কড়ই বৃক্ষে থাকেন যিনি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: বিষ্যুদ, ২৪/০৭/২০১৪ - ৯:৩২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

হাটখোলা বাজার থেকে উত্তর দিকের মাটির সড়ক ধরে আধা ক্রোশ দূরে মন্ডল বাড়ি। সড়ক এখানে অনেকটা ইংরেজী বর্ণ 'এস' এর মতন এঁকে বেঁকে ছিলিমপুরের দিকে চলে গেছে। সড়কের বাঁকে বাঁশ ঝাড়। তার পাশেই বিশাল এক কড়ই গাছ। কড়ই গাছের পাতায় বাতাসের বাড়ি লেগে যখন ছর ছর শব্দ উঠে তখন মনে হয় এক জায়গায় দাঁড়িয়ে উদ্দাম নৃত্য করছে অজানা কোন দানব। দক্ষিণ-পশ্চিম দিক থেকে জোড়ে বাতাস বইছে। মেঘে ঢাকা অন্ধকার আকাশে এক ফোঁটা চাঁদও নেই। কড়ই গাছের মাথা থেকে কিছু একটা ঝুলে ছিল। দূরে মন্ডল বাড়ির লাইটের আলোয় আবছা দেখা গেল এক জোড়া অস্বাভাবিক লম্বা পা ফেলে বসে আছে কেউ।

বুঝলেন ভাই...ফ্যাক...ফ্যাক...ফ্যাক......

নুরুজ্জামানের প্রায় সমস্ত কথা শুরু হয় "বুঝলেন ভাই" দিয়ে । তার পর পরই থাকে ফ্যাস ফ্যাসে গলার বিশ্রী হাসি। হাসি শুনলে গা চিড়বিড় করে। ইচ্ছা করে নুরুজ্জামানে ভাঙ্গা চাপায় ঠাশ করে একটা চর কষিয়ে দেই। ভদ্র্যতা বশত দিতে পারিনা।

হারামজাদার কল্লা নাই। যারে কয় ধরেন কল্লা ছাড়া পিচাশ...ফ্যাক...ফ্যাক...ফ্যাক।
আমি বিরক্ত হয়ে বললাম,
একটু আগে বললা পিশাচ মানুষ চাবিয়ে খায়। যার কল্লা নাই সে আবার মানুষ চাবায় কেমনে?
লুঙ্গী হাটু পর্যন্ত তুলে মেঝেতে বসে ছিল নুরুজ্জামান। পানের বোঁটা দিয়ে কান চুলকাতে চুলকাতে সে বলল,
এইটাইতো কেরামতি ভাই। কইতে সরম করে। তারপরও কই...হের মুখ আছে, তয় মানুষের যেখানে মুখ থাকে সেইখানে না। হের মুখ দুই পাওয়ের ফাঁকে। আর যেইখানে কল্লা থাকনের কথা সেই খান দিয়া হাগা মুতা করে।
তুমি দেখছ?
জ্বি না ভাই। আমি দেখি নাই। তয় আমার বাপে দেখছিল। তার মুখে শুনা।

নুরুজ্জামানের বকর বকর শুনতে ইচ্ছা করছে না। বিরক্তি চাপিয়ে রেখে বললাম,
জোবায়দার মা'কে চা দিতে বল। র' চা। চিনি দেয়ার দরকার নাই।

জোবায়দার মা'কে চায়ে চিনি কম দিতে বললে রুহ আফজা বানিয়ে নিয়ে আসে। চায়ে চিনি দিতে না বললেও সে কিছু না কিছু চিনি অবশ্যই মেশাবে। আর নিজের মনে বক বক করবে,"চিনি ছাড়া এইডা কেমুন চা? এর থেইক্কা মুতের পানিও ভাল।" কান থেকে পানের বোটা বের করে সেটা দিয়ে এবার দাঁত খিলাল করতে লাগল নুরুজ্জামান। আমি যে তাকে একটা কাজ করতে বলেছি সে ব্যাপারে তেমন উৎসাহ দেখা গেল না। সে আবার শুরু করল,

বুঝলেন ভাই...ফ্যাক....ফ্যাক...ফ্যাক....

