চিকিৎসক না হয়ে পোশাক শ্রমিক হলেও ভালো হতো

শামীমা রিমা এর ছবি
লিখেছেন শামীমা রিমা (তারিখ: রবি, ১৯/০৫/২০১৩ - ১২:৪৬অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

অতি ভদ্র আর আত্মকেন্দ্রিক হিসেবে আমাদের চিকিৎসক সম্প্রদায়ের সুনাম গগনচুম্বী ! আর মেডিকেলের সিস্টেম আমাদের এতোটাই সর্বংসহা করে দিয়েছে যে এখন আমরা এটাও ভাবতে পারি না কোন ঘটনাটাতে আবেগের কিছুটা বহিঃপ্রকাশ দরকার ,কোন দুর্ঘটনাতে শোকের মাতম আর কোন অন্যায়ের প্রতিবাদ দরকার । যান্ত্রিকতা আর প্রতিযোগিতার এই যুগে আমাদের অন্যের সমস্যা নিয়ে মাথা ঘামানোর আবশ্যকতা নেই,স্বীকার করছি । কিন্তু এটাও ভাবা উচিত ,অন্যের সমস্যাটা একদিন ব্যক্তিগত সমস্যায় রূপান্তরিত হতে পারে ,সেদিন আমাদের অবস্থাটা কি হবে ? অনেকে হয়তো বলবেন সেদিনেরটা সেদিন বুঝব । এখন আপাতত আমরা যারা তরুণ চিকিৎসক তারা ডিগ্রির পেছনে হন্যে হয়ে ছুটছি ,আর যারা বয়োজৈষ্ঠ,প্রতিষ্ঠিত তারা ছুটছেন প্র্যাকটিস আর সুনামের পেছনে । মোটকথা কোনো গ্রুপেরই নিজেকে ছাড়া অন্য কিছুতে মনোযোগ দেবার এতটুকু ফুসরত কোথায়।

গত ১৩.০৫.১৩ তারিখে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজের ২৮ তম ব্যাচের ডা. শেজাদী আফসা নিজের বাসায় খুন হয়েছেন তার স্বামী কর্তৃক । স্বামী আবার কেউকেটা কেউ নন, বিশিষ্টজন তো বটেই । লে. কর্ণেল মোহাম্মদ শফিকুল ইসলাম । এখন হয়তো বলবেন,এ আর নতুন কী । মেয়ে মানুষ স্বামীর হাতে অতীতেও খুন হয়েছে,এখন হচ্ছে এবং ভবিষ্যতেও হবে । এটা চলমান একটা প্রক্রিয়া । আর মেয়ে মানুষ তো মেয়ে মানুষই । তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বলেন, সম্ভ্রান্ত পরিবার থেকে আসা বলেন,আর তার পেশা যাই হোক না কেন তাতে কিচ্ছু যায় আসে না । সবকিছুর উর্ধ্বে তার একমাত্র পরিচয় সে নারী । আর বাবা-মায়ের আশ্রয় ব্যতীত অন্য কোথাও সে নিরাপদ নয় ।

একটা মেয়েকে যখন তার বাবা-মা একটা ছেলের হাতে সমর্পন করেন ,তখন সঁপে দেয়া হাতে থাকে নির্ভরতা আর মনে থাকে অগাধ বিশ্বাস । তাদের মেয়েটাকে এই ছেলেটি সকল প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে আগলে রাখবে ,বিপদে আপদে তার পাশে থাকবে। কোনো মেয়ে নিশ্চয় এটা ভেবে সংসার শুরু করে না যে সে একদিন স্বামী কর্তৃক খুন হবে । কিন্তু সেই আস্থা আর ভালোবাসার হাত যখন মেয়েটির গলা টিপে ধরে তখন .......
উত্তর একটাই ....মেয়ে মানুষ আর তাদের জন্য পৃথিবীর প্রতিটি জায়গাই ঝুঁকিপূর্ণ ।

