বিয়ে করা,বিয়ে বসা এবং ......

শামীমা রিমা এর ছবি
লিখেছেন শামীমা রিমা (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৯/১২/২০১১ - ৩:৫৩পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

২০০৮ সালের কথা আমি তখন মেডিকেল কলেজে চতুর্থ বর্ষে পড়ি। আমার এক সহপাঠী বন্ধু আমাকে বলেছিল,কি বিয়ে টিয়ে বসবি না ?
আমি তার দিকে প্রশ্নপূর্ন দৃষ্টিতে তাকাতেই সে বলল,বয়স তো আর কম হয়নি ?
আমি বললাম,তোর প্রথম প্রশ্নটাইতো ঠিক মতো বুঝতে পারিনি আবার দ্বিতীয় প্রশ্ন করছিস কেন ?
সে বলল, বুঝতে পারছিস না কেন ? আমি কি হিব্র“ ভাষায় কথা বলছি ?
আমি বললাম,বিয়েটা কি চেয়ার না-কি খাট,সোফা যে আয়েশ করে হাত পা ছড়িয়ে বসে পড়ব ?
সে এবার সবকটা দাঁত বের করে হে হে হে করতে করতে বলল,মেয়ে হয়ে জন্মেছিস যখন বিয়ে তো বসতে হবেই।
আমি বললাম,কেন বিয়ে করা যাবে না?
সে বলল,ছেলেরা বিয়ে করে আর মেয়েরা বসে।এটাই নিয়ম।
আমি বললাম,নিয়মটা একটু ভাঙলে হয় না?
সে বুরু কুঁচকে বলল, মানে ?
আমি বললাম,মেয়েরা বিয়ে করলে সমস্যা কি?
সে বলল,তোদের মতো উচ্চশিক্ষিত মেয়েদের নিয়ে এই এক সমস্যা।সবকিছু নিয়েই তোদের সাথে আর্গুমেন্টে যেতে হয়।

আমার সেই বন্ধুটির ধারণা মেয়েরা উচ্চশিক্ষিত হলে তাদের পাখনা গজায় তাই তারা বড় বেশি বেয়াড়া হয়ে যায়।তবে তাদের পাখা গজানো আর উইপোকার পাখা গজানোর পরিণতি একই রকম।অল্প কিছুদিনের জন্য তারপর ভূপতিত।মাঝখান থেকে এদেরকে বিয়ে করলে জীবন বরবাদ।তাই বিয়ে করতে হবে নিজের চেয়ে অনেক কম যোগ্যতার, কম বয়সী কোনো মেয়েকে। তবেই সে হবে বাধ্য অনুগত স্ত্রী অন্যথায় সংসার হবে হাবিয়া দোজখ আর জীবন হবে কয়লা। আর সবচেয়ে বড় কথা স্ত্রীর উপর সবকিছু চাপিয়ে দেয়া যাবে অনায়াসেই এবং অনেক কিছুই সে বুঝতে পারবে না।তাই উচ্চবাচ্যও করবে না।

সংসার যে সমঝোতা আর পারস্পরিক বোঝাপড়ার জায়গা নিজের আধিপত্য বিস্তারের জায়গা না এই বিষয়টা আমার সেই বন্ধুটির মাথায় কোনো ভাবেই ঢুকেনি ।আবার কম বয়েসী মেয়ে বিয়ে করে সে হয়তো ‘কুঁড়ি থেকে ফুল ফোটাবার’ ধান্ধায়ও থাকতে পারে।থাক,সেটা তার ব্যাপার।

আমার আরেক বন্ধু আমাকে একদিন বলল,সে বিয়ে করবে,তার জন্য মেয়ে দেখতে। তার চাহিদা খুব বেশি না । মেয়ে দেখতে শুনতে ভালো,ফ্যামিলিটাও যেন শিক্ষিত আর ছোট হয়। আর মেয়েটা উচ্চশিক্ষিত তবে বয়সটা যেনো একটু কম হয়,এই আর কি?
আমি বললাম, তোর চাহিদাতো অল্পই কিন্তু একটা জায়গায় একটু গোলমাল হয়ে গেছে রে।
সে বলল,কোথায়?
আমি বললাম, মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হলে তার বয়স কিভাবে কম হবে ?
এবারও উত্তর পেলাম সেই দাঁত কেলানো হাসি।আর সে এমন একটা ভাব দেখাল, এইটাই যেনো তার বিয়ের ক্ষেত্রে প্রথম শর্ত আর বাকি শর্তগুলো কিছুটা শিথিলযোগ্য হলেও এটা দুষ্পরিবর্তনীয়।

অনেক চিন্তা ভাবনার পর এই সমস্যার একটা সমাধান অবশ্য আমি করতে পেরেছি।তা হলো, মেয়ে বাচ্চা জন্ম নেয়ার সাথে সাথে বাবা মায়ের উচিত ন্যাপি কেনার এক ফাঁকে গিয়ে স্কুলের ভর্তি খাতায় নাম তুলে দিয়ে আসা।অথবা আরেকটা কাজ করা যায় হাসপাতালের লেবার রুম কিংবা ওটিতে একটা স্পেশাল খাতা রাখা উচিত।যেখানে শুধু মেয়ে বাচ্চাদের নাম তোলা হবে তারপর তা স্কুলে স্কুলে পৌছে দেয়া হবে। তাহলেই দুকুল রক্ষা হবে । মেয়ে উচ্চশিক্ষিত হবে পাশাপাশি বয়সটাও কম থাকবে। এছাড়া আর কোনো সহজ সমাধান কী আছে? থাকলে জানাবেন,প্লিজ।তবে এটাতো পরবর্তী জেনারেশনের জন্য প্রযোজ্য হবে ।কিন্তু আমাদের কি হবে ?

আর হ্যাঁ,আমার সেই বন্ধুটি ঠিকই তার কথা রেখেছে। সে কম বয়সী মেয়েকেই বিয়ে করেছে।তবে বিয়ের বছর খানেক পরই সে এখন আবার ভিন্নসুরে গান গাইছে । এই মেয়ে না-কি তার জীবন অতিষ্ট করে ফেলেছে। একে বিয়ে করা ঠিক হয়নি । এখন সে অকুল পাথারে হাবুডুবু খাচ্ছে।
তার কথা শুনে বললাম,কেনো রে তোকে কি মারধর করে?
সে বলল,ঐ একটা কাজই বাকি আছে ।
আমি বললাম,তো ঐ বাকি কাজটা কবে নাগাদ হতে পারে?
কথাটা শুনে সে এমন ভাবে আমার দিকে তাকাল যে আমার মুখখানা আপনা আপনি বন্ধ হয়ে গেল।

শান্তিপূর্ণ জীবন যাপনের জন্য শান্তিপূর্ণ সংসার অপরিহার্য।আর সেক্ষেত্রে যদি কেউ বিচার করে বউ হিসেবে ভাল হবে সুন্দরী,স্মার্ট,আর কম বয়সী মেয়ে। তাহলে তাদেরতো কিছুটা জিনিসপত্র ছুড়াছ–ড়ি,বেশকিছু গালাগালি আর চিৎকার চেচাঁমেচি এগুলোতো বিনাবাক্য ব্যয়ে হজম করতেই হবে ।আর আমার মতে করা উচিত।তা না হলে সে কিভাবে উপলব্ধি করবে যে তার মতো গবেটের জন্য এটাই উপযুক্ত শিক্ষা।

তবে তার জীবন কয়লা হলেও সে কিন্তু বরাবরের মতোই আমাকে বিনা পারিশ্রমিকে সদোপদেশ দিয়েই যাচ্ছে। আমার ইণ্টার্ণশীপ শেষ এখনো কেনো বিয়ে বসছি না,বিয়ে বসা উচিত ইত্যাদি ইত্যাদি ........
আমি বললাম,ঠিকমতো চেয়ার পেলেই বসে পড়ব ।
সে বলল,রসিকতা বাদ দিয়ে সিরিয়াসলি ভাবো ।
প্রত্যেুৎতরে আমি বাধ্য মেয়ের মতো মাথা ঝাঁকিয়ে তাকে আশ্বস্ত করলাম বিষয়টা নিয়ে সিরিয়াসলি ভাববো। কারণ এই বিষয়টা নিয়ে আমি এই শ্রেণীর বুদ্ধজীবীদের সাথে বেশি কথা বলতে চাই না। কারণ আমার একটু লেখালেখির বদভ্যাস আছে তো । তাই এসব নিয়ে চুন থেকে পান খসলেই আমার নামের সাথে (-) লেখক বলে একটা বিশেষণের সংযোজন ঘটতে খুব একটা সময় লাগবে না।তার উপর বাড়ি আমার ময়মনসিংহে।

