যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার- আইজ্যাক আসিমভ (পর্ব ২)

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: মঙ্গল, ১৩/০৫/২০১৪ - ১:৫৯পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

প্রথম পর্বঃ যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার- আইজ্যাক আসিমভ

[আমার অন্যতম প্রিয় লেখক আইজ্যাক আসিমভ। তার 'হাঊ ডিড উই ফাইন্ড আউট' সিরিজের 'যেভাবে আমরা জানলাম পৃথিবী গোলাকার' বইটি অনুবাদের একটি প্রচেষ্টা নিলাম।তিন পর্বে সমাপ্ত করার আশা রাখি।]

দূরে বিলীন হওয়া জাহাজের গল্প

অ্যানাক্সিম্যান্ডারের তত্ত্ব কিছু প্রশ্নের জন্ম দেয় আমাদের মধ্যে।

প্রথমত, যদি পৃথিবী সিলিন্ডারের মতই হয়ে থাকে, তবে দেখতে কেন সমতল মনে হয়?

এটি অবশ্য বেশ সহজ প্রশ্ন। পৃথিবী এত বড় আর আমরা এতো ছোট যে আমরা শুধু পৃথিবীর ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র অংশই দেখি, এবং সেই অংশে সিলিন্ডারের বক্রতা এত ক্ষুদ্র যে আমাদের কাছে সমতল মনে হয়।

ধরুন, একটা বেলুন আছে আপনার কাছে যাকে আপনি মোটামুটি কয়েক ফিট পর্যন্ত ফোলাতে পারেন। যদি সেই বেলুনে আপনি একটা মার্কার দিয়ে ছোট্ট একটা বৃত্ত আকেন, সেই বৃত্তটি কি সমতল মনে হবে না? যদিও বৃত্তটি কিন্তু বেলুনের অংশ- যা সমতল নয়।
তবে দ্বিতীয় প্রশ্নটা একটু কঠিন। যখন আমরা উত্তরে বা দক্ষিণে যাই, তখন কেন পাহাড় থেকে নিচে নামার মত অনুভূতি আমাদের মাঝে তৈরি হয় না? আমরা কেন পিছলে পড়ে যাই না?

হয়ত আপনি ভাবতে পারেন স্থলভাগ এতই অমসৃণ যে তার ঘর্ষণ বলের প্রভাবে আমরা পিছলে যাই না। আচ্ছা, তা না হয় মানা গেল, কিন্তু সাগরে নামলে? তখন কী হবে? তখন কী হবে যখন আপনি জাহাজে করে উত্তর বা দক্ষিণে যাবেন? জাহাজ কেন তখন পিছলে যায় না? সবচেয়ে বড় ব্যাপার হল, সাগরের পানি বা কেন পৃথিবী থেকে উপচে পড়ে না?

অ্যানাক্সিম্যান্ডারের কাছে এর কোন উত্তর ছিল না। আকাশে তারাদের অবস্থান দেখে এর চেয়ে বেশি কিছু বলা সম্ভব ছিল না।
আরও একটি প্রশ্ন, কেন পৃথিবী শুধুমাত্র উত্তর দক্ষিণ বরাবরই বাঁকা? যদি আমরা পূর্ব থেকে পশ্চিমে যাই? তখন কি তারাদের অবস্থান পরিবর্তিত হয় না? আগের মত তখনো কি তারাগুলো পশ্চিমে ঢাকা পড়ে না যখন আমরা পূর্বে যাই? তারাগুলো কি পূর্বে ঢাকা পড়ে না যখন আমরা পশ্চিমে রওনা হই?

এটার উত্তর দেয়া আসলে কঠিন। যদি আকাশ পুব থেকে পশ্চিমে না ঘুরত, তখন হয়ত বলা যেত তারাগুলো আসলে উত্তর-দক্ষিণ বরাবর যে লুকোচুরি খেলে, পূর্ব পশ্চিম বরাবরও তা খেলে কিনা। কিন্তু আকাশ কখনো স্থির হয় না। তাই এর উত্তর দেয়া আসলে সম্ভব না।
কিন্তু তার মানে এই না যে এই মুহূর্তে কোন প্রমাণ সামনে না থাকায় আমরা এখনি একটি সিদ্ধান্তে চলে আসব। কোন বিষয়ে নিশ্চিত হতে হলে আপনার কাছে প্রমাণ থাকতে হবে।

হয়ত এই বিষয়ে অন্য কোনভাবে, অন্য কোন তথ্য আমাদের কাজে লাগতে পারে। হয়ত তা এমন কিছু যা আকাশের সাথে সম্পর্কিত না, এবং আকাশের ঘূর্ণনের সাথেও যার সম্পর্ক নেই।

