সিরাজনগর বৃত্তান্ত-১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বুধ, ১৩/০৭/২০১১ - ১:৩০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:


সিরাজনগর বৃত্তান্ত-১


[i]এম আব্দুল্লাহ

সিরাজ অর্থ হচ্ছে প্রদীপ অথবা আলো। কোন কোন সময় সূর্যকে বুঝাতে সিরাজ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। সিরাজনগর চা বাগানে গিয়ে আমার মনে হয়েছে বাগানটির নামতো "সূর্যনগর"ও হতে পারত। সূর্যের আলোকে আলোকিত চা-বাগান দেখে আমার তাই মনে হয়েছে।
তবে, এই নামকরণের পেছনে পারিবারিক ইতিহাস রয়েছে। প্রয়াত স্পিকার হুমায়ুন রশীদ চেৌধুরীর মায়ের নামানুসারে এই বাগানটির নামকরণ। অনেকেই হয়তো পত্রিকার পাতায় দেখে থাকবেন শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি হলও এই মহিয়ষির নামানুসারে করার জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট স্বিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। তিনি রত্নগর্ভা মহিলা।
আমরা যখন সিরাজনগরের উদ্দেশ্যে রওয়ানা দিয়েছি তখন ঘড়িতে অলরেডি রাত ৮টা বেজে ৩০ মিনিট। ফেঞ্জুগঞ্চ ক্রস করার পর টিলার পাশে দেখা মেললো এক শেয়ালের। সে ভারি কনফিউজড। রাস্তা পার হওয়ার স্বিদ্ধান্ত নিতে পারছেনা । রাস্তার মাঝ বরাবর এসে হঠাৎ ব্রেক কষে পেছনে চলে গিয়ে টিলার এক পাশ থেকে উকি দিয়ে ট্রাফিক দেখতে লাগল। আমাদের ড্রাইভার হঠাৎ ব্রেক কষে শিয়ালকে কষে বকাঝকা করে আবার গাড়ির স্পীড বাড়িয়ে দিল।
আমার সহযাত্রী এবং হোস্ট জামি ভাই ইতিমধ্যে জানিয়ে দিয়েছে যে রাজনগর থেকে আকা-বাকা রাস্তার শুরূ। আরো জানলাম আমরা ব্রাক্ষ্মনবাজারে পৌছবার আগেই বাম দিকে মোড় নেব এবং সেই রাস্তায় দু'টি কালভার্ট বেশ কসরত করে পেরোতে হবে। তবে, দু'টি চা বাগানের মধ্য দিয়ে পথ চলবার সময় চা-পাতার সুবাস সবকিছু ভুলিয়ে দিচ্ছিল। রাস্তার বামদিকে মাথিউড়া টি এস্টেট এবং ডানদিকে রাজনগর টি এস্টেট। ফেরত আসার সময় সে রাস্তার সৌন্দর্য দিনের বেলায় অবলোকনের অবকাশ হয়েছিল। যাইহোক সে বর্ণনায় পরে আসছি।

সিরাজনগরের পথে যখন কুলাউড়া রোড থেকে বাম দিকে মোড় নিলাম, তখনও আমরা পীচ রাস্তাই পেলাম। জামি ভাই জানাল তার চাচা স্পীকার থাকার সময় সড়কটা বেশ খানিকটা রাস্তা পর্যন্ত পাকা হয়। কিছু সময় পরই পথ ক্রমশ সর্পিল হতে খাকে। আমার টি এস ইলিয়টের The Love Song of J. Alfred Prufrock কবিতার লাইন মনে পড়ে:-
Streets that follow like a tedious argument
Of insidious intent
To lead you to an overwhelming question …
Oh, do not ask, “What is it?”
Let us go and make our visit.

এম আব্দুল্লাহ

ছবি: 
24/08/2007 - 2:03am

মন্তব্য

পাঠক এনায়েৎ ইউ এস ইসলাম এর ছবি

৮টা বেজে ৩০মিনিট। ওটা রাতের বেলা না দিনের বেলা। রাতের বেলা পথে শেয়াল থাকবে এটাই স্বাভাবিক। এসব এলাকাইতো শেয়ালদের বাসভূমি, সেই আদিকাল থেকে। ক্রমে মানুষের দখলে চলে যাচ্ছে। শেয়ালরাতো আর কোর্ট কাচারিতে যেতে পারবে না। সুতরাং জয় মানুষেরই হবে। অল্প যা বাকি আছে, তা ও আর থাকবে না বেশিদিন। যে কয়টি শেয়াল টিকে থাকবে তারাও একদিন শহরবাসী হয়ে যাবে হয়তো বা। যাই হোক বিভ্রান্ত শেয়ালটাকে কষে গাল দেয়া ঠিক হয়নি। আমি এর প্রতিবাদ জানাচ্ছি। চা-বাগানের রাত অন্যরকম সুন্দর। আশা করছি চা বাগানে রাতের অভিজ্ঞতা দিয়েই শুরু করবেন। রশীদ পরিবারের কথাও এসেছে আপনার লেখায়। সিলেটের গৌরব এ পরিবার সম্পর্কেও আরো কিছু থাকলে ভালো। অপেক্ষায় থাকলাম পরের কিস্তির।

এম আব্দুল্লাহ এর ছবি

ধন‌্যবাদ আপনাকে সুন্দর মন্তব্যের জন্য। আমি তো লি খে ছি রাত ৮টা বেজে ৩০মিনিট। একমত "রাতের বেলা পথে শেয়াল থাকবে এটাই স্বাভাবিক"।
পরে র কি স্তি র কথা :
Let us make our visit together.

এম আব্দুল্লাহ

নৈষাদ এর ছবি

নস্টালজিক হলাম......।

...এত চমৎকার একটা জায়গার (কৈশোরের আবেগময় স্মৃতির অতিরঞ্জনও হতে পারে!!) রাতের বেলার এই ছবি দেখে কিছুটা দুঃখই পেলাম। আশাকরি পরের পর্বে দিনের বেলার কয়টা চমৎকার ছবি দিবেন। বাংলোর পিছনের লনের পরে ছোট টিলার উপরে সাউথ আফ্রিকার এক স্বেতাঙ্গিনীর একটা কবর আছে, তাকে ঘিরে স্পর্শ করে যায় এমন একটা সত্যঘটনাও আছে, হোস্টের কাছ থেকে কখনও জেনে নিয়েন...।

এম আব্দুল্লাহ এর ছবি

ধন্যবাদ।
আপনি যে লি খে ছে ন, "বাংলোর পিছনের লনের পরে ছোট টিলার উপরে সাউথ আফ্রিকার এক স্বেতাঙ্গিনীর একটা কবর আছে"- সেই কবরটি দেখেছি আমি । ঘটনাটি জানা বাকি । জেনে নেব কোন এক সময়।
দিনের বেলার ছবি দিতে চেষ্টা করব ২য় কিস্তিতে ।
এম আব্দুল্লাহ

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।