ডা.শেজাদী আফসা, ব্যক্তিগত ভাবে তিনি আমার পরিচিত নন। তবে তার পরিচিত একজনের সাথে কথা হলো,শুনলাম তার সম্পর্কে যথেষ্ঠ ব্যক্তিত্ব সম্পন্ন এবং ভালো মানুষ ছিলেন। তিনি ব্যক্তিগত জীবনে কেমন ছিলেন সেটা মুখ্য না, মুখ্য হলো তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনাটা। এটাকে ঘটনা বা দুর্ঘটনা না বলে অপরাধ বলাটাই যুক্তিযুক্ত

ইতিমধ্যে বেশ কয়েকদিন পার হয়ে গেছে অথচ এই বিষয়টা নিয়ে মিডিয়া বলেন কিংবা আমাদের চিকিৎসক সম্প্রদায় বলেন কারো কোনো মাথা ব্যথা আছে বলে মনে হয় না । মিডিয়ায় কথা না হয় বাদই দিলাম । কারণ তারা মনে করে চিকিৎসকেরা মানুষরূপী ভিনগ্রহী প্রাণি,যারা শুধু অন্যায় আর অনিয়ম করতে পারে। শুধুমাত্র তখনই মিডিয়া কভারেজ পাবে যখন তারা রোগীর লোক কর্তৃক প্রহৃত হবে কিংবা রোগীর মৃত্যুর কারণ হিসেবে তার দায়িত্বের প্রতি অবহেলা প্রদর্শিত হবে (যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় রোগী যে কারণেই মারা যাক না কেনো দায়িত্বরত চিকিৎসকের প্রতি রোগীর লোকদের চড়াও হওয়া একটা ঐতিহ্যের অংশ হিসেবে দাঁড়িয়ে গেছে। আর তখন মিডিয়ার লোকজন কিছু বুঝতে পারুক আর না পারুক হুমড়ি খেয়ে পড়বে ) । যাই হোক আমি এই বিষয়ে কথা বলতে চাইছি না ।

মাস ছয়েক আগে ওসমানী মেডিকেল কলেজ এর ডা. সাজিয়া আফরিন খুন হলেন ব্র্যাক কিনিক,উত্তরাতে । তাকে আমি ব্যক্তিগত ভাবে না চিনলেও চাকুরি সুবাদে তিনি ছিলেন আমার সহকর্মী । এই জন্য হয়তো খারাপ লাগাটা ছিল বাড়াবাড়ি রকমের । তবে তার পরিবারের জন্য এতটুকু সান্ত্বনা ছিল যে ,ব্র্যক তাদের পাশে ছিল ,প্রথম আলোতে তাকে নিয়ে একটা ফিচার ছাপা হয়েছিল এবং খুনিকেও গ্রেফতার করা হয়েছিল সাথেসাথে। যদিও খুনি প্রভাবশালী কেউ নয়,তবুও মামলার অবস্থা এখনো ঝুলন্ত। আর ডা.শেজাদী আফসা ওনার স্বামী তো আবার লে .কর্ণেল । ওনাকে শেষ পযন্ত গ্রেফতার করা যায় কি-না সেটাও রীতিমতো ভাবনার বিষয় । আর বিচার সেতো বহুদূর।
কিছুদিন পর দেখা যাবে কর্ণেল সাহেবের বিয়ের দাওয়াতে আমরা অনেকই হাসিমুখে সামিল হচ্ছি ।

আমরা সবাই বাড়াবাড়ি রকমের আত্মকেন্দ্রিক । আর চিকিৎসকেরা যেহেতু এই সমাজেরই একটা অংশ তাই তারাও এর উর্ধ্বে নন । যারা সমাজের প্রতিষ্ঠিত,স্বনামধন্য ডাক্তার তারা না হয় চাকুরি,প্র্যাকটিস নিয়ে অনেক বেশি ব্যস্ত থাকেন । আর আমরা তরুণ প্রজন্মের যারা রয়েছি তারাও ব্যস্ত চাকুরি,পড়াশোনা আর ডিগ্রিকে আপন করতে। আমরা সবাই কি পারি না আমাদের অতি মূল্যবান সময় থেকে অল্প কিছু সময় দিতে, এই সব অভাগা খুন হয়ে যাওয়া নারী চিকিৎসকদের প্রতি এতটুকু সহমর্মিতা জানাতে । তাদের খুনিদের বিচারের দাবি জানাতে কি আমরা এক হতে পারি না ।

শ্রদ্ধেয় স্যারদের বলছি আপনারা আপনাদের মহামূল্যবান সময়ের ১০ টা মিনিট ব্যয় করুন এই নির্যাতিত নারীদের খুনিদের বিচারের দাবী জানাতে । আর বি এম এ আপনারা কি কিছুই দেখতে পান না ? আপনাদের কান পর্যন্ত কি শিশু আহনাফের কান্নার করুণ সুর পৌছায় না ? না-কি মৃত চিকিৎসক নির্বাচনের সময় আপনাদের ভোট দিতে পারবে না বলে চুপ করে থাকবেন ?