নাহ, এর সাথে এখুনি শক্ত না হলে মাথায় চেপে বসবে। নুরুজ্জামান বাড়ির কেয়ার টেকার। তার ভাব ভঙ্গী দেখলে মনে হতে পারে সে নিজেই বাড়ির মালিক। আমাকে তাঁর "স্যার" বলে সম্বোধন করা উচিত। কিন্তু সে তার ধার ধারে না। এর লতা তড় তড়িয়ে বেড়েছে। এখুনি ডগা ভেঙ্গে দেবার ব্যাবস্থা করতে হবে। আমি গম্ভীর গলায় বললাম,

নুরুজ্জামান...
জ্বী ভাই?
জোবায়েদার মা'কে চা দিতে বল।

কল্লা ছাড়া পিশাচের ব্যাপারে আমার আগ্রহ নিতান্ত কম বলে নুরুজ্জামান কিঞ্চিত আহত হল। শরীরে ব্যাপক অনিচ্ছার ভাব ফুটিয়ে উঠে গেল সে। রুম থেকে বেড়িয়ে যেতেই তাকে আবার ডাকলাম আমি,

নুরুজ্জামান?
জ্বী ভাই?
এখন থেকে আমাকে আর ভাই ডাকবে না। আমি তোমার ভাই না। পদবীতে আমার স্থান তোমার অনেক উপরে। আমাকে স্যার ডাকবে।
কিছুক্ষণ আমার দিকে টিকটিকির মতন তাকিয়ে থেকে সে বলল,
জ্বী, আইচ্ছা ভাই।
তুমি কি আমার সাথে ইয়ার্কি মারতেছ?
হারামজাদার সাহস দেখে অবাক হলাম। ইচ্ছা করলে এই মুহূর্তে ব্যাটার চাকুরী খেতে পারি। নুরুজ্জামান মাথা নিচু করে বলল,
জ্বী, না ছার। মিসটেক হইছে।
ঠিক আছে যাও। চা দিতে বল।

সব কিছুকে অতিরঞ্জিত করে বলা গ্রাম এলাকার মানুষদের স্বভাব। ক্ষুদ্রাতি ক্ষুদ্র বিষয়কে মহিমান্বিত করে এরা এক ধরণের আত্মতৃপ্তি অনুভব করে। নব্বই ভাগ মানুষের ঘরে যেখানে এখনও বিদ্যুৎ পৌছায়নি সেখানে রেডিও টেলিভিশন অনেক দূরের ব্যাপার। সব কিছু অতিরঞ্জিত করে আত্মতৃপ্তি ভোগ করাটাই গ্রামের মানুষের প্রধান বিনোদন। এদেরকে প্রশ্রয় দেয়া উচিত না। ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবার সময় নুরুজ্জামান বিড় বিড় করে বলল,
হারামজাদা! বেশি সাহস! তোর সাহস আমি গুয়া দিয়া বাইর করুম।

নুরুজ্জামানের সাহস দেখে আমি থ মেরে গেলাম।

রাতে খাওয়ার পর কিছুক্ষণ হাটাহাটি করা আমার অভ্যাস। অন্যদের ব্যাপারে জানি না, কিন্তু আমার ভাল লাগে। হাটাহাটির পর পেট হালকা লাগে। রাতে ভাল ঘুম হয়। এমন এক অজ পাড়া গাঁয়ে এসেছি যেখানে সন্ধ্যার পর পরই লোকজন খেয়ে দেয়ে ঘুমিয়ে পড়ে। খুব কম বাড়িতেই বিদ্যুৎ আছে। রাস্তা ঘাট সব থাকে অন্ধকারে তলিয়ে। প্রহরে প্রহরে শেয়াল ডাকে। বাঁশ ঝাড় থেকে ভেসে আসে অদ্ভুত সব শব্দ। একবার শুনলাম "নিমমম...নিমমম" করে কি যেন ডাকছে। জোবায়দার মা'কে জিজ্ঞেস করলাম। জোবায়্দার মা বলল,
এইডা হইল গিয়া নিম পক্ষী।
কি পক্ষী? অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম। এই নামের কোন পাখীর নাম আগে শুনিনি। জোবায়দার মা আবার বলল,
নিম পক্ষী। বাঁশ ঝাড়ের মইদ্দে এই পক্ষী থাহে। যে বাইত্তে এই পক্ষী নিম নিম কইয়া কু ডাক ডাকে সে বাড়ির কেউ না কেউ মরে। জান নিওনের লাইগগা হারামজাদা খালি নিম নিম করে।
বোঝা গেল জোবায়দার মা বিশিষ্ট নিম পক্ষী বিশারদ। কোথায় কোন বাড়িতে নিম পাখি ডাকা ডাকি করার পর কে মারা গেছে তার বৃত্তান্ত হিসাব সে আমাকে দিতে লাগল। আমি তাকে মাঝ পথে থামিয়ে দিয়ে বললাম,
জোবায়দার মা?
জ্বী ভাই?
নিম পক্ষীর কাহিনী পরে শুনব। বালতিতে পানি দাও। খাওয়ার আগে আমি গোসল করব।