আর আমার মা বলতে গেলে আমাকে নিয়ে একটু বেশি মাত্রায়ই চিন্তিত ।তাইতো বারবার আমাকে সাবধান করে দেন আমি যেনো আর কখনো “আমি কী অবরোধবাসিনী ?” এই টাইপের কোনো লেখা না লিখি ।আর যদি লিখি তাহলে না-কি আমাকে চিরকুমারীই থাকতে হবে। কোনো ছেলে আমাকে বিয়ে করবে না।(তাইতো বিয়ের প্রপোজাল আসলে আমার মা একটা বিষয় সব সময়ই চেপে যান যে তার মেয়ে লেখালেখি করে)আর তার এই ধারনা আরও জোরালো হয়েছে আমাদের এক প্রতিবেশীনির বিয়ে ভেঙে যাওয়াতে।মেয়েটি আমাদের পাশের ফ্ল্যাটে থাকে।আর নিকটতম প্রতিবেশীর খোঁজ খবর না রাখার মতো অতি আধুনিক এখনো আমরা হতে পারিনি।তাইতো বিয়ে ঠিক হবার খবর যেমন রাখি (বিয়ের কার্ডও দেয়া হয়েছিল) তেমনি ভেঙে যাবার খবর রাখাটাও আমাদের নৈতিকতার মধ্যেই পড়ে।

বিয়ে ভাঙার সারকথাটা এবার একটু বলি।কনে তার হবু ননদদের (পাঁচ জন)সাথে গিয়েছে বিয়ের গয়নার অর্ডার দিতে।পাঁচ ননদের সবচেয়ে ছোটজনের ভাষ্যমতে,কনেকে যেমন গয়না তারা দিচ্ছে সেরকম তো কনে পক্ষকে দিতে হবে না আর তাদের কোনো দাবী দাওয়াও নেই।শুধু তাদের দিককার ট্র্যাডিশন হিসেবে বরের পাঁচ দুলাভাইকে পাঁচটি আংটি দিতে হবে।আর বরের ব্যাপারটাতো আলাদা। ছোট বোনের যুক্তিকে সমর্থন করলেন বাকি বোনেরা।

মেয়েটি তখন বলেছিল,বিয়েতে যদি আমার বাবাকে যৌতুকই দিতে হয় তাহলে আমাকে কেনো ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে মাস্টার্স কমপ্লিট করিয়েছেন ? আর আমাকে কেনো একটা ব্যাংকের সিনিয়র অফিসার হিসেব জয়েন করা পর্যন্ত বিয়ের কথা ভাবেননি ? আমার জন্য আমার বাবা যে পরিমান খরচ করেছেন তার অর্ধেক টাকা হলেই অনেক ধুমধাম আর কয়েক ডজন আংটি সহ আরও অনেক কিছু মেয়ের সাথে দিতে পারতেন।তিনি তা করেননি কারণ তিনি আমাকে মেয়ে হিসেবে ভাবেননি ভেবেছিলেন মানুষ হিসেবে।

তারপর কথা কাটাকাটি তবে অনুপাতটা হলো ৫ঃ১।যাইহোক ফলশ্র“তিতে যা হবার তাই হলো কনেকে তার এই জঘন্য অপরাধের (!)জন্য বরের বোনদের কাছে ক্ষমা চাইতে হলো বরের অনুরোধে।তা না হলে যে বিয়েটা হবে না আর বরের কনেকে খুব পছন্দ হয়েছে তাই বিয়েটাতো হতেই হবে।তার পরও শেষ রক্ষা হলো না।এলাকা সহ রটে গেল এই মেয়ে দজ্জাল,ঝগড়াটে,বেয়াদব ....ইত্যাদি ইত্যাদি।একপর্যায়ে বরের মা কনের বাবা মাকে ফোন করেও একচোট দেখালেন,এহেন বেয়াদব মেয়ের জন্ম দেয়ার জন্য।পরিশেষে বিয়ের আংটি ফেরত।

কিন্তু ঐ যে বললাম বরের কনেকে একটু বেশি মাত্রায়ই ভালো লেগেছে।তাইতো এতোকিছুর পরও সে কনের সাথে দেখা করতে চায়।তার কথাগুলো সে বলতে চায়।আর কনে বেচারা গেল একদিন দেখা করতে।পরদিন সকালে বরের বোনের ফোন ।আর দুর্ভাগ্যক্রমে আমি তখন আপুটির পাশেই বসে ছিলাম।ওপাশ থেকে যেসব কথা ভেসে আসছিল তা শুনে আমি বেশ অবাক হলাম। কোনো শিক্ষিত মানুষ এতো বিশ্রি ভাষায় কথা বলতে পারে তা আমার জানা ছিল না।আমি মোবাইলটা নিয়ে লাইনটা কেটে দিলাম।আপু কাঁদছে আর বলছে ,রিমু ,আমি জীবনে এতো অপমানিত কখনো হইনি ।
আমি বললাম,গতকাল যে গাধার সাথে দেখা করলে সেই গাধার নাম্বারটা দাও অথবা তার অফিসের ঠিকানা।
আপু বলল,থাক।তোকে কিছু বলতে হবে না।
আমি বললাম,কেন গতকাল তো ঠিকই তোমার সাথে রেস্টুরেন্টে কতো ভাবের গপ্পো মেরে গেল।
আপু সেল নাম্বার বা অফিসের ঠিকানা কিছুই আমাকে দিলো না।

শুনছি বরের না-কি আবার নতুন জায়গায় বিয়ের কথাবার্তা চলছে।তাতো চলবেই কারণ একান্ত বাধ্যগত আর অনুগত ইঞ্জিনিয়ার ছেলে বলে কথা!এসব ঘটনার প্রেক্ষিতে আমি বরের একটা অর্থপূর্ণ কথাই শুনেছি তা হলো ..সেদিন মেয়েটির এসব কথা বলা একদম ঠিক হয়নি।কারণ ট্র্যাডিশন তো ট্র্যাডিশনই তা কি কখনো যৌতুকের পর্যায়ে পড়ে!!!

আমার খুব ইচ্ছে করছিল এই বিনয়ী, গর্ধভ পাত্রকে অকথ্য ভাষায় কিছু গালি গালাজ করি।কারণ এর চেয়ে ভালো কিছু শোনার যোগ্যতা তার আছে বলে আমার মনে হয় না। ন্যায় অন্যায় বুঝার ক্ষমতা যদি আপনার না-ই থাকে তাহলে মেয়েটিকে দিয়ে নিজের বোনদের কাছে ক্ষমা চাওয়ানো..... এটা তো ভালই পেরেছেন। নিজে একটা মেরুদন্ডহীন প্রাণী তা জানা সত্বেও কেন মেয়েটির সাথে দেখা করতে এসেছেন আর তাকে নিজের বোনকে দিয়ে অপমান করালেন।আরে আপনার তো দরকার রক্ত মাংসে গড়া একটা মেয়ে মানুষ,জীবন সঙ্গিনী তো দরকার না।জীবন সঙ্গিনী দরকার হলে তার প্রতি বিন্দুমাত্র শ্রদ্ধাবোধ আপনার থাকতো।

বরের কর্মকান্ডে আমার একটা কথাই মনো হলো প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় শিক্ষিত হলেই সে মানুষ হয় না।মানবিকতা আর ন্যায় অন্যায় বুঝার ক্ষমতাই যদি তার না থাকে তাহলে তার সাথে একজন রিক্সা চালক যে বিয়েতে একটা রিক্সা যৌতুক নিয়েছে তার পার্থক্য কোথায় ? আছে । পার্থক্য অবশ্যই আছে। ঐ রিক্সা চালক রিক্সাটা নিয়েছে তার পেটের দায়ে একটু ভালো মতো বাঁচার জন্য আর এই ইঞ্জিনিয়ার নিতে চায় ট্র্যাডিশনের জন্য ।

আমি বুঝিনা একটা মেয়ে সর্বোচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে তারপর ভালো একটা চাকরি করবে তারপরও কেনো তাকে এইসব উদ্ভট ট্র্যাডিশনের ধার ধারতে হবে ? অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্যে তাকে ক্ষমা চাইতে হবে ? তথাকথিত প্রথাবিরোধী কোনো কথা বললেই তার নামের সাথে যোগ হবে অনেকগুলো বিশেষণ ?

