কল্পদৃশ্য-১

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: শুক্র, ০৮/১১/২০১৩ - ২:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

বাসে উঠেই বারি সাহেবের মনে হলো বিরাট ভুল হয়ে গেছে। আগেরবারই মনে মনে তওবা করেছিলেন নতুন বড় বড় বাসগুলোতে উঠবেননা, এইগুলার ছাদ উঁচা, ধরে দাড়ানোর রডও উঁচা। মনে হয় বাসের মালিকদের ধারনা দেশের সব মানুষ একরাতেই ছয় ফুটি হয়ে গেছে!

বারি সাহেবের হাইট টেনেটুনে চারফিট দশ। মাথার চুলগুলো এখনো পড়ে যায়নি বলে রক্ষে। একটু ফুলিয়ে রাখলে পাঁচফুটে পৌছে যায় বলে তার ধারণা। বারি সাহেবে স্ত্রীর ধারণা চুল ফুলিয়ে রাখলে তাকে দেখতে মুখপোড়া হনুমানের মত দেখায়। তবে বারি সাহেব স্ত্রীর কথায় বিশেষ পাত্তা দেননা। স্ত্রীলোকের চোখে চেহারসুরত ছাড়া আর কিছু পড়েনা।

আজ বাসে উঠেই বিপদে পড়লেন, সিট খালি নাই, হাত উচু করে রড ধরতেই বাঁদরঝোলা হয়ে গেলেন। কোনমতে হাত ছেড়ে দিয়ে পাশের সিট খাঁমচে ধরলেন। সাথে সাথেই সিটে বসা মহিলা বিকট চিৎকার দিয়ে উঠলো। বারি সাহেব সিটের সাথে মহিলার সিল্কি চুলও খাঁমচে ধরেছিলেন। মহিলা প্রায় খেঁকিয়ে উঠলো, “সরে দাড়ান”

হকচকিয়ে হাত সরিয়ে নিতেই দেখলেন হাতের সাথে কয়েকটা চুলও লেগে আছে। চট করে হাত পেছনে নিয়ে নিলেন বারি সাহেব, মিনমিনে স্বরে স্যরি বলতে যেয়ে পাশের প্যাসেঞ্জারের পা মাড়িয়ে দিলেন।

-“ঐ মিয়া, চউখ খাইসেন নি?”
-“স্যরি ভাই দেখিনি”
-“সিট খাবলায়তাছেন কেন, রড ধইরা খাড়ান”
-“ইয়ে, হ্যা”
-“চাচা রড বেশি উঁচা হইসে? একটা দড়ি ঝুলায় দি?” হলুদ মাড়ি বের করে টিটকারি মারে পাশের প্যাসেঞ্জার। দু একজন মিচকা হাসি দিয়ে সমর্থন যোগায়।

বারি সাহেবের ফোলা চুলের নিচে চাঁদি চিড়বিড় করে উঠে। মনে মনে হলুদ মাড়িওয়ালাকে কষে দুইটা থাপ্পড় মেরে জানালা দিয়ে বাইরে দেখার চেষ্টা করেন।

এত বড় বাস কই জোরে চলবি, নাতো হেঁচকি দিয়ে দিয়ে এগুচ্ছে। প্রতিবার হেঁচকিতে বারি সাহেব তাল সামলাতে না পেরে সামনে হেলে পড়ছেন। পা দুইটা ফাঁকা করে জায়গা নিয়ে দাঁড়ালে তাল সামলানো যাবে, এই ভেবে দুই পা দুই দিকে দিতেই ফড়াৎ করে শব্দ হলো। বারি সাহেব স্পষ্ট বুঝলেন, দেড় বছর আগে মতিঝিলের ফুটপাথে কেনা প্যান্ট জায়গামত ফেসে গেছে!

ঈমান নূর
https://www.facebook.com/dr.imanns


মন্তব্য

রাজীব মাহমুদ এর ছবি

পড়ে মজা লাগলো। কিন্তু এটাও মনে হল যে আপনি হুমায়ূন আহমেদ দ্বারা চেতনে বা অবচেতনে দারুণভাবে প্রভাবিত।

ঈমান নূর এর ছবি

কথা সত্য, চেতনেই প্রভাবিত

অতিথি লেখক এর ছবি

চালিয়ে যান।।।।

ঈমান নূর এর ছবি

ঠিক আছে, চালিয়ে যাব হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

কিছু বানান ভুল চোখে পড়লো, অনেক শব্দে একটা বর্ণ মিসিং আছে যেমন বারি সাহেবের র মিসিং। যত্ন করে সময় নিয়ে লিখলে ভালো করবেন, লিখতে থাকুন।

শব্দ পথিক
নভেম্বর ৮, ২০১৩

ঈমান নূর এর ছবি

ধন্যবাদ
-------------------
ঈমান নূর

এবিএম এর ছবি

অণুগল্প হিসেবে ভালোই লিখলেন। মজা পেলাম।

---এবিএম।

ঈমান নূর এর ছবি

ধন্যবাদ

-------------------
ঈমান নূর

অতিথি লেখক এর ছবি

হা হা হা
ভালো লাগলো, চরম।

-এস এম নিয়াজ মাওলা

ঈমান নূর এর ছবি

হাসি ধন্যবাদ

-------------------
ঈমান নূর

অতিথি লেখক এর ছবি

চলুক
ভালো থাকুন।

-----------------------
কামরুজ্জামান পলাশ

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ
-----------------------------------------------------------
ঈমান নূর
https://www.facebook.com/dr.imanns

প্রোফেসর হিজিবিজবিজ এর ছবি

অণু গল্প হিসেবে শেষ করেছেন, কিন্তু গল্পটার শুরু হয়েছে একটা প্রতিশ্রুতি দিয়ে। তাই গল্পটা শেষ করে মনে হচ্ছে চলবে জাতীয় কিছু আছে নাকি? আসলে এটা গল্পের শুরু গল্পের শুরু মনে হচ্ছে।

আপনার ভাষা সহজ, পড়ে মজা আছে। গল্পটা চলুক না?

____________________________

অতিথি লেখক এর ছবি

আসলে ওভাবে বড় কিছু লেখার চিন্তা করে লিখিনি, মাঝে মাঝে কিছু দৃশ্য কল্পনা করি, দৃশগুলো খাপছাড়া, তাই লেখে ফেলার প্রচেষ্টা, অনেকগুলো দৃশ্যনিয়ে একবারে হয়তো একটা মালা গাঁথবো।
পড়ার জন্য ধন্যবাদ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।