সুখ দীপালি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শনি, ১৮/০২/২০১২ - ১০:০৫অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

১.
ঝাঁকুনিতেই ঘুম ভাঙ্গল, কে যেন ডান হাত ধরে সজোরে ঝাঁকাচ্ছে। চোখ না মেলতেই চারপাশের সমস্ত কোলাহল এসে ভিড় জমালো। চোখ মেলতে ইচ্ছে করছে না, কিন্তু চোখ না মেলা পর্যন্ত বোধহয় ঝাঁকুনিও থামবে না। উপায় না পেয়ে চোখ মেলতেই দেখি আরজ উদ্দিন আমার মুখের উপর ঝুঁকে আছে আর ক্রমাগত ডান হাত ঝাঁকিয়ে যাচ্ছে। আমাকে চোখ মেলতে দেখেই বিজয়ীর সুদীর্ঘ হাসির রেখা এঁকে দিল সমস্ত মুখ জুড়ে। আমিও আরজ উদ্দিনের দিকে তাকিয়ে মৃদু হাসলাম।

ঘামে ভিজে একেবারে একাকার হয়ে গেছি। শার্ট ভিজে পিঠের সাথে লেপ্টে আছে। চারিদিকে ভ্যাপসা চাপা গন্ধে কেমন যেন গা গুলাচ্ছে। এক ফোটা বাতাস ঢোকার জাগয়া খালি নেই, দম বন্ধ দম বন্ধ লাগছে। আমার ডানদিকে জানালার পাশে বসা আরজ উদ্দিন। আমাকে মাঝখানে চাপিয়ে দিয়ে কেউ একজন বামপাশ ঘেঁষে আমার কাঁধে মাথা রেখে নাক ডেকে ঘুমাচ্ছে। আমি ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিতেই সোজা হয়ে বসল। কিন্তু ঠিক পরক্ষণেই ঘুমের মাঝে হেলে দুলতে দুলতে আমার কাঁধের উপর এসে পড়ল আর সাথে সাথেই প্রচণ্ড গর্জনে নাক ডাকা শুরু করে দিল।

আমার সামনের সিটে চাপাচাপি করে বসেছে চারজন। একেবারে বামপাশে সাদা লুঙ্গি ও খয়েরী রঙের ফতুয়া পরা এক বৃদ্ধ। লাল রঙের শাড়িতে অনেকটা ঘোমটা টানা এক নববধু বসা মাঝখানে, তার পাশেই সাদা পাঞ্জাবী পরা এক যুবক হা করে ঘুমুচ্ছে, খুব সম্ভবত বর। আর জানালা ঘেঁষে বসেছে চৌদ্দ-পনের বছরের একটি মেয়ে, সে আবার কিছুক্ষণ পরপর জানালা দিয়ে মাথা বের করে উঁকি দিচ্ছে এবং প্রতিবারই চমকে চমকে মাথা ভেতরে এনে চোখ পিট পিট করে এদিক সেদিক তাকাচ্ছে। খুব সম্ভবত এরা সবাই একই পরিবারের সদস্য। এরা মাঝখানের কোন এক স্টেশন থেকে উঠে থাকবে হয়ত। ঘুমানোর আগে যাদের দেখেছিলাম তারা কেউ-ই নেই।

“ঐ আম্রা-আম্রা-আম্রা” বলতে বলতে জানালার পাশ এসে দাঁড়ালো এক আমড়া বিক্রেতা। মেয়েটা এবারও চমকে মাথা ভেতরে এনে চোখ পিট পিট করতে লাগল। “আম্রা নিবেন নি, ঐ আম্রা-আম্রা-আম্রা” বলতে বলতে আবার চলেও গেল। মাথার ঠিক পেছনেই কে যেন টিনের কৌটায় সজোরে শব্দ করছে। কাঁধ ঘুরিয়ে পেছনে ফিরতেই দেখি মুড়িওয়ালা হাতের তালুতে সজোরে টিনের কৌটা পিটিয়ে ঝালমুড়ি তৈরী করছে। বাদাম-ছোলার ডালা মাথায় নিয়ে হাত দিয়ে না ধরেই মুড়িওয়ালার পাশে দাঁড়িয়ে আছে সতের-আঠার বছরের এক বিক্রেতা। সে আবার একটু পরপর জানালার পাশে বসা মেয়েটির দিকে আড় চোখে তাকাচ্ছে এবং মেয়েটির চোখ ঘুরতেই সে চোখ ফিরিয়ে নিচ্ছে। খুব কাছ থেকেই সমবেত কণ্ঠ ভেসে আসছে-
“লহোরে লহোরে বান্দা লহো আল্লাহর নাম, আমার আল্লাহ-নবীজির নাম
অন্ধ কালা অচলেরে যেবা করল দান, আমার আল্লাহ-নবীজির নাম”
পাঁচ ছয় জনের একটা গানের দল একে অন্যের কাধে ধরে ধরে এগুচ্ছে। প্রায় সবারই চোখ কোটরের অনেকটা ভেতরে দেবে আছে, হয়ত সবাই অন্ধ। একেবারে সামনের জন কিছু একটা বলতেই পেছনের সবাই সমকণ্ঠে বলে উঠছে “আমার আল্লাহ-নবীজির নাম”। এত সব শব্দ, চিৎকার, চেঁচামেচি সব মিলিয়ে ভয়ংকর বিশৃঙ্খল অবস্থা ট্রেনের এই কামরাটিতে।