রাতে খবার পর হাটাহাটি না করলে আমার পেটে গ্যাস হয়। হাটাটা তাই খুব জরুরী। এই ঘোর অন্ধকারে হাটতে বের হতে অসস্থি লাগছিল। নুরুজ্জামানকে সাথে নেবার প্রশ্নই আসে না। সন্ধ্যায় যে ধৃষ্টতা সে দেখিয়েছে তার শাস্তির ব্যাবস্থা খুব দ্রুত করতে হবে। ঢাকায় ফিরে গিয়ে সবার আগে যে কাজটি করব সেটা হল মন্ডল সাহেবকে রিপোর্ট করে তার চাকুরী খাবার ব্যাবস্থা করব। মন্ডল সাহেবের ম্যানাজার হিসাবে নুরুজ্জামানকে এখুনি বিদায় করে দিতে পারি, কিন্তু কোন এক অজানা কারণে মন্ডল সাহেব তাকে খুবই মহাব্বত করেন। দেশের বাড়ির বিস্তর জমি দেখা শোনা করার জন্য নুরুজ্জামানকে নিয়োগ দেয়া হয়েছিল। কাজটা সে দক্ষতার সাথেই করে, কিন্তু ব্যাটা চূড়ান্ত রকমের বেয়াদব।

একা একাই হাটতে বের হলাম। বাইরে ঝির ঝির করে বাতাস দিচ্ছে। আজকে গরম একটু কম। আরামে শরীর জুড়িয়ে যাচ্ছে। টর্চ নিয়ে বের হয়েছি। আলো ফেলতে ফেলতে রাস্তায় ঊঠে এলাম। কড়ই গাছের পাশে আসতেই গাছের শরীর বেয়ে সর সর করে কি যেন উপরের দিকে ঊঠে গেল। আলো ফেলে কিছু দেখতে পেলাম না। আমি আবার হাটা ধরলাম। দশ কদম যেতে না যেতেই সড়কের পাশে ঝোপের ভেতর থেকে শব্দ আসতে লাগল। মনে হচ্ছে ঝোপের পাশে বসে আছে কেও। কিন্তু ঘন ঝোপের কারণে ঠিক মত দেখা যাচ্ছে না। গলার স্বর যথা সম্ভব স্বাভাবিক রেখে জিজ্ঞেশ করলাম,
কে?
কোন উত্তর পেলাম না। এবার জোর গলায় জিজ্ঞেশ করলাম,
কে ওখানে? কথা বলে না কেন?
ঝোপের পাশ থেকে উঠে দাঁড়াল কেউ। আমি আলো ফেলতেই লোকটা বলল,
ভাই...ছরি... ছার আমি নুরুজ্জামান।
এখানে কি কর?
কিছু না। গতরে হাওয়া লাগাই।
ঘুমাও না?
ঘুম আসে না ছার। আমার ঘুমের সমস্যা আছে।
ওহ আচ্ছা। ঝোপের মধ্যে বসে আছ, সাপ খোপ কামড়াতে পারে।
আমারে সাপ খোপ কামড়াইব না। তাবিজ আছে।
আমি বললাম, ওহ আচ্ছা। ঠিক আছে। হাওয়া লাগাও।

আমি উত্তর দিকে হাটা ধরলাম। হালট পাড় পর্যন্ত যাব। যাওয়া-আসা দশ মিনিটের পথ। রাতের জন্য যথেষ্ঠ হাটা হাটি। ফিরতি পথে নুরুজ্জামানকে দেখালাম না। কড়ই গাছটা পার হবার সময় আবার ছর ছর করে শব্দ উঠল। আলো ফেললাম। এবারও কিছু দেখলাম না।