জীবনে এই প্রথম চিকিৎসক হবার কারণে নিজেকে খুব অসহায় মনে হচ্ছে । তাই মনের ক্ষোভ থেকে বলছিলাম চিকিৎসক না হয়ে পোশাক শ্রমিক হলেও ভালো হতো । কারণ ওদের কেউ নির্যাতিত হলেও ওদের অশিক্ষিত সহকর্মীরাও মানব বন্ধন করে ,প্রতিবাদ
জানাতে রাস্তায় নেমে আসে । কোনো স্কুল,কলেজ,বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রী নির্যাতিত হলে ওদের সহপাঠিরা ক্লাস বর্জন করে ,বিচারের দাবিতে আন্দোলন করে । আর আমরা হতভাগ্য নারী চিকিৎসক সম্প্রদায়,যারা খুন হয়ে গেলেও তাদের সহকর্মীদের একটু টনক নড়ে না । আর আন্দোলন,প্রতিবাদ ছিঃ ছিঃ এসব কি কথা !!!!!!!


মন্তব্য

আব্দুল্লাহ এ.এম এর ছবি

স্বীকার করছি খবরটা আমার দৃষ্টি এড়িয়ে গেছে, এবং আপনার লেখাটা পড়ে বিষাদে ছেয়ে গেল মন।

শামীমা রিমা এর ছবি

সহমর্মিতার জন্য ধন্যবাদ ।

সামুদ্রিকপাখি এর ছবি

''চিকিৎসক না হয়ে পোশাক শ্রমিক হলেও ভালো হতো''
কেন তাতো বুঝলাম না
সামুদ্রিকপাখি

শিপলু এর ছবি

না বুঝার কিচ্ছু নেই,কারন পোশাক শ্রমিক দের পাসে ওদের সহকর্মীরা অন্ততো থাকে আর ডাক্তার দের পাশে তাদের সহকর্মীদের পাওয়া যাচ্ছে না । সহজ হিসেব ।

শামীমা রিমা এর ছবি

সহমত

m. sadek এর ছবি

জেলাস, অভাগিরা বেশি এটেনশন পাচ্ছে!

শামীমা রিমা এর ছবি

আমি একটা সহজ কথা সহজ ভাবে বুঝাতে চাইছি । কোথায় বুঝতে সমস্যা হয়েছে বলেন ? আবার বলব ।
এখানে জেলাস হবার কিছু নেই ।

শামীমা রিমা এর ছবি

@ m.sadek
আমার মনে হয় আপনি লেখাটা মনোযোগ দিয়ে পড়েননি । আমি কি বুঝাতে চাইছি সেইটা না বুঝে অন্য অর্থ দাড় করাচ্ছেন ।
এখানে জেলাস শব্দটা কেন এল বুঝলাম না ?

শামীমা রিমা এর ছবি

পোশাক শ্রমিক দের সহকর্মীরাও ওদের খারাপ সময়ে পাশে থাকে,প্রতিবাদ করে ।আর আমাদের পাশে কেউ নেই । তাই ।।

m. sadek এর ছবি

আত্মকেন্দ্রিক অবশ্যই; কিন্ত "অতি ভদ্র"! অন্তত দেশের কনটেক্সটএ কথাটা সত্য নয়..........