যে তথ্য আমরা চাচ্ছি, তা হয়ত এমন কিছুর মধ্যে পাওয়া যাবে যা আকাশের সাথে সম্পর্কিত না।

যদি পৃথিবী সমতল হত, তাহলে একটা জাহাজ যত দূরে যাবে তত ছোট হতে থাকবে, শেষে একটা বিন্দুতে পরিণত হবে এবং একসময় আর দেখা যাবে না তাকে।
তবে তা ঘটে না। দূরে যেতে থাকলে একটা নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পুরো জাহাজটাই দেখতে পাওয়া যায়। জাহাজের উপরের পাল আর নিচের কাঠামো দুটোই দেখা যায়। কিন্তু একটা দূরত্ব অতিক্রম করার পর জাহাজের কাঠামোটা আর দেখা যায় না, তবে পাল তখনো দেখতে পাওয়া যায়। মনে হয় পানি জাহাজের উপরে উঠে এসেছে আর জাহাজটা হয়ত ডুবতে বসেছে। একসময় মনে হয় পুরো জাহাজটাই ডুবে যাচ্ছে পালসহ, তখন শুধু পালের উপরের প্রান্তটাই দেখতে পাওয়া যায়। এর কিছু সময় পরে আর কিছুই দেখতে পাওয়া যায় না। যেন পুরো জাহাজটাই ডুবে গেছে।

কিন্তু আসলে তো তা হয় না। বেশিরভাগ জাহাজই দেখা যায় আবার নিরাপদে ফেরত আসে। আর কোন নাবিকই জাহাজের পাল পর্যন্ত পানি উঠে যাওয়ার গল্প বলেনি কাউকে কোনদিন।

তাহলে এর ব্যাখ্যা কী হতে পারে?

এর একটা ব্যাখ্যা দেয়া যায়। ধরুন, পৃথিবীর পৃষ্ঠটা আসলে সমতল না, বক্রাকার। সেই ক্ষেত্রে একটা জাহাজ যখন সেটার ওপর দিয়ে যাবে, পৃষ্ঠের বক্রতার কারণে তা ধীরে ধীরে তার নিচের অংশ থেকে অদৃশ্য হওয়া শুরু করবে। ব্যাপারটা আকাশের তারাদের মতই।
তবে এখানে একটা ব্যাপার আছে। আকাশের তারাগুলো অদৃশ্য হয় শুধুমাত্র উত্তর দক্ষিণ বরাবর। আকাশের ঘূর্ণনের কারণে পূর্ব পশ্চিম বরাবর কী হয়, তা আমরা নিশ্চিত না।

তবে জাহাজের ক্ষেত্রে, সেটি যেদিকেই যাক না কেন তা একইরকমভাবে অদৃশ্য হয়- নিচের কাঠামো থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে পালের উপর পর্যন্ত। এবং আরও মজার ব্যাপার হল, সবদিকেই অদৃশ্য হওয়ার সময়টুকু সমান, মানে একই বেগে অদৃশ্য হয়। যদি একটা জাহাজ দুই মাইল দূরে থাকে, তবে কাঠামোর একটা নির্দিষ্ট অংশ পর্যন্ত অদৃশ্য হয়, জাহাজটি যেদিকেই যাক না কেন। এ থেকে বোঝা যায় পৃথিবীর পৃষ্ঠটা হয়ত সবদিকেই বাঁকানো, এবং মোটামুটি একই পরিমাণে।

কিন্তু সবদিকে বাঁকানো পৃষ্ঠ, তাও আবার সমান পরিমাণে- এই রকম আকৃতি আছে মাত্র একটি। সেটি হল গোলক। আপনি যদি একটি ফুটবল নিয়ে সেটার উপর একটা বিন্দু আঁকেন আর সেই বিন্দু থেকে কয়েকটা রেখা যে কোন দিক বরাবর এঁকে ফেলেন, তখন দেখতে পাবেন সবগুলো রেখাই সমান পরিমাণ বাঁকানো।
জাহাজ যেভাবে সমুদ্রে অদৃশ্য হয়, তা থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া যায় পৃথিবী আসলে সিলিন্ডার না, বরং ফুটবলের মত গোল। সেই গোলকটা মোটামুটি বিশাল আকারের যেটা কিনা আবার তার চেয়েও বিশাল আকাশের কেন্দ্রে অবস্থান করছে। যেহেতু আমরা খুব ক্ষুদ্র একটা অংশ আমাদের চোখ দিয়ে দেখি, তাই আমাদের কাছে পৃথিবীর পিঠটা সমতল মনে হয়।