ছার আমারে চিনবেন না। আমার নাম জমিরুল। মন্ডল সাব আমার দূর সম্পর্কের কাক্কা হয়।

জমিরুল নামের লোকটার দিকে ভাল করে তাকালাম। বয়স ত্রিশের বেশি হবে না, কিন্তু মাথার বেশির ভাগ চুলই পাকা বলে অনেক বয়স্ক লাগে। সকালে বাড়ির ছাদে বসে চা খাচ্ছিলাম। এমন সময় এসে হাজির হয়েছে। বললাম,
তা জমিরুল সাহেব, আপনার জন্য কি করতে পারি?
ছার আপনের লগে একটু কথা আছিল।
বলেন কি কথা?
জমিরুল কাচুমাচু করে বলল, একটু পেরাইভেটে কইতে পারলে ভাল হইত।
বলেন, এখানেই বলেন। আমি না ডাকলে আর কেও আসবেনা।
জমিরুল এবার নড়ে চড়ে বসে বলল,
ছার, আমাগো গেরামে অনেক গরীব মানুষ আছে। এরা ধরেন কামের জন্য হা কইরা বইসা থাকে। কিন্তু মন্ডল সাবের জমির ধান কাটনের জন্য কামলা আহে অন্য গেরাম থেইক্কা।
জিজ্ঞেশ করলাম,
কেন? আমিতো জানতাম নুররুজ্জামান সব লোকাল কামলা নিয়োগ দেয়।
ছার, কইতে খারাপ লাগে। তারপরও কই। নুরুজ্জামান কমিশন খাইয়া অন্য গেরাম থেইক্কা কামলা আনে। ধরেন দিনে একশ টাকার বায়না করে কিন্তু সেইখান থেইকা দশ টাকা তারে দিতে হয়।
বলেন কি?
হ স্যার। হারামজাদা খুব চালু। আরেকটা কথা স্যার...
বলেন।
হারামজাদায় গেরাম ছড়াইছে যে কাক্কার বাড়ির ছেমায় যে কড়ই গাছ আছে হেই গাছে নাকি রাইতের বেলায় কল্লা কাটা এক পিচাশ বইয়া থাকে।
আমি শুনেছি পিশাচের কথা। নুরুজ্জামান বলেছে।
হারামাজাদায় তাইলে এর মইদ্দে আপনেরে ডর খাওয়াইয়া ফেলছে।
বললাম, আমি এখনো ডর খাইনি। আমি এত সহজে ডর খাওয়ার পাবলিক না।
জমিরুল বলল, ডর খান নাই ভাল কথা। তয় ডর খাইবেন। সময় হইলেই খাইবেন। আপনের আগে যে ম্যানাজার ছিল সেও ডর খাইত না। পরে এক দিন এমন ডর খাওয়াই খাইল হেই যে গেছে আর ফেরত আহে নাই। হুনছি মন্ডল কাক্কার কাম ছাইড়া দিয়া ভাগছে।
বললাম, সাইফুল হাসানের কথা বলতেছেন?
জমিরুল মাথা দুলিয়ে বলল, হ স্যার।
আগের ম্যানাজারের নাম শুনেছি। কিন্তু সে যে ভুতের ভয়ে পালিয়েছে সেটা জানা ছিল না। জমিরুল কে বললাম, ঠিক আছে। এই ব্যাপারে আমি আরো খোঁজ নেব। নুরুজ্জামানকেও জিজ্ঞেশ করব। কথা যদি সত্য হয় তার শাস্তি সে পাবে।
জমিরুল বলল, আমাগো দিকে একটু খেয়াল রাইখেন স্যার।
জমিরুল চলে যেতেই জোবায়দার মা'কে ডাকলাম,
জোবায়দা'র মা?
জ্বী ভাই?
নুরুজ্জামান কই?
ভাই হেয় লালহারা গেছে। বইনের বাইত্তে।
জিজ্ঞেশ করলাম, আমাকে কিছু বলে নাই কেন?
জোবায়দার মা বলল, কেমনে কমু? হারামীর কখন কি মনে কয় হেয় নিজেও জানে না।
হুমম। শোন তোমাকে যা জিজ্ঞেশ করব পরিষ্কার উত্তর দিবা।
কন ভাই।
নুরুজ্জামান লোক কেমন?
ভাই হেয় লোক খারাপ না। তয় একটু পাগলা কিসিমের।
কেন? পাগলা কিসিমের কেন?
হেয় রাইত বিরাইতে ঝোপের মইদ্দে বইয়া থাকে।
হুমম।
আর ভাই এক খান কথা।
বল।
হের নজর ভালা না।
মানে?
ভাই কইতে সরম করে।
বেশি সরম করলে বলার দরকার নাই।
না, না, ভাই। আপনের জানন দরকার।
তাহলে বল।
ভাই একদিন রাইতে উঠছি, হাগা চাপছিল। বদনা লইয়া যেই বাইর হইছি হেমনি পেছন থেইক্কা জাবরাইয়া ধরছিল।
আমি আঁতকে উঠে বললাম, কি বল?
হ ভাই। আমি চিক্কুর দিয়া ঘুইরা তাকাইছি, দেখি হারামজাদা নাই।
নাই মানে?
চিক্কুর শুইন্না দৌড় লাগাইছে।
ওইটা যে নুরুজ্জামান ছিল তুমি পরিষ্কার দেখেছ?
পেছন থেইক্কা দেখছি। আর এই বাড়িত আমি আর হেয় ছাড়া আর কেও থাহে না।
হুমম।
এর পর থেইক্কা রাইতে আর বাইরে যাই না গো ভাই। সন্ধ্যা হইলে খিরকি দিয়া হুইয়া থাকি।
হুমম। আচ্ছা ঠিক আছে যাও। আমি নুরুজ্জামানকে জিজ্ঞেশ করব।