শামীমা রিমা এর ছবি

@ সামুদ্রিক পাখি ,
শিপলু ভাই আমার কথাটা বলে দিয়েছে ।

অতিথি লেখক এর ছবি

ঠিকই বলেছেন আমাদের মহামান্য বিএম এ কি কোনদিন কিছু করেছে আর বড় বড় ডাক্তাররা তো ব্যস্ত তাদের রোগী দেখা নিয়ে তাদের সময় কোথায় এগুলো নিয়ে ভাবার।

শামীমা রিমা এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক  এর ছবি

কিছুদিন পর দেখা যাবে কর্নেল সাহেবের বিয়ের দাওয়াতে আমরা অনেকেই সামিল হচ্ছি

সত্যিই আমরা খুব খারাপ । মন খারাপ

শামীমা রিমা এর ছবি

আমরা সব কিছুই মেনে নিচ্ছি ,নিতে শিখছি ।

শিপলু এর ছবি

এ দেশে কোনো বিচার নেই । আর নারীরা আসলেই অসহায় ,প্রতিটি ক্ষেত্রেই ।
লেখাটা পরে মন খারাপ হয়ে গেল ।

শামীমা রিমা এর ছবি

আমরা চাইলে এই পরিস্থিতির কিছুটা হলেও পরিবর্তন সম্ভব। তার জন্নে প্রয়োজন আমাদের ঐক্যবদ্ধতা। কিন্তু সেটাই তো সম্ভব না ।

pet tepa daktar এর ছবি

লেখাটা ভাল লাগে নি। কারন, লেখাটায় ডাকতার সাহেবদের নিজেকে বিরাট কিসু ভাবার চেসটাটা ভালো কোরে আচে। হাজার হাজার গারমেনটস কোরমি মোরে গেল। কসিু হোলো না। আমি মোরলে হোবে কেনো আশা কোরি?

শামীমা রিমা এর ছবি

সব লেখা সবার ভালো লাগবে এটা ভাবা বোকামি ।
আর আপনি একটু মনোযোগ দিয়ে লেখাটা পরলে বুঝতে পারবেন ,আমি আসলে কি বলতে চেয়েছি । কোনো পেশাকে বড়ো কিংবা ছোট করার জন্য এই লেখাটা না ।

শামীমা রিমা এর ছবি

সব লেখা সবার ভালো লাগবে এটা আশা করা চরম বোকামি ।
আমি মোটেও ডাক্তারদের বিরাট একটা কিছু ভাবার চেষ্টা করিনি । শুধু বলতে চেয়েছি যে আমাদের একজন সহকর্মী এভাবে খুন হলেন আর আমরা একেবারে চুপ ।
আর প্রতিটি পেশাই সম্মানের ,যদি সেখানে কোনো অসৎ কিছু না থাকে ।

গুরুত্বহীন এর ছবি

নামটাতে একটু খটকা লাগলো। শিরোনামটা "চিকিৎসক না হয়ে পোশাক শ্রমিক হলে ভালো হতো" হলে ঠিক ছিলো। পোশাক শ্রমিকদের কি কোনো কারণে নীচু মনে হয়?

শামীমা রিমা এর ছবি

কোনো পেশাই নিচু নয় । এখানে কথাটা এসেছে তুলনামুলক ভাবে এই যা ।কেন এসেছে তার ব্যাখ্যা আমি দিয়েছি ।
মন্তব করার জন্য ধন্যবাদ ।

শামীমা রিমা এর ছবি

কথাটা এসেছে তুলনা হিসেবে । আর কেন বলেছি কথাটা সেটার ব্যাখ্যাও দিয়েছি । এখানে উঁচু নিচু মনে হবার কিছু নাই ।

অগ্নির এর ছবি

কি আশ্চর্য । খবরটা জানি পর্যন্ত না । এরকম একটা ঘটনা মিডিয়াতে গুরুত্ব পায়না ! মেয়েমানুষের স্বামীর হাতে খুন হওয়া ব্যাপারটা এতই সস্তা হয়ে গেছে !

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

ভাই মেয়ে মানুষ কেন বলেন? নারী বলতে সমস্যা কোথায়?

