উজান

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ২৩/০২/২০১৫ - ৪:৩৪অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

এতক্ষণে একটু দম ফেলবার সময় পেল শাঁওলী। মা গো! কাল সেই সকাল থেকে শুরু করে আজ এই ঘণ্টাখানেক আগে অব্দি যা ঝড়টা গেল! প্রথমে তো হলুদ, তারপর এক এক করে আশির্বাদ, বিয়ে থেকে আজ সকালে বাসি বিয়ে। ইস! বিয়ে করে নাকি কেউ? এখন এই খালি ঘরটায় বিছানার উপর একটু হাত-পা ছড়িয়ে বসে ও। স্নান করে এসেছে মাত্র, ভালো লাগছে। মনে হচ্ছে একটা ডিগবাজি খেয়ে নেয় চুপ করে, কেউ নেই-কারও দেখে ফেলবার ভয় নেই। পরক্ষণেই হেসে ফেলে চিন্তাটা বাতিল করে দেয় শাঁওলী। ছোট আছে নাকি ও? রীতিমতো বিয়ে টিয়ে করে এই মুহূর্তে নব পরিণীতা-ডিগবাজি খাওয়া আর মানায় ওকে? আচ্ছা, ডিগবাজি না হোক, একটু গড়িয়ে তো নিতে পারে-যা ধকল গেল! বিছানার কোণা থেকে একটা বালিশ নিয়ে মাথার নিচে চালান করে শাঁওলী। নতুন সুতির শাড়ি গায়ের নিচে একটু খসখস করে, পাত্তা দিল না ও। ঘুমাতে পারলে বেশ হতো, ভাবে শাঁওলী, আবার বিকেলে তো সেই যাওয়ার ধকল।

“শাড়িটা মেলে দিয়ে এলাম বারান্দায়। একটু পরে তুলে আনব, ঐটাই তো পরতে হবে আবার যাওয়ার সময়”-দিদি কখন ঢুকেছে ঘরে, খেয়ালই করেনি শাঁওলী। “হুঁ”-ছোট করে মাথা দোলায় শাঁওলী। ঐ শাড়িটাই পড়ে যেতে হবে শ্বশুরবাড়ি, এ নাকি নিয়ম, শুনেছে ও। অবশ্য সব নিয়ম যে ঘটা করে মানা হচ্ছে, তাও নয়। এই তো, উপোস করবার কথা ছিল বিয়ের আগে সারাটা দিন-শাঁওলী মাকে বলে রেখেছিল ওকে যেন নিরামিষ ভাত খেতে দেয়া হয়; উপোসটা একদমই ধাতে নেই শাঁওলীর, করতে পারে না। তা, মা ওকে নিরামিষ তরকারি আর ভাত খাইয়েছে। কিন্তু শাড়ির ব্যাপারটা আলাদা, একটা না একটা শাড়ি তো পড়তেই হবে শেষপর্যন্ত, বিয়ের শাড়িটা পরতে তাই আপত্তি নেই কোনো! দিদি কী সব খুটখাট করে ঘর থেকে বেরিয়ে যায়; যাওয়ার আগে অবশ্য বলে যায় শাঁওলী না হয় একটু ঘুমিয়ে নিক এইবেলা।