জোবায়দার মা'কে নুরুজ্জামান পেছন থেকে জাপটে ধরেছে কথাটা বিশ্বাস যোগ্য নয়। জোবায়দা'র মা'র স্বাস্থ্য মাসাল্লাহ! হিমালয় পর্বত মালার কাছা কাছি। তার অমাবশ্যার রাতের মত কালো চেহারায় চিকেন পক্সের দাগে ভরতি। এমন চেহারা দেখলে কল্লা বিহীন পিশাচও ভয়ে ছিটকে উঠার কথা। জোবায়দা'র মা'র স্বামী যক্ষায় মারা যাবার পর সে আর বিয়ে করেনি কিম্বা কে যানে হয়ত বিয়ে হয়নি। এরকম পাত্রীর বাজার একটু পড়তি হবে সেটাই স্বাভাবিক।

এই গ্রামে আমি আগেও দুবার এসেছিলাম, কিন্তু কখনও রাতে থাকা হয়নি। সন্ধ্যায় ঢাকায় ফিরে গেছি। এবার চার-পাঁচ দিন থাকব বলে নিয়ত করে এসেছি। ঢাকায় প্রচন্ড কাজের চাপে হাঁপিয়ে উঠেছিলাম। কংক্রিটের জংগলে দম বন্ধ হয়ে আসছিল। মন্ডল সাহেব নিজে থেকেই জিজ্ঞেশ করলেন,
সোহেল তোমাকে এমন লাগছে কেন?
কেমন লাগছে স্যার?
কেমন যেন চিমশা মেরে গেছ। কোন ঝামেলা?
না স্যার। ঝামেলা না। রাতে ঠিক মত ঘুম হচ্ছে না।
আমি জানি তোমার উপর অনেক প্রেসার দিয়ে রেখেছি। শোন, অফ নাও কিছু দিন।
আমি বললাম, না স্যার ছুটি লাগবে না। আমার যখন লাগবে তখন আমি নিজেই চেয়ে ছুটি নেব। আপনি আমাকে নিয়ে চিন্তা করবেন না।
মন্ডল সাহেব বললেন, তাহলে এক কাজ কর। টাংগাইল চলে যাও। গ্রামে গিয়ে চুপ চাপ থেকে আস কিছু দিন। ওখানে গিয়ে তোমাকে কিছুই করতে হবে না। শুয়ে বসে কাটাবা। রেস্ট নিবা। তোমাকে দেখে জমি দেখা শোনা করার জন্য যাদের রেখেছি পেরেশান হয়ে দৌড়া দৌড়ি করবে। এক ঢিলে দুই পাখি মারা আর কি।

আমি আমতা আমতা করে রাজি হয়ে গিয়েছিলাম। এখানে এসে এক দিক দিয়ে ভালই হয়েছে। খাবার দাবার ফ্রেশ পাচ্ছি। বাড়ির গাছের আম খেলাম। ফরমালিন ছাড়া। রাতের ঘুমও ভাল হচ্ছে। ঢাকার বিষাক্ত পরিবেশে থেকে শরীর দূষিত হয়ে যাচ্ছিল। দুই দিনেই শরীরের আমশি ছেড়ে যাচ্ছে। টের পাচ্ছি।

গ্রামটা সুন্দর। ছিম ছাম। আসলে বাংলাদেশের সব গ্রামই ছিম ছিম। পরিষ্কার। নোংরা হল শহর। বাংলাদেশে একটা গ্রামও পাওয়া যাবে না যেখানে ডাস্টবিনে পূতি গন্ধময় নোংরা ছড়িয়ে আছে? গ্রামে ডাস্টবিন নেই। ময়লা আবর্জনাও নেই। যেখানে যত বেশি ডাস্টবিন সেখানে তত বেশি ময়লা।

মন্ডল সাহেবের গ্রামের বাড়িটা দোতলা। ছাদে সুন্দর বসার জায়গা আছে। ছাউনি দেয়া। ইজি চেয়ারও পাতা আছে। চেয়ারে বসে পশ্চিম মুখী তাকালে চোখে পড়ে ধান ক্ষেত- যত দূর দৃষ্টি যায়। এর মধ্য দিয়েই সাপের মত এঁকে বেঁকে গেছে একটা নদী। নাম তার এলনজানি। এলনজানি মানে কি কে জানে। নুরুজ্জামানকে জিজ্ঞেশ করতে হবে। বিকেলে ইজি চেয়ারে গা এলিয়ে দিয়ে আরাম করছিলাম। কখন ঘুমিয়ে পড়েছি জানি না।