শামীমা রিমা এর ছবি

সমস্যা টা কোথায় তা আমরা সবাই জানি কিন্তু মানতে চাইনা ,এটা হচ্ছে কথা ।

শামীমা রিমা এর ছবি

ডাক্তার খুব উঁচু পেশা এটা আমি কোথাও কি বলেছি ?
আমি এখানে বুঝাতে চেয়েছি যে আমরা ডাক্তাররা কখনো প্রতিবাদ করতে চাইনা। যদিও আমরা সমাজের শিক্ষিত একটা অংশ ,তথাপি আমাদের বোধশক্তি অনেক কম । হতে পারে ইচ্ছে করেই কম । আমরা ঐক্য বদ্ধ হলেই অনেক কিছু করতে পারি,সেটা আমাদের সমস্যা বলেন আর অধিকার আদায় বলেন। আমাদের কি এগিয়ে আসা উচিত না ?
পোশাক শ্রমিকদের কথা আমি এই জন্য বলেছি যে ,ওদের সহকর্মীরা অশিক্ষিত হলেও ওরা কেউ নির্যাতিত হলে ওদের পাশে এসে দাঁড়ায় । আর আমাদের সহকর্মীরা তা করে না ।

শামীমা রিমা এর ছবি

@ মানিক চন্দ্র দাস
মনের ক্ষোভ থেকে বলছি । কারণ মেয়ে মানুষও যা নারীও তা ,আমরা এটাই মনে করি ।

অগ্নির এর ছবি

@মানিক চন্দ্র দাস, মেয়ে শব্দটায় আপনার সমস্যা ? নাকি মানুষ শব্দটায় ?

শামীমা রিমা এর ছবি

মিডিয়া আমদের গুরুত্ব দিবেনা এটাই স্বাভাবিক । তাই বলে আমরাও কি গুরুত্ব দিব না ?

শামীমা রিমা এর ছবি

মেয়ে,মানুষ স্বামীর হাতে খুন হবে এটা মিডিয়া ধরেই নিয়েছে । এ আর নতুন কি বলেন ।

 আনমনা একজন এর ছবি

শিরোনামটা "চিকিৎসক না হয়ে পোশাক শ্রমিক হলে ভালো হতো" হলে ঠিক ছিলো।
----একটু পরিষ্কার করে বুঝিয়ে বলবেন?

গুরুত্বহীন এর ছবি

"।।।।।।।। পোশাক শ্রমিক হলে ভালো হতো" এটা দিয়ে বোঝায় As they stand by each other, I wish I were a part of them. । । । ।

"পোশাক শ্রমিক হলেও ভালো হতো" শুনলে মনে হয় পোশাক শ্রমিকদের পেশাটা insignificant, but I would still consider for peer support.

শামীমা রিমা এর ছবি

@ গুরুত্বহীন
কোনো পেশা খারাপ কিংবা ভালো এইসব নিয়ে আমি কথা বলিনি ।বলেছি পোশাক শ্রমিক এর সহকর্মীরাও ওদের পাশে থাকে আর আমাদের পাশে নেই ।

শামীমা রিমা এর ছবি

@ আনমনা একজন
কথাটা আগেও বুঝিয়ে বলেছি ।

মানিক চন্দ্র দাস এর ছবি

প্রিয় শামীমা রীমা,
আপনি ঠিক কি কারণে একটা পেশাকে এভাবে সামনে টেনে আনলেন আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা। সকল পেশায় নারীরা একই রকম ভাবে পুরুষের লালসার শিকার হয়, ঘরে শিকার হয় শারীরিক নির্যাতনের। এখানে ডাক্তার হয়ে একটা পেশাকে খুব উঁচু ধরনের ভাবার কিছু নেই। আমিও ডাক্তার। পেশা দিন শেষে পেশাই থাকে। বাকী থাকে জীবনাচরন। ডাক্তারেরা দেখেছেন কখনো একতাবদ্ধ হতে? ঢাকা মেডিক্যালের প্রফেসর বহিরাগত বংশাল এলাকার বখাটেদের হাতে যাচ্ছে তাই ভাবে মার খায়। আলু কিংবা কন্ঠের কোন পাতায় খবরটা কি ছাপা হয়েছিলো প্রথম পাতায়? হয়নি। ইউনিয়ন লেভেলে একেবারে চামচিকা টাইপের মেম্বারের দাপটে টেকা দায় আর আপনি এখানে পোষাক শ্রমিকের কথা বলছেন। ইউনিয়ন লেভেলে আমরা যেটুকু যৎসামান্য সুযোগ সুবিধা পাই তা কতটুকু পায় পোষাক শ্রমিকেরা? কেন দিলেন আপনার লেখার এই নাম? যতদিন বি এম এ সক্রিয় না হচ্ছে এসব বিষয়ে ততদিন তেলাপোকার মতো জীবন আমাদের জন্যে। শুধু তাই না, যে ডাক্তার ম্যাল প্র্যাক্টিস করছে তাদেরও আনতে হবে বিচারের সীমায়। কোন ছাড় দেয়া উচিৎ না।