ঘুম কি আদৌ হবে আর? এ ঘরে কেউ না কেউ আসবেই একটু পর পর, বাড়িভর্তি মানুষ। খুটখাট শব্দে ঠিকই ঘুম ভেঙ্গে যাবে ওর। আর তাছাড়া ঘুম পাচ্ছেও না ওর কেন যেন, কেবল শরীরটা অসম্ভব ক্লান্ত লাগছে। শুয়ে শুয়ে আকাশ-পাতাল ভাবতে থাকে ও। আচ্ছা, শুভ্র কোথায়? বরযাত্রী যারা এসেছে তারাই বা কে কোথায়? কেউ বলেনি শাঁওলীকে, ও-ও জানতে চায়নি নিজে থেকে, কোথাও না কোথাও তো আছে বহাল তবিয়তে, হাজার হোক নতুন জামাই আর নতুন আত্মীয় বলে কথা! মোবাইলটাও কাছে নেই যে একটা খোঁজ নেবে। বিয়ের আগেই পুষ্পর হাতে ধরিয়ে দিয়েছে ও মোবাইল ফোনটা আর বিয়ে টিয়ে শেষ হয়ে যাওয়ার পর থেকে ও মেয়ের খোঁজ নেই। কে জানে, কোথায় গেছে। অবশ্য বাড়ি ভরা আত্মীয়-স্বজন, তাদের খোঁজ খবর, এ কাজ ও কাজ, দুপুরের রান্নার দেখাশোনা, কেউই বসে নেই এ সময়টায়। এ ঘরেও আসছে না কেউ। দূর! যাক গে মোবাইল! একবার পাশ ফিরে শোয় শাঁওলী। আগামাথাহীন অনেক কথাই মনে আসে এই মুহূর্তে।

বিয়ের শাড়িটা লাল রঙেরই হতে হবে, আর দেশি-শাঁওলী ঠিক করে রেখেছিল সেই কবে থেকেই। ক’দিন আগে পুষ্পকে সাথে নিয়ে সিঁদুরে লাল কাতানটা কিনেছে সে, অবশ্য খুঁজতে হয়েছে অনেক। বেনারসি পল্লীর এমাথা ওমাথা ঘুরে বেড়িয়ে অবশেষে মনের মতো শাড়িটা কিনতে পেরে মন থেকে একটা বোঝা নেমে গিয়েছিল শাঁওলীর। শুধু বিয়ের শাড়িটাই বা কেন-হলুদের শাড়ি, বিয়ের পর নতুন বউয়ের পড়বার মতো আরও কিছু শাড়িপোশাকও কিনেছে সে একেবারে নিজের পছন্দে। দিদি-বৌদি-পুষ্প-মা বাদেও যতগুলো কাপড়চোপড় কেনা হয়েছে আর সবার জন্য, সবই একটা একটা করে দেখেশুনে কিনেছে শাঁওলী। অফিস ছুটির পর বেশ রাত পর্যন্ত আর ছুটির দিনে দুপুরের আয়েশি ঘুম বাদ দিয়ে গত একমাস এইসব কেনাকাটা করেছে সে। তার ফাঁকে সময় বের করে পার্লারে যাওয়ার মতো বিরক্তিকর কাজটাও সারতে হয়েছে। না সেরে উপায় কী-বন্ধু আর অফিসের সহকর্মীরা পইপই করে বলে দিয়েছে-ওরকম ‘ন্যাচারাল ইজ বেটার’ টাইপ চেহারা নিয়ে বিয়েতে বসা যাবে না। তাই অনেক বিরক্ত হলেও ত্বকে একটু ঘষামাজা, চুলে একটু নতুনরকম কাট-উহ্, বিয়ের আগের দিন ক’টা নিজের জন্য একটুও সময় পেল না শাঁওলী। নতুন কেনা কাপড়চোপড়গুলো পুষ্পর হাতে পাঠিয়েছিল। নিজে তো ছুটি পেল একেবারে বিয়ের দু’দিন আগে। কোনোরকমে ব্যাগ গুছিয়ে ঢাকা থেকে দে দৌঁড়।