( লেখাটা আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে এবং অনেকটা ক্ষোভ নিয়ে লেখা।আর এই লেখাটা পড়ে তাদেরই আতে ঘা লাগবে যারা ইনাদের সমগোত্রীয়। )
শামীমা রিমা


মন্তব্য

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

“বিয়েতে যৌতুকের সাথে মেয়েদের গয়নার পার্থক্যটা ঠিক কোন জায়গায়? যৌতুক একটা অতি আত্মসম্মানহানিকর ব্যাপার। কিন্তু মেয়েদের গয়না সম্পর্কে ছেলেমেয়ে উভয় পক্ষের কনসেনসাস বেশ ইতিবাচক। কেন?”
হিমু তুমি শামিমা রিমার কাছে যে প্রশ্নটা করেছো, তার উত্তরটা আমি দিচ্ছি...আশা করি রিমা আপনি কিছু মনে করবেন না।
আমরা জানি হিন্দু মেয়েরা উত্তরাধীকার সূত্রে বাবার সম্পত্তিতে কোন ভাগ পায়না বা পেতোনা বলে হিন্দু বিবাহ রীতিতে যৌতুক প্রথার প্রচলন হয়েছে। বর্তমান নিয়ম আমি জানিনা। মেয়ে বলে বাবার সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত হবে এটা তো ঠিক কথা নয়, তাই বিবাহকালিন সময়ে যদি হিন্দু মেয়েরা যৌতুক হিসাবে বাবার সম্পত্তি থেকে কিছু অংশ গহনা, আসবাব, গাড়ি বা মোটরসাইকেল বাবাদ পেয়ে থাকে তাহলে দোষ কোথায়? এটা অবশ্যই সমর্থণযোগ্য।
যৌতুক যখন মুসলমান সমাজে প্রচলিত থাকে তখন এটা অতি অবশ্যই অন্যায় এবং অতি আত্নসন্মানহানিকর ব্যাপার। সম্পূর্ণভাবে বর্জণ করা বাঞ্চনীয়। সমাজ ও পারিপার্শ্বিকতার জন্য যৌতুক নেওয়া হয় এটা এতই খোঁড়া যুক্তি যে এ বিষয়ে কিছু লেখা সময়ের অপচয়।
আমাদের মুসলমান আইনে বিবাহের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো মেয়েকে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। পুরুষ তার হবু স্ত্রীর কাছে এককালিন একটা মূল্য প্রস্তাব করে, মেয়েটি যদি সেই মূল্যে সারা জীবনের জন্য নিজের সেবা দিতে রাজী থাকে তাহলে সে কবুল বলে, নতুবা নয়। মেয়েদের মূল্য নিয়ে মুলোমুলি হয়, এটা সত্যি। কিন্তু জিনিস দেখেই তো দাম নির্ধারণ হবে নাকি? সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম! অন্য সেবা তো বাদেই দিলাম।
কাবিননামাতে কতোগুলি ক্লজ বা শর্ত থাকে। তাতে অতি অবশ্যই দেনমোহর বাবদ কিছু পরিশোধ করতে হয়। শুধু মাত্র গহনা (স্বর্ণ, রূপা)ও টাকা দিয়েই পরিশোধ করা গ্রহনযোগ্য।
যখন কাবিননামা লেখা হয় তখন দেনমোহরের উসুল অর্ধেক লেখা থাকে। এবং উসুল গহনাবাবদ দেখানো হয়। অন্তত ৮০% বিয়েতে এমনটাই হয়। যারা বিবাহিত তারা নিজেদের কাবিননামা চেক করে দেখুন।
বাকি অর্ধেক শতকরা ১০০ ভাগ মেয়েরা বিয়ের রাতে মাফ করে দেয়। “বাকী টাকা না দিলে ধরতে দিবো না” এমন একটা উদাহরণ তুমি দিতে পারবে হিমু?
সাধারণত বিয়েতে নগদ টাকায় কেউ দেনমোহর পরিশোধ করেনা। গহনাকে ব্যবহার করা হয় পরিশোধের মাধ্যোম হিসেবে। আর তাই গহনার বিষয়ে আমাদের কনসেনসাস ইতিবাচক।
আর তাই মুসলমান মেয়েরা গহনা নেওয়াটাকে খারাপ চোখে দেখেনা। এটা লোভ নয়। প্রাপ্তি। তোমার মা, তার মা, তারও মা এইভাবে যুগ যুগ ধরে নিজেদের মূল্যবাবদ গহনা গ্রহন করে আসছেন। এখন যদি বলো দেনমোহর সিসটেমই বাজে সিসটেম, তাহলে ইসলামিক আইন বদলাবার আন্দলোন করো।
যৌতুক ও মুসলমান মেয়েদের গহনা এক জিনিস নয়। সুতরাং এ দুটোর তুলনা চলেনা।

হিমু এর ছবি

বুঝলাম, দেনমোহর আর গয়না হচ্ছে ট্যান্টামাউন্ট টু লিজিং আউট দ্য ভ্যাজাইনা।

সাই দ এর ছবি

চলুক @হিমু

পল্লব এর ছবি

চলুক

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

guest_writer নীলকমলিনী এর ছবি

আমার বিবাহিত জীবন দীর্ঘদিনের আর দেনমোহর খুব কম, কারন প্রেমিক ছাত্র ছিলেন, আমার বাবা ছেলের সামর্থ্য অনুযায়ী দেনমোহর ঠিক করেন। আমার স্বামী আমার সেবা ফ্রী পাচ্ছেন বুহুদিন ধরে।আমি কি সেবার জন্য নুতন করে চার্জ করব? শিক্ষিত, চাকুরীজীবী মেয়েদের দেনমোহর খুব কম হওয়া উচিত, শুধু ইসলামি মতে বিয়ের জন্য।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

এতক্ষণে একটা জেনুইন চলুক

অনিন্দ্য এর ছবি

"আমাদের মুসলমান আইনে বিবাহের প্রথম ও প্রধান শর্ত হলো মেয়েকে দেনমোহর পরিশোধ করতে হবে। পুরুষ তার হবু স্ত্রীর কাছে এককালিন একটা মূল্য প্রস্তাব করে, মেয়েটি যদি সেই মূল্যে সারা জীবনের জন্য নিজের সেবা দিতে রাজী থাকে তাহলে সে কবুল বলে, নতুবা নয়। মেয়েদের মূল্য নিয়ে মুলোমুলি হয়, এটা সত্যি। কিন্তু জিনিস দেখেই তো দাম নির্ধারণ হবে নাকি? সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম! অন্য সেবা তো বাদেই দিলাম।"
বমি আসতেছে এই লাইনগুলো পড়ে। আমি খুব সরি, এর চেয়ে ভালো কিছু বলতে পারলাম না।

guest_writer নীলকমলিনী এর ছবি

কি বলব? মেহবুবা ভাবীর মন্তব্যে খুব অবাক হয়েছি।

পল্লব এর ছবি

মেয়েদের মূল্য নিয়ে মুলোমুলি হয়, এটা সত্যি। কিন্তু জিনিস দেখেই তো দাম নির্ধারণ হবে নাকি? সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম! অন্য সেবা তো বাদেই দিলাম।

বুঝলাম না। এটা কি বিয়ে নিয়ে কথা হইতেসে? নাকি পতিতাবৃত্তি?

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

সাফি এর ছবি

সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম! অন্য সেবা তো বাদেই দিলাম।

আমি জানিনা আপনি হাচল মেহবুবা জুবায়ের কিনা, কিন্তু আপনার মন্তব্য পেয়ে নির্বাক হয়ে গেলাম!

ধুসর গোধূলি এর ছবি

মেয়েটি যদি সেই মূল্যে সারা জীবনের জন্য নিজের সেবা দিতে রাজী থাকে তাহলে সে কবুল বলে, নতুবা নয়। মেয়েদের মূল্য নিয়ে মুলোমুলি হয়, এটা সত্যি। কিন্তু জিনিস দেখেই তো দাম নির্ধারণ হবে নাকি? সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম!

তার মানে একজন মেয়ে যখন কবুল বলে, নিজেকে একজন 'মানুষ' না বরং একটি 'পণ্য' (এবং বাকি মন্তব্যসমূহ দ্রষ্টব্য) হিসেবে মেনে নিয়েই তবে বিয়েতে রাজী হয়, তাই তো! [অনেক আগে শুনেছিলাম, বিয়ে হলো একটা সামাজিকভাবে স্বীকৃত পতিতাবৃত্তি। সমাজ/পরিবার সাথী ঠিক করে দেয় আর দেনমোহর/গয়নাগাটি নামক মূল্যের মাধ্যমে সমাজ/পরিবারভক্ত প্রাণী সেটা অনুশীলন করে যায়! আপনার মন্তব্যটা এই ধারণারই প্রতিফলন মনেহলো।]

তাহলে এই যে শিক্ষা-দীক্ষা, ইশমাটনেস, স্বনির্ভরতা, যৌতুকের বিরুদ্ধে সোচ্চার- ইত্যাদি মুখরোচক শব্দবন্ধ ব্যবহার করে নিজেদের ব্যাপারে সেগুলো কী? এগুলা কি স্রেফ ভণ্ডামী কিংবা ফুটাঙ্গি মারা না?

