মৌন দূর শৈলে ফেলে নীল ছায়া

সাবরিনা সুলতানা এর ছবি
লিখেছেন সাবরিনা সুলতানা (তারিখ: শুক্র, ০৮/০৪/২০১১ - ৮:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সাবরিনা সুলতানা

আগে কি বলেছিলাম এ কথা, রোদ্দুরের গনগনে আঁচ শান্ত শীতল লাগতে শুরু করেছে ইদানিং? তার প্রখর উত্তাপে ভালোবাসার হিম পরশ পাই এখন? ...সম্ভবত বলেছিলাম। সেই অনেক আগে ...ঝিম ধরা একলা দুপুরগুলোতে ঝমঝম করে কি যেনো বেজে উঠতো মাথার ভেতর। একটানা বেজেই চলতো। স্কুল থেকে একা একা ফিরতাম এই রকম সব দুপুরবেলায়। বড় রাস্তার ট্রাক বাসের বিকট আওয়াজ অসহ্য লাগতো।

তাই মাঝে সাঝে শর্টকাট ধরতাম। ওই রাস্তাটা বেশ নির্জন ছিলো। একটা ছোট্ট নালা একলাফে পেরুতে হতো। সবার মতোন পারতাম না তাই বসে ওপারে পা রেখে এপারে হাতে ভর দিয়ে উলটে অনেক কষ্টে কিভাবে যেনো পেরিয়ে যেতাম ঠিক ঠিক। অথচ প্রতিবারই মনে হতো এই বার বুঝি পারবো না। তারপর নার্স কলোনীর নির্জন দুপুরের গা ছমছম করা এবড়ো খেবড়ো রাস্তাটা পেরুলেই আমাদের হাসপাতাল কলোনীর সিমেন্টের পিচ ঢালা রাস্তা। বেড়ার ওপাশে বিরাটাকায় ফুলের বাগান। চারপাশে নানারকমের ফুলগাছের মাঝখানটায় বাগান মালিক কি মনে করে যে লাল শাক চাষ করতেন তিনিই ভালো বলতে পারবেন। বাগান পাশ কাটিয়ে আমাদের বিল্ডিং সামনে এলেই ইউক্যালিপ্টাস আর ঝাউয়ের শনশন আওয়াজ কানে ঝাপটা দিয়ে যায়। এদের মধ্যে ঝাউ গাছের সাথেই আমার সব সখ্যতা ছিলো। না বলা আমার কথা চুপিচুপি শুনে যেতো সে। মাথার উপরে মস্ত আকাশ। এপার থেকে গড়িয়ে ধীরে ধীরে সুয্যিটা বড় রাস্তার ওপারে বটগাছের মাথায় এসে পড়তো। আমি বিল্ডিং এর ছায়ায় ঢুকে টের পেতাম রোদ্দুর ঢুকে গেছে মাথার ভেতর। ঝমঝম বেজেই চলেছে ...


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালোই লিখেছেন। আরো একটু বড় হলে মনে হয় ভালো হতো।

কামরুজ্জামান স্বাধীন।

অতিথি লেখক এর ছবি

কেনো যেনো বড় হলো না আর ...ধন্যবাদ ভাই হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

লেখাটা পড়তে পড়তে রোদ্দুর আমার মাথায়ও ঢুকে গেছে!
চমৎকার বর্ণনা! চলুক
সুমিমা ইয়াসমিন

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ সুমিমা হাসি

তুলিরেখা এর ছবি

ক্লাস ফাইভ সিক্সের ইস্কুল থেকে ফেরার বিকেলগুলো মনে পড়িয়ে দিলেন। বিশেষ করে ফাল্গুন চৈত্র বৈশাখের গুলো। শর্ট কাট রাস্তাগুলো কেমন একটা ঝিলিমিলি রহস্যে ভরে থাকতো, জানা-অজানা, দেখা-অদেখার আলোছায়ায় ভরা সেই পথগুলো। নির্জন ঘুমঘুম ঘুঘুডাকা শেষ দুপুর, বাইরে জ্বলজ্বলে রোদ্দুর, গাছের তলায় ঘন ছায়া, আকাশে ভেসে যাচ্ছে হালকা হালকা মেঘ। কোথাও কেউ নেই।
ভালো লাগলো।

-----------------------------------------------
কোনো এক নক্ষত্রের চোখের বিস্ময়
তাহার মানুষ-চোখে ছবি দেখে
একা জেগে রয় -

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো জেনে আমার হিজিবি এই লেখা আপনাকে শৈশবে ফিরিয়ে নিয়ে গেছে। অনেক অনেক ভালো থাকুন। শুভকামনা নিরন্তর হাসি

সাবরিনা সুলতানা

প্রখর-রোদ্দুর এর ছবি

ঝমঝম বেজেই চলেছে ...
লেখাটি পড়েছি তবু তার রেশ ও আমার চিন্তার মাঝে অবিরাম বেজেই চলেছে । দ্রিম দ্রিম মাদলের মাদকতার মাঝে জোছনার রুপোলি আলোয় যে ঝিরঝিরে আবেশ মধ্য দুপুরেও যেন বাজনা ছাড়াই এইসব ইউক্যালিপটাস, জারুল কিংবা শন গাছের ছায়া আর বাতাসের একে অন্যের সাথে কানাকানির খেলায় একই মাদকতা সৃষ্টি করে । এক একটি দুপুর আমার কাছে জীবন বাবুর মতো একটি জীবন অতিবাহনের গল্প নিয়েই আসে ।

ঝমঝম বেজেই চলেছে ...
ঝমঝম বেজেই চলেছে ...
ঝমঝম বেজেই চলেছে ...
ঝমঝম বেজেই চলেছে ...

- প্রখর রোদ্দুর

অতিথি লেখক এর ছবি

সেই চিন্তার রেশ থেকেই কিন্তু আমার লেখার সূত্রপাত...ঝমঝম বেজেই চলেছে ......

ভালো থাকা হোক ভালোবাসার শক্তিতে হাসি
সাবরিনা সুলতানা

সুজন সুপান্থ এর ছবি

অসাধারণ লিখেছ।
একদম নতুন ভাবনা, নতুন গঠন।
খুব ভালো লেগেছে।
লিখে যাও আরো ..........................................শুভ কামনা

সুজন সুপান্থ
স্বপ্নের ফেরিঅলা

অতিথি লেখক এর ছবি

অনুপ্রেরণার জন্যে ধন্যবাদ তোমাকে...ভালো থেকো
শুভকামনা হাসি

সাবরিনা সুলতানা

রোমেল চৌধুরী এর ছবি

সর্বনাশ, এ তো দেখি আসল হীরে! ক্ষুদ্রায়তনেই অনেক আলোর ঝলকানি।

------------------------------------------------------------------------------------------------------------------------
আমি এক গভীরভাবে অচল মানুষ
হয়তো এই নবীন শতাব্দীতে
নক্ষত্রের নিচে।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।