সকালের দিনরাত্রি

অতিথি লেখক এর ছবি
লিখেছেন অতিথি লেখক (তারিখ: সোম, ৩০/০৫/২০১৬ - ১১:৫০পূর্বাহ্ন)
ক্যাটেগরি:

সকালের বিয়ে।
পাত্রীর খোঁজ চলছে।
কিন্তু কেউই রাজী নয় সকালকে বিয়ে করতে।
শেষমেশ পাত্রী পাওয়া গেলো।
সন্ধ্যা।
সন্ধ্যা বিয়ে করবে সকালকে।
বিয়ে হলো।
কিন্তু বিয়েই সার!
সকালের কখনও দেখা হয়না সন্ধ্যার সাথে।

এদিকে,সূর্য ছিল সকালের মামা।
ভাগ্নের কষ্ট দেখে সূর্য্য মামার বড় কষ্ট হলো। গোটা একটা দিন সে দিলো না কোন আলো।

ব্যস! সেদিন সকাল আর সন্ধ্যা এক হয়ে গেলো। পুরো একটা দিন তারা একসাথে থাকলো।
কিন্তু প্রকৃতির নিয়ম আর কতই বা লঙ্ঘন করা যায়। তাই উপর থেকে নির্দেশ, সূর্যকে আর কাজ কামাই দিলে চলবে না। রোজ উঠতে হবে নিয়ম করে।
সূর্য্য মামা যেমন ভালো তেমনি জেদী। সে বলে উঠলো
"পারবো না বাপু,আমারও ক্লান্তি আছে। আমারও মাঝে মাঝে বিশ্রাম চাই"
উপরওয়ালা তাই বললেন,
"বেশ। এখন থেকে নির্দিষ্ট সময় অন্তর অন্তর তুমি দিনের আলোতে ছোট্ট বিরতি পাবে,যাকে লোকে ডাকবে সূর্যগ্রহণ নামে।"

এরপর কেটে গেলো অনেক সময়।
সকাল আর সন্ধ্যা মিলিত হয় পূর্ণগ্রাসের দিন। খুব কম সময়ের জন্য,অনেক দিন পরপর।

তারপর কেটে গেল আরও অনেক সময়, দিন,মাস,বছর।

একে একে সকাল আর সন্ধ্যার চারটে সন্তান হলো।
দুটা ছেলে,দুটা মেয়ে।
ছেলে দুটার নাম,দুপুর আর বিকেল। মেয়ে দুটার নাম গোধূলি আর রাত্রি।
প্রতিদিন সকাল আর সন্ধ্যার দেখা হয়না ঠিকই। তবে সকাল তার আলোর সমস্ত রশ্মিটুকু দিয়ে দেয় তার সন্তান দুপুরকে। দুপুরে সেই রশ্মি আরও তিতিয়ে ওঠে সন্ধ্যা অব্দি পৌঁছানোর জন্য। একসময় সেই রশ্মি ক্লান্ত হয়ে যায় কিছুটা। দুপুর তখন সেই রশ্মি দিয়ে দেয় তার সহোদর বিকেলের কাছে। বিকেল সেই রশ্মি দান করে তার সহোদরা গোঁধূলি কে। গোধূলি সেই রশ্মির অবশিষ্ট ক্ষীণ অংশ মার হাতে দিয়ে বলে,
"মা, এটা বাবা পাঠিয়েছে।"
অবশেষে ক্লান্ত সেই রশ্মি কে সন্ধ্যা ঘুম পাড়িয়ে দেয় অন্ধকারে।

তারপর সকালের জন্য তার সমস্ত অন্ধকারটুকু রাত্রির হাতে দিয়ে ঘুমিয়ে পড়ে সন্ধ্যা। সারারাত সেই অন্ধকারকে আগলে রেখে,সকালে বাবার হাতে দিয়ে সে বলে
"বাবা, এটা মা পাঠিয়েছে।" তারপর ঘুমোতে যায় রাত্রি ।

এরপর সকাল সেই অন্ধকার গুলোতে আলোকরশ্মি ফেলে, তাদের আলোকিত করে,আলোকিত সেই রশ্মি আবার পাঠিয়ে দেয় প্রিয়তমা সন্ধ্যার জন্য। এভাবেই চলতে থাকে ওদের জীবন,সংসার,ভালোবাসা...

(প্রতীক রায়)


মন্তব্য

নুড়ি এর ছবি

বাহ! খুব ভালো লাগলো! দেঁতো হাসি চলুক

প্রতীক রায় এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

সোহেল ইমাম এর ছবি

সুন্দর

---------------------------------------------------
মিথ্যা ধুয়ে যাক মুখে, গান হোক বৃষ্টি হোক খুব।

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ভালো লেগেছে..…
এ্যানি মাসুদ

অতিথি লেখক এর ছবি

অনেক ভাল লেগেছে।
এ্যানি মাসুদ

সাক্ষী সত্যানন্দ এর ছবি

বাহ!

____________________________________
যাহারা তোমার বিষাইছে বায়ু, নিভাইছে তব আলো,
তুমি কি তাদের ক্ষমা করিয়াছ, তুমি কি বেসেছ ভালো?

গগন শিরীষ এর ছবি

দারুন!

প্রতীক রায় এর ছবি

ধন্যবাদ। হাসি

অতিথি লেখক এর ছবি

দারুন !!!

নতুন মন্তব্য করুন

এই ঘরটির বিষয়বস্তু গোপন রাখা হবে এবং জনসমক্ষে প্রকাশ করা হবে না।