কালো কাক এর ছবি

বিয়ে মানে তার মানে একটা মেয়ে কিনে নেয়া যৌনসঙ্গী হিসেবে ! তো দেখাদেখিটা এক্ষেত্রে আরো ডিটেইলস হওয়া উচিত না? বিছানায় পারফর্মেন্সও দেখা উচিত, এরপর দাম নির্ধারণ। গহনা ও দেনমোহর প্রত্যাশী মেয়ে/পরিবারের জন্য এই মন্তব্যটা অবশ্যপাঠ্য।
"তাই গহনার বিষয়ে আমাদের কনসেনসাস ইতিবাচক" এখানে আমাদের মানে যদি সমগ্র মেয়েজাতি হয়ে থাকে তাহলে মন্তব্যকারীকে অনুরোধ করবো "আমাদের" শব্দটা বাদ দিয়ে 'কে কে' উল্লেখ করুন। এই "আমাদের"এর মধ্যে আমিসহ অনেক মেয়েরই নিজেকে দেখতে ঘেন্না লাগছে।

ত্রিমাত্রিক কবি এর ছবি

এই মন্তব্যটা দেখে ঘেন্না লাগল। বিয়ে শাদী করার রুচি উঠে যাচ্ছে। এরকম মানসিকতার কেউ যদি ভাগ্যে জুটে যায়??

_ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _ _
একজীবনের অপূর্ণ সাধ মেটাতে চাই
আরেক জীবন, চতুর্দিকের সর্বব্যাপী জীবন্ত সুখ
সবকিছুতে আমার একটা হিস্যা তো চাই

রু (অতিথি) এর ছবি

ভাবীকে সবাই মিলে এরকম আক্রমন করার দরকার ছিল না। খুবই দুঃখজনক।

পল্লব এর ছবি

<ঘ্যাচাং>

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

মেহবুবা জুবায়ের এর মন্তব্যকে স্যাটায়ার হিসেবেই ধরে নিচ্ছি। বিশেষ করে "সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম!" বাক্যদু'টোতে পুরো ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তীব্র শ্লেষ জড়িয়ে আছে। উনি হয়ত গোড়ার এই মৌলিক সমস্যা বাদ দিয়ে যৌতুক গয়না ইত্যাদি নিয়ে বাগাড়ম্বরকেই আক্রমণ করতে চেয়েছেন।

জলের ফোটা এর ছবি

গহনা নিয়ে ত্যাঁনা প্যাঁচাতে প্যাঁচাতে একটা গুরুত্বপুর্ণ আলোচনাকে পঁচানো শুরু হয়ে গেছে। যা বোঝার ইতিমধ্যে আগত কমেন্টগুলো থেকেই সবাই বুঝতে পারবে। এবার এই পোষ্টে "কমেন্ট করা' রহিত করার অনুরোধ জানাই।

তদানিন্তন পাঁঠা এর ছবি

পোস্টটা যেদিন দেয়া হয় সেদিন থেকেই পড়ে আসছিলাম নিয়মিত। মাঝে মাঝে মনে হয়েছে কিছু বলার কথা কিন্তু কেন যেন লেখা হয়ে উঠেনি। যদিও মেহবুবা জুবায়ের হিমু ভাইয়ের কাছে জিজ্ঞেস করেছেন; আমি দু'একটার উত্তর দিলে আশাকরি উভয়পক্ষর কেউ কিছু মনে করবেন না।

দেনমোহর না দিলে ধরতে দেব না এরকম ঘটনা আমি দুইটা দেখেছি। তার ভিতর একটা আমার নিজের বড় ভাইয়ের। আরেকটা আমার এক বন্ধুর। তবে বন্ধুরটার ক্ষেত্রে মেয়ের চাইতে মেয়ের পরিবারই অগ্রগামী ছিল।

মেহবুবা জুবায়ের লিখেছেন - আর তাই মুসলমান মেয়েরা গহনা নেওয়াটাকে খারাপ চোখে দেখেনা। এটা লোভ নয়। প্রাপ্তি। তোমার মা, তার মা, তারও মা এইভাবে যুগ যুগ ধরে নিজেদের মূল্যবাবদ গহনা গ্রহন করে আসছেন। এখন যদি বলো দেনমোহর সিসটেমই বাজে সিসটেম, তাহলে ইসলামিক আইন বদলাবার আন্দলোন করো।

আপনার কথাটা আমাদের রাজনীতিবিদদের মতো মনে হলো। বাবা বা স্বামী অথবা পরিবারের আর কেউ দেশের হর্তা-কর্তা ছিলেন বলে নিজেকেও তাই মনে করেন তারা। আমার বাবা-মা ভাই-বোন বা আমি আজ যা করতে বাধ্য হচ্ছি নিজের ইচ্ছের বিরুদ্ধে; কেনও আমার ছেলে-মেয়েরাও একটা ভিত্তি পাবে না এর বিরুদ্ধে যাওয়ার? সেই ভিত্তিটা তো আমাদেরকেই তৈরী করে দিয়ে যেতে হবে। আর যদি এইটাকেই ঠিক ধরে নেই যে সেবার মূল্যবাবদ (সকল নারী জাতির কাছে ক্ষমা চাচ্ছি কথাটা বলার জন্য) তাহলে আমরা কেন পৃথিবীর আদিমতম পেশাটাকে খারাপ ভাবে দেখি? আমার মা, নানীদের সৌভাগ্য যে তারা একজনকে সেবা করার সুযোগ পেয়েছেন। যারা তা পান না তাঁরাই তো সেই আদিম পেশার। তাঁরা ওই সেবার বিনিময়েই দেনমোহর নেন একাধিক পুরুষ এর কাছ থেকে। তাঁরাও আমাদেরই কারও মা বা বোন অথবা নানী।

আর যদি আপনি ওই ভাবেই চিন্তা করেন তবে আরেকটা প্রশ্ন চলে আসে। তা হলো ছেলেরা কি কোনও সেবাই করে না? তারাও কি কোন আনন্দই দেয়না মেয়েদের? পুরো ব্যপারটাই কি শুধু একতরফা? তাহলে ছেলেদের দেনমোহর কই?

যদিও প্রসঙ্গটা সিরিয়াস, তবু আপনার লেখা পড়ে একটা কৌতুক মনে পড়ে গেল - ছেলে বাবাকে জিজ্ঞেস করছে - 'বাবা, দাদাও কি তোমাকে দুষ্টামি করলে খুব মারত?' বাবা উত্তর দিলেন - 'মারত মানে? একবারে ছাল তুলে ফেলত।' ছেলে তখন আবার জানতে চাইল - 'আচ্ছা বলতো, আমাদের এই বংশগত গুন্ডামী কবে বন্ধ হবে?'

আমি নিজে বিবাহিত। ধর্ম মানি তা দাবী করব না; তবে যেহেতু ধর্ম হিসেবে 'মানুষের ধর্ম বা প্রকৃতির ধর্ম' লেখার বিধান নেই কোথাও, তাই বাবা-মার ধর্ম ইসলামকেই লিখে যাই। আমার বিয়ে হয়েছে কাজী অফিসে। আমার করা তিনটা প্রশ্নের উত্তরেই কাজী সাহেব বলেছেন - এইটাই নিয়ম।

প্রথম প্রশ্নটা করেছিলাম যে দেনমোহর কেন দিতেই হবে? এইটা দাওয়ার পর তাইলে কি আর বাঁকী জীবন তাঁর ভালো মন্দ আমি দেখব না? আর সর্বোপরি আমার স্ত্রী যে হচ্ছে তাঁর যদি দেনমোহর নিতে আপত্তি থাকে?
উনি বললেন - আপত্তি থাকলে কম নিবে, কিন্তু নিতেই হবে। সেটাই নিয়ম।

একটা স্বীকারক্তি দিতে হয়েছে আমাকে যে আমার বউ আমাকে তালাক দেয়ার অধিকার রাখে। আমার দ্বিতীয় প্রশ্নটা ছিল - যদি আমি তাকে এই অধিকার দিতে না চাই? উত্তর হলো - তাহলে বিয়েই হবে না। রাজি হওয়াটাই নিয়ম।

তৃতীয়টা ঠিক প্রশ্ন নয়, আমার এক বন্ধু, অন্য ধর্মাবলম্বী। উনার খুব ইচ্ছে ছিল স্বাক্ষী হওয়ার। পারেন নি।

এখন আমি আসলে যেটা বলতে চাচ্ছি সেটা হলো - যদি সব ধরনের পণই নিষিদ্ধ হয় তাহলে সরকার কেন দেনমোহর এর যায়গা রাখল কাবিন নামায়? আবার যদি স্ত্রীকে তালাক দেয়ার অধিকার না দিলে বিয়েই করা না যায় তাহলে কেন সেটাকে আইন না বানিয়ে অপশনাল করা হলো? আর স্বাক্ষী তো ধর্মীয় কিছুনা। আমি যে সামাজিক ভাবে সব কিছু করলাম তার স্বাক্ষী। তাহলে আমার ওই বন্ধুটি কী দোষ করল?