 মেঘলা মানুষ এর ছবি

@গুরুত্বহীন, আমার মনে হয় নি যে কোন পেশাকে ছোট করা হয়েছে। অন্য পেশায় পরস্পরের প্রতি যে সহমর্মিতা আছে, এখানে সেটা অনুপস্থিত মনে হয় লেখিকা সেটাই বলে আক্ষেপ করেছেন। আমরাও কিন্তু অনেক সময় বলি, "ধুর, এটা না হয়ে যদি ওটা হতাম।"

আর একথা ঠিক যে চিকিৎসক সমাজের প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি নেতিবাচক।

শামীমা রিমা এর ছবি

আমার কথাগুলো বলে দেয়ার জন্য ধন্যবাদ ।

অছ্যুৎ বলাই এর ছবি

এই দেশে মানুষ মরে না, মানুষ মারে না। মরে ডাক্তার, মরে ইঞ্জিনিয়ার, মরে গার্মেন্টস, মরে পলিটিশিয়ান; কিংবা হিন্দু, অথবা মুসলমান।

ডাক্তার মরলে তাই শুধু ডাক্তার 'সম্প্রদায়'কেই এগিয়ে আসতে হবে!

১ তারা।

---------
চাবি থাকনই শেষ কথা নয়; তালার হদিস রাখতে হইবো

শামীমা রিমা এর ছবি

ডাক্তারাই এক্ষেত্রে এগিয়ে আসছি না,সেখানে অন্নদের কিভাবে আশা করি

সত্যপীর এর ছবি

পুরো লেখায় পুলিশ নিয়ে কোনো কথা নাই, খালি মিডিয়া কভারেজ ডাক্তার বিএমএ পোশাক শ্রমিক নিয়া ঘ্যানঘ্যান. ঘটনাগুলির পুলিশী তদন্তের কি অবস্থা সেইটাই কি আসল কথা না?

কিছু মানুষ যেমন চিকিৎসকদের নিয়ে বলে তারা ভিনগ্রহের প্রাণী তাদের কাজ শুধু অন্যায় অনিয়ম করা, আপনিও কিন্তু মিলিটারী অফিসারদের নিয়ে সেরকমই বললেন, "ও বাবা লে: কর্নেল তার কি আর বিচার হবে". নিজেদের দিয়েই এই স্টেরিওটাইপিং বন্ধ করি আসুন.

..................................................................
#Banshibir.

শামীমা রিমা এর ছবি

কথাগুলো ঘ্যানঘ্যান কিনা জানিনা । তবে খুনটা হয়েছে কুমিল্লা ক্যান্টনমেন্ট এর ভিতরে । ১ সপ্তাহ পার হবার পরও খুনিকে গ্রেফতার করা হয়নি । মিডিয়ার কথা এই জন্যই বলছিলাম,ওরা যদি বিষয় টা গুরুত সহকারে দেখত তাহলে খবর গুলো সংগ্রহ করা সহজ হতো । এখন সব খবর বেক্তিগত ভাবে সংগ্রহ করতে হচ্ছে ।

সত্যপীর এর ছবি

১। আপনি মিডিয়া মিডিয়া করে লাফাচ্ছেন কেন, আপনার পয়েন্ট অফ ফোকাস পুলিশ নয় কেন?

২। ক্যান্টনমেন্টের ভেতরে না হয়ে বাইরে হলে গ্রেফতার করতে ১ সপ্তাহের কম লাগত তাই বলছেন? কেন এইরকম মনে হচ্ছে আপনার?

..................................................................
#Banshibir.

