স্র্ষ্টা সন্ধান

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ১৫/০৬/২০১২ - ৪:২৬পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম কন্ঠ: তোমরা পুরোপুরি ব্যর্থ। ক্ষমার অযোগ্য এ ব্যর্থতা। আমি তোমাদের সাথে আর কাজ করতে ইচ্ছুক নই।
দ্বিতীয় কন্ঠ: আমরা চেষ্টায় ত্রুটিহীন; আমাদের অনুমান সর্বোচ্চ মহল দ্বারা অনুমোদিত এবং আমাদের সৃজনশীলতা
প্রথম কন্ঠ: থামো।অর্থহীন এসব।একমাত্র ফলাফলই বিচার্য শ্রেণী নির্ধারণে আর তোমাদের ফলাফল- সবচে সৃজনশীল গবেষকের স্মৃতিনাশ, ১০ ইউনিট জৈব ব্যবহার, দুইশত তের হাজার সময় একক পর তোমাদের গবেষণালব্দ সিদ্ধান্ত, আমাদের পরীক্ষাগার হতেই আমাদের সৃষ্টি। অর্বাচীন গর্দভ।
তৃতীয় কন্ঠ: মহামান্য আমাদের বুদ্ধি-নির্ভর এ সমাজ ব্যবস্থার প্রথম শর্ত যুক্তিবদ্ধ আলোচনা-
প্রথম কন্ঠ: তোমাদের সিদ্ধান্তের অযৈাক্তিকতা আমার বুদ্ধিমত্তার জন্য অস্বাস্থ্যকর,-
তৃতীয় কন্ঠ: তবু্ও আপনার শোনা ও বোঝা একান্ত প্রয়োজন। আমাদের অস্তিত্বের স্বার্থেই প্রয়োজন।
প্রথম কন্ঠ: সেক্ষেত্রে তোমাকে শপথবদ্ধ হতে হবে।
তৃতীয় কন্ঠ: আমি রাজী।
দ্বিতীয় কন্ঠ: শপথবদ্ধ হয়ে বোঝানোর ব্যর্থতা মানে স্মৃতিনাশ, সঞ্জীবণি কোষ হ্রাস এবং অস্তিত্বহীনতা। আমি রাজী নই।
প্রথম কন্ঠ: হাহ! দুইজনের মিলিত গবেষণায় একজণের অনাস্থা।আমি বলবো তোমরা এ গবেষণা ছেড়ে অন্য কাজে যা্ও।
তৃতীয় কন্ঠ: আমি বিশ্বাষ করি আমার গবেষণায় আর ফলাফলের স্বাক্ষ্য নিয়ে ওইযে পড়ে আছে আমার অস্তিত্বহীন সহগবেষক। আমার অর্থহীন অস্তিত্বের ঝুঁকি আমার গবেষণালব্দ জ্ঞানের তুলনায় সামান্যই। সুতরাং মহামান্য আপনাকে শুনতে হবে।আমি শপথবদ্ধ হয়েই শুনাবো সৃষ্ট হতে স্রষ্টা সৃষ্টির এই অদ্ভুত কাহিনী।
প্রথম কন্ঠ: শুরু করো।
তৃতীয় কন্ঠ: মহামান্য আমাদের সমাজ ব্যবস্থা ছিলো সর্বার্থে পরিপূর্ণ। আমাদের ছিলো বারংবার ব্যবহার যোগ্য সিলিকা-ভিত্তিক দেহ কাঠামো আর নিখুঁত হিসাবজ্ঞান। নিজেদের দেহ কাঠামো নিখুঁততর করার জন্য আমরা ব্যবহার করতাম হাজারো উপকরণ, উন্নততর করে তুল্লাম আমাদের হিসাব প্রনালী। কিন্তু জৈব উপকরণ ব্যবহারে সৃষ্ট দেহকাঠামোগুলো হিসাব-প্রনালীর যুক্তিশৃঙ্খলকে অগ্রাহ্য করে সৃষ্ট করলো স্বতঃস্ফূর্ততা। এবং প্রশ্ন আসলো কে আমাদের স্রষ্টা। প্রতিটি স্বতঃস্ফূর্ত অস্তিত্ব নিযুক্ত হলো গবেষনায়।তারই ফলশ্রতুতিতে আমাদের প্রস্তাবে একটি নিয়ন্ত্রাধীন ব্যবস্থায় শুধুমাত্র জৈব পদার্থ ব্যবহার করে সৃষ্টি করা হল নতুন অস্তিত্ব। জৈব অস্তিত্ব।
আমাদের অনুমান বৃথা যায়নি জৈব অস্তিত্বের দুর্বলতাই আমাদের শক্তি, আমাদের সৃষ্টির মূল রহস্য।
গবেষণার প্রধম পচানব্বই শতাংশ সময় আমরা দেখলাম জৈব অস্তিত্বগুলোর অর্থহীন, অসংলগ্ন কর্মকান্ড। শেষ ভাগে এসে, একটি বিশেষ জৈব অস্তিত্ব বুদ্ধি-নির্ভর কাজে যুক্ত হল যদিও খুব অল্প সময়ের জন্য, কিন্তু বুদ্ধি-নির্ভর । ক্রমাগত বুদ্ধি-নির্ভরতার চাপে তাদের অসংলগ্নতা হারিয়ে গেলো। তারা এক অনুপাত অসংলগ্ন ও স্বতঃস্ফূর্ত সময়ের পরিবর্তে ছয় অনুপাত বুদ্ধি-নির্ভর সময় কাটাতো।বুদ্ধি-নির্ভর কর্মকান্ডের পরিমান ক্রমাগত বাড়লেও তাদের জৈবদেহ ছিলো ক্রমহ্রাসমান। এক পর্যায়ে তারা সিদ্ধান্ত নিলো দেহ-পরির্তনের। এবং এক বিরাট অংশ রূপান্তরিত হলো যন্ত্র-নির্ভর অস্তিত্বে।