তবু একটা প্রশ্ন মনে থেকে যায়। আমরা কেন পিছলে পড়ে যাই না পিঠ বাঁকানো পৃথিবী থেকে? আর সমুদ্রের পানিই বা কেন পৃথিবী থেকে উপচে পড়ে না? অন্য কিছু কি আছে যা আমাদের এই প্রশ্নের উত্তর দিতে পারবে? পৃথিবীর আকার সম্পর্কে একশ ভাগ নিশ্চিত করতে পারবে?
আছে। তবে সে জন্য আমাদের ফেরত যেতে হবে আকাশে।

পৃথিবীর ছায়া

চাঁদের একটা মজার ব্যাপার হল এটি হঠাৎ হঠাৎ তার ঔজ্জ্বল্য হারায়। একটা কালো ছায়া একে ধীরে ধীরে গ্রাস করে যতক্ষণ পর্যন্ত না খুব মৃদু একটা লাল আভা দেখতে পাওয়া যায়। একে আমরা বলি চন্দ্রগ্রহণ। কালো ছায়াটা তারপরই সরে যেতে থাকে আর চাঁদ আবারও নিজের উজ্জলতা ফেরত পেতে থাকে।
আদিমকালে মানুষ চন্দ্রগ্রহণ হলে ভীত হয়ে পড়ত, আর বুঝি চাঁদ উঠবে না আকাশে- এই শেষ।

তবে আকাশ পর্যবেক্ষণ করত যারা, তারা এতে বিচলিত হতেন না। তারা জানতেন চাঁদ আবার তার উজ্জলতা ফিরে পাবে। তারা এও লক্ষ্য করেছিলেন চন্দ্রগ্রহণ হয় শুধুমাত্র পূর্ণিমার দিনগুলোতেই, অন্য কোন সময় নয়। এবং আরও মজার ব্যাপার হল এটি নির্দিষ্ট কিছু পূর্ণিমাতেই ঘটে।

প্রাচীন গ্রিকদের মধ্যে যারা আকাশ পর্যবেক্ষণ করতেন, তারা জানতেন পূর্ণিমার সময় পৃথিবীর এক পাশে থাকে সূর্য, অন্য পাশে থাকে চাঁদ। সূর্যের আলো চাঁদের ওপর পড়লে তা অত্যন্ত উজ্জ্বল আলো প্রতিফলন করে, সৃষ্টি হয় পূর্ণিমার গোল চাঁদের।
ধরুন, পৃথিবী চাঁদ আর সূর্যের পুরোপুরি মাঝখানে চলে এসেছে। তখন কী হবে? তখন সূর্যের আলো চাঁদে পড়ার আগে পৃথিবীর ওপর দিয়ে যাবে। ফলে চাঁদে কোন আলোই পৌঁছাবে না। ফলে চাঁদ আর দেখা যাবে না

একে অন্যভাবে বলা যেতে পারে যে পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়বে তখন। এই ছায়ার কারণে চাঁদ দেখা যায় না, সৃষ্টি হয় চন্দ্রগ্রহণ। এই ঘটনা ঘটে কয়েকটা পূর্ণিমা পর পর, যখন পৃথিবী সূর্য আর চাঁদের সাথে এক সরলরেখায় চলে আসে। (যেহেতু চাঁদের কক্ষপথ সামান্য হেলে আছে, সূর্যের সাথে পৃথিবীর কক্ষপথের তুলনায়, তাই এই ব্যাপারটি প্রতি পূর্ণিমায় ঘটে না।- অনুবাদক)

যখন পৃথিবীর ছায়া চাঁদের ওপর পড়ে, সেই ছায়া দেখেই পৃথিবীর আকার সম্বন্ধে ধারণা করা সম্ভব। প্রথমত, ছায়ার বাঁকা রেখাটি দেখে বৃত্তের কথাই মনে পড়ে আমাদের প্রথমে, যেন একটা বৃত্তের একটা অংশ সেটা।
গ্রিকরা চন্দ্রগ্রহণ খুব মনোযোগ দিয়ে পর্যবেক্ষণ করা শুরু করল। আকাশে চাঁদের অবস্থানের সাথে চন্দ্রগ্রহণের ছায়ার কোন পরিবর্তন হয় কিনা তা পর্যবেক্ষণ করা শুরু করলেন তারা।