যখন ঘুম ভাঙল তখন রাত হয়ে গিয়েছে। ঝিঁঝিঁ পোকার ডাকে কান পাতা দায়। বাঁশ ঝাড় থেকে কি যেন কক কক করে শব্দ করছে। চেয়ার ছেড়ে উঠতে যাব তখন চোখ পড়ল ছাদের ওয়ালের উপর বসে আছে কেউ। জিজ্ঞেশ করলাম,
কে ওখানে?
কোন উত্তর পেলাম না। আবার জিজ্ঞেশ করলাম, কে, কথা বলে না কেন?
দেয়ালের উপর থেকে এবার ছোট খাট একটা অবয়ব নেমে আসল। গুটি গুটি পায়ে আমার দিকে এগিয়ে এল। কাছে আসতেই দেখলাম বার-তের বছরের একটি মেয়ে। মাথায় ওড়না পেচানো। চোখ দুটো অস্বাভাবিক রকম বড় এবং শান্ত। জিজ্ঞেশ করলাম,
তুমি কে?
মেয়েটি কোন জবাব দিল না।
কথা বল না কেন? এত রাতে ছাদে এসে বসে আছ। ব্যাপার কি?
মেয়েটি ভাব লেশ হীন দৃষ্টি নিয়ে তাকিয়ে রইল। এবার রেগে গিয়ে বললাম,
ভাল বেয়াদবতো! বড়দের কথার উত্তর দিতে হয় বাবা মা শেখায় নাই?

মেয়েটি কথা বলার জন্য মুখ খুলতেই ছুড়ির ফলার মতন বিশাল তীক্ষ্ণ দাঁত বেড়িয়ে এল। আমি ছিটকে ঊঠে দাড়াতে গিয়ে বুঝতে পারলাম আমার শরীর প্যারালাইজড হয়ে গিয়েছে। নড়া চড়া করার মত এক রতি শক্তিও আমার গায়ে নেই। মেয়েটি হা করেই এত জোড়ে হিস হিসিয়ে উঠল যে কানে তালা লেগে কিছুক্ষনের জন্য চারদিক নিস্তব্ধ হয়ে গেল। আমি প্রাণ পণ চেষ্টা করতে লাগলাম চেয়ার ছেড়ে উঠে দাড়াতে। পারলাম না। মেয়েটির অবায়ব এবার আস্তে আস্তে বদলাতে লাগল। ধর থেকে টুপ করে মাথা খসে পড়ে বাম দিকে ঝুলে রইল। তারপর দেহের নীচের অংশ আস্তে আস্তে লম্বা হতে লাগল। নয়-দশ ফুট সোজা উপরের দিকে উঠে যাবার পর সে তার লম্বা হাত বাড়িয়ে আমার গলা চেপে ধরল। জ্বলন্ত উনুনও সম্ভত এর থেকে ঠান্ডা। আমি নিজের মাংস পোড়ার গন্ধ পেলাম। অসহ্য যন্ত্রণায় গলা ফাটিয়ে চিৎকার করতে লাগলাম, কিন্তু মুখ থেকে টু শব্দটিও বের হল না। আমার চোখ দুটো ব্যাটে পেটা টেনিস বলের মতন ছিটকে কোটর থেকে বেড়িয়ে আসতে চাইল। আমি জানি আর বড় জোড় দুই মিনিট। এর মধ্যেই আমার ভবলীলা সাঙ্গ হবে।

প্রচন্ড ঝাঁকি খেয়ে সম্বিত ফিরে পেলাম। দেখলাম জোবায়দার মা আমাকে ধরে সমানে ঝাকাচ্ছে আর চিৎকার করছে,
কি হইছে ভাইজান...কি হইছে...আপনে এমন করেন কেন?

আমি ভুতে বিশ্বাস করি না। ভুত-প্রেত বলে কিছু নেই। ভুত-প্রেত হল আমাদের মনের ভয়। যখন আমরা ভীতিকর জিনিশ ব্যাখ্যা করতে পারি না তখন তাকে আমরা ভুত বলে ডাকি। যারা বলে তারা নিজের চোখে ভুত দেখেছে তারা ভুল বলে। মানুষ ভুল জিনিশটাই নিজের চোখে সবচেয়ে ভাল দেখে। হুবহু একই জিনিশ একশ জনকে দেখালে একশ জন একশটা রকম বর্ণনা দেবে। যদিও জিনিশটা একশ জনেরই নিজেদের চোখে দেখা।

