আশ্চর্য কল

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ০৫/১০/২০১৫ - ১০:০২অপরাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

"এক দেবদূত একদা এক নগরীর উপর দিয়া উড়িয়া যাইতেছিলেন। সহসা কি কারনে জানি তাহার মনে গভীর দয়ার উদ্রেক হইল। তিনি নামিয়া আসিয়া সেই নগরীর মাথাগণের নিকট জিজ্ঞাসা করিলেন "বাপু, তোমরা আমার নিকট কিছু একটা চাহিতে পারো"। নগরীর মাথাগন গভীর ভাবে ভাবিতে লাগিলেন কি চাওয়া যাইতে পারে, এমন সুযোগ তো আর প্রত্যহ মিলিবে না। অনেক ভাবিয়া তাহারা একটি বিশেষ ধরনের মানুষ তৈরির কল চাহিলেন। সেই মানুষরা হইবেন মেধাবী, জ্ঞান চর্চা আর বিকাশে সদা সচেষ্ট। তাহারা হইবেন জাগতিক সকল মোহ-মায়া মুক্ত, জাতির উত্তরসূরিদের জীবন গড়িয়া দেয়াই হইবে তাহাদের এক ও একমাত্র লক্ষ্য। শুধু তাহাই নহে, দয়া করিয়া তাহাদের যে সম্মানি এবং সম্মান দেয়া হইবে তাহাই বিনা প্রশ্নে তাঁহারা মাথা পাতিয়া লইতে প্রস্তুত থাকিবেন। দরদী দেবদূত সেই কল উপহার দিয়া চলিয়া গেলেন। আর নগরীর মাথাগন মহানন্দে সেই কল দিয়া সেই বিশেষ শ্রেণীর মানুষ বানাইতে লাগিলেন।"

এইটুকু লিখিয়া কামাল সাহেব পুরাতন টাইপরাইটার খানা সরাইয়া রাখিলেন। এক্ষুনি পলাশী হইতে বাজারটা সারিয়া আসিতে হইবে। নাইলে আজ রাতের আমন্ত্রিত অতিথিদের আপ্যায়িত করিবার মত ঘরে বিশেষ কিছু নাই। তিনি ফুলার রোডের শিক্ষক আবাসন হইতে বাহির হইয়া একখানা রিকশা থামাইলেন। শ্রেণীর সবচাইতে উজ্জ্বল ছাত্রটির আবাসনে আজ যেকজন পুরাতন সহপাঠীরা আসিতেছেন তাঁহারা সব গন্যমান্য, ধনী ব্যক্তি। তাঁহাদের উপযুক্ত আদর, আপ্যায়নে তাহার মাসিক বেতনের কতটা উড়িয়া যাইবে ভাবিতে গিয়া তাহার মুখখানি একেবারে আঁধার হইয়া আসিল।


মন্তব্য

অতিথি লেখক এর ছবি

লাইক দিলাম। আশ্চর্য কলের গল্প ভালো হয়েছে চলুক কিন্তু লেখকের নাম কই?

দেবদ্যুতি

ষষ্ঠ পাণ্ডব এর ছবি

১। প্রথম অনুচ্ছেদটাতে উদ্ধৃতি চিহ্নের ভেতরে উদ্ধৃতি চিহ্ন আছে। বাইরেরটাকে এড়ানোর জন্য পুরো অনুচ্ছেদ (মানে কামাল সাহেবের লেখ) ইটালিক করে ফেলতে পারেন।
২। ভাষায় গুরুচণ্ডালী দোষ আছে। মানে সাধু আর চলিত ভাষার মিশ্রণ আছে, বিশেষত ক্রিয়াপদে। অল্পস্বল্প বানান ভুলও আছে। এই পর্যায়ে যেহেতু সম্পাদনার সুযোগ নাই তাই পরের বার লেখা পোস্ট করার আগে কয়েকবার খুঁটিয়ে চেক করে নেবেন।
৩। লেখক নিজের নাম না দিলে পাঠক কী করে বুঝবেন যে কার লেখা পড়লেন?