আরজ উদ্দিন জানালা দিয়ে উঁকি দিয়ে আমার দিকে না ফিরেই বললো- “ট্রেন ক্রসিং-এ দাড়াইছে। মনে হয় অনেকক্ষণ সময় নিবে। চলেন নিচে নামি, আলো-বাতাস কিছু গায়ে মাখি”। আমিও যেন ঠিক এমনটিই চাইছিলাম। এই বদ্ধ গোমড় বাতাসে ঘামের ভেজা গন্ধে রুদ্ধশ্বাসে দম আটকে আটকে আসছিল। তাছাড়া চারিদিকে উপর্যুপরি শব্দের বিড়ম্বনা ও ঐ প্যাসেঞ্জারের আমার কাঁধে মাথা রেখেই নাক ডাকতে শুরু করা রীতিমত অস্থির করে তুলেছে আমাকে। আসন ছেড়ে উঠতেই নাক ডাকা প্যাসেঞ্জার হেলে পড়ে যেতে যেতেই অকস্যাৎ নিজেকে সামলে নিল। অনেক কষ্টে ধাক্কা দিয়ে দিয়ে লোকজন সরিয়ে চাপাচাপি করে ট্রেন থেকে নামলাম। বাইরে হালকা রোদে ফুরফুরে বাতাসে মুহুর্তেই আরামদায়ক শীতলতায় মনপ্রাণ ও দেহ জুড়িয়ে গেল নিমিষেই।

২.
“সুখদীপালি”, খুব ছোট একটা রেলস্টেশন। প্ল্যাটফর্ম বলতে খয়েরী রঙের টিনে ছাওয়া একটা হাফবিল্ডিং-এর কিছুটা অন্ধকারে ঢাকা এক টুকরো জায়গা। সেখানেই বোরখা পরিহিত কতিপয় বৃদ্ধা ও মধ্যবয়সী নারী বসে নিজেদের মধ্যে গল্পে ব্যস্ত। তবে স্টেশন রুমের সামনে ছায়া ঘেরা সুবিশাল খোলা জায়গাটাই হল “সুখদীপালি” স্টেশনের সবচেয়ে সুন্দর এবং সবচেয়ে বড় প্ল্যাটফর্ম। স্থানে স্থানে মানুষের ছোট বড় জটলায় সরগরম খোলা প্ল্যাটফর্ম চত্বর। বেশকিছু দূরে ডানে এবং বাঁয়ে খোঁদাই করা নামফলকে বাংলা এবং ইংরেজীতে লেখা “সুখদীপালি”।

সমস্ত স্টেশন চত্বর জুড়ে যেন আনন্দমেলা বসেছে। রকমারী আঁচার ও কলা নিয়ে বসেছে কেউ কেউ। সিগারেট ও পান বিক্রেতা কাঁধে ফিতায় বাক্স ঝুলিয়ে নিয়ে ঘুরছে আর ঠোঁট লাল করে পান চিবুচ্ছে। মুড়িওয়ালা ট্রেন থেকে নেমে হাতের তালুতে টিনের কৌটা পিটিয়ে ঘুরে ঘুরে ঝালমুড়ি বিক্রি করছে। চায়ের ফ্লাক্স হাতে নিয়ে একজন থেকে অন্যজনে চা বিক্রি করছে মধ্যবয়সী এক চা-ওয়ালা। স্টেশনের ডান দিকে বড় একটা বট গাছের ছায়ায় একতারা হাতে গান করছে হালকা গেরুয়া রঙের জোড়াতালি দেয়া আধা ময়লা পাঞ্জাবী ও একই রঙের লুঙ্গি পরনে মাথায় পাগড়ী বাধা এক বাউল, গানের তালে তালে ঢোল বাজিয়ে বাউলকে সঙ্গ দিচ্ছে বার-তের বছরের এক কিশোর। বাউলকে চারদিক দিয়ে ঘিরে আছে নানা বয়সী মানুষ। বাউল গাইছে-
“বন্ধুরও বাড়ির জালালী কবুতর
আমার বাড়ি আসে-রে
কত বুট মুসুরি ছিটায়া খাওয়াইলাম
খায় আর বাকবাকুম করে-লো কিশোরী
চলনা হই উদাসী
আমার মন না চায় এ ঘর বাধিলো কিশোরী
আমার প্রাণ না চায় এ ঘর বাধিলো কিশোরী”