তন্দ্রাই আসতে যাচ্ছিল বুঝি শাঁওলীর। আবার কে ঢুকেছে ঘরে, খুট করে শব্দ হয় যদিও বোঝা যায় যেই আসুক, দরজাটা খুলেছে অনেক সাবধানে। শাঁওলী তাকায়- তুর্ণি, দরজা ছেড়ে এগোয়নি এক পা-ও। কেমন যেন করুণ লাগছে মেয়েটার চেহারা। “কীরে, আয়”-শাঁওলী ডাকে পিচ্চিটাকে। আসার কোনো লক্ষণ দেখায় না তুর্ণি। ঠাঁয় দাঁড়িয়ে থাকে একহাতে দরজা ধরে, চোখ বড় বড় করে সোজা তাকিয়ে আছে শাঁওলীর দিকে। শাঁওলীর কেমন অস্বস্তি লাগে ঐ সোজা দৃষ্টিতে, কী যেন একটা আছে ওতে-হঠাৎ করে বুঝতে পারে না। উঠে বসে ও শোয়া থেকে, আবার ডাকে-“এই মামনি, আয় এদিকে।”

এবার সামনে আসে তুর্ণি, একেবারে শাঁওলীর গা ঘেঁষে বসে। তারপর হঠাৎই মুখটা শাঁওলীর কোলে রেখে ফুঁপিয়ে ওঠে তুর্ণি। শাঁওলী বুঝতে পারে না বাচ্চা মেয়েটার কী হলো হঠাৎ। ওর ফুলে ফুলে ওঠা পিঠে হাত বুলায় শাঁওলী। ফোঁপাতে ফোঁপাতেই তুর্ণি বলে ওঠে-“কে-কেন তুমি বিয়ে করলে মা-সি-ম-ণি?” ওর জিজ্ঞাসা দীর্ঘায়িত হয় কান্নার দমকে। কী বলবে, শাঁওলী ভেবে পায় না । তবে আবার মনে পড়ে, বিয়ের দিন তারিখ পাকা হওয়ার পর থেকেই ফোনে কথা হলেই তুর্ণি বলত-“মাসিমণি, বিয়ে কোরো না তুমি। তুমি বিয়ে করলে তো আর দেখাই হবে না।” তখন সেসব কথা হেসে আর এটা সেটা বলে উড়িয়ে দিয়েছে শাঁওলী। দূর, সাত বছরের বাচ্চা তো এভাবেই বলবে, এ নিয়ে ভাববার কী আছে। হয়ত এখনও ভাববার কিছু নেই কিন্তু হঠাৎ এই প্রশ্নে আর তুর্ণির কান্নায় কেমন যেন অসহায় আর একা লাগে। দিদি টের পেয়েছে কী করে যেন-প্রায় দৌড়িয়ে ঘরে ঢোকে। শাঁওলী ইশারায় ওকে চলে যেতে বলে। দিদি কিছুক্ষণ অসহায়ের মতো তাকিয়ে চলে যায়, বাইরে আরও কারা আসছিল, ওদেরও যেতে বলে বোধহয় কারণ ঘরে আর কেউ ঢোকে না। শাঁওলীর নতুন সুতির শাড়ি ভিজে একসা হয়ে যায় তুর্ণির চোখের জলে। হঠাৎ, হঠাৎই এই প্রথমবার শাঁওলীর খুব কান্না পায়।

সন্ধ্যা হয়ে আসছে প্রায়। ফুলে সাজানো কারটায় শুভ্রর পাশে বসে আছে শাঁওলী, ওর সিটটাই জানালার পাশে। শুভ্রর দু’জন বন্ধু আছে আর। জানালা দিয়ে বাইরে তাকায় না শাঁওলী, চুপ করে তাকিয়ে থাকে সোজা সামনে। গাড়ি ছাড়তে বোধহয় আরও কিছু দেরি আছে, কী সব আচার বাকি আছে এখনও। না দেখেও শাঁওলী জানে, গাড়ির বাইরে প্রায় পুরো পাড়াটাই ভেঙ্গে পড়েছে এই মুহূর্তে আর বেশিরভাগ মানুষেরই চোখে জল। এমনি করেই তো ওরা বিদায় জানিয়েছে এ পাড়ার সব মেয়েকে, যাদের বিয়ে হয়েছে।

