাধিকারও লঙ্ঘন হয়না!কিন্তু একবার আয়নায় দাড়িয়ে নিজের দিকে দেখিনা যে নিজের দেশে আমরাই নিজেদের কথায় নিয়ে যাচ্ছি?আমাদের মনুষ্যত্ববোধ কোথায় হারিয়ে গেছে সেই কবে তার কোনো হিসেব আমাদের নেই!
যারা এদের বিচার প্রক্রিয়ার সময় মানবাধিকার এর ঝড় তোলে তাদের বলবো যাও যারা নিজের মা বাবা আপন মানুষ গুলোকে এই পশুগুলোর হাতে মরতে দেখেছে তাদের সামনে গিয়ে দাড়িয়ে মানবাধিকার এর কথা বোলো যদি পারো তাহলে সত্যি তোমাদের "লাল সেলাম"।
"আমাকে যদি বলো এদের দিকে তাকিয়ে তুমি কি দেখতে পাও আমি বলবো একদল নর্দমার কীট থেকেও জঘন্য জিনিস দেখতে পাই যাদের দেখলেই আমার পা দিয়ে পিষে ফেলতে মন চায়।এত ঘেন্না লাগে যে এদের নাম মুখে আনাটাও আমার কাছে পৃথিবীর সব থেকে বড় গালির থেকেও বেশি মনে হয়।এদের মুখে হাসি দেখলে আমার গা গুলোয়।
এদের দেখলে মানবাধিকার এর কথা মনে আসে?-আমি বলবো আজব তো মানুষ কোথায় দেখো? আমি তো দেখি না! মানুষ যদি না হয় তো এদের আবার কিসের মানবাধিকার??????????"
- মনকারিগর


মন্তব্য

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।