সারা প্ল্যাটফর্ম ঘুরে ঘুরে দেখছি। সেই সঙ্গে আরজ উদ্দিনকেও খুঁজছি, অনেকক্ষণ হলো তাকে খুঁজে পাচ্ছিনা। হয়ত ভিড়ের মাঝেই কোথাও আড্ডায় মেতে আছে। প্যাকেট থেকে বের করে একটা সিগারেট ধরালাম। স্টেশন থেকে একটু দূরে বামপাশে পাশাপাশি দুটি চায়ের স্টল দেখে এগিয়ে গেলাম। দুটোতেই মানুষের প্রচণ্ড ভিড়, এই ভিড়ের মাঝে ঘামের উৎকট গন্ধে দাঁড়িয়ে থেকে চা পানের তাগিদ এল না। এই মুহুর্তে ভ্রাম্যমাণ চা-ওয়ালাকেও খুঁজছি মনোযোগ দিয়ে, সেও নেই কোথাও।

চায়ের স্টলের সামনেই দাঁড়িয়ে থেকে দেখছি চারপাশ। বড় সুন্দর, বড় অপরুপ এই “সুখদীপালি” স্টেশনটা। রেললাইন পার হয়েই স্টেশনের সামনে দিয়ে ফসলে ভরপুর দিগন্তজোড়া মাঠের বুক চিরে দৃষ্টির সীমানা জুড়ে সাপের মত এঁকে বেঁকে চলে গেছে মেঠোপথ, দু'ধারে সারি সারি গাছ ঠায় দাঁড়িয়ে আছে অতন্দ্র প্রহরীর মত। নির্জন বিকেলে এই মেঠোপথ ধরে একা একা হাঁটছি ভাবতেই কেমন যেন অদম্য আনন্দে শিহরণের মত লাগে।

হাঁটতে হাঁটতে স্টেশন মাস্টারের রুমের সামনে এসে দাঁড়ালাম। ট্রেনে যে কম্পার্টমেন্টে ছিলাম সেদিকে তাকাতেই দেখি মেয়েটি জানালা দিয়ে মাথা বের করে তাকিয়ে আছে আমার দিকে। চোখে চোখ পড়তেই মেয়েটি আগের মতই হঠাৎ চমকে মাথা ভেতরে টেনে নিল এবং প্রচণ্ড জোরে জানালায় বাড়ি খেয়ে চিৎকার করে উঠল। আবারও কে যেন ডান হাত ধরে সজোরে ঝাঁকুনি দিচ্ছে। ফিরতেই দেখি আরজ উদ্দিন বলে উঠল
-আপনি এখানে? আর এইদিকে সেই কখন থেকে সারাটা স্টেশনে আপনাকে খুঁজে বেড়াচ্ছি ।
-আমিও-তো আপনাকে খুঁজছি অনেকক্ষণ ধরে। কোথায় ছিলেন এতক্ষণ?
-ঐ যে বট গাছের নিচে জটলা সেখানেই গান করছে এক বাউল। কি যে মিষ্টি তার গানের গলা! সেখানেই গান শুনছিলাম কিছুক্ষণ।
-আমিও একটু ঘুরে এসেছি ঐদিক থেকে। ট্রেনের অবস্থা কি? অনেকক্ষণ-তো হল ক্রসিং এ পড়ে আছে।
-কিছুতো জানিনা। চলেন, স্টেশন মাস্টারকে জিজ্ঞেস করে জেনে আসি।

আরজ উদ্দিন, বয়সে আমার চেয়ে বেশ ছোট হবে হয়ত। আমরা একই স্টেশন থেকে ট্রেনে উঠেছি, ট্রেনেই পরিচয়। পেশায় একাধারে কৃষক ও ব্যবসায়ী। হাই স্কুল পর্যন্ত পড়াশোনা করলেও ম্যাট্রিক পাস করা হয়নি। একমাত্র বোনকে দেখতে গিয়েছিল, এখন ফিরে যাচ্ছে নিজ গ্রামে। বাসে ভ্রমণ ভয় পায় বলে খুব একটা বের হয় না গ্রাম থেকে। যদি কখনো কোথাও যাবার প্রয়োজন পড়ে তখন একটু কষ্ট হলেও ট্রেনেই চলাফেরা করে। হয়ত আর দুই-এক স্টেশান পরেই নেমে যাবে।

৩.
জিনিসপত্রে ঠাসা ছোট একটা রুম। রুমে ঢুকতেই বামদিকে এক কোণে দরজাবিহীন বেশ পুরাতন এবং বড় একটা কাঠের আলমারি ভর্তি রেলদপ্তরের মোটা মোটা খাতা আর বিভিন্ন ফাইল। মেঝেতেও সারি সারি স্তরে রাখা আছে আরো অনেক। কাঠের আলমারির পাশেই মরচে পড়া একটি স্টীলের আলমারি। রুমের ডানদিকের মাঝামাঝি বরাবর একটা জানালা, তার পাশেই বড় একটা কাঠের টেবিলে রেলদপ্তরের রোল করা খোলা খাতা। টেবিলের ডানকোণে তিনটি টেলিফোনের একটিতে নুয়ে কথা বলছিলেন স্টেশন মাস্টার।