ঐ ভিড়ের মধ্যে কি মা আছে? তুর্ণি? পুষ্প? বৌদির কোলে কুর্চি আছে কি? বাবা আসেনি ও জানে, বাবা এখন চুপ করে বসে থাকবে অনেকক্ষণ, একদম একা একা-কারও সাথে কথা বলবে না। শাঁওলীর একবার খুব ইচ্ছে করে তাকিয়ে দেখে ওরা আছে কি না। কিন্তু তাকাতে পারে না ও। কে জানে কেন। এসি ছাড়া আছে তবু শাঁওলী কেমন ঘেমে যেতে থাকে হঠাৎ। শুভ্র কি টের পায়? শুভ্র তাকায় ওর দিকে-“টেম্পারেচার কমিয়ে দেব আরও? তোমার গরম লাগছে? বাইরে বেরোবে?” একগাদা প্রশ্ন করে বসে একসাথে। হয়ত বরাবরের মতো শাঁওলীর খারাপ লাগাটা ছুঁয়ে গেছে ওকে যেমনটি গেছে গত আট বছরে সবসময়। ওর দিকে তাকায় না শাঁওলী, মাথা নেড়ে কোনোরকমে না বলে।

এখনও বোধহয় আচারকর্ম বাকি আছে কিছু। শাঁওলী জানে ওদের গাড়ির পাশেই সেই তালঢ্যাঙ্গা তালগাছটা যেটা আর সব গাছের মাথা ছাড়িয়েও দেখা যায় আরও এক দেড় মাইল দূর থেকে। ওর মনে পড়ে- ছোটবেলায় তালগাছটার ফুল ধরার খেলা খেলত ওরা। গাছটায় তাল হয় না, হলদে-সোনালি ফুল ফোটে বসন্তে, করবী ফুলকে খুব ছোট্ট বানিয়ে দিলে যেমন লাগবে দেখতে, তেমন ফুল। বসন্তের দুপুরে যখন বাতাস বইত, সেই বাতাসের তোড়ে অথবা ফুলের নিজেরই ধর্মে ঝুরঝুর করে পড়ত সেই সোনাগুঁড়া ফুল। ওরা সবাই, কাকাতো জ্যাঠাতো একপাল ভাইবোনে সে কী প্রতিযোগিতা সেই ফুল মুঠোয় ধরার! শাঁওলীর খুব ইচ্ছে করে তালগাছটার দিকে তাকাতে। পারে না, পারবে না ও জানে। তালগাছের পাশেই দুর্গামন্দির, তার পাশে জবা ফুলের ঝাঁকড়া গাছটা, শাঁওলী ওদের দিকেও তাকাতে পারবে না আজ।

হঠাৎই বুকের ভেতর কেমন যেন করে ওঠে। খুব ঝড়ে বুকের মধ্যে নীল নীল ফুল নিয়ে মাথা আছড়িয়ে মরা অসহায় অপরাজিতা লতার মতো নিজেকে অসহায় মনে হয় শাঁওলীর। এই কার, বাইরের মানুষ সবকিছু ছাপিয়ে ওর মনে ভেসে ওঠে পুরো গ্রামটাই- গ্রামের দু’পাশের জঙ্গল, বিল, নিজেদের পুকুরপাড়, প্রাইমারি স্কুলের সামনের দিগন্তবিস্তৃত মাঠটা। সবকিছু ছাপিয়ে ওর মনে ভেসে ওঠে এলোমেলো চুলের একটা শৈশব, বন্ধনহীন ঘুরে বেড়ানোর একটা শৈশব, বটগাছের ডালে পা ঝুলিয়ে কাঁচা আম খাওয়ার একটা শৈশব। শিক্ষিত, বিরাট এনজিওতে চাকুরি করা স্মার্ট শাঁওলী নয়, বুকের ভেতর এলোমেলো করে দিতে থাকে দাঁড়িয়াবান্দার কোর্টে ছুটোছুটি করতে থাকা সারা গায়ে ধুলোমাখা একটা শাঁওলী। ও ভয়ে চোখ বন্ধ করে ফেলে, মনে হয়-তীক্ষ্ণ চোখের পুঁচকে শাঁওলীটা ওকে আজ যেতে দেবে না কোত্থাও, এখানেই আটকে দেবে। চোখ খোলে না শাঁওলী, শুভ্রর হাত খোঁজে-বহু পরিচিত হাত, গত আট বছরে এক মুহূর্তের জন্য যে হাত ওকে ছেড়ে যায়নি অন্য কোথাও। শুভ্র কী বোঝে কে জানে-ডান হাতটা দিয়ে শাঁওলীর বাঁ হাতটা শক্ত করে ধরে রাখে।