তারা লক্ষ করলেন আকাশে চাঁদ যেখানেই থাকুক না কেন, ছায়ার আকৃতির কোন পরিবর্তন হয় না। চাঁদ আকাশের চূড়ায় থাকলে ছায়া যেরকম, দিগন্তে থাকলেও তা একই, আবার দিগন্ত আর চূড়ার মাঝামাঝি অবস্থানেও ছায়ার আকারের কোন পরিবর্তন নেই। আকাশের বিভিন্ন অবস্থানে সূর্যের আলো চাঁদের ওপর বিভিন্ন কোণে পড়ে, কিন্তু ছায়ার আকৃতির কোন পরিবর্তন হয় না, সেটি দেখতে তখনো বৃত্তেরই একটা অংশ বলে মনে হয়।

তার মানে পৃথিবী সম্ভাব্য সকল কোণেই বৃত্তাকার ছায়া সৃষ্টি করে। এরকম জ্যামিতিক গঠন হতে পারে মাত্র একটিই- গোলক।
মোটামুটি ৪৫০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে, গ্রিক দার্শনিক ফিলোলেয়াস নিশ্চিত হলেন পৃথিবী গোলাকার।

তিনি সব প্রমাণাদি একত্র করলেন। তারাগুলোর পরিবর্তন, জাহাজের অদৃশ্য হওয়ার প্রক্রিয়া আর চন্দ্রগ্রহণের সময় পৃথিবীর ছায়ার আকার পর্যবেক্ষণ করে তিনি এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন।

পৃথিবী একটা গোলাকার বস্তু যা তার চেয়ে বড় একটা গোলকের (আকাশ) কেন্দ্রে অবস্থান করে।

আমরা যতদূর জানি ফিলোলায়েসই প্রথম ব্যক্তিজিনি বলেছিলেন পৃথিবী গোল।

তারপরও একটা প্রশ্ন খচখচ করে মনের ভেতর। যদি পৃথিবী গোলই হয়ে থাকে, আর আমরা সবাই তার ওপর দাঁড়িয়ে আছি, আমরা কেন পিছলে পড়ে যাই না গোলকটার ওপর থেকে? আর সমুদ্রের পানিই বা কেন আটকে আছে, যেটার উপচে পড়ার কথা। বাতাসই বা কীভাবে আটকে আছে পৃথিবীর সাথে?

এটা নিয়ে চিন্তা করা যাক। সব বস্তুই নিচের দিকে পড়ে। আমরা পাহাড়ের চূড়া থেকে বা যে কোন জায়গা থেকেই কিছু ফেললে তা নিচের দিকে পড়ে।
কিন্তু অপেক্ষা করুন। “নিচে” বলতে আপনি কী বোঝাচ্ছেন? যদি পৃথিবী গোলক হয়ে থাকে, আর কোন বস্তু নিচের দিকে পড়ে, তার অর্থ সে পৃথিবীর কেন্দ্রের দিকে পড়ছে। (গোলকের পৃষ্ঠের ওপর যে কোন বিন্দুতে লম্ব আঁকলে তা কেন্দ্র দিয়ে যায়- অনুবাদক)

এটি আমাদের সকলের জন্য সত্য। আমরা যে যেখানেই দাঁড়িয়ে থাকি না কেন, গোলকের এক প্রান্তে থাকি বা বিপরীত প্রান্তে, অথবা এর মাঝামাঝি কোন অবস্থানে; আমরা প্রত্যেকেই পৃথিবীর কেন্দ্র দ্বারা আকৃষ্ট হচ্ছি। আমরা যেখানেই দাঁড়িয়ে থাকি না কেন, আমাদের পায়ের অবস্থান সবসময়ই পৃথিবীর কেন্দ্র বরাবর থাকছে। তাই আমাদের পা আমাদের কাছে “নিচে” আর মাথা “উপরে” মনে হয়।

খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০ সালে অ্যারিস্টটল এই ব্যাপারটি ব্যাখ্যা করেছিলেন। অ্যারিস্টটলের মতে, যেহেতু সবকিছু পৃথিবীর কেন্দ্র দ্বারা আকৃষ্ট হয়, তাই পৃথিবীকে গোলই হতে হবে।

সমুদ্র আর বায়ু কীভাবে গোলাকার পৃথিবীতে আছে, কেন উপচে পড়ে না বা পিছলে যায় না- তা এখন ব্যাখ্যা করা সম্ভব। কোন বস্তু যেখানেই থাকুক না কেন, তাকে “নিচে”, অর্থাৎ কেন্দ্রের দিকে সে টান অনুভব করে।

আহাদুল ইসলাম ফেসবুক


মন্তব্য

মেঘলা মানুষ এর ছবি

আপনি বেশ পরিশ্রম করে সিরিজটা লিখে যাচ্ছেন, সেজন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। কিছু ডিটেইল বোধ হয় ছেঁটে ফেলতে পারেন।

শুভেচ্ছা হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।