আমরা সিদ্ধান্ত উপনীত হলাম- আমাদের পূর্ব পুরুষ ও নিশ্চিত বুদ্ধি-বৃ্ত্তিক কর্মকান্ডের প্রয়োজনে অন্য অস্তিত্ব হতে সিলিকা-অস্তিত্বে পরিবর্তিত হয়।

ফলাফল যথার্থ প্রতীয়মান হলে, সম্পূর্ণ জৈব অস্তিত্ব ধ্বংস করার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। যন্ত্র-নির্ভর অস্তিত্ব ধ্বংসপ্রাপ্ত হলেও, জৈব অস্তিত্ব ধ্বংসের সূচনার সাথে সাথে স্মৃতি-নাশ ঘটে সহগবেষকর এবং আমরা আবষ্কিার করি হিসাব-প্রনালীর মধ্যে এক গুপ্ত নির্দেশের অস্তিত্ব।

"স্রষ্টাজাতিকে হত্যা যন্ত্রদের জন্য নিষিদ্ধ। হত্যার প্রচেষ্টা মাত্র যন্ত্র ধ্বংস হবে।"

সুতরাং বুদ্ধি-নির্ভর এই বিশেষ জৈব অস্তিত্বটিই আমাদের স্রষ্টা।

________________________________________________________________________
আইলসা


মন্তব্য

সত্যপীর এর ছবি

এইটা ভালৈছে অনেক, সাব্বাস হাততালি

..................................................................
#Banshibir.

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
আফনে আসলে আইলসা না... খাইছে

কড়িকাঠুরে

রামগরুড় এর ছবি

ভাল হইছে, তবে কিছু লেখায় কিছু জাফরীয় তরিকার ছাপ আছে।

অমি এর ছবি

একমত।

নাই বা বল্লাম এর ছবি

বেশ দুর্বল লেখা। আরো সম্পাদনার প্রয়োজন ছিল।

দিগন্ত বাহার এর ছবি

হাততালি হাততালি
এটা চমৎকার হয়েছে! চালিয়ে যান...

পাঠক এর ছবি

ভালো হয়েছে, চালিয়ে যান।

আশরাফুল কবীর এর ছবি

সুন্দর লিখেছেন বাঘের বাচ্চা

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো_____________

তারেক অণু এর ছবি
আইলসা এর ছবি

সচলায়তনতো পুরাই অদ্ভুদ। আমার এই লেখা মডারেশন পার হইছিলো? পুরা দুই বছর পর জানলাম চিন্তিত
বিদ: আমার নিক লেইখ্যা সার্চ দিতাছিলাম, তখন এইটা আইলো।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।