গাড়িটা ছেড়ে দিচ্ছে, দুলুনি টের পায় শাঁওলী। চোখ বন্ধ তখনও, শাঁওলী টের পায় গাড়িটা বাঁক নিচ্ছে এবার। ওদের গাড়ির পেছনে তালপাতায় করে জল ছিটাচ্ছে বৌদিরা আর মুঠো মুঠো খই ছড়াচ্ছে, জানে ও। আর মিনিট কয়েক পরেই পার হয়ে যাবে এই পাড়া, একটা জঙ্গল আর প্রাইমারি স্কুলটা। শাঁওলীর চোখ হঠাৎই জলে ভরে যায়, ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। ভঙ্গুর লতার মতো ভেঙ্গেচুরে পড়তে চায় ওর সমস্ত অস্তিত্ব। মনে হয়-এই গ্রাম, ওর পরিবার, আজন্মকালের আপন সবকিছু ওকে ছেড়ে যাচ্ছে কিংবা ওকে যেতে দিচ্ছে ওদের ছেড়ে, চিরকালের মতো। ওর বন্ধ চোখের পাতায় স্পষ্ট ছবি ফুটে ওঠে আরেকটা শাঁওলীর, ফ্রক পরা ঝাঁকড়া এ্রলোমেলো চুলের সেই শাঁওলীটার চোখে জল আর রাজ্যের অভিমান। গাড়ি পার হয়ে যায় গ্রামের সীমানা, ঠিকই টের পায় শাঁওলী। ফ্রক পরা অভিমানী শাঁওলীটার মুখ এতক্ষণে ঝাপসা হতে শুরু করেছে কাতানের টকটকে লালে নতুন বৌ হয়ে ওঠা শাঁওলীর চোখের জলে।

দেবদ্যুতি


মন্তব্য

সুলতানা সাদিয়া এর ছবি

বেশি কিছু বলার নাই। চমৎকার।

-----------------------------------
অন্ধ, আমি বৃষ্টি এলাম আলোয়
পথ হারালাম দূর্বাদলের পথে
পেরিয়ে এলাম স্মরণ-অতীত সেতু

আমি এখন রৌদ্র-ভবিষ্যতে

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনার জন্য এত্তগুলা আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লাগলো। শেষদিকে কোনো একটা চমক আশা করেছিলাম যদিও।

স্বয়ম

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- শাঁওলীর বিয়েতে আর চমক কোথায়, বলুন? ছোট্ট শাঁওলীটা বুক ভরা অভিমান নিয়ে সামনে আর পুরো শৈশবটাই একেবারে বুকের ভেতর ঝাঁপিয়ে পড়লেও শ্বশুরবাড়ি নামক জায়গাটায় তো ওকে যেতেই হবে, না?