ছাউনি এর ছবি

১। পুলিশ কি করছে, সেইটা জানার জন্যই মিডিয়া দরকার।সিংহভাগ মানুষ এই হত্যাকান্ডের ব্যপারে জানে না, মিডিয়ার দায়বদ্ধতা নাই? যতদূর জানি, এই ব্যাপারে প্রথমে মামলা নিতে রাজি হয়নি পুলিশ,বলা হয়েছিলো সেনাবাহিনী নিজেই ব্যবস্থা নেবে।এই ৫ দিনে মামলার অগ্রগতি শুণ্য। এই অন্যায়ের প্রতিবাদ করার জন্য সংগঠিত হওয়ার জন্য মিডিয়া প্রয়োজন।
২। আপনার কেন এমন মনে হচ্ছে না, সেটা বলবেন কী?
৩।"মিডিয়া মিডিয়া করে লাফাচ্ছেন কেন" কথাটা কি সচলায়তনের দৃষ্টিতে আপত্তিকর নয়? তাহলে আমিও বলি, আপনি হুদাই নর্তন করছেন কেন?

----অনেকেই লেখার মূল ফোকাস থেকে সরে গিয়ে "কেন তুলনা দেয়া হইলো" তে চলে যাচ্ছে। সাধারণভাবে ধারণা করা হ‌‌য় যে শিক্ষিত(!!) মানুষেরা অন‌্যায়ের প্রতিবাদে অগ্রগামী হবে, এই দৃষ্টিভন্গী থেকেই কথাটা বলা হয়েছে মনে হয়।

মনের রাজা টারজান এর ছবি

শ্রীলংকান এক বন্ধু বলল, তাঁর দেশে ডাক্তাররা দাবী আদায়ের জন্য কোন কোন সময় কর্ম বিরতিতে যায়, কিন্তু ১০-৩০ মিনিটের জন্য,
কিন্তু আমাদের দেশের রা যে মাঝে মাঝে ।।????

শামীমা রিমা এর ছবি

আমরা তো ভাই শ্রীলঙ্কান না বুঝতে হবে

সরওয়ার এর ছবি

এ ব্যাপারটার বেশ কয়েকটি দিক আছে।
১।ধর্মতত্ত্ব, মানবিকতা তত্ত্ব,প্রগতিশীলতা তত্ত্ব, নারীর ক্ষমতায়ন তত্ত্ব ইত্যাদির কোনটাই নারীকে পারিবারিক নির্যাতনের হাত থেকে রক্ষা করতে পারছে না।

২।ডাক্তার সম্প্রদায়ের একজন খুন হয়েছেন, তাই আরেকজন ব্লগে কলম তুলে নিয়েছেন। আমাদের দেশে বিভিন্ন রকম এবং অজস্র অন্যায়-অবিচার প্রতিমুহূর্তে হছে, কিন্তু একান্ত নিজের বা নিজ পরিবারের বা নিদেনপক্ষে নিজ সম্প্রদায়ের কেউ ক্ষতিগ্রস্থ না হলে আমরা প্রতিবাদ করার চিন্তাটুকুও করিনা। অন্যায়-অবিচারের প্রতিটা ক্ষেত্রে ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার, কৃষিবিদ, চাকুরীজীবি, ব্যবসায়ি প্রভৃতি প্রতিটি গোত্র কণ্ঠে কিংবা কলমে আওয়াজ তুললে সহানুভূতি আর প্রতিবাদ দুটাই জোরদার হোত।

৩।ডিওএইচএস-এ রিটায়ার্ড সেনা অফিসারদের জগিংয়ের সময় হই-হুল্লোড় করলে টিনেজারদের কে সাপমারা মারতে হয়, জরুরি অবস্থায় শার্টের হাতা গুটানো থাকলে চড় খেতে হয়; কিন্তু লে কর্ণেল খুন করলে সেই খবর মিডিয়ায় আসতে সাতদিন সময় নেয়, আবার একই দিনে পত্রিকায় দুটা খবর পাশাপাশি পড়তে হয়- এক ক্রেট ফেন্সিডিল বহনের দায়ে সেনা আদালতে সেনা কর্মকর্তার এক বছরের জেল, দুই বোতল ফেন্সিডিল বহনের দায়ে এক ব্যক্তির ১০ বছরের জেল। (সাধারণ আদালতে)।কারণ? ? সেনাবাহিনীর প্রসঙ্গ তুললে আগে দেশপ্রেমিক শব্দটি বলতে হবে (মুহাম্মদের নাম নিলে আমরা মুসলমানেরা যেমন সাঃ বলি, আবার মুজিবের নামের আগে বঙ্গবন্ধু বলতে হয়।)না বললে আপনার দেশপ্রেম সন্দেহের মধ্যে পড়ে যাবে।