দরজা ধরে দাঁড়ানোতে ছোট রুমটা অন্ধকার করে আমাদের ছায়া পড়েছে। তাই টেলিফোন কানে নিয়ে ঘুরে তাকাতেই তিনি ভূত দেখার মত চমকে দাঁড়িয়ে গেলেন। উনার হাত থেকে টেলিফোনটি টেবিলের উপর পড়ে গেল, বিস্মিত ও অবাক চোখে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে তিনি চেয়ারে বসে পড়লেন। আমি অপ্রস্তুত বোধ করতে লাগলাম। আরজ উদ্দিন সালাম দিয়ে ছুটে গেল মাস্টার সাহেবের কাছে। হতভম্ব আমিও ভীরু ভীরু পায়ে এগিয়ে গেলাম। আরজ উদ্দিন মাস্টার সাহেবকে জিজ্ঞাসা করল-
-স্যার, পানি খাবেন?
তিনি মাথা নাড়িয়ে সম্মতি জানালেন। টেবিলের পাশে পানির একটা জগ থাকলেও কোন পানি নেই।
-আপনি এখানেই থাকেন, আমি পানি নিয়ে আসি।
এই বলেই আমি পানি আনতে রুম থেকে বের হয়ে গেলাম।

আমি আর আরজ উদ্দিন টেবিলের সামনে রাখা দুটি চেয়ারে বসে উনার দিকে তাকিয়ে আছি। কিছুটা স্বাভাবিক হলেও তিনি এখন পর্যন্ত কোন কথা বলছেন না। আমি রাজ্যের বিস্ময় নিয়ে তাকিয়ে আছি এই বৃদ্ধ স্টেশন মাস্টারের দিকে। পাতলা রোগা, লম্বা গড়নের এই মানুষটির মাথা ভর্তি পরিপাটি করে আঁচড়ানো সাদা চুল, চোখে কালো ফ্রেমের মোটা চশমা, গ্রামীণ চেকের হাফ হাতা শার্ট পরা এই মানুষটির সমস্ত চেহারা জুড়ে অস্বাভাবিক নির্মলতা। যদিও সময়ের স্রোতে শরীরে বয়সের ছাপ জেগে উঠেছে তবুও মনে হচ্ছে যেন তরুণ বয়সে তিনি ছিলেন রাজপুত্রের মত, তারই কিছুটা কোমলতা এখনো পরিমিত ভাবে লেগে আছে মানুষটির সমস্ত সত্ত্বা জুড়ে। আমার বিস্ময় বাড়তে থাকে। মানুষটাকে আমার বড় কাছের, বড় আপন মনে হতে থাকে যেন বহুকাল আগে এই মানুষটার সাথেই ছিল আমার আত্মার পরিচয়। এক দুর্নিবার আকর্ষণ আমাকে গ্রাস করে, আমি পরম মমতায় চেয়ে থাকি। আরজ উদ্দিনের কণ্ঠস্বরে আমার মুগ্ধতা ভাঙে।

-স্যার কি এখন সুস্থ বোধ করছেন?

তিনি মাথা নেড়ে সম্মতি জানান।

-স্যার, অসুস্থ মনে করলে বাড়িতে চলে যান।

তিনি চেয়ার খানিকটা টেনে আমাদের কাছে এগিয়ে আসেন। আরজ উদ্দিন এবার আশ্বস্ত হয়ে জিজ্ঞেস করল
-স্যার, ট্রেন কখন ছাড়বে? অনেকক্ষণ হল এই স্টেশনে আটকে আছে।

এবার মানুষটি কথা বলে উঠলেন।
-সামনের স্টেশনে মালবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনসহ পাঁচটি বগি লাইনচ্যূত হয়ে গেছে। এখনো উদ্ধারকারী ট্রেন আসেনি। কখন অচলাবস্থা ঠিক হবে উদ্ধারকারী ট্রেন না আসা পর্যন্ত কিছুই বলা যাচ্ছে না।

এবার তিনি আমার দিকে তাকিয়ে প্রশ্ন করলেন
-আপনারা যাবেন কোথায়?

আমি কোন উত্তর দিতে পারলাম না। শুধু নীরব চেয়ে রইলাম। পাশ থেকে আরজ উদ্দিনই জবাব দিল।
-স্যার, আমার বাড়ি ধনপুকুর গ্রামে। এখান থেকে দুই স্টেশন পরে। উনি কোথায় যাবে আমি জানিনা।
-ও, আচ্ছা।

এই বলেই তিনি আমাকে প্রশ্ন করলেন
আপনার নাম কি জনাব?

আমি বলতে চাইছি কিন্তু কণ্ঠ দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না। আমি ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে আছি। অথচ এমনটি এর আগে হয়নি কখনো। আরজ উদ্দিন আমাকে ঝাঁকুনি দিয়ে বলল
-কথা বলছেন না কেন? আপনার নাম বলেন, আপনি কোথায় যাবেন?