সবাই ভালো থাকুন। আসুন কে কী করেছে বা করে আসছে সেটা বাদ দিয়ে নিজের বিবেক এর কাছে পরিষ্কার থাকি। যে অপমান আমার চৌদ্দগুষ্টিকে ভোগ করতে হচ্ছে তা যেন আগামী প্রজন্মকেও ভোগ করতে না হয় তা নিশ্চিত করার আপ্রাণ চেষ্টা করি। নিজের যেটুকু খারাপ আছে সেটা স্বীকার করার সাহস নিয়ে এগিয়ে যাই। সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা।

শামীমা রিমা এর ছবি

‘অনাহূত কিংবা রবাহুত’ উনার মন্তব্যটা প্রকাশ করার অনুরোধ জানাচ্ছি । আমি মন্তব্যটা পড়েছি আমার মতে সবার পড়া উচিত।

মেঘা এর ছবি

আমিও দেখেছিলাম।

নরাধম এর ছবি

মেয়েদের মূল্য নিয়ে মুলোমুলি হয়, এটা সত্যি। কিন্তু জিনিস দেখেই তো দাম নির্ধারণ হবে নাকি? সারা জীবনের জন্য দশ লক্ষ কী খুব বেশী? মনে হয় পার সেশন দশটাকারো তো কম! অন্য সেবা তো বাদেই দিলাম।

যদি বিয়ের পর গড়ে ৫০ বছর পর্যন্তও এই সেবা চলতে থাকে, তারপরও..........
[{(৩৬৫ - ৩ * ১২) * } * ১০] * ৫০ = ১,৬৪,৫০০
[{(৩৬৫ - ৩ * ১২) * } * ১০] * ৫০ = ৩,২৯,০০০
...
...
...
[{(৩৬৫ - ৩ * ১২) * } * ১০] * ৫০ = ৯,৮৭,০০০

এও কি সম্ভব প্রতিদিন? কেমতে কি....... অ্যাঁ

গাধামানব এর ছবি

ভাই, সমীকরনটা বুঝলাম না
একটু বুঝিয়ে দিবেন প্লীজ?

কদর্য  এর ছবি

আমিও অনাহুত কিংবা রবাহুত তার মন্তব্যটা পড়লাম । অন্যদেরও এটা পড়ার সুযোগ দেয়া উচিত । তাহলে এই বেহুদা কিছু তর্কের অবসান হত। অনেকের মন্তব্য শুনে মনে হচ্ছে মেয়েরা কোনো প্রতিবাদ করতে আসলে আমরা ছেলেরা তাদেরকে অন্য আরেকটা ইস্যু দিয়ে থামিয়ে দিব। কারণ পুরুষতান্ত্রিক সমাজ বলে কথা !!!!!
আমাদের তথাকথিত উচ্চশিক্ষিত,বিতার্কিক ছেলেদের জন্যই এই হাল দেশের ।

monwar এর ছবি

হিল্লোলদার মন্তব্যটা আমিও দেখতে চাই।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

আমিও অনাহুত কিংবা রবাহুত তার মন্তব্যটা পড়লাম । অন্যদেরও এটা পড়ার সুযোগ দেয়া উচিত ।

অপ্রকাশিত মন্তব্য দেখেছেন? কিভাবে?

নাকি বলতে চাইছেন প্রকাশিত অবস্থায় মন্তব্যটি দেখেছেন এবং এখন সেটি দেখছেন না (সম্ভবতঃ মডারেটেড হয়েছে)?

আমি সিম্পলি টেকনিকাল ত্রুটির কারনে কিছু ঘটেছে কিনা সেটা জানার চেষ্টা করছি।

মেঘা এর ছবি

মন্তব্যটি প্রকাশিত হয়েছিলো ভাইয়া। সেই মন্তব্যটি পড়ে আমি একটি প্রতি মন্তব্য লিখতে যেয়ে দেখি মন্তব্যটি নেই। এমনটা আগে কখনো দেখি নি। অবাক হয়েছি। মন্তব্যটি প্রকাশের পর মুছে ফেলা হয়েছে।

এস এম মাহবুব মুর্শেদ এর ছবি

ঠিক আছে। টেকনিকাল কোনো সমস্যা নেই তাহলে।

কল্পলোকের অধিবাসী এর ছবি

এই মূহুর্তে খুবই আফসোস হচ্ছে এই পোস্টে মন্তব্য করেছিলাম বলে। এইখানে যারা আসছে/মন্তব্য করছে তারা হয় খুব বেশি "পুরুষবাদী" অথবা খুব বেশি "নারীবাদী"। ভেদাভেদ নিয়ে আপনারা চিল্লাচিল্লি করছেন সারাদিন, অথচ নিজেরাই সেই ভেদাভেদ তৈরি করে দিচ্ছেন কোন একটা "বাদী" হয়ে।"মানুষবাদী" না হওয়া পর্যন্ত আপনাদের এই চিল্লাচিল্লি, কচলাকচলি, মারামারি আর থামবে না।

যা খুশি করেন, যা খুশি বলেন, কিচ্ছু যায় আসে না। যতদিন ওই কোন একটা নির্দিষ্ট "বাদী" হওয়া না ছাড়তে পারবেন, ততদিন এইরকম লাফালাফি করে সমাজের কিছুই পরিবর্তন করতে পারবেন না।