নুরুজ্জামান কল্লা কাটা পিশাচ আমার মাথার ভেতর ঢুকিয়ে দিয়েছে। তাই দুঃস্বপ্ন দেখেছি। এর বেশি কিছু নয়। তবে আমার গলায় ফোস্কা পড়ল কি করে সেটা চিন্তার বিষয়। পরিষ্কার মনে আছে আগুন গরম দুটি হাত আমার গলা চেপে ধরেছিল। আমার গলার চারপাশেও কালশিটে পড়ে গেছে। হতে পারে স্বপ্ন এত বাস্তব ছিল যে আমার অবচেতন মন যা ভেবেছে আমার শরীর ঠিক সেভাবেই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। সম্মোহিত কাওকে মিথ্যে সাজেশন দেয়ার মত।

বিকেলে হাটখোলা বাজারে গিয়েছিলাম। গলার চারপাশে পোড়া দাগ জ্বালা করছিল। বার্নল ক্রিম কিনে এনেছি। মাখব। যদি আরাম পাওয়া যায়। বাড়ি ফিরে এসে দেখলাম নুরুজ্জামান বোনের বাড়ি থেকে ফিরে এসেছে। জোবায়দা'র মা'র সাথে তাঁর কথার শব্দ শুনতে পেলাম। আমি ডাকলাম,
নুরুজ্জামান একটু আমার ঘরে আস।
আমি ঘরে যেয়ে বসতেই নুরুজ্জামান ঢুকল।
জ্বী ছার?
কই ছিলা দুই দিন?
বোইনের বাইত্তে গেছিলাম ছার।
বলে যাও নাই কেন?
কওয়ার টাইম পাই নাই ছার। বাজারে মিজানুরের সাথে দেখা হইছিল। মিজানুর আমার বোইনের বাড়ির পাশেই থাকে। কইল আমার বোনের অনেক অসুখ। খারাপ অবস্থা। তাই দেরি না কইরা চইলা গেছি।
হুমম। তোমার বোনের অবস্থা এখন কেমন?
অবস্থা ভাল না ছার। পেটে পাথর হইছে। অপারেশন করা লাগব।
অপারেশন করাও।
করামু ছার। মির্জাপুর হাসপাতালে ভর্তি করাইছি।
ভাল করেছ। নেক্সট টাইম কোথাও গেলে জানিয়ে যাবে। আমি আগামি পরশু ঢাকা ফিরে যাব। এর মধ্যে হিসাব যা আছে বুঝিয়ে দিবে।
জ্বী আইচ্ছা ছার।
আরেকটা কথা। তুমি নাকি অন্য গ্রামের কামলা নিয়োগ দিয়ে কমিশন খাও?
নুরুজ্জামান এক দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থেকে বলল,
কথাটা কে কইছে ছার? জমিরুল?
কে বলেছে সেটা বিষয় না। কথাটা কি সত্য?
পুরাই মিছা ছার। হারামজাদা জমিরুল গেরামের সব কামলারে এক কইরা কইছে খালুর জমির ধান কাটার লাইগা বেশি টাকা চাইতে। হের লাইগা অন্য গ্রামের থন কামলা আনছি। কারো থন কমিশনও খাই নাই। বিশ্বাস না হইলে কামলাগো নাম-ঠিকানা দিতাছি খোঁজ নিয়া দেখেন।
বুঝলাম। ঠিক আছে । যেতে পার এখন।
স্লামালাইকুম।
ওয়ালাইকুম আস সালাম।
নুরুজ্জামান চলে যাচ্ছিল। তাকে থামালাম।
নুরুজ্জামান?
নুরুজ্জামান ঘুরে বলল,
জ্বী ছার?
তুমি নাকি জোবায়দার মা'র গায়ে হাত দিয়েছ?
নুরুজ্জামান ফ্যাক ফ্যাক করে হেসে দিল।
কি যে কন ছার! আমার স্বাস্থ্য আর খালার স্বাস্থ্য দেখছেন? খালায় আমারে একটা চাপট দিলে আমার পেশাপ বাইর হইয়া যাইব।
নুরুজ্জামানের হাড় জিরজিরে শরীর। ব্যাপারটা আমার আগেই বোঝা উচিত ছিল। বোকার মত প্রশ্নটা করে এখন লজ্জা লাগছে।
বললাম, ঠিক আছে যাও।

আগামিকাল সকালে চলে যাব। জিনিশ পত্র গুছাচ্ছিলাম। সারাদিন নুরুজ্জামানকে দেখিনি। আজকে হিসাব বুঝিয়ে দিতে বলেছিলাম। নুরুজ্জামান দেয়নি। জোবায়দার মা'কে ডাকলাম।

নুরুজ্জামান কই জোবায়দা'র মা?
জানি না ভাই। হারাদিন দেহি নাই। কই গেছে জানি না ভাই।
ঠিক আছে। যাও তুমি।