তিনি আবারও প্রশ্ন করলেন
-জনাব আপনার নাম কি?
-মাহমুদ চৌধুরী

এবার আর সমস্যা হয়নি, তবে নামটা বলার সময় অনেকটা চিৎকারের মত হওয়ায় তিনি কিছুটা ঘাবড়ে গিয়ে আবারও প্রশ্ন করলেন
-যাবেন কোথায়?

আমি অস্ফুট শব্দ করলাম। কিন্তু কোথায় যাব বলতে পারলাম না। তিনি আমার হাত চেপে ধরতেই আমি কেঁপে কেঁপে উঠলাম।
-সামনের স্টেশানে একটা অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে। ট্রেন কখন ছাড়বে কিছুই বলা যাচ্ছে না। আমার বাসায় চলুন, লাইন ক্লিয়ার না হওয়া পর্যন্ত আমার বাসায় রেস্ট নেবেন। বিব্রতবোধ করবেন না, আমি আন্তরিকভাবেই আপনাদের আপ্যায়ন করতে চাচ্ছি।
-স্যার, আমার বাড়িতে জরুরী কাজ পড়ে আছে। তাছাড়া এখান থেকে ধনপুকুর যেতে বেশীক্ষণ লাগবে না। হেঁটে গেলেও এক-দেড় ঘন্টায় চলে যাওয়া যাবে। তাছাড়া এখানে রিক্সাও আছে দেখলাম। আপনি বরং মাহমুদ সাহেবকেই নিয়ে যান। অন্য কোনদিন না হয় এসে আপনাকে দেখে যাবো।

এই বলেই আরজ উদ্দিন উঠে পড়ল। মাস্টার সাহেবও উঠে দাঁড়িয়ে হাত বাড়িয়ে দিলেন
-আমি ফজলুর রহমান, “সুখদীপালি”-র স্টেশন মাস্টার। ত্রিশ বছর ধরে এই স্টেশনেই আছি। কখনো এই পথে গেলে অবশ্যই দেখা করে যাবেন।

আরজ উদ্দিন করমর্দন করে সালাম দিয়ে বিদায় নিল। মাস্টার সাহেবও রুম থেকে বের হয়ে প্রায় সঙ্গে সঙ্গেই মধ্যবয়স্ক একজনকে সাথে নিয়ে রুমে ঢুকলেন। বুঝলাম উনার সহকারী।

৪.
স্টেশনের পেছনেই “সুখদীপালি” গ্রামটির চারিদিকে সবুজের ছড়াছড়ি, যেন সবুজে ঢেকে আছে সারাটা গ্রাম। আমরা গ্রামের মাঝ দিয়ে এলোমেলো ভাবে চলে যাওয়া মাটির কাঁচা রাস্তা দিয়ে এগুচ্ছি। রাস্তার দুই ধারে সারি সারি সুপারি গাছের ফাঁকে ফাঁকে আম-কাঠালের মিলনমেলা। দুই পাশেই রাস্তা থেকে কিছুটা ভেতর দিকে গ্রামের মানুষের বসতবাড়ি। ফজলুর রহমান সাহেব ক্রমাগত বলেই যাচ্ছেন, আমি শুনছি আর মাঝে মাঝে সম্মতিসূচক, বিষ্ময়সূচক শব্দ উচ্চারণ করছি।

বুঝলেন মাহমুদ সাহেব, বত্রিশ বছর যাবৎ বাংলাদেশ রেলওয়েতে চাকুরি করছি। এর মধ্যে ত্রিশটি বছর কাটিয়ে দিলাম এই “সুখদীপালি” গ্রামে। শহরের অনেক ভাল ভাল জায়গায় পোষ্টিং পেয়েছিলাম, যাওয়া হয়নি। একটা সময় নিজ গ্রাম ছেড়ে এই গ্রামে এসেই বসতি গড়লাম আমার মেয়েটার জন্য। বড় আদরের মেয়ে আমার। খুব চঞ্চল ছিল, প্রতিদিনই ঘুরতে বের হওয়া চাই তার। খুব সাহিত্য ও সঙ্গীত প্রেমী ছিল আমার মেয়েটি। প্রায়ই ওকে সঙ্গে করে শহরে নিয়ে গিয়ে নভেল, গানের ক্যাসেট কিনে দিতাম। দিনরাত গান শুনত আর নভেল পড়ত। ছাত্রী হিসেবেও ছিল খুব মেধাবী। স্টেশনের সামনে দিয়ে যে রাস্তাটি চলে গেছে তারই একেবারে শেষ প্রান্তে মোহিনীলতা স্কুল এণ্ড কলেজ, সেখানেই পড়ত আমার মেয়ে চিত্রা। বাসায় যখন পড়ত তখন গান শুনতে শুনতে পড়ত। অথচ জানেন, স্কুলে কিংবা কলেজে কখনোই পরীক্ষায় দ্বিতীয় হয়নি, বরাবরই প্রথম হয়েছে।