মেহবুবা জুবায়ের এর ছবি

যারা আমার মন্তব্যে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন তাদেরকে আন্তরিক ধন্যবাদ। আপনাদের মতামতের প্রতি পূর্ন শ্রদ্ধা রেখেই আমি আমার কথা বলছি।
সচলে খুব ইচ্ছা থাকা সত্বেও সাধারণত আমার মন্তব্য-প্রতিমন্তব্য করা হয়ে উঠেনা। মিথস্ক্রিয়া বজায় রাখা আমার পক্ষে সম্ভব হয় না। একটা মন্তব্য করে রণে বঙ্গ দিতে হয়। অন্য কোন কারণে নয়। সময়ের অভাবে। এই পোষ্টে ফিরে এসে দেখলাম জল অনেক ঘোলা হয়েছে। এখন এর উত্তর না দিলে সেটা খুবই খারাপ দেখাবে, তাই কিছু বলতে চেষ্টা করছি।
আমি আমার মন্তব্যটি সম্পূর্ণ মুসলিম ধর্মের দৃষ্টিকোন থেকে দিয়েছি। যারা এটা মানেন না, তাদের জন্য প্রযোজ্য নয় এটা। নিজেকে যখন এখনো ঘোষণা দিয়ে অমুসলিম বলি নি। এখনো যখন ধর্ম ইসলাম লিখি, Eid করি, রোজা রাখি, তখন আমি অবশ্যই মুসলিম নারী।
“আমাদের মুসলমান........................অন্য সেবা তো বাদেই দিলাম।“
সবার(?) আপত্তির কারণ এই প্যাড়াটাতে। এখানে আমি আমার মতো করে শব্দ বসিয়েছি। মন্তব্যে হিমুর জবাবের মতো কোন পেসিফিক শব্দ ব্যবহার করিনি। যে তার একটাই পেসিফিক অর্থ হবে। এখন এটাকে পাঠকরা কিভাবে গ্রহন করবেন, করেছেন। সেটা তাদের রুচি, পরিপার্শিকতা, ও মানসিক গঠনের ওপর নির্ভর করছে।
আমার মানসিক গঠনের সবচেয়ে বড় অংশ জুড়ে আছে জীবন থেকে নেওয়া অভিজ্ঞতায়। জানুয়ারির শেষ সপ্তাহে আমার যোগাযোগ করিয়ে দেওয়া একটা বিয়ে ভেঙ্গে গেলো দেনমোহর নিয়ে। মেয়ের মূল্য নির্ধারণ নিয়ে ঠিক ওই কথাগুলি আমাকে শুনতে হয়েছিলো। যিনি বলেছিলেন তিনি UTD এর শিক্ষক। সেখানে ঘরভরা লোক ছিলো, কিন্তু কাউকে তো বমি করতে দেখলাম না।
দেনমোহর কী আসলে? মুসলিম পুরুষ কেন টাকাটা অফার করে? একটা মেয়েকে কেন একজন বিবাহের শর্ত হিসেবে টাকা দিতে চায়? কিছু দেশে ও জাতিতে মেয়ের বাবাকে টাকা দিতে হয়, সেটার একটা যুক্তি আ্ছে যে মেয়ে মানুষ করতে বাবার খরচের খানিকটা পুরণ করার জন্য। কিন্তু মেয়েকে সরাসরি টাকা দেবার অর্থ কী দাঁড়ায়?
ইসলাম ধর্মে বিবাহপূর্ব মেলামেশা শক্ত গুনা। ( জেনা)। তাই বলা হয়েছে, “ মোহর দিয়ে তোমরা তাদেরকে তোমাদের জন্য হালাল করো, যাতে তোমরা উহাতে গমন করিতে পারো” ( যেন হালাল দোকান থেকে মাংস কেনার কথা বলা হচ্চে, এটা পন্য নয় তো পন্য কী)।
সচলের যারা বিবাহিত এবং বিয়ে করবেন (মুসলমান হলে) তাদের আর কোন উপায় নেই। এই বিধান মানতেই হবে। (ত.পাঁঠার মন্তব্যে দেখুন) আপনারা যেটা করতে পারেন বা করবেন, সেটা আমি লিখে নিচু মানসিকতার মানুষ হয়ে গেছি। দুঃখিত আমার মানসিকতার জন্য, এতদিন আপনাদের ভুল বোঝাবার জন্য।
এবার আমার নিজের অবস্হানটা পরিষ্কার করি... ব্লগে নিজের ব্যক্তিগত বিষয়ের অবতরণা করতে খুব খারাপ লাগছে। কিন্তু আমার নামের পেছনে যার নাম জড়িয়ে আছে তার সন্মান রক্ষার্তে এটা আমাকে করতে হচ্ছে। সরি।
আমি শুধু জুবায়েরকেই বিয়ে করতে চেয়েছিলাম, যার জন্য ৬ই এপ্রিলে আমার বাবা আমাকে পর্দার লাঠি দিয়ে মেরে রক্তাক্ত করেছিলেন। ১৪ই এপ্রিলে যখন আমার বিয়ে হয় তখন আমার সারা শরীরে চাকা চাকা ব্রুজ, ঠিক মতো হাটতেও পারছিলাম না। আমার বাবা বলেছিলেন ওকে বিয়ে করলে আমার টাকা-পয়সা তোর জন্য হারাম হয়ে যাবে। আমি জুবায়েরকে আমার বাবার টাকায় কিছু নিতে দেইনি, একটা সুতাও না। বিয়ের খরচটুকু আমি আমার বড়দুলাভাইকে ধার হিসেবে দিতে বলেছিলাম। যার পুরোটাই সুদে-আসলে শোধ করেছি। আমার মা বলেছিলেন যখন অভাবে পড়বি তখন তো আমাদের কাছেই হাত পাতবি। আমি বলেছিলাম ভিক্ষা করবো তবু তোমাদের কাছে কিছু চাইবো না। বিয়ের চার মাস পর গেলাক্সি ট্রাভেলসে চাকুরি নিয়েছিলাম। আমাদের সময়ে ওই সব পরিবেশে কাজ করা মেয়েদের কেউ ভালো মেয়ে বলতো না।
সন্মানজনক ব্যবহার, ভদ্রোচিত ভাবে ভরণ-পোষণ ও ৫০০০১ টাকা দেনমোহর, যার ২৫০০০ টাকা গহনা বাবদ উসুল দেখিয়ে আমার কাবিন করা হয়েছিলো। যাতে আমি সজ্ঞানে সেচ্ছায় সই করে বিয়ে করেছি। ২৫০০০ হাজার টাকার গহনা নিয়েছি। বিধানমতে অবশ্যই আমি আমার প্রাপ্য নিয়েছি। ভন্ডামী করবো কেন? যা সত্যি তাই লিখেছি।
বাকি ২৫০০০ টাকা বিয়ের রাতে মাফ করে দিয়েছিলাম। জুবায়ের ধার করে গহনা কিনেছিলো, সেই টাকা শোধ করার সামর্থ আমাদের ছিলো না, তাই আমি জুবায়েরের দেওয়া সবটুকু গহনা ফেরত দিয়ে দিয়েছিলাম। বিয়ের চার মাস পর আমার উপহার পাওয়া সমস্ত গহনাটুকু জুবায়েরকে দিয়েছিলাম ব্যবস্যা করার জন্য। সেই ব্যবসা হয়নি উপরন্ত ৮০০০০ টাকা ধারের বোঝা নিয়ে দেশ ছাড়তে হয়েছিলো। যা শোধ করতে আমার চার বছর লেগেছিলো। জুবায়েরের পড়ার খরচ আর ধার শোধ করার জন্য আমি একটানা তিনটা চাকুরী করেছি চার বছর।
এই আমি!

আমার মতো ভাগ্য নিয়ে এই পৃথিবীতে খুব কম মেয়ে জন্মেছে। যে পরিবারের শিক্ষায় ও আদর্শে আমি পরিণত হয়েছি, নিজের মানসিকতা গড়েছি, সেই পরিবারের, এই পৃথিবীতে জন্ম নেওয়া শ্রেষ্ট কিছু পুরুষের একজন ছিলেন আমার স্বামী। আমার সবচেয়ে বড় অলঙ্কার।
বিয়ের পরদিন আমার শ্বশুর বলেছিলেন ‘তোমার বাবাকে দেখে মাথায় কাপড় দাও? আমাকে দেখে দিচ্ছো কেন? বাবা ছিলেন আমার বন্ধু। আমার লেখা সবচেয়ে বড় বড় চিঠিগুলি আমি বাবাকে লিখেছি। তার সাথে সবচেয়ে বেশী তর্ক করেছি, ঝগড়া করেছি, আবদার করেছি।
আমি বাজি ধরতে পারি আমার দেবরদের মতো দেবর আর কারোই নেই। ওরা যতো না আমার দেবর তারচেয়ে বেশী আমার বাল্যসখা, আত্নার আত্না, ভাই, বন্ধু। মানুষ হিসেবে, স্বজন হিসেবে, বন্ধু হিসেবে ওদের তুলনা শুধু ওরাই।
শ্বাশুরি বউয়ের ঝগড়া কথা সবাই জানি। আমার জীবনে একটি বারের জন্য, একটি বারের জন্যও সেটা হয়নি। আমার সব অপরাধ ‘পাগলি মা’ বলে ক্ষমা করে দিতেন তিনি।
আমার ননদ ও তার স্বামী আমার দেখা ও জানামতে ক্ষমতার উচ্চপদে থেকেও সবচেয়ে সৎ, অহঙ্কার শূণ্য ভেতরে-বাইরে অভিন্ন্য, মিষ্টিভাষী দুজন মানুষ।

পরিশেষে, এ পোষ্টে আর আমার ফিরে এসে জবাব দেওয়া হবে না। দেশে যাচ্ছি আগামী সপ্তাহে। সময় পাবো না। সচলের সবাইকে নতুন বছরের শুভেচ্ছা ও প্রাণঢালা ভালোবাসা জানাচ্চি। আমি আন্তরিক ভাবে দুঃখিত আপনাদের মনোকষ্টের কারন হবার জন্য। ভালো থাকুন সবাই।

মেঘা এর ছবি

নতুন বছরের শুভেচ্ছা আপু। আপনার মন্তব্য পড়ে ভালো লাগলো। আপনি যাদের শ্রদ্ধা করেছেন, সব শর্ত মেনে যেই মানুষটার সাথে আপনি অনেক বাঁধা পার হয়ে সুখে আছেন তার জন্য অনেক শুভ কামনা। দেন মোহর দিয়ে বিয়ে করেছেন আমার বাবা আমার মাকে কিন্তু তিনি দাসী অথবা সেবাদাসী কিনে নিয়ে এসেছি এমন ভাবেন না। আমার বিয়ে হয়নি এখন তাই এখানে যারা মন্তব্য করছেন তাদের মন্তব্য দেখে সত্যিই ভয় পেয়ে গেছি। যখন বিয়ে হবে আমার বাবা আমাকে ইসলাম মতেই বিয়ে দেবেন আর যে বিয়ে করবেন তার মনোভাব যদি এমন হয় তাহলে খুব কষ্টকর হবে। আমি বলছি না বিয়ের সময় দেয়া গহনা দেন মোহর না থাকলে একটা মেয়ে ঠকে যাবে বা দিলে জিতে যাবে এমন। আমি নিজের অবস্থানে থেকে এই আলোচনার প্রেক্ষিতে এই অবমাননাকর ব্যাপারটার থেকে মুক্তি চাই। শুধু মাত্র দেন মোহর বা গহনা দিয়ে কেউ যেন ভবিষ্যতে আমাকে তার কেনা সেবাদাসী মনে না করে। কিন্তু এখন পর্যন্ত আলোচনায় এই ব্যাপারে কেউ কোন সমাধান দিতে পেরেছে বলে দেখলাম না। শুধু তুমি খারাপ আর তুমি তারচেয়ে বেশী খারাপ জাতীয় মন্তব্য দেখছি। কেউ কোন সমাধান করে না। ইয়ে, মানে...