নুরুজ্জামানের দুঃসাহস দেখে রাগে গা জ্বলে যাচ্ছে। বোঝাই যাচ্ছে আমাকে সে কেয়ার করে না। এর উপযুক্ত ব্যাবস্থা ঢাকায় পৌছেই করব।

রাতে খেয়ে হাটতে বের হলাম। আকাশে সুবিশাল চাঁদ। পূর্ণিমা রাত। চারদিকে প্রায় দিনের মত আলো। হাটতে হাটতে হালটের পারে চলে আসলাম। এলনজানি নদী থেকে একটা শাখা বের হয়ে পূব দিকে চলে গেছে। দেখতে বড় সর নালা'র মত। গ্রামের মানুষ একে হালট বলে ডাকে। ঝির ঝির করে আরামের বাতাস বইছে। হাটতে মন্দ লাগছে না। ইচ্ছা করছে আরও হাটি, কিন্তু সকাল সকাল উঠে ঢাকা রওয়ানা হতে হবে। আমি ঘুরে বাড়ির দিকে হাটা দিলাম।

কড়ই গাছের নীচে আসতে ফ্যাক ফ্যাক করে বিকট হাসির শব্দ এল। আমি চমকে উপরে তাকাতেই এক জোড়া অসম্ভব সরু রোমশ পা আমার গলা পেচিয়ে ধরে হড় হড় করে উপরে টেনে তুলতে লাগল। আমি দুই হাত দিয়ে প্রাণ পণ গাছ জড়িয়ে ধরে ঠেকানোর চেষ্টা করলাম। পারলাম না। দানবীয় শক্তি টেনে হিচড়ে আমাকে গাছের মগ ডালে তুলে ফেলল। হাত পা ছুলে কেটে রক্ত বের হয়ে গেল। চামড়ার উপর দিয়ে গরম রক্ত গড়িয়ে যাওয়া টের পেলাম। মাথা উচু করে তাকালাম। চাঁদের আলোয় পরিষ্কার দেখা গেল দুই পায়ের ফাঁকে টিয়া পাখির মতন বিশাল আকৃতির কুচ কুচে দুটি কালো ঠোঁট হা করে আছে। আসন্ন খাদ্যের আশায় ঠোট দুটো বাড়ি খেয়ে ঠক ঠক শব্দ করতে লাগল।

সোহেল লেহস


মন্তব্য

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ!

সোহেল লেহস

অতিথি লেখক এর ছবি

তারপর কি হল বোকা তুষার

অতিথি লেখক এর ছবি

তারপর কি হয়েছে জানি না ভাই, বাকিটা জানার জন্য কল্লা কাটা পিশাচের সাথে যোগাযোগ করেন। দেঁতো হাসি

সোহেল লেহস

অতিথি লেখক এর ছবি

গ্রামের গল্প আর বর্ণনা টুকু বেশ লেগেছে। কিন্তু ভুত?? ওরে বাবা !!

আমি ভুতে বিশ্বাস করিনা। দেঁতো হাসি

রীতু

'সেই যেখানে সারাজীবন বৃষ্টি পড়ে, বৃষ্টি পড়ে...
সেই যেখানে কেউ যায়না, কেউ যায় নি কোনদিনই...'

অতিথি লেখক এর ছবি

ধন্যবাদ!

আপনি যে কত টুকু ভুত বিশ্বাস করেন সেটা "ওরে বাবা" দিয়েই বুঝিয়ে দিয়েছেন হাসি

সোহেল লেহস

Sohel Lehos এর ছবি

ভুতে আমিও বিশ্বাস করি না, তবে ভুতের গল্প শুনলে ভয় পাই দেঁতো হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

হাততালি হাচলাভিনন্দন হাসি

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

Sohel Lehos এর ছবি

ধন্যবাদ সাক্ষী সত্যানন্দ!

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

এক লহমা এর ছবি

হাচলাভিনন্দন হাততালি

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

Sohel Lehos এর ছবি

ধন্যবাদ এক লহমা ভাই!

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

হাচলাভিনন্দন ও শুভেচ্ছা হাততালি

মাসুদ সজীব

Sohel Lehos এর ছবি

ধন্যবাদ মাসুদ সজীব! হাসি

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

দীনহিন এর ছবি

হাচলাভিনন্দন! হাততালি

.............................
তুমি কষে ধর হাল
আমি তুলে বাঁধি পাল

Sohel Lehos এর ছবি

ধন্যবাদ দীনহিন! হাচল হতে ৩ মাস লাগল, পূর্ণ সচল হতে কয় দিন লাগে ভাই? ৩ বছর? খাইছে

সোহেল লেহস
-------------------------------------------------------
এইটা কি লেখলেন ভাই! গল্পের ট্যুইস্ট দেইখা পেটে কেমন জানি একটু মোচড় দিল হাসি

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।