ফজলুর রহমান সাহেব বলেই চলছেন। তিনি এমন ভাবে কথা বলছেন, যেন কত আপন এই আমি, যেন বহুদিন পর আমাকে পেয়ে খুব খুশি হয়েছেন। তাই নিজের কথা, নিজের মেয়ের কথা নির্দ্বিধায়, নিঃসঙ্কোচে বলে যাচ্ছেন সব। সমস্ত ব্যাপারটা এমন যে, আমিও অনেকদিন চিত্রার কোন খোঁজ নিতে পারিনি। তাই চিত্রার আগাগোড়া সবটুকুই আমাকে শোনাচ্ছেন। ভেবে কোন কূলকিনারা পাচ্ছি না। বিচিত্র সব চিন্তা ভাবনায় অনেকটা অন্যমনস্ক হয়ে গেছি। আমাকে একটু অন্যমনস্ক দেখে ফজলুর রহমান সাহেব জিজ্ঞেস করে বসলেন-
-আচ্ছা, এসব কথা বলাতে আপনি বিরক্ত হচ্ছেন নাতো?
-না, না, বিরক্ত হচ্ছি না। আপনি বলুন। আপনার আর কোন সন্তান নেই?
আমার প্রশ্নে কিছুটা বিচলিত বোধ করলেন।
-না, নেই। চিত্রাই আমাদের বড় আদরের একমাত্র সন্তান।
-বাসায় আপনার আর কে কে আছেন?
-বাসায় চিত্রা, চিত্রার মা ও একটি কাজের ছেলে নিয়ে চার জনের খুব সাধারণ সাদামাটা একটা পরিবার আমার।

একটা বাড়ির সামনে হঠাৎ করেই ফজলুর রহমান সাহেব থেমে গেলেন, বুঝলাম এটাই উনার বাড়ি। বাড়ির চারিদিকে মাথা সমান উঁচু সীমানাপ্রাচীর। মূল ফটক দিয়ে ঢুকতেই বিশাল উঠোনের এক পাশে অনেকটা জাগয়া জুড়ে রকমারি ফুলের সুদৃশ্য বাগান। গোলাপ, জবা, শিউলি, গাঁদা, দোলনচাঁপা ও বড় একটা হাসনাহেনার গাছসহ নাম না জানা আরও অনেক অনেক ফুলের বিচিত্র সমাহার। আমরা দাঁড়িয়ে আছি বাগানের পাশেই। ফজলুর রহমান সাহেব আবারও বলতে শুরু করলেন

মেয়েটা আমার ঢাকা শহরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হয়। একসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়াশোনা শেষ করে ফিরে আসে। খুব ভাল রেজাল্ট করে আমার মেয়েটা, ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট হয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকচারার হিসেবে নিযোগ পায়। এরই মাঝে একদিন রাতে আমার ঘরে এসে বলল
-বাবা, একটা ছেলেকে আমি খুব পছন্দ করি, আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়েই পড়াশোনা শেষ করে এখন চাকুরি করছে।
আমি বললাম – কিরে বুড়ি, ডুবে ডুবে তাহলে এতদূর! ছেলেটাকে শুধু দাওয়াত দিয়ে খাওয়াতে হবে, এইতো?
মেয়েটা আমার কেঁদে কেঁদে বলল - আমি কিন্তু ঠাট্টা করছি না বাবা, সত্যি সত্যি ছেলেটাকে খুব পছন্দ করি।
আমিও প্রশ্ন করলাম - আমার চেয়েও বেশী!
-তোমার সাথে আর পারা গেল না বাবা।
এই বলেই মেয়েটা আমাকে জড়িয়ে ধরে বলল 'ওর কিন্তু বাবা-মা কেউই বেঁচে নেই বাবা। তোমরাই কিন্তু ওর বাবা-মা হবে' এই বলেই পাগলী মেয়েটি আমার কাঁদতে শুরু করল।

ধুমধাম আয়োজন করে বিয়ে দিলাম মেয়েটাকে। মেয়েটা বরের সাথে ঢাকা শহরে চলে গেল। ঐ সময় অনেক চেষ্টা করেও পোষ্টিং নিয়ে ঢাকায় যেতে পারিনি। সুখেই কাটছিল ওদের দিনকাল। পাগলীটা প্রতি বৃহস্পতিবারই বরকে নিয়ে ছুটে আসতো আমাদের কাছে। আমারও চাকুরিটা আর ভাল লাগছিল না। তাছাড়া চিত্রার মাও মেয়ের কাছে চলে যেতে চাইছিল শুধু। সব মিলিয়ে একসময় সিদ্ধান্ত নিলাম পোষ্টিং নিয়ে ঢাকায় না যেতে পারলে চাকুরিটা ছেড়ে দেব।