নাশতারান এর ছবি

ভাবী, আমরা তেতো সত্যকে মিষ্টি সিরায় ডুবিয়ে গিলে অভ্যস্ত। আপনার সোজাসাপটা মন্তব্যে তাই অনেকেই অপ্রত্যাশিত ধাক্কা খেয়েছেন।

_____________________

আমরা মানুষ, তোমরা মানুষ
তফাত শুধু শিরদাঁড়ায়।

তৌফিক জোয়ার্দার এর ছবি

যতদূর জানি, দেনমোহরের বিধান ইসলামে চালু করা হয় নারীর অর্থনৈতিক নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে। কারণ, নারীদের সে যুগে ঘরের বাইরে কাজ করে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবার রাস্তা ছিলনা। তাই সেই সুযোগে স্বামীরা যেন স্ত্রীদেরকে exploit করতে না পারে সেজন্য নারীদেরকে দেনমোহর দেবার বিধান করা হয়। এ বিধানের আপাত মানবিক দিকের আড়ালে নারীকে চিরকাল অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী না হবার কিম্বা চিরকাল গৃহবন্দী থাকার ব্যবস্থা পাকাপাকি করা হয়েছে। আর যদি সেটা ইসলামের উদ্দেশ্য না হয়ে থাকে তবে বর্তমান প্রেক্ষাপটে, যেখানে নারীরা স্বাবলম্বী, দেনমোহরের ইসলামী বিধান রহিত হওয়া জরুরী। আর দেনমোহর নিলে ঘরের বাইরে যাওয়ার কি যুক্তি? এখন বলুন: দেনমোহর রহিতকরণের প্রস্তাব কয়জন নারী মেনে নেবেন?

গাধামানব এর ছবি

এই পোস্টটি প্রথম থেকেই পড়ে আসছিলাম।
এই বিষয়ে গতকাল এক বড় ভাইয়ের সাথে কথা বললাম

সে আমার উপর খুব ক্ষেপে গেল কারন আমি দেনমোহরের বিপক্ষে কথা কথা বলেছি। তার বক্তব্য হল এটা ইসলাম ধর্মে আছে, তাই দিতে হবে, এবং তিনি আমাকে রেফারেন্স দিলেন সৌদি আরব এর। ওখানে নাকি মেয়ের বাবা যত চাইবে, ছেলে তত দেনমোহর দিতে বাধ্য থাকবে।
ভাই আমরা সৌদি আরবে থাকি না।

হ্যা, আমি জানি এটা ধর্মে বলা আছে যে "তোমরা তোমাদের স্ত্রীদিগকে স্পর্শ করিবার পুর্বে তার মোহরানা তাকে পরিশোধ কর।"
কিন্তু সেই পরিমানটা কত হবে তা বলা আছে কিনা জানিনা। কেউ জানলে জানাবেন প্লীজ।

শামীমা রিমা আপা,
আমার আগের মন্তব্য এর জবাবে আপনি বলেছেন যে

"নিজের চেয়ে বেশি যোগ্যতা সম্পন্ন স্ত্রী কিংবা স্ত্রী স্বামীর চেয়ে ভালো চাকরী করবে এমনটা ছেলেরা কখনোই মেনে নিতে পারে না। তাইতো বিয়ের ক্ষেত্রে যেমন মেয়ের বয়সের দিকে নজর থাকে তেমন তার যোগ্যতার দিকেও থাকে।কারণ আপনারা মনে করেন নিজেদের সংসারের সর্বময় কর্তা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করার জন্য কম বয়েসী এবং কম যোগ্যতার মেয়ে দরকার ।"

এখানে আপনি যা বললেন, তা তো tradition এর কথা বললেন। এখন আপনি যদি tradition মেনেই চলেন, তাহলে তো এই পোস্ট দেওয়ার দরকারই ছিল না। কারন যৌতুকও tradition. কিন্তু আপনি পোস্ট দিয়েছেন সমাজের সবাইকে জানাতে, সবাইকে জাগ্রত করতে, যেন আমরা এটা না করি,যেন আমরা tradition পরিবর্তন করি। তাহলে আমার পূর্বের মন্তব্য এর জবাবে আপনার tradition এর কথা তুলে ধরা উচিত হয়নি।
আপনার বলা উচিত ছিল যে এইটাও খারাপ।

বিষয়টা হল, গহনা প্রসঙ্গে আপনি প্রথমে পার পাওয়ার চেষ্টা করলেন গহনার প্রতি মেয়েদের দুর্বলতা বলে, পরে বললেন মেয়ের বাবা দিবে, তাই ছেলের বাবাকেও দিতে হবে, তারপর বললেন এটা ডিভোর্স ইন্স্যুরেন্স। পরে হিমু ভাই চিবি দিয়ে ধরার পর মিনমিন করে বললেন এটা খারাপ।
এখন আমি যখন বললাম চাকরিজীবি মেয়ে জন্য পাত্রের আরও বড় চাকরি চায় মেয়ের পরিবার, সুতরাং সেটাও যৌতুক, আপনি বললেন এটা না হলে ছেলেরা মেনে নেয় না। মানে এটা tradition. কেন এটা বলছেন না যে এটাও খারাপ?

আমার বাবার ২য় বিয়েতে মেয়েপক্ষ একটা ফ্রীজ আর একটা TV দেয়। তা নিয়ে আজও আমার বাবাকে কথা শুনতে হয়।
অপর দিকে আমার মায়ের ২য় বিয়েতে দেনমোহর কত এটা আমি নিজেও জানি না।(আমি তখন অনেক বড়)(দেনমোহর টা খুব কম ছিল সম্ভবত)।

আমার এক cousin আর্মি অফিসার।ভাবী অনেক বড়লোকের মেয়ে। উনি যখন বিয়ে করেন তখন মেয়েপক্ষ থেকে অনেক কিছু দিতে চেয়েছিল।
উনি কিছুই নেন নি। এবং কিছু নিতে দেনও নি। আবার উনার দেনমোহর এর বিষয়ে যখন আলোচনা হয়, তখন উনার মা বলেন দেনমোহর হবে এক লাখ টাকা, কিন্তু উনি বলেন, উনি দেবেন তিন লাখ টাকা। পরে অবশ্য মায়ের কথায় প্রাধান্য পায়। এক লাখ পচিশ হাজার টাকা দেনমোহরে উনাদের বিয়ে হয়।

আমি আমার প্রেমিকাকে সম্পর্কের প্রথম থেকেই বলে এসেছি যে আমি বিয়েতে তাদের কাছে থেকে একটা সুতাও নেব না। এবং দেনমোহর আমি সোহাগ রাতের আগেই পরিশোধ করব।
গতকাল আমি আমার প্রেমিকাকে জিজ্ঞেস করি যে সে বিয়েতে কত দেনমোহর নেবে, সে বলে ১ বিলিয়ন পাউন্ড!!! যদিও এটা সে মজা করে বলেছে, কারন এই আমাউন্ট দেওয়া আমাদের দেশের কারো পক্ষেই সম্ভব না।
কিন্তু আমি দুঃখ পেয়েছি এটা শুনে। কারন সেও উচ্চ শিক্ষিত একটা মেয়ে। আমি প্রথম থেকেই তাকে বলে আসছি আমি কিছু নেব না, কিন্ত সে একবারও বলল না যে দেনমোহর ধর্মের জন্য, তাই সেটা যেকোন amount হলেই চলবে।

আমরা শুধু তর্কই করে গেলাম। কি করা উচিত তা কেও বললাম না।
১)আমাদের উচিত বিয়েতে মেয়েপক্ষের কাছে থেকে কোনরকম যৌতুক না নেওয়া।
২)ছেলেপক্ষকে বা মেয়েপক্ষ কোন পক্ষকেই গয়না দিতে বাধ্য না করা।
৩)দেনমোহর যেহেতু ধর্মে আছে, তাই কিছু করার নাই,কিন্তু সেটা যেন ধর্মে যেভাবে বলা আছে সেই ভাবেই নির্ধারন করা হয়, আর যদি বলা না থাকে তাহলে সেটা যেন ছেলের উপর বোঝা না হয় এমনভাবে ঠিক করা(সেটা ১০০,৫০০, ১০০০,১০,০০০ যেকোনটা হতে পারে, ছেলে যেন তা পরিশোধে সতঃস্ফুর্ত থাকে)।
৪)ধর্ম মানলে বিয়ের দিনই দেনমোহর পরিশোধ করা।