শাব্দিক এর ছবি

আত্মকেন্দ্রিক হিসেবে আমাদের চিকিৎসক সম্প্রদায়ের সুনাম গগনচুম্বী

আসলেই আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, চিকিৎসকরা বোধহয় কিছু আত্মকেন্দ্রিক হয়, যার কারণে সামাজিক বা এ ধরনের বিষয় থেকে কিছুটা দুরত্ব বজায় রাখে।

---------------------------------------------------------
ভাঙে কতক হারায় কতক যা আছে মোর দামী
এমনি করে একে একে সর্বস্বান্ত আমি।

nazim এর ছবি

আসলেই আমার মাঝেমধ্যে মনে হয়, চিকিৎসকরা বোধহয় কিছু আত্মকেন্দ্রিক হয়, যার কারণে সামাজিক বা এ ধরনের বিষয় থেকে কিছুটা দুরত্ব বজায় রাখে।

আমার দেখা এর একটা কারন আছে।কারনটা হল বাংলাদেশের মানুষরা ফাও জিনিস খুব পছন্দ করে।এজন্য কোন জায়গায় (যেমন সামাজিক অনুষ্ঠান) কোন ফাও ডাক্তার পাইলে তারে খামাখা বিরক্ত করে।মাগনা চিকিৎসা পাইলে কে না খুশি হয়?

ওডিন এর ছবি

মন্তব্যের ঘরে দেখলাম সবাই লেখিকাকে মোটামুটি তুলোধুনো করে ছেড়েছেন, কারন মনে হলো পোশাক শ্রমিকদের সাথে ডাক্তারি পেশার তুলনা করা, আর মিডিয়াকে কেন টার্গেট করে লেখা হলো সেইটা।

অথচ এই লেখার মূল থিমটা, আমি যা বুঝলাম সেইটা হলো চিকিৎসা পেশার হর্তাকর্তা মাথাটাথা-রা কেন এখনো চুপচাপ আছেন সেইটার দিকে আঙ্গুল ওঠানো। কি লেখাটা একটু ভালো করে পড়ে মন্তব্য করছেন?

অফটপিকঃ (অনটপিকও হয়তো) কিছু কিছু পেশার লোকজন সবসময়েই সফট টার্গেট। ডাক্তারি পেশাটাও সেইরকম।

স্বনামধন্য হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ, সারা জীবন হাজার হাজার রোগীকে মৃত্যুর দুয়ার থেকে ফিরিয়ে এনে, মন্ত্রী-সচীবদের চিকিৎসা করেও কোনদিন পত্রিকার পাতায় নাম তুলতে পারেন নি, অথচ জনপ্রিয় চিত্রতারকা তার কাছে চিকিৎসা নিতে গিয়ে শুধুমাত্র অপারেশনের অনুমতি বিদেশে থাকা স্ত্রীর কাছ থেকে নিতে দেরি হওয়ার কারণে মারা গেলেন, তাকে কাঠগড়ায় উঠে পত্রিকার শিরোনাম হতে হোল। আফসোসের ব্যপার হলো সেই পত্রিকার সম্পাদক এর বাবা আর মা, দুইজনের চিকিৎসাই উনি করতেন।

ডাক্তার রোগি হলে নিউজ হয় না, রোগি বাঁচালেও নিউজ হয় না, রোগি মারলে সেইটা নিউজ। এই আরকি। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক

সুবোধ অবোধ

রিমু এর ছবি

আত্নকেন্দ্রিক কথাটাই মনে হয় সত্যি কথা। আমি নিজেও অবশ্য তেমন কিছু করছি অথবা মানুষকে জানানোর চেষ্টা করছি বলে মনে হয় না। দুনিয়ার বিষয় নিয়ে সব জায়গায় চিৎকার করা হয়, কেন যেন ডাক্তারদের ইস্যুতেই তেমন কিছু বলা হয় না।

সবাই মিডিয়া এবং তার ফালতু পাবলিসিটির শিকার।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।