চাকুরিটা ছেড়ে দেবার সিদ্ধান্তই যখন চূড়ান্ত করে ফেললাম তখনই এক বৃহস্পতিবার বরকে সঙ্গে নিয়ে উপস্থিত হল চিত্রা। প্রতিবারই শুক্রবারটা থেকে শনিবার সকালে দুজনেই চলে যায়। কিন্তু সেবার মেয়েটা অসুস্থ হয়ে পড়ায় বরের সাথে আর যেতে পারেনি। চিত্রার বর একাই ফিরে যায় ঢাকায়, কথা ছিল কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে পরদিনই চলে আসবে। পরদিন কিন্তু বর এলোনা। মেয়ে আমার কেঁদে কেটে অস্থির। সবাই সান্ত্বনা দিলাম হয়ত ছুটি পাইনি, দেখিস কালই চলে আসবে। দেখতে দেখতে দুইদিন কেটে গেল এভাবে। এদিকে মেয়ে আমার পাগল প্রায়। শেষে মেয়েকে নিয়ে ছুটলাম ঢাকায়। গিয়ে দেখি বাসা তালাবদ্ধ। অফিসে খোঁজ করা হল, অফিস থেকে জানাল বৃহস্পতিবার-এর পরে অফিসে আর আসেনি। কত কিছু করলাম! থানায় মামলা করা হল, হাসপাতাল গুলোতে খোঁজ না পেয়ে শেষে মর্গে পর্যন্ত খোঁজ করেছি, তাও কিছু জানা যায়নি।

এক সময় ফিরে এলাম “সুখদীপালি”তে। চাকুরিটাও আর ছাড়লাম না। তার কিছুদিন পরেই ঢাকায় প্রমোশন দিয়ে পোষ্টিং হল। চিত্রার বর যদি কোনদিন এই “সুখদীপালি”তে এসে চিত্রাকে না পেয়ে ফিরে যায়? এই ভয়ে আর কোথাও গেলাম না। নিজ গ্রামের বসত ভিটাটুকু বিক্রি করে দিয়ে “সুখদীপালি”তে এই জায়গাটুকু কিনে ঘর তুললাম। আর গ্রামে আমার যত জমিজমা ছিল সেগুলো দান করে দিয়ে একটা স্কুল তৈরী করে দিলাম মেয়ে ও মেয়ের বরের নামে। চিত্রা আখন্দ মেমোরিয়াল উচ্চ বিদ্যালয়। যদিও আমার মেয়ে চিত্রা এখনো জীবিত তবুও এ বেঁচে থাকায় কোন প্রাণ নেই, লালিত্য কোন স্বপ্ন নেই, অনুভূতির সমস্ত সত্ত্বা জুড়ে শুধুই নির্লিপ্ততার ঘর বসতি। মেয়েটা আমার এখন আর নভেল পড়ে না, গুনগুন করে গেয়ে উঠেনা কখনো। চঞ্চল মেয়েটি আমার সেই যে ঘরে ঢুকলো এরপর আর কখনোই বাড়ির বাইরে বের হইনি। সেই থেকে দীর্ঘ প্রায় দেড় যুগেরও বেশী সময় ধরে সেচ্ছা বন্দী জীবনযাপন করছে। এই বলেই ফজলুর রহমান একটা দীর্ঘশ্বাস ফেললেন।

আমি কি সান্ত্বনা দেব, কিভাবে দেব কিছুই বুঝে উঠতে পারছিনা। ফজলুর রহমান সাহেব কাঁপা কাঁপা কন্ঠে বলে উঠলেন
-বাবা, তোমাকে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলে দিয়েছি বোধহয়। আসলে হয়েছে কি, তোমাকে দেখার পর থেকেই খুব আপন আপন, খুব পরিচিত লাগছিল তাই . . .
আমি কিছু বলার আগেই তিনি বলে উঠলেন
-তোমাকে অনেকক্ষণ বাইরে দাঁড় করিয়ে রেখেছি। নিজের কাছেই খুব লজ্জা লাগছে। বাবা, কিছু মনে করো না যেন। চলো ঘরে যাই।
কোন কথা না বলেই ফজলুর রহমান সাহেবের পেছন পেছন এগুতে থাকি। ঘরের কাছাকাছি আসতেই তিনি উচ্চস্বরে বলে উঠলেন
-তোমরা সবাই কোথাই? এসে দেখ, মেহমান ধরে নিয়ে এসেছি।
কাঁচের গ্লাস হাতে বেরিয়ে এলো মধ্যবয়সী একজন মহিলা। তিনিও ভূত দেখার মত চমকে গেলেন। হাত থেকে কাঁচের গ্লাসটি ফ্লোরে পড়ে বিকট শব্দে ঝনঝনিয়ে ভেঙ্গে গেল। কিছু বুঝে উঠার আগেই মধ্যবয়সী মহিলাটিও অচেতন হয়ে ফ্লোরে পড়ে গেলেন। এবার আমি নিজেই চমকে গেলাম।