আমাদের অনেক ছেলে পরিবার আছে যারা নিজের ইচ্ছায় মেয়েকে গয়না দিয়ে মুড়ে নিতে চায়।এখানে আমার কিছু বলার নাই কিন্তু ওই ছেলের পরিবার যদি মনে করে যে তারা যেহুতু এত গয়না দিচ্ছে, সুতরাং মেয়েপক্ষকেও দিতে হবে,তাহলে সেটা অন্যায় হবে না।সুতরাং ছেলেপক্ষ যদি নিজেদের ইচ্ছায় গয়না দেয়, তাহলে সমস্যা থাকার কথা না। অপর দিকে মেয়েপক্ষ যদি চায় তারা গয়না দিবে, সেক্ষেত্রেও সমস্যা থাকার কথা না, কিন্তু আবারও একি কথা, এক্ষেত্রেও ছেলেপক্ষকে গয়না দিতে বলা বাধ্য করা যাবে না।
গয়নার বিষয়ে উভয়পক্ষের মধ্যে পরিষ্কার আলচনা হতে হবে। কিন্তু তার বিষয়বস্তু হতে হবে এরকম
মেয়েপক্ষ বলবে যে তারা তাদের মেয়েকে এই পরিমান গয়না বা অন্য কিছু দিতে চায়(যৌতুক হিসেবে নয়, ভালবেসে), ছেলেপক্ষর কোন অভিযোগ আছে কিনা।গয়না বা অন্য কিছু এত কম হল আরও দিতে হবে এরকম অভিযোগ থাকা যাবে না। তাহলে কি রকম অভিযোগ থাকা যাবে? অভিযোগ থাকা যাবে একরম যে এটা এত বেশি হলো, এত বেশি হওয়া যাবে না।
অপরদিকে ছেলেপক্ষ বলবে যে তারা তাদের বৌকে এই পরিমান গয়না দিবে(পরিমানটা ০ হতে পারে)। মেয়েপক্ষের কোন অভিযোগ আছে কিনা এবং একই রকম।

দেনমোহরের ক্ষেত্রেও আলোচনা এরকম হওয়া উচিত যেন কেউ কোন সমস্যায় না পড়ে।

আমি জানিনা এই পয়েন্ট গুলোতে কোন ভুল রয়ে গেল কিনা। ভুল থাকলে শুদ্ধ করে reply দিন।

হিমু ভাই,
একবারের জন্য হলেও আমার মন্তব্যটা জবাব দিন প্লীজ। আপনার পাংখা হয়ে গিয়েছি অনেক আগেই।

পল্লব এর ছবি

চলুক

কিন্তু ওই ছেলের পরিবার যদি মনে করে যে তারা যেহুতু এত গয়না দিচ্ছে, সুতরাং মেয়েপক্ষকেও দিতে হবে,তাহলে সেটা অন্যায় হবে না।

শেষের "না"টা কি বাদ যাবে না?

==========================
আবার তোরা মানুষ হ!

গাধামানব এর ছবি

ধন্যবাদ পল্লব ভাই, শেষের না টা বাদ যাবে অবশ্যই।

মূর্খ পাঠক  এর ছবি

হিমুভাইয়ের সাথে একমত............নিজের পছন্দের ছেলেকে বিয়ে করায় ফ্যামিলি আমার বরের ওপর যে দেনমোহর আর সোনার গয়নার ভার চাপিয়েছে তার প্রতিবাদ করতে পারিনি। ভয় ছিল, পাছে, আবার বিয়েটাই এই উপলক্ষে ভেঙে যায়। অথচ, আমি কোন ধরনের গয়নাই পরিনা। যৌতুক এবং দেনমোহর দু‘টোই আইন প্রয়োগের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করা উচিত।

তরঙ্গ এর ছবি

আপনার বক্তব্যের প্রাণ সেই গর্দভ মানুষদের আমি মানসিক অসুস্থ বলি! শুধু ছেলেই নয়, আজকাল কিছু মেয়ে খবরদারি করা dominating স্বামীকেই স্বপ্ন দেখে... খুবই হাস্যকর!
তবে, আলোচনা যেখানে শুরু, সে নিয়ে কিছু বলি, আসলে মেয়েরা বিয়ে বসে, ছেলেরা বিয়ে করে। কীভাবে? একটা মেয়ে নিজের পরিবার থেকে সে অন্য এক পরিবারে আসে এবং সেই পরিবারের কর্ত্রী হয়ে যায় কালক্রমে- বলতে গেলে এক্কেবারে স্থায়ীভাবে বসে যায়, আর ছেলেটা সেই মেয়েটিকে তার পরিবারের সদস্য করে। সেই অর্থে, বিয়ে করা এবং বসা নিয়ে যে তর্ক সেটা খুব কাজের না। 'বিয়ে' একটা সামাজিক সম্পর্ক। 'করা-বসা' বিষয়টা ভারসাম্যের জন্য। দুইজনই বিয়ে করলে, বা দুই জনই বিয়ে বসলে সামাজিক হিসাবটা এলোমেলো হতে পারে। তাই, এটা কোন বিষয় না।
কথা হচ্ছে, 'বিয়ে' নামক সম্পর্কটা কে শ্রদ্ধা করতে হবে। মেয়েটিকে যেমন এখানে সুন্দর করে বসতে হবে, ছেলেটিকেও একটা সুন্দর জায়গা করে দিতে হবে। যেকোন সম্পর্কের মূল শক্তি 'শ্রদ্ধা আর বিশ্বাস"- এটা নিশ্চিত করা গেলেই বিয়ে করা-বসা নিয়ে ভাবা উচিত।
বয়স-সৌন্দর্য-শিক্ষা-পরিবার এইসব নিয়ে চাহিদার কারণ কিন্তু সম্পর্কের মূল, সেই 'শ্রদ্ধা-বিশ্বাস' কে নিশ্চিত করা। অথচ, আজকাল যোগ্য পাত্র-পাত্রীর সনাক্তকরণে মূল নিয়ে না ভেবে লতা-পাতা নিয়ে হৈচৈ করা হয় বেশি। বিষয়টা আফসোসের!
আপনার এই বন্ধুটি আর সেই পাত্র পরিবার ভয়াবহভাবে মানসিক বিপর্যস্ত... তাদের জন্য আমার করুণা হয়।

Guest__ এর ছবি

আমার একটা প্রশ্ন আছে। আরেন্জড মেরেজে যদি একটা মেয়ে ছেলেকে তার মোটা মনে হয় বলে বাদ দিতে পারে তাহলে একটা ছেলে কেন পারবে না মেয়েকে রিজেক্ট করতে কোন কারনে!!??

Shahariar এর ছবি

ভাল লিখেছেন আপু @ শামীমা রিমা

আকবর এর ছবি

সহজ কথা শজ ভাবে বলা, ভাবা, চিন্তা করার শক্তি আমাদের অনেকের নেই। নারী , পুরুষ উভয়ই মানুষ, অর্থাৎ তাকে মানুষ হিসেবে ভাবা জরুরী। তারপরও কিছু কথা থেকে যায়, একজন পুরুষ চাইলেই গর্ভধারণ করতে পারবে না প্রাকৃতিক নিয়ম অনুসারে- কারণ সে পুরুষ, আবার একজন নারী চাইলেই পারবে না সন্তানের লিঙ্গ নির্ধ্ধারণে প্রাকৃতিক নিয়মঅনুসারে ভুমিকা রাখতে কারণ সে নারী (নারীর ক্রোমজম- XX, পুরুষের ক্রোমজম- XY) ।
তাই কিছু প্রাকৃতিক পার্থক্য নারী/পুরুষের মধ্যে আছে সেটা মেনে নিতে হবে, কিন্তু তার মানে এই নয় সব বৈষম্য মানতে হবে।
স্রধা, ভালোবাসা, সমজোতা না থাকলে সংসার হয় না, শান্তি আসে না সংসারে।
তাই স্ত্রী'র প্রতি স্বামী , স্বামী'র প্রতি স্ত্রী'র স্রধা, ভালোবাসা, সমজোতা থাকতে হবে।

মন মাঝি এর ছবি

আহ্‌.... এমন ৩য়-বিশ্বযুদ্ধ-মার্কা একটা পোস্ট আবার পড়ার ভাগ্য কবে যে হবে! পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

****************************************

অতিথি লেখক এর ছবি

সচলদের প্রতি আগ্রহটা আরেকটু বেড়ে গেল ।
চমৎকার আলোচনা।
-- জ্যোতিস্কর দাদু

jahid এর ছবি

পোস্ট আর এত এত মন্তব্য পড়ে মন কয় "ধুর শালা বিয়াই করুম না"

Asif এর ছবি

আমি খালি একটা কথা বলব। নিজের পছন্দে বিয়ে করুন আর আরেঞ্জ করেই করুন সমস্যা নেই। বাট আমার দেখা মতে প্রেম করে বিয়ের ক্ষেত্রে ভাংগনের হার একটূ বেশি। তবে কোন রেফারেন্স দিতে পারুম না
সুতরাং বিনীত ভাবে জানতে চাই এমন একটা গবেষণা আছে কি (বাংলাদেশকে নিয়ে) ?

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।