তোমার সঞ্চয়
দিনান্তে নিশান্তে শুধু পথপ্রান্তে ফেলে যেতে হয়।

অতিথি লেখক এর ছবি

শিক্ষক সমাজের একাংশ সংসার চালাতে হিমশিম খান, তবু 'তাহাদের যে সম্মানি এবং সম্মান দেয়া' হয় 'তাহাই বিনা প্রশ্নে তাঁহারা মাথা পাতিয়া লইতে প্রস্তুত ' থাকেন তারা, 'জাগতিক সকল মোহ-মায়া মুক্ত' হয়ে 'জাতির উত্তরসূরিদের জীবন গড়িয়া' দেয়ার ব্রত এখনো যেহেতু তারা ভুলে যাননি।

তবে রয়েছে অন্য এক অংশ, যারা শিক্ষার মধ্যে থেকেই খুঁজে বের করেন ব্যবসার সকল উপকরণ, জন্ম দেন 'শিক্ষা-ব্যবসা' নামে এক নতুন ধরণের টার্ম। শিক্ষকদের এ অংশটি কিন্তু মোটেও তার সহপাঠিদের থেকে পিছিয়ে নেই দৌলত আহরণে, এ কারণে বন্ধুদের আপ্যায়নকালে তাদের মুখ হাসিতেই উদ্ভাসিত থাকে সবসময়।

ক্লাসের সেরা ছাত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হয়, কারণ দেশের সবচেয়ে বড় গবেষনা করার মত মেধা তাদেরই থাকে, আর সেই সেরা-ছাত্র থেকে শিক্ষকে রুপান্তরিত হওয়া মানুষদের আর্থিক সমস্যা থাকবে, সংসার চালাতে কষ্ট হবে, তা কখনোই কাম্য নয়, তাহলে দেশই ক্ষতিগ্রস্ত হবে দীর্ঘমেয়াদে। এই শিক্ষকদের জন্য সবচেয়ে বেশী খরচ করা উচিত রাষ্ট্রের, নিজেরই স্বার্থে।

অন্যদিকে, গবেষনা বাদ দিয়ে সেই শিক্ষকদেরই একাংশ যখন ব্যবসাকর্মে পূর্ন মনোনিবেশ করেন, তখন সেই বিশেষ শিক্ষকদের ব্যবসা পরিবর্ধন ও বিকাশে রাষ্ট্রের সহায়ক ভূমিকা পালন করা কতটুকু যৌক্তিক হবে?
।।।।।।।।
অনিত্র

অতিথি লেখক এর ছবি

অনিত্র, আপনার এই জিজ্ঞাসাগুলোর অনকেগুলোই আমার নিজের মনেও আছে, প্রথম কমেন্টে ইচ্ছাকৃতভাবে এড়িয়ে গিয়েছিলাম। হয়ত লেখক ওসব নিয়ে ভাবেননি কিংবা সেগুলো লিখতে চাননি।

শিক্ষকদের যে অংশটা শিক্ষার মধ্যে ব্যবসার উপকরণ খুঁজে বের করেন, সেই অংশটা আর তাদের ব্যবসা, উভয়ের কলেবর দিনদিন বেড়ে চলেছে। বিষয়টি অবশ্যই আশঙ্কার। আমি নিজে বিশ্ববিদ্যালয়ে এর যে অবস্থা দেখেছিলাম, এখন তা তার চেয়ে অনেক বেশিগুণ বেড়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের খবরগুলো খুব সঙ্গত কারণেই এখনও নিয়মিত কানে আসে, সত্যি বলতে কী, ইচ্ছে করেই খবর রাখি। শিক্ষকরা ক্লাস করানো আর নিজেদের ক্লাসের মান, শিক্ষার্থীদের মান উন্নয়নের চাইতে আশঙ্কাজনকভাবে ব্যস্ত বিভিন্ন প্রজেক্ট নিয়ে।

নিজে মাথা থেকে অনেক আগেই বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হওয়ার চিন্তাটা ঝেড়েপুঁছে ফেলেছি-কারও উপর কোনো খেদ নেই কিন্তু প্রায় সময়েই দেখেছি যে ক্লাসের সেরা ছাত্রটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক হতে পারে না। পারে কি? আবার আমার নিজের বিভাগেই যে অলিখিত নিয়ম তাতে শিক্ষক নিয়োগের সময় নিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে হয়ত ১০% শিক্ষক নেয়া হয়, বাকিরা অন্য বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আসা। তাহলে নিজেদের শিক্ষার্থীদের জন্য কর্তৃপক্ষ কতটুকু কী করল, জানতে ইচ্ছে করে।

দেবদ্যুতি

অতিথি লেখক এর ছবি

ভালো লেগেছে। অনেক শুভেচ্ছা। নাম দেখলাম না।

--------------------------
ইচ্ছে মত লিখি
http://icchemotolikhi.blogspot.in/

nabin এর ছবি

বাহ্ববা বাহ্ববা বেশ।

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।