৫.
এখন রাত অনেক, আমার চোখে কোন ঘুম নেই। নিজেকে আঁধারে ডুবিয়ে বারান্দায় চেয়ার টেনে বসে আছি। রাতের নির্জনতায় হাসনাহেনার তীব্র গন্ধ ও ঝিঁঝিঁ পোকার শব্দে মুখর চারিদিক। আমিও-তো প্রায় দীর্ঘ দেড় যুগ ধরেই কি জানি কিসের আশায় প্রতি বৃহস্পতিবার ট্রেনে চড়ে বসি গন্তব্যহীন ভাবে। ট্রেনে যখন কারো সাথে পরিচয় হয় তখন কোথায় যাব জিজ্ঞেস করলে কখনোই কোন উত্তর দিতে পারিনা। নিজেকে অনেক প্রশ্ন করেছি আমি, কোন উত্তর পাইনি। কত বার যে চেষ্টা করেছি ট্রেনে না চড়ে অন্য কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে। পারিনি। শত ব্যস্ততা, জটিলতা কিংবা নানাবিধ যন্ত্রনার মাঝেও ছুটেছি স্টেশন থেকে স্টেশনে। মানুষের ভিড়ে খুঁজেছি অচেনা মানুষকে, স্বপ্নের মাঝে খুঁজেছি হারানো স্বপ্নকে, অনুভূতির তীক্ষ্ণতায় খুঁজেছি অবচেতন অনুভূতিগুলো। কি সেই স্বপ্ন, কে সেই অচেনা মানুষটি, যে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে আছে আমার সমস্ত অবচেতন অনুভূতিজুড়ে?

পাশের ঘর থেকে গানের শব্দমালা বাতাসে ভর করে করে ভেসে আসছে।
“স্বপন দেখি, যেন তারা কার আশে
ফেরে আমার ভাঙা খাঁচার চারপাশে
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি
এত বেদন হয় কি ফাঁকি
ওরা কি সব ছায়ার পাখি
আকাশ-পারে কিছুই কি গো বইল না
সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি।”
রাতের অস্ফুট নির্জনতা জুড়ে বিষাদের স্বরলিপিগুলো তীক্ষ্ণ সূচের মত আঘাতে আঘাতে আমাকে বিঁধতে থাকল।

দমকা বাতাস বইতে শুরু করেছে। থেমে থেমে বিদ্যুৎ চমকাচ্ছে আর গুড়গুড় শব্দে মেঘ ডাকছে। ক্রমেই বাতাসের বেগ বাড়তে লাগল। কালো এই রাতে ভয়াল ঝড়টি সবকিছু লন্ডভন্ড করে দ্রুত এগিয়ে আসছে আমার দিকে। বহুদূরের শো শো শব্দটা স্পষ্ট থেকে স্পষ্টতর হতে হতে আচমকা এক ঝাঁপটায় আমাকে ভিজিয়ে দিল।

মোখলেছুর রহমান সজল


মন্তব্য

দ্যা রিডার এর ছবি

খুউব ভাল লাগল । লিখতে থাকুন চলুক

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ।

সবুজ পাহাড়ের রাজা এর ছবি
মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ সবুজ পাহাড়ের রাজা।

প্রৌঢ় ভাবনা এর ছবি

ভাল লেগেছে। চলুক

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

ধন্যবাদ আপনাকে।
ভাল থাকুন।

মর্ম এর ছবি

চমৎকার চমৎকার বর্ণনা।

বড় গল্প- তাতে কী? একটানা পড়ে গেলাম। লেখাতে ছবি আঁকার একটা ব্যাপার আছে, সে ছবি দেখতে পেলাম লেখায়।

সুখদিপালী স্টেশনের কথা ধরেই আপনার কথা মনে থাকবে হয়ত।

ভাল থাকুন, আর অনেক অনেক লিখুন। শুভেচ্ছা।

~~~~~~~~~~~~~~~~
আমার লেখা কইবে কথা যখন আমি থাকবোনা...

মোখলেছুর রহমান সজল  এর ছবি

অনুভূতিটুকু লিখে জানানোর জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
লিখব, এই প্রত্যাশা রাখি।

নিয়তির সালিশ গল্পটিও হয়ত ভাল আপনার।
ভাল থাকুন।

প্রদীপ্তময় সাহা এর ছবি

খুব ভাল লাগল আপনার লেখা ।

পড়তে পড়তে কখন যেন 'সুখ দীপালি' তে পৌঁছে গিয়েছিলাম ।

গল্পের নায়ককে প্রশ্ন করতে ইচ্ছে করছে,
"আপনিই কে সে ? এতদিন কোথায় ছিলেন ?"

খুব ভালো থাকুন ।
আরও অনেক অনেক লিখুন ।

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মোখলেছুর রহমান সজল এর ছবি

হাসি
সুখদীপালি ভ্রমণের জন্য অনেক ধন্যবাদ আপনাকে।
কোন এক গল্পে না হয় খুঁজে নেবেন।
ভাল থাকুন।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।