অতিথি লেখক এর ছবি

"মনে হয়-এই গ্রাম, ওর পরিবার, আজন্মকালের আপন সবকিছু ওকে ছেড়ে যাচ্ছে কিংবা ওকে যেতে দিচ্ছে ওদের ছেড়ে, চিরকালের মতো।"

শাঁওলীরা এভাবেই এক পরিবার থেকে আর একপরিবারে যায় নাড়ীর টানকে সাথে নিয়ে।

-------------
রাধাকান্ত

অতিথি লেখক এর ছবি

শাঁওলীরা যায় কিন্তু আজীবন ভোলে না সেই একটুকরো শৈশব, বুকের ভেতর নিয়ে বেঁচে থাকে বারোমাস...

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

চলুক পপকর্ন লইয়া গ্যালারীতে বইলাম

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- হাসি

এক লহমা এর ছবি

দরিয়াবান্ধা! আহা! সবাই মিলে খেলতাম - মেয়েরা ছেলেরা সব একসাথে - সেই বয়স, সেই বয়স! চলুক

--------------------------------------------------------

এক লহমা / আস্ত জীবন, / এক আঁচলে / ঢাকল ভুবন।
এক ফোঁটা জল / উথাল-পাতাল, / একটি চুমায় / অনন্ত কাল।।

এক লহমার... টুকিটাকি

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

মজিবুর রহমান  এর ছবি

সুন্দর উপমা আর কিছু নিজস্ব শব্দ আছে গল্পটিতে , ভালো লেগেছে ।

মজিবুর রহমান

অতিথি লেখক এর ছবি

বেশ কিছু দিন পর আপনি, তাই না? আপনাকে এত্তগুলো এত্তগুলো আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

গগন শিরীষ  এর ছবি

ভাল লেগেছে।স্বয়মের সাথে একমত,শেষে টুইস্টের আশায় ছিলাম।

অতিথি লেখক এর ছবি

আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা- এ বড় সরল গল্প, গগন শিরীষ। শাঁওলীর মন খারাপ হবে, বুকের ভেতর তোলপাড় হবে-মনে হবে একটা শৈশব কী একটা জীবন পুরোই শেষ হয়ে গেল তারপরও শাঁওলী শ্বশুরবাড়ি যাবে শুভ্রর হাত ধরে। তারপর এই পুরো শৈশবটা জুড়ে যে বাড়িটা, যে বাড়িটায় বিয়ের দিন অবধি পুরোটা অধিকার ছিল, সে বাড়িতে ‘বেড়াতে আসবে’। এই তো গল্প, আমি টুইস্ট খুঁজে পেলাম না যে গল্পটায়!... তবে যেহেতু পাঠক হিসেবে আপনার প্রত্যাশা পূরণ হয়নি শেষটায়, সেহেতু উন্নতি করবার জায়গা খুব ভালোমতোই আছে বুঝতে পারছি। আবারও আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

অতিথি লেখক এর ছবি

এক কথায় সুন্দর। তবে গল্পের বিষয়বস্তু, প্রকাশভঙ্গী একরকম পুরনোই বলা চলে, কিছুটা cliché ও। শেষ প্যারায় এক চরিত্রের দুটি ভিন্ন টাইমলাইনে ভিন্ন দুটি স্বত্তার উপস্থাপন টা interesting. স্মৃতির আড়ালে গ্রামের প্রকৃতির সাথে চরিত্রের অন্তঃমিল টা ভাল; লেখায় অনুভূতির গাঢ়ত্ব ছিল। গল্পে ট্যুইস্ট থাকতেই হবে এমন কোন কথা নাই; কিন্তু সেক্ষেত্রে বিষয়বস্তুর নতুনত্ব একটা ইম্পর্যা ান্ট ব্যাপার। আরও লিখবেন। নিশাচর জীব।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ধন্যবাদ পড়া এবং গুছিয়ে মন্তব্য করার জন্য। প্রশংসাগুলো সব গ্রহণ করলাম, পরামর্শগুলো মাথায় করে রাখলাম, পরে কাজে লাগবে নিশ্চয়ই হাসি আপনারে অসংখ্য -ধইন্